করোনাভাইরাস ও নির্বাচনি সন্ত্রাসের দ্বিমুখী আক্রমণে বিপর্যস্ত হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের জনজীবন।
রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বাকি আছে আরও তিন দফার ভোট। তবে এরই মধ্যে যেভাবে রাজনৈতিক সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, তাতে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ।
রাজ্যের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, এবার নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা অনেক বেশি হবে। কারণ প্রধান দুটি দল বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের পরস্পরবিরোধী হাইভোল্টেজ প্রচার, যা অনেক সময়ই ছিল অগণতান্ত্রিক, অশালীন এবং একে অপরকে দেখে নেয়ার হুমকিতে পরিপূর্ণ।
দুই দলের কর্মীরা প্রচারের সময় নেতাদের বক্তব্য শুনে নিজেদের তৈরি করে রেখেছেন ২ মে ফল ঘোষণার পরবর্তী কর্মসূচির জন্য। সেসব কর্মসূচি অহিংস হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
১৭ এপ্রিল পঞ্চম দফা ভোটগ্রহণ শেষে কলকাতা সংলগ্ন বিধাননগর, নদীয়ার চাকদহ, বর্ধমান শহরের বিভিন্ন অংশ, উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুজন বিজেপি কর্মী খুন হওয়ারও অভিযোগ আসে।
রোববার আক্রান্ত হন বিজেপির দুজন প্রার্থী। কলকাতায় বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবের ওপর হামলা হয়। গুলিবিদ্ধ হন মালদহ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী গোপালচন্দ্র সাহা।
হাইভোল্টেজ প্রচারের আবহে তৈরি হওয়া উত্তেজনার আগুনে ধিকি ধিকি জ্বলছে বাংলার জনজীবন। নির্বাচন শেষে তা আরও ব্যাপক হতে পারে।
নির্বাচনকে ঘিরে একদিকে সহিংসতা আর অন্যদিকে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা যখন আছড়ে পড়েছে দেশে, তখন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত ছিলেন নির্বাচনি প্রচারে।
‘গণতন্ত্রের উৎসব’ বলে সংবাদমাধ্যম ব্যস্ত থেকেছে ভোটযুদ্ধ নিয়ে। কারোর মুখে শোনা যায়নি করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ নিয়ে একটি শব্দ।
গত বছরই চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ২০২১ সালে আছড়ে পড়বে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা। কিন্তু ক্ষমতা দখল বা ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে করোনার সংক্রমণ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে।
সংক্রমণ রোধে প্রস্তুত থাকা বা সংক্রমিত মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা- কোনো ক্ষেত্রেই দূরদর্শী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারকে। এরই মধ্যে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ২৯৪টি আসনের জন্য আট দফায় ভোটগ্রহণের নির্বাচন কমিশনের ফরমান।
প্রায় দেড় মাস ধরে নির্বাচনি প্রচার যুদ্ধে সমাবেশ, রোড শো, মিছিলে হাজার হাজার মানুষ কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই অংশ নিয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দল কর্মী-সমর্থকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়নি। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।
রোববার ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে ৮ হাজার ৪১৯ জন। পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটাই সর্বোচ্চ। ওই দিন দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় বিজেপি নেতা অমিত শাহ রোড শো করেন।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, রোববার কলকাতায় নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১৯৭ জন৷ উত্তর ২৪ পরগনায় একদিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৮৬০ জন।
কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে যথাক্রমে পাঁচ এবং ছয় জনের৷ এমন পরিস্থিতিতে রোববার রাতে অবশেষে মমতা নিজেই তার নির্বাচনি কর্মসূচি কাটছাঁট করেন। তার ঘোষণা, কলকাতায় আর কোনো বড় সভা বা মিছিল করবেন না তিনি। শুধু একটিই করবেন উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটে। জেলাগুলোতে নিজের বক্তব্য ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চান মমতা, যাতে বেশিক্ষণ এক জায়গায় ভিড় জমে না থাকে।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলায় জনসভার সব কর্মসূচি বাতিল করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। অন্য সব দলের নেতাদেরও বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া উচিত কি না, তা ভেবে দেখতে অনুরোধ জানান তিনি।
আরও পড়ুন:তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবনের সামনে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সময় সকালের এই ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ দুইজন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া বলেছেন, দুই সন্ত্রাসী বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হালকা একটি বাহনে এসে মন্ত্রণালয় ভবনের সামনে হামলা চালান।
তিনি জানান, একজন হামলাকারী বিস্ফোরণে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যজনকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে অধিবেশনের কয়েক ঘণ্টা আগে এই বিস্ফোরণ হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কারা এই হামলা চালিয়েছে এবং এর পেছনের কারণ কী তা জানা যায়নি। এর দায়ও এখনও কেউ স্বীকার করেনি।
একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যে যানবাহনে করে হামলা হয়েছে, সেটির চালককে হামলার স্থান থেকে অন্তত ১৬১ মাইল দূরে একটি এলাকায় হত্যা করে তা নিয়ন্ত্রণে নেয় হামলাকারীরা।
আরও পড়ুন:স্পেনের একটি নাইট ক্লাবে আগুনে অন্তত ১১ নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৬টার দিকে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মুরসিয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আটালায়াস এলাকায় অবস্থিত জনপ্রিয় টিয়েটার নাইট ক্লাবে আগুন লাগে। খবর পেয়ে উদ্ধারে যান উদ্ধারকারী কর্মীরা। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আগুনেরপর এখনও যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের সন্ধানের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষ।
মুরসিয়ার মেয়র হোসে ব্যালেস্তা বলেন, আমরা বিধ্বস্ত হয়েছি। উদ্ধারকারীরা এখনও নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া বেশ কয়েকজনকে খুঁজছেন।
জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষ বলছে, দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টা পর নাইট ক্লাবটিতে ঢুকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে উদ্ধার হয় আরও দুই মরদেহ। সবমিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনেরর। চারজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আগুনের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ভারতের তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলার কুনুর এলাকার কাছে পাহাড়ি সড়ক থেকে বাস খাদে পড়ে আট পর্যটক নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কুনুরের হেয়ারপিন বাঁকে রোববার সকাল ১০টার দিকে গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি খাদে পড়ে যায়। ওই বাসে ৫৫ যাত্রী ছিলেন, যারা টেনকাসি ঘুরতে যাচ্ছিলেন।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়রা আহত ব্যক্তিদের সাহায্য করতে তাৎক্ষণিক এগিয়ে আসেন। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে কুনুর ও মেট্রুপালায়ম হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে চালক বাঁকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন, যার ফলে বাসটি খাড়া বাঁকের নিচে পড়ে যায়।
নীলগিরির পুলিশ সুপার কে প্রভাকর বলেন, ‘তদন্ত চলছে। চালকের দোষ আছে বলে মনে হচ্ছে।’
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে নিহত প্রত্যেকের পরিবারের জন্য দুই লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে তথ্য জানাতে নীলগিরি জেলা প্রশাসন হটলাইন (১০৭৭) চালু করেছে। এ ছাড়াও ০৪২৩-২৪৫০০৩৪ নম্বরে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বুলেট ট্রেন চালু করেছে ইন্দোনেশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন রোববার এক প্রতিবেদনে জানায়, দ্রুতগতির এ ট্রেন সেবা দেশেটির বড় দুটি শহরকে সংযুক্ত করেছে।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ ও চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর অর্থায়নে ৭৩০ কোটি ডলারের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়। রোববার জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় ট্রেনটি।
ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন কোম্পানি কেসিআইসির তথ্য অনুযায়ী, আটটি বুলেট ট্রেনের সবগুলোতে ওয়াইফাই সেবা ও ইউএবি চার্জিং পয়েন্ট সুবিধা আছে।
ট্রেনগুলো রাজধানী জাকার্তা থেকে ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, শিল্প ও সংস্কৃতিকেন্দ্র পশ্চিম জাভার বান্দুং পর্যন্ত চলাচল করবে।
এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর জাকার্তা থেকে বান্দুং প্ল্যাটফর্মে সপ্তাহ ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করে বুলেট ট্রেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দ্রুতগতির এ রেললাইনের নাম দেয়া হয়েছে ‘হুশ’, ইন্দোনেশিয়ার ভাষায় যার অর্থ সময় সাশ্রয়ী, সন্তোষজনক কার্যক্রম ও নির্ভরযোগ্য সিস্টেমের।
সরাসরি কার্বন নির্গমন ছাড়াই ঘণ্টায় ২১৭ মাইল ছুটে যায় বিদ্যুৎচালিত বুলেট ট্রেন। পূর্ব জাকার্তার হালিম রেলওয়ে স্টেশন থেকে পশ্চিম বান্দুংয়ের পাদালারাং রেলওয়ে স্টেশনে যেতে ট্রেনটির সময় লাগবে এক ঘণ্টারও কম।
ট্রেনগুলোতে প্রথম, দ্বিতীয় ও ভিআইপি শ্রেণির তিন ধরনের আসন আছে।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে ২০১৫ সালে বুলেট ট্রেন চুক্তিটি প্রথম সই হয়েছিল। নির্মাণকাজ শুরু হয় পরের বছর থেকে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসে শনিবার রাতে আপৎকালীন তহবিল বিল পাসের মধ্য দিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের শাটডাউন বা অচল হয়ে পড়া ঠেকিয়েছেন আইনপ্রণেতারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এক দশকের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের চতুর্থ আংশিক শাটডাউন এড়াতে উত্থাপিত বিলে ডেমোক্রেটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ভোট পড়ে ৮৮টি। এর বিপরীতে ভোট দেন ৯ আইনপ্রণেতা। পরে সেই বিলকে আইনে পরিণত করতে নির্ধারিত সময়সীমা শনিবার রাত ১২টা ১ মিনিটের আগেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি ভোটাভুটির ক্ষেত্রে দলীয় কট্টরপন্থি আইনপ্রণেতাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করেন।
আগামী ১৭ নভেম্বর নাগাদ কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনার অর্থ জোগাতে নিম্নকক্ষে ৩৩৫-৯১ ভোটে বিল পাস হয়। এতে রিপাবলিকানদের চেয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতাদের ভোট বেশি ছিল।
এর আগে সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারে শাটডাউন অনিবার্য মনে হচ্ছিল। শাটডাউন হলে সরকারের অধীনে কাজ করা ৪০ লাখ কর্মীর বেশির ভাগের বেতন হতো না। তারা কাজ করলেও পারিশ্রমিক পেতেন না।
শাটডাউনে বন্ধ হয়ে যেতে জাতীয় পার্ক থেকে আর্থিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের মতো অনেক দপ্তরের সেবা। সম্ভাব্য শাটডাউনের কথা মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সংস্থা কোন কোন সেবা বন্ধ হবে এবং কোনগুলো চালু থাকবে, তার তালিকাও করে রেখেছিল।
আরও পড়ুন:হিজাব পরেই মুসলিম নারী খেলোয়াড়রা বিশ্বের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া আসর অলিম্পিকে অংশ নিতে পারবেন বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি।
আগামী বছরের জুলাইয়ে প্যারিসে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক আসরে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ফ্রান্স। স্বাগতিক দেশের এ সিদ্ধান্তের পরের দিন অলিম্পিক কমিটি এর বিপরীত সিদ্ধান্তের কথা জানায় বলে শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী এমিলি কাসতেরা গত রোববার ধর্মনিরপেক্ষতার কারণ দেখিয়ে প্যারিস অলিম্পিকে ফ্রান্সের নারী মুসলিম খেলোয়াড়দের হিজাব নিষিদ্ধের পক্ষে যুক্তি দেখান।
যদিও অলিম্পিক কমিটির একজন মুখপাত্র মন্ত্রীর এ মন্তব্যকে সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘অলিম্পিক ভিলেজে শুধু অলিম্পিক কমিটির নিয়মই চলবে। আর আমরা হিজাবসহ প্রত্যেক ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
যেকোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা তার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়মেই চলে বলে জানান তিনি।
ফ্রান্সের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘যদিও এ আইনটি শুধু ফ্রান্সের নারী খেলোয়ারদের জন্য করা হয়েছিল, তবে এখানে সবাইকে একইভাবে সুযোগ দিতে হবে।’
৩২টি ভিন্ন ইভেন্টে প্রায় ১০ হাজার খেলোয়াড় অলিম্পিক আসরে অংশ নেবেন, যেখানে তারা পারস্পরিক সংস্কৃতি বিনিময় করবেন বলে জানান এ মুখপাত্র।
ফ্রান্সের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ
এদিকে হিজাব নিষিদ্ধ নিয়ে ফ্রান্সের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির মুসলিমদের সংগঠন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা পক্ষগুলো। তাদের ভাষ্য, ফ্রান্স প্রশাসন এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের পাশাপাশি তাদের হেনস্তার সুযোগ করে দিচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরে ফ্রান্সের নতুন এ হিজাববিরোধী আইনটি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে।
ইউরোপে ফ্রান্সেই সংখ্যালঘু হিসেবে সর্বোচ্চ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস। যদিও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা আইন জারি করে চলেছে।
ফ্রান্সে ইসলামি মতাদর্শ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ইতোপূর্বে মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন মাখোঁ। এ ছাড়াও মাঁখোর আমলে মহানবীকে (সা.) নিয়ে সাময়িকীতে অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশ ও ইসলাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আরবসহ মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদ ও পণ্য বর্জনের ঘটনা ঘটেছিল।
ভারি বৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের রাস্তাঘাট তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এনডিটিভির শনিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক দশকে শহরের সবচেয়ে বেশি প্লাবিত দিন ছিল শুক্রবার। এমন বাস্তবতায় শহরটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
জলাবদ্ধতার কারণে বিমানবন্দর ও সাবওয়ে পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, শহরের লাগার্ডিয়া বিমানবন্দরে প্রবেশের জন্য পানির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিমানবন্দরটির একটি টার্মিনাল বন্ধ করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্কে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পানিতে অর্ধ-নিমজ্জিত গাড়ি, ও যানজট শহরের রাস্তাকে অচল করে দিয়েছে।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শহরের চারপাশে চলাফেরা করা যাচ্ছে না জানিয়ে মেয়র বাড়িতে বা কর্মক্ষেত্রে থাকা লোকজনকে আপাতত সেসব জায়গাতে থাকার অনুরোধ করেন।
নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল নিউ ইয়র্ক সিটি, লং আইল্যান্ড ও হাডসন ভ্যালিজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
এদিকে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল টার্মিনালে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য