করোনা মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিন বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠক শেষে নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা অভিযোগ করে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানিয়েও তাদের কথা বলতে দেয়া হয়নি । সৌজন্য বিনিময় পর্যন্ত করা হয়নি।’
কাগজপত্র ও অন্যান্য নথিসহ রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে উপস্থিত থাকলেও কাউকে এক সেকেন্ডের বেশি বলতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ মমতার। তিনি জানান, পছন্দের জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলে আর ভাষণ দিয়ে চলে গেছেন মোদি ।
মমতা সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক সুপার ফ্লপ। করোনা নিয়ে এত ক্যাজুয়াল মিটিং! আমি অপমানিত হয়েছি। পুতুলের মতো বসে ছিলাম। আজ যা হয়েছে, তা একনায়কতন্ত্র।’
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে একেক রকম কথা বলা হচ্ছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? ভ্যাকসিন নেই বলে টিকা নেয়ার ব্যবধান বাড়ানো হচ্ছে । প্রধানমন্ত্রীর ফর্মুলা মানলে টিকা দিতে ১০ বছর লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের ঢিলেঢালা মনোভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলছেন করোনা সংক্রমণ কমে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর এত ভয় কিসের? কোথায় কেন্দ্রীয় দল?’
মমতা বলেন, ‘রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কিছুই জানতে চাননি প্রধানমন্ত্রী। আমরা ভেবেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীকে বলব আমাদের ভ্যাকসিন দিন, যাতে সবাইকে টিকা দেয়া যায়।'
তিনি বলেন, ‘মোদি বলছেন করোনা কমে গেছে। সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীকে একযোগে এর প্রতিবাদ করতে হবে। নদীতে মৃতদেহ ভেসে আসছে!’
ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যকে অপমান করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র করোনা মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। বিপদের সময় প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।’
মমতা বলেন, ‘আমরা ১৮৪টি সরকারি, ৪৪টি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছি। কেন্দ্রের এত অবহেলা কিসের? কথা শুনতে না চাইলে বৈঠক ডাকলেন কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তিন কোটি টিকা চেয়েছিলাম দেয়নি। এ মাসে ২৪ লাখ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। ১৩ লাখও পাইনি। অক্সিজেন, ওষুধ পাচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রী মুখ লুকিয়ে পালিয়ে গেলেন!’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মমতাকে পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, ‘নেতারা জেলে তাই রেগে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।’
মুখ্যমন্ত্রীদের অতিথি হিসেবে ডাকা হয়েছিল মন্তব্য দিলীপ ঘোষের। তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’
নেপালে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে জেন-জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৫ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি বন্দীকে এখনো খুঁজছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম খবরহাব এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৫ হাজার ৫৪৭ জন পলাতক এখনো পলাতক। পুলিশ ইতোমধ্যেই দেশব্যাপী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৯ হাজার ৮ জন বন্দীকে আটক করেছে।
মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, বাকি পলাতকদের সন্ধান তীব্র গতিতে চলছে। মন্ত্রণালয় পলাতকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে।
এর আগে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, অস্থিরতার সময় প্রায় ১ হাজার নাবালকসহ ১৪ হাজারেরও বেশি বন্দি কারাগার থেকে পালিয়ে যায়।
কাঠমান্ডু পোস্ট উল্লেখ করেছে, পলাতকদের মধ্যে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ এবং মানব পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরাও রয়েছেন। তাদের খুঁজে বের করে আটক করার জন্য সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে মোতায়েন করা হয়েছে।
আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছিলেন, পলাতকরা জননিরাপত্তার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি। তারা অপরাধমূলক গ্রুপ গঠন করতে পারে। বিশৃঙ্খলার সময় অফিস এবং ব্যারাক থেকে ১২০০টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় ১ লাখ রাউন্ড গুলি চুরি করা হয়েছিল।
সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে কাঠমান্ডু এবং নেপালের অন্যান্য শহরে দুর্নীতি ও সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর নেতৃত্বে মূলত জেনারেশন-জেড ছাত্র এবং কর্মীরা ছিলেন।
বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রসিকিউটরের অফিসসহ সরকারি ভবনগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তাদের বাড়িতে হামলা করে। দেশজুড়ে সহিংসতায় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়।
১২ সেপ্টেম্বর নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান নিযুক্ত করা হয়। তিনি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে শীর্ষ এই পদে অধিষ্ঠিত হন।
কার্কি বলেছেন, বর্তমান সরকার ছয় মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকবে না। ২০২৬ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বন্দি থাকা জীবিত বাকি ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির হাতে তুলে দিয়েছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সোমবার সকাল আটটার পর বন্দি মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস এলাকা থেকে এসব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই রেডক্রসের গাড়িগুলো তাদের সংগ্রহ করে গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে তুলে দেবে। এদিন মুক্তি পাওয়া বন্দিদের দ্বিতীয় দল তারা।
বন্দিদের দ্বিতীয় এই দলটিকে হামাস রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে।
এর আগে, এদিন সকালে প্রথম ৭ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। মুক্তি পাওয়া ওই ইসরায়েলিদের গাজার সীমান্ত পার করে নিজ দেশে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ইসরায়েলের এক সামরিক ঘাঁটিতে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার করা হয়।
এরপর গাজায় হামাসের বন্দিশালায় ৭৩৮ দিন কাটানোর পর ইসরায়েলে ফেরা এসব বন্দিরা নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন। নতুন মুক্তি পাওয়া ১৩ বন্দিকেও একই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আরও ৪৮ বন্দির মৃতদেহ আছে হামাসের কাছে। সেগুলোও আজকের মধ্যেই রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
জিম্মি মুক্তির খবরে তেলআবিবে উচ্ছ্বাস-অশ্রু
এদিকে জিম্মি মুক্তির খবরে তেলআবিবে জড়ো হওয়া মানুষের মধ্যে অশ্রুসজল উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে আনন্দের পাশাপাশি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সাত জিম্মি কিছুক্ষণ আগে সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছেন। তারা এখন প্রাথমিক অভ্যর্থনা কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন।
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ওই কেন্দ্রেই তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে মিলিত হবেন। ওদিকে ‘দ্য হোস্টেজ ও মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ওয়েলকাম হোম’ পোস্ট করে মুক্তি পাওয়াদের স্বাগত জানিয়েছে। এ সংগঠনটি জিম্মি মুক্তির দাবিতে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে আসছিল।
আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়নি। শেষ জিম্মির অবস্থান শনাক্ত ও যথাযথ দাফনের জন্য ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম শেষ হবে না। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, বলেছে সংগঠনটি।
জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)-এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি রোববার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরাঘচি বলেন, ‘আমরা আইএইএ-এর সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছি। জাতিসংঘ যদি এমন কোনো প্রস্তাব দেয়, যা ইরানের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সহায়ক হয়— আমরা আবার চুক্তিতে ফিরে যাব।’
ইরান ১৯৬৮ সালে আইএইএ’র সঙ্গে নন-প্রোলিফারেশন অ্যাক্ট (এনপিটি) চুক্তি করে। তখন ইরানের রাজা রেজা পাহলভী দেশটির রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দেয় যে তারা কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না এবং আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
গত জুনে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর আইএইএ’র সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানায়, ইরানের কাছে বর্তমানে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে, যার বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশ। বিশুদ্ধতার মান ৯০ শতাংশে উন্নীত করা গেলে তা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি সম্ভব।
আইএইএ’র ওই বিবৃতির এক সপ্তাহ পর ১২ জুন রাতে ইসরায়েল ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এ অভিযান চালানো হয়েছে।
১২ দিনব্যাপী সংঘাতে ইরানের সেনাপ্রধান, সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও অন্তত ১২ জন জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোরও। তবে এখনো সেই ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের কোনো হদিস মেলেনি বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
সংঘাত শেষে আইএইএ তেহরান সফরের আগ্রহ জানালেও ইরান জানায়, সংলাপের জন্য তারা প্রস্তুত, তবে পরমাণু স্থাপনা দেখানোর বাধ্যবাধকতা তাদের নেই।
এরপর সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আব্বাস আরাঘচি। কিন্তু জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় সেই বৈঠক ব্যর্থ হয়। পরে জাতিসংঘ ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
রোববারের সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ফের আলোচনায় বসা হবে কি না— জানতে চাইলে আরাঘচি বলেন, ‘আমরা তার প্রয়োজন দেখছি না। ইউরোপের সঙ্গে বৈঠকের আর কোনো ভিত্তি নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যে কয়েকটি যুদ্ধ থামিয়ে ‘লাখ লাখ জীবন’ বাঁচিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটি ‘নোবেলের জন্য নয়’ বরং ‘জীবন বাঁচানোর জন্য’ করেছেন।
রোববার হোয়াইট হাউস প্রকাশিত সাংবাদিকদের সঙ্গে ট্রাম্পের কথোপকথনের এক ফুটেজে প্রেসিডেন্টকে এ কথা বলতে শোনা যায়।
ট্রাম্প বলেন, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাতের সমাধান করতে পারবেন বলেও তিনি বিশ্বাস করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি শুনেছি পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে এখন একটি যুদ্ধ চলছে। আপনি জানেন, আমি আরেকটি যুদ্ধ বন্ধ করছি... কারণ আমি যুদ্ধ সমাধানে পারদর্শী।’
এর আগে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সেনারা পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে জড়ায়। আফগানিস্তানের টোলো নিউজ জানিয়েছে, লড়াইয়ে কমপক্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের জিও টিভি জানিয়েছে, সংঘর্ষে কয়েক ডজন আফগান সেনা প্রাণ হারিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও বহুসংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী ড. অ্যান অ্যালি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক আরও গভীর করার এবং বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে এই সপ্তাহে সরকারি সফরে বাংলাদেশে আসছেন।
আজ অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থানকালে ড. অ্যালি অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ উন্নয়ন অংশীদারিত্ব পরিকল্পনা ২০২৫-২০৩০ চালু করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য ক্যানবেরার দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন।
নতুন অংশীদারিত্ব কাঠামো টেকসই প্রবৃদ্ধি, মানব উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীলতার মতো ক্ষেত্রগুলিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় দিক-নির্দেশনা প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, "অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে উত্তরণকে স্বাগত জানায় এবং এই প্রচেষ্টাগুলিকে সমর্থন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
ড. অ্যালি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন, যেখানে বাংলাদেশ ১.১ মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।
পরিস্থিতিকে "এই অঞ্চলের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জটিল মানবিক সংকট" হিসাবে বর্ণনা করে তিনি অস্ট্রেলিয়ার অব্যাহত মানবিক সহায়তার উপর জোর দেন।
অস্ট্রেলিয়া আগামী তিন বছরে বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তায় অতিরিক্ত ৩৭০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ২৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে তাদের মোট প্রতিশ্রুতি ১.২৬ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার ছাড়িয়েছে।
এই সফর অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি উন্নীত করার জন্য ভারত মহাসাগরের অংশীদারদের সাথে কাজ করার জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
ড. অ্যালির ঢাকা সফর বাংলাদেশের সাথে অস্ট্রেলিয়ার উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, মানবিক সহযোগিতা এবং জনগণের সাথে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধির উপর জোর দেয়। কারণ বাংলাদেশ টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলেছে। সূত্র: বাসস
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি কেউই মিশরে গাজা সম্মেলনে যোগ দেবেন না। মিশর এই শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য ইরানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে সোমবার ভোরে আরাগচি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছে, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বা আমি কেউই ইরানি জনগণের ওপর আক্রমণকারী এবং আমাদের হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখা প্রতিপক্ষদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারি না।
সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, মিশর রোববার সন্ধ্যায় ইরানকে লোহিত সাগরের অবকাশস্থল শারম আল-শেখে সোমবারের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
জুনে ১২ দিনের যুদ্ধের সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে করা হামলায় ওয়াশিংটন ইসরায়েলের সঙ্গে সংক্ষেপে যোগ দেয়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরো বলেন, তেহরান ‘গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধ করার’ এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রক্ষার যে কোনও উদ্যোগকে সমর্থন করে।
ইরান ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনকে তাদের পররাষ্ট্র নীতির একটি অংশ করে তুলেছে।
বিপ্লবটি মার্কিন-সমর্থিত ইরানের শাহকে উৎখাত করেছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গাজা শান্তি শীর্ষ সম্মেলনের লক্ষ্য যুদ্ধবিরতি সুসংহত করা এবং যুদ্ধোত্তর রাজনৈতিক কাঠামোর রূপরেখা তৈরি করা।
২০টিরও বেশি দেশের নেতৃবৃন্দ এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও ইসরায়েল বা হামাস কেউই এতে অংশ নেবে না। সূত্র: বাসস
গাজা থেকে প্রথম পর্যায়ে সাতজন ইসরাইলি জিম্মিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) কাছে হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। সোমবার (১৩ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে সাতজন জিম্মিকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমগুলো মুক্তি পাওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করেছে। তারা হলেন— যমজ সন্তান গালি এবং জিভ বারম্যান, মাতান অ্যাংরেস্ট, অ্যালোন ওহেল, ওমরি মিরান, এইতান মোর ও গাই গিলবোয়া-দালাল।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, হামাসের মুক্তি দেওয়া সাতজন বন্দি এখন তাদের হেফাজতে রয়েছে এবং তারা ‘ইসরাইলি ভূখণ্ডের পথে’ রয়েছে।
জর্ডানের আম্মান থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক নূর ওদেহ জানিয়েছেন, বন্দিদের ‘অবস্থা মোটামুটি ভালো’ এবং তারা ‘কোনো চিকিৎসা সহায়তা ছাড়াই হেঁটে চলাফেরা করতে পারছেন’।
এর আগে বন্দি বিনিময়ের জন্য মোট ২০ জন ইসরাইলি জিম্মির তালিকা প্রকাশ করেছে হামাস। বর্তমানে হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন জিম্মির মধ্যে এখনো এই ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।
মন্তব্য