অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী যে টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত হচ্ছে তা নিতে যাচ্ছে দেশটির বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তানও।
ভারতে উৎপাদিত এই টিকার এক কোটি ৭০ লাখ ডোজ পাওয়ার বিষয়টি পাকিস্তান নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহযোগী ফয়সাল সুলতান।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই টিকার ৭০ লাখ ডোজ এবং প্রথমার্ধে পুরো টিকা দেশে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তবে এই টিকা ভারত থেকে সরাসরি নিচ্ছে না পাকিস্তান। দেশটি এই টিকা নেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা বণ্টনের জন্য গড়ে তোলা কোভ্যাক্স জোটের মাধ্যমে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী বেশ কিছু টিকা এরই মধ্যে প্রয়োগ চলছে বিশ্বজুড়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার, মডার্না, রাশিয়ার স্পুৎনিক, চীনের সিনোভ্যাক্সের তুলনায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে বেশি দেশের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
এই টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নামে উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। নয়াদিল্লি এরই মধ্যে এই টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশে। এই তালিকায় পাকিস্তানকে রাখেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার।
ভারত থেকে টিকা পেতে খুব একটা তৎপরতা চালায়নি পাকিস্তানও। অন্যসব বিষয়ের মতো ইমরান খান সরকার টিকা ইস্যুতেও চীনের ওপর নির্ভর করে আসছিল। সহায়তার হাত বাড়িয়েছে বেইজিংয়েও।
সিনোভ্যাক্সের টিকার ৫ লাখ ডোজ পাকিস্তানকে উপহারও দিচ্ছে চীন। চীন থেকে উপহারের টিকার পাঁচ ডোজের প্রথম চালান আনতে দেশটিতে রোববার বিশেষ একটি বিমান পাঠিয়েছে পাকিস্তান।
এর সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তথা ভারতে উৎপাদিত কোভিশিল্ড টিকার এক কোটি ৭০ লাখ পাওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করলেন ইমরান খানের বিশেষ সহযোগী ফয়সাল সুলতান।
তিনি বলেন, ‘সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা ছাড়াও অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রায় ৭০ লাখ ডোজ বছরের প্রথম প্রান্তিতে আনা যাবে। এই টিকা দেয়া হবে বিনামূল্যে! দেশে টিকাপ্রদান শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহ থেকে, শুরুতে টিকা দেয়া হবে সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের।’
টিকা বিষয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তানের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও বিশেষ উদ্যোগ বিষয়ক মন্ত্রী আসাদ ওমরও। তবে তিনি জানান, টিকা পেতে তারা কোভ্যাক্সের সঙ্গে আট মাস আগে চুক্তি করেছিলেন তারা। এক কোটি ৭০ লাখ ডোজের মধ্যে ৬০ লাখ পাওয়া যাবে মার্চের মধ্যে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ সহকারী ফয়সাল সুলতান এক বিবৃতিতে জানান, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগের জন্য এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, ‘যদিও অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে, এটা আসবে আন্তর্জাতিক জোট কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। এই জোট পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশকে ফ্রি টিকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।’
আরও পড়ুন:দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়ংকর আকার ধারণ করছে। সেপ্টেম্বর মাসেই চলতি বছরে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। এমনকি বছরের একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ডও এই মাসে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৯৮ জনের। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্চ ছিল মৃত্যুহীন।
এপ্রিলে ৭, মে মাসে ৩ জনের মৃত্যু হলেও বাড়তে থাকে জুন মাস থেকে। জুনে ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়। জুলাইয়ে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৪১ জনে আর আগস্টে মৃত্যু ছিল ৩৯ জনের।
এদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৩৪২ জন ডেঙ্গুরোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসা নিয়েছে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন।
এছাড়া চলতি বছরে ৪৪ হাজার ৭৯৬ জন ডেঙ্গুরোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
বাংলাদেশে প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর একটি হৃদরোগজনিত বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।
গতকাল সোমবার ‘প্রতিটি হৃদস্পন্দনই জীবন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সারাদেশে বিশ্ব হার্ট দিবস-২৫ উদযাপন করেছে।
হৃদরোগ বিশ্বের এক নম্বর প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগ, অথচ শতকরা ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই হৃদরোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য– এই বার্তা পৌঁছে দিতে দিনব্যাপী আয়োজিত হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি।
দিনের শুরুতে রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে কয়েক শতাধিক মানুষের একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সামনে এসে শেষ হয়।
এরপর ফাউন্ডেশনের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত গণমুখী সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। আমাদের জীবনাচরণে এমন কিছু পরিবর্তন এসেছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। হৃদরোগ প্রতিরোধে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র– সবাইকে সচেতনতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেসা মালিক। তিনি বলেন, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সহায়তা করতে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সারা বছরজুড়ে গবেষণা, অ্যাডভোকেসি ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর একটি হৃদরোগজনিত। গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি ২০১৯ অনুযায়ী, মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এখনই তামাক ব্যবহার বন্ধ এবং বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন করা জরুরি।
গণমুখী সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের যুগ্ম-মহাসচিব নওশাদ হোসেন, পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক মো. ইউনুসুর রহমান ও অধ্যাপক তওফিক শাহরিয়ার হক।
বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় দেড় শতাধিক চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সারাদেশে আয়োজন করা হয় বিনামূল্যে হৃদরোগ নির্ণয় ক্যাম্প, সচেতনতামূলক পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম। রাজধানীর বাইরেও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ৪৫টি অধিভুক্ত সমিতি (অ্যাফিলিয়েটেড বডি) বিভিন্ন স্থানে দিবসটি উদযাপন করে।
সেমিনার থেকে বলা হয়, একটি স্পন্দনও উপেক্ষা করবেন না। প্রতিটি হৃদস্পন্দনই জীবন। এখনই পদক্ষেপ নিন, জীবন বাঁচান।
আজ সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী “ফ্রি হার্ট ক্যাম্প”। মহাখালী রাওয়া’র বিপরীতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ ক্যাম্পে প্রায় পাঁচ শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে বিশেষায়িত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করা হয়।
ক্যাম্পে আগত রোগীদের বিনামূল্যে বিশেষায়িত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করেন –
প্রফেসর ডাঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ (চিফ কার্ডিয়াক সার্জন), অধ্যাপক ডাঃ খন্দকার কামরুল ইসলাম (চিফ ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট), অধ্যাপক ডাঃ অমল কুমার চৌধুরী (সিনিয়র ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (সিনিয়র কার্ডিওভাসকুলার সার্জন), ডাঃ আশরাফুল হক সিয়াম (মিনিমাল ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জন), ডাঃ সানিয়া হক (ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট), ডাঃ এম এ হাসনাত (ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ), ডাঃ রোমেনা রহমান (কার্ডিওভাসকুলার সার্জন) এবং ডাঃ আব্দুল জাব্বার জীবন (পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট)।
এর পাশাপাশি দৈনিক প্রথম আলো'র অফিসে ও মহাখালী এসকেএস শপিং মলে বিশেষায়িত হার্ট ক্যাম্প করা হয় এবং একাধিক স্থানে স্ট্রিট ক্যাম্প করা হয়। তাছাড়াও হৃদরোগ সম্পর্কে জনগনের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে একটি কার্ডিয়াক ক্যারাভ্যান সারা ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করে।
একইদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলরোডে অবস্থিত ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডেও স্থানীয়দের জন্য “ফ্রি হার্ট ক্যাম্প” অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রোগীদের চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (কার্ডিওলজি) ডাঃ মোঃ নাজমুল হক (হৃদরোগ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ)।
ক্যাম্পে আগত সাধারণ রোগীরা হাসপাতালের সব ধরনের পরীক্ষায় ২০% বিশেষ ছাড় এবং ইউনিভার্সেল হার্ট ক্লাবের মেম্বারগণ ৩০% ছাড় (শর্ত সাপেক্ষে) গ্রহণের সুযোগ পান।
বাংলাদেশে মৃত্যুর শীর্ষ ১০ কারণের মধ্যে ৪টিই ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ, আর এর অন্যতম বড় কারণ তামাক। প্রতি বছর দেশে তামাকজনিত অসুখে প্রাণ হারাচ্ছে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মৃত্যু ঠেকাতে দ্রুততম সময়ে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
গতকাল শনিবার বিশ্ব ফুসফুস দিবস উপলক্ষে ‘ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন ক্যানসার ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, জনস্বাস্থ্যবিদ, সাংবাদিক ও নীতিনির্ধারকরা। দিবসটির এবছরের প্রতিপাদ্য ছিল— ‘হেলদি লান্স, হেলদি লাইফ’।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষ রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশই ধূমপায়ী। ফুসফুস ক্যানসার ছাড়াও তামাক ও পরোক্ষ ধূমপানজনিত গুরুতর রোগগুলোর মধ্যে রয়েছে— ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিস (সিওপিডি), যক্ষ্মা ও হাঁপানি। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী, দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ (৩৫.৩%) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সরাসরি তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৮১ লাখ মানুষ, আর গণপরিবহণে আক্রান্ত হয় আড়াই কোটির বেশি মানুষ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তামাক ব্যবহার ও পরোক্ষ ধূমপানের এই উচ্চ প্রবণতা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। বর্তমানে দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর ৪০ শতাংশেরও বেশি ঘটে ফুসফুস ও হৃদ্রোগে, আর এ হার কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০২১ সালে এ বিষয়ে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিলেও খসড়াটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ফলে দ্রুত সংশোধনীটি পাস করার আহ্বান জানানো হয় ওয়েবিনারে।
বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ফুসফুসসহ সব ধরনের ক্যানসারে চিকিৎসা ব্যয় ও মৃত্যুহার অত্যন্ত বেশি। অসুস্থ মানুষের আর্তনাদ নীতিনির্ধারকদের কানে পৌঁছাতে হবে, তাহলেই আইন সংশোধন অগ্রাধিকার পাবে।
বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ বলেন, ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।
ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক রিয়াজ আহমদ মনে করেন, গণমাধ্যমকে এই ইস্যুতে আরও সক্রিয় হতে হবে, যেন নীতিনির্ধারকরা বুঝতে পারেন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের জরুরি প্রয়োজনীয়তা।
স্পটলাইটনিউজ২৪.কমের সম্পাদক মোর্শেদ নোমান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়নে গণমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও রাখবে।
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। প্রজ্ঞার ডিজিটাল মিডিয়া প্রধান মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় মূল উপস্থাপনা দেন কর্মসূচি প্রধান মো. হাসান শাহরিয়ার।
আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সোমবার, বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতাল আয়োজন করেছে দিনব্যাপী “ফ্রি হার্ট ক্যাম্প”। মহাখালী রাওয়া’র বিপরীতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ ক্যাম্প চলবে।
ক্যাম্পে আগত রোগীদের বিনামূল্যে বিশেষায়িত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবেন দেশের স্বনামধন্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জনবৃন্দ - প্রফেসর ডাঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ (চিফ কার্ডিয়াক সার্জন); অধ্যাপক ডাঃ খন্দকার কামরুল ইসলাম (চিফ ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট); অধ্যাপক ডাঃ অমল কুমার চৌধুরী (সিনিয়র ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট); ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (সিনিয়র কার্ডিওভাসকুলার সার্জন); ডাঃ আশরাফুল হক সিয়াম (মিনিমাল ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জন); ডাঃ সানিয়া হক (ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট) ডাঃ এম এ হাসনাত (ক্লিনিক্যাল এন্ড ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ); ডাঃ রোমেনা রহমান (কার্ডিওভাসকুলার সার্জন) এবং ডাঃ আব্দুল জাব্বার জীবন (পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট)।
একইদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলরোডে অবস্থিত ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেড-এ স্থানীয়দের জন্য অনুরূপ “ফ্রি হার্ট ক্যাম্প” অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে রোগীদের চিকিৎসা পরামর্শ দিবেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ( কার্ডিওলজি) ডাঃ মোঃ নাজমুল হক (হৃদরোগ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ)।
ক্যাম্প এ আসা রোগীদের এনজিওগ্রাম এর সিডি ( যদি থাকে) নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে ।
রোগীরা ফ্রি সিরিয়াল নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন নিম্নোক্ত নম্বরে:
ঢাকা – ১০৬৬৭, ০১৮৪১৪৮০০০০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া – ০১৭০৫৬৬৬৯৯৯, ০২৩৩৪৪২৭৮০৮
উল্লেখ্য, ক্যাম্পে আগত সাধারণ রোগীগণ হাসপাতালের সব ধরনের পরীক্ষায় পাবেন ২০% বিশেষ ছাড় এবং ইউনিভার্সেল হার্ট ক্লাবের মেম্বারগণ পাবেন ৩০% ছাড় (শর্ত সাপেক্ষে)।
জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ
ব্র্যান্ড এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগ
ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতাল
মহাখালী, ঢাকা
ফোনঃ ০১৮৩৬৯৯৯৯৫৫, ০১৯১২৮৬৫৪৬২
ই-মেইল: [email protected]
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল -৫ আওতাধীন ৪৯ নং ওয়ার্ডের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ধলপুর ও সংলগ্ন এলাকায় আজ রবিবার এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধনে চিরুণী অভিযান পরিচালনা করা হয়। ডিএসসিসি এবং ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির যৌথভাবে আয়োজিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো. জহিরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসসিসি আওতাধীন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ধলপুর ও সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ ও এলাকাবাসী অংশগ্রহন করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, “প্রতিরোধমূলক অভ্যাসের শুরু হোক শৈশব থেকে। প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন নিজের পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে পরিচ্ছন্নতার সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়।” তিনি বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্নতার কাজে যুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে বলেন পরিচ্ছন্নতা যেন জীবনের অংশ হয়ে ওঠে। এ সময় তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধ অভিযানে অংশগ্রহণের জন্য ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন প্রতিটি ওয়ার্ডে চিরুণী অভিযান পরিচালনা করা হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (অ.দা.) ড. নিশাত পারভীন, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা-০৫ জনাব মোঃ আবু আসলাম, ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা: নূর-ই-নাজনীন ফেরদৌসসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য