ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁকে চড় মারার অপরাধে ২৮ বছর বয়সী দেমিয়েন তারেলকে চার মাসের জেল দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
মোট ১৮ মাস বা দেড় বছরের জন্য কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হলেও মওকুফ করা হয়েছে ১৪ মাসের সাজা।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রেসিডেন্টকে চড় মারা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না বলে আদালতকে জানিয়েছেন ওই যুবক।
ফ্রান্সের ড্রোম অঞ্চলে সফররত মাখোঁ জনতার সঙ্গে হাত মেলানোর সময় ভিড়ের মধ্য থেকে তাকে চড় মারেন তারেল। মঙ্গলবারের ওই ঘটনার পর থেকেই পুলিশের হেফাজতে আছেন তিনি।
তার শুনানির দিন বৃহস্পতিবার সরকারি পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি এ ধরনের আচরণ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতা’।
জবাবে প্রেসিডেন্ট সফর করবেন জেনে কয়েক দিন আগে তাকে ডিম বা ক্রিম ছোড়ার কথা ভেবেছিলেন বলে জানিয়েছেন তারেল। তবে চড় মারার কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না তার।
আদালতকে তারেল বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মাখোঁ খুব নিখুঁতভাবে আমাদের দেশের ক্ষতি করে চলেছেন বলে আমি মনে করি। তাকে যদি আমি দ্বৈত লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ জানাতাম, তাহলে তো তিনি আসতেন না।’
সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছনার অপরাধে ফ্রান্সে সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৪৫ হাজার ইউরো জরিমানা।
মাখোঁর প্রতিক্রিয়া
চড় খাওয়ার ঘটনাটিকে ‘বিচ্ছিন্ন’ উল্লেখ করে মাখোঁ জানিয়েছেন, ভোটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ অব্যাহত থাকবে তার।
ওই যুবকের আচরণকে ‘বোকামি আর উগ্রতা’ আখ্যা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে বিষ ছড়ানো হয়, তারই ফল এটি। এ ধরনের আচরণ এখন আর অপ্রত্যাশিত নয়। কিন্তু এটি অগ্রহণযোগ্য।
ফ্রান্সে স্থানীয় নির্বাচনের বাকি কয়েক সপ্তাহ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি ১০ মাস।
অনেক রাজনীতিবিদ এ লাঞ্ছনার নিন্দা জানালেও কেউ কেউ একে দেখছেন ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্টকে জনতার প্রত্যাখ্যান হিসেবে।
২০১৮ ও ২০১৯ সালের বড় সময়জুড়ে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনে জর্জরিত হয় ফ্রান্স।
মাখোঁর অর্থনৈতিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ওই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও দ্রুতই তা গড়ায় সরকারবিরোধী গণ-আন্দোলনে এবং পরিস্থিতি ব্যাপক সহিংস হয়ে ওঠে।
সম্প্রতি নানা ঘটনায় জনসমর্থন কিছুটা বাড়ায় ৪৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টর ডানপন্থি মেরি ল্যু পেনের সঙ্গে তার জনসমর্থনের পার্থক্য খুবই কম।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)-তে আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে।
দিনটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানসহ অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হন। সেখান থেকে কবির সমাধির উদ্দেশে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়, এরপর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হয়।
পরে কবির সমাধির পাশের খোলা মঞ্চে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সভাপতিত্ব করেন।
এছাড়া ফজরের নামাজের পর কবির আত্মার মাগফেরাত কামনায় ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ ‘মসজিদুল জামিয়া’-তে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
জয়পুরহাটের কালাইয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ, অনুমোদনহীন, অনিরাপদ খাদ্য ও পণ্য সংরক্ষণ এবং বিক্রির দায়ে ৬ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরের পাঁচশিরা ও উপজেলার নুনুজ বাজারে এ জরিমানা করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)মো. ইফতেকার রহমান।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, কালাই পাঁচশিরায় একটি বেকারির প্রতিষ্ঠানে ও নুনুজ বাজারে তিনটি দোকানে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার আইনে মোট ৪টি দোকানে ৯৫০০ টাকা, পেট্রোলিয়াম আইন ২০১৬ অনুযায়ী ১টি দোকানে ১৫০০ ও ধূমপান এবং তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি দোকানে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, বিভিন্ন দোকানে অনেক খাবার আছে যা মানুষের বা শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এজন্য আমরা এ অভিযান পরিচালনা করেছি। উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নওগাঁর পোরশায় আমন ধানের জমিতে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করে বিনষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। রোববার (২৪ আগষ্ট) রাতের কোন এক সময় উপজেলার খরপা গ্রামের মাঠে স্বর্না-৫ জাতের ধানে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। এতে ৭ জন কৃষকের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন আবু সাঈদ নামে এক ভুক্তভোগী কৃষক।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী কৃষক সূত্রে জানা যায়, গত ৩ বছর থেকে উপজেলার খরপা গ্রামের জামাল, সায়েম, কালাম, সালাম ও আবু সাঈদ সহ ৭ জন তাদের আত্মীয়স্বজন মিলে মাঠে ১০ বিঘা জমি চাষাবাদ করছেন। এ বছরও ওইসব জমিতে আমন মৌসুমে স্বর্না-৫ জাতের ধান রোপন করেছেন। আর দেড়-দুই মাস পর ওইসব ধান কৃষকদের ঘরে উঠার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই রোববার রাতের আধারে প্রতিপক্ষরা পুরো জমিতে ধানে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করেছে। এতে জমির সব ধানের গাছ শুকিয়ে গেছে। ধানের গাছ মরে যাওয়া হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষীরা। অর্থনৈতিক ভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তবে ঘটনায় স্থানীয় আব্দুল মান্নান চৌধূরী, আব্দুল লতিফ ও ইসমাঈল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষক সেকেন্দার বলেন- সোমবার সকালে জমিতে ফসল দেখতে গিয়েছিলাম। দেখা যায় জমিতে ধানের গাছ কোথাও সবুজ আবার কোথাও পাতা শুকিয়ে আছে। বেলা যত বাড়ছে ধানের গাছ ততই শুকিয়ে যাচ্ছে। দিনের মধ্যে প্রায় সব জমির ধান শুকিয়ে মরে গেছে। এখন সবগুলো ধানের গাছ মরা হয়ে আছে।
আরেক কৃষক কালাম বলেন- প্রতি বিঘা জমিতে আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা। আর দেড় মাস পরই এসব ধান ঘরে উঠার কথা ছিল। বিঘাতে ফলন পাওয়া যেতো অন্তত ২০-২২ মন। বর্তমানে ধানের দামও ভাল আছেন ১৪শ থেকে ১৬শ টাকা মন। ধান আর ঘরে উঠবে না।
অভিযোগকারী কৃষক আবু সাঈদ বলেন- আমরা ৩ বছর থেকে ওইসব জমিতে চাষাবাদ করে আসছি। রাতের আধারে প্রতিপক্ষসহ অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জন শ্রমিক দিয়ে ধানে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা অর্থনৈতিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এতে আমাদের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক অপরাধিদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচারের দাবী করছি।
এ ব্যাপারে আব্দুল মান্নান বলেন, ওই জমি চাচাতো ভাইদের। তারা নওগাঁ শহরে বসবাস করে এবং ওই জমি দেখভাল করে। যারা অভিযোগ করছে তারাই জমি দখল করে ধান রোপন করেছে। বর্গাদারদের তারা মারধর করে আহত করেছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে। জমি দখল বা ফসল নষ্টের সাথে আমার কোন সম্পৃক্তা নাই।
উপজেলার মর্শিদপুর ইউনিয়নের উপসহকারি কৃষি অফিসার সেলিম রেজা বলেন, জমিতে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। এতে জমির প্রায় ৭০ শতাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ধানের গাছে বেশি পরিমান পানি দিয়ে স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিঘায় যেখানে ২০-২২ মন ফলন হওয়ার কথা ছিল সেখানে ৫-৭ মন ফলন হতে পারে। মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু ফলস নষ্ট করা মোটেও ঠিক হয়নি।
পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান বলেন- বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। ঘটনাস্থলে তদন্ত করার জন্য পুলিশ পাঠানো হবে। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলো।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আজ এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এরপর আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন মনিটরে ছেলেকে গুলির দৃশ্যের ভিডিও দেখে বার বার চোখ মুছছিলেন।
এরপর প্রসিকিউসনের আবেদনে আগামীকাল এই মামলায় প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউসনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলায় অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে, আসামী পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়।
এরপর গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এই মামলার যে ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়, তাদের মধ্যে গ্রেফতার ৬ জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
এরা হলেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩০ জুন ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।
২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।
ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে, একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩৪৪টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৫ লাখ ৪ হাজার ভারতীয় জাল রুপিসহ দুই বাংলাদেশিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহেশপুর সীমান্তের খোসালপুর এলাকা থেকে তাদের দু’জনকে আটক করা হয়।
আটককৃত ওলিয়ার শেখ (৩৭) ও তার শিশু পুত্র আমান শেখ (০৫) কে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি। তাদের মধ্যে ওলিয়ার শেখকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আমান শেখ শিশু হওয়ায় তাকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ওলিয়ার শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার বেশরগাতী গ্রামের শামসুল হকের পুত্র।
আজ বেলা ১১টায় মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সহকারী পরিচালক মুন্সি ইমদাদুর রহমানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি জানায়, গতকাল মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খোসালপুর বিওপির নায়েক দীনবন্ধু রায়ের নেতৃত্বে সীমান্ত পিলার-৬০/১০৫ এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি। এসময় ৫ লাখ ৪ হাজার ভারতীয় জাল রুপিসহ ওলিয়ার শেখ নামে এক বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। ওলিয়ার শেখের ৫ বছর বয়সী শিশু সন্তান আমান শেখ এসময় তার সঙ্গে ছিল। পরে দুজনকেই মহেশপুর থানায় সোপর্দ করে বিজিবি।
বিজিবি আরও জানায়, ২০১৪ সাল থেকে ওলিয়ার শেখ ভারতের বিহারে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি দর্জির কাজ করতেন। ২০১৭ সালে বিহারের আরাবিয়া থানার এক নারীকে বিয়ে করেন ওলিয়ার। বিয়ে করার পর ২০২২ সাল থেকে বাগেরহাট সদর উপজেলার মারুফ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়মিত ভারতীয় জাল রুপি সংগ্রহ করতেন ওলিয়ার। ওই জাল রুপি তিনি ভারতে বসবাসকালে নিয়মিত ব্যবহার করতেন।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে মারুফের কাছ থেকে ৫ লাখ ৪ হাজার ভারতীয় জাল রুপি সংগ্রহ করেন ওলিয়ার শেখ। ওই রুপি নিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টাকালে তিনি বিজিবির হাতে আটক হন।
মহেশপুর থানার ওসি সাজ্জাদুর রহমান বাসসকে বলেন, ভারতীয় জাল রুপিসহ আটক ওলিয়ার শেখের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। আটক ওলিয়ার শেখের শিশু পুত্র আমানকে মানবিক দিক বিবেচনায় পরিবারের জিম্মায় দেয়া হবে।
মন্তব্য