বিরোধী দলগুলো বহুল প্রতীক্ষিত সমঝোতায় পৌঁছানোর ফলে ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ডানপন্থি ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেট।
এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটছে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর শাসনকাল।
তবে ক্ষমতার চূড়ান্ত পালাবদলের জন্য পার্লামেন্ট নেসেটে আস্থা ভোটে জয় নিশ্চিত করতে হবে নতুন জোট সরকারকে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, জোট সরকার গঠনে বুধবার সমঝোতায় পৌঁছেছে বিরোধী দলগুলো। মধ্যপন্থি ইয়েশ আতিদ পার্টির প্রধান ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ইয়ার ল্যাপিড আটটি দলের জোট ঘোষণা করেছেন।
জোটে আছে আরব-ইসরায়েলি রা’ম পার্টিও।
জোটের বাকি দলগুলো হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনি গানৎজের মধ্যপন্থি ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট, মধ্য-ডানপন্থি ও ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী ইসরায়েল বেইতেইনু, সমাজতান্ত্রিক ও গণতন্ত্রপন্থি লেবার পার্টি, মধ্য-ডানপন্থি ও ডানপন্থি নিউ হোপ এবং বামপন্থি ও সমাজতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক মেরেৎজ।
সবগুলো দল মিলে সরকার গঠনে ১২০ আসনের পার্লামেন্টে ন্যূনতম ৬১টি আসন নিশ্চিত করেছে।
এ জোটের মাধ্যমে ইসরায়েলের ডান, বাম ও মধ্যপন্থিরা এককাতারে আসবেন। আদর্শগত অবস্থান থেকে এক না হলেও নেতানিয়াহুকে উৎখাত করার লক্ষ্যে জোটবদ্ধ হতে মরিয়া ছিল দলগুলো।
চুক্তি অনুযায়ী, পালাক্রমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বেনেট ও ল্যাপিড।
নতুন সরকারের মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট ল্যাপিডের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বেনেট।
ল্যাপিড বলেন, ‘যারাই আমাদের ভোট দিয়েছেন বা দেননি, তাদের সবার জন্য, ইসরায়েলের প্রতিটি নাগরিকের সেবায় কাজ করবে আমাদের সরকার।
‘বিরোধীদের আমরা সম্মান করব এবং ঐক্যবদ্ধ ও ইসরায়েলের সব শ্রেণির মানুষকে এককাতারে আনতে সাধ্যের বাইরে চেষ্টা করব।’
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত একটি ছবিতে দেখা যায়, ল্যাপিড, বেনেট ও রা’ম পার্টির প্রধান মনসুর আব্বাস চুক্তিপত্রে সই করছেন।
মনসুর আব্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক বিষয়ে দ্বিমতের কারণে এ ঐক্য কঠিন ছিল। কিন্তু সমঝোতায় পৌঁছাতে এর বিকল্পও ছিল না। এই চুক্তিতে এমন অনেক কিছুই আছে, যা ইসরায়েলের আরব সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।’
জোট গঠনে সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিনকে অবহিত করেছেন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন ল্যাপিড।
অবশ্য নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের মুখে পড়তে হবে তাদের। এ জন্য দ্রুততম সময়ে অধিবেশন বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
নেসেটে আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট নিশ্চিতে ল্যাপিড-বেনেট জোট ব্যর্থ হলে দুই বছরের মধ্যে পঞ্চম সাধারণ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হতে পারে ইসরায়েল।
তেল আবিবে ম্যারাথন আলোচনায় দলগুলোকে গাঁজা বৈধ করা থেকে শুরু করে অবৈধ বসতি নির্মাণে জরিমানা, বিচার বিভাগেও পালাক্রমে কর্মকর্তা নিয়োগ পর্যন্ত বেশ কিছু বিষয়ে সম্মত হতে হয়েছে।
কিছু গণমাধ্যম বলছে, এখনও সব বিতর্কের চূড়ান্ত অবসান হয়নি বলে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে জোট সরকার উৎরাতে পারবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
গত দুই বছরে ইসরায়েলে চারটি সাধারণ নির্বাচন হয়েছে। কোনোবারই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। জোট সরকার গঠনেও কোনো দল সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি বলে প্রতিবার নতুন সাধারণ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হয়েছে দেশটি।
নেতানিয়াহুর শাসনকাল
২০০৯ সাল থেকে টানা প্রধানমন্ত্রী পদে আছেন নেতানিয়াহু। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্তও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সব মিলিয়ে ইসরায়েলের ৭৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী ৭১ বছর বয়সী নেতানিয়াহু। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বিচার চলছে তার বিরুদ্ধে।
সবশেষ চলতি বছরের মার্চে সাধারণ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের জন্য পার্লামেন্টে ন্যূনতম আসন নিশ্চিতে ব্যর্থ হয় নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টি।
দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৭টি আসন পায় ল্যাপিডের ইয়াশ আতিদ পার্টি। আর কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি আসনে জয় পেয়ে শক্ত অবস্থানে বেনেটের দল।
এ অবস্থায় নেতানিয়াহু জোট গঠনে ব্যর্থ হলে সরকার গঠনে ২৮ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয় ল্যাপিডকে, যা শেষ হয়েছে বুধবার। এ সময়ের মধ্যেই রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে ভিন্ন অবস্থানের দলগুলোকে একছাতার নিচে আনেন ল্যাপিড।
এই জোটকে ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রতারণা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন নেতানিয়াহু। বলেছেন, এর মাধ্যমে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ হুমকির দিকে ঠেলে দেয়া হলো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বামপন্থি বিরোধীরা নয়, কট্টর ডানপন্থি নেতা নেতানিয়াহুর পতন নিশ্চিত করেছেন তার একসময়ের অনুসারীরাই যাদের দমনে নিষ্ঠুর ও কঠোর কৌশল নিয়েছিলেন তিনি।
এ অবস্থায় অলস বসে না থেকে আবারও পূর্ণ শক্তিতে ক্ষমতায় ফেরা নিশ্চিতে ৭২ বছর বয়সী নেতানিয়াহু কাজ করবেন বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। নতুন জোট সরকারের কাছ থেকে খুব বেশি প্রত্যাশা নেই বলেও জানান অনেকে।
আরও পড়ুন:বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল।
সোমবার সকালে পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করেন। এসময় দুদকের প্রতিনিধি দলটি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান ও বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন।
কলেজ সূত্র জানা যায়, পরিবহন খাত নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত পরিবহন বাবদ অর্থ নেওয়া হলেও কলেজে বাস্তবে কোনো পরিবহন ক্রয় করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের টাকা দিয়ে একটি হাইচ গাড়ি কিনলেও এ গাড়ি মূলত অধ্যক্ষ ও কিছু শিক্ষক ব্যবহার করেন এবং ওই গাড়ির ব্যয়ভার চাপানো হয় শিক্ষার্থীদের ওপর। শুধু পরিবহন খাত নয়, শিক্ষার্থী কল্যাণ তহবিল, খাদ্য বাবদ অতিরিক্ত ব্যয়, সরকারি বরাদ্দের অপব্যবহার এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতি নিয়েও নানামুখী অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ অভিযোগ করেন, ফি বাবদ যে অর্থ তোলা হয়, তার সঠিক ব্যবহার হয় না।
অভিযান পরিচালনাকালে দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন কুমার সূত্রধর জানান, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের অনুমতির প্রেক্ষিতে আজকে এখানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা পরিবহন খাতের লগবুক পরীক্ষা করছি। কোথাও শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের প্রমাণ নেই। বরং শুধু অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা ব্যবহার করেছেন এবং অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে। এছাড়া অভিযানে প্রাথমিকভাবে কিছু অনিয়ম-দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে। এরপর সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে আমরা তাদেরকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছি। আমি কোন অনিয়ম দুর্নীতি করি নাই।
নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী গুটারবিলে সোমবার বিকালে এক ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হলো মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্যজীবী সমাবেশ।
বিলের মাঝে ভাসমান মঞ্চ স্থাপন করে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের শতাধিক মৎস্যজীবী।
হাঁসাইগাড়ী, শৈলগাছী, শিকারপুর ও দুবলহাটি ইউনিয়নের মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে মাছের পোনা অবমুক্ত করার পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম ধলু। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আজম ভিপি রানা, যুবদলের সদস্য সচিব রুহুল আমিন মুক্তার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জালাল হোসেন শাহানা প্রমুখ।
প্রধান অতিথি জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু বলেন, ‘দেশের প্রাণিজসম্পদ রক্ষা এবং মাছের উৎপাদন বাড়াতে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ একটি কার্যকর ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
পরে অতিথিরা গুটারবিলের পানিতে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ অবমুক্ত করেন।
আয়োজকরা জানান, এ ধরনের কর্মসূচি শুধু প্রাণিজ সম্পদ সংরক্ষণে নয়, বরং মৎস্যসম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক জলাশয়ের সুরক্ষা এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠান শেষে অনুষ্ঠিত হয় আনন্দঘন সাংস্কৃতিক পর্ব। দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য আয়োজন করা হয় গ্রামীণ জনপ্রিয় খেলা হাঁস ধরা, নৌকাবাইচ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী এ আয়োজন প্রাণ পায় স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে।
এ উদ্যোগকে স্থানীয়রা স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন নিয়মিত হলে মৎস্যজীবীদের মধ্যে উৎসাহ বাড়বে এবং বিল ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক সম্পদও সুরক্ষিত থাকবে।’
এগিয়ে আসছে শারদীয় দুর্গাপূজা। উৎসবের আমেজে ভরে ওঠেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিটি উঠোন। জেলার পূজা মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। এ বছর জেলায় ৪৫৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। পূজা উদযাপনকে নির্বিঘ্ন করতে তৎপর রয়েছে জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব কয়টি ইউনিট।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ৪৫৫টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১০৯টি, কালীগঞ্জে ১০১টি, কোটচাঁদপুরে ৪৬টি, শৈলকূপায় ১২৫টি, হরিণাকুণ্ডুতে ২৭টি ও মহেশপুর উপজেলায় ৪৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হবে।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময়, পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে একের পর এক সভা করছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তাদের প্রতিনিধিরা মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মহল্লায় মহল্লায় দলীয় কর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের ব্যাপারীপাড়া জোড়াপুকুর সংলগ্ন সার্বজনীন মন্দির, কেন্দ্রীয় বারোয়ারি মন্দির ও চাকলাপাড়া সার্বজনীন পূজা মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ।
প্রতীমা তৈরি ও সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যথাসময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই দুর্গা দেবীর আরাধনার জন্য মণ্ডপগুলো প্রস্তুত করা হবে।
শহরের চাকলাপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি রনজিৎ শাখারী একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পূজা উপলক্ষে দারুণ উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’
সদর উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মালা রাণী একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের গ্রামে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়। এবারও প্রস্তুতি শেষের দিকে। এখন সবাই মিলেমিশে আনন্দের সঙ্গে প্রতিমা তৈরি ও মণ্ডপের সাজসজ্জার কাজ করছে।’
জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক চন্দন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শারদীয় দুর্গোৎসব বা দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলার মণ্ডপগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বড় রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারব বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা পূজার আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে, গণমাধ্যমকর্মীরা মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরছেন। আমাদের সঙ্গে তারাও এই পূজা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া একটি গণমাধ্যমকে বলেন, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা ও সাইবার টিমসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিট জেলাব্যাপী কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ চলমান। পূজা চলাকালীন সকল মণ্ডপে পুলিশের কঠোর নজরদারি রাখা হবে। গত বছর ঝিনাইদহে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে। এ বছর নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে বলে আশা করছি।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ৬ শতাধিক হতদরিদ্র রোগীকে বিনা মূল্যে চক্ষুসেবা দেওয়া হয়েছে। সোমবার দিনব্যাপী ব্র্যাক মাইক্রোফিন্যান্স কর্মসূচির উদ্যোগে এই চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।
ক্যাম্পে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওষুধ, চশমা ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। এছাড়া ক্যাম্প থেকে শতাধিক রোগী বাছাই করে বগুড়ায় গাক চক্ষু হাসপাতালে বিনা খরচে ছানি অপারেশন করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলী হোসেন শাহ, বগুড়া ব্র্যাক ডিভিশনাল কোঅর্ডিনেটর লিড জেনারেশন মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, জয়পুরহাট জেলা সমন্বয়কারী আরিফুল ইসলাম, এলাকা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম ও বগুড়া রিজিওনাল কোঅর্ডিনেটর লিড জেনারেশন হাসান উল কবিরসহ বিভিন্ন ডাক্তার ও নার্সরা।
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা-ছেলেকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে।
সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ব্রি-কালিয়াকৈর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ও সাংবাদিক আজিজুল হাকিম সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত নান্ন মিয়া ও সম্পি বেগমকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে আজিজুল হাকিমের পরিবারের সাথে চাচাতো ভাইয়ের বউ মধুমালার বিরোধ চলছিল। এরই জেরে সোমবার সকালে মধুমালা বেগম, তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার, বোন রংমালা আক্তার, বোন জামাই মবজেল ও মধুমালার বাবা তোতা মিয়াসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও কয়েকজন বাঁশের লাঠি নিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর অভিযুক্তরা ঘরে ঢুকে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় ভুক্তভোগীর ভাই নান্ন মিয়া প্রতিবাদ করলে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলার সময় তাদের মা সম্পি বেগম বাধা দিতে গেলে তাকেও কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় মেরে জখম করা হয়। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্যাস সংকটে প্রায় ২০ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা। এতে প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। কারখানা বন্ধ থাকায় মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। চলতি আমন মৌসুমে ইউরিয়া সার সংকটের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে কারখানার সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক পরিবার।
কারখানা সুত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে তারাকান্দি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় যমুনা সার কারখানা। এ কারখানাটি বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কেপিআই-১ মানসম্পন্ন সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কারখানার নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২-৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৈনিক ১ হাজার ৭০০ টন সার উৎপাদন করছিল কারখানাটি। কিন্তু গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও বিভিন্ন ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে ১ হাজার ২০০ টনে নেমে আসে। জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও উত্তরাঞ্চলের রাজবাড়ী ও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ প্রায় ২০টি জেলার আড়াই হাজার ডিলারের মাধ্যমে যমুনার সার সরবরাহ করা হয়।
গত ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে তিতাস গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেওয়ায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেকার হয়ে পড়েন কারখানাসংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী, পরিবহনের চালক, হেলপার, কারখানার আশপাশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হোটেল মালিকরা। দীর্ঘ ১৩ মাস পর ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্যাস সংযোগ পেয়ে পুনরায় উৎপাদনে ফিরে কারখানাটি। উৎপাদন শুরুর ৪ দিনের মাথায় ২৬ ফেব্রুয়ারি গত বুধবার রাত ৭টার পর অ্যামোনিয়া প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ফের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে বৃহৎ এ কারখানাটি। দীর্ঘ ২০ মাস ধরে বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সাড়ে ৩ কোটি টাকা হারে লোকসান হচ্ছে বলেও জানা যায়। দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় সার সংকট হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকরা। দ্রুত গ্যাস সংযোগ দিয়ে বৃহৎ এ শিল্প কারখানাটি সচল রাখতে না পারলে পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান যমুনা সার কারখানা পরিদর্শন করতে আসেন। এ সময় স্থানীয় শ্রমিক, ডিলার ও ব্যবসায়ীরা গ্যাস সংযোগের দাবিতে মানববন্ধন করেন। পরে দ্রুত গ্যাস সংযোগ দেওয়ার আশ্বাস দেন বিসিআইসির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান।
কারখানার দৈনিক মজুরিভিত্তিক একাধিক শ্রমিক, ট্রাক পরিবহন শ্রমিকসহ একাধিক শ্রমিক বলেন, কারখানার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাক, ট্যাংক ও লড়ি পরিবহন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা বন্ধ থাকায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। কারখানা এভাবে বন্ধ থাকলে এক সময় চিনি ও পাটশিল্পের মতো এ শিল্পও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে যমুনা সারকারখানা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম তালুকদার বলেন, আমরা কারখানাটি চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে অতি তারাতাড়ি গ্যাস সংযোগ দেবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপ সিংহ বলেন, ‘যমুনার সারের গুণগত মান ভালো। যমুনার সার জমিতে ব্যবহারের ফলে ফসল বৃদ্ধি পায় ও উৎপাদন ভালো হয়। গাছও সতেজ থাকে। আমদানি করা ও অন্য কারখানার সারগুলোর গুণগত মান ভালো না। আমদানিতকৃত সারগুলো দীর্ঘদিন ধরে কারখানায় মজুত করে রাখায় জমাট বেধে শক্ত হয়ে যায়। ফলে এটি ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। যমুনা সার কারখানাটি চালু করা অতি প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার জিএম (প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের কারখানাটি এখনো বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা আশ্বাস পেয়েছি যে আগামী মাস নাগাদ যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। গ্যাস সংযোগ পেলে আমরা পুনরায় পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারব।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের (উনি শাখা-২) ১৫/৯/'২৫ ইং তারিখের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোছাঃ ইয়াসমিন আক্তার (১৫৭২৮)-কে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব আমিনুল ইসলাম এর স্বাক্ষরিত চিঠি মোতাবেক তার বর্তমান দায়িত্ব থেকে পদায়ন করে যুগ্ম-সচিব পদে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যান বিভাগে বদলী করা হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত উক্ত আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জুলাই-আগষ্ট/'২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পরে তাকে মাদারীপুরর ডিসি হিসাবে পদায়ন করা হয়েছিলো।মাদারীপুরে যোগদানের পর থেকে তিনি সুনামের সাথে তার নিজ দায়িত্ব পালন করে মাদারীপুরবাসির মধ্যে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সরকারী দায়িত্বের পাশাপাশি অফিস টাইমের পরেও তাকে অনেক সময় কাজ করতে দেখা গেছে। তার কাছে অফিস ও জনসমস্যা সংক্রান্ত যে কোনো কাজ নিয়ে মাদারীপুরের যে কেউ গেলে তিনি তা অধীর আগ্রহে শুনতেন, ব্যবস্থা নিতেন। তার সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্য পরায়ণতাকে মানুষ পজিটিভ চোখে দেখেছে, অনেকে মনে করছেন যে, মাদারীপুরবাসি একজন অত্যন্ত দক্ষ, কর্মনিষ্ঠ ও জনবান্ধব ডিসিকে হারালো।
মন্তব্য