‘আমি বিদেশি ব্যাংকে সঞ্চিত প্রতিটি টাকা ফিরিয়ে আনব এবং এটি যাতে গরিবদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যবহার করা হয়, তা নিশ্চিত করব’- ২০১৪ সালে ভারতে সংসদীয় নির্বাচনে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির প্রচারে এটাই ছিল কথিত কেন্দ্রবিন্দু। কার্যত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা বা এনডিএ।
দিল্লির মসনদ দখল করে, প্রশাসন খানিকটা গুছিয়ে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদি নেমেছিলেন দেশের অর্থনীতির সমান্তরালে চলতে থাকা আইনবহির্ভূত অর্থনীতির গহ্বর থেকে কালোটাকা উদ্ধারে।
প্রথমেই নজর দিয়েছিলেন বিদেশের ব্যাংকগুলোতে ভারতীয়দের গচ্ছিত কালোটাকা উদ্ধারে।
২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার ঘোষণা করে, আগামী ১ জুলাই থেকে তিন মাসের জন্য অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘কালোটাকা আইনের’ আওতায় বিদেশি ব্যাংকে বেআইনিভাবে গচ্ছিত টাকার হিসাব সরকারকে জানালে কোনো শাস্তি হবে না। তবে ঘোষিত অর্থের ৩০ শতাংশ কর ও ৩০ শতাংশ পেনাল্টি বাবদ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।
কিন্তু এই প্রকল্প কার্যত মুখথুবড়ে পড়ে। প্রকল্পের সময়সীমা শেষ হবার পর দেখা যায়, মাত্র ৬৩৮ জন তাদের বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত ৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকার তথ্য সরকারকে জানিয়েছে। এই ক্ষমাদান প্রকল্প থেকে কর ও পেনাল্টি বাবদ সরকারি কোষাগারে জমা পড়ে ২ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকা।
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. অরুণকুমার মনে করেন, ১৯৪৮ সাল থেকে বিদেশের ব্যাংকে ভারতীয়রা যত কালোটাকা গচ্ছিত রেখেছে, তার ১ শতাংশও জমা পড়েনি সরকারের ক্ষমাদান প্রকল্পে।
২০১২ সালের মে মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সরকার কালোটাকা-সম্পর্কিত একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল। সেখানে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের সূত্র উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, ২০১০ সালের শেষ পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে ভারতীয়দের ৯২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন টাকা গচ্ছিত আছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে সুইজারল্যান্ড সরকার টাকার ওই অঙ্ক নিশ্চিত করে।
কালোটাকা উদ্ধারে নরেন্দ্র মোদি সরকারের দ্বিতীয় প্রয়াস ২০১৬ সালে। এবার দেশের ভিতরে থাকা কালোটাকা উদ্ধারে সেই একই ক্ষমাদান প্রকল্পের পথে হাঁটে সরকার। ঘোষণা করা হয়, ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যারা তাদের বেআইনিভাবে গচ্ছিত টাকার হিসাব সরকারকে জানাবে, তাদের কোনো শাস্তি হবে না। শুধু দিতে হবে ঘোষিত টাকার ৩০ শতাংশ কর এবং ১৫ শতাংশ পেনাল্টি। এই ১৫ শতাংশের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ সারচার্জ এবং বাকি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কৃষি কল্যাণ বাবদ।
৯০ দিনের এই ক্ষমাদান প্রকল্পের নিট ফল কী? ১ অক্টোবর, ২০১৬ তে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, ৬৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষমাদান প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে ৬৫ হাজার ২৫০ কোটি টাকার হিসাব দিয়েছে। এই প্রকল্প থেকে কর ও পেনাল্টি বাবদ সরকারের আয় হয়েছে ২৯ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা।
স্বাধীন ভারতে করখেলাপিদের কালোটাকা সাদা করার জন্য সরকারি ক্ষমাদান প্রকল্পের শুরু সেই ১৯৫১ সালে। প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সরকার ঘোষণা করেছিল, ‘ভলোন্টারি ডিসক্লোজার অব ইনকাম স্কিম’।
স্বাধীন দেশকে নতুন করে গড়ে তোলার আবেগ টগবগ করে ফুটতে থাকলেও সেবার গোপনে গচ্ছিত ধনের হিসাব সরকারকে জানানোর উৎসাহ দেখা যায়নি মানুষের মধ্যে। মাত্র ৭০ কোটি ২ লাখ কালো টাকার হিসাব পাওয়া গিয়েছিল।
এরপর সাত দশক পেরিয়ে এসেছে ভারত। এই সময়ে কালোটাকার পাহাড় পরিণত হয়েছে সুউচ্চ পর্বতে। দেশের আইনি অর্থনীতির সমান্তরালভাবে চলছে বেআইনি অর্থনীতির সাম্রাজ্য। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্টারপোলের প্রথম দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) ডাইরেক্টর এ পি সিং বলেছিলেন, কর ছাড়ের ক্ষেত্রে স্বর্গ হিসেবে চিহ্নিত দেশগুলোতে ভারতীয়দের আনুমানিক ৫০০ বিলিয়ন ডলার বেআইনি অর্থ মজুত আছে।
জার্মান অর্থনীতিবিদ ফ্রিডরিচ জর্জ স্নাইডার ২০০৬ সালে একটি গবেষণাপত্রে জানিয়েছিলেন, ভারতের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ২৩ থেকে ২৬ শতাংশ কালোটাকার অর্থনীতি। অথচ ১৯৫১ সাল থেকে ২০২১– এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সরকার কালোটাকা উদ্ধারে আইনের নানা সংশোধন ছাড়া ১২টি ক্ষমাদান প্রকল্প ঘোষণা করেছে। ৭০ বছর ধরে এ ১২ প্রকল্পে ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৩৭ কোটি ২০ লাখ কালোটাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। ভারতের মধ্যে বা বিদেশে ভারতীয় নাগরিকরা কত বেআইনি টাকা গচ্ছিত রেখেছেন, তার সঠিক হিসাব পাওয়া সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন সময় অর্থনীতির গবেষকরা, সরকার নিয়োজিত সংস্থা বা কমিটি যে রিপোর্ট দেয়, তা থেকে পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করা যায়।
গত শতাব্দীর ছয়ের দশকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলাস কালডোর তার এক লেখায় বলেছিলেন, ১৯৫৩-৫৪ আর্থিক বছরে ভারতে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত টাকার পরিমাণ ছিল আনুমানিক ৬০০ কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদ ড. ডি কে রঙ্গনেকারের অনুমান ১৯৬১-৬২ সালে কালোটাকার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা, ১৯৬৪-৬৫-এ ২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা, ১৯৬৮-৬৯-এ ২ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা ও ১৯৬৯-৭০ সালে ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা।
কালোটাকা নিয়ে তথ্য আর সংখ্যার অভাব নেই। অভাব নেই কালোটাকার কারবারিদের ক্ষমাদানের সরকারি প্রকল্পের। ঢাকঢোল পিটিয়ে সেই সব প্রকল্প ঘোষণা করা হয়, একসময় তার মেয়াদও শেষ হয়। কর খেলাপিরা নির্বিকার থেকে যান।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৬ সালের ২৬ জুন ‘মান কি বাত’ অনুষ্ঠানে, ৩০ সেপ্টেম্বরের সময়সীমার মধ্যে সাধারণ ক্ষমা প্রকল্পের অধীনে নাগরিকদের তাদের অঘোষিত আয়ের ঘোষণা দেওয়ার শেষ সুযোগ হিসেবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। অর্থনীতিবিদরা অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর সেই হুশিঁয়ারিকে অভিহিত করেছিলেন ইতিহাসকে প্রত্যাখ্যান করার সমতুল্য বলে।
প্রধানমন্ত্রী এটিকে ‘শেষ’ সুযোগ বলে দাবি করলেও বাস্তবে দশকের পর দশক ধরেই সরকারগুলো কালোটাকা উদ্ধারের নামে সাধারণ ক্ষমার প্রকল্প ঘোষণা করে কর ফাঁকি দেওয়া মানুষদের সুযোগ করে দেয় কালোটাকা সাদা করার। কিন্তু প্রায় সবক্ষেত্রেই দেখা গেছে ‘বহু আড়ম্বরে লঘু ক্রিয়া’।
ক্ষমাদান প্রকল্পের মাধ্যমে আশানুরূপ ফল না পেয়ে নরেন্দ্র মোদি আচমকা ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে কালোটাকা গোপন কুঠুরি থেকে বাইরে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লাভ কিছু হয়নি। সরকার আশা করেছিল, নোট বাতিলের ফলে ২ থেকে ৩ লাখ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। অথচ রিজার্ভ ব্যাংক ঘোষণা করল বাজারে ৫০০ ও ১০০০ টাকার যে নোট ছিল, তার ৯৯ দশমিক ৩ শতাংশই ব্যাংকে জমা পড়েছে।
আসলে কালোটাকার বিরুদ্ধে লড়াই নিছক ক্ষমাদান প্রকল্প বা নোট বাতিল করে জেতা যায়, এই ভাবনাটা সাধারণ নাগরিককে বিভ্রান্ত করার প্রয়াস ছাড়া আর কিছু নয়। কালোটাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রধান ও পূর্বশর্ত হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছা। কর ফাঁকি দেওয়া করপোরেট ব্যবসায়ীদের টাকায় রাজনৈতিক দল চালানো, ভোটে লড়া আর দুর্নীতিমুক্ত আর্থিক ব্যবস্থার কথা বলা, তঞ্চকতা ছাড়া আর কী? আর এই তঞ্চকতার কারণেই ক্ষমাদানের লোভনীয় প্রস্তাব বা সুযোগ দিয়েও কালোটাকা বের করা যায় না। বরং তা বেড়ে চলে উল্কার গতিতে।
আরও পড়ুন:ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমিয়েছে সরকার। সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা কমিয়ে আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন এ দাম বুধবার দিনগত মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ডিজেলের বিক্রয়মূল্য প্রতি লিটার ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা, কেরোসিন ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা এবং অকটেন ১২৬ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২৫ টাকা, পেট্রোল ১২২ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২১ টাকায় পুনঃনির্ধারণ/সমন্বয় করা হয়েছে। যা ১ মে ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমা-বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
এ জন্য ‘জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকা’র আলোকে মে মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারি সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা বাড়িয়ে বর্তমান দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ মূল্য মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বহাল ছিল।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে একটি সিম্পোজিয়াম আয়োজন করছে বাংলাদেশি জার্নালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া (বিজেআইএম)। এতে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক ও গবেষকরা। আগামী শনিবার (৩ মে) বিকাল ৩টায় ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার অডিটরিয়ামে এই সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিজেআইএমের আহ্বায়ক স্যাম জাহান ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী মাজেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আফটার দ্য মনসুন আপরাইজিং : দ্য মিডিয়া ল্যান্ডস্ক্যাপ’ শীর্ষক এই সিম্পোজিয়ামটি তিনটি সেশনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেশনে বিজেআইএম প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর অর্জনের একটি সারসংক্ষেপ ও পরিকল্পনার রূপরেখা উপস্থাপন করা হবে।
দ্বিতীয় সেশনে বিজেআইএমের একজন সদস্যের পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে একটি উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনীতি, কূটনীতি, ভবিষ্যৎ, আমলাতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে যে কোনো প্রশ্ন করা যাবে।
তৃতীয় সেশনে দেশের নেতৃত্বস্থানীয় সাংবাদিক, গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্টদের নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা হবে। এতে অংশ নেবেন- প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)-এর প্রতিনিধি সেলিম সামাদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন, ইরাবতী ইংরেজির প্রতিবেদক মুক্তাদির রশিদ, ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাইমা ইসলাম, বাংলাদেশ সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান গবেষক এম আবুল কালাম আজাদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ওমর ফারুক।
সিম্পোজিয়ামে সাংবাদিক, গবেষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ সর্বসাধারণ মানুষের যে কেউ অংশ নিতে পারবে। তবে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় আগ্রহীদের দ্রুত নাম, বয়স, পেশা ও যোগাযোগ নম্বরসহ [email protected]এ প্রাক-নিবন্ধন করতে হবে।
‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কক্সবাজার হয়ে জাতিসংঘের ‘মানবিক করিডর’-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সরকার তথাকথিত মানবিক করিডর নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি।”
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো, জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে যদি মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে।’
তিনি জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে তীব্র মানবিক সংকট চলছে।
দুর্যোগকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারকে সহায়তা প্রদান করা।
প্রেস সচিব সতর্ক করে বলেন, ‘এছাড়াও, আমরা উদ্বিগ্ন যে এ ধরনের মানবিক সংকট দীর্ঘ হলে রাখাইন থেকে আরও মানুষের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে, যা আমরা সামাল দিতে পারব না।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বাস করে যে জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর বাস্তবসম্মত একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশ।
শফিকুল আলম বলেন, এই রুট ব্যবহার করে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানে সম্মত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তবে, রাখাইনে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে আমরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিশ্বের বড় কোনো শক্তি এই করিডরের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রপাগান্ডা বলে তিনি দাবি করেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে আমরা দেখেছি, যা এখনো চলছে। এ ধরণের প্রচারণাও তার ব্যতিক্রম নয়।’
আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। এ মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর বীর উত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে ছিল বার্ষিক মহড়া। ‘আকাশ বিজয়’ নামে হয় এ বছরের বাৎসরিক মহড়া। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক এটা আমরা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
‘কাজেই এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’ বলেন তিনি।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিমান বাহিনী। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তৎপর থাকতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মনির্ভরতার প্রমাণ দিয়েছে বিমান বাহিনী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য সরকার সহযোগিতা করছে বাহিনীটিকে। পেশাগত কারিগরি সক্ষমতা বজায় রাখতে হবে।
দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুগোপযোগী বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, সকালে প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বন্যাকবলিত পরিবারের মাঝে পুনর্বাসনকৃত ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে আনতে বিএনপির অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরত আনতে বিএনপির পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনুরোধ নিয়ে কাজ করছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে। জানা যায়, খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরাতে কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের আয়োজন করতে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে ‘আশঙ্কামুক্ত’ নয়। তথাপি তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসক বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেশে ফেরাতে পরামর্শ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কভিড-১৯ মহামারির সময় বিগত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেছেন খালেদা জিয়া। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
বর্তমানে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর সামরিক জবাবদিহির বিষয়ে সেনাবাহিনীকে ‘পদ্ধতি, লক্ষ্য ও সময় নির্ধারণে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভি গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রী মোদি আবারও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক জবাব দেওয়াই আমাদের জাতীয় সংকল্প’ এবং তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর প্রতি ‘সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা’ রাখেন।
এই বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও ভারতীয় জনতা পার্টির আদর্শিক অভিভাবক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবত প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছন।
সূত্রের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সবুজ সংকেত দিয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। তখন ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ পরিচালিত প্রশিক্ষণশিবিরে নিখুঁত বিমান হামলা চালিয়েছিল।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত সেই শিবিরগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
ছয় বছর পর এই হামলার সঙ্গে আবারও পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তাদেরই ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
এদিকে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও বলেছে, প্রাপ্ত প্রমাণ আবারও পাকিস্তানকেই ইঙ্গিত করছে।
এই প্রমাণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদের দেখানো হয়েছে।
ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রথম ধাপে নয়াদিল্লি পাকিস্তানিদের জন্য জারি করা ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। তবে পাকিস্তানি হিন্দু ও দীর্ঘমেয়াদি অনুমোদনপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য নয়। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দেওয়া ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।
গত রোববার সব কার্যকর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে, বিশেষ করে বিখ্যাত আটারি-ওয়াঘা চেকপয়েন্টে পাকিস্তানি নাগরিকদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। সেদিন থেকে প্রায় এক হাজার পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ছেড়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যক্তিগতভাবে রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কূটনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ভারত ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দাস পানি চুক্তিও স্থগিত করেছে। এই পানি বণ্টন চুক্তির অধীনে পাকিস্তান তার প্রাপ্য মোট পানির প্রায় ৮৫ শতাংশ পেত। এই চুক্তি স্থগিত করাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদ ভারতের সব ভিসা বাতিল করেছে ও শত শত ভারতীয়কে বহিষ্কার করেছে। পাকিস্তান আরও কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, যেমন ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিও স্থগিত রেখেছে।
এরই মধ্যে পাকিস্তানের এক শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া এক মন্তব্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেন, আগামী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পেহেলগামে হামলা নিয়ে নিজের প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহ পরিকল্পনাকে সফল হতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘এবার সময় এসেছে সন্ত্রাসের আখ্যানের শেষ চিহ্নও মুছে ফেলার। ১৪০ কোটি মানুষের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের প্রভুদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।’
এরপর তিনি একাধিক শক্ত বার্তা দিয়েছেন, যাতে তিনি বলেন, ভারত সন্ত্রাসকে ভয় পায় না এবং এই ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনাকারীসহ প্রত্যেক জড়িত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
সূত্র: এনডিটিভি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ দেশের চারটি জেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ঘর বিতরণ করেছেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত মোট তিনশটি ঘর ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় বিতরণ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা সুবিধাভোগীদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।
অধ্যাপক ইউনূস ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি চারটি জেলায় অনুষ্ঠিত ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সুবিধাভোগীরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।
প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে, বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক দিয়েই সুষ্ঠু ভাবে প্রকল্প শেষ করায় প্রকল্পের সাথে যুক্ত সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই বিশেষ গৃহায়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
মন্তব্য