পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরালা, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিসহ ভারতের পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে রোববার।বাংলাভাষী রাজ্যটিতে মমতা বনাম মোদি লড়াইয়ে জয় কার, তা নিয়েই উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে কি টানা তৃতীয়বার সরকার গঠনের সুযোগ পাবে রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস? নাকি তৃণমূলের দূর্গ ভাঙতে সফল হবে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি? শেষ মুহূর্তে এসব প্রশ্নে তোলপাড় সারা ভারতের রাজনীতি।
সব জবাব মিলবে রোববার।
করোনাভাইরাস মহামারিকালীন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ভোট গণনার প্রস্তুতি নিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৫ ধাপে সম্পন্ন হচ্ছে স্যানিটাইজেশন। এ ছাড়া সামাজিক দূরত্ব রক্ষা, জনসমাগম নিষিদ্ধ করাসহ অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ-আসামসহ পাঁচ রাজ্যে দুই হাজার ৩৬৪টি হলরুমে চলবে গণনা। ২০১৬ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ২০০ শতাংশেরও বেশি। সে বছর ৮২২টি আসনের এক হাজার দুটি হলরুমে ভোট গণনা হয়েছিল।
মূলত আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নের কারণে এবার আরও বিস্তৃত পরিসরে গণনা চলবে।
করোনার ব্যাপক সংক্রমণ ও প্রাণহানি, অক্সিজেনের জন্য হাহাকার, হাসপাতালে বেডের সংকটসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম ও টিকার তীব্র ঘাটতি ইত্যাদির নিচে অনেকটাই চাপা পড়েছে ভোটের শোরগোল।
এর মধ্যে আট ধাপে ৩৪ দিনের ভোটযুদ্ধ আর এর চেয়েও দীর্ঘ নির্বাচনি প্রচার শেষে পাঁচ রাজ্যেই করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু ঊর্ধ্বমুখী।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে করোনা শনাক্তের হার ৭৮ শতাংশের ওপরে থাকা ১১ রাজ্যের মধ্যে আছে কেরালা, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গ।
ভারতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এক কোটি পৌনে ৯২ লাখ মানুষের দেহে। মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ১২ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে চার লাখের বেশি মানুষের দেহে। এ সময়ে প্রাণ গেছে তিন হাজার ৫২২ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে ভারতে। প্রাণহানির তালিকাতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পরের অবস্থান ভারতে।
স্বাভাবিকভাবেই এ পরিস্থিতিতে চাপে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে মার্চ মাসেই মহামারি পরিস্থিতি জটিল হতে যাচ্ছে বলে স্বাস্থ্যবিদদের সতর্কতায় সরকার কান দেয়নি বলে আরও বেড়েছে সে চাপ।
এ অবস্থায় অবস্থান দুর্বল- এমন রাজ্যগুলোতেও কি বিজেপি ঘাঁটি গাড়তে পারবে নাকি হারানো আসন ফিরে পাবে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস, নানা গুঞ্জন চলছে তা নিয়েও।
আগামীকাল সকাল থেকে ভোট গণনা শুরু হয়ে তা চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত। প্রায় এক হাজার ১০০ পর্যবেক্ষক, প্রার্থী ও তাদের এজেন্টরা গণনা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবেন। প্রত্যেকের সঙ্গে করোনা টেস্টের নেগেটিভ প্রতিবেদন অথবা টিকা গ্রহণের প্রমাণ থাকা বাধ্যতামূলক।
মমতারই থাকছে পশ্চিমবঙ্গ?
বুথফেরত জরিপের আভাস, পশ্চিমবঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও শেষ পর্যন্ত বিজেপিকে হারিয়ে জয় পেতে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসই।
সংঘাত-সহিংসতা ও মমতা-মোদি বাগযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত আট ধাপে ভোট হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
রাজ্যের ১০৮টি গণনা কেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
২৩ জেলার সবগুলোতে কমপক্ষে ২৯২ জন পর্যবেক্ষক উপস্থিত থাকবেন, মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ২৫৬টি ইউনিট।
বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক কর্মজীবনের সবচেয়ে কঠিন নির্বাচনের সামনে দাঁড়িয়ে মমতা। কালই নির্ধারিত হবে টানা ১০ বছর ধরে রাজ্য শাসন করা এই নেতার ভবিষ্যৎ।
তার বিরুদ্ধে জয়ের জন্য দীর্ঘ প্রচার চালিয়েছেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ বিজেপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতা।
২৯৪ আসনের বিধানসভায় যে দল বা জোট ‘ম্যাজিক ফিগার’ ১৪৮টি আসন পাবে, সরকার গঠন করবে তারাই।
২০১৬ সালের নির্বাচনে মোদির বিজেপি জিতেছিল মাত্র তিন আসন। এরপর থেকেই মোদি সরকারের কট্টর সমালোচক মমতার বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে আরও শক্ত ঘাঁটি তৈরির লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু করে বিজেপি।
এ অবস্থায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি পায় বিজেপি।
কী বলছে বুথফেরত জরিপ?
পশ্চিমবঙ্গে কমপক্ষে চারটি জরিপে মমতার নিরঙ্কুশ বিজয়ের আভাস দেয়া হয়েছে।
এপিবি-আনন্দ বুথফেরত জরিপ বলছে, ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতা ধরে রাখবে তৃণমূল কংগ্রেস। দলটি আসন পেতে পারে ১৫২ থেকে ১৫৪টি। বিজেপির ঘরে যেতে পারে ১০৯ থেকে ১২১টি আসন। আর বাম-কংগ্রেস জোট পেতে পারে ১৪ থেকে ২৫টি আসন।
এই জরিপ ঠিক থাকলে এককভাবেই তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে তৃণমূল।
একই আভাস এনডিটিভির বুথফেরত জরিপেও। তাদের হিসাবে মমতার ঘাসফুল মার্কা ২৯৪টি আসনের মধ্যে পেতে পারে ১৫৬টি আসন। আর পদ্মফুল মার্কা বিজেপি পেতে পারে ১২১টি আসন। ১৭টি আসন যেতে পারে অন্যদের ঘরে।
মমতার অনায়াস জয়ের কথা বলছে টাইমস নাউয়ের জরিপও। এতে দেখা যাচ্ছে, মমতা পাচ্ছেন ১৫৮টি আসন, আর মোদির বিজেপি পেতে পারেন ১১৫টি আসন। অন্যদের ঘরে যেতে পারে ২১টি আসন।
মমতার জয়জয়কারের কথা বলছে ‘গ্রাউন্ড জিরো রিসার্চ’। তাদের হিসাবে তৃণমূল পেতে পারে ১৫৪ থেকে ১৮৬টি। বিজেপি পেতে পারে ৯৬ থেকে ১২৪টি আসন। বামসহ অন্যরা পেতে পারে ছয়টি থেকে ১৪টি আসন।
অন্যদিকে মমতার জয়ের কথা সরাসরি না বললেও ‘অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া’র জরিপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দেয়া হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি পেতে পারে ১৩৪ থেকে ১৬০টি আসন। তৃণমূল পেতে পারে ১৩০ থেকে ১৫৬টি আসন। অন্যান্য দলের ঘরে যেতে পারে তিনটি আসন।
রাজ্যটিতে তৃতীয় বৃহৎ প্রতিদ্বন্দ্বী বাম-কংগ্রেস জোট।
পশ্চিমবঙ্গে বামদের আধিপত্য গুঁড়িয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে মমতার তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৬ সালের নির্বাচনেও নিরঙ্কুশ জয় পায় দলটি। সেবার ২৯৪ আসনের মধ্যে তৃণমূল পায় ২১১টি আসন। কংগ্রেস জিতে ৪৪টি আসন; বাম ফ্রন্ট ৩২টি আসন।
অসমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী আরেক রাজ্য অসমে ২৭ মার্চ, ১ এপ্রিল ও ৬ এপ্রিল তিন ধাপে ভোট হয়। রাজ্যটিতে ক্ষমতায় আবারও গেরুয়া শিবিরই সম্ভাবনাময় বলে জানা যাচ্ছে বুথফেরত জরিপ থেকে।
রাজ্যটিতে ক্ষমতাসীন বিজেপি জোট গড়েছে অসম গণ পরিষদ, ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল ও গণ সুরক্ষা পার্টির সঙ্গে।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস, এআইইউডিএফ, বোরোল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট, সিপিআই(এম), সিপিআই, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন, রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও আঞ্চলিক গণ মোর্চার সমন্বয়ে গঠিত ‘মহাজোট’।
দীর্ঘদিন ধরে অসমে কংগ্রেসের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকলেও ২০১৬ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে কংগ্রেসকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।
অন্যান্য রাজ্যের পরিস্থিতি
তামিলনাড়ু, কেরালা ও পুদুচেরিতে একযোগে এক ধাপেই বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয় গত ৬ এপ্রিল।
বলা হচ্ছে, কেরালায় চার দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা বাম জোটই আবার আসছে ক্ষমতায়।
আসাম-কেরালা-পুদুচেরিতে এআইএনআরসি-বিজেপি-এআইএডিএমকে জোটের বিপরীতে কংগ্রেসের অবস্থান বেশ দুর্বল হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
একমাত্র তামিলনাড়ুতে সুখবর পেতে পারে ভারতের প্রধান বিরোধী দলটি। রাজ্যটিতে এআইএডিএমকে-বিজেপি জোটকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে ডিএমকে নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলীয় জোট।
পাঁচটি রাজ্যেই করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিজেপির ব্যর্থতার প্রভাব ভোটারদের মনে কমবেশি পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:চলতি ২০২৫ সালের জন্য অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন অর্থনীতিবিদ—জোয়েল মোকির, ফিলিপ আগিয়োঁ ও পিটার হাউইট। উদ্ভাবন নির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করার জন্য তারা এ পুরস্কার পেয়েছেন।
এই তিন অর্থনীতিবিদের মধ্যে অর্ধেক পুরস্কার পেয়েছেন জোয়েল মোকির। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্তগুলো শনাক্ত করার জন্য তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। ‘সৃজনশীল বিনাশ’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির তত্ত্ব দেওয়ার জন্য বাকি অর্ধেক পুরস্কার যৌথভাবে পেয়েছেন ফিলিপ আগিয়োঁ ও পিটার হাউইট। রয়টার্সের তথ্যানুসারে, এই পুরস্কারের মূল্যমান ১২ লাখ ডলার।
বিবৃতিতে নোবেল কমিটি বলেছে, নোবেলজয়ীরা আমাদের শিখিয়েছেন—সব সময় প্রবৃদ্ধি হবে, এটা কখনোই নিশ্চিত ধরে নেওয়া যায় না। মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রবৃদ্ধি নয়, বরং স্থবিরতাই ছিল স্বাভাবিক অবস্থা। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হলে সম্ভাব্য হুমকিগুলো চিহ্নিত করে তা মোকাবিলা করতে হবে।
ঐতিহাসিক উপাত্ত ও দলিল ব্যবহার করে মোকির দেখিয়েছেন, কীভাবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও উদ্ভাবন একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে নিয়মিত বিষয়ে পরিণত করেছে। অন্যদিকে আগিয়োঁ ও হাউইট সেই প্রবৃদ্ধির অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। ১৯৯২ সালের এক প্রবন্ধে তারা গাণিতিক মডেলের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন, যখন নতুন ও উন্নত কোনো পণ্য বাজারে আসে, তখন পুরোনো পণ্য বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলো ধীরে ধীরে টিকে থাকতে পারে না। এই প্রক্রিয়াই অর্থনীতিতে ‘সৃজনশীল বিনাশ’ নামে পরিচিত। অর্থাৎ পুরোনো ব্যবস্থার ভেতর থেকেই নতুন উদ্ভাবন হয়।
পুরস্কারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ধারাবাহিকভাবে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে, গত দুই শতকের ইতিহাসে তা প্রথম দেখা গেছে। এর ধারাবাহিকতায় কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে। সেই মানুষেরাই আজকের সমৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে তুলেছে।
চলতি বছর অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী জোয়েল মোকির, ফিলিপ আগিয়োঁ ও পিটার হাউইট দেখিয়েছেন, উদ্ভাবনই ভবিষ্যৎ অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি। তাদের গবেষণা মনে করিয়ে দেয়—অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয় বা নিশ্চিত প্রক্রিয়া নয়।
অর্থনীতির এই পুরস্কার মূল নোবেল পুরস্কারের অন্তর্ভুক্ত নয়। ১৯৬৯ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোবেল পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে এই পুরস্কার চালু করে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫৭ জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্থনীতিতে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুরস্কার—এটাই এই পুরস্কারের কেতাবি নাম।
সবচেয়ে বেশি বয়সে এই পুরস্কার পেয়েছেন লিওনিড হারউইচ। ২০০৭ সালে এই পুরস্কার পাওয়ার সময় তার বয়স ছিল ৯০ বছর। তিনি আরও দুজনের সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। সবচেয়ে কম বয়সে (৪৬) এই পুরস্কার পেয়েছেন এস্থার দুফলো। ২০১৯ সালে স্বামী অভিজিৎ ব্যানার্জির সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার পান তিনি।
এবারের বিজয়ীদের পরিচয়
জোয়েল মকিয়র যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। তিনি পুরস্কারের অর্ধেক ভাগ পেয়েছেন। অন্য অর্ধেক ভাগ ভাগাভাগি করেছেন ফিলিপ আজিওন ও পিটার হাওয়িট।
আজিওন বর্তমানে প্যারিসের কোলেজ দ্য ফ্রঁস ও ইনসিয়াড এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্সে অধ্যাপনা করছেন। হাওয়িট যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক।
নোবেল কমিটির সদস্য জন হ্যাসলার বলেন, ‘জোয়েল মকিয়র ঐতিহাসিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ওপর নির্ভরশীল টেকসই প্রবৃদ্ধির উপাদানগুলো চিহ্নিত করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিপ আজিওন ও পিটার হাওয়িট ‘ক্রিয়েটিভ ডেস্ট্রাকশন’-এর একটি গাণিতিক মডেল তৈরি করেছেন — এটি এমন এক অন্তহীন প্রক্রিয়া যেখানে নতুন ও উন্নত পণ্য পুরনোকে প্রতিস্থাপন করে।’
গাজা শান্তি চুক্তি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বক্তৃতা দেওয়ার সময় ইসরায়েলি পার্লামেন্টে হট্টগোল সৃষ্টি হয়েছে। একজন আইনপ্রণেতা ট্রাম্পের দিকে চিৎকার করে ‘ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিন’ স্লোগান দেন। শুধু তাই নয়, তিনি ট্রাম্পকে ‘সন্ত্রাসী’ বলেও বর্ণনা করেন।
গতকাল সোমবার বিরল এই ঘটনার পর দুই এমপিকে পার্লামেন্ট থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়।
জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্প তার ভাষণের সময় যখন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের প্রশংসা করছিলেন, তখন হাদাশ পার্টির প্রধান আয়মান ওদেহ এবং দলের একজন সদস্য ‘ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিন’ লেখা প্ল্যাকার্ড ধরে রাখেন।
পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়ার জবাবে ওদেহ বলেছেন, তিনি সবচেয়ে মৌলিক দাবি উত্থাপন করেছেন। এটি এমন একটি দাবি, যার সঙ্গে সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একমত: একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া।
নেসেটের স্পিকার আমির ওহানা এই হট্টগোলের জন্য ট্রাম্পের কাছে তাৎক্ষণিক ক্ষমা চেয়েছেন। ওহানা বলেন, ‘এর জন্য দুঃখিত, মি. প্রেসিডেন্ট।’
ইসরায়েলি এমপি এবং আরেক সদস্যকে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা যখন বের করে দিচ্ছিলেন, তখন ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, কর্মকর্তারা ‘খুবই দক্ষ’। এটি শুনে অন্যান্য সংসদ সদস্যরা হেসে ওঠেন।
এদিকে, পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া আগে নিজের বক্তৃতায় ওদেহ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করে বলেন, ‘নেসেটে ভণ্ডামির মাত্রা অসহনীয়।’
তিনি বলেন, নজিরবিহীন তোষামোদের মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে উচ্চপদে অধিষ্ঠিত করলেই তাকে বা তার সরকারকে গাজায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে অব্যাহতি দেওয়া যাবে না। এমনকি লাখ লাখ ফিলিস্তিনি এবং হাজার হাজার ইসরায়েলি নিহতদের রক্তপাতের দায় থেকেও মুক্তি দেওয়া যাবে না।
জেন-জি নেতৃত্বাধীন রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। গতকাল সোমবার বিভিন্ন সূত্রের বরাতে রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় নেতা সিতেনি র্যান্ড্রিয়ানাসোলোনিয়িকো রয়টার্সকে জানান, সেনাবাহিনীর কিছু ইউনিট বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর রোববার রাজোয়েলিনা মাদাগাস্কার ত্যাগ করেন।
সিতেনি বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্সির কর্মীদের ফোন করেছিলাম। তারা নিশ্চিত করেছে, তিনি দেশ ছেড়ে গেছেন।’
এর আগে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলেছিল, রাজোয়েলিনা গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তবে তার বর্তমান অবস্থান অজানা।
একটি সামরিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, রাজোয়েলিনা রোববার একটি ফরাসি সামরিক বিমানে দেশত্যাগ করেছেন।
ফরাসি রেডিও আরএফআই জানিয়েছে, রাজোয়েলিনা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, মাদাগাস্কারের সেন্ট মেরি বিমানবন্দরে একটি ফরাসি সেনাবাহিনীর বিমান অবতরণ করেছিল। এর পাঁচ মিনিট পরে একটি হেলিকপ্টার এসে রাজোয়েলিনাকে সেটিতে স্থানান্তর করে।
সাবেক ফরাসি উপনিবেশ দেশটিতে ২৫ সেপ্টেম্বর পানি ও বিদ্যুৎ সংকটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। কিন্তু দ্রুতই তা দুর্নীতি, খারাপ শাসন এবং মৌলিক পরিষেবার অভাবসহ বিস্তৃত অভিযোগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে পরিণত হয়।
নেপালে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে জেন-জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৫ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি বন্দীকে এখনো খুঁজছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম খবরহাব এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৫ হাজার ৫৪৭ জন পলাতক এখনো পলাতক। পুলিশ ইতোমধ্যেই দেশব্যাপী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৯ হাজার ৮ জন বন্দীকে আটক করেছে।
মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, বাকি পলাতকদের সন্ধান তীব্র গতিতে চলছে। মন্ত্রণালয় পলাতকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে।
এর আগে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, অস্থিরতার সময় প্রায় ১ হাজার নাবালকসহ ১৪ হাজারেরও বেশি বন্দি কারাগার থেকে পালিয়ে যায়।
কাঠমান্ডু পোস্ট উল্লেখ করেছে, পলাতকদের মধ্যে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ এবং মানব পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিরাও রয়েছেন। তাদের খুঁজে বের করে আটক করার জন্য সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে মোতায়েন করা হয়েছে।
আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছিলেন, পলাতকরা জননিরাপত্তার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি। তারা অপরাধমূলক গ্রুপ গঠন করতে পারে। বিশৃঙ্খলার সময় অফিস এবং ব্যারাক থেকে ১২০০টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় ১ লাখ রাউন্ড গুলি চুরি করা হয়েছিল।
সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে কাঠমান্ডু এবং নেপালের অন্যান্য শহরে দুর্নীতি ও সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর নেতৃত্বে মূলত জেনারেশন-জেড ছাত্র এবং কর্মীরা ছিলেন।
বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রসিকিউটরের অফিসসহ সরকারি ভবনগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তাদের বাড়িতে হামলা করে। দেশজুড়ে সহিংসতায় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়।
১২ সেপ্টেম্বর নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান নিযুক্ত করা হয়। তিনি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে শীর্ষ এই পদে অধিষ্ঠিত হন।
কার্কি বলেছেন, বর্তমান সরকার ছয় মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকবে না। ২০২৬ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বন্দি থাকা জীবিত বাকি ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির হাতে তুলে দিয়েছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সোমবার সকাল আটটার পর বন্দি মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস এলাকা থেকে এসব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই রেডক্রসের গাড়িগুলো তাদের সংগ্রহ করে গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে তুলে দেবে। এদিন মুক্তি পাওয়া বন্দিদের দ্বিতীয় দল তারা।
বন্দিদের দ্বিতীয় এই দলটিকে হামাস রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে।
এর আগে, এদিন সকালে প্রথম ৭ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। মুক্তি পাওয়া ওই ইসরায়েলিদের গাজার সীমান্ত পার করে নিজ দেশে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ইসরায়েলের এক সামরিক ঘাঁটিতে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার করা হয়।
এরপর গাজায় হামাসের বন্দিশালায় ৭৩৮ দিন কাটানোর পর ইসরায়েলে ফেরা এসব বন্দিরা নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন। নতুন মুক্তি পাওয়া ১৩ বন্দিকেও একই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আরও ৪৮ বন্দির মৃতদেহ আছে হামাসের কাছে। সেগুলোও আজকের মধ্যেই রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
জিম্মি মুক্তির খবরে তেলআবিবে উচ্ছ্বাস-অশ্রু
এদিকে জিম্মি মুক্তির খবরে তেলআবিবে জড়ো হওয়া মানুষের মধ্যে অশ্রুসজল উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে আনন্দের পাশাপাশি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সাত জিম্মি কিছুক্ষণ আগে সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছেন। তারা এখন প্রাথমিক অভ্যর্থনা কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন।
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ওই কেন্দ্রেই তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে মিলিত হবেন। ওদিকে ‘দ্য হোস্টেজ ও মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ওয়েলকাম হোম’ পোস্ট করে মুক্তি পাওয়াদের স্বাগত জানিয়েছে। এ সংগঠনটি জিম্মি মুক্তির দাবিতে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে আসছিল।
আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়নি। শেষ জিম্মির অবস্থান শনাক্ত ও যথাযথ দাফনের জন্য ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম শেষ হবে না। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, বলেছে সংগঠনটি।
জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)-এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি রোববার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরাঘচি বলেন, ‘আমরা আইএইএ-এর সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছি। জাতিসংঘ যদি এমন কোনো প্রস্তাব দেয়, যা ইরানের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সহায়ক হয়— আমরা আবার চুক্তিতে ফিরে যাব।’
ইরান ১৯৬৮ সালে আইএইএ’র সঙ্গে নন-প্রোলিফারেশন অ্যাক্ট (এনপিটি) চুক্তি করে। তখন ইরানের রাজা রেজা পাহলভী দেশটির রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছিলেন। এই চুক্তির মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দেয় যে তারা কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না এবং আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
গত জুনে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর আইএইএ’র সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানায়, ইরানের কাছে বর্তমানে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে, যার বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশ। বিশুদ্ধতার মান ৯০ শতাংশে উন্নীত করা গেলে তা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি সম্ভব।
আইএইএ’র ওই বিবৃতির এক সপ্তাহ পর ১২ জুন রাতে ইসরায়েল ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এ অভিযান চালানো হয়েছে।
১২ দিনব্যাপী সংঘাতে ইরানের সেনাপ্রধান, সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও অন্তত ১২ জন জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোরও। তবে এখনো সেই ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের কোনো হদিস মেলেনি বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
সংঘাত শেষে আইএইএ তেহরান সফরের আগ্রহ জানালেও ইরান জানায়, সংলাপের জন্য তারা প্রস্তুত, তবে পরমাণু স্থাপনা দেখানোর বাধ্যবাধকতা তাদের নেই।
এরপর সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আব্বাস আরাঘচি। কিন্তু জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় সেই বৈঠক ব্যর্থ হয়। পরে জাতিসংঘ ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
রোববারের সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ফের আলোচনায় বসা হবে কি না— জানতে চাইলে আরাঘচি বলেন, ‘আমরা তার প্রয়োজন দেখছি না। ইউরোপের সঙ্গে বৈঠকের আর কোনো ভিত্তি নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইতোমধ্যে কয়েকটি যুদ্ধ থামিয়ে ‘লাখ লাখ জীবন’ বাঁচিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটি ‘নোবেলের জন্য নয়’ বরং ‘জীবন বাঁচানোর জন্য’ করেছেন।
রোববার হোয়াইট হাউস প্রকাশিত সাংবাদিকদের সঙ্গে ট্রাম্পের কথোপকথনের এক ফুটেজে প্রেসিডেন্টকে এ কথা বলতে শোনা যায়।
ট্রাম্প বলেন, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাতের সমাধান করতে পারবেন বলেও তিনি বিশ্বাস করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি শুনেছি পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে এখন একটি যুদ্ধ চলছে। আপনি জানেন, আমি আরেকটি যুদ্ধ বন্ধ করছি... কারণ আমি যুদ্ধ সমাধানে পারদর্শী।’
এর আগে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সেনারা পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে জড়ায়। আফগানিস্তানের টোলো নিউজ জানিয়েছে, লড়াইয়ে কমপক্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের জিও টিভি জানিয়েছে, সংঘর্ষে কয়েক ডজন আফগান সেনা প্রাণ হারিয়েছে।
মন্তব্য