× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করেছিল মোসাদ
google_news print-icon

ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করেছিল মোসাদ

ইরানি-বিজ্ঞানীকে-যেভাবে-হত্যা-করেছিল-মোসাদ
তেহরানের রাস্তায় মহসেন ফাখরিজাদেহর ছবি। এএফপি
ইরানের ভেতরে সে দেশের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী ফাখরিজাদেহকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা। হত্যার আগে এমন নজরদারি চালানো হয়েছিল, যাতে তার নিঃশ্বাসের শব্দও টের পেত মোসাদের গোয়েন্দারা।

ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যায় ইসরাইয়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ জড়িত ছিল বলে দাবি করেছে বিশ্বের প্রাচীনতম ইহুদি পত্রিকা জুইশ ক্রনিকলস

ব্রিটিশ এ পত্রিকাটি বলছে, ফাখরিজাদেহকে হত্যার আগে এমন নজরদারি চালানো হয়েছিল, যাতে তার নিঃশ্বাসের শব্দও টের পেত মোসাদের গোয়েন্দারা।

বুধবার জুইশ ক্রনিকল- এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানের উপকণ্ঠে মহসেন ফাখরিজাদেকে হত্যায় অংশ নেন মোসাদের ২০ গোয়েন্দা। প্রায় এক টন ওজনের একটি দূর নিয়ন্ত্রিত বন্দুকের সাহায্যে তাকে হত্যা করা হয়।

ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি বলছে, ইরানের পরমাণু কেন্দ্র থেকে গোপন নথি হাতে পাওয়ার পরই মহসেনকে হত্যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েল।

ইরান পরমাণু বোমা বানাতে পারলে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকত মহসেন ফাখরিজাদের। মহসেন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত বছরের ২৭ নভেম্বর একদল আততায়ীর হামলায় নিহত হন তিনি।

ইরান দাবি করে আসছিল, এই হামলার পেছনে ইসরায়েল জড়িত। তবে এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি এ ইহুদি রাষ্ট্রটি।

ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করেছিল মোসাদ
আততায়ীদের হামলার পর ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী মহসেন ফাখরিজাদেহর গাড়ি। ছবি: এএফপি

গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জুইশ ক্রনিকলস তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রায় আট মাস ধরে প্রস্তুতি নেয়ার পর মহসেন ফাখরিজাদেহকে উদ্দেশ করে হামলা চালায় মোসাদের গোয়েন্দারা। আততায়ী দলটিতে ইরানের কয়েকজন নাগরিকও ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৯ বছর বয়সী ফাখরিজাদেহকে হত্যায় ১৩টি বুলেট খরচ করে মোসাদ। এর সবকটিই নিখুঁতভাবে তার মাথায় বিদ্ধ হয়। মোসাদ জানিয়েছে, ফাখরিজাদে ছাড়া ওই হামলায় অন্য কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হননি। হামলার সময় তার স্ত্রী ও ১২ জন দেহরক্ষীও গাড়িবহরে ছিলেন।

জুইশ ক্রনিকলসকে গোয়েন্দাসূত্রটি জানিয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচাতে ‘অত্যন্ত নিখুঁত’ হামলা চালাতে সক্ষম বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল। এর প্রত্যেকটি যন্ত্রাংশ প্রায় আট মাস ধরে ইরানে গোপনে পাচার করা হয়েছিল।

হামলার আগে এক টন ওজনের বন্দুকটিকে একটি নিসান গাড়ির ওপরে স্থাপন করা হয়। এরপর রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে দূর থেকে ফাখরিজাদেহর গাড়ির ওপর গুলি চালানো হয়। তিনি মারা গেছেন নিশ্চিত হওয়ার পরই বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিসান গাড়িটিকে উড়িয়ে দেয় ইসরায়েলি গোয়েন্দারা। এরপরই সেখান থেকে সটকে পড়ে তারা।

আরও পড়ুন: ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী খুন

ফাখরিজাদেহকে হত্যার পর ইরান দাবি করছিল, তাকে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রের সাহায্যে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছিল, হত্যায় ৬২ বন্দুকধারী অংশ নিয়েছিল। জুইশ ক্রনিকল- এর প্রতিবেদনে এমন দাবিকেও নাকচ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এটি এখন প্রমাণিত যে, ইরানের ভূমিতেই দীর্ঘ কয়েক মাস প্রস্তুতি নিয়ে তাদের শীর্ষ বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে মোসাদ।

জুইশ ক্রনিকল এটিও দাবি করেছে, ফাখরিজাদেহকে হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা না থাকলেও অভিযানের ব্যাপারে জানত দেশটি।

পত্রিকাটির মতে, ইরানের বিরোধী পক্ষকে দমনেই সরকার শক্তি খরচে ব্যস্ত থাকায় দেশটির মাটিতে এমন অভিযান চালাতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়লের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাকব নাগেলের মতে, ফাখরিজাদেহ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম পরমাণু বোমা বানানোর কাজ করছিলেন এমন প্রমাণ আছে মোসাদের কাছে।

জ্যাকব নাগেল বলেন, ‘তিনি (ফাখরিজাদেহ) এই বিষয়ে খুব সিরিয়াস ছিলেন। তিনি যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তা বাস্তবায়ন করেই ছাড়তেন। তাই কেউ একজন সিদ্ধান্ত নিল যে, দুনিয়াতে ফাখরিজাদেহর সময় শেষ হয়ে এসেছে।’

জুইশ ক্রনিকল- এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তত দুই বছর আগে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিপুল পরিমাণ গোপন নথি চুরি করতে সক্ষম হয় ইসরায়েলি গোয়েন্দারা। ৩২টি বিশালাকৃতির সিন্দুক থেকে এই নথিগুলো চুরি করা হয়।

প্রায় ৫০ হাজার পৃষ্ঠার কাগজপত্র ও ১৬৩ সিডিতে ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির বিস্তারিত লেখা ছিল।

এই নথিগুলো ইসরায়েলের একটি গোপন জায়গায় সংরক্ষিত আছে। দেশটির সরকারের কয়েকটি সূত্র জুইশ ক্রনিকলকে জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি না করতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রভাবিত করতে এই নথিগুলো ব্যবহার করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রকে এটি বোঝানোর চেষ্টা করা হবে, পরমাণু ইস্যুতে ইরানকে কোনোভাবেই বিশ্বাস করা উচিত হবে না।

ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করেছিল মোসাদ
তেহরানে অনুষ্ঠানে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও পরমাণু বিজ্ঞানী মহসেন ফাখরিজাদেহ। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের দাবি, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে করা যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে সহায়তা করেছিল।

ইসরায়েলের মতে, ইরানের গোপন নথিগুলো প্রমাণ করে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তির বরখেলাপ করেছিল দেশটি। একই নথি দেখিয়ে ইরান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রকে ট্রাম্পের নীতিতে অটল থাকার ব্যাপারে প্রভাবিত করতে চায় ইসরায়েল।

২০১৮ সালে এই নথিগুলো হাতে পাওয়ার পরই মহসেন ফাখরিজাদেহকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েল।

দেশটির গোয়েন্দাসূত্র জুইশ ক্রনিকলকে জানিয়েছে, এই নথিগুলোর বেশিরভাগই ফাখরিজাদেহ নিজ হাতে লিখেছিলেন। পরমাণু কর্মসূচির সবকিছুই চলছিল তার নির্দেশনা অনুযায়ী। বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে শুরু করে কর্মী নিয়োগ পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যাপারে নিজে সিদ্ধান্ত নিতেন ফাখরিজাদেহ।

২০২০ সালের মার্চ মাস। পুরো বিশ্ব তখন করোনাভাইরাস মহামারিতে নাকাল। এ সময়ই ফাখরিজাদেহকে হত্যার চূড়ান্ত পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু করে মোসাদ। ইসরায়েল থেকে চোরাপথে সংস্থাটির একদল গোয়েন্দা ইরানে প্রবেশ করে। ­

গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জুইশ ক্রনিকলস বলছে, ‘পুরো দলটির কাজ নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এমনকি প্রত্যেক মিনিটে তারা কী করবে, সেটি পর্যন্ত। আট মাস তারা ফাখরিজাদেহর ওপর নিবিড় নজরদারি জারি রাখে।’

‘বিষয়টি এমন যেন ফাখরিজাদেহর প্রতিটি নিঃশ্বাসের খবরও গোয়েন্দারা জানত। তারা যেন তার সঙ্গেই থাকত, ঘুমাত, জেগে থাকত, ঘুরে বেড়াত।

‘কোনো সকালে যদি ফাখরিজাদেহ তার দাড়িগোঁফ কামাতেন, তাহলে আফটার শেভের গন্ধ পর্যন্ত গোয়েন্দারা পেয়েছে।’

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ ফাখরিজাদেহ এমন সব সুযোগসুবিধা ভোগ করতেন, যা অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাগালের বাইরে ছিল। ইরানের অন্যতম অবকাশ অঞ্চল আবসারদে একটি ভিলা ছিল তার। প্রত্যেক শুক্রবার তেহরান থেকে সেখানে বেড়াতে যেতেন ফাখরিজাদেহ।

মোসাদের গোয়েন্দারা জানতেন, ফাখরিজাদেহ কোন পথে যাতায়াত করেন, কত গতিতে তার গাড়ি চলে এবং গাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য ফাখরিজাদেহ কোন দরজাটি ব্যবহার করেন।

হত্যার দিন একটি কালো রঙের গাড়িতে চড়ে স্ত্রীকে নিয়ে ভিলার দিকে যাচ্ছিলেন ফাখরিজাদেহ। তাদের পাহারা দিচ্ছিল ১২ দেহরক্ষীর একটি গাড়িবহর। এদের অজ্ঞাতসারেই মোসাদের গোয়েন্দারা রাস্তা থেকে নিচে মাটিতে বসে অপেক্ষা করছিল। খেয়াল করছিল তাদের প্রত্যেক গতিবিধি এমনকি নড়াচড়া পর্যন্ত।

ফাখরিজাদের গাড়িটি আগে থেকে ঠিক করা জায়গা পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দূরনিয়ন্ত্রিত অস্ত্রের বোতামে চাপ দেন গোয়েন্দারা। অত্যন্ত নিখুঁত বন্দুকটির ১৩টি বুলেট ফাখরিজাদের মাথায় বিদ্ধ হয়।

জুইশ ক্রনিকলসের কাছে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, হামলা এত নিখুঁত ছিল যে, ফাখরিজাদেহর থেকে দশ ইঞ্চি দূরে বসা তার স্ত্রীও আহত হননি।

ইরান দাবি করেছিল, ফাখরিজাদেহর নিরাপত্তা প্রধানও হামলায় আহত হয়েছিলেন। তবে এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে মোসাদের সূত্রটি।

হামলার পরই বন্দুকবহনকারী গাড়িটিকে উড়িয়ে দিয়ে নিরাপদে সরে পড়তে সক্ষম হন গোয়েন্দারা।

জুইশ ক্রনিকল- এর মতে, নিজেদের মাটিতে এমন হালমার পরে লজ্জায় পড়ে যায় ইরান। এমনকি মোসাদের শীর্ষ অনেক কর্মকর্তাও এমন সফলতা আশা করেননি।

ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করেছিল মোসাদ
ইরানের বুশেহর শহরে একটি পরমাণু শক্তি কেন্দ্র। ছবি: এএফপি

ইরান জানিয়েছে, ফাখরিজাদেহকে হারানোর ক্ষতি সামলে উঠতে আরও ছয় বছরের মতো সময় লাগবে তাদের। ইসরায়লের মতে, ফাখরিজাদেহ মারা না গেলে হয়ত পরমাণু বোমা বানাতে আর মাত্র তিন মাস সময় লাগত ইরানের।

গোয়েন্দা সূত্রটি জুইশ ক্রনিকলসকে জানিয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িত ছিল না। এটি পুরোপুরি একটি ইসরায়েলি অপারেশন। এই হত্যা কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঘটেনি। নিরাপত্তার স্বার্থেই এমন অভিযান চালানো হয়েছে।

‘যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্র নেই। কারণ হামলা হয়েছে বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পরেই। তবে এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কিছুটা আঁচ দিয়েছিল ইসরায়েল। ঠিক যেভাবে তারা ইরানি জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার আগে ইসরায়েলকে জানিয়েছিল।’

নিজেদের ‘রক্ষার স্বার্থে’ ভবিষ্যতে ইসরায়েল ইরানের ওপর এরকম আরও হামলা চালাবে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্রটি।

সূত্রটি বলছে, ‘পরিস্থিতি সংকটপূর্ণ হলে আমরা কারও অনুমতির অপেক্ষায় থাকব না।’

এর আগে ২০১০ ও ২০১২ সালে আরও চার জন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী খুন হন। এর জন্যও ইসরায়েলকে দায়ী করে আসছে ইরান।

২০১৮ সালে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নির্দিষ্ট করে মহসেন ফাখরিজাদেহর নাম উল্লেখ করেছিলেন।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক টাইমস তাকে পরমাণু বোমার জনক রবার্ট ওপেনহাইমারের সঙ্গে তুলনা করেছিল।

আরও পড়ুন:
ইরানের ১২ লাখ ব্যারেল তেল বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলতে বাইডেনের শর্ত
বোমা হামলার পরিকল্পনা: ইরানি কূটনীতিকের ২০ বছরের সাজা
স্যাটেলাইট বহনকারী রকেটের পরীক্ষা ইরানের
ইসরায়েলের মর্জিতে চলবেন না বাইডেন: ইরান

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Indias missile attack in Pakistan

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩

পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩ ছবি: সংগৃহীত

‌পে‌হেলগা‌মে সন্ত্রাসী হামল‌ার প্রতি‌ক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের অন্তত ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১৩ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।

তিনি জানান, ভারত মোট ২৪টি হামলা চালিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে (পা‌কিস্তা‌নের) পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরের কাছে আহমেদপুর শারকিয়ায়। সেখানে একটি মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলায় এক শিশুকন্যাসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন।

এছাড়া পাঞ্জাবের মুরিদকে শহর, শিয়ালকোটের কাছে একটি গ্রাম এবং শাকরগড়েও হামলা চালা‌নো হ‌য়ে‌ছে। পাশাপাশি পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতেও হামলা হয়েছে। সেখানের হামলায় দুটি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। তাছাড়া এই হামলায় ১৬ বছর বয়সী এক তরুণী ও ১৮ বছর বয়সী এক তরুণও নিহত হয়েছে বলে জানান আহমেদ শরীফ।

গত ২২শে এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ হামলা চালানো হলো। শুরু থেকেই হামলার জন্য পাকিস্তানতে দায়ী করে আসছিল ভারত। যদিও পাকিস্থান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল।

এদিকে, ভারতের এই হামলার জবাবে হুমকি দিয়েছে পাকিস্তান। এই ঘটনায় পরমাণু শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বুধবার (৭ মে) সকালে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সেনারা ভারতের ৫টি বিমান ভূপাতিত করেছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে এমন বলা হয়েছে।

এছাড়া অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনাদের ওপর পাল্টা হামলার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Turkeys warships at the port of Pakistan

পাকিস্তানের বন্দরে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ, উদ্বিগ্ন ভারত

পাকিস্তানের বন্দরে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ, উদ্বিগ্ন ভারত

কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। রোববার রাতেও ভারত এবং পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটির মধ্যে এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই গত শনিবার করাচির বন্দরে ভিড়েছে তুরস্কের নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ। খবর আরব নিউজের।

পাকিস্তানের নৌবাহিনীর পক্ষ রোববার এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, দুই দেশের সহযোগিতা জোরদার করতে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ টিসিজি বুয়ুকডা পাকিস্তানে পৌঁছেছে।

এদিকে, এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন ভারত বড় ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ভারতের প্রত্যাঘাত সামাল দিতে বন্ধু দেশগুলোর সাহায্য চেয়েছে পাকিস্তান। তাদের বন্ধু তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে চীন ও তুরস্ক।

সামরিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অন্যতম বড় সাহায্যকারী দেশ তুরস্ক। আগেও পাকিস্তানকে আগোস্টা ৯০বি ক্লাস সাবমেরিনের আধুনিকীকরণ, ড্রোনসহ অন্য যুদ্ধাস্ত্র দিয়েছে তুরস্ক। এ ছাড়া প্রায়ই যৌথ মহড়ায় অংশ নেয় দুই দেশের সেনা। তবে এবার ভারতে যুদ্ধ পরিস্থিতির মাঝে তুরস্কের যুদ্ধজাহাজের করাচি আগমন মোটেই সহজভাবে দেখছে না ভারতের বিশেষজ্ঞমহল।

যদিও পাকিস্তানের নৌবাহিনীর দাবি, করাচিতে থাকাকালীন তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ পাকিস্তানের নৌবাহিনীর সঙ্গে সামরিক ক্ষেত্রে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে।

এই সফরের লক্ষ্য দুই নৌবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি ও সমুদ্রে সহযোগিতা বাড়ানো। তবে ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে তুরস্কের যুদ্ধ জাহাজের আগমন সাধারণ বিষয় নয়।

পাকিস্তান সফরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় সফরে গেলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইসলামাবাদে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পশ্চিম এশিয়া) সৈয়দ আসাদ গিলানি, পাকিস্তানে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত এবং অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। খবর ইরনার।

সফরকালে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক কারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন বলে জানানো হয়েছে। এই সফরের সময় দুই দেশের প্রতিনিধিরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও মতবিনিময় করবেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই উচ্চপর্যায়ের সফর ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিফলন। পাশাপাশি দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকারও এতে ফুটে উঠেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচির এই সফরের মাধ্যমে পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নতুন মাত্রা পাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে জানান, আরাঘচির সফরে ইরান-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছাড়াও ইসরায়েলি হুমকি মোকাবিলার সম্ভাব্য কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Humanitarian assistance in Gaza should not be politicized ICRC

গাজায় মানবিক সহায়তা 'রাজনীতিকরণ' করা উচিত নয় : আইসিআরসি

গাজায় মানবিক সহায়তা 'রাজনীতিকরণ' করা উচিত নয় : আইসিআরসি

সোমবার আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) জানিয়েছে, গাজার অবরুদ্ধ বাসিন্দাদের কাছে অবিলম্বে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে হবে এবং এটিকে রাজনীতিকরণ করা উচিত নয়।

জেনেভা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ‘অধিকাংশ জনসংখ্যাকে স্থানান্তর’সহ সামরিক হামলা বৃদ্ধির পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।

জেনেভায় আইসিআরসির মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান কার্ডন এএফপিকে বলেন, ‘মানবিক সাহায্যের রাজনীতিকরণ করা উচিত নয়। গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে এই মুহূর্তে চাহিদার মাত্রা অপ্রতিরোধ্য, এবং অবিলম্বে সাহায্য পৌঁছানো প্রয়োজন’।

তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে, ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণাধীন বেসামরিক জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করার জন্য উপলব্ধ সমস্ত উপায় ব্যবহার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ইসরাইল হামাসের বিরুদ্ধে মানবিক সাহায্যের অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছে। হামাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য তাদের অবরোধ প্রয়োজন ছিল।

কার্ডন বলেন, আইসিআরসি সরাসরি অথবা আমাদের অংশীদারদের সাথে একসাথে মানবিক সরবরাহ পরিচালনা ও বিতরণ করে। তাই আমরা দেখি সেই জিনিসগুলো কোথায় যায়।

তিনি বলেন, গাজায় আমাদের ত্রাণ সরবরাহ সকল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে পরিচালিত হচ্ছে।

আমরা নিরাপত্তার উদ্বেগ স্বীকার করি, তবে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে আমরা জরুরি ভিত্তিতে জোর দিচ্ছি। কর্তৃপক্ষ গাজার মানুষের কাছে জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি দ্রুততর করুক এবং সরবরাহের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করুক।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Gaza occupied Israels Nilnaksha Authorization

গাজা দখলে ইসরায়েলের নীলনকশা অনুমোদন

গাজা দখলে ইসরায়েলের নীলনকশা অনুমোদন গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাঙ্ক। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল সোমবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতভাবে এ পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায় রিজার্ভ সেনাদের ডাক দেওয়া হবে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সরাসরি ২৩ লাখ জনসংখ্যার গাজা অঞ্চলে খাদ্য ও জরুরি ত্রাণ সরবরাহ পরিচালনা করবে। এই জনগণ ইসরায়েলের অবরোধের কারণে দীর্ঘদিন ধরে মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন পরিকল্পনার আওতায় ইসরায়েল গাজা পুরোপুরি দখলে নিতে পারে। এএফপির এক সূত্র বলেছে, পরিকল্পনায় গাজা দখল, সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং বাসিন্দাদের দক্ষিণে স্থানান্তরের বিষয় রয়েছে, যাতে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এখনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই পরিকল্পনাকেই এগিয়ে নিচ্ছেন, যেখানে গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের প্রস্তাব রয়েছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজায় আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি নিরাপত্তা কোম্পানিগুলো ত্রাণ বিতরণে নিয়োজিত থাকবে। এসব সংস্থাকে বাইরের নিরাপত্তা দেবে ইসরায়েলি সেনারা, যাতে ত্রাণ বিতরণ নিরাপদভাবে পরিচালিত হয়।

এর আগে মানবিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছিল, গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘনিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েল সে দাবি অস্বীকার করে এবং মার্চের ২ তারিখ থেকে ১৬ দিন পর্যন্ত সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রাখে।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সম্ভাব্য পূর্ণ দখল এবং ত্রাণ ব্যবস্থার সামরিকীকরণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এটি শুধু মানবিক সংকটকেই বাড়াবে না, বরং যুদ্ধাপরাধের আশঙ্কাও উসকে দিচ্ছে। বর্তমানে গাজার অবস্থা চরম মানবিক বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে। খাদ্য, পানি, ওষুধের অভাবে প্রতিদিন মৃত্যুবরণ করছেন সাধারণ মানুষ, যার অধিকাংশই শিশু ও নারী।

কোথায় আশ্রয় নেবে ফিলিস্তিনিরা?

গাজার এমন কোনো স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালায়নি। পুরো গাজাকে এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে দখলদার বাহিনী। ফিলিস্তিনিরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন পার করছেন। তাদের আশ্রয় নেওয়ার মতো নিরাপদ কোনো জায়গা নেই। এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালাচ্ছে না বা এমন কোনো মানবিক অঞ্চল নেই যেখানে তারা আশ্রয় নিতে পারে। ভয়াবহ দুর্বিষহ জীবন পার করছে ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ এবং শিশুরা।

গাজার বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীই মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ইসরায়েলি বাহিনী রাফাহ দখল করার পর গাজার বিভিন্ন এলাকায় লোকজন আটকা পড়েছে। তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানেও যেতে পারছেন না। উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণ গাজায় যাওয়ার স্বাধীনতাও পাচ্ছেন না তারা।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান আরও জোরদার ও বিস্তারের লক্ষ্যে হাজার হাজার রিজার্ভ সৈন্য ডাকতে শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত চাপ সৃষ্টি এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনাই তাদের লক্ষ্য।

ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে। প্রায় ৪৭০ দিন ধরে চলা যুদ্ধে ফিলিস্তিনিরা বাড়ি-ঘর, প্রিয়জন সবকিছু হারিয়েছেন। তাদের মাথার ওপর আশ্রয় নেওয়ার মতো শেষ অবলম্বনটুকুও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বোমা হামলায় চোখের সামনে বাবা-ভাই বা সন্তানের মৃত্যু দেখছেন তারা।

এরই মধ্যে নতুন পরিকল্পনার আওতায়, গাজায় ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠের সব ধরনের অবকাঠামো ধ্বংস করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে সমালোচকরা বলছেন, দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও শুরু হওয়া এই অভিযান বন্দিমুক্তির নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় অভিযান ফের সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান শুরু হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে হামাসের হাতে ৫৯ জন জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জনের জীবিত বলে বিশ্বাস করা হয়। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে নতুন করে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে আর কোনো ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পায়নি।

এই সময়ের মধ্যে গাজার বিশাল এলাকা দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে আবারও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সঙ্গে গাজায় প্রায় দুই মাস ধরে চলছে মানবিক সহায়তার ওপর কঠোর অবরোধ।

গাজায় নিহত আরও ৪০ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাস উৎখাত আর তাদের কবল থেকে জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যা চলছেই। প্রতিদিনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা; দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। নিরাপদ বলে কোনো স্থান বাকি নেই গাজাবাসীর জন্য। একদিকে আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ; গাজা যেন সাক্ষাৎ নরক হয়ে উঠেছে তার বাসিন্দাদের জন্য। এরই মধ্যে গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

এদিকে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এতে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫২ হাজার ৫৪০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ২৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trumps instruction to turn the notorious that cargie

কুখ্যাত সেই কারাগারটি ফের চালু করার নির্দেশ ট্রাম্পের

কুখ্যাত সেই কারাগারটি ফের চালু করার নির্দেশ ট্রাম্পের ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোর দুর্গম দ্বীপে অবস্থিতআলকাট্রাজ কারাগার। ছবি: এপি

ষাট বছরেরও বেশি সময় আগে বন্ধ হওয়া একটি কুখ্যাত কারাগার নতুন করে চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোর দুর্গম দ্বীপ আলকাট্রাজে ১৯৩৪ সালে এই কারাগারটি স্থাপন করা হয়েছিল। পরে ১৯৬৩ সালে সেটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এবার কারাগারটি কেবল চালু করাই না, এটিকে আরও বড় করে পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রবিবার (৪ মে) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘এক সময় আমেরিকার জনগণকে রক্ষায় দেশটির বিপজ্জনক অপরাধীদের আলকাট্রাজ কারাগারে আটকে রাখা হতো। সেই কারাগারটিই আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকা হিংস্র ও সহিংস অপরাধীদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এমনকি কিছু কিছু অপরাধী বারবারই সহিংস কার্যকলাপ করে দেশটির ক্ষতি করে আসছেন। আমি বিচার বিভাগ, ফেডারেল ব্যুরো অব আমেরিকা (এফবিআই) ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সঙ্গে কারাগার ব্যুরোকে একীভূত করে আলকাট্রাজ কারাগারটি ফের চালু ও সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছি। সেখানে আমেরিকার সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও সহিংস অপরাধীদের রাখা হবে।’

এ বিষয়ে ফ্লোরিডা থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারাগারটির একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এটি আইন ও শৃঙ্খলার প্রতীক।’

প্রসঙ্গত, সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরে অবস্থিত আলকাট্রাজ কারাগারটি ৬৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ প্রিজনসের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ভঙ্গুর অবকাঠামো ও উচ্চব্যয়ের কারণে ১৯৬৩ সালে কারাগারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দ্বীপে অবস্থিত হওয়ার কারণে এটি পরিচালনার খরচ ছিল অন্য যেকোনও ফেডারেল কারাগারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ।

এছাড়া দ্বীপের অবস্থান, তীব্র স্রোত এবং বরফ শীতল পানির কারণে আলকাট্রাজকে আমেরিকার সবচেয়ে নিরাপদ কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে এ কারাগার থেকে কোনো বন্দির পালানোর রেকর্ডও নেই। এফবিআইয়ের তথ্যমতে, কারাগারটি চালু থাকাকালীন ৩৬ জন আসামি অন্তত ১৪ বার পালানোর চেষ্টা করেও সফল হননি। সবাই কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছেন। এটি বর্তমানে সান ফ্রান্সিসকোর অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ।

এদিকে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেছেন সাবেক হাউস স্পিকার ও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা ন্যান্সি পেলোসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘ষাট বছরেরও বেশি সময় আগে আলকাট্রাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটি এখন অত্যন্ত জনপ্রিয় জাতীয় উদ্যান এবং প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ট্রাম্পের প্রস্তাবটি যথোচিত নয়।’

শুরুতে আলকাট্রাজ একটি নৌ প্রতিরক্ষা দুর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০ শতকের প্রথম দিকে এটিকে একটি সামরিক কারাগারে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩০-এর দশকে বিচার বিভাগের অধীনে নেওয়া হয় এই কারাগারটি। এরপর থেকে ফেডারেল বন্দিদের এ কারাগারে পাঠানো শুরু করা হয়।

এখানে রাখা কয়েদিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কুখ্যাত গ্যাংস্টার আল কাপোন, মিকি কোহেন এবং জর্জ মেশিন গান কেলি।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ১৯৬২ সালে বার্ট ল্যাঙ্কাস্টার অভিনিত ‘বার্ডম্যান অফ আলকাট্রাজ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমেও বিখ্যাত হয়েছিল কারাগারটি। এছাড়াও ১৯৯৬ সালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘দ্যা রকে’র শুটিংও হয় এই দ্বীপে। ওই মুভিতে বিখ্যাত অভিনেতা শন কনারি ও নিকোলাস কেজ অভিনয় করেন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
PAP again in Singapores power to win elections

নির্বাচনে জিতে সিঙ্গাপুরের ক্ষমতায় আবারও পিএপি

নির্বাচনে জিতে সিঙ্গাপুরের ক্ষমতায় আবারও পিএপি ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্ট নির্বাচনে আবারও জয় পেয়েছে পিপলস অ্যাকশন পার্টি (পিএপি)। এর মধ্য দিয়ে টানা ৬৬ বছরের মতো দেশটির ক্ষমতায় টিকে থাকল দলটি। এই জয়কে প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াংয়ের একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক বছর আগে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

শনিবার (৩ মে) অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, দেশটির পার্লামেন্টের ৯৭টি আসনের মধ্যে ৮৭টি পেয়েছে পিএপি। এছাড়া ৩৩টি নির্বাচনি এলাকার বেশিরভাগেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে দলটি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে পিএপি। এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনে ৬১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তারা। ফলাফল ঘোষণার পরপরই পতাকা নেড়ে ও আনন্দ করে বিজয় উদযাপন করেন পিএপির সমর্থকরা।

১৯৫৯ সাল থেকে সিঙ্গাপুরের শাসনক্ষমতায় রয়েছে এই দলটি।

নির্বাচনে জয় পেয়ে সিঙ্গাপুরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াং। তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন অর্থনীতিবিদ।

দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরে একের পর এক শুল্কারোপের ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার ওই তালিকা থেকে বাদ যায়নি সিঙ্গাপুরও। এ কারণে নির্বাচনি প্রচারের সময় এই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাণিজ্যনির্ভর দেশটি পরিচালনার জন্য জনগণের সমর্থন চেয়েছিলেন লরেন্স।

এবার নির্বাচন জিতে তিনি বলেন, ‘এই ফলাফল সিঙ্গাপুরকে বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যে আরও ভালো অবস্থানে রাখবে।’

সিঙ্গাপুর ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন অধ্যাপক ইউজিন তান বলেন, ২০২০ সালের পর বিরোধীদের কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়াটা বিস্ময়কর। তবে দীর্ঘদিন ধরে যারা সেবা দিয়ে আসছে, জনগণ তাদের প্রতিই আস্থা রেখেছেন বলেন মন্তব্য করেন তিনি।

গত বছর সিঙ্গাপুরের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লরেন্স ওয়াং। এর আগে দুই দশক ধরে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী ছিলে লি হসিং লুং। তিনি আধুনিক সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা লি কুয়ান ইয়েওয়ের ছেলে। লিয়ের পদত্যাগের মাধ্যমে লি কুয়ান ইউয়ের শুরু করা পারিবারিক রাজনীতির অবসান ঘটে।

গতকালের ফলাফল অনুযায়ী, নির্বাচনে মূল বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টি ১০টি আসনে জয় পেয়েছে। গত নির্বাচনেও তারা ১০টি আসন পেয়েছিল। সিঙ্গাপুরে কোনো বিরোধী দলের এটি সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়ার ঘটনা।

বিশ্লেষকদের ধারণা, কঠোর সরকারি নিয়ন্ত্রণ, জীবিকার উচ্চ ব্যয়, আয় বৈষম্য, নাগালের বাইরে চলে যাওয়া আবাসন ব্যবস্থা ও মত প্রকাশের সীমাবদ্ধতা—এসব বিষয় বিশেষত তরুণদের মধ্যে পিএপির জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলেছে।

বিরোধীদলগুলো জানিয়েছে, পার্লামেন্টে তাদের শক্তিশালী উপস্থিতি একটি আরও ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। তবে অনেক সময় সম্পদের অভাব, বিভক্ত সমর্থন ও দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের ঘাটতির কারণে তাদের পিছিয়ে থাকতে হয় বলে মন্তব্য করেন তারা। তাছাড়া, নির্বাচনি এলাকার সীমার পুনর্বিন্যাস পিএপিকে বাড়তি সুবিধা দেয় বলেও অভিযোগ করেন অনেকে।

ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা প্রীতম সিং জানান, তারা আরও ভারসাম্যপূর্ণ পার্লামেন্টের জন্য লড়াই অব্যাহত রাখবেন। তিনি বলেন, ‘ফলাফল যা হয়েছে তা ভুলে আমরা আগামীকাল থেকেই আবার কাজ শুরু করব।’

ওয়ার্কার্স পার্টি তাদের সংসদীয় উপস্থিতি বাড়াতে না পারলেও কিছু এলাকায় শেয়ার ভোট বাড়িয়ে নিজেদের সমর্থন আরও সুসংহত করেছে বলে করেন মন্তব্য করেন দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় রাজনীতি বিশ্লেষক ব্রিজেট ওয়েলশ। তবে অন্য ছোট বিরোধী দলগুলো উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি বলে মনে করেন তিনি।

ওয়েলশের মতে, ‘বৈশ্বিক অস্থিরতা ও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সিঙ্গাপুরের ভোটাররা স্থিতিশীলতাকে বেছে নিয়েছেন। তরুণদের সঙ্গে ওয়াংয়ের সহজ-সরল বোঝাপড়া এবং পিএপিতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নতুন মুখ নিয়ে আসাও ভোটে প্রভাব ফেলেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এই ফলাফলকে বলি, লরেন্স ও ট্রাম্পের প্রভাব। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ লরেন্সের ম্যান্ডেটকে আরও শক্তিশালী করেছে।’

এদিকে, সিঙ্গাপুর ও লরেন্স ওয়াংকে এই বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর প্রায় ৬০ বছর ধরে একটি শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত অংশীদারত্বের সম্পর্ক বজায় রেখেছে।

নবনির্বাচিত সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ওয়াংয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trump gave himself a picture of the Popes dress

পোপের পোশাকে নিজের ছবি দিলেন ট্রাম্প

পোপের পোশাকে নিজের ছবি দিলেন ট্রাম্প ছবি: সংগৃহীত

রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় গুরু পোপ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশের কয়েকদিন পর, পোপের পোশাক পরিহিত একটি ছবি শেয়ার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ছবিটি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

গতকাল শনিবার মাকিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াশিংটন টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরাল হওয়া ছবিটি পরে হোয়াইট হাউসের এক্স অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করা হয়েছে।

পোপের বেশে প্রকাশ করা ছবিটিতে দেখা যায়, পোপের পোশাকে গম্ভীর মুখে চেয়ারে বসে আছেন ট্রাম্প। উঁচিয়ে আছেন ডান হাতের তর্জনী।

ট্রাম্পের এই ছবিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চটেছেন অনেকে। অনেকে ট্রাম্পকে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু নিয়ে উপহাস করার অভিযোগ করেছেন।

গত ২১ এপ্রিল ৮৮ বছর বয়সে মারা যান পোপ ফ্রান্সিস। এরপর গত ২৬ এপ্রিল সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর তাকে রোমের ব্যাসিলিকা ডি সান্তা মারিয়া ম্যাগিওরে সমাহিত করা হয়। পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পও।

ভ্যাটিকানে কার্ডিনালরা সমবেত হয়ে নির্ধারণ কররেন ক্যাথলিক চার্চের ২৬৭তম ধর্মগুরু। এক প্রতিবেদন মতে, ২৯ এপ্রিল ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, পরবর্তী পোপ হিসেবে তিনি কাকে দেখতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্পের মজার উত্তর, আমি নিজেই পরবর্তী পোপ হতে চাই। এটা এখন আমার এক নম্বর পছন্দ।

রসিকতা করার পরপরই অবশ্য কে আসলে এই দায়িত্ব পেতে পারেন, সে বিষয়ে নিজের মতামত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি কে হওয়া উচিত, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার কোনো পছন্দ নেই। তবে আমাকে বলতেই হচ্ছে, আমাদের একজন কার্ডিনাল আছেন যিনি নিউইয়র্কের একটি এলাকা থেকে এসেছেন। তিনি খুবই ভালো। দেখা যাক কী হয়।’

মন্তব্য

p
উপরে