ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ৩০ ও অসমের ৪৭টি বিধানসভা আসনে প্রথম ধাপে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ উত্তপ্ত প্রচারের পর রাজ্য দুটিতে শুরু হয়েছে ভোটের লড়াই।
শনিবার সকাল ৭টায় ভোট শুরু হয়েছে ইভিএমে। ভোট চলবে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে ভোটারদের রাজ্য দুটিতে রেকর্ডসংখ্যক ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
টুইটে তিনি লিখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে আজ প্রথম পর্যায়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। যে বিধানসভার আসনগুলোতে ভোট গ্রহণ হচ্ছে, সেখানকার ভোটদাতাদের আমি রেকর্ডসংখ্যক ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুরোধ জানাই।’
আরেক টুইটে তিনি অসমের ভোটারদের প্রতিও একই আহ্বান জানান।
পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে যখন বিধানসভার ভোটগ্রহণ চলছে ঠিক সেই সময় নরেন্দ্র মোদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন আয়োজনে অতিথি হয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
দুই দিনের সরকারি সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার মোদি যাচ্ছেন সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের একটি মন্দিরে। সেই সঙ্গে তিনি যাচ্ছেন গোপালগঞ্জের মতুয়া সম্প্রদায়ের একটি মন্দিরে।
অনেকেরই ধারণা, এই দুটি মন্দির ভ্রমণ করে নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গে থাকা একটা বড় পরিমাণ বাঙালিদের প্রভাবিত করতে চাইছেন।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ৩০টি আসনের মধ্যে ২৯টিতেই প্রার্থী দিয়েছে। একটি আসন ছেড়ে দিয়েছে অল ঝাড়খন্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়নকে।
পশ্চিমবঙ্গে দলগুলোর অবস্থা
কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে অনেকটা বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে। দলটি এখানে মাত্র ৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। অন্য আসন ছেড়ে দিয়েছে তাদের জোটের শরিকদের জন্য। সেখানে বামপন্থি দল সিপিএম ১৮টি ও সিপিআই ৪টি আসনে লড়ছে। আর বিজেপি লড়ছে সবগুলো আসনেই।
রাজ্যের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৩০ আসন দিয়ে শুরু হয়েছে নির্বাচন। জেলাগুলোতে ৭৩ লাখ ভোটারের জন্য ১০ হাজার ২০০ বুথে ভোট নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মোট ২৯৪ আসনে ৮ দফায় ভোট হবে।
পশ্চিমবঙ্গে এবারের লড়াই দিদি বনাম মোদি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বলেই দিয়েছেন, ২৯৪ কেন্দ্রে তিনিই প্রার্থী। বিজেপি মমতার বিরুদ্ধে মোদির ইমেজকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরেছে।
প্রথম দফার নির্বাচনে মোট প্রার্থী ১৯১ জন। এদের মধ্যে নারী রয়েছেন ২১ জন। জঙ্গলমহল বলে পরিচিত এই পাঁচ জেলা আগে ছিল বামদের শক্তি। এখন সেখানে তৃণমূলের দাপটই বেশি। এবার দেখার পালা কাদের সমর্থন বেশি।
অসম পরিস্থিতি
বিজেপিশাসিত অসম রাজ্যেও ভোট শুরু হয় একই সময়ে। ১২৬ সদস্যের অসমে ভোট হচ্ছে তিন দফায়।
উজান অসমের ১২টি জেলার ৪৭টি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে শনিবার। এখানে লড়াইয়ে রয়েছে কংগ্রেস মহাজোটের সঙ্গে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট।
রাজ্যের ২ কোটি ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮৭ জন ভোটারের মধ্যে ৮১ লাখ ৯ হাজার ৮১৫ জন প্রথম দফায় ভোট দিচ্ছেন।
হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, সাবেক বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া, রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা।
অসমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার ভোট ১ ও ৬ এপ্রিল।
দুই রাজ্যেই ভোটকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে ভারতের নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আধাসামরিক বাহিনী। নজরদারির জন্য রাখা হয়েছে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের।
আরও পড়ুন:পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে আজ প্রথম পর্যায়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। যে বিধানসভার আসনগুলিতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে, সেখানকার ভোটদাতাদের আমি রেকর্ড সংখ্যায় ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুরোধ জানাই।
— Narendra Modi (@narendramodi) March 27, 2021
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় রাইডশেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম উবার ২০২৪ সালে বাংলাদেশে তাদের অর্থনৈতিক প্রভাববিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক ও বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীনের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি উন্মোচন করা হয়।
আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাবলিক ফার্স্ট পরিচালিত এ গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০২৪ সালে উবার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মোট ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সমমূল্যের অবদান রেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে উবার মটো ও অটো সার্ভিস বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৯২০ কোটি টাকার সমপরিমাণ অবদান রেখেছে। শহরের ব্যস্ত জীবনে সহজ ও সাশ্রয়ী মূল্যের পরিবহন হিসেবে এ সার্ভিসগুলো অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। উবার ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সময় সাশ্রয় করেছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ যাত্রী অফিসে যাতায়াতের জন্য উবার ব্যবহার করেছেন। এতে প্রতি বছর আনুমানিক ১১ লাখ কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হয়েছে, যা ৯৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী উবারের অর্থনৈতিক অবদানের প্রধান দিকগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
উপার্জনের সুযোগ: উবার চালকরা তাদের অন্যান্য বিকল্প কর্মসংস্থানের তুলনায় ৪২% বেশি আয় করছেন।
স্থানীয় পর্যটনে ভূমিকা: ২০২৩ সালে উবার বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে অতিরিক্ত ২৯০ কোটি টাকা অবদান রেখেছে ও ২০২৪ সালে ২১ লাখ ৪০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
ভোক্তা উপযোগিতা: ২০২৪ সালে উবারের মাধ্যমে বাংলাদেশের যাত্রীরা মোট ৬৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকার ভোক্তা উপযোগিতা লাভ করেছে।
কাজের সুযোগ: ৫০ শতাংশ চালক মনে করেন, উবার প্ল্যাটফর্ম না থাকলে তাদের জন্য কাজের সুযোগ কমে যেত।
প্রথম আয়: ৭৬ শতাংশ চালক বলেছেন যে, উবার তাদের প্রথম আয়ের প্ল্যাটফর্ম।
সহজে যাতায়াত: ৮১ শতাংশ যাত্রী একমত হয়েছেন উবারের মাধ্যমে রাইড বুক করা রাস্তা থেকে গাড়ি নেওয়ার চেয়ে অনেক সহজ।
পরিবহন প্রযুক্তির উদ্ভাবন: ৮৬ শতাংশ যাত্রী উবার অ্যাপকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবহন উদ্ভাবন হিসেবে মনে করেন।
নারীদের নিরাপত্তা: ৯৫ শতাংশ নারী যাত্রী বলেছেন, নিরাপত্তাই তাদের উবার ব্যবহারের অন্যতম প্রধান কারণ। ৮৯ শতাংশ যাত্রী উবারকে রাতে বাড়ি ফেরার সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম বলে মনে করেন।
সহজ চলাচল: ৮৭ শতাংশ যাত্রী উবারের কারণে শহরে যাতায়াত সহজ হয়েছে বলে মনে করেন। ৭৮ শতাংশ যাত্রী বলেছেন, উবারের মতো রাইডশেয়ারিং সার্ভিস না থাকলে রাতে নিরাপদ যাতায়াত কঠিন হতো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বিআরটিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রেক্ষাপটে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, কর্মসংস্থান তৈরি করা ও পর্যটন খাতকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে উবারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
‘রাইডশেয়ারিং শিল্প, যার মধ্যে উবারও অন্তর্ভুক্ত, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে পরিবহন খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখছে।’
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল বলেন, ‘২০২৪ অর্থনৈতিক প্রভাব প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কীভাবে উবার দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে বদলে দিচ্ছে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। আমরা আমাদের ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে গর্বিত ও ভবিষ্যতে আরও উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এর আগে পাবলিক ফার্স্ট-এর টেক, মিডিয়া ও টেলিকম প্রধান এমি প্রাইস প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়।
প্যানেল সদস্যরা ছিলেন বিআরটিএর পরিচালক সীতাংশু শেখর বিশ্বাস, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং পার্টনার শামস জামান ও উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল। সেখানে তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন:যুবসমাজের জন্য সার্বজনীন সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি), যাতে দেশের প্রতিরক্ষায় যুবসমাজ অংশগ্রহণ করতে পারেন।
ওসমানী মিলনায়তনে মঙ্গলবার ডিসি সম্মেলনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ সংক্রান্ত অধিবেশনে তারা এ প্রস্তাব দেন।
অধিবেশন শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদুল হাফিজ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘সিভিল মিলিটারি কোঅপারেশন কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকরা প্রশ্ন করেছিলেন। সিভিল প্রশাসনের অফিসাররা যে অরিয়েন্টেশন করেন, ডিভিশন পর্যায়ে এই অরিয়েন্টেশনগুলা করা সম্ভব কি না, যাতে সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে সামরিক বাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধি কীভাবে করা যায়।’
‘আর একটা প্রশ্ন ছিল, আমাদের যুব সমাজের জন্য একটি ইউনিভার্সেল মিলিটারি (সর্বজনীন সামরিক) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কি না, যেখানে যুবসমাজের যারা আছেন, তারা মিলিটারি ট্রেনিং পেতে পারেন এবং দেশের প্রতিরক্ষায় তারা অংশগ্রহণ করতে পারেন।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘তারা নিজ নিজ কয়েকটি জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে চান সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। রিমোট জায়গায় বা চরাঞ্চলে যেখানে হয়তো বেশি পরিমাণ ফোর্স দরকার বা লজিস্টিক নিয়ে যেতে হবে এই ধরনের এলাকায় তারা অভিযান পরিচালনা করতে চান। সে সংক্রান্ত প্রশ্ন ছিল।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নেভির কাছে প্রশ্ন ছিল কীভাবে জাটকাবিরোধী অভিযানের বা আমাদের নদীতে যে সম্পদ আছে, সেই সম্পদ রক্ষায় তারা আরও কীভাবে ওতপ্রোতভাবে সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করতে পারেন।
‘আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য প্রশ্ন ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফন্ট যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, তার কারণে কয়েকটি জেলায় পর্যটন শিল্প ব্যাহত হচ্ছে। এ পর্যটন শিল্প ব্যাহত হওয়ার কারণে সেখানকার ইয়াং জেনারেশন কাজ হারাচ্ছে, চাকরি হারাচ্ছে এবং তারা সন্ত্রাসের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। সেখান থেকে কীভাবে উত্তরণ করতে পারি সে সংক্রান্ত প্রশ্ন ছিল।’
আবদুল হাফিজ বলেন, ‘দুই-একটি জেলায় অস্ত্র এবং গোলাবারুদ নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো কীভাবে ধ্বংস করা যায়, সে বিষয়ে প্রশ্ন ছিল। এ ধরনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তারা উত্থাপন করেছিলেন।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘আমি উল্লেখ করেছি, স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় একত্রিত হচ্ছে এবং কর্মসূচি দিচ্ছে। তারা দেশকে একটা অরাজকতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। সে ব্যাপারে তাদের সজাগ থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে সোমবার রাতে চাপাতি দিয়ে দম্পতির ওপর হামলা চালানোর ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফুটপাতের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ওই ঘটনায় জড়িত মোবারক (২৪) ও রবিকে (২১) গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।
ওসি জানান, অভিযুক্তদের বহনকারী মোটরসাইকেল একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে গ্রেপ্তারকৃতরা ওই দম্পতির সঙ্গে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে চালক অজ্ঞাত এক সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে চাপাতি বের করে ওই দম্পতির ওপর হামলা চালায়।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ধরে ফেলে এবং মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। চাপাতি হাতে হামলাকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও পুলিশ তাকে একটি চক্রের সদস্য হিসেবে শনাক্ত করে।
আহত দুজন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একজন বাদী হয়ে মামলা করেন।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মঙ্গলবার সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কে কটিয়াদী উপজেলার মধ্যপাড়া এলাকায় সকাল পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আলী আকবর (১৩) মধ্যপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুকের ছেলে। অন্যদিকে নিহত জুনায়েদ (১২) একই এলাকার ফেরদৌসের ছেলে। সে মধ্যপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বিদ্যালয়ের ক্রীড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য তারা একটি মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিল। মধ্যপাড়া সড়কে একটি বাস তাদের চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আলী আকবর নিহত ও জুনায়েদ আহত হয়। জুনায়েদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর
ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ঘটনার পর থেকে দীর্ঘক্ষণ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ইউএনওসহ তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
আরও পড়ুন:জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মত তুলে ধরেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সারা দেশে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এমনকি অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পেতে তারাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান।’
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’
অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনগণের দাবি উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, তারাও এ মতের পক্ষে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় জনপ্রতিনিধিরা নেই। তাদের দায়িত্বগুলো বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা পালন করছেন।
‘সেই জায়গা থেকে তাদের যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে, আজকের ডিসি সম্মেলনে আমরা সেগুলো শুনেছি এবং এগুলো অ্যাড্রেস করেছি।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারদের প্রত্যেকেই মূল দায়িত্বের বাইরে কিছু না কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের অতিরিক্ত সময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সমস্যাটা হলো একজন অফিসার যখন নিজ দায়িত্বের বাইরে আরও দুই-তিনটা দায়িত্ব পালন করেন, তার পক্ষে কোনোটাই যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না, যে কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বে নিয়ে আসা উচিত।’
অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সর্বশেষ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়েও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা এখনও চলমান আছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনও সরকার নেয়নি।
‘আশা করছি খুব দ্রুতই কোনো একটা সিদ্ধান্ত আসবে। হয় আমরা দ্রুতই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করব, অন্যথায় প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতির দিকে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার এক বৈঠক শেষে এমন দাবি করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতির দিকে। আরও ভালো করার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট চলছে। যতদিন ডেভিলরা থাকবে, ততদিন অপারেশন চলবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ থেকে দুর্নীতি কমাতে হবে। সব লেভেলে যেন দুর্নীতি কমে, সে জন্য ডিসিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’
ওই সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। গাজীপুর জিএমপি, শিল্প পুলিশে জনবল বাড়ানোর প্রস্তাবও সংশ্লিষ্ট ডিসি দিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা সীমান্ত এলাকায় বিজিবি বৃদ্ধি করার জন্য বলেছেন।
‘নৌ পুলিশ বৃদ্ধি করার জন্য বলেছেন। গাজীপুরে জনবল বৃদ্ধির কথা বলেছেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের জনবল বৃদ্ধির জন্য বলেছেন।’
পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র না দেওয়া এবং এসপি ও ওসিদের এসিআর লেখার প্রস্তাব করেছিলেন ডিসিরা। এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা জানতে চান একজন সাংবাদিক।
জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কারণ আলোচনার সময় ছিল খুব কম।’
আরও পড়ুন:ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম, স্ত্রী আরজুদা করিম, ছেলে সালমান ওবায়দুল করিম এবং মেয়ে জেরিন করিমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব সোমবার এ আদেশ দেন।
আবেদনে দুদক বলেছে, ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য-প্রমাণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবেদনে দুদক উল্লেখ করে, অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ওবায়দুল করিম ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেয় আর্থিক খাতের গোয়েন্দা হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
তারও আগে ওরিয়নের মালিকদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর তথ্য দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)।
এদিকে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তার স্ত্রী কে ইউ জোহরা জেসমিনসহ ৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত।
নাহিদের বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎপূর্বক বিদেশে অর্থ পাচারসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের আভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।
দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তার স্ত্রী কে ইউ জোহরা জেসমিন দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।
মন্তব্য