ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অক্সিজেনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অক্সিজেনের জন্য জরুরি সহায়তা চেয়ে রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আকুতি জানিয়েছেন দিল্লির কয়েকজন চিকিৎসক।
বিবিসির সোমবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শনিবার দিল্লির একটি হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কারণে এক চিকিৎসকসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে শয্যা না পাওয়া রোগীরা বাইরে দাঁড়িয়ে বহনযোগ্য সিলিন্ডার থেকে অক্সিজেন নেয়ার চেষ্টা করছেন।
রোববার দিল্লিতে নতুন করে অন্তত ২০ হাজার জনের করোনা শনাক্ত হয়। মৃত্যু হয় ৪০৭ জন। অন্যদিকে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর ভারতে এ দিন সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার এক দিনে সর্বোচ্চ প্রায় ৪ লাখ মানুষের করোনা শনাক্তও হয় দেশটিতে।
দিল্লির শ্রী রাম সিং হাসপাতালের চিকিৎসক গৌতম সিং বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ৫০টি বেড ও সংকটাপন্নদের জন্য ১৬টি আইসিউ বেড রয়েছে। কিন্ত অক্সিজেনের নিশ্চয়তা না থাকায় আমরা নতুন কাউকেও ভর্তি করাতে পারছি না।’
নিজের হাসপাতালের জন্য অক্সিজেন সরঞ্জাম চেয়ে টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টও করেছেন এ চিকিৎসক। এর জন্য ১৭ লাখ রুপির আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
গৌতম সিং জানিয়েছেন, অক্সিজেনের অভাবে তার হাসপাতালে রোগীরা মারা যেতে পারেন এমন দুশ্চিন্তার কারণে তিনি ঘুমাতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন যুদ্ধ করছি। আমার হাসপাতালের অর্ধেক কর্মী অক্সিজেন সিলিন্ডার ভরানোর জন্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছে।’
দিল্লিতে হাসপাতালের মালিকানা আছে এমন এক নারী বিবিসিকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না যে কার কাছে গেলে অক্সিজেন সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা ভালো। কিন্তু এখনও অক্সিজেন ঘাটতির কারণে আমরা অনেক রোগীকে ভর্তি করাতে পারছি না।’
অক্সিজেন সংকটের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করে আসছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে সরকারের দাবি, পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকলেও পরিবহনের অসুবিধার কারণে সংকট তৈরি হচ্ছে।
এর আগে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে গাফিলতি দেখলে কেন্দ্র, রাজ্য বা স্থানীয় পর্যায়ের কোনো আমলাকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না বলে জানিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। প্রয়োজনে কর্মকর্তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:Hear from the head of the hospital. This was two days ago and he got help. But more can be done. pic.twitter.com/geGzPeppxZ
— Vikas Pandey (@BBCVikas) April 28, 2021
৫ মে শাপলা চত্বর গণহত্যা দিবস ঘোষণাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা জারি এবং পবিত্র কোরআন ও ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইন করা। এছাড়া জুলাই সনদেও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা গণহত্যাকাণ্ড এবং ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ রাখার কথা বলেছে সংগঠনটি।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ সাজিদুর রহমানের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
এ সময় হেফাজত মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, কোন অভিভাবক তার সন্তানকে নাচ-গান শেখাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন না। সংগীতের চেয়ে মুসলমানদের সন্তানদের ধর্ম শিক্ষা জরুরি। কোরআন আবমাননার জন্য শাস্তিযোগ্য আইন করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক ধর্মীয় একটি সংগঠন। কোন দলীয় রাজনৈতিক সাংগঠনিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। নির্বাচন নিয়ে হেফাজতের নিজস্ব কোন তৎপরতা বা জোট করা হেফাজতের মৌলিক নীতির পরিপন্থি। তবে হেফাজতে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক, দেশপ্রেমিক ব্যক্তিরা আছেন। তারা যার যার রাজনৈতিক বক্তব্য ও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। এর সঙ্গে হেফাজতের কোন সম্পর্ক নেই, হেফাজত কোন দায় নেবে না।
ভোট নিয়ে হেফাজত আমিরের একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, হেফাজত আমির দেশের একজন শীর্ষ আলেম ও মুরব্বি। তিনি তার মুরব্বির জায়গা থেকে ধর্মীয় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
তবে ধর্মীয় দৃষ্টিতে কাকে ভোট দেয়া যাবে বা যাবে না-এ বিষয়ে হেফাজতের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোটের সময় এ বিষয়ে হেফাজত তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবে।
বিভিন্ন মাজারে হামলা প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, বিভিন্ন মাজারে ইসলাম ও সমাজবিরোধী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় বলে শোনা যায়। এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে আমরা সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। তবে হেফাজত আইন হাতে তুলে নেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে দোয়া ও মোনাজাত করেন হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মুফতি জসিম উদ্নি, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি প্রমুখ।
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে ১৭ অক্টোবর শুক্রবার। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওইদিন বিকালে এ অনুষ্ঠান হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে গণভোটের সময়সূচি নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও সনদে সইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সনদে কারা সই করবেন, সেটিও দলগুলো ঠিক করে রেখেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’-এর চূড়ান্ত কপি দেখে তারপরই সইয়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, দলটি জুলাই সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত। দলের পক্ষে দুজন নেতা এ সনদে স্বাক্ষর করবেন। তারা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ। আর সার্বিকভাবে গত ১৭ বছর রাজপথের আন্দোলনে বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়গুলো তদারকি করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল। দলের স্থায়ী কমিটি তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে আরও আগেই নাম পাঠিয়েছে ঐকমত্য কমিশনে।
কোনো ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম থাকলে সেগুলো আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের মাধ্যমে ‘ডি-রেজিস্টার’ করতে বলেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিটিআরসির অফিশিয়াল ফেসবুকে এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নিজ এনআইডিতে পছন্দমতো ১০টি সিমকার্ড রেখে অতিরিক্ত সিমকার্ডগুলো ৩০ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে ডি-রেজিস্টার (নিবন্ধন বাতিল)/মালিকানা পরিবর্তন করুন।
জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে কতগুলো সিমকার্ড নিবন্ধিত হয়েছে তা যাচাই পদ্ধতি :
*১৬০০১#, এনআইডির শেষ ৪ ডিজিট, সেন্ড
বিটিআরসি বলেছে, কোনো গ্রাহক বর্ণিত প্রক্রিয়ায় সিম ডি-রেজিস্ট্রোর/মালিকানা পরিবর্তনে ব্যর্থ হলে বিটিআরসি কর্তৃক অতিরিক্ত সিমকার্ডগুলো দৈবচয়নের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করা হবে। গত মে মাসে কমিশন সভায় ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ সিমের সংখ্যা ১৫ থেকে ১০টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত দেয় বিটিআরসি।
২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করা যাবে বলে নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। এর আট বছর পর চলতি বছরের ১৯ মে কমিশন সভায় ১৯ মে সিমের সংখ্যা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।
রাজধানীর পল্টন মডেল থানার নাশকতার এক মামলায় বিএনপিন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ১৬৭ জনকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ সাব্বির ফয়েজের আদালত এই আদেশ দেন।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামি হলেন– জাতীয়তাবাদী মহিলার দলের সভাপতি আফরোজ আব্বাস, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কফিল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, মিডিয়া ইউং শামসুদ্দিন দিদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমুনুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়, যুবদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মনজু, ঢাকা দক্ষিণের ছাত্রদলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিনসহ প্রমুখ।
মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহি উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, সম্প্রতি এই মামলায় তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় দায় থেকে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। আজ আদালত এ প্রতিবেদন গ্রহণ করে অভিযোগের দায় থেকে আসামিদের অব্যাহতির আদেশ দেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় দেরিতে হলেও আমরা সুবিচার পেয়েছি।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর বিএনপি নেত্রী আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে একটি মিছিল ফকিরাপুলের দিক থেকে শো-ডাউন করে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসে। এরপর নবী উল্লাহ নবী ও কফিল উদ্দিনের নেতৃত্বে অপর দুইটি মিছিল শো-ডাউন করে একই দিক থেকে আসতে থাকে এবং সর্বশেষ মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ৮-১০ হাজার জনের একটি মিছিল নিয়ে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসে। তারা নয়াপল্টনে ভিআইপি রোড বন্ধ করে মিছিল ও শো-ডাউন করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। পুলিশ তাদের রাস্তার এক লেন ছেড়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার অনুরোধ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়।
আরও বলা হয়, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে আসামিরা অবৈধ জনতাবদ্ধে বিএনপির পার্টি অফিস থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে নয়পল্টনে ভিআইপি রোডে হকস বে নামে গাড়ির শো রুমের উত্তর পাশে রাস্তায় পুলিশের একটি সরকারি ডাবল কেবিন পিকাপ পুড়িয়ে আনুমানিক মূল্য ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি করে। সরকারি কাজে বাধা দিয়ে অতর্কিতে পুলিশকে আক্রমণ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আসামিরা রাস্তার পাশে ডিউটিরত এসির (পেট্রোল-মতিঝিল) সরকারী মিটসুবিসি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে পোড়া গাড়ির আনুমানিক মূল্য ৩৫ লাখ টাকা। আসামিদের নিক্ষেপিত ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আসামিরা নাইট এ্যাগেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং পর্যন্ত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা রাস্তায় চলাচলরত সাধারণ জনগণের উপর আক্রমণ করে প্রাইভেটকারসহ রাস্তায় আটকে পড়া আরও অনেক গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। এ ঘটনায় পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক মো. আল আমিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি এই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলা তদন্ত কর্মকর্তা।
আজ সোমবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৬টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান সপ্তম। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) এ সময় ঢাকার স্কোর ছিল ১৫১। বাতাসের এ মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
একই সময়ে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ইরাকের বাগদাদ ও ভারতের দিল্লি। শহর দুটির স্কোর যথাক্রমে ২২৭৮ ও ১৯০। স্কোর ১৮৩ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর, চতুর্থ অবস্থানে আছে কলকাতা, স্কোর ১৬৮ এবং ১৬৩ স্কোর নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে আছে উজবেকিস্তানের তাশকেন্ট।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে মাঝারি বা গ্রহণযোগ্য মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে খুবই অস্বাস্থ্যকর বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে দুর্যোগপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়।
২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়াসহ তিন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রতিবাদে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
সোমবার সকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষকদের একাংশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গতকাল রোববার থেকে অবস্থান করছেন। প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বেলা ১১টার দিকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক জড়ো হয়েছেন। জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজীসহ অনেকেই পলিথিন ও মাদুর বিছিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন। এক পাশে শিক্ষকরা স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় তারা প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের জলকামান ও লাঠিচার্জের বিচার দাবি করেন।
তারা বলেন, আমরা সুবিচার পাচ্ছি না। প্রেসক্লাবের সামনে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা তো এখানে থাকতে আসিনি। দাবি মেনে নিলে আমরা ফিরে যাবো। অবিলম্বে মধ্যে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া এবং ১ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
রাজধানীর একাধিক স্কুল কলেজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে শিক্ষকরা স্কুলে উপস্থিত হলেও ক্লাসসহ কোনো কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কর্মবিরতি চলছে। তারা শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিবেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজি বলেন, ‘গতকাল শিক্ষকদের ওপর যে হামলা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। এই সরকার থেকে এটি আশা করিনি। আমাদের পাঁচ সহযোদ্ধাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের তিনটি বিষয় নিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন না হবে, ততক্ষণ আমাদের কর্মসূচি চলবে।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেহেতু আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছি, সেহেতু আপনারা শিক্ষকরা শহীদ মিনারে চলে আসুন। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধান আপনাদের বাধা দেয়, তাহলে শিক্ষকরা মিলে তাকে বাধ্য করবেন।
এর আগে, রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সোমবার থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজি। তিনি বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদে সোমবার থেকেই দেশের সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করা হবে।’
রোববার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় শিক্ষকদের পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ও লাঠিচার্জ করে। এরপর বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েন তারা। কিছু শিক্ষকদের আবারও প্রেসক্লাব এলাকায় অবস্থান নিতে দেখা যায়। এ ছাড়া আরেকটি অংশ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সরে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন।
প্রজ্ঞাপন ছাড়া শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন না বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জোট। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে আলোচনা শেষে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব আজিজী এ ঘোষণা দেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের শিক্ষক সমাবেশে লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত ছিল। ওইদিন শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেসিকের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস পার হলেও প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ।
সূত্রমতে, শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে নতুন করে বাড়িভাড়া ভাতা ও মেডিকেল ভাতার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাবনা গত ৫ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ নির্ধারণে নতুন প্রস্তাব করা হয়। একইসঙ্গে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ এবং চিকিৎসা ভাতা এক হাজার টাকার প্রস্তাব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ঢাকার সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরীকে সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে সাময়িক বরখাস্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাকে বরখাস্ত করে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত ঢাকার সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম জুডিশিয়াল সার্ভিসের শৃঙ্খলা বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা যুক্তিযুক্ত মর্মে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম জুডিশিয়াল সার্ভিসের শৃঙ্খলা বিধিমালা-২০১৭ এর বিধি ১১ অনুযায়ী রেজাউল করিম চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকার সিএমএম থাকাকালীন রেজাউল করিম চৌধুরীর দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
মন্তব্য