করোনাভাইরাস মহামারি ও ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে পূর্বসূরীদের চেয়ে একদম ভিন্ন হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান।
অন্যান্য বারের মতো এবারের অভিষেকে ক্যাপিটল ভবনের নিচে কোনো জনসমাগম দেখা যাবে না। এ ছাড়া অভিষেকে থাকছেন না বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও।
তাহলে কেমন হতে যাচ্ছে বাইডেনের অভিষেক? কী থাকছে তাতে?
অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে প্রতিবেদন করেছে এনপিআর ও দ্য গার্ডিয়ান।
জাতীয় সঙ্গীত ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে স্থানীয় সময় বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে শুরু হবে অভিষেক অনুষ্ঠান। ১২টা বাজার একটু আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের শপথ নেয়ার কথা। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সোনিয়া সোতোমেয়র তাকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।
এরপর প্রথা অনুযায়ী ক্যাপিটলের পশ্চিম প্রান্তে দুপুরে শপথ নেবেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী জো বাইডেন। প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস শপথ বাক্য পড়বেন। এরপর বাইডেন অভিষেক বক্তব্য দেবেন।
বাইডেন এরপর ক্যাপিটলের পূর্ব প্রান্তে সামরিক বাহিনীর সেনাদের সঙ্গে দেখা করবেন।
পরে বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন সস্ত্রীক আরলিংটন ন্যাশনাল সেমেট্রিতে যাবেন। সেখানে ‘টুম্ব অফ দ্য আননওন সোলজারের’ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন তারা।
এরপর ১৫ নম্বর স্ট্রিট থেকে হোয়াইট হাউজ পর্যন্ত বাইডেনকে মিলিটারি এসকোর্ট দেয়া হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, অনুষ্ঠানে আনুমানিক এক হাজার ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই কংগ্রেসের সদস্য এবং তাদের অতিথি।
অভিষেক অনুষ্ঠানে পপ স্টার লেডি গাগা জাতীয় সঙ্গীত গাইবেন। আমন্ত্রিত অতিথিদের গির্জায় নিয়ে যাওয়ার আগে কবিতা পাঠের আয়োজন করা হয়েছে। পাঠের পর জেনিফার লোপেজ, গার্থ ব্রুকস সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।
অভিষেক অনুষ্ঠানকে ঘিরে এবার বড় আকারের সামাজিক সমাগম হচ্ছে না। তবে এর পরিবর্তে বুধবার রাতে বিশেষ টেলিভিশন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ৯০ মিনিটের ‘সেলেব্রেটিং আমেরিকা’ নামের ওই অনুষ্ঠানে সঞ্চালক থাকছেন চলচ্চিত্র তারকা টম হ্যাঙ্কস। সেখানে অংশ নেবেন বাইডেন ও কমলা।
এ ছাড়া ওই ‘ভাচুয়াল বল’ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত শিল্পী জন বন জোভি, ডেমি লোভেটো, জাস্টিন টিম্বারলেক থাকছেন।
অভিষেকের দুই সপ্তাহ আগে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্পের সমর্থকদের তাণ্ডবের প্রেক্ষিতে ও আরও সহিংসতার শঙ্কায় রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ২৫ হাজারের বেশি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। ইরাক ও আফগানিস্তানে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের চেয়ে এ সংখ্যা পাঁচ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন:ফেনীর বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘ঘুরে দাঁড়াবে ফেনী’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় শহরের এক রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে সফল সমাপ্তি টানা হয়। গত ১০ মাসে এ কর্মসূচির আওতায় গৃহনির্মাণ ও মেরামতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। যা বেসরকারি উদ্যোগে বেশ বড় কার্যক্রম। এরমধ্যে নতুন ঘর নির্মাণ করা হয়েছে ২০ টি, মেরামত হয়েছে ২৫ টি ঘর। এরমধ্যে দুটি মাদ্রাসা ভবন রয়েছে। এছাড়াও ২৫টি পরিবারকে ২ বান্ডেল করে টিন ও নগদ ২০ হাজার করে দেয় হয়েছে নিজ নিজ ঘর মেরামতের জন্য। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এমন ১০ জনকে দেয়া হয় ক্ষুদ্র ব্যবসার পুঁজি। চিকিৎসা অনুদান দেয়া হয়েছে আরও ২০ জনকে।
এ উদ্যোগের অন্যতম সমন্বয়ক শরিফুল ইসলাম অপুর পরিচালনায় পুরো প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন সমন্বয়ক ও সংবাদকর্মী আসাদুজ্জামান দারা। এ সময়ে অর্থ সহায়তা প্রদানকারি ১৯ টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
দীর্ঘ ১০ মাসব্যাপী জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেসরকারি উদ্যোগে এ বিশাল কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে বলে উপস্থিত সংবাদকর্মীরা মতামত দেন। সাংবাদিকদের মধ্যে থেকে মতামত ব্যক্ত করেন শাহজালাল ভুইয়া, আরিফুর রহমান, সফিউল্লাহ রিপন, কপিল মাহমুদ, এম এ আকাশ। ঘর গ্রহণকারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ছাগলনাইয়া লাংগল মোড়া গ্রামের জাহিদ হাসান।
ঘুরে দাঁড়াবে ফেনীর সমন্বয়কদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন নাসির উদ্দিন সাইমুম ও জালাল উদ্দিন বাবলু৷ এছাড়াও সমন্বয়কদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিবুল হক রাসেল, হারুন উর রশিদ, শান্তি চৌধুরী, মুহাম্মদ আবু তাহের ভুইয়া, ইমন উল হক, রিয়াজ উদ্দিন রবিন, কামরুল হাসান রানা, ওসমান গনি রাসেল ও মোহাইমিন তাজিম।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল সাতটায় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এই প্রবীণ সদস্যের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে এলএলবি পাস করে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে আমৃত্যু তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও দুই কন্যা রেখে গেছেন। তার তিন ছেলে-মেয়েই আইনপেশায় নিয়োজিত। বড় ছেলে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মির্জা শোয়েব মুহিত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। সাতকানিয়ার প্রয়াত চিকিৎসক মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ মরহুমের বড় ভাই। দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখার তার ভাতিজা।
চট্টগ্রাম আদালত ভবনে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বেলা সাড়ে ১২টায়। এতে অংশ নেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম ও মহানগর দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম। আরও অংশ নেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা, জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জামায়াতে মহানগরের আমির নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
মরহুমের গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়ার উপজেলার মাদার্শার দেওদীঘি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাকে রাষ্ট্রীয় মার্যাদায় পুলিশের একটি চৌকস দল ‘গার্ড অফ অনার’ প্রদান করে। এতে উপস্থিত ছিলেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস, সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিস্তা করিম, সাতকানিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ।
বিকালে তৃতীয় ও শেষ জানাজার পর মাদার্শা বুড়িপুকুর মসজিদের পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
বিভিন্ন মহলের শোক
অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিনের মৃত্যুতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শোক জানিয়েছে— সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি, সাতকানিয়া উপজেলা আইনজীবী সমিতি, সাতকানিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ-চট্টগ্রাম, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরাম, চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ, সাতকানিয়া ল’ইয়ার্স সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এএসএম বজলুর রশিদ মিন্টু।
এছাড়া সাতকানিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে সুকান্ত বিকাশ ধর, দিদারুল আলম, জাহেদ হোসাইন, হারুনর রশিদ, ইকবাল মুন্না, তারেক হোসাইন, সাইফুল ইসলাম, মিনহাজ বাঙালি, মো.আরিফুল ইসলাম, মামুনুল হক, মোহাম্মদ হোছাইন, মাসুদুল করিম, টিআই খাইরু,লোহাগাড়ার তাজউদ্দীন, দেলোয়ার হোসেন রশিদীসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন গভীর শোক জানিয়েছে।
চালের ক্রমাগত অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়ার কারণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা। অবিলম্বে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের ভাষ্য, প্রতি সপ্তাহেচালরে দাম ২-৫ টাকা করে বাড়িয়ে সর্বশেষ ভরামৌসুমে ৮-১০ টাকা বাড়ার কারণে সাধারণ মানুয়েরখাদ্য নিরাপত্তা হুমকরি মুখে পড়েছে। সরকার নিত্যপণ্যের বাজার তদারকিতে কিছু উদ্যোগথাকলেও চালে বাজার নিয়ন্ত্রণে সেধরণের দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় চালের অসাধু ব্যবসায়ীরাতাদের ইচ্ছা মতো দাম বাড়ায় ও কমায়। আবার খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) ও টিসিবিরফ্যামিলি র্কাড র্কাযক্রমও সক্রিয় নয়। সেকারণে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে জনজীবনে তীব্রসংকট নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) নগরীর জামালখান প্রেসক্লাব চত্ত্বরে “ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও” স্লোগান নিয়ে আয়োজিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে বিভিন্ন বক্তারা উপরোক্ত দাবি জানান।
যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরেরসভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), কনজ্যুমারস অ্যাসোসয়িশেন অব বাংলাদশে (ক্যাব) চট্টগ্রাম, প্রাণ ও আইএসডইি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যরাখনে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, এডাব চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতিও বিশিষ্ট নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু ও বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিবঅ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসানসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সমাবেশে চালের মূল্য ও সার্বিক মুল্যস্ফীতির নয়িন্ত্রণেসংকটপূর্ণ অবস্থা নিরসনে তারা কৃষকের কাছ থেকে সরকারের সরাসরি চাল ক্রয়ের আওতা বৃদ্ধি, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থাচালু, বাজার, উৎপাদন, মূল্য নির্ধারণ এবং ভোগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকের স্বার্থ রক্ষায়পদক্ষেপ গ্রহণ, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার সহায়তায়টিসিবি এবং ওএমএস কর্মসূচির আওতাবৃদ্ধির মাধ্যমে প্রয়োজনভিত্তিক সহায়তার উদ্যোগ ও মিল, করপোরেট গ্রুপসহ চালের বাজার যথাযথমনিটরিং এবং সিন্ডিকেট এর অপতৎপরতা রোধ করার মাধ্যমে দ্রুত বাজার পরিস্থিতিনিয়ন্ত্রণ করে চালের মূল্য ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আনার দাবি জানান।
সবুজ অরণ্য, পাহাড়, ঝর্ণার বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) যেমন সৌন্দর্যের স্বর্গভূমি তেমনি অসংখ্য বন্যপ্রাণী, পাখির আবাসস্থল। তবে এখানে অবাধেই চলছে বন্যপ্রাণী হত্যা। শাস্তির আওতায়ও আসছে না অপরাধীরা। ২০১২ সালে দেশের জীববৈচিত্র্য, বন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছিল বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন। যেখানে বন্যপ্রাণী শিকার, হত্যা, কেনাবেচা, বা এদের আবাসস্থল ধ্বংস নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া এই আইন লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জরিমানা, কারাদণ্ড। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদেও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। তবে এই আইনের কার্যকর প্রয়োগ নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। মায়া হরিণ, শূকর, বন মোরগ, অজগরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণীর এই আবাস্থলে নিয়মিতই হচ্ছে প্রাণী হত্যা। এসব প্রাণী হত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের। বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন শঙ্কার কথা। গত ২৪ জুন চবির ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মো. নুরুল হামিদ কানন একটি মৃত শূকরের ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও পোস্ট করে লিখেন, ‘শূকর পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না আপনাদের হাত থেকে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংকের উত্তর পাশের ব্রিজের নিচে একটি বন্য শূকরকে মাথায় আঘাত করে রাতে মেরে ফেলা হয়েছে। যারা এমন গর্হিত কাজ করেন তারা পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর।’ বুধবার (০২ জুলাই) সালমান শাহরিয়ার নামের এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘বুধবার (০২ জুলাই) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটা পাহাড় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় একটি চিতা বিড়ালের মৃত্যু হয়। চিতা বিড়াল বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে লাল তালিকায় আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চিতা বিড়ালের উপস্থিতি আছে জানা ছিল না। অজগর, মায়া হরিণ, বন্য শূকর, শিয়াল এসবের কথাই আগে জানা ছিল। তবে এই চিতা বিড়ালটির মৃত্যু কয়েকটি ভাবনার জন্ম দিয়েছে। ’
তিনি আরও লিখেন, ‘আজকের চবি যেখানে প্রতিষ্ঠিত এটা মূলত বন্য প্রাণীদেরই এলাকা। আমরা তাদের এলাকা দখল করেই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি। যেহেতু এখানে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা হয় সেহেতু এখানে বসবাসরত প্রাণীগুলোর প্রতিও আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। তাদের নিরাপদ, ঝঞ্ঝাটহীন জীবনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
শিক্ষার্থীদের মতে, ‘ মধ্যরাতে প্রাণীদের চলাচল ও খাবার সন্ধানের সময়। এই সময়ে যানবাহনের চলাচল সীমিত করা দরকার। উচ্চগতিতে গাড়ি চালানোও বন্ধ করে দেওয়া উচিত। প্রাণীর নিরাপদ আবাস গড়তে ক্যাম্পাসের ভেতরে গাড়ি চালকদেরও কিছু নির্দেশনা জানানো উচিত। তা ছাড়া জরিপ করে বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান সংরক্ষণ ও জীবনযাপনের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, গবেষকদের মতামত নিয়ে এই কাজগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত।’
জানতে চাইলে প্রাণীবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, ‘বন্যপ্রাণীগুলো যখন রাতে চলাচল করে তখন এগুলোর চোখে লাইট পড়লে তারা দেখতে পায় না। তখন গাড়ি চালকরা হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবেই তাদের মেরে দেয়। আমাদের এখানে যখন রাস্তা দিয়ে প্রাণীগুলো চলাচল করে, তখন তাদের রক্ষা করার চেয়ে মেরে ফেলার মানসিকতাই বেশি কাজ করে। আমি বিদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে দেখেছি বন্যপ্রাণী রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমাদের এখানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। বিলবোর্ড, প্লেকার্ড , কিংবা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যা যা প্রয়োজন তা আমরা করব। এনিয়ে আমরা প্রশাসনেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কমিটি আছে। আমাদের ক্যাম্পাস অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা। এখানে অনেক বন্যপ্রাণীর বসবাস আছে। এগুলো সচরাচর দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা পরিবেশ আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন মেনে চলি। এর আগেও বন্যপ্রাণী হত্যার দায়ে অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বন্যপ্রাণী হত্যার যে ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এছাড়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং কমিটিকে আমরা নির্দেশনা দিব।
সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে জাল সনদ এবং ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পদ গ্রহণসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে দশ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৯ জুন ২০২৫ তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক-১) মো. নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত স্মারকে এ তথ্য ওঠে এসেছে। এতে বলা হয়, সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলাধীন নবারুণ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে জাল সনদ এবং ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পদ গ্রহণ ও বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে আনীত অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। এ অবস্থায় তদন্ত প্রতিবেদনের মতামতের আলোকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর প্রমাণিত হওয়ায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ১৮.১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে পত্র প্রাপ্তির দশ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব প্রেরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
পুরো বাড়িতে শোকের মাতম। শোকে স্বজনেরা লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন অবস্থায় মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে মায়ের লাশ দাফনে অংশ নেবে তারাও। হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ নাছির উদ্দিন বিষয় দুটি নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায়। উপজেলার হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী লাবনী আক্তারের মা মারা গেছেন।
মা হারানো সায়মা আক্তার সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এবং লাবনী আক্তার সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার আগে অশ্রুসিক্ত চোখে কেন্দ্রে আসেন তারা।
স্থানীয় লোকজন জানায়, উপজেলার হতেয়া গ্রামের মো. রায়হান মিয়ার মেয়ে সায়মা আক্তারের-মা শিল্পী আক্তার (৪০) কিডনীজনিত সমস্যার কারণে ২ জুলাই রাত ৩টার দিকে নিজ বাড়িতেই মারা যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। অন্যদিকে উপজেলার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার। তার মা সফিরন (৪৫) বুধবার (০২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান। তিনি তিন মেয়ে ও এক ছেলের জননী ছিলেন। উভয়ে পরিবারের ছোট সন্তান।
লাবনীর মায়ের জানাজা সকাল সাড়ে ১১টার অনুষ্ঠিত হয় অন্যদিকে সায়মার মায়ের জানাজা বাদ যোহর অনুষ্ঠিত হয়।
হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন বলেন, সায়মা মেধাবী শিক্ষার্থী। তবে মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে আসা সত্যি কষ্টদায়ক। আল্লাহ যেন তার সহায় হোন।
নীলফামারী ল্যান্ড সার্ভে আদালতে ভুয়া খতিয়ান ও জাল দলিল তৈরি করে মামলা দায়েরের অভিযোগে প্রতারক মো. মতিয়ার রহমান শাহ্ (৫৮) নামে এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (০২ জুলাই) প্রতারক মতিয়ার রহমান আদালতে উপস্থিত হলে সদর আমলী আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। মতিয়ার সদর উপজেলার নগর দারোয়ানী এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
জানা যায়, ল্যান্ড সার্ভে ১৭৮/২০ নং মামলায় মতিয়ার রহমান জাল দলিল ও ভুয়া খতিয়ান (ডিপি ১৯৩) তৈরি করে আদালতে উপস্থাপন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী শামিমা পারভীন আদালতে মোকাবেলা করেন এবং আদালতে প্রমাণিত হয় যে উক্ত খতিয়ানটি ভুয়া। পরে আদালত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং সি.আর ২১৪/২৪ মামলাটি খারিজ করে প্রতারকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৫(সি) ধারায় ব্যবস্থা নিতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আদেশ প্রদান করেন।
বাদী পক্ষের অ্যাড. রাজীব ও শফিকুল ইসলাম সোহাগ, ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে নীলফামারী আমলী আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তিনি গত পাঁচ মাস ধরে পলাতক ছিলেন। একসঙ্গে, সি.আর ১০৯/২৫ নং মামলায় দণ্ডবিধির ৪৬৭/৪৬৮/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় আরও একটি মামলা চলমান রয়েছে, সেখানেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে দলিল জালিয়াতির।
মন্তব্য