পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে তিন দিনের অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছে আফগানিস্তানের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তালেবান।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আরবি শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বুধ অথবা বৃহস্পতিবার শুরু হবে এ অস্ত্রবিরতি। চলবে ঈদের ছুটিজুড়ে।
সোমবার আফগান তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন বলেন, ‘সব তালেবান যোদ্ধাকে সব ধরনের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমাদের ভাই-বোনরা যেন ধর্মীয় উৎসবটি শান্তিতে এবং মনের আনন্দে উদযাপন করতে পারেন, সে জন্য তাদের নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তা দিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
এ ঘোষণা আসার কয়েক ঘণ্টা আগেই আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় জাবুল প্রদেশে একটি বাসে বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক।
স্থানীয় সময় রোববার রাতের ওই হামলায় আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নারী ও শিশুসহ আরও প্রায় ২৫ জন।
এখনও এ হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী। হামলার জন্য আফগান সরকার তালেবানকে দায়ী করলেও অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে গোষ্ঠীটি।
এক দিন আগেই রাজধানী কাবুলের একটি স্কুলের বাইরে বোমা হামলায় প্রাণ হারায় কমপক্ষে ৬০ জন, যাদের বেশিরভাগই ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সী স্কুল-পড়ুয়া শিশু-কিশোর।
এ হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী।
১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পরই সহিংসতা তীব্র হয়েছে আফগানিস্তানে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১ মের মধ্যে বিদেশি সেনা সরিয়ে না নিলে শান্তিচুক্তি মানবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।
এ অবস্থায় চলতি মাস থেকেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটো। আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে দেশটি ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্রের আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার এবং ন্যাটোভুক্ত বিভিন্ন দেশের আরও প্রায় সাত হাজার সেনা।
তালেবানের অস্ত্রবিরতির বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি আফগান সরকার।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে একটি পোশাক কারখানা ও একটি কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো অনেকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন অসংখ্য মানুষ। অনেকে প্রিয়জনের ছবি হাতে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম গণমাধ্যমকে বলেন, রূপনগরে আগুনের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জন হয়েছে। প্রথমে ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, পরে আবার ৭ জনের মরদেহ নতুন করে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের ডিরেক্টর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গার্মেন্টস ভবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কেমিক্যাল ভবনের আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং উদ্ধারে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছে। পোশাক কারখানার ভেতরে ঢুকতে পারলেও এখনো রাসায়নিকের গুদামে প্রবেশ করা যায়নি। এই অবস্থায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সকল লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কাছে আগুনের সংবাদ আসে। সংবাদ পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে শিয়ালবাড়িতে চারতলা ভবনে থাকা ‘আনোয়ার ফ্যাশন’ নামের একটি পোশাক কারখানা এবং তার পাশে থাকা টিনশেড ঘরে রাসায়নিকের গুদামে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
এর মধ্যে কারখানা থেকে ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জন হওয়ার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস।
বিকেলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তল্লাশি অভিযান এখনো চলমান। পাশের যে কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে, সেখানে এখনো আগুন জ্বলছে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ওখানে কাউকে যেতে দিচ্ছি না। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি দিয়ে, ড্রোন দিয়ে এসব কার্যক্রম করছি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, আগুনের সূত্রপাত এখনো জানা যায়নি। যারা শুরুতে আগুন নেভাতে এসেছেন, তারা রাসায়নিকের গুদাম ও গার্মেন্টস দুই দিকেই আগুন দেখেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, পোশাক কারখানার নিচ তলায় ‘ওয়াশ ইউনিট’ রয়েছে। সেখানে প্রথম আগুন লাগে। সেই আগুন পাশের রাসায়নিকের গুদামে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন চার তলা পোশাক কারখানার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
আগুন লাগার পর কারখানা থেকে শ্রমিকেরা নানাভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই অনেকে আটকা পড়েন।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, রাসায়নিকের গুদামে ব্লিচিং পাউডার, প্লাস্টিক, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ঘটনার পর থেকে রাসায়নিকের গুদামের মালিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান ফায়ার ব্রিগেডের পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, দেখে মনে হচ্ছে, এই রাসায়নিকের গুদামের অনুমোদন নেই। যাচাই-বাছাই করে তদন্ত করে বিস্তারিত পরে জানা যাবে।
এদিকে এ ঘটনায় কেন এত মৃত্যু হলো, প্রাথমিকভাবে তার কয়েকটি কারণ জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের ধারণা, কারখানার পাশে থাকা রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণের পর সেখান থেকে বিষাক্ত সাদা ধোঁয়া বা টক্সিক গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে, যা ছিল প্রাণঘাতী।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, ‘আগুন খুব দ্রুত ‘ডেভেলপ স্টেজ’ বা তৃতীয় ধাপে পৌঁছে যায়, ফলে ভুক্তভোগীরা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন।’ এছাড়া যে পোশাক কারখানার ভবন থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ভবনের ছাদের দরজায় দুটি তালা লাগানো ছিল। এর ফলে কারখানার শ্রমিকেরা কেউ ওপরে উঠতে পারেননি। এছাড়া পোশাক কারখানার ভবন ও রাসায়নিকের গুদাম কোনোটিরই অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
কারখানা ভবন ও রাসায়নিকের গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং কারখানা ভবনে তল্লাশি অভিযান চলার মধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
পোশাক কারখানা ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে জানিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রাসায়নিকের গুদামের আগুন এখনো জ্বলছে। সেখানে এখনো ধোঁয়া ও আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে। ওই গুদামে ৬-৭ ধরনের রাসায়নিক ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, মরদেহগুলো পোশাক কারখানার ভবনের দোতলা ও তিন তলায় বিভিন্ন স্থানে পাওয়া গেছে। মরদেহগুলোর অবস্থা এমন যে সেগুলো ডিএনএ টেস্ট ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব নয়।
কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এর আগে বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, যারা শুরুতে আগুন নেভাতে এসেছেন, তারা রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানার দুই দিকেই আগুন দেখেছেন।
তবে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, রাসায়নিকের গুদামের পাশে একটি ‘ওয়াশ ইউনিট’ রয়েছে। সেখানে প্রথম আগুন লাগে। সেই আগুন পাশের রাসায়নিকের গুদামের ছড়িয়ে পড়লে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন পোশাক কারখানার ওই পাঁচ তলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই কারখানা ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আরএন ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানা রয়েছে। সেখানে গেঞ্জি তৈরি করা হতো। দোতলায় ছিল টি-শার্ট প্রিন্ট ফ্যাক্টরি, নাম স্মার্ট প্রিন্টিং। আর পাঁচ তলায় বিসমিল্লাহ ফ্যাশন নামে আরেকটি প্রিন্ট কারখানা চলছিল। আগুন লাগার পর কারখানা ভবন থেকে শ্রমিকেরা নানাভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই অনেকে আটকা পড়েন।
ঘটনার পর থেকে রাসানিকের গুদামের মালিক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ফায়ার ব্রিগেডের পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামটির কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান বা লাইসেন্স ছিল না।’
প্রধান উপদেষ্টার শোক
অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় নিরীহ মানুষের মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক। আমরা এই শোকের সময়ে তাদের পরিবারের পাশে আছি।’
প্রধান উপদেষ্টা অগ্নিকাণ্ডে আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন।
তারেক রহমানের শোক
মিরপুরে আগুনের ঘটনায় ১৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই শোকবার্তা দেন। শোকবার্তায় তারেক রহমান নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত পূর্ণ সুস্থতার দোয়া করেন।
তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তার মান নিশ্চিত করার জন্য আমাদের অবশ্যই কাজ করতে হবে। যাতে অবহেলার কারণে আর কোনো প্রাণহানি না ঘটে। সরকারকে স্বচ্ছতার সঙ্গে অগ্নিদুর্ঘটনার তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান দায়ীদের অবিলম্বে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘প্রিয়জনদের হারানো অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক। আমরা এই শোকের সময়ে তাদের পরিবারের পাশে আছি।’
শেরপুরের নকলায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বসতবাড়ি ও মাঠে চাষযোগ্য জমিতে আগাম শীতকালীন শাক-সবজি আবাদের জন্য বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ চত্বরে বীজ ও সার বিতরণের উদ্বোধন করেন নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
অনুষ্ঠানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মুরসালিন মেহেদী বলেন, বীজ ও সার মাঠে আবাদ না করে যদি কোনো কৃষক বিক্রির উদ্দেশ্যে অসদুপায় অবলম্বন করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২৩০ কৃষকের মাঝে জনপ্রতি ৯ প্যাকেট করে মোট ২ হাজার ৭০ প্যাকেট সবজির বীজ এবং ৪০৫ কৃষকের মাঝে মাঠে চাষযোগ্য ২০ শতাংশ জমির জন্য লাউ, বেগুন, শসা, মিষ্টিকুমড়াসহ যেকোনো সবজির ১ প্যাকেট করে বীজসহ ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় যৌথ অভিযানে প্রায় ১৪ কোটি টাকার অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ করেছে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন।
গত সোমবার সন্ধ্যায় বিজিবি জানায়, গত ১১ ও ১২ অক্টোবর উপজেলার সীমান্তবর্তী আশ্রায়ণ বিওপির আওতাধীন এলাকায় অভিযানকালে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া ও মদনের ঘাট এলাকায় ৩৫ হাজার কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা। পরে গত সোমবার দুপুরে এসব অবৈধ জাল ধ্বংস করেন পরিচালক (অপারেশন) যশোর সদর দপ্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শিকদারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ।
রাঙামাটির বিলাইছড়িতে নদীতে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ হওয়ার দুঘণ্টা পর স্থানয়ীরা মাছের জাল দিয়ে নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত নারী হলেন লতা মার্মা (৩৩)। তিনি কেংড়াছড়ি গ্রামের মিলন কান্তি চাকমার স্ত্রী। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিলাইছড়ি থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত মানস বড়ুয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে কেংড়াছড়ি থেকে নৌকাযোগে বিলাইছড়ি বাজার আসার পথে কেরণছড়ি এলাকায় এসে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মাছের জাল দিয়ে তল্লাশির পর বেলা সারে এগারটায় তার মরদেহ উদ্ধার হয়। নিহতের স্বামী মিলন কান্তি চাকমা জানিয়েছেন তার স্ত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তাদের সংসারে দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে।
টেকসই ও উন্নত বিশ্ব গঠনে মানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রংপুরে উদযাপিত হয়েছে ৫৬তম বিশ্ব মান দিবস।
“সমন্বিত উদ্যোগে টেকসই উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণে—মান” এই স্লোগানকে ধারণ করে দিবসটি পালন করে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও রংপুর জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ মজিদ আলী, রংপুর ক্যাবের সভাপতি মোঃ আব্দুর রহমান, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মোঃ রশিদুস সুলতান বাবলু, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোঃ গোলাম জাকারিয়া পিন্টু, এবং জেলা হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল হক মুন্না। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসটিআই রংপুর বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক ও অফিস প্রধান (প্রকৌশলী) মুবিন-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে আইএসও’র সদস্যপদ লাভের পর থেকে নিয়মিতভাবে বিশ্ব মান দিবস পালন করে আসছে। বর্তমানে আইএসও’র ১৭৭টি সদস্য দেশের সঙ্গে একযোগে বাংলাদেশও এবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করছে।
তিনি আরও জানান, গত এক বছরে রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি, মান নিয়ন্ত্রণ এবং শিল্পখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিএসটিআই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
বক্তারা বলেন, পণ্য ও সেবার মান বজায় রাখা শুধু শিল্পোন্নয়নের জন্য নয়, বরং ভোক্তা নিরাপত্তা ও জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত।
তাঁরা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে মান সচেতনতা বিস্তার এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণই টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি হতে পারে।
অনুষ্ঠানে সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আল্টিমেটাম ছাড়া কোনো কাজ হয় না বলে মন্তব্য করেছেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ। মঙ্গলবার পূর্বের আল্টিমেটাম দেওয়া দাবির অগ্রগতি জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (রুটিন ভিসি) অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীর সাথে সাক্ষাৎ এর পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসির কাছে দুই দফা দাবি দিয়েছিলাম। তার আপডেট জানতে আজ স্যারের সাথে আবারও দেখা করেছি। আমাদের দাবিগুলো হলো, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়ক দ্রুত সংস্কার করার ব্যবস্থা করা এবং কুষ্টিয়া থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু মৌখিক দাবি ছিল। যেমন, ক্যাম্পাসে একটি ফায়ার সার্ভিস স্থাপন এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া-শান্তিডাঙ্গা এলাকায় যে বিদ্যুৎ সমস্যা আছে তার সমাধানের উদ্যোগ নেয়া। কারণ এখানে প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ভোগান্তির শিকার হয়। আমরা আশাবাদী যে প্রশাসন আমাদের দাবিগুলো দ্রুত পূরণ করবেন। তবে আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে আল্টিমেটাম ছাড়া কোনো কাজ হয় না বা বাস্তবায়ন দেখি না।
সাক্ষাৎকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (রুটিন ভিসি) অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ছাত্রদল যে দাবিগুলো করেছে সেগুলো প্রায় কাজ শুরু হয়ে গেছে। কিছু কাজ চলমান। আর কিছু নীতি নির্ধারনী কাজ আছে যেগুলো মাননীয় উপাচার্য আসলে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিবেন।
“রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না থেকেও জামায়াত জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে”- এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. খায়রুল হাসান।
তিনি বলেন, “মানুষের কষ্ট লাঘব করা আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা না থাকলেও দলীয়ভাবে সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে জামায়াত একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোনপাড়ায় জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক সংস্কার কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী এ সড়ক সংস্কার হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয়রা জানান, জামায়াতের উদ্যোগে সড়ক সংস্কার হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অনেকটাই কমে যাবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. আফতাব উদ্দিন, পৌর আমীর মাওলানা আমিমুল এহসান, পৌর নায়েবে আমীর মাওলানা আনোয়ার হোসেন, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, জামায়াত নেতা ও সাংবাদিক হুমায়ুন কবির, মো. আরিফ, মো. আবু তাহের, মনির হোসেনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উপস্থিত নেতারা বলেন, “জামায়াত সবসময় আর্তমানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে জননেতা মো. খায়রুল হাসান সরকারি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ ও কালীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানান এবং শিক্ষার প্রসারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, জামায়াতের এ ধরনের অংশগ্রহণমূলক উদ্যোগ স্থানীয় উন্নয়নে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
মন্তব্য