ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটিও। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের জন্য এই মন্দির নির্মাণে অর্থ দান করেছে তারা।
অযোধ্যার ফায়জাবাদের শহর অযোধ্যার রামভবনে নির্মিত হচ্ছে রামমন্দির। এটি নির্মাণে রোববার অর্থ সহায়তা জমা দেয় সেখানকার মুসলিম কমিউনিটি।
বিষয়টি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালকে (এএনআই) নিশ্চিত করেছেন অযোধ্যার মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের সদস্য হাজি সাঈদ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘রাম সবার এবং রামমন্দিরও সবার। আমরা প্রচুরসংখ্যক মুসলমান এই মন্দির নির্মাণে সহযোগিতা করব।’
হিন্দুধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস, তাদের ধর্মের অন্যতম অবতার রাম ছিলেন অযোধ্যার রাজা। এই অবতারের নামে সেখানে একটি মন্দির ছিল।
একই মত ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ববিদদেরও। তাদের মতে, ১ থেকে ১১০০ শতাব্দীর মধ্যে অযোধ্যায় নির্মিত হয় রামমন্দির। কিন্তু ষোড়শ শতাব্দীর শুরুর দিকে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর দিল্লির মসনদে বসলে এলোমেলো হয়ে যায় সব। অযোধ্যাতে রামমন্দির ভেঙে সেখানে করা হয় বাবরি মসজিদ।
গত শতকের ৮০-এর দশকে বাবরি মসজিদ ও রামমন্দির ছিল ভারতীয় রাজনীতির উত্তপ্ত ইস্যু। এসবের জেরে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেয় একদল উগ্রবাদী হিন্দুধর্মাবলম্বী। এর জেরে ভারতজুড়ে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতায় প্রাণ হারায় ৩ হাজারের বেশি মানুষ।
বাবরি মসজিদের জায়গায় রামের নামে আবার মন্দির নির্মাণে দাবি জানিয়ে আসছিল হিন্দুধর্মাবলম্বীরা। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি গতি পায়।
২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বাবরি মসজিদ ও রামমন্দির ইস্যু নিয়ে করা ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায় দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়, বিতর্কিত ওই পৌনে তিন একর জায়গায় একটি ট্রাস্টের অধীনে রামের নামে নির্মিত হবে মন্দির। আর অযোধ্যাতেই কোনো জায়গায় মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জায়গার ব্যবস্থা করে দেবে সরকার।
আদালতের রায় মেনে রামমন্দির নির্মাণে এরই মধ্যে গঠন করা হয়েছে ট্রাস্ট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এগিয়ে চলছে মন্দির নির্মাণের কাজ।
আর অযোধ্যার ধানিপুর গ্রামে নির্মিত হচ্ছে বিশাল এক মসজিদ। এরই মধ্যে উন্মোচন করা হয়েছে নৈসর্গিক এক মসজিদের নকশা।
মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের সদস্য হাজি সাঈদ মনে করেন, বাবর ও মুঘলরা অযোধ্যায় যা করেছিল, তা সঠিক ছিল না। ভগবান রাম ও তার শিক্ষা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
তিনি বলেন, ‘ভগবান রাম আমাদের হিন্দুস্তানের ছিলেন এবং আমরাও এই জাতির অন্তর্ভুক্ত। ভগবান রামের বংশ ধরলে আমরা সবাই এক।
‘আমরা ইরাক, ইরান বা তুরস্ক থেকে আসিনি। হিন্দুরা আমাদের ভাই। ভগবান রাম আমাদের পূর্বপুরুষ এবং তার প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা আছে।’
রামমন্দিরের জন্য মুসলিম কমিউনিটির অর্থপ্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা রামভবন প্রেসিডেন্ট শক্তি সিং এএনআইকে বলেন, ‘আজ “নিধি সমর্পণ অভিযান” এর মাধ্যমে ফায়জাবাদের মুসলিম ভাইয়েরা অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য ৫ হাজার ১০০ রুপি দান করেছেন। তারা আমাদের আরও বলেছেন, মন্দির নির্মাণে ভবিষ্যতে তাদের আরও অংশ্রহণ থাকবে।”’
নিধি সমর্পণ অভিযান অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণে তহবিল সংগ্রহের একটি প্ল্যাটফর্ম। শক্তি সিং জানালেন, এই উদ্যোগে কেবল দেশে নয়, বিশ্বেও শান্তি ও ঐক্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মুসলিম কমিউনিটির শাবানা বেগম নামে এক নারী জানালেন, রামমন্দির নির্মাণে অর্থ দিয়ে অবদান রাখছেন তিনিও। তার চাওয়া সহিংসতা শেষ হোক, শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।
অর্থ সহায়তা দিয়েছেন স্থানীয় সাঈদ মোহাম্মদ ইশতিয়াক মহিলা মহাবিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ড. সাঈদ হাফিজও। তিনি বলেন, ‘এই ভালো কাজের জন্য দান করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত। মন্দির নির্মাণে অবদান রাখতে মুসলমান ভাইদের এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাতে চাই।’
প্রায় দুই দশকের দাম্পত্য জীবনের করুণ পরিণতি- সন্দেহ এবং টাকা আত্মসাতের ভয় থেকেই ঘটেছে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে মরদেহ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন মো. নজরুল ইসলাম (৫৯)। সন্তানদের ফুফুর বাসায় রেখে আত্মগোপনে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি তার। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশাল থানাধীন নবাবপুর রোড এলাকা থেকে কলাবাগান থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যে বাসার ওয়্যারড্রব থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো দা।
গতকাল বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।
তিনি বলেন, গত ১২ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে নজরুল ইসলাম কলাবাগানে একটি ফ্ল্যাটে ফিরে দেখেন ঘরের দরজার তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। স্ত্রী তাসলিমা আক্তারের প্রতি দীর্ঘদিনের সন্দেহ- পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ও তার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার ভয় তাকে উত্তেজিত করে। রাত ১২টার দিকে ঘুমন্ত স্ত্রীর মাথায় ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করেন তিনি। এরপর মরদেহ গামছা দিয়ে বেঁধে, বিছানার চাদর ও ওড়না দিয়ে মুড়িয়ে বাসার ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন।
পরে রক্তমাখা তোশক উল্টিয়ে, মেঝে পরিষ্কার করে এবং নিজের জামাকাপড় ধুয়ে আলামত গোপনের চেষ্টা করেন। পরদিন সকালে নজরুল ইসলাম তার বড় মেয়ে নাজনীন আক্তারকে জানায়, তাদের মা অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়েছে। এ সময় নাজনীন আক্তার ঘরের দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পায়। এরপর নজরুল ইসলাম তার দুই মেয়েকে নানার বাড়ি রেখে আসার কথা বলে রাজধানীর আদাবরে তাদের ফুফুর বাসায় রেখে নিজের প্রাইভেটকারে করে পালিয়ে যান।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, এ বিষয়ে সন্দেহ হলে নিহত নারীর ছোট ভাই নাঈম হোসেন ও দুই মেয়ে গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কলাবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি টিম নিহত নারীর ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত হয়ে ফ্ল্যাটের দরজার তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ঘরের মধ্যে রাখা ডিপ ফ্রিজ খুলে ফ্রিজের ওপর থেকে মাছ-মাংস সরালে ফ্রিজের ভেতর চাদর দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় তাসলিমা আক্তারের মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ।
তিনি বলেন, নিহতের পরিবারের লোকজন ও সিআইডির ক্রাইম সিন টিমের সহায়তায় কলাবাগান থানা পুলিশ ডিপ ফ্রিজের ভেতর থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওইদিন রাতে তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলাটি রুজুর পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় কলাবাগান থানা পুলিশ নিহতের স্বামী মো. নজরুল ইসলামের অবস্থান শনাক্ত করে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার নিজ বাসার ওয়্যারড্রব থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার নজরুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিসি মাসুদ আলম জানান, নজরুল ইসলাম ও তাসলিমা আক্তার দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্য কলহ চলছিল। নজরুল ইসলাম অবৈধ সম্পর্কের সন্দেহে স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। এমনকি সে ভয় পেতো যে স্ত্রী তার সম্পত্তি ও ব্যাংকে রাখা অর্থ হাতিয়ে নেবে। এই সন্দেহ ও নিয়ন্ত্রণের মানসিকতা থেকেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রমনা বিভাগের ডিসি বলেন, ঘাতক স্বামীর একটি অ্যাকাউন্টে ফিক্সড ডিপোজিট করা ছিল এক কোটি টাকা। নমিনি ছিলেন তার স্ত্রী। আরেকটি অ্যাকাউন্টে ৪০ লাখ টাকা ছিল সেটাও নমিনি স্ত্রীর নামে। এই টাকা নেওয়ার জন্য নজরুল ইসলামকে তার স্ত্রী যে-কোনো সময় মেরে ফেলতে পারে বলে ধারণা ছিল গ্রেপ্তার নজরুল ইসলামের।
২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার বাদী হিসেবে রয়েছেন দুদকের উপপরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম।
দুদক জানায়, আসামি মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৫শ’ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদানসহ মোট ২০ কোটি ৬৯ লাখ ২৫৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগ-দখলে রেখেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, আসামি দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অবৈধ অর্থের প্রকৃতি গোপন করার অসৎ উদ্দেশে ৬৮ একর জমির বায়না অর্থ পরিশোধ করে নিজ নামে বায়না দলিল সম্পাদন করেন। পরবর্তীতে তিনি তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এভালন এস্টেট লিমিটেড-এর নামে জমিটি ক্রয় করে ওই অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট একসঙ্গে করার বিষয়ে আবারও জোরালো মত দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারণ গণভোট আগে হলে জাতীয় নির্বাচনে বিলম্ব হবে। আর জনগণের নির্বাচিত সরকার দ্রুত না এলে সংকট আরো ঘনীভূত হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
তিনি বলেন, আমি মনে করি যে যারা গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন, তারা সবাই এমন এক জায়গায় উপনীত হবেন যাতে আমাদের পরবর্তী গণতন্ত্রের অভিযাত্রার পথে আমাদের যেন বিঘ্ন না ঘটে। তা না হলে কালো ঘোড়া প্রবেশ করতে পারে, কালো ঘোড়া ঢুকে যেতে পারে।
রিজভী বলেন, উন্নত দেশ দীর্ঘদিনের গণতন্ত্র চর্চার দেশেও এখন কথা উঠেছে, এই পদ্ধতিতে (পিআর) জনমতের ট্রু রিফ্লেকশন হয় না। এ নিয়ে সেইসব দেশে আলাপ-আলোচনা, বির্তক চলছে। আপনি জানেন যে, জাপান গণতন্ত্রের দিক থেকে অতি উন্নত একটি দেশ এবং সেখানেও ৩৭ শতাংশ পিআর পদ্ধতি চালু আছে। যেখানে সারাবিশ্বেই পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে, কোথাও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়িত হয়নি, সেখানে হঠাৎ করে আমাদের এখানে কেনো চালু করতে চাইবেন?
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে আপনি হঠাৎ করে পিআরের কথা বলেন, এতে জনমনে বিভ্রান্ত তৈরি করবে। আমি এ পর্যন্ত যত জরিপ দেখেছি, বিশেষ করে গণমাধ্যমে- সেখানে অধিকাংশ মানুষের আনুপাতিক হারে ভোট পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। অনেকেই কনফিউজড অবস্থায় আছেন।
বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশ যেগুলো অতি উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ব্রিটেন, আমেরিকা যদি আমরা বলি বা আরও অন্য দেশে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে পদ্ধতিটা চালু আছে- সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দেওয়া। আমাদের এখানে কী এমন ঘটনা ঘটলো যে পিআর উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের মডেল? এটা আমার মনে হয়, অবান্তর কথা তারা (জামায়াতে ইসলামী) বলছেন। এটা বলে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করছেন অথবা তাদের অন্য কোনো মাস্টার প্ল্যান আছে কি না আমি জানি না।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) জন্য নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনওদের এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত আজমেরী হক এর স্বাক্ষরিত চিঠি নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে জানানো হয়, আগামী ২০ অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করা হবে। যা চলবে আগামী ১১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ (সম্ভাব্য) পর্যন্ত। প্রশিক্ষণটি হবে ১২টি সেশনে দুই দিনব্যাপী। দুটি করে ব্যাচে মোট ৫০ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (প্রতি ব্যাচে ২৫ জন) অংশগ্রহণ করবেন।
চিঠিতে সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকায় ব্যাচভিত্তিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরকে নির্দেশক্রমে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মকর্তারা নির্বাচন ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবেন।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে দুরারোগ্য ব্রেইন স্টোক রোগে আক্রান্ত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু মুক্ত শর্মা (১১) বাঁচতে চায়।
সে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের হতদরিদ্র দীপক শর্মা ও মুক্তা রাণী শর্মা দম্পতির ছেলে এবং রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। অসুস্থতার কারণে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
উন্নত চিকিৎসার অভাবে যত দিন যাচ্ছে স্কুল ছাত্র শিশু মুক্ত শর্মা’র অসুস্থতা ততই বেড়ে যাচ্ছে। দুর্বল হয়ে পড়ছে সে। এভাবে সময় পার হলে এ সুন্দর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করবে এমন আশঙ্কা করছে মুক্ত শর্মা’র পরিবার। মুক্তা শর্মা’র বাবা সেলুন ব্যবসায়ী দীপক শর্মা আবেগাপ্লুত কন্ঠে জানান, ২০২৪ সালে ছেলের ব্রেইন স্টোক হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নিউরোলজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডা. সুকুমার মজুমদারের চিকিৎসা করেছি। তার পরামর্শ নিয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের স্টোক এন্ড ইন্টারভেনশনালহেড অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি দে’র চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুয়ায়ী, মুক্ত শর্মাকে বাঁচাতে হলে দ্রত ব্রেইন অপারেশন করতে হবে। এতে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
মুক্ত শর্মা’র বাবা-মা কেঁদে কেঁদে বলেন, ছেলের চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে নি:স্ব হয়ে গেছি। ভিটেবাড়ীর জমিটুকুও বিক্রি করে তার চিকিৎসা খরচ চালিয়েছি। পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করানোর মত আর কোন সহায় সম্বল নাই। শিশুটির বাবা-মা সন্তানের এমন অবস্থায় বাকরুদ্ধ। চোখে মুখে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখছেন না। তার আপন সন্তানের চিকিৎসায় এত টাকা কোথায় পাবে তা নিয়ে চিন্তিত। কে দেবে এতটাকা, তাও বলতে পারছেন না।
এমতাবস্থায় ফুট ফুটে ১১ বছর বয়সী এ শিশুটির জীবন বাঁচাতে পরিবারের পক্ষ থেকে সমাজের বিত্তবান, দানশীল,বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা সহ দেশ-বিদেশের স্ব-হৃদয়বান মানুষদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
রোগাক্রান্ত শিশু মুক্ত শর্মা’র আকুতি, আপনারা আমাকে বাঁচাতে সাহায্য করুন, আমি বাঁচতে চাই। আমি ভালো হয়ে স্কুলে পড়তে যাবো।
শিশু মুক্ত শর্মাকে চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে যোগাযোগ : মুক্ত’র পিতা দীপক শর্মা: ০১৭৬৪৯৭০৪৭৮ (নগদ/বিকাশ)।
রাজবাড়ীর পাংশায় জুয়েলার্সের কারখানায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পাংশা পৌরশহরের স্টেশন রোডের কাজী সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় অবস্থিত ‘সিকদার জুয়েলার্সের কারখানা’তে বুধবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে এই চুরির ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে
কারখানার কারিগররা প্রতিদিনের ন্যায় কাজ শেষ করে কারখানা বন্ধ করে চলে যান। গভীর রাতে কোনো একসময় সংঘবদ্ধ চোরের দল জানালার গ্রীল কেটে কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে এ চুরি সংঘটিত করে।
বৃহস্পতিবার সকালে কারিগররা দোকান খুলে দেখেন, ড্রয়ারগুলো ভাঙা ও কারখানার সবকিছু এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে দোকান মালিক সঞ্জীব সিকদার পাংশা মডেল থানায় জানান।
সিকদার জুয়েলার্সের মালিক সঞ্জীব সিকদার বলেন, "কারিগররা কাজ শেষ করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কারখানা বন্ধ করে চলে যায়। সকালে এসে কারখানা খুলে দেখে সবকিছু এলোমেলো ও কারিগরদের ড্রয়ার ভাঙা।" তিনি আরও জানান, "কারখানা থেকে প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণ ও ৩০ থেকে ৩৫ ভরি রূপা চুরি হয়েছে।"
একই রাতে শহরের অনুপ দত্ত নিউ মার্কেটের ছাদে অবস্থিত মৌচাক রেস্টুরেন্টেও চুরির ঘটনা ঘটে। রেস্টুরেন্টের মালিক নাজমুল আলম বলেন, "রাতে আমার দোকানের জানালা দিয়ে চোর ভিতরে ঢুকে প্রায় ২ হাজার ২ শত টাকার সিগারেট নিয়ে গেছে।"
খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার এবং পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার দেবব্রত সরকার বলেন, “সিকদার জুয়েলার্সের একটি কারখানায় গত রাতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং তদন্ত শুরু করেছি। বাজারের বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারব।”
এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করে বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারকে সবাই ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে- যেন নির্বাচন না হয়; ভোট নিয়ে কোনো আপোষ নয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের দানার হাটে এক সভাতে ইউনিয়নবাসীর সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ভোট দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে নতুন করে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছে। সামনের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। বিএনপি ৩১দফায় সংস্কারের প্রস্তাব করেছে। সরকার যা এখন করছে।
তিনি আরও বলোন, কয়েকটা দল পিআর নিয়ে চিৎকার করছে। পিআর বোঝেনা কেউ। ভোট হবে এক ব্যক্তি এক ভোট। যা মানুষ বোঝেনা তা কেনো হবে? সবাই একমত হলে বিএনপি চিন্তা করে দেখবে। দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা হবে নির্বাচিত সংসদে।
মন্তব্য