হঠাৎ করেই চমকে দেয়ার মতো খবর দেয় ভারত-পাকিস্তান। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশ দুটির সেনাবাহিনীর প্রধান পর্যায় থেকে বিরল প্রতিশ্রুতি আসে যে, ২০০৩ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তি এখন থেকে মেনে চলবে তারা।
এর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরই হঠাৎ এক দিনের সফরে দিল্লিতে উড়াল দেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষ পর্যায়ের এক কূটনীতিক। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশের মধ্যস্থতাতেই চির বৈরী ভারত-পাকিস্তান আবার শান্তির পথে বলে ব্লুমবার্গের বিশ্লেষণের বরাতে খবর প্রকাশ করেছে আল জাজিরা।
২৬ ফেব্রুয়ারি আরব আমিরাতের শীর্ষ পর্যায়ের ওই কর্মকর্তা কিছু ইঙ্গিত দিয়ে জানান, তার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ বিন জায়েদের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের আলোচনা হয়েছে। তারা ‘সব ধরনের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং এসব বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন।'
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির আলোচনাটা কয়েক মাস আগেই হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গোপন এই আলোচনা খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
একজন কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতি মেনে চলার ঘোষণা পারমাণবিক শক্তিধর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি ফেরানোর রোডম্যাপের কেবল শুরু। এর পরের ধাপও চলমান আছে। পরের ধাপে উভয় দেশ নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদে পুনরায় রাষ্ট্রদূত মোতায়েনের চেষ্টা করা হবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের ৭০ বছরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা কেড়ে নেয়ার পর দেশটির সঙ্গে নতুন করে সহিংসতায় জড়ায় পাকিস্তান। একপর্যায়ে নয়াদিল্লি থেকে কূটনীতিক প্রত্যাহার করে নেয় ইমরান খান সরকার। একই পদক্ষেপ নেয় নরেন্দ্র মোদির সরকারও।
আরব আমিরাতের কর্মকর্তা জানান, দুই দেশে একে অপরের কূটনীতিক বহালের পর অন্যান্য বিষয়েও আলোচনা হবে। ওই ধাপে থাকবে তাদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিতর্কিত কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর কাশ্মীর ইস্যুতে অনেকবার বিবাদে জড়িয়েছে ভারত-পাকিস্তান। যুদ্ধ হয়েছে তিনবার।
বিগত বছরগুলোতে কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানে দেশ দুটির শান্তি আলোচনা নিয়ে কিছু প্রচেষ্টা দেখা গেলেও সেসব বাস্তব মুখ দেখেনি একবারও। বরং উভয় দেশকে নির্বাচনের সময় কাশ্মীর বিষয়টিকে ব্যবহার করতে দেখা যায়।
কর্মকর্তারা বলছেন, দেশ দুটির মধ্যে আবার শান্তি ফেরানো নিয়ে প্রত্যাশাটা আপাতত কমই। তাদের মধ্যে কঠিন বরফ গলাতে পারলে অর্জনের পাল্লাটা আরও ভারি হতে পারে। সেক্ষেত্রে ফের কূটনীতিক বহালের পাশাপাশি পাঞ্জাব সীমান্ত দিয়ে দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য আবার শুরু হতে পারে।
ভারত-পাকিস্তানে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়াটা গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখানে জড়িত অনেকগুলো দেশের স্বার্থ।
জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর আলোচনা আরও বিস্তৃত করেছে। এতে এবার পাকিস্তানকেও জড়াতে চাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। যদিও আগে থেকেই আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি পাকিস্তানেরও এক ধরনের প্রভাব ছিল।
আর পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধ কমিয়ে আনতে চাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। এর পরিবর্তে মনোযোগ দিতে চাচ্ছেন চীন সীমান্তে। দেশটির সঙ্গে সাম্প্রতিক বিরোধের জেড়ে সেখানে সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্য নয়াদিল্লির।
আর পাকিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে চরম অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়ায় দেশটির নেতাদের নজর এখন এ সঙ্কট কাটিয়ে ওঠায়। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য শক্তিধর দেশের সঙ্গে ফের ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে মরিয়া তারা।
ভারত-পাকিস্তানের হয়ে এ কাজে দুতিয়ালির কাজ করে যাচ্ছে আরব আমিরাত। যদিও বিষয়টি নিয়ে ইসলামাবাদ বা নয়াদিল্লি থেকে কেউ কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘অতীত ভুলে যেতে হবে এবং এগিয়ে যেতে হবে।’ তিনি আরও জানান, ‘বিবাদমান সকল বিষয়’ সমাধানে প্রস্তুত আছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।
ভারত থেকেও পাকিস্তানের ব্যাপারে কিছুটা শৈথিল্য দেখানো হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার আরোগ্য কামনা করে বৈশ্বিক নেতাদের মধ্যে সবার আগে টুইট করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য ও কূটনীতিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে আরব আমিরাতের। এছাড়া, সম্প্রতি দেশটির কার্যত শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের হাত ধরে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাবও বেড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তাদের।
মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাব ঢের বেড়েছে আরব আমিরাতের। এই অঞ্চলে সহিংসতা, বিবাদমান গ্রুপগুলো ও আঞ্চলিক নেতাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাদের। ব্যবসাবাণিজ্য ও আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক বলয় বাড়াতে এশিয়ার দেশগুলোতেও মনোযোগ বাড়িয়েছে আরব আমিরাত।
দুই বছর আগে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৪০ জন ভারতীয় সেনাকে হত্যার পর পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছায়। জবাবে পাকিস্তান সীমান্তে ঢুকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ ওপর হামলা চালাতে ভারতীয় বাহিনীকে নির্দেশ দেয় মোদি সরকার। এসবের জেরে সব ধরনের কূটনীতিক সম্পর্ক স্থগিত করে দেয় দেশ দুটি।
গত মাসে ভারত পাকিস্তান যৌথ বিবৃতিতে জানায়, বিবাদের ‘মূল ইস্যুগুলো শনাক্তে সম্মত হয়েছে’ তারা। সেই সঙ্গে কাশ্মীর ও সন্ত্রাস নিয়ে বিস্তৃত আলোচনারও ইঙ্গিত দেয়া হয় দেশ দুটি থেকে।
এতে আরব আমিরাতের যে জোরালো ভূমিকা রয়েছে গত কয়েক মাসে এমন কয়েকটি নমুনা রেখেছে দেশটি। গত নভেম্বরে দুই দিনের সফরে আবু ধাবিতে যান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই সফরে বিন জায়েদ ও ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
ওই মাসেই আরব আমিরাত সফরে যান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি, আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ফোন করেন। এ সময় তারা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলো আলোচনা করেন।
এর কয়েক দিন আগে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার সময় ইমরান খানকে বহনকারী বিমানকে ভারতের আকাশপথ ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দেয় ভারত সরকার। ২০১৯ সাল থেকেই ভারতের আকাশে পাকিস্তানের বিমান চলা নিষিদ্ধ ছিল।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতির ঘোষণায় যে কয়েকটি দেশ স্বাগত জানিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম আরব আমিরাত। এক বিবৃতিতে দেশটি জানায়, দুটি দেশের সঙ্গেই তাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। শান্তি ফেরানোর ব্যাপারে ভারত-পাকিস্তানের মতৈক্যে উচ্ছ্বসিত আরব আমিরাত।
আরও পড়ুন:কোভিড-১৯ এর ধাক্কা এখনো মনে রেখেছেন নড়াইল সদর হাসপাতালের রোগী, সেবিকা, চিকিৎসকসহ আম জনতা । মুমূর্ষু রোগীদের বাচাতে হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে তখন ৮ কোটি টাকা ব্যয় করে স্থাপন করা হয় কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। অভিযোগ রয়েছে শুরু থেকেই তা মানুষের কাজে আসেনি। অক্সিজেন নিয়ে রোগী, সেবিকা আর চিকিৎসকদের ভোগান্তি থেকেই যাচ্ছে।
সরেজমিন হাসপাতালের রোগী, সেবিকা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোভিড-১৯ এর প্রাক্কালে নানা উপসর্গ আর জটিল শ্বাসকষ্ট থেকে পরিত্রান পেতে আমজনতা ছুটে আসেন জেলার একমাত্র আধুনিকায়িত সদর হাসপাতালে। তখন হাসপাতালের বেড, কেবিন, জরুরী বিভাগসহ ১৭৩টি স্থানে অক্সিজেন সরবরাহ পয়েন্ট স্থাপন করা হয় । কিন্তু কোনো পয়েন্ট দিয়েই সে সময় অক্সিজেন নির্গত হয়নি। বর্তমানে হাসপাতালের কাজ চলছে সিলিন্ডার অক্সিজেন দিয়ে। এ ব্যবস্থার কারণে রোগী ও স্বজনদের রয়েছে ক্ষোভ। জরুরী অক্সিজেনসেবা দিতে নিত্যদিন হিমশিম খেতে হয় সেবিকা আর চিকিৎসকদের। সিলিন্ডার সংকটের পাশাপাশি সিলিন্ডার ভরে রাখা, আর হঠাৎ সিলিন্ডার শেষ হবার আশঙ্কা তো রয়েছেই। এসব সেবা ব্যাহত হওয়ার বিড়ম্বনায় থাকতে হয় সেবিকাসহ চিকিৎসকদের। করোনার প্রকোপ বাড়লে অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে আছে দুশ্চিন্তা। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকতেও তা সময়োপযোগি কাজে আসছে না। বেডেই রোগী মারা যাবার শঙ্কায় থাকেন স্বজনরা। এ নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়তে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সেবিকা বলেন, হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার কখন ফুরিয়ে যায় তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সিলিন্ডার টানাহ্যাচড়া করতে অনেক ঝামেলা হয়। মিটার নষ্ট হয়ে যায়। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড ও জরুরী বিভাগে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু থাকা খুবই প্রয়োজন। করোনা আসলে রোগীদের সঙ্গে নানা ধরণের তর্কে জড়িয়ে পড়তে হয়।
হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞা ডা. আলিমুজ্জামান সেতু বলেন, কেন্দ্রীয় অক্সিজেনসেবার ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে শিশু রোগীদের অনেক কষ্ট পেতে হয়। অক্সিজেনের অভাবে অনেক শিশু মারাও যায়। এখানে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ থাকলে এই ভোগান্তি থাকতো না। তিনি বলেন, সামনে কোভিড বেড়ে গেলে জটিলতা আরো বাড়বে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের জুন মাসে সদর হাসপাতালে হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ চালু হয়। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০০ লিটারের অক্সিজেন ট্যাঙ্ক নির্মাণ করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। অক্সিজেন সরবরাহ কয়েকমাস চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেটা হাসপাতালের পেছনের দিকে লতাপাতার মধ্যে পড়ে আছে ট্যাঙ্কটি। হাসপাতালের ভিতরের সঞ্চালন লাইনে কোথাও মরিচা ধরেছে সকেটগুলো ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে বিভিন্ন বেডের বিছানার ওপর।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল গাফফার বলেন, এই কর্মস্থলে যোগদানের পর কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ট্যাঙ্কটিতে দুই দফায় অক্সিজেন ঢালা হয়েছে। কিন্তু ব্যবহারের আগেই অক্সিজেন ফুরিয়ে যায়। কোথাও লিকেজ আছে হয়তো । আমি কোম্পানীকে বিষটি জানিয়েছি। তারা ঠিক করেনি। উপায় না পেয়ে আমরা বোতল অক্সিজেন দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ কোম্পানীকেও জানিয়েছি। এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
ঢাকার রাজধানীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কমপক্ষে ২৩ থেকে ২৬ টি জেলার একমাত্র প্রবেশপথ টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু। এটি যমুনা নদীর উপর নির্মিত। টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলাকে সংযুক্ত করেছে। চলতি বছরের ১৮ সার্চ যমুনা নদীর উপর নবনির্মিত যমুনা রেল সেতু উদ্বোধনের পর বাণিজ্যিকভাবে চালু হয় রেল চলাচল। ফলে যমুনা সেতুতে থাকা রেললাইন আর ব্যবহার হচ্ছে না, এটি এখন পরিত্যক্ত। তাই সেতুর ওপর থাকা পরিত্যক্ত রেললাইন সরিয়ে ফেলতে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে যমুনা সেতু বিভাগ। যমুনা সেতুর উপর সড়কপথকে আরও প্রশস্ত করতে নেওয়া হয়েছে এমন পদক্ষেপ।
যমুনা সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতিটি লেনের প্রস্থ ৬ দশমিক ৩ মিটার। যেখানে প্রস্থ হওয়া উচিত ৭ দশমিক ৩ মিটার। রেললাইনটি সরিয়ে ফেললে যে সাড়ে ৩ মিটার অতিরিক্ত জায়গা পাওয়া যাবে, তা দুই লেনে ভাগ করে সড়কপথকে আরও প্রশস্ত করা যাবে। এতে করে ঈদের মতো যানবাহনের চাপে সৃষ্ট দীর্ঘ যানজট অনেকটাই হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং যমুনা সেতু বিভাগ পৃথকভাবে রেললাইন অপসারণের জন্য প্রস্তাব দেয়। এরপ্রেক্ষিতে শুরু হয় এই অপসারণ প্রক্রিয়া।
এতে সেতুর উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার করে জায়গা বাড়বে। বর্তমানে সেতুর লেনগুলো প্রশস্ততা রয়েছে ৬ দশমিক ৩ মিটার। এটি সম্প্রসারণ করা হলে প্রশস্ততা বাড়বে। এতে সেতুর ওপরের যানজট ও জনদুর্ভোগ কমবে বলে আশা করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, যমুনা সেতুর পূর্বের সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য কারিগরি স্টাডির মাধ্যমে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এটি কার্যকর করতে কিছু সময় লাগবে। অপসারণের কাজ শেষে রেললাইন ও অন্যান্য মালামাল রেল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীতে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা সেতু উদ্বোধন করা হয় এবং ওই দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে ঢাকার রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দেয়। পরে ট্রেনের গতিসীমা কমিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার করা হয়। এতে প্রতিটি ট্রেনকে সেতু পারাপার হতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগত। এ কারণে সেতুর দুই উভয় পাশে ট্রেনের জটলা বেঁধে যেত। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন পারাপার হতো। এই সমস্যার সমাধানে সরকার ২০২০ সালের যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে আলাদা রেলওয়ে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্রাকের ডুয়েল গেজের সেতু। এটি ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যানে নির্মিত হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয় করা হয়।প্রথমে নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২ বছর বাড়ানো হলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থয়ান এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে। গত ২৬ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সেতুর পূর্ব প্রান্ত টাঙ্গাইল অংশে রেলপথের নাট-বোল্ট খুলে ফেলার মাধ্যমে অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়। এতে যমুনার সেতুর উপরসহ ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক এবং সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা থাকবে না।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আমরা সেই সংস্কারগুলোর কথা বলেছি। আমরা সংস্কারগুলো আদায় করে ছাড়ব। সুষ্ঠু নির্বাচনও ইনশাআল্লাহ আদায় করে ছাড়ব।’
শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতের এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচনসহ ৪ দফা দাবিতে রংপুর মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘কেউ যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের নির্বাচনের স্বপ্ন দেখে থাকেন, আমরা মহান আল্লাহর সাহায্যে সেই স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। কোনো প্রশাসনিক ক্যু করতে দেওয়া হবে না।
ভোটকেন্দ্রে কোনো মাস্তানতন্ত্র চলতে দেওয়া হবে না, কালো টাকার কোনো খেলা সহ্য করা হবে না।’ মৌলিক সংস্কার ছাড়া ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই দেশে মব কালচার চলছে। কিন্তু এসব সহিংসতায় জামায়াতের কোনো কর্মী জড়িত নয়। ১৯৭২ সাল থেকেই এই পরিস্থিতি চলছে। জামায়াত সবসময় মব রাজনীতির বিরুদ্ধে।’
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্য আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, আর সেই পরিবেশ তৈরির জন্যই আমরা মৌলিক সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
যারা সহিংসতায় জড়িত তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে আনা, এরপর রাষ্ট্রের দায়িত্ব পরিস্থিতি মোকাবিলা করা।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বহু ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পাচ্ছি, বহু ধরনের কথা ময়দানে শুনতে পাচ্ছি। বহু ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আলামত বুঝতে পারছি। আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেই- এই শেখ হাসিনা, তার হাতে সকল বাহিনী ছিল। দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিল, জায়গায় জায়গায় নিজের লোক বসিয়েছিল। মান্তানদের দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিল। কিন্তু যখন জনগণের জাগরণ, জনগণের বিস্ফোরণ হয়েছে, তখন তাকে কেউ রক্ষা করতে পারেনি।
জামায়াতপ্রধান বলেন, যেই জনগণ এতো মূল্য দিয়ে একটা পরিবর্তন এনেছে, সেই জনগণ আরেকটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেবে না ইনশাআল্লাহ।
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি ফ্যাসিবাদবিরোধী এই লড়াই ততদিন চলবে, যতদিন দেশে ফ্যাসিবাদের সামান্য চিহ্নও থাকবে। ফ্যাসিবাদেকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই কেউ থামাতে পারবে না।
জনসভার প্রধান বক্তা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি আজ মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি। কিছুদিন আগেও আমি কারাগারে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আল্লাহ যে আমাকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে জনতার মঞ্চে নিয়ে আসবে, এটা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানত না। আজকে আমি ফাঁসির মঞ্চ থেকে লাখো জনতার মঞ্চে হাজির হয়েছি। সবই আল্লাহর মেহেরবানি, রহমত। যে গলায় আমার রশি পরানোর কথা ছিল, সেই গলায় ফুলের মালা পরানো হলো। আল্লাহ আমাকে মুক্ত করেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত হয়ে ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম। তবে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
জনসভায় বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য দেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, শহিদ আবু সাঈদের বাবা ও বড়ভাই রমজান আলীসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগরের আমির এটিএম আজম খান।
জনসভা থেকে আগামী নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্মীয় উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আমরা মসজিদ করে যাবো আপনাদের কাজ হলো মসজিদকে আবাদ করা। দেশে যত মসজিদ হবে, তত বেশি নামাজি বাড়বে। বেশি নামাজি বাড়লে সমাজ থেকে ফাহেসা, শিরক বিদয়াতসহ অপকালচার কমে যাবে। শুক্রবার (০৪ জুলাই ) হাটহাজারী পৌরসভার কড়িয়ার দিঘির পাড় এলাকায় মডেল মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তর) মো. শহিদুল আলম, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কেন্দ্রের জমি নির্বাচন সংক্রান্ত কমিটির সদস্য অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল হাওলাদার ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আব্দুস ছালাম খান এবং উপ-প্রকল্প পরিচালক (প্রকৌশল) মোহাম্মদ ফেরদৌস-উজ-জামান। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বিএম মশিউজ্জামান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামীম আল্লামা মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী, নায়েবে মুহতামিম (সহকারী পরিচালক) মাওলানা শোয়াইব জমিরী ও মুফতি জসিম উদ্দিনসহ নেতৃবৃন্দ।
সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের প্রত্যেকটি মডেল মসজিদে ব্যয় হবে ১১কোটি ৮৯ লাখ টাকা করে। ৩ তলা বিশিষ্ট এসব মডেল মসজিদে থাকবে উপজেলা ইমাম প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, ১২ শত মুসল্লীর একসঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা, পাঠাগার ও ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র।
রাজবাড়ীতে এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন ফলাতে উৎপাদন খরচও হয়েছে বেশি। বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় লোকসানের কথা বলছেন কৃষক। এদিকে চাহিদা বাড়ায় ধানের খড় বিক্রি করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন জেলার কৃষকেরা। আর কৃষি বিভাগ বলছে, রাজবাড়ীতে বছরে উৎপাদিত ধানের খড় বিক্রি হয় প্রায় তিনশ কোটি টাকা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর তথ্যমতে, রাজবাড়ীতে এ বছর ১২ হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে বোরো, ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে আউশ, ৫৩ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনসহ মোট ৬৯ হাজার ১২২ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে। এর থেকে ফলন হয়েছে অন্তত ২ লক্ষ্য ৩৫ হাজার ৫২৯ মেট্টিক টন ধান।
রাজবাড়ীর বাজারে বর্তমানে ধান বিক্রি হচ্ছে ১১ শত থেকে ১৭ শত টাকা মন দরে। আর বিঘা প্রতি ধানের খড় বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৫ পাজার টাকা দরে।
আবার রাজবাড়ীতে ধান উৎপাদনের জমির পরিমাণ বিঘায় রূপান্তরিত করলে দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৮ হাজার ৪১৫ বিঘা। এ জমির খড়ের বাজার মূল্য অন্তত ২ শত ৬০ কোটি টাকা বলে দাবি করেছেন কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে রাজবাড়ীর বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখাযায়, ধান কাটা শেষ। রাজবাড়ীর মাঠে মাঠে এখন চলছে ধানের খড় শুকানো-বিক্রি ও মজুদ করনের কাজ।
গোয়ালন্দ উপজেলা চর কর্নেশনা এলাকার কৃষক আমজাদ মোল্লা বলেন, সার ওষুধ কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় ধান চাষে খরচও হয়েছে বেশি। বাজারে যে মূল্যে ধান বিক্রি হচ্ছে এতে লোকসানে পরব আমরা । তাই ধানের ক্ষেত থেকেই বিক্রি হচ্ছে খড়। বর্তমানে এক বিঘা জমির কাচা খড় ৩ হাজার আর শুকনো খড় বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা দরে। যা কিনে নিয়ে যাচ্ছে জেলার খামারিরা।
শামিম হোসেন নামে এক কৃষক বলেন, ধান চাষে খরচ বেশি পরায় প্রতি বছরই লোকসানে পরেন তারা। তবে গত দুই বছর যাবত জেলায় খামারের সংখ্যা বেরে যাওয়ায় ধানের খড়েরও চাহিদা বেড়েছে। এ খড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তারা।
কৃষক খলিলুর রহমান বলেন, এক বিঘা জমির ধান কাটতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার শ্রমিক প্রয়োজন হয়। খড় বিক্রি করে সেই টাকা উঠে আসে। তাই কৃষক ধানের সমান যত্ন খড়ে নিচ্ছেন। এছাড়াও খড় শুকানোর পর মজুত করে রাখলে বর্ষা মৌসুমে চাহিদা আরো বাড়ে দামও বেশি পাওয়া যায়। তখন একটি স্তূপ (পালা) খড়ের দাম দাঁড়ায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
এদিকে জেলার বিভিন্ন মাঠ থেকে কাচা অবস্থায় খড় কিনে ঘোরার গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে খামারীরা। খামারি স্বপন দাস বলেন, রাজবাড়ীতে দিন দিন খামারের সংখ্যা বাড়ছে। ধানের খড় কেটে টুকরো করে পানিতে ভিজিয়ে গরুকে খাওয়ানো হয়। আমরা এ মৌসুমে অন্তত ২০ লক্ষ্য টাকার খড় কিনে রাখব যা সারা বছর খামারের গরুগুলোকে খাওয়ানো হবে। আবার সেই গরুগুলোকে সামনে ঈদুল আযহায় বাজারে বিক্রি করা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম রাসুল বলেন, রাজবাড়ীতে এ বছর ৬৯ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে বছরে ২ লাখ ৩৫ হাজার মেট্টিক টন ধান আর সম পরিমাণ খড় উৎপাদন হয়ে থাকে। শুধু ধানের খড় বিক্রি করে জেলার কৃষক প্রায় ৩ শত কোটি টাকা আয় করেছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিএনপি নেতার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় সোনারগাঁ ইউনিয়নের চৌরাপাড়া কবরস্থানে এ বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করেন। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) বিকেলে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
বৃক্ষরোপন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হাজি পিয়ার হোসেন নয়ন, যুগ্ম আহবায়ক আতিক হাসান লেনিন, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এজাজ ভূঁইয়া, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সানোয়ার হোসেন, যুবদল নেতা রুবেল নিলয়, সোনারগাঁ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ, উপজেলা ছাত্রদল নেতা মাসুদ রানা বাবু, আশিকুর রহমান আশিক, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
বৃক্ষরোপন শেষে সোনারগাঁ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত দেলোয়ার হোসেনের মাগফেরাত কামনা, দোয়া ও কবর জিয়ারত করেন।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি অম্লান রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ‘জুলাই ৩৬ গেইট’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) ফটকটি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ.টি.এম মাহবুব-ই-ইলাহী, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, হল প্রভোস্ট, রেজিস্ট্রার, দপ্তর প্রধানসহ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘জুলাই ৩৬ গেইট’ উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই ৩৬ গেইটটি শুধু একটি গেইট নয়, এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের এক নিরব সাক্ষী। তরুণদের জন্য এটি একটি অনুপ্রেরণা যেন তারা ভুলে না যায়, কীভাবে অধিকার রক্ষায় মানুষ তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদদের স্মরণ ও তাদের আত্মত্যাগকে চিরস্থায়ীভাবে গেঁথে রাখার জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হয়েছে এই গেইট উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি আত্মত্যাগ ও একটি স্বপ্নের প্রতীক যে স্বপ্নে ছিল একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বাংলাদেশ।’
২৪ এর জুলাইয়ের শহীদ ও আহত বীর সন্তানদের প্রতি সম্মান জানিয়ে গেইটটির নাম ‘জুলাই ৩৬’ রাখা হয়েছে। নামটির প্রতিটি অংশে নিহিত আছে স্মৃতি ও প্রতিজ্ঞা। ৩৬ জুলাই কেবল অতীতের একটি দিন নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য এক অনুপ্রেরণা, যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ন্যায়বিচারের জয়কে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।
সিকৃবির প্রধান প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন জানান সিকৃবির ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলামের প্রচেষ্টায় ও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্থাপনাটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
মন্তব্য