যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হয়েছেন একজন আদিবাসী নারী। দেশটির নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যে বড় হওয়া ৬০ বছর বয়সী ডেব হালান্ড স্থল, সমুদ্র ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।
পাশাপাশি দেশটির আদিবাসীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কাজ করবেন তিনি।
কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে স্থানীয় সময় সোমবার ভোটাভুটিতে হালান্ড নির্বাচিত হন বলে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতা লিন্ডসে গ্রাহাম, লিসা মুরকোওস্কি, ড্যান সালিভান ও সুসান কলিন্স সেক্রেটারি অব দ্য ইন্টেরিয়র পদের জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা হালান্ডকে ভোট দেন। সিনেটে ৫১-৪০ ভোট পেয়ে ইতিহাস গড়েন হালান্ড।
নির্বাচিত হওয়ার পর সিনেটরদের উদ্দেশে এক টুইটবার্তায় হালান্ড বলেন, ‘কনফারমেশন ভোটের জন্য সিনেটকে ধন্যবাদ। সেক্রেটারি অফ ইন্টেরিয়র হিসেবে আপনাদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।’
যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ অঙ্গরাজ্যে ৫৭৪টি আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস। এদের একটি লেগুনা পুয়েবলো। হালান্ড ওই গোষ্ঠীরই সদস্য।
১৯৩৩ সালের পর তিনিই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হয়ে কাজ করতে যাওয়া সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ আদিবাসী আমেরিকান হতে যাচ্ছেন।
এর আগে ১৯২৯ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৩১তম প্রেসিডেন্ট হার্বার্ট হুভারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির নেতা ও আদিবাসী চার্লস কার্টিজ। তিনি কানসা জাতিগোষ্ঠীর ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এক-পঞ্চমাংশ স্থল এবং ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন একর এলাকার উপকূলরেখার তত্ত্বাবধানে থাকা প্রায় ৭০ হাজার কর্মকর্তাকে নেতৃত্ব দেবেন হালান্ড। একই সঙ্গে বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণী আশ্রয় এবং গ্যাস, তেল ও পানির মতো প্রাকৃতিক সম্পদেরও ব্যবস্থাপনায় থাকবেন তিনি।
এ ছাড়া দেশটির আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চুক্তির বিষয়েও কাজ করবেন তিনি।
বিভিন্ন সরকারের আমলে কাঠামোগতভাবে ওই চুক্তিভঙ্গের কারণে আয়ুষ্কাল কমে যাওয়া, পরিবেশগত দুর্যোগ, রাজনৈতিক অংশগ্রহণে বাধা, অর্থনৈতিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়াসহ নানা ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতির মুখে দেশটির লাখো আদিবাসী।
হালান্ডের সেক্রেটারি অফ ইন্টেরিয়র হওয়ার খবরে আদিবাসী তরুণদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন সেন্টার ফর ন্যাটিভ আমেরিকান ইয়ুথের নির্বাহী পরিচালক নিক্কি পিত্রে বলেন, আদিবাসী তরুণেরা হালান্ডকে রোল মডেল হিসেবে দেখে। তিনি তাদের অধিকার রক্ষার বড় সমর্থক।
আরও পড়ুন:প্রযুক্তির অপব্যবহারে শ্যামনগরের যুবসমাজ আজ অনলাইন জুয়ার ভয়াল ফাঁদে বন্দি। ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহজেই জড়িয়ে পড়ছে এই নিষিদ্ধ খেলায়। দিন দিন বেড়েই চলেছে আসক্তির মাত্রা। নষ্ট হচ্ছে সময়, টাকা আর সম্পর্ক।
জানা গেছে, অনলাইন জুয়া এখন শুধুই তাস বা ক্যাসিনো নয়। পরিবর্তনশীল গেমের ধরনে যুক্ত হয়েছে ক্রিকেট, ফুটবল বেটিং, তিন পাত্তি, রামি, রঙের খেলা, এভিয়েটর গেম এমনকি জনপ্রিয় লুডুও। এসব গেমে প্রতিদিন বাজি ধরছে হাজার হাজার টাকা। জেতার আনন্দে শুরু হলেও এক সময় তা ভয়াবহ আসক্তিতে পরিণত হয়, যার শেষ পরিণতি প্রায়শই ঋণ, মানসিক বিপর্যয় ও সামাজিক ভাঙন।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, ‘এসব জুয়ার আসর বসছে গ্রামের চায়ের দোকান, চালের দোকান বা সুতার দোকানে। দিনের বেলায় সাধারণ ব্যবসার আড়ালে, আর রাতে দোকান বন্ধের পর শুরু হয় মোবাইলের স্ক্রিনে টাকার লড়াই। আড্ডার ছলে একে একে হাজির হয় নির্দিষ্ট গেমাররা, চোখ থাকে মোবাইলের পর্দায়—আর বাজি চলতে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর চলছে এই নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড।
অনলাইন জুয়ায় আসক্ত একজন যুবক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন,
‘প্রথমে বন্ধুদের দেখে খেলতে শুরু করি। লুডু দিয়ে শুরু, পরে দিনে দিনে হাজার টাকার বাজি লাগত। এখন প্রায় ৫০ হাজার টাকার ঋণে জর্জরিত, ঘুম পর্যন্ত হারাম হয়ে গেছে।’
সবচেয়ে বিপর্যয়ে পড়ছে পরিবারগুলো। ঘরে অশান্তি, বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সন্দেহ, ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের সম্পর্ক ছিন্ন—এ যেন সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার চক্র।
সন্তানরা পড়ালেখার পরিবর্তে দিনভর মোবাইলেই মুখ গুঁজে থাকে। যুবকরা হারাচ্ছে কাজের আগ্রহ, মুছে যাচ্ছে ভবিষ্যতের স্বপ্ন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘অনলাইন জুয়ার এই ভয়াবহ বিস্তার রোধে এখনই কঠোর আইন প্রণয়ন ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি, না হলে অচিরেই ধ্বংসের মুখে পড়বে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধনের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই এই সংখ্যা বেড়েছে। শুধু ২০২৪ সালেই জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার কাছে ২৮ হাজার ৪৭৩ বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
তবে শুধু শরণার্থী নয়, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনও করছেন অনেক বাংলাদেশি। ২০২৪ সালে এক লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। অধিকাংশ বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থী ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ২৪ হাজার ১২৬ বাংলাদেশি জাতিসংঘের কাছে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। ২০২২ সালে ২৩ হাজার ৯৩৫ জন, ২০২১ সালে ২২ হাজার ৬৭২ জন এবং ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৯৪৮ জন বাংলাদেশি নিজেদের শরণার্থী দাবি করে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেন। এছাড়া ২০১৯ সালে শরণার্থী হিসেবে জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশিদের আবেদনের সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ৭৬৬, ২০১৮ সালে ২১ হাজার ২২ এবং ২০১৭ সালে ১৬ হাজার ৭৮০টি।
২০২৪ সালে এক লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এছাড়া ২০২৩ সালে ৭৫ হাজার ৮৬৭ জন বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। ২০২২ সালে ৬১ হাজার ২৯৮ জন, ২০২১ সালে ৬৫ হাজার ৪৯৫ এবং ২০২০ সালে ৬৪ হাজার ৬৩৬ জন বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৮৬০ এবং ২০১৮ সালে ৬২ হাজার ৮৬০।
তবে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্যে যে চিত্র উঠে এসেছে তাতে দেখা যায়, আশ্রয়প্রার্থীদের বেশিরভাগই সুযোগসন্ধানী বা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়েছেন।
অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, অনেকে অবৈধ পথে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ইউরোপ যাচ্ছেন। সেখানে গিয়ে অবৈধ হয়ে থাকেন বছরের পর বছর। এরপর এরা শরণার্থী হিসেবে স্থায়ী হওয়ার আবেদন করেন।
তিনি বলেন, কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত, যেমন মিয়ানমার, সিরিয়া, আফগানিস্তান- এসব দেশ থেকে কেউ গেলেই অটোমেটিক তারা শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন। কিন্তু আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য না। আমাদের অনেকে অবৈধ হিসেবে গিয়ে শরণার্থী পরিচয় দেন, কিন্তু ইউরোপ জানে এরা অবৈধ অভিবাসী।
আসিফ মুনীর আরও বলেন, তবুও ইউরোপের দেশ ইতালি, ফ্রান্স আমাদের এই অবৈধ অভিবাসীদের গ্রহণ করছে। কিন্ত বাস্তবিক অর্থে যারা অবৈধ পথে এসব দেশে যাচ্ছেন এরা শরণার্থী নন। কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বহু মানুষ ইউরোপে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোতে বহু বাংলাদেশি আছেন যারা শরণার্থী হিসেবে গিয়েছেন।
মোরা (আমরা) গরিব মানু (মানুষ)। মোগো(আমাদের ) কপালে ইলিশ নেই। ওগুলো খাইবে টাহা (টাকা) ওয়ালা বড় লোক মানুষ (মানুষ)। আক্ষেপ করে এ কথা বলেছেন আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামের অটো চালক মনিরুল ইসলাম। ইলিশের মৌসুম হলেও বাজারে ইলিশের দাম চড়া গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ইলিশ মাছ কেনার সক্ষমতা নেই।
জানা গেছে, এক সময় রুপালী ইলিশে ভরপুর ছিল বঙ্গোপসাগর ও সাগর মোহনার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদী। কিন্তু কালের বিবর্তনে বঙ্গোপসাগর ও সাগর মোহনা পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীতে তেমন ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পরছে না। ইলিশে শিকারের মৌসুম জুন মাস থেকে শুরু হয়ে নভেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে ভরা মৌসুম জুলাই মাসের শেষ থেকে শুরু হয়ে পুরো নভেম্বর মাস। এ সময়ে ইলিশ বঙ্গোপসাগর ও মোহনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ে। আমতলী-তালতলী উপজেলায় ১৫ হাজার ৭৯৯ জন জেলে রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ জেলেই ইলিশ শিকার করে। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ১১ জুন জেলেরা সাগর ও নদীতে পুরোদমে ইলিশ শিকার শুরু করেছে। সাগর ও নদীতে জেলেদের জালে মোটামুটি ইলিশ ধরা পড়ছে। কিন্তু ইলিশ শিকার যাই হোক কিন্তু দামে আকাশ ছোয়া। গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের নাগালেই বাইরে ইলিশের দাম।
তালতলী মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সূত্রে জানা গেছে, চার ক্যাটাগরিতে ইলিশ মাছ বিক্রি হয়। ২০০-৩০০ গ্রাম, ৪০০-৬০০ গ্রাম, ৭০০-৯০০ গ্রাম ও ১০০০ গ্রামের উপরে। এ চার ক্যাটাগরির ইলিশের দাম প্রথম ক্যাটাগরির ইলিশের মণ ৩৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ক্যাটাগরির ইলিশের মণ ৬০ হাজার টাকা, তৃতীয় ক্যাটাগরির ইলিশের মণ ৮০ হাজার টাকা ও চতুর্থ ক্যাটাগরির ইলিশের মণ ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তাতে ছোট ইলিশ তথা প্রথম ক্যাটাগরির ইলিশের কেজি ৮৫০ টাকা, দ্বিতীয় ক্যাটাগরির ইলিশের কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা, তৃতীয় ক্যাটাগরির ইলিশের কেজি ২ হাজার টাকা এবং চতুর্থ ক্যাটাগরির ইলিশের কেজি ৩ হাজার টাকা। এত দামে ইলিশ ক্রয় করা গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষমতার বাইরে। দুই উপজেলা আমতলী-তালতলীতে অধিকাংশ গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবার গত দুই বছরে ইলিশ মুখে তুলতে পারেনি এমন দাবি দেলোয়ার হাওলাদারের। এর মধ্যে সাগর ও পায়রা নদীর জেলেদের জালে শিকার হওয়া ইলিশ স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় না বলে দাবী করেন ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান ফরাজী। ওই মাছ ঢাকা, যশোর, খুলনা, সাতক্ষিরা, পাবনা, গাজীপুর, মাদারীপুর, কালকিনি, শরীয়তপুর, নরিয়া ও পাটচর এলাকায় রপ্তানি হয়। এর মধ্যে বড় সাইজের ইলিশ মাদারীপুর জেলায় বেশি রপ্তানি হয়। ওই জেলায় বড় সাইজের ইলিশের চাহিদা বেশি বলে জানান ব্যবসায়ী টুকু সিকদার। ওই জেলার প্রবাসীরা এ ইলিশ ক্রয় করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, গত দুই বছরে কোনো ধরনের ইলিশ কিনে খেতে পারিনি। ইলিশের যে দাম তাতে আমাদের মতো আয়ের মানুষের ইলিশ কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। এই দামে ইলিশ কিনে খায় তা নেহায়েত বিলাসিতা।
তালতলী ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাইকারী ব্যবসায়ী মো. টুকু সিকদার বলেন, এ অবতরণ কেন্দ্রের কোন মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় না। সমুদয় মাছ বাসে অথবা ট্রাকে করে উত্তরাঞ্চলে রপ্তানি হয়। বিশেষ করে মাদারীপুর জেলায় এখানের বেশিরভাগ ইলিশ রপ্তানি হয়। ওই জেলার মানুষের ইলিশের চাহিদা বেশি। তিনি আরো বলেন, ইলিশের যে পরিমাণ দাম, এতো টাকা দিয়ে স্থানীয় মানুষের ইলিশ কিনে খাওয়ার সক্ষমতা নেই।
তালতলী উপজেলার ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. জুয়েল বলেন, বাজারে ইলিশ মাছের দাম অনেক চরা। চার ক্যাটাগরিতে ইলিশ মাছ বিক্রি হয়। এতে ছোট ইলিশের মণ ৩৫ হাজার টাকাএবং বড় ইলিশের মণ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, দাম নির্ধারিত হয় পাইকারদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে। তারা ইলিশ মাছ ডেকে দরদাম করে ক্রয় করেন।
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার দাশ বলেন, ইলিশ দাম নির্ধারণে আমার কোন নির্দেশনা নেই। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইলিশের দাম নাগালের মধ্যে থাকলে সাধারণ মানুষ ক্রয় করতে পারত।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন মিয়া বলেন, ইলিশ মাছের দাম অনেক কিন্তু মূল্য নির্ধারণে আমার দফতর কাজ করে না। তিনি আরো বলেন, ইলিশের দাম নির্ধারণে জেলায় একটি কমিটি আছে, ওই কমিটির মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সম্মান শেষ বর্ষের ২৬ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে রাজধানীর ভাটারা নতুন বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
শনিবার (২১ জুন) সকাল থেকে এই অবরোধ শুরু হয়। এতে করে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডামুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিপরীতমুখী সড়কে, অর্থাৎ বাড্ডা থেকে কুড়িল বিশ্বরোডগামী যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল হাসান ইউএনবিকে জানান, সকাল ৮টার পর ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী সড়কে অবস্থান নিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ওসি জানান, সম্মান শেষ বর্ষের পরীক্ষায় অত্যন্ত কম নম্বর পাওয়ায় ভবিষ্যতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না—এমন আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করে।
তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত একতরফাভাবে নেওয়া হয়েছে। তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সমুদ্রসীমার একটি পরিপূর্ণ হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে আরো পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, নিষ্ঠার সাথে কাজ করার জন্য হাইড্রোগ্রাফিক পেশাজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত আরো মজবুত ও সমৃদ্ধ করতে সমুদ্র তলদেশের নির্ভুল মানচিত্রায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর ও টেকসই সমুদ্রনীতি গড়ে তুলতে হবে।
‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বাংলাদেশে ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’
তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ দিবসটি আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সাথে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘সিবেড ম্যাপিং: এনাবলিং ওশান এ্যাকশন’- যার মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্রায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে, অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত হয়েছে বলে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বঙ্গোপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু বাংলাদেশই নয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বঙ্গোপসাগরের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে একটি উৎপাদনমুখী ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সমুদ্র সম্পদকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহারে বিশদ, হালনাগাদ ও নির্ভুল হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যের কোনো বিকল্প নেই।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রসীমার হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ, চার্ট প্রস্তুত, সকল দেশি ও বিদেশি জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের সমুদ্র আইন অনুযায়ী, আমাদের মহীসোপান অঞ্চল নির্ধারণ এবং সুনীল অর্থনীতি বিকাশে হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমাদের সামরিক ও নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ সমুদ্র বন্দরের উন্নয়ন, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
তিনি ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
শনিবার সরকারি ছুটি থাকলেও বাজেট কার্যক্রম চলমান থাকায় কাস্টমস ও ভ্যাট এবং আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য সকল দপ্তর খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী বেনাপোল কাস্টমস হাউস শনিবার সরকারি ছুটির দিনেও খোলা থাকার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, বেনাপোল কাস্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল ইসলাম। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। ১৮ জুন উম্মে আয়মান কাশমী (দ্বিতীয় সচিব বোর্ড প্রশাসন-১) স্বাক্ষরিত একপত্রের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জানানো হয়েছে যে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে বাজেট কার্যক্রম চলমান থাকায় আগামী ২১/০৬/২০২৫ ও ২৮/০৬/২০২৫ তারিখ শনিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং এর অধীনস্থ কাস্টমস ও ভ্যাট এবং আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য সকল দপ্তর খোলা রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। বেড়ে চলেছে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সরকারের দেওয়া হিসাবে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। এই সময়ে সারা দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫১ জন। তবে এই সময়ের মধ্যে কারো মৃত্যু হয়নি।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের দিক থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮৬ জন।
শুক্রবার (২০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৮ জন। আর ঢাকার বাইরে অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২৭ জন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭ হাজার ৭৭ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ০৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
এই সময়ের মধ্যে মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
মন্তব্য