যুক্তরাষ্ট্রে ছোঁয়াচে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠাতে চেয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
মহামারিকালে ট্রাম্পের শাসন নিয়ে লেখা নতুন এক বইয়ে উঠে এসেছে বিস্ফোরক এ তথ্য।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বইটির নাম ‘নাইটমেয়ার সিনারিও: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশনস রেসপন্স টু দ্য প্যানডেমিক দ্যাট চেঞ্জড হিস্ট্রি’।
বইটি লিখেছেন পত্রিকাটির দুই সাংবাদিক ইয়াসমিন আবুতালেব ও দেমিয়ান পালেত্তা।
তারা লিখেছেন, মহামারির শুরুতে বিদেশে অবস্থানরত আমেরিকানরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে কি না, সে বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আলোচনায় বসেছিলেন হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তারা।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্রে করোনার বিস্তার রোধে আক্রান্তদের গুয়ানতানামোতে পাঠানোর পরামর্শ দেন ট্রাম্প।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউজের সিচুয়েশন রুমে সে বৈঠকে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমাদের না নিজস্ব একটা দ্বীপ আছে? গুয়ানতানামোর অবস্থা কেমন?’
সে সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য পণ্য আমদানি করা, ভাইরাস নয়।’
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, গুয়ানতানামো নিয়ে ট্রাম্পের এ অবস্থানে হতচকিত হয়ে পড়েন তার সহযোগীরা। তিনি এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো কথা বলার আগেই আলোচনাটি থামিয়ে দেন তারা।
কিউবার ভূখণ্ডে অবস্থিত গুয়ানতানামো দ্বীপের একটি অংশ ইজারা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ১৯০৩ সাল থেকে নৌবাহিনীর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর ঘাঁটিটিকে সুরক্ষিত কারাগারে পরিণত করে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সরকার। এটি পরবর্তী সময়ে পরিচিত হয়ে ওঠে আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত বন্দিশিবির হিসেবে।
নাইন-ইলাভেনের হামলায় জড়িত সন্দেহভাজন থেকে শুরু করে বিদেশে পরিচালিত যুদ্ধে আটক শত্রুপক্ষের যোদ্ধা ও গুরুতর সব অপরাধে জড়িতদের আটকে রাখা হয় গুয়ানতানামো বে কারাগারে। অভিযোগ আছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় গুয়ানতানামোতে আটকদের ওপর চলে নির্মম নির্যাতন।
চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত গুয়ানতানামোতে আটক ৭৮০ বন্দির ৭৩১ জনকে অন্যান্য কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। ৪০ জন এখনও সেখানে আটক। আর হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
করোনায় আক্রান্তদের গুয়ানতানামোতে পাঠানো নিয়ে ট্রাম্পের এসব মন্তব্যের কিছুদিন পরই ভাইরাস মহামারিতে রূপ নেয় যুক্তরাষ্ট্রে।
গত বছর করোনাবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে সহযোগীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: ওয়াশিংটন পোস্ট
মহামারি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে নয় মাসের ব্যবধানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয় বরণ করতে হয় তাকে।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় প্রাণ গেছে ৬ লাখ ১ হাজারের বেশি মানুষের, যা সারা বিশ্বে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ৪ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ট্রাম্পের মেয়াদে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্প নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠেন।
করোনা ও গুয়ানতানামো নিয়ে ট্রাম্পের এসব মন্তব্য বেরিয়ে এসেছে তার সাবেক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টাদের দেয়া সাক্ষাৎকার থেকে, যার ভিত্তিতে বইটি লেখা হয়েছে।
এতে মহামারি নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বেশ কিছু কথোপকথন রয়েছে।
মহামারির শুরুতে করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প।
গত বছরের ১৮ মার্চ তৎকালীন স্বাস্থ্য ও মানবসেবাবিষয়ক মন্ত্রী অ্যালেক্স অ্যাজারকে ধমকেছিলেন ট্রাম্প। ফোনে তার চিৎকার শুনেছিলেন অ্যাজারের পাশে থাকা সহযোগীরাও।
ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘এসব করোনা টেস্টই আমাকে শেষ করবে! শুধু এটার জন্যই নির্বাচনে হারব আমি! কোন গাধার বুদ্ধিতে সরকার করোনা পরীক্ষা নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে?’
করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি রূপ নেয়ার আগেই পর্যাপ্ত টেস্টের মাধ্যমে রোগীদের শনাক্ত ও বিচ্ছিন্নের মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যবিদরা। এসব পরামর্শ উপেক্ষার ফলেই পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে দেশটি মৃত্যুপুরীতে রূপ নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্বাস্থ্যবিদ ও কেন্দ্রীয় অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের তৎকালীন পরিচালক ড. অ্যান্থনি ফাউচির সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়ান ট্রাম্প।
ফাউচি ও অন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পরামর্শকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অর্থনীতিবিদ আর নিজের জামাতা জ্যারেড কুশনারের পক্ষ নিয়েছিলেন তিনি।
এমনকি ফাউচিসহ কোনো চিকিৎসকের সতর্কতা আমলে না নিয়ে নিজেই ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনসহ করোনার চিকিৎসায় বিভিন্ন বিতর্কিত টোটকা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি দিনে দিনে কেবল বেড়েছেই।
লেখক আবুতালেব ও পালেত্তা বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘এমন এক বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, যেখানে আপনি কিছু করলেই একজন আপনার মাথা কেটে নিতে কিংবা আপনাকে চাকরিচ্যুত করতে প্রস্তুত।’
মহামারি পরিস্থিতিতে অনেক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছিলেন ট্রাম্প। বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছিলেন ড. ফাউচিকেও।
আরও পড়ুন:শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাতে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পুণ্যতিথি ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি শুধু আনন্দ-উৎসবের দিন নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার এক মহামিলন ক্ষেত্র।
তিনি বলেন, জন্মাষ্টমী সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য অবারিত উৎসবের প্রাঙ্গণ সৃষ্টি করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো ধর্মীয় সম্প্রীতি। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরা সব ধর্মের মানুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। হিংসা, বিদ্বেষ, অশান্তি, হানাহানি, বৈষম্য ও অবিচার দূর করে সমাজকে শান্তিময় করে তুলতে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব এ সময় দেশবাসীর প্রতি সম্প্রীতি, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিশেষ অভিযানে ৪৩ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ভালুকা মডেল থানার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে আটক করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—জামিরদিয়ার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ সজিব মিয়া (২৬), একই এলাকার মোঃ নাবিল হোসেন নবীর ছেলে মোঃ আলী হোসেন ওরফে নাজমুল (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের উদয়খালী এলাকার মোঃ মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৭) এবং ডুমবারিরচালা এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাঈম খান (২৫)।
এসময় সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।
নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি স্থানে কয়েক সেন্টিমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তালপাতিলা এলাকায় এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে তালপাতিলা গ্রামসহ আশেপাশের চকবালু, চকরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। পানি বন্দী হয়ে পড়েন কয়েকশ পরিবার।
স্থানীয়রা বলছে, এই একই স্থানে গেলো বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর মাসখানেক আগে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু মেরামত করা হয়। কিন্তু নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভেঙে গেছে।
বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। এসময় তিনি উক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে দেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার জোত বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিদসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওযায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি দেশব্যাপী নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই মার্কেট পরিদর্শন করেন ।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেটে যান। এরপর তিনি কৃষিমার্কেটের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দোকানিদের পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেন এবং পলিথিন ব্যবহারের ভয়াবহতা তুলে ধরেন ।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও লুটের ঘটনায় মামলা করেছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিএমডি মহাপরিচালক আনোয়ারুল হাবিব বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা কিছু দুষ্কৃতিকারীর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গেজেভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার পাথর লুট করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, পাথর লুটপাটে অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়নি। সরকারের গেজেটভুক্ত কোয়ারি থেকে লুট বা চুরি এ ধরনের কর্মকাণ্ড খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪(২) (ঞ) এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা ২০১২-এর বিধি ৯৩ (১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় মৌখিক নির্দেশনায় খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২ এর ৫ ধারা অপরাধে ও দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৭৯ নম্বর ধারা ও ৪৩১ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় সরকারি স্বার্থে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় দায়ী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সিলেটের দুই পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় হাইকোর্ট পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন এবং লুটেরাদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।
এরপর সিলেটসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে নামে র্যাব, পুলিশসহ যৌথবাহিনী। গত তিন দিনে জাফলং ও সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে অবশ্য নারায়ণগঞ্জ থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হওয়া ৪০ হাজার টন পাথরও রয়েছে।
সর্বশেষ সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানাধীন আসাম পাড়া এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাব-৯-এর টহল দল, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি যৌথ আভিযানিক দল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আসাম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মেহেরপুরে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মোঃ ইমান আলী ওরফে ইমান ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তার ইমান আলী শিবপুর গ্রামের মৃত আমির শেখের ছেলে। সেনা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি দল মোনাখালী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে তার বাড়ি ঘেরাও করে। পরে তল্লাশির সময় তার কাছ থেকে মার্কিন তৈরি একটি ৭.৬৫ মি.মি. পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
ইমান আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান, বিস্ফোরক ও নাশকতাসহ মোট ১১টি মামলা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়িতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম উদ্ধারের পর একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী। ওই বাড়িতে থাকা ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামের একটি কোচিং সেন্টারে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি বাড়িটি ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনীর ৪০ ইস্ট বেঙ্গলির একটি দল।
অভিযানে সংশ্লিষ্ট সেনাবাহিনীর একটি সূত্রে জানা গেছে, ডক্টরস ইংলিশ নামের ওই প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি বিদেশী এয়ার গান, একটি রিভালবার, একটি কার্তুজ, তিন বক্স ইয়ারগান শিশা, দেশীয় অস্ত্র, জিপিএস, ওয়াকিটকি, বাইনোকুলার, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম, মাদকদ্রব্যসহ আরো বহু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত ৪০ ইস্ট বেঙ্গলির কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযান সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি কোন তথ্য জানেন না। তবে তারা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে বিস্তারিত জানানো হবে।
মন্তব্য