নাইজেরিয়ায় বিরোধীদের সঙ্গে লড়াইয়ের একপর্যায়ে দেশটির সশস্ত্র সংগঠন বোকো হারামের প্রধান আবুবকর শেকাউ আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
স্থানীয় সময় রোববার আইএসের পশ্চিম আফ্রিকা প্রাদেশিক শাখার (আইএসডব্লিউএপি) কাছ থেকে পাওয়া অডিও বার্তায় এ দাবি করা হয় বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে বোকো হারাম নেতা শেকাউয়ের মৃত্যুর খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশ হয়েছিল।
অডিও বার্তাটিতে কানুরি ভাষায় যে গলা ভেসে আসে, তার সঙ্গে আইএসডব্লিউএপির নেতা আবু মুসাব আল-বারনাউয়ির গলার মিল পাওয়া যায়।
বার্তায় বলা হয়, ‘দুনিয়ায় অপদস্থ হওয়ার চেয়ে পরকালে অপদস্থ হওয়াটাই ঠিক মনে করেছেন শেকাউ। বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজের জীবন নিয়েছেন তিনি।’
নিজেদের নেতার মৃত্যুর বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি বোকো হারাম। এক দশকের বেশি সময় ধরে নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বে বিদ্রোহ করে আসছে সংগঠনটি।
নাইজেরিয়ার সামবিসা বনে বোকো হারামের ঘাঁটিতে কীভাবে নিজেদের যোদ্ধারা প্রবেশ করেছিল, তা অডিও বার্তায় বর্ণনা করে আইএসডব্লিউএপি। ওই সময় শেকাউ তার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
অডিও বার্তায় বক্তা বলেন, ‘সেখান থেকে শেকাউ পিছু হটে পালিয়ে যায়। পাঁচ দিন তিনি বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান। আইএস যোদ্ধারা তার অবস্থান জানার আগ পর্যন্ত তন্নতন্ন করে তাকে খুঁজে বেড়ায়।’
একপর্যায়ে বনে খোঁজ পাওয়ার পর শেকাউ ও তার অনুসারীদের আত্মসমর্পণের অনুরোধ জানায় আইএসডব্লিউএপি যোদ্ধারা। তবে যোদ্ধাদের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে নিজের জীবন নেন শেকাউ।
বার্তায় বক্তা বলেন, ‘আমরা অনেক আনন্দিত। শেকাউ এমন এক ব্যক্তি যিনি অকল্পনীয় সন্ত্রাস ও নৃশংসতা চালিয়েছেন।’
গত মাসে সংঘর্ষে শেকাউয়ের মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন ওঠার পর নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী বিষয়টি তদন্ত করবে বলে জানিয়েছিল।
নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ইয়েরিমা বিবিসিকে বলেন, কী ঘটেছে সেনাবাহিনী তা খতিয়ে দেখছে। নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়ার আগে কোনো বিবৃতি দেয়া হবে না।
দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা এক সাংবাদিক বলেন, নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বে সামবিসা বনে বোকো হারামের ঘাঁটিতে আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধারা হামলা চালায়। সেখানেই একপর্যায়ে সংগঠনের নেতা শেকাউয়ের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:ছিয়াত্তর বছর বয়সী আবদুর রহিম স্ত্রীকে হারিয়েছেন দেড় যুগ আগে। পরিবারের সদস্য বলতে এক ছেলে, তাও থাকেন প্রবাসে। ছেলে প্রবাসে যাওয়ার পর অন্য ঘরে চলে গেছেন ছেলের বৌও। তাই রান্না-বান্না থেকে শুরু করে সব কিছুই করতে হয় নিজেকে।
জীবন যুদ্ধে তিনি কখনও দমে যাননি, তবে এবার হার মেনেছেন টিউবওয়েলের পানির কাছে। ১৫ থেকে ১৬ বার টিউবওয়েল চাপার পরেও মিলছে না এক গ্লাস পানি। তাই পানি সংকটের কারণে গোসল থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সব কাজ হচ্ছে ব্যাহত।
তাই অধিকাংশ সময় বাড়ির পাশে থাকা মসজিদে গিয়ে পানির চাহিদা পূরণ করছেন আবদুর রহিম।
এদিকে গৃহবধূ ছানোয়ারা খাতুন গৃহস্থালির সব কাজ করেন একাই। বাড়িতে রয়েছে তিনটি গাভি ও চারটি ছাগল। এর মধ্যেই আজ সপ্তাহ দুয়েক ধরে টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। খাওয়া থেকে ওজু, গোসল সব কিছুতেই বেগ পেতে হচ্ছে পানি সংকটের কারণে।
ছানোয়ারা খাতুন জানান, তীব্র তাপদাহের মধ্যে আজ সপ্তাহখানেক ধরে বাড়িতে থাকা গরুর গোসল করাতে পারেননি তিনি, তবে নিজে প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে গোসল করে আসেন।
মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের হস্তচালিত টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে পানির সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে। একদিকে গৃহস্থালির কাজে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বোরো চাষে পানির সংকটের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তারা সুপেয় পানির সংকটের কথা জানান। বিশেষ করে মুজিবনগর উপজেলার, জয়পুর, আমদহ, তারানগর, বিশ্বনাথপুর; সদর উপজেলার শালিকা, আশরাফপুর, আমদাহ, বুড়িপোতা, আলমপুর এবং গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের আমতৈল, মানিকদিয়া, কেশবনগর, শিমুলতলা, রইয়েরকান্দি, সহড়াবাড়িয়া, মিনাপাড়া, ভোলাডাঙ্গা, কুমারীডাঙ্গা কাথুলি ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া, ধলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলতি শুষ্ক মৌসুম শুরু থেকেই সুপেয় পানির সংকট প্রকট হচ্ছে।
দীর্ঘ সময় ধরে অনাবৃষ্টি, ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা, এবং পুকুর-খাল-বিল ভরাটের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সীমান্তবর্তী মেহেরপুর জেলার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নামছে। আগামীতে বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে বলেও জানান তারা।
গ্রামবাসীরা বলছেন, গ্রীষ্মকাল শুরু না হতেই এবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। অথচ গ্রামে সুপেয় পানির জন্য নলকূপই শেষ ভরসা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, জেলার গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির স্তর প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ ফুট নিচে নামছে। ১০ বছর আগেও এই এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ ফুটের মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেত। অথচ এখন পানির জন্য যেতে হয় ৩০০ ফুটেরও বেশি গভীরে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, গত কয়েক বছরে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর ১০ থেকে ১৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে হস্তচালিত অনেক টিউবওয়েল। যেখানে আগে ভূগর্ভের ৫০ থেকে ৬০ ফুট গভীরতা থেকেই পাওয়া যেত সুপেয় পানি। গত এক দশকে ক্রমেই পানির স্তর নিচে নেমে গেছে।
জেলায় গভীর-অগভীর মিলিয়ে ৯ হাজার ৯১৩টি নলকূপ আছে। এর মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ২ হাজার ২৩৯টি।
গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা গ্রামের পল্লি চিকিৎসক মতিন বলেন, ‘আমি ২০ বছর ধরে গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা দিয়ে বেড়াই। আজ ১০ দিন ধরে আমার বাড়ির নলকূপে পানি উঠছে না। রোদের মধ্যে সারা দিন গ্রাম গ্রাম ঘুরে বাড়ি এসে যদি পানি না পাই তাহলে কেমন লাগে? আমি তাই মসজিদের নলকূপে গিয়ে গোসল সেরে আসি।’
একই এলাকার দিনমজুর সিরাজ বলেন, ‘আমি সারা দিন মাঠে কাজ করি। বাড়িতে দুটি গরুও পালন করি অথচ গরু দুটি আজ কয়দিন গা ধোয়াতে পারিনি। আবার মাঠে এক বিঘা ধানের আবাদ আছে, তাতে সেচ দিতে গিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে। যেখানে দুই ঘণ্টা মেশিনে পানি দিলে হয়ে যেতো। সেখানে এখন চারটা ঘণ্টা পানি দিয়েও হচ্ছে না।’
এ অঞ্চলের আবহাওয়া নির্ণয়কারী চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গাসহ এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অঞ্চলে আপাতত আজকে বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।’
মেহেরপুরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন জানান, সুপেয় পানির সমস্যা নিরূপণে যেসব এলাকায় সংকট সেখানে ১০টি বাড়িকে কেন্দ্র করে একটি ৯০০ ফুট গভীর নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এসব এলাকায় ৫০০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হবে, তবে অতিবৃষ্টি ও পানির অপচয় রোধ করা না গেলে পানি সংকটের সমাধান মিলবে না।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্তিতে বুধবার প্রাণ হারানো শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হতাহত শ্রমিক, তাদের পরিবার, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পুলিশ সদস্যরা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই সহস্রাধিক শ্রমিক।
ট্র্যাজেডির বার্ষিকীতে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিক ও সংগঠনগুলোর সদস্যরা।
সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।
একে একে নিহত শ্রমিকের পরিবার, আহত শ্রমিক, পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ফুলের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ওঠে বেদি। ওই সময় নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, র্যালি ও মানববন্ধন করা হয়।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের অনেক স্বজন প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।
একই সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরও দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের চকরিয়ায় কক্সবাজারগামী একটি ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা স্টেশনে এ দুর্ঘটনার পর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ। খবর ইউএনবির
কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ডুলাহাজারা স্টেশনে প্রবেশের সময় ইঞ্জিন ও দুইটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি জানিয়ে গোলাম রব্বানী বলেন, উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে
ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ভয়াবহ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। ৯ তলা ভবনের পুরোটাই ধসে পড়ে আহত হয়েছেন অনেক শ্রমিক। পঙ্গুত্ব নিয়ে বছরের পর বছর ধরে মানবেতর দিনযাপন করছেন তাদের অনেকে।
শারীরিক যন্ত্রণায় অসুস্থ হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছেন কেউ কেউ। যারা বেঁচে আছেন এখনও তাদের তাড়া করে দুঃসহ সেদিনের স্মৃতি। পুনর্বাসন আর ক্ষতিপূরণের আশায় বুক বেঁধে আছেন রানা প্লাজার সেই ক্ষতিগ্রস্তরা।
শ্রমিক ও তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, ১১ বছর আগে সেদিন পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত হতাহতদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মালিক কিংবা সরকারপক্ষ।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনার ৫টি পোশাক কারখানার ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক মারা যান। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রায় ২ সহস্রাধিক শ্রমিক।
কী ঘটেছিল সেদিন, সে কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন আহত শ্রমিক শিলা বেগম। তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল সকালে কারখানায় আসার পর মালিকপক্ষ ছুটি দিয়ে দেয়। আবার পরদিন ২৪ এপ্রিল বিকেলে শিপমেন্ট আছে জানিয়ে কারখানায় বাধ্যতামূলক আসার কথা জানিয়ে মাইকিং করে। না আসলে ওভারটাইমের টাকা কেটে নেয়ার কথা বলে মালিকপক্ষ।
তিনি বলেন, ২৪ এপ্রিল সকালে কারখানায় সব শ্রমিক আসার পর সকাল পৌনে ৮টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারটের চালু করা হয়। এরপরই হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো কারখানা ধুলোয় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। ওই সময় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি বিশাল আকৃতির বীমের নিচে আটকে পড়ে আছি।
শিলা বেগম বলেন, উদ্ধারকারীরা এরপর আমাকে বাঁচাতে পারলেও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। অপারেশনের পর এত বছর ধরে নানা শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। ওই সময় সরকার ও বিদেশি বায়ারদের সামান্য সহযোগিতা পেলেও তা চিকিৎসার পেছনেই শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সরকার কিংবা মালিকপক্ষ দীর্ঘ ১১ বছর হয়ে গেলেও আমাদের কোনো খোঁজ রাখেনি। এ রকমভাবে বেঁচে থাকার চাইতে সেদিন মরে গেলেও অনেক শান্তি পেতাম। অন্তত এত কষ্ট বয়ে বেড়াতে হতো না। অর্থাভাবে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হতো না। আমরা দ্রুত আমাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন চাই।
মনির হোসেন নামে ষষ্ঠ তলায় কাজ করা আরেক শ্রমিক বলেন, ঘটনার দিন আমিসহ আরও সাতজন ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছিলাম। পাশেই আরও দুই-তিনজন আটকে পড়ে বাঁচার আকুতি করছিল। সেই দৃশ্য আমি কোনদিনও ভুলতে পারব না। ওই ঘটনায় আমার কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। শরীরের অনেক জায়গায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হই।
তিনি বলেb, রানা প্লাজা ভবন ধসের ১১ বছর পার হয়ে গেলেও আমি ক্ষতিপূরণ পাইনি। সাহায্য হিসেবে যে অর্থ পেয়েছিলাম তা চিকিৎসার পেছনেই খরচ হয়ে গেছে। শুধু ২৪ এপ্রিল আসলেই আমাদের খোঁজ করে সাংবাদিকরা। তা ছাড়া আর কেউ আমাদের খবরও নেয় না। আমরা দুঃসহ যন্ত্রণার জীবন নিয়ে বেঁচে থেকেও যেন মরে গেছি।
গুরুতর আহত ইয়ানুর আক্তার নামে এক শ্রমিক বলেন, আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে বাধ্য হয়েই রানা প্লাজায় চাকরি নিয়েছিলাম। চতুর্থ তলার একটি কারখানায় হেলপার পদে কাজ করতাম। ছয় ভাই-বোন ও মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু সেদিনের ঘটনা আমার জীবন থেকে সব কেড়ে নিয়ে গেছে। ভবনের নিচে চাপা পড়ার কারণে আমার হাত ও পায়ে ছয়টি অপারেশন করতে হয়েছে। এরপর থেকে কাজ তো দূরের কথা স্বাভাবিক কাজও করতে পারি না। তারপরও পরিবারকে বাঁচাতে কাজ খুঁজে যাচ্ছি। যখন যা পাই তাই করি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার ১১ বছর পার হয়ে গেল এখনও আমাদের পুনর্বাসনে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রতিবছর এই দিনে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে আসি আমাদের দুঃখের কথাগুলো জানানোর জন্য। কিন্তু মিডিয়ায় সেগুলো প্রচার হলেও তা কেউ শোনে না বলে আমার মনে হয় না। আমাদের চোখের পানির মূল্য যেন কারও কাছে নেই। অভিশপ্ত এই জীবন নিয়ে বাঁচা আর সম্ভব হচ্ছে না। একে তো শারীরিক যন্ত্রণা। তার উপর মাঝে মধ্যেই সেই ভয়ানক স্মৃতি মনে হলে ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বাংলাদেশে এই যে, এত বড় ঘটনা ঘটল। বিশ্বের মধ্যে এত বড় ট্র্যাজেডি। এই ঘটনায় আইন অনুযায়ী গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকলেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং তাদের ব্যাপারে কোনো আওয়াজ নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থাও নেই।
তিনি বলেন, শুধু ভবন মালিক রানা শাস্তি পাচ্ছে, রানা জেলে আছে। কিন্তু যারা যারা গার্মেন্টসের মালিক তারা সবাই বাইরে। তারা হয়তো তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছে। অথচ ওই কারখানাতে ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করত। তারা হয়ত বড় ব্যবসা করছে। মালিকরা ব্যবসা করছে। শুধু এটাতে ভিকটিম হয়েছে যারা শ্রমিক তারা। চিকিৎসা, বিচারের ও পুনর্বাসনের দাবিতে তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ১১ বছরেও এর কোনো প্রতিকার হয়নি। উপরন্তু অনেক ঘটনা আছে, মামলা আছে সেসব মামলায় কিন্তু দ্রুত শাস্তি হয়, বিচার হয়। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা হয়। কিন্তু এই রানা প্লাজার এত বড় ঘটনার পরেও আমরা দেখছি, বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি এবং এটার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা শাস্তি পায়নি। আদৌ হবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই।
গার্মেন্টস খাতে এর প্রভাব পড়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা গার্মেন্টস সেক্টরে প্রভাব পড়বে অবশ্যই। গার্মেন্টসের মালিকরা চাচ্ছে যে, গার্মেন্টসে যদি কাজ করতে এসে কোনো শ্রমিক মারা যায় তাহলে এর জন্য তার কোনো শাস্তি হবে না। বিচারের আওতায় আনা হবে না। এর আগেও তাজরিনসহ বিভিন্ন গার্মেন্টসে দুর্ঘটনা ঘটেছে। মানে মানুষের যে বিচার পাওয়ার যে অধিকার সেই জায়গাটা কিন্ত হারিয়েছে। শ্রমিকরা কর্মস্থলে নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারছে না।
খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা যারা আমাদের প্রডাক্টটা ব্যবহার করে তারাও কিন্তু আওয়াজ তুলছে। এখনও চলছে যাতে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হয়। কিন্তু আওয়াজ ওঠার পরও আমরা দেখছি যে যথাযথ ব্যবস্থা কিন্তু নেয়া হচ্ছে না। যার কারণে এই ধরনের পরিস্থিতি হলে আমাদের দেশের গার্মেন্টসের এক্সপোর্টে কিন্তু এই প্রভাবটা পড়বে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে ব্যাংকক পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১টা ০৮ মিনিটে (স্থানীয় সময়) পৌঁছালে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাকে স্বাগত জানান। খবর ইউএনবির
বিমানবন্দরে তাকে স্ট্যাটিক গার্ড অফ অনার এবং ১৯ বার গান স্যালুট দেয়া হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতেই এ সফর।
১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এ প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সফর এটি।
২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে লেটার অফ ইনটেন্টসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতা নথি সই হবে।
‘দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণে পর্যটন খাতে সহযোগিতা ও শুল্ক সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আরও ২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চাইবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ জানান, নৌ সংযোগের বিষয়েও আলোচনা হবে।
২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে নথি সই শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাকলাওচাওহুয়া এবং ও রানি সুথিদা বজ্রসুধাবিমালাক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে এ বহুপক্ষীয় সফরে ২৫ এপ্রিল কমিশন ফর ইউএনএসকাপের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে সেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়া আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অষ্টম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ অ্যাজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এ অধিবেশনে একত্রিত করবে।
আরও পড়ুন:অতি তীব্র দাবদাহ, সঙ্গে কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পাবনাসহ এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন। অনাবৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে আম, লিচু ও ফসল।
তীব্র এ গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে পাবনা জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকার দারুল আমান ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে খোলা আকাশের নিচে বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে ইসতিসকার নামাজ ও দোয়া করেছেন পাবনাবাসী।
নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড খরা থেকে রেহাই পেতে মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পাবনা ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক ও মসজিদে আত তাকওয়ার পেশ ইমাম মাওলানা আবদুস শাকুর।
তাওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তাওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা হয়। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রার্থনাও করা হয়।
নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে আবদুস শাকুর বলেন, ‘পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দেয় এবং কূপ ও ঝরনা পানি কমে যায় অথবা নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই।’
এদিকে তীব্র গরমের মধ্যে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার পাবনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে এ তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।
মন্তব্য