কোভিড-১৯ মহামারির মারাত্মক দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতে ৬২৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজধানী দিল্লিতে চিকিৎসকদের মধ্যে সর্বাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
দিল্লিতে কোভিডের কারণে ১০৯ জন চিকিৎসক মারা গিয়েছেন, তারপরেই বিহারে ৯৬ জন মারা গেছেন।
করোনা এদেশে থাবা বসানোর পর থেকে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। তবে ওই রাজ্যে চিকিৎসকের মৃত্যু তুলনামূলক কম। সেখানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারা গিয়েছেন ২৩ জন।
উত্তরপ্রদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারা গিয়েছেন ৭৯ জন। রাজস্থানে মারা গিয়েছেন ৪৩ জন। ঝাড়খণ্ডে ৩৯ জন। অন্ধ্রে ৩৪ জন, তেলঙ্গনায় ৩২ জন, গুজরাটে ৩১ জন চিকিৎসক মারা গিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারা গিয়েছেন ৩০ জন চিকিৎসক।
কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনে সহায়তা করা একটি দাতব্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রবিকান্ত সিংহ বলেছিলেন, তিনি অনেক রাত ঘুমানোর জন্য লড়াই করেছিলেন।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, ‘কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ চিকিৎসকদের জন্য জীবন-পরিবর্তনের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। সবচেয়ে খারাপ দিকটি ছিল, অক্সিজেনের অভাবে আমরা অনেক জীবন বাঁচাতে পারিনি।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ পেরিয়ে গেছে। সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়েছে চিকিৎসকদের।
অনেক সময়ই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, কাকে বাঁচাবেন আর কাকে নয়। কারণ অক্সিজেন আর ওষুধের জোগান ছিল সীমিত। আর এই করতে গিয়েই নিজেদের দিকে তাকাতে পারেননি চিকিৎসকরা। বলি হয়েছেন মারণ রোগের।
কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার বিসয়ক সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। তিনি শহরের গোপীনাথ জিউর মন্দির, বৈশাখী সংঘ, আমলাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দিরসহ একাধিক পূজামণ্ডপে গিয়ে দুর্গাপূজার সার্বিক আয়োজন ঘুরে দেখেন এবং ভক্তদের সঙ্গে পূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এ সময় সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া সদর -৩ আসনের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে গিয়ে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি এবং সেই সঙ্গে তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান বলেছেন, ধর্ম যার যার কিন্তু দেশটা সবার। এ সময় তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।’
স্থানীয় সাধারণ মানুষ সাবেক সংসদ সদস্যকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাদের মতে, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি সবসময় মানুষের পাশে থেকেছেন এবং সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করেছেন।
এ সময় কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ফুহাদ রেজা ফাহিম, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোজাক্কির রহমান রাব্বি, বিএনপি নেতা আশরাফুল করিম শাওন, জব্বার মিলন, আরাফাত জুবায়ের নয়নসহ জেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ থেকে ‘জওয়ান’—তিন দশক ধরে বলিউড শাসন করছেন শাহরুখ খান। যুগের পর যুগ ধরে বক্স অফিসে রাজত্ব করেছেন, পেয়েছেন কোটি দর্শকের ভালোবাসা।
সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা থেকে বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেলিং—নানা মাধ্যম থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ কামিয়েছেন তিনি। সেই সুবাদে প্রথমবারের মতো বিলিয়নিয়ার ক্লাবের সদস্য হলেন শাহরুখ খান। ২০২৫ সালের হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্টে প্রথম স্থানে জায়গা পেয়েছেন তিনি।
তালিকাটি প্রকাশ করেছে হুরুন রিসার্চ ইনস্টিটিউট। প্রতিবছর এ তালিকা প্রকাশ করে গবেষণাপ্রতিষ্ঠানটি, যেখানে ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকাদের সম্পদের হিসাব তুলে ধরা হয়।
বলিউডের সবচেয়ে ধনী তারকা হিসেবে তাঁর নাম তালিকায় এসেছে। তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বলিউডের বাদশাহ শাহরুখ খান (৫৯) এবার প্রথমবারের মতো বিলিয়নিয়ার ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১২ হাজার ৪৯০ কোটি রুপি।’
এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন জুহি চাওলা ও তাঁর পরিবার, যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৭ হাজার ৭৯০ কোটি রুপি। তৃতীয় স্থানে হৃতিক রোশন, যাঁর সম্পদ ২ হাজার ১৬০ কোটি রুপি। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছেন করণ জোহর ও অমিতাভ বচ্চন।
২০২৪ সালের হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্টে প্রথমবার প্রবেশ করেছিলেন শাহরুখ খান। তখন তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৩০০ কোটি রুপি।
অভিনয়ের পাশাপাশি শাহরুখ খান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্টের অন্যতম মালিক। তিনি আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সেরও অন্যতম মালিক।
বেনেডিথ কামবারব্যাচের প্রসঙ্গে এলেই সবার আগে আসে ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ’–এর চরিত্রের কথা। সারা বিশ্বে মার্ভেলের সুপারহিরো–ভক্তদের কাছে জনপ্রিয় চরিত্রটি। ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ’–এর একটি লুকে শাহরুখ খান। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাহরুখ খানের বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। এক্সে (সাবেক টুইটার) তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ৪ কোটি ৩৯ লাখ এবং ইনস্টাগ্রামে ৪ কোটি ৮৬ লাখ।
এই বছর ‘জওয়ান’ ছবির জন্য যুগ্মভাবে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন শাহরুখ খান। এটি ক্যারিয়ারের প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জওয়ান’ সিনেমাটি ভারতের বক্স অফিসেই আয় করেছিল ১ হাজার কোটি রুপি।
ঝিনাইদহের মহেশপুরে মাত্র ৩ টাকায় মেলে সুস্বাদু রসগোল্লা। শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। আর এ মিষ্টির স্বাদ একবার নিলে আবারও কিনতে হয়। আকারে ছোট হলেও স্বাদের দিক দিয়ে অনেক বড় দোকানের মিষ্টিকেও হার মানায় এই রসগোল্লা। খাঁটি ছানার তৈরি হওয়ায় মুখে দিলেই গলে যায়। নেই কোনো ভেজাল, কৃত্রিম রঙ বা অতিরিক্ত ঘ্রাণ। শুধুই খাঁটি দুধের মিষ্টতা।
জানা যায়, উপজেলার শিবানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমাল ঘোষ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজ হাতে তৈরি করে মিষ্টি বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেলে করে বের হন তিনি। মহেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করেন নিজের বানানো রসগোল্লা।
আগে প্রতি পিস বিক্রি হতো ২ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকা করে। তবে দাম সামান্য বাড়লেও ক্রেতার চাহিদা কমেনি, বরং দিন দিন বাড়ছেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পিস রসগোল্লা বিক্রি করেন তিনি। সারাদিন রসগোল্লা বিক্রি করে যে টাকা আয় করেন, সেই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।
স্থানীয় ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান বাজার মূল্যে মাত্র ৩ টাকায় এত সুস্বাদু রসগোল্লা পাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমরা প্রতিদিনই তার কাছ থেকে রসগোল্লা কিনি। দাম কম, স্বাদও অসাধারণ।
আরেক ক্রেতা কলেজ শিক্ষক মতলেবুর রহমান বলেন, বড় দোকানের রসগোল্লার চেয়ে সুমাল ঘোষের বানানো রসগোল্লা অনেক বেশি খাঁটি ও সুস্বাদু। তাই বাজারে যত মিষ্টির দোকানই থাকুক, মানুষ ওনার কাছেই ভিড় জমায়। আর আমি নিয়মিত তার রসগোল্লা খেয়ে থাকি। এমনকি বাসায়ও নিয়ে জায়।
মহেশপুরের বাসিন্দা অনিক হাসান বলেন, উপজেলাজুড়ে সুমাল ঘোষের রসগোল্লা এখন এলাকার একটি জনপ্রিয় নাম। কম দামে মানসম্মত মিষ্টি পাওয়ায় প্রতিদিনই তার ক্রেতা বাড়ছে। আর সারাদিন রসগোল্লা বিক্রি করে যে টাকা আয় করে সেই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।
এ ব্যাপারে মিষ্টি বিক্রেতা সুমাল ঘোষ বলেন, কম লাভ, বেশি বিক্রিই আমার ব্যবসার নীতি। দিনে এক হাজার পিস বিক্রি করতে পারলেই সংসার চলে যায়। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় মানুষ আমার মিষ্টির স্বাদ পছন্দ করছে, এটিই আমার বড় পাওয়া।
পঞ্চগড় জেলার মাটি এবং আবহাওয়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে ভিন্ন। মাটিতে পাথর এবং বালির আধিক্য থাকায় অর্থকরী ফসল উৎপাদনে ঝুঁকি ও লাভ সীমিত হওয়ার কারণে চাষিরা লাভজনক উচ্চফলনশীল ফসল উৎপাদনের কৌশল খুঁজছেন। এই তালিকায় শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির পাশাপাশি মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদনে ঝুঁকে পড়েছেন বেশি। উৎপাদনমুখী এই প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে পাশাপাশি সচ্ছলতাও ফিরেছে প্রান্তিক চাষিদের মাঝে।
এদিকে জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় কৃষকরা মসলা জাতি ফসল হলুদ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্থানীয় কৃষকদের আশা, এবার উৎপাদন ভালো হলে লাভবান হবেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে সোনাপোতা বানিয়াপাড়া এলাকার মাঠজুড়ে কৃষকরা হলুদ চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কৃষকরা জমি প্রস্তুত, আগাছা দমনসহ নানা কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
স্থানীয় কৃষক আলহাজ মো. ‘আব্দুল খালেক জানান, তিনি প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। এতে তিনি সাড়ে তিন মণ বীজ রোপণ করেছেন। প্রতি মণ বীজ কিনতে হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা করে। বীজ, হালচাষ, সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ মিলে তার ৩০ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তিনি আশা করছেন, এ জমি থেকে ৬০ থেকে ৭০ মণ পর্যন্ত হলুদ উৎপাদন হবে।’
অন্য এক কৃষক জানান, ‘ধান, ভুট্টা কিংবা আলুর তুলনায় হলুদে ঝুঁকি কিছুটা কম। বাজার ভালো থাকলে হলুদ চাষে লাভও অনেক বেশি হয়।
দেবীগঞ্জ উপজেলার তিস্তার চর এলাকার কৃষকরা জানায়, ‘এই এলাকার অনেক বালুময় জমি দীর্ঘদিন ধরে পতিত অবস্থায় পড়ে ছিল। ১০ বছর ধরে কৃষকরা এসব জমিতে হলুদ আদাসহ নানা রকম ফসল আবাদ করে লাভবান হচ্ছে। বিঘাপ্রতি ২৫ হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘাতেই লক্ষাধিক টাকার হলুদ বিক্রি সম্ভব বলে তারা জানায়।’
আরেক হলুদচাষি মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এই এলাকায় যে হলুদ আবাদ হয় তা বাজারে খুব চাহিদা। সরকারিভাবে ক্ষুদ্র চাষিদের সহায়তা করতে পারলে চাষিরা ব্যাপক আকারে হলুদের চাষ করে সফলতা অর্জন করতে পারবে।’
অন্যদিকে, স্থানীয় বাজারেও চলছে হলুদ নিয়ে সরব বেচাকেনা। শালডাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী সুফি বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে হলুদের গুঁড়ো প্রতি কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা হলুদও স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, পঞ্চগড়ের মাটি ও আবহাওয়া হলুদ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। আগে যে জমি শুধু ধান বা ভুট্টার জন্য ব্যবহৃত হতো, এখন সেখানে কৃষকরা হলুদসহ বিভিন্ন মসলা ফসলের দিকে ঝুঁকছেন।
কৃষকরা আশা করছেন, এবার ফলন ভালো হলে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করার পর উল্লেখযোগ্য লাভবান হবেন তারা।
দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. নাঈম মোরশেদ বলেন, ‘এ উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ৫২০ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হচ্ছে। কৃষকদের উৎসাহিত করতে আমরা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। রোগবালাই দমন, সঠিক সার প্রয়োগ, বীজ নির্বাচনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে হলুদ চাষকে আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘হলুদ শুধু দেশীয় বাজারেই নয়, বিদেশেও রপ্তানির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষকরা যদি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সঠিকভাবে চাষ করতে পারেন, তাহলে হলুদ হতে পারে উত্তরবঙ্গের কৃষকদের অন্যতম আয়ের প্রধান উৎস।
মসলাজাত এসব ফসলে চাষিদের আগ্রহ থাকায় এবং ভালো ফলন পাওয়ায় কৃষকদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ। স্বল্প খরচে অধিক মুনাফায় এই হলুদ চাষে চাষিরা লাভবান হওয়ায় দিন দিন হলুদ চাষের পরিধি বাড়ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বলেন, এই অঞ্চলটিকে ইতোমধ্যে কৃষিবান্ধব অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, অর্থকরী ফসল ছাড়াও এখানে উৎপাদিত হচ্ছে, মালটা, পেয়ারা কলাসহ মসলাজাত নানা ফসল। সুষ্ঠু বাজারজাত এবং উৎপাদিত ফসলের সন্তোষজনক দাম, এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে চাষিদের সহায়তা করা গেলে পঞ্চগড়ের উৎপাদিত হলুদ এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বন্ধু, বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রাইমাটোলজিস্ট, নৃতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ সংরক্ষণকর্মী ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আজ এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রাইমাটোলজিস্ট, নৃতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ সংরক্ষণকর্মী।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিরলস কর্মী হিসেবে জেন শান্তি, টেকসই উন্নয়ন, ন্যায়বিচার এবং পৃথিবীর সব প্রাণের পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৃতি আজ তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কণ্ঠস্বরকে হারাল। এ ক্ষতি আমাদের হৃদয়ে গভীর বেদনা তৈরি করেছে। আমি আজ তাঁর অসামান্য অর্জন ও অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, যা তাঁর পার্থিব জীবনশেষের পরও দীর্ঘকাল ধরে প্রভাব বিস্তার করবে।’
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু জেন নব্বইয়ের দশকে এই দেশে এসে গ্রামীণ ব্যাংকের নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রমে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এবং আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নিজের কাজে সেই নীতিমালা প্রয়োগ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তিনি আমাদের দেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। জেন আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছেন এবং আমাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। এমনকি সম্প্রতি জুন ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত সামাজিক ব্যবসা দিবসের সম্মেলনেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তাঁর সমর্থন ও অনুপ্রেরণার জন্য আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। তিনি শুধু আমাকে নয়, পৃথিবীর কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন’।
তিনি আরো বলেন, ‘তোমার আত্মা শান্তিতে থাকুক, জেন। পৃথিবী তোমাকে গভীরভাবে মিস করবে।’ সূত্র : বাসস
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও হরিজন সেবক সমিতি আয়োজিত মিরন জিল্লা সিটি কলোনি পূজা মণ্ডপ আজ রাতে পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এর পক্ষ থেকে শারদীয় শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও ডিএসসিসি প্রশাসক। এছাড়া, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আরতি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও হরিজন সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় করেন।
পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বলেন, "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ আমাদের বাংলাদেশ। জুলাই পরর্বতী এই বাংলাদেশে ধর্মের নামে, গোষ্ঠীর নামে, সম্প্রদায়ের নামে কোনো বৈষম্য থাকবে না।" তিনি বলেন, মাননীয় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার নির্দেশক্রমে প্রতিটি জেলায় হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, হরিজন সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়ন ও সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্তির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, "ডিএসসিসি এলাকায় ১৬৯ টি পূজা মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা উৎযাপিত হচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, পূজা নির্বিঘ্ন করতে মণ্ডপ ও তৎসংলগ্ন এলাকার রাস্তা মেরামত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশক নিধনের বিশেষ ব্যবস্থা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, ডিএসসিসিতে কর্মরত হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য দশতলাবিশিষ্ট চারটি ভবন নির্মাণসহ সকল নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান।
পূজা পরিদর্শনে ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে। সবাই ভোট দিতে পারবেন। ভোট হবে দিনের বেলা, রাতের বেলা নয়। নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পুরোনো ঠিকানায় চলে যাব। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সুযোগ সব সময় আসে না। একবার সুযোগ আসতে ৫৪ বছর লেগে যায়। আবার কবে সুযোগ আসবে জানি না। তাই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যই শক্তি, শক্তিই শান্তি।’
রাজধানীর বকশিবাজারে গতকাল বুধবার সকালে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ৫৪ বছর পর সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘অতি আধুনিক শিক্ষার নামে মাদ্রাসা শিক্ষায় কোরান-হাদিস থেকে সরে গিয়ে কোণঠাসা হয়ে গেছে। মনে রাখতে হবে মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষায়িত শিক্ষা। আধুনিকতার পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার মূল ভিত্তি থাকতে হবে কোরান এবং হাদিস, ফেকাহ।’
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আলিয়া পদ্ধতির মাদ্রাসার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। অনেক যোগ্য ব্যক্তি এখানে তৈরি হয়েছেন। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আরবি, ইংরেজি জানলে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পাবেন।’
রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে যুগ যুগ ধরে আলিয়া মাদ্রাসা ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নামে দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করতে হবে। এ সময় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমদের আল্লাহ এক, কোরান এক, কেবলা এক। এই মিল আমাদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে।’
মন্তব্য