× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ স্মরণ
google_news print-icon

কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ স্মরণ

কলকাতায়-বঙ্গবন্ধুর-ঐতিহাসিক-ভাষণ-স্মরণ
কলকাতার ব্রিগেডে দুই বাংলার শিল্পীরা পরিবেশন করেন বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার ওই ভাষণ স্মরণে আরও একটি অভিনব মুহূর্ত তৈরি করা হয় শনিবার। 

১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণকে স্মরণ করল কলকাতা। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উভয় দেশের বিশিষ্টজনেরা।

ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার ওই ভাষণের স্মরণে আরও একটি অভিনব মুহূর্ত তৈরি করা হলো শনিবার।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকার জন্য যারা মৈত্রী সম্মাননা পেয়েছিলেন, তাদের আবার সম্মান জানানো হলো এ অনুষ্ঠানে।

স্মারক পেলেন জাদুকর পিসি সরকার, সাংবাদিক মানস ঘোষ, সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত, পঙ্কজ সাহা, দিলীপ চক্রবর্তী, মানবাধিকারকর্মী উৎপলা মিশ্রা, অধ্যাপক জিষ্ণু দে ও তার স্ত্রী মীরা দে, প্রণবরঞ্জন রায় এবং ভাষাবিদ পবিত্র সরকার।

এ ছাড়াও কালজয়ী কবি গোবিন্দ হালদার, কালজয়ী গায়ক মান্না দে, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ও সাবেক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ রায়ের মতো মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রাপকদের সম্মান জানানো হয়।

এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমার তথ্যমতে সেদিন ব্রিগেডের ঐতিহাসিক জনসমাবেশে ১৫ লাখ মানুষ ছিলেন। আমি মনে করি, সেদিনের ব্রিগেডে মুজিবের সাথে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মিলনের মধ্যে দিয়ে আমাদের বিজয় উৎসব সম্পন্ন হয়েছিল।’

কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ স্মরণ
বঙ্গবন্ধুর কলকাতা ব্রিগেডে ঐতিহাসিক জনসভা স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মামুদ, পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জিসহ বিশিষ্টজনেরা।

সুব্রত মুখার্জি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু পশ্চিমবঙ্গের কাছের মানুষ ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কলকাতার ছাত্রাবস্থা থেকে বর্ণময় জীবনের নানান দিক তুলে ধরেন।

দিনটিকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘তিনটের সময় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইন্দিরা গান্ধী এই ব্রিগেডে আসেন। আমি তখন মঞ্চের নিচে ছিলাম। এটা আজ পর্যন্ত আমার দেখা ব্রিগেডে সর্বকালের সেরা জনসমাবেশ।’

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান, কক্সবাজার থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাইমুন সারোয়ার কমল।

কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সন্তোষ শর্মা, সুভাষ সিংহ রায় এবং দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) শাবান মাহমুদ।

অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায় ও স্বপ্না দে। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন দুই বাংলার শিল্পীরা।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Obaidul Karim is the leader of irregularities in the countrys financial sector

দেশের আর্থিক খাতে অনিয়মের শিরোমণি ওবায়দুল করিম

দেশের আর্থিক খাতে অনিয়মের শিরোমণি ওবায়দুল করিম ওরিয়ন গ্রুপের কর্ণধার বিতর্কিত ব্যবসায়ী ওবায়দুল করিম। ছবি: সংগৃহীত
ওরিয়ন গ্রুপের কর্ণধার ওবায়দুল করিম বিধি ভেঙে অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তালিকার দ্বিতীয় নামটি ছিল এই বিতর্কিত ব্যবসায়ীর। ২০২১ সালের শীর্ষ ঋণখেলাপিদের তালিকায়ও দ্বিতীয় নামটি তার। ৪৮ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়েও থেকে গেছেন বহালতবিয়তে। অবশেষে তার ১০৬ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ বুধবার ওবায়দুল করিমসহ তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ঋণ জালিয়াতি, প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, পাচার, অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনসহ নানা অপরাধের অভিযোগে এক ডজনেরও বেশি মামলা কাঁধে নিয়ে বছরের পর বছর বহালতবিয়তে থেকে গেছেন ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম ও তার পরিবাবের সদস্যরা।

দেশের আর্থিক খাতে অনিয়মের শিরোমণি এই বিতর্কিত ব্যবসায়ী বিধি ভেঙে অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তালিকার দ্বিতীয় নামটি ছিল এই বিতর্কিত ব্যবসায়ীর। ২০২১ সালের শীর্ষ ঋণখেলাপিদের তালিকায়ও দ্বিতীয় নামটি তার।

অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার এবং অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের পৃথক তিন মামলায় ৪৮ বছরের কারাদণ্ড কাঁধে নিয়েও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন এই বিতর্কিত ব্যবসায়ী।

অবশেষে তার ১০৬ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সবশেষ বুধবার ওবায়দুল করিমসহ তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দেশের আর্থিক খাতে অনিয়মের শিরোমণি ওবায়দুল করিম

আর্থিক খাতে নানামুখী অপকর্মে সিদ্ধহস্ত ওবায়দুল করিম সাজা থেকে বাঁচতে মামলার নথি গায়েব ও শুনানি পেছানোর কূটকৌশলে পার করেছেন ১৬ বছর। সাজা ঘোষণার তিনটিসহ তার বিরুদ্ধে মোট ১৪টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের ৪৮৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১১টি মামলা হয়। ২০০৭ সালে করা এসব মামলার বিচারকাজে এখন স্থবিরতা বিরাজ করছে। তবে এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ওবায়দুল করিম ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। সে সময় যৌথ বাহিনীর গঠিত দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্সের অভিযানের সময় গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তবে দুর্নীতির মামলা ও সাজা থেকে রক্ষা পাননি। তার অনুপস্থিতিতে বিশেষ আদালতে রায় ঘোষণা হয়। একটিতে যাবজ্জীবনসহ তিনটি মামলায় তার অন্তত ৪৮ বছর কারাদণ্ড হয়। এর মধ্যে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদণ্ড দেওয়া হয় ও আত্মসাতের সমপরিমাণ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়।

২ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং পাচারের সমপরিমাণ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়। অবৈধ উপায়ে ৫০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জরিমানা করা হয় ১০ লাখ টাকা। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়।

অবৈধ উপায়ে ৫২ কোটি ৯২ লাখ টাকা অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৮ অক্টোবর রমনা থানায় মামলাটি করেন দুদকের উপপরিচালক আবদুল করিম। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৫ জুন এক রায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে ১০ বছর এবং তথ্য গোপনের দায়ে ৩ বছরসহ মোট ১৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক খন্দকার কামাল উজ-জামান। রায়ে ৫২ কোটি ৯০ লাখ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়। রায়ে বলা হয়, ওবায়দুল করিম পলাতক থাকায় তিনি যেদিন আত্মসমর্পণ করবেন বা গ্রেপ্তার হবেন, সে দিন থেকে সাজার মেয়াদ শুরু হবে। কিন্তু ওবায়দুল করিম রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট শুনানি শেষে রায় স্থগিত করেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে ওবায়দুল করিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এ মামলায় বিচারিক আদালতে মামলার নথি খুঁজে না পাওয়ায় বিচারকাজে স্থবিরতা বিরাজ করছে।

এর মধ্যে ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা শীর্ষ ঋণখেলাপিদের তালিকায় উঠে আসে ওবায়দুল করিমের নাম। সে সময় তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা ঠুকেই বাঁচার চেষ্টা করেন তিনি।

বিধি ভেঙে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ

বিধি লঙ্ঘন করে ওরিয়ন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন পাওয়ার প্রকল্পের জন্য ১০ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত তিন ব্যাংক অগ্রণী, জনতা ও রূপালী। এ ক্ষেত্রে অন্তত দুটি নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে এবং একটিতে ব্যাংক কোম্পানি আইন শিথিল করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক তিনটির প্রস্তাবিত ওই ঋণের অনুমোদন পায় প্রতিষ্ঠানটি।

সিন্ডিকেট ফাইন্যান্সিং বা অর্থায়নের মাধ্যমে সম্প্রতি ওই ঋণের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সমস্যা জর্জরিত জনতা ব্যাংক এ ঋণের সিংহভাগ অর্থাৎ ৫ হাজার ৭৮ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দিয়েছে।

রূপালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এ ঋণ নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও ঋণটি বিতরণের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে, কিন্তু ব্যাংকে তারল্য সংকটের কারণে এ ঋণ বিতরণে দেরি হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ওবায়দুল করিমের মালিকানাধীন ওরিয়ন গ্রুপের বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ৫৪ হাজার ৬০৬ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অন্তত হাজার কোটি টাকা।

ঋণের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ওরিয়ন গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বেলহাসা একম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম ও তার ছেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান ওবায়দুল করিম একটি ব্যাংক থেকে ১৬৬ কোটি ৩০ লাখ ২১ হাজার ৫০৮ টাকা ঋণ নেন। কিন্তু কোম্পানি তো দূরের কথা, টিআইএন নম্বরেরও খোঁজ মেলেনি। বেলহাসা একম জেভি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম, এমডি সালমান ওবায়দুল করিম ও স্পন্সর পরিচালক মাজেদ আহম্মেদ সাঈফের নামে ঋণের পরিমাণ ৭৮ কোটি ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪৮ টাকা। ওবায়দুল করিম আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেডের নামে ৫১ কোটি ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৮৬৮ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৭১৭ টাকা পরিশোধ করেননি। এমনকি এই প্রতিষ্ঠানের মালিকানা বা অংশীদারত্বের কোনো বৈধ কাগজ পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

১০৬ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করার নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের কাছ থেকে বারবার সময় নিয়েও ঋণ পরিশোধ করেনি ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। ফলে প্রতিষ্ঠানটির ১০৬ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হিসেবে দেখাতে ব্যাংকটিকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুসারে, সোনালী ব্যাংককে ২২ আগস্টের মধ্যে ঋণের যথাযথ শ্রেণিবিভাগ করে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। এতে ওরিয়ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের ১০৬ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হিসেবে দেখানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। কোম্পানিটির বকেয়া ঋণ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত খারাপ ঋণ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ ছিল। তখন পর্যন্ত কোম্পানিটি চারটি কিস্তি পরিশোধ করতে পারেনি।

জানা গেছে, ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তির মূল অর্থের পরিমাণ ৩০ কোটি টাকা এবং ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা সুদ বাবদ বকেয়া ছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ অনুমতির ওপর ভিত্তি করে এতদিন এই ঋণ খেলাপি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়নি। সম্প্রতি সোনালী ব্যাংককে দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে কিস্তি বাকি থাকায় কোম্পানিটির ঋণ খেলাপি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করতে বলা হয়েছে।

ব্যবসা সম্প্রসারণের নামে প্রায় দুই দশক আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে টার্গেট করে ওরিয়ন গ্রুপ। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ভেঙে ৪০ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেওয়ার অপতৎপরতাও চালায় গ্রুপটি। সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণ ভাগিয়েও নেয়। গত জুন শেষে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে গ্রুপটির নেওয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। যার বড় একটি অংশই নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করেনি। প্রতিষ্ঠানের বাইরে গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিমের গ্যারান্টার হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণও হাজার কোটি টাকার বেশি। যার একটা অংশ খেলাপির হলেও প্রভাব খাটিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করে তালিকা থেকে নাম কাটিয়ে নেন তিনি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের মেয়াদও বারবার বাড়ানো হয়।

সম্প্রতি একটি প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের প্রায় অর্ধেক রয়েছে ওরিয়ন গ্রুপসহ তিনটি গ্রুপের পকেটে। এতে বলা হয়, ব্যাংকটি থেকে বেক্সিমকো, এস আলম এবং ওরিয়ন গ্রুপের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকের জনতা ভবন করপোরেট শাখার ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণের বড় অংশ রয়েছে ওরিয়ন গ্রুপের পকেটে।

এ ছাড়া গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষের দিকে (৬ মে) রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকে ১ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার আরেকটি ঋণ প্রস্তাব করা হয় গ্রুপটির ওরিয়ন রিনিউয়েবলস মুন্সীগঞ্জ লিমিটেডের নামে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের জামানত বা সিকিউরিটি মর্টগেজ হিসেবে যে সম্পদ দেখানো হয়েছে তা অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়। সে সময় জামানতের সম্পদমূল্য ৫৪০ কোটি টাকা দেখানো হলেও তা সর্বোচ্চ ১৮০ কোটি টাকা হবে। এভাবে জামানতে ভুল তথ্য দিয়েও ঋণ ভাগিয়ে নেওয়ার আশ্রয় নিয়েছে গ্রুপটি।

গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের তফসিলভুক্ত ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নেওয়া ব্যবসায়ী গ্রুপ ওরিয়নের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ৮২০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর বাইরে ননফান্ডেড ঋণ রয়েছে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা। গ্রুপটির মোট ১২৪টি কোম্পানির মধ্যে সচল থাকা ২২টির ব্যাংক হিসাবের লেনদেন পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, গ্রুপের মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম এসব প্রতিষ্ঠানের বাইরে নিজের ব্যক্তিগত গ্যারান্টার হিসেবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১ হাজার ১২৯ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে ৮ কোটি টাকার ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে ঋণ খেলাপি হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করে দেয়। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ খেলাপি তালিকা থেকে নাম কাটিয়ে নেন তিনি।

২০২০ সালে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ওরিয়ন গ্রুপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ভেঙে টাকা উত্তোলনের অপতৎপরতা চালানোর অভিযোগ তোলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ভেঙে খাওয়ার টার্গেটে নামে গ্রুপটি। এরপর তারা হাজার হাজার কোটি টাকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের জন্য ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই থেকে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায়। কোম্পানিটি ঋণ হিসাবে ৯০৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার নেওয়ার আবেদনও করে। টাকার অঙ্কে হিসাব করলে এই ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্টভাবে কোনো একটি ব্যাংক থেকে একসঙ্গে এত টাকা ঋণ পাওয়ার নজির বাংলাদেশে নেই।

গ্রুপটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম ২০০৭ সালে ব্যাংক থেকে ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের এক মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বেশ আলোচনায় আসে। তবে তিনি সেই মামলার নথি আদালত থেকে গায়েব করে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান। নথি হারিয়ে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ মামলাটির পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়া থমকে যায়। ফলে অন্যতম আসামি ওবায়দুল করিমসহ দোষীরা বহাল তবিয়তে থেকে যান। রহস্যজনক কারণে দীর্ঘ বছরে মামলাটি নিয়ে দায়িত্বশীলদের কোনো নজরদারিও নেই।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ না করেই ২০০৮ সালে ওই রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। রুল শুনানি শেষে ওই বছরই বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আসামি ওয়াবদুল করিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

নিয়মানুসারে মামলার মূল নথিটি উচ্চ আদালত থেকে বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়। ২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর সেই নথিপত্র গ্রহণ করেন বিচারিক আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এরপর থেকে এ মামলার কার্যক্রম আর অগ্রসর হয়নি। মামলার মূল নথি খুঁজে না পাওয়ায় বর্তমানে ‘মামলা ও আসামিদের সর্বশেষ অবস্থা’ সম্পর্কে কেউই বলতে পারছেন না।

ওবায়দুল করিম পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ

আর্থিক খাতে অনিয়মের শিরোমণি এবং জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ব্যাপকভাবে সমালোচিত ওরিয়ন গ্রুপের কর্ণধার ওবায়দুল করিমের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জন ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলেছে। সন্ধ্যায় বিএফআইইউর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়, হিসাব জব্দ করা ব্যক্তিদের নিজস্ব ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব লেনদেন বন্ধ থাক‌বে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবের মাধ্যমে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না তারা। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এ সময় বাড়ানো হবে। লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালার সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে। এতে ওবায়দুল করিম ও তার স্ত্রী আরজুদা করিম, ছেলে সালমান ওবায়দুল করিম, মেহেদি হাসান ও মেয়ে জারিন করিমের নামসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রেজাউল করিমের নামসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যও দেওয়া আছে।

এ ছাড়া চিঠিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওপরে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য (পিতা, মাতা, স্বামী/স্ত্রী, পুত্র/কন্যা ও অন্যান্য) এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সকল হিসাবের কেওয়াইসি, হিসাব খোলার ফরম ও শুরু থেকে হালনাগাদ হিসাব বিবরণীসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় তথ্য আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউর কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।

আর্থিক অনিয়মের বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ওরিয়ন গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন:
ওরিয়নের ওবায়দুল করিম ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The land port of Teknaf has stopped operations as bullets are coming from Myanmar

মিয়ানমার থেকে গুলি এসে পড়ছে টেকনাফে, স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ

মিয়ানমার থেকে গুলি এসে পড়ছে টেকনাফে, স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ বুধবার মিয়ানমার থেকে আসা গুলিতে টেকনাফ স্থলবন্দরের ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ছবি: নিউজবাংলা
টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন জানান, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা থেকে পর পর তিনটি গুলি এসে পড়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে। একটি গুলি স্থলবন্দরের অফিসে এসে পড়লে অফিসের কাচ ভেঙে যায়। দ্বিতীয় গুলি এসে পড়ে স্থলবন্দরের মালামাল বহনকারী ট্রাকে। অপরটি নারিকেল গাছে এসে লাগে।

সংঘাতপূর্ণ মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে ছোড়া গুলি এসে পড়ছে টেকনাফ স্থলবন্দরে। এ অবস্থায় স্থলবন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি স্থলবন্দরে এসে পড়ে। এতে স্থলবন্দরের অফিস ভবনের জানালা ও বন্দরে অবস্থান করা ট্রাকের কাচ ভেঙে গেছে। এ অবস্থায় স্থলবন্দরে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্থলবন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিক মো. নাজির বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে মালামাল নিয়ে একটি ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দর ঘাটে পৌঁছায়। এই ট্রলার থেকে মালামাল খালাসের সময় মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি এসে পড়ে। এতে শ্রমিকরা ভয়ে পালিয়ে যান। এখন বন্দরজুড়ে আতঙ্ক।’

মিয়ানমার থেকে গুলি এসে পড়ছে টেকনাফে, স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ
মিয়ানমার থেকে বুধবার দুপুরে টেকনাফ স্থলবন্দরে এসে পড়া দুটি গুলি। ছবি: নিউজবাংলা

টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন জানান, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা থেকে পর পর তিনটি গুলি এসে পড়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে। একটি গুলি স্থলবন্দরের অফিসে এসে পড়লে অফিসের কাচ ভেঙে যায়। দ্বিতীয় গুলি এসে পড়ে স্থলবন্দরের মালামাল বহনকারী ট্রাকে। অপরটি নারিকেল গাছে এসে লাগে।

টেকনাফ স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া দুটি গুলি আমাদের অফিসে এসে পড়ে। এ ঘটনায় বন্দরের শ্রমিকরা কাজ না করে চলে যান। ফলে মিয়ানমার থেকে আসা ২৪ হাজার ব্যাগের একটি বাণিজ্যিক ট্রলারের মালামাল খালাস বন্ধ রয়েছে।’

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্ত থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে তিনটি গুলি এসে পড়েছে। তবে কেউ হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কারা গুলি করেছে সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে দুটি গুলি এসে টেকনাফ বন্দরে পড়ে। গুলিগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।’

স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমারের ওপারে তোতারদিয়া দ্বীপে কয়েকদিন ধরে দু’পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। এ কারণে গত কয়েকদিন ধরে টেকনাফ স্থলবন্দরসহ সীমান্ত এলাকায় গুলি এসে পড়ছে।

আরও পড়ুন:
রাখাইনে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে জান্তা সরকারের নৌঘাঁটি

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Orions Obaidul Karim and his familys bank accounts were seized

ওরিয়নের ওবায়দুল করিম ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ

ওরিয়নের ওবায়দুল করিম ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ ওরিয়ন গ্রুপের কর্ণধার ওবায়দুল করিম। কোলাজ: নিউজবাংলা
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া বিএফআইইউ’র চিঠিতে ওবায়দুল করিম ও তার স্ত্রী আরজুদা করিম, ছেলে সালমান ওবায়দুল করিম ও মেহেদি হাসান এবং মেয়ে জারিন করিমের নামসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেয়া হয়েছে।

ওরিয়ন গ্রুপের কর্ণধার ওবায়দুল করিমের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জন ও তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে।

একই দিন সন্ধ্যায় বিএফআইইউ’র সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ব্যাংক হিসাব জব্দ করা সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব ধরনের লেনদেন বন্ধ থাক‌বে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না। লেনদেন স্থগিত করার এই সময়সীমা প্রয়োজনে বাড়ানো হবে।

বিএফআইইউ’র চিঠিতে বলা হয়েছে, লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দেয়া চিঠিতে ওবায়দুল করিম ও তার স্ত্রী আরজুদা করিম, ছেলে সালমান ওবায়দুল করিম ও মেহেদি হাসান এবং মেয়ে জারিন করিমের নামসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেয়া হয়েছে। এ ছড়া রেজাউল করিমের নামসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যও জানিয়েছে বিএএফআইইউ।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাব-সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন- হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউর কাছে পাঠাতে হবে।

আরও পড়ুন:
দীপু মনি, জাহিদ মালেক ও শেখ হেলালসহ ১৩ জনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The 9th Five Year Plan will not be implemented by the Interim Government

নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে না

নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে না বুধবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংকালে বক্তব্য দেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা আর করছি না। কবে উন্নত দেশ হবে, কবে মাথাপিছু আয় কত হবে- এ পরিকল্পনা আমরা করব না। রাজনৈতিক সরকার এলে হয়তো করবে, কিন্তু আমরা করব না।’

অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকার নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ‘নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা আর করছি না। রাজনৈতিক সরকার এলে হয়তো করবে, কিন্তু আমরা করব না।

‘কবে উন্নত দেশ হবে, কবে মাথাপিছু আয় কত হবে- এ পরিকল্পনা আমরা করব না।’

প্রসঙ্গত, নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং এসডিজি বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২৫ সালের জুলাই থেকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Mobile court is sitting to free DU from outsiders

ঢাবি বহিরাগতমুক্ত করতে বসছে মোবাইল কোর্ট

ঢাবি বহিরাগতমুক্ত করতে বসছে মোবাইল কোর্ট
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বহিরাগতমুক্ত করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত ক্যাম্পাসে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত হবে। সে লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে অবস্থানকালীন প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আর যেসব শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে তাদেরকে উপযুক্ত প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে বহিরাগতমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়া। তবে এটির কর্মপদ্ধতি কী হবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বহিরাগতমুক্ত করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত ক্যাম্পাসে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত হবে। সে লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে অবস্থানকালীন প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আর যেসব শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে তাদেরকে উপযুক্ত প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।

আরও পড়ুন:
ঢাবির নতুন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়েমা হক
ঢাবি উপাচার্যকে সদ্য সাবেকের অভিনন্দন
ঢাবির প্রক্টর হলেন সাইফুদ্দীন আহমদ
ঢাবি উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ
ঢাবির নতুন ট্রেজারার অধ্যাপক জাহাঙ্গীর

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
BTV news does not need to be aired on private TV Nahid

বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টিভিতে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই: নাহিদ

বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টিভিতে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই: নাহিদ
বিটিভির ডিজিকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিভিশনের দুপুর ২টার সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই বলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হলো।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) দুপুর ২টার সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালককে (ডিজি) চিঠি পাঠিয়েছে তথ্য অধিদপ্তর।

বুধবার পাঠানো এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামুল কবীর।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিভিশনের দুপুর ২টার সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচার করার প্রয়োজন নেই বলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হলো।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Ali Riaz is the head of the Constitution Reform Commission

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে এর আগে ড. শাহদীন মালিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এই কমিশনের প্রধান হিসেবে তার পরিবর্তে আলী রীয়াজের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠন এবং কমিশনের প্রধানদের নাম ঘোষণা করেন।

‘সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এই কমিশনের প্রধান হিসেবে তার পরিবর্তে আলী রীয়াজের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক, আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র অনাবাসিক ফেলো ও আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ স্টাডিজের (এআইবিএস) প্রেসিডেন্ট।

আরও পড়ুন:
রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ইসি গঠন হওয়া উচিত: বদিউল আলম
অল্প সময়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব নয়: হাসান আরিফ
ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারে সার্চ কমিটি গঠন
একই ব্যক্তিকে সরকার ও দলীয় প্রধান না করার প্রস্তাব টিআইবির
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল

মন্তব্য

p
উপরে