রাশিয়ায় প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনির মুক্তির দাবিতে উত্তাল গোটা দেশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গণগ্রেপ্তারের পথ বেছে নিয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী মস্কোসহ সারা দেশে নাভালনির মুক্তির দাবিতে কয়েক হাজার মানুষ সড়কে বিক্ষোভ শুরু করে। গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে মস্কো, ভনুকভো, ইয়াকুটস্কসহ ৩০টি শহরে বিক্ষোভে নামেন কয়েক হাজার মানুষ। তাদের পুলিশ বাধা দিলে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষও হয়। আটক করা হয় নাভালনির প্রায় ২০০ সমর্থককে।
রাশিয়ার প্রধান বিরোধী দল রাশিয়া অফ দ্য ফিউচারের নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি। গত বছরের আগস্টে তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে।
নির্বাচনি প্রচার শেষে অভ্যন্তরীণ একটি ফ্লাইটে সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। কোমায় চলে যাওয়া নাভালনিকে রাখা হয় আইসিইউতে।
তবে সেখানে সঠিক চিকিৎসা পাবেননা এমন আশংকায় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপে জার্মানিতে চিকিৎসা নেন নাভালনি। কয়েকটি মামলা থাকায় ক্রেমলিনের অনুমতি নিয়ে বার্লিনে চিকিৎসা নিয়ে সম্প্রতি সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
জার্মান চিকিৎসকেরা জানান, নাভালনির ওপরে নভিচক নামে স্নায়ু বিকল করার বিষাক্ত এক রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় পুতিন সরকার জড়িত বলে দাবি করে আসছে নাভালনির দল ও পরিবার।
জার্মানিতে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে গত সপ্তাহে দেশে ফেরেন নাভালনি। মস্কোর ভনুকভো বিমানবন্দরে নাভালনিকে বহনকারী বিমানের নামার কথা থাকলেও, সমর্থকদের ভিড়ের কারণে পরে শেরেমিতিয়েভো বিমানবন্দরে নামানো হয় তাকে।
সেখান থেকেই পুলিশি পাহারায় নাভালনিকে মস্কোর একটি থানায় নেয়া হয়। পরদিন সেই থানার ভেতর অস্থায়ী আদালত বসিয়ে প্যারোলের শর্ত ভঙের দায়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাভালনিকে আটক রাখার নির্দেশ দেয় বিচারক। সেই সঙ্গে নাভালনির সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা প্রশ্নে ২৯ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
এদিন ৭০ জনেরও বেশি সাংবাদিক ও নাভালনির সমর্থককে আটক করে পুলিশ। প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন অ্যালেক্সাই নাভালনি।
tw // violence
— tania 🍉 (@niallxcherry) January 23, 2021
unbelievable things happening in Russia today.. here you can see russian police attacking citizens at protests and the record in the background saying “we will do everything for your safety” unbelievable!#FreeRussia pic.twitter.com/AkDD8uN4iZ
.@navalny protesters are young & angry. Riot police not in a good mood either pic.twitter.com/DLXtbVI9MG
— Alec Luhn (@ASLuhn) January 23, 2021
ইমরান খান
পাকিস্তানের সংসদবিষয়ক মন্ত্রী ড. তারিক ফজল চৌধুরী জানিয়েছেন, যদি তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে তাহলে কারাবন্দি নেতা ইমরান খানকে আদিয়ালা কারাগার থেকে তার নিজ বাড়ি বানিগালা রেসিডেন্সে স্থানান্তর করা হতে পারে।
বুধবার এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা বর্তমানে কোনো বাধা ছাড়াই জেলে তার পুরো পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। যদি দেখা করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে, আমরা তা পর্যালোচনা করবো। তারা যদি আবেদন করে, আমরা তাকে বানিগালায় স্থানান্তর করতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, আমরা অবশ্যই তাকে স্থানান্তর করব, সেখানে তিনি মানুষের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, লুডু খেলতে পারবেন—যা ইচ্ছা করতে পারবেন। আমরা চাই পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করুন।
চৌধুরী আরও জানান, কারাগারে ইমরান খানের জন্য ফার্স্ট-ক্লাস মানের ব্যায়াম সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে।
এদিকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) বৃহস্পতিবার আদিয়ালা জেল সুপারিনটেনডেন্টকে নির্দেশ দিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সপ্তাহে দুইবার সাক্ষাতের অনুমতি সংক্রান্ত আদালতের আগের আদেশ বাস্তবায়ন করতে।
পিটিআই ও ইমরানের পরিবারের অভিযোগ, কারাগার কর্তৃপক্ষ বারবার ইচ্ছাকৃতভাবে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ বাধাগ্রস্ত বা সাবোটাজ করছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিগগিরই এশিয়ায় একটি ‘বড় সফরে’ আসছেন। সেখানে সকলের নজর চীনা নেতা সি চিনপিংয়ের সঙ্গে তার প্রত্যাশিত বৈঠকের দিকে। শুল্ক এবং ভূরাজনৈতিক দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে এই বৈঠকের ফলাফল বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিশাল প্রভাব ফেলবে।
গত বুধবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি মালয়েশিয়া, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি ‘বড় সফর’ শুরু করতে যাচ্ছেন।
সফরের বেশিরভাগ সময়টা অনিশ্চয়তার মধ্যে ঢাকা। হোয়াইট হাউসেও তেমন কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। ট্রাম্প এও আশঙ্কা করছেন, চলমান উত্তেজনার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় সির সঙ্গে তার প্রত্যাশিত বৈঠক নাও হতে পারে।
কিন্তু ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি চীনের সঙ্গে একটি ‘ভালো চুক্তি’ সই করতে এবং বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান তিক্ত বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আশা করছেন।
মালয়েশিয়া এবং জাপান
২৬-২৮ অক্টোবর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন (আসিয়ান)-এর শীর্ষ সম্মেলনে তার প্রথম গন্তব্য মালয়েশিয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে এই সম্মেলনগুলো খুব একটা পাত্তা দেননি।
ট্রাম্প মালয়েশিয়ার সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি সই করতে প্রস্তুত- তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি সইয়ের তত্ত্বাবধান করা। কারণ তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম গত বুধবার বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার আরও ইতিবাচক ফলাফল দেখতে আগ্রহী।’
দুই দেশের কর্মকর্তারা এএফপিকে জানিয়েছেন, কয়েক মাসের টানাপোড়েনের পর সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন নেতা ব্রাজিলের নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার সঙ্গেও দেখা করতে পারেন।
ট্রাম্পের পরবর্তী গন্তব্য টোকিও হবে বলে মনে করা হচ্ছে- যেখানে তিনি রক্ষণশীল নেতা সানাই তাকাইচির সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সানাই এই সপ্তাহে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
‘চূড়ান্ত পর্ব’ দক্ষিণ কোরিয়ায়
এই সফরের চূড়ান্ত পর্ব দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানে ট্রাম্প আগামী ২৯ অক্টোবর এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য পৌঁছাবেন এবং এখানেই সম্ভবত শি’র সঙ্গে দেখা করবেন।
ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর দুই নেতার প্রথম বৈঠকের মাধ্যমে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান হতে পারে। তবে বেইজিংয়ের বিরল খনিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করেছে।
ট্রাম্প প্রথমে বৈঠক বাতিলের হুমকি দিয়েছিলেন এবং নতুন করে শুল্কারোপ করেছিলেন। তারপর বলেছিলেন, তিনি সর্বোপরি এগিয়ে যাবেন।
গত মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘হয়তো (বৈঠক) এটি ঘটবে না।’ কিন্তু গত বুধবার বলেন, তিনি ‘সবকিছুর বিষয়ে’ শি’র সঙ্গে একটি চুক্তি করতে আশাবাদী। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চীনা নেতা রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ‘বড় প্রভাব’ রাখতে পারবেন।
উত্তর কোরিয়াও আলোচনার আলোচ্য সূচিতে থাকবে। ট্রাম্পের সফরের ঠিক কয়েকদিন আগে গত বুধবার কিম জং উনের দেশ একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও দেখা করার আশা করছেন। তবে এবারের এশিয়া সফরে নতুন কোনো বৈঠকে নাও হতে পারে।
ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা শহর। ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের বিধ্বস্ত গাজা শহরে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা এবং শান্তি পরিকল্পনার পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো ইসরায়েলের তৈরি করা ‘কৃত্রিম বাধা’। বৃহস্পতিবার কাতারের হামাদ বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুলতান বারাকাত আল জাজিরাকে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি পক্ষ থেকে প্রথমেই তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করা উচিত ছিল ... তারা চুক্তির সঙ্গে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণভাবে এটি করেনি।’
‘এরপর তারা সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ... কিন্তু তারা ধীরে ধীরে এটি বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। তারা আশা করছে, এটি একটি সংকট তৈরি করবে এবং হামাস কোনো না কোনওভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।’
অধ্যাপক সুলতান বারাকাত আরও বলেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরকে সংযুক্ত করার বিষয়ে দুটি বিল এগিয়ে নেওয়ার জন্য ইসরায়েলি নেসেটের পদক্ষেপগুলো ‘সম্পূর্ণরূপে ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনকে বিরক্ত করার জন্য’ ডিজাইন করা হয়েছে।
গত ৯ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল এবং হামাস একটি শান্তি পরিকল্পনার চুক্তিতে পৌঁছেছে। প্রথম পর্যায়ে মধ্যে সমস্ত বন্দিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি সৈন্যদের একটি রেখার বাইরে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
১০ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। তবে তখন থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অসংখ্যবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে।
বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল এখনও বিদেশি সাংবাদিকদের গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। ফলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের জন্য গাজায় সরাসরি সংবাদ সংগ্রহ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যুদ্ধের প্রকৃত তথ্য গোপন ও যুদ্ধাপরাধ আড়াল করতেই বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জেরুজালেমের সর্বোচ্চ আদালতে বিদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এফপিএ)-এর দায়ের করা মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি সাংবাদিকদের গাজা উপত্যকায় অবাধে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলি সরকারকে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আরও ৩০ দিন সময় দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, গাজায় বিদেশি গণমাধ্যমের প্রবেশে বাধা দেওয়া তথ্য গোপন ও যুদ্ধাপরাধ আড়াল করার প্রচেষ্টা। তারা অবিলম্বে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে এফপিএ জানিয়েছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করছে যাতে সাংবাদিকদের প্রবেশ যতটা সম্ভব বিলম্বিত হয়।
গাজা উপত্যকায় বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে ইসরায়েল। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গণহত্যামূলক যুদ্ধের শুরুর পর কেবল নির্দিষ্ট এলাকায় সীমিত সময়ের জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে গাজা সফর করতে পেরেছেন বিদেশি সাংবাদিকরা।
এদিকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরাই এখন গাজার ভেতর থেকে খবর পৌঁছে দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ২০০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।এত সংখ্যক সাংবাদিক নিহতের ঘটনা ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৬৮,২০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৭০,৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
দখলকৃত পশ্চিম তীরেও একই সময়ে সহিংসতা বেড়েছে। সেখানে অন্তত এক হাজার ৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১০ হাজার ৩০০ জন আহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর মধ্যযুগীয় নির্যাতন
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল ২৫০ জন দণ্ডিত ফিলিস্তিনি বন্দির পাশাপাশি গাজার ভেতর থেকে আটক করা আরও প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন গাজাবাসীকে মুক্তি দিয়েছে। যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী তাদের আটক করেছিল এবং দীর্ঘ মাস ধরে কোনো বিচার ছাড়াই কারাগারে রেখেছিল।
দণ্ডিত বন্দিদের মতো নয়, এই আটক ব্যক্তিদের কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়নি, কিংবা আদালতে তোলা হয়নি। তাদের অধিকাংশকেই ইসরায়েলি কারাগারে নিঃসঙ্গভাবে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছিল। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
ইসরায়েল দাবি করেছে, এই আটক ব্যক্তিরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় নির্বিচারে অভিযান চালিয়ে অনেক সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে গেছে তথাকথিত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশে, যাদের অনেকেরই কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না।
মুক্তি পাওয়া বহু বন্দি জানিয়েছেন, কারাগারে তারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, নিয়মিত মারধর, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পর্যাপ্ত খাবারের অভাব ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাদের।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর শুরু হওয়া যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিপুল সংখ্যক গাজাবাসীকে আটক করে।
২০০২ সালের ‘অবৈধ যোদ্ধাদের আটক আইন’-এর আওতায় আইডিএফ (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) ও শিন বেত (ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা) গাজার ভেতর থেকে এসব মানুষকে আটক করে এবং বিভিন্ন কারাগারে পাঠায়।
তাদের অনেককে আটক করা হয় হাসপাতাল, স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র থেকে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের উপস্থিতির অভিযোগ তোলে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আবাসিক ভবন, রাস্তার চেকপয়েন্ট ও চলাচলের সময়ও সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বেশিরভাগ আমেরিকান নাগরিক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এখনই ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং জরিপ প্রতিষ্ঠান ইপসোস পরিচালিত এক যৌথ সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই ফলাফল।
জরিপ অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করলেও, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে জনসমর্থন ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
রয়টার্স-ইপসোসের এই ৬ দিনব্যাপী অনলাইন জরিপ গত সোমবার শেষ হয়। গতকাল বুধবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া ৫৯ শতাংশ আমেরিকান ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে মত দিয়েছেন। অপরদিকে, ৩৩ শতাংশ এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন এবং বাকিরা এ বিষয়ে অনিশ্চিত কিংবা কোনো মতামত দেননি।
দলীয়ভাবে দেখা গেলে, ডেমোক্র্যাটদের ৮০ শতাংশ এবং রিপাবলিকানদের ৪১ শতাংশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকানদের মধ্যে প্রায় ৫৩ শতাংশ এখনও ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির বিরোধী।
এই সমীক্ষা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান মার্কিন জনগণের সামগ্রিক মতামতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর অনেকেই ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে- এর মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া। তবে এসব দেশের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৮ সাল থেকে ফিলিস্তিন অঞ্চলে অব্যাহত সংঘাতে এখন পর্যন্ত লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, আর প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়, যাতে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন এবং ২৫০ জনের বেশিকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করা হয়। এর পরদিন থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। টানা বোমা হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে। অপরদিকে, ৩২ শতাংশ এই মতের বিরোধিতা করেছেন।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছেন। পাশাপাশি গাজা যুদ্ধে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও পালন করছেন তিনি।
রয়টার্স-ইপসোসের জরিপে আরও দেখা যায় ৫১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, যদি ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধ-পরবর্তী শান্তি প্রক্রিয়ায় সফল হন তবে তিনি ‘গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতির যোগ্য’ হবেন। অন্যদিকে ৪২ শতাংশ এই বিষয়ে একমত নন।
রয়টার্স ও ইপসোসের যৌথভাবে পরিচালিত এই অনলাইন জরিপে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৪ হাজার ৩৮৫ জন অংশ নিয়েছেন।
উগান্ডার একটি প্রধান মহাসড়কে দুটি বাসের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬৩ জন নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার ভোররাতের দিকে দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়।
পূর্ব আফ্রিকার দেশটি পুলিশ এক্স-পোস্টে জানিয়েছে, মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি কাম্পালা-গুলু মহাসড়কে ঘটেছে। ওভারটেকিংয়ের সময় বিপরীতমুখী দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংঘর্ষ এড়াতে চালকদের মধ্যে একজন গাড়ি ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ‘চেইন রিঅ্যাকশন’ সৃষ্টি হয়, যার ফলে কমপক্ষে চারটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং বেশ কয়েকবার উল্টে যায়। ফলস্বরূপ ৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আহতদের কিরিয়ান্দোঙ্গো হাসপাতাল এবং নিকটবর্তী অন্যান্য চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে আহতদের সংখ্যা বা তাদের আঘাতের পরিমাণ সম্পর্কে আর কোনো বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়নি।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘর থেকে চুরি হওয়া অলংকারের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৮ কোটি ৮০ লাখ ইউরো। প্রতি ইউরো ১৪১ টাকা টাকা হিসেবে এই বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। জাদুঘরের কিউরেটরের বরাত দিয়ে ফ্রান্সের একজন সরকারি কৌঁসুলি এ তথ্য জানিয়েছেন।
সরকারি কৌঁসুলি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে বলেন, অলংকারগুলোর দামের অঙ্ক ‘অনেক বড়’। তবে অর্থমূল্যের চেয়ে এ ঘটনায় ফ্রান্সের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ক্ষতি অনেক বেশি।
জানা যায়, চুরি হওয়া সামগ্রীর মধ্যে আছে রাজকীয় অলংকার ও মূল্যবান উপহার। দুই নেপোলিয়ন সম্রাট তাদের স্ত্রীদের অলংকারগুলো উপহার দিয়েছিলেন।
গত রোববার সকালে জাদুঘর খোলার অল্প কিছুক্ষণ পরই, চোরেরা প্রকাশ্য দিবালোকে ডাকাতির মাধ্যমে শক্তিশালী বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করে মাত্র আট মিনিটে লুট সম্পন্ন করে পালিয়ে যায়।
চুরির দুদিন পরও অভিযুক্তদের ধরা না পড়ায় বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, গয়নাগুলো ইতোমধ্যেই ধ্বংস বা পাচার হয়ে গেছে।
প্রসিকিউটর বেকো বলেন, গয়নার আনুমানিক মূল্য প্রকাশের উদ্দেশ্য হলো চোরদের নিরুৎসাহিত করা, যেন তারা সেগুলো নষ্ট না করে। তিনি আরও বলেন, যদি তারা এই গয়নাগুলো গলানোর মতো ভয়াবহ ভুল করে, তাহলেও তারা পুরো অর্থ পাবে না।
চুরি হওয়া ঐতিহাসিক সামগ্রীর মধ্যে ছিল সম্রাট নেপোলিয়নের স্ত্রীকে উপহার দেওয়া হীরা ও পান্নার হার, নেপোলিয়ন তৃতীয়ের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির পরা টিয়ারা এবং রানী মেরি-অ্যামেলির মালিকানাধীন আরও কয়েকটি অলংকার।
তদন্তকারীরা চোরদের পলায়নপথে সম্রাজ্ঞী ইউজেনির এক ক্ষতিগ্রস্ত মুকুট উদ্ধার করেছেন- ধারণা করা হচ্ছে, পালানোর তাড়াহুড়োয় সেটি পড়ে গিয়েছিল।
চারজন মুখোশধারী ডাকাত একটি বিশেষভাবে তৈরি ট্রাক ব্যবহার করে সেন নদীর পাশে অবস্থিত গ্যালারি দ্য আপোলন (Galerie d’Apollon)-এর ব্যালকনি দিয়ে প্রবেশ করে। ট্রাকটিতে একটি যান্ত্রিক লিফট ছিল, যার সাহায্যে তারা প্রথম তলার কাচের জানালা কেটে ভিতরে ঢোকে। এরপর তারা নিরাপত্তা প্রহরীদের হুমকি দিলে জাদুঘর খালি করে দেওয়া হয়।
পালানোর আগে তারা ট্রাকটিতে আগুন দিতে চাইলেও জাদুঘরের এক কর্মচারী তা প্রতিহত করেন। পরে দেখা যায়, চোরেরা স্কুটারে চেপে পালিয়ে যায়।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এই চুরিকে ফ্রান্সের ঐতিহ্যের ওপর একটি হামলা বলে উল্লেখ করেছেন।
ঘটনার পর দেশের সব সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ল্যুভরের প্রতি তিনটি কক্ষের একটিতে সিসিটিভি ছিল না এবং অ্যালার্ম সিস্টেমও কাজ করেনি।
ফরাসি বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানাঁ স্বীকার করেছেন, নিরাপত্তা প্রটোকল ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, চোরেরা যেভাবে পরিবর্তিত ট্রাক নিয়ে জাদুঘর পর্যন্ত যেতে পেরেছে, তা ফ্রান্সের ভাবমূর্তির জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।
কর্তৃপক্ষের ধারণা, এটি কোনো সাধারণ চুরি নয়- বরং পেশাদার একটি সংঘবদ্ধ দলের কাজ।
শিল্পকর্ম পুনরুদ্ধার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তদন্তকারীদের হাতে চুরি হওয়া সামগ্রী উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ এক বা দুদিন সময় ছিল। এরপর সেগুলোকে স্থায়ীভাবে হারিয়ে যাওয়া বলে গণ্য করা যেতে পারে।
তাদের মতে, চুরি হওয়া গয়নাগুলো সম্ভবত ইতোমধ্যেই ধাতু ও রত্ন আলাদা করে পাচার করা হয়েছে এবং প্রকৃত মূল্যের একটি ক্ষুদ্র অংশের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে।
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তজাচি হানেগবিকে বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কাতারে হামলা ও গাজা সিটি দখলে অভিযানসহ নীতিগত কয়েকটি ইস্যুতে মতবিরোধের পর এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
হানেগবি নিজেও এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ব্যর্থতাগুলো নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
গত মঙ্গলবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের নতুন প্রধান নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তজাচি হানেগবিকে জানিয়ে দিয়েছেন নেতানিয়াহু। ফলে হানেগবির দায়িত্বকাল শেষ হচ্ছে।
হানেগবি বলেছেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলাকে ঘিরে ইসরায়েলের ব্যর্থতা নিয়ে ‘বিস্তারিত তদন্ত’ হওয়া উচিত এবং তিনি সেই ব্যর্থতার দায় নিজেও স্বীকার করছেন।
আরেক সংবাদমাধ্যম ইয়েদিয়থ আহরোনথ পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, হানেগবির স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান গিল রেইখ। তিনি এখন সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-সহ স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের ওপর চালানো বিমান হামলা এবং গাজা সিটি দখলের সামরিক অভিযানের বিষয়টি নিয়ে হানেগবির সঙ্গে নেতানিয়াহুর তীব্র বিরোধ দেখা দেয়।
অভিযান শুরু হওয়ার আগে মন্ত্রিসভায় হানেগবি নেতানিয়াহুর গাজা দখলের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘গাজা সিটি দখল করলে ইসরায়েলি বন্দিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়বে। আমি সেনাপ্রধান ইয়াল জামিরের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। এ কারণেই আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের বিরোধিতা করছি।’
গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় চালানো ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ হামাস সদস্য ও এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। বিশ্বজুড়ে বহু দেশ ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৬৮ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং এক লাখ ৭০ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট
মন্তব্য