পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২০২০ সালে ৫০ জন সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম কর্মী খুন হয়েছেন।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের মঙ্গলবার প্রকাশিত বাৎসরিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
তাতে বলা হয়, গত বছর হত্যার শিকার হয়েছিলেন ৫৩ জন সাংবাদিক। এবার কিছুটা কমার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্থবিরতাকে।
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, দুর্নীতি বা পরিবেশগত বিষয় নিয়ে ইনভেস্টিগেটিং রিপোর্ট করতে গিয়ে সাংবাদিকেরা বেশি খুন হন।
গত এক বছরে সাংবাদিক খুনে শীর্ষে রয়েছে মেক্সিকো, আট জন। এর পরের স্থানেই রয়েছে ভারত, চার জন। তৃতীয়স্থানে আছে ফিলিপাইন, তিন জন; চতুর্থস্থানে থাকা হন্ডুরাসে হত্যা করা হয়েছে চার জন সাংবাদিককে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলোতে সাংবাদিকেরা বেশি খুন হতো। গত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে, সহিংসতা নেই এমন দেশগুলোতে হত্যার সংখ্যা বেশি বেড়েছে।
২০১৬ সালে হত্যার শিকার মোট ৮১ সাংবাদিকের ৫৮ শতাংশই হয়েছিল যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোতে। সিরিয়া বা ইয়েমেনের মতো দেশগুলোতে এ বছর এমন হত্যার সংখ্যা নেমে এসেছে ৩২ শতাংশে।
অন্যদিকে, এ বছর সাংবাদিক খুনের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি (৬৮ শতাংশ) হয়েছে শান্তিপূর্ণ দেশগুলোতে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১১ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৯৩৭ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন।
আরও পড়ুন:জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়। এটা গণ অভ্যুত্থানের বাংলাদেশ। তাই আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, যে কোনো মূল্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করবো।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার রাজনীতি করি না। আমরা উন্নয়ন বলতে শুধু ঢাকার উন্নয়ন বুঝি না। আমরা মনে করি, ঠাকুরগাঁওয়ের মতো প্রান্তিক জেলাগুলো দেশের উন্নয়নে একই কাতারে এসে দাঁড়াবে, সেটাই উন্নয়ন। দেশে আঞ্চলিক বৈষম্য রেখে উন্নয়ন কোনো উন্নয়ন নয়।’
নাহিদ ইসলাম আজ দুপুরে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড গোলচত্বরে আয়োজিত এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এই পদযাত্রা শুরু করেছি। বিচার, সংস্কার এবং নতুন সনদের বাস্তবায়নে জনগণকেই আমাদের একমাত্র শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁও কৃষকদের জেলা, দেশে কৃষক নিপীড়ন রয়েছে। আমরা সেই দেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে কোনো গণনিপীড়ন থাকবে না।
সমাবেশে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ঠাকুরগাঁও অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শ্রম- সবক্ষেত্রেই এখানে উপেক্ষা চলছে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায় না, শ্রমিকরা পায় না তাদের ন্যায্য মজুরি। বাজেট বরাদ্দেও ঠাকুরগাঁওকে উপেক্ষা করা হয়।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে তরুণ সমাজ যে আশা জাগিয়েছিল, তা গত এক বছরে বাস্তব রূপ পায়নি। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের মতো মৌলিক দাবিগুলো এখনো অধরা। তাই আমরা ৬৪ জেলায় যাব, জনগণের মত শুনে একটি গণতান্ত্রিক ইশতেহার তৈরি করবো।’
তিনি জানান, শহীদ আবু সাঈদের কবর থেকে শুরু হওয়া এই পদযাত্রায় এনসিপির প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নিয়েছেন। জুলাই সনদ ও সংস্কার বাস্তবায়নের সংগ্রামে আমরা পিছপা হবো না।
সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপি নেতা রফিকুল ইসলাম কনক, আব্দুল মুনীম, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আসাদুল্লাহ গালিব, শ্রমিক উইং নেতা আকিব উদ্দিন ও যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা প্রমুখ।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ অন্যরা।
সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং-সাপেক্ষে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে।
এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া সভায় ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ ১৫ মার্চের পরিবর্তে ৩ ডিসেম্বর, ‘আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস’ ‘খ’ শ্রেণি হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং ২ এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
পাশাপাশি ওআইসি লেবার সেন্টারের সংবিধিতে সই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে এবং পারমাণবিক জ্বালানি এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) কর্তৃক ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বরে গৃহীত ‘ব্যয়িত জ্বালানি ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা বিষয়ক যৌথ কনভেনশনে’ সইয়ের প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়।
বেশ কয়েকদিন পর গতকাল সকালে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ পাঁচ থেকে বের হয়েছিল পাকিস্তানের লাহোর। তবে এক দিন পরই বায়ুমানে ফের অবনতি হয়েছে শহরটির। অন্যদিকে, কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে ঢাকার বাতাসের।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় লাহোরের বাতাসের একিউআই সূচক ছিল ১৫৩, দূষণের এই মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত।
কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
দীর্ঘদিন একিউআই স্কোর ১৫০ বা তার ওপরে থাকা লাহোরের বাতাসের মান গতকাল সকালে ১২৪-এ নামে। সেইসঙ্গে দূষিত শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ পাঁচ থেকেও বের হতে সক্ষম হয় শহরটি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই তা আবারও পুরনো জায়গায় ফিরে গেছে পাকিস্তানের এই শহর।
আজ বায়ুদূষণে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ শহর হয়েছে লাহোর। ১৫৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তার ঠিক উপরে রয়েছে মিসরের কায়রো। আর ১৮৯ একিউআই স্কোর নিয়ে আজ সকালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাস বিরাজ করছে চিলির সান্তিয়াগোতে।
কেমন আছে ঢাকা
এদিকে, বর্ষার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে ঢাকার বায়ুমান ‘মাঝারি’ অবস্থায় রয়েছে। গতকালও তা-ই ছিল, তবে আজ বাতাসের মানে তার চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে ঢাকার।
আজ সকালে ৭১ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকার ৩১তম স্থানে অবস্থান করছে ঢাকা। গতকাল সকালে এই স্কোর ছিল ৭৯।
সাধারণত বায়ুদূষণের সূচক (এইকিআই) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’।
এই সময়ে ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ুমানও ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে ছিল, তবে গতকাল সকালের মতোই তা ঢাকার চেয়ে কিছুটা খারাপ। একই সময়ে দিল্লির বাতাসের সূচক ৮৯ এবং দূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় অবস্থান ছিল ২০তম।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
পাবনা সাঁথিয়ায় উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের পূর্ব বনগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে ২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন— পাবনার সুজানগর উপজেলার শান্তিপুর এলাকার মৃত হাসেম মোল্লার ছেলে আবেদ আলী (৩৭) এবং আতাইকুলা থানার এলাকার কারিগর পাড়ার ইরাদ আলী প্রামানিকের ছেলে মনসুর আলী (৪০)।
মাধপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বাসটি ঢাকা থেকে পাবনার দিকে যাচ্ছিল, বিপরীত দিক থেকে আসছিল পাথরবোঝাই ট্রাকটি। এরপর ঘটনাস্থলে এসে যানদুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের ৩ যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন আরও অন্তত ১০ জন।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে ওসি বলেন, তাদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ভুয়া পাসপোর্ট ও কাগজপত্র তৈরি করে নারীদের বিদেশে পাচারের অভিযোগে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার রায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- বিএমইটি'র উপপরিচালক (বহির্গমন) মো. সাজ্জাদ হোসেন সরকার, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন উল্লাহ আকন্দ, জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা মো. নিজামউদ্দিন পাটোয়ারি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আজাদ হোসেন, এইচ. এ. ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার, মো. আনোয়ার হোসেন, কে. এইচ. ওভারসিজের ম্যানেজিং পার্টনার মো. সালাউদ্দিন, মক্কা ওভারসিজের মালিক মো. জামাল হোসেন, ম্যানেজিং পার্টনারের তাসনিম ওভারসিজ মো. আনোয়ার হোসেন ভূঞা এবং এস. এম. ম্যানপাওয়ারের পার্টনার একরামুল হক।
এর আগে বৃহস্পতিবা কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও বিভিন্ন এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে দুদক।
দুদক সূত্র জানা যায়, বিভিন্ন এজেন্সি পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে গমনেচ্ছু নারীদের ‘প্রত্যাগত’ হিসেবে দেখানোর জন্য ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে। প্রকৃত আবেদনকারীর পরিবর্তে অন্য ব্যক্তির পাসপোর্ট নম্বর রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে আবেদন দাখিল করা হয়। এসব জাল পাসপোর্টকে আসল হিসেবে উপস্থাপন করে বিএমইটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের সংরক্ষিত ডাটাবেজ যাচাই না করে, এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশে ৯ জন জাল পাসপোর্টধারী নারীকে ছাড়পত্র প্রদানে অনুমোদনের জন্য নোট উপস্থাপন করেন।
সূত্র আরও জানায়, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র লঙ্ঘন করে ২৫ বছরের কম বয়সি ৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ছাড়পত্র প্রদানে অনুমোদনের জন্য নোট উপস্থাপন করা হয়। এই কার্যকলাপে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে জালিয়াতি ও নিয়মবহির্ভূতভাবে ছাড়পত্র গ্রহণে সহায়তা করা হয়।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল দুজনই জীবন ঘনিষ্ঠ কবি ছিলেন। জীবন ঘনিষ্ঠ বলেই তারা মানুষের কল্যাণ ও মনুষ্যত্বের বিকাশের কথা বলেছেন।
বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দৈশিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল পাঠ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারে ছোটকাল থেকে বড় হয়েছি, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল দুজনেই সেখানে ছিল। প্রতিটি মানুষের জীবনে সুখ, দুঃখ, আনন্দ, উল্লাস, ভালোলাগা, ভালবাসা, সমস্যা থাকতে পারে। কারও জীবন সংগ্রামী কিংবা স্বাচ্ছন্দ্যের হতে পারে। সাহিত্য, কবিতা ও সঙ্গীত আমাদের জীবনের এ বিষয়গুলো লাঘব করতে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, মধ্যযুগের কবি বলেছেন, ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য’ নজরুলের কণ্ঠেও শুনেছি, ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই নহে কিছু মহীয়ান’, রবীন্দ্রনাথ বঙ্গজননীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ‘মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে।’
সি আর আবরার বলেন, বর্তমানে আমরা দৈশিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখব, মানুষ হিসেবে আমাদের যে কর্তব্য তা পালনে আমরা উদাসীন, নিষ্ক্রিয় ও ব্যর্থ। একজনের প্রতি অন্যজনের মানবিক সহানুভূতি, সহমর্মিতা আজ বিলুপ্ত প্রায়। নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থে অন্যকে নির্যাতিত ও নিপীড়িত করতে আমরা কুণ্ঠা বোধ করি না, দ্বিধান্বিত হই না। বিশ্বের চারিদিকে আজ রণ দামামা বেজে উঠেছে। ফলে লাঞ্ছিত হচ্ছে মানুষ, বিপন্ন হচ্ছে মানবতা। এই নৈরাজ্য ও অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধেই নজরুল রণ হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি সেই দিন হব শান্ত/যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না।’ রবীন্দ্রনাথ চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও মানুষের কল্যাণ বোধের প্রতি আস্থা হারাতে চাননি; বলেছিলেন, ‘মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ।’
ড. আবরার বলেন, এই প্রসঙ্গে দার্শনিক উইল ডুরান্টের একটি কথা স্মরণ করি। জীবনের শেষ বয়সে তিনি বেশ কয়েক খণ্ডে লিখেছিলেন ‘দ্য স্টোরি অব সিভিলাইজেশন।’ এই বইটি লেখার পর তিনি মানুষের ইতিহাস সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি যখনই মানুষের ইতিহাসের দিকে তাকিয়েছি, তখন মনে হয়েছে, এ যেন রক্তবাহী এক নদী। মানুষ পরস্পরের প্রতি নিষ্ঠুরতায়, ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে যে রক্ত ঝরিয়েছে তাই বয়ে নিয়ে চলেছে এই ভয়াবহ নদীর স্রোত। তা দেখে আমি বেদনায় বিষণ্ণ হয়েছি। কিন্তু আমি যখন এই নদীর দুই তীরের দিকে তাকিয়েছি, তখন দেখলাম, সেখানে মানুষ কবিতার ছন্দে, গানের সুরে, সমুন্নত ভাস্কর্যে জীবনের জয়গাথা রচনা করে চলেছে।’
ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণ বিষয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘(প্রত্যার্পণের জন্য দিল্লিকে) আমরা একটি চিঠি পাঠিয়েছি। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আবারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
তবে এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অনুশোচনা’ আছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘অনুশোচনা’ শব্দটিকে ‘লোডেড টার্ম’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘কে কতটুকু অনুতপ্ত, তা আমি জানি না। তবে আমরা বিষয়টিকে এভাবেই দেখছি যে, প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আবারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে একটি কূটনৈতিক নোট পাঠায়, যেখানে প্রত্যার্পণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা হয়। ভারত সরকার তখন তা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে।
পানি বণ্টন ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি এবং আগামী বছর মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলা ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের মতো বিষয়গুলো দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে বলে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
‘এই বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য এবং আমরা সেই পথেই এগোচ্ছি,’ বলেন উপদেষ্টা।
সম্প্রতি ঢাকা, বেইজিং ও ইসলামাবাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠককে গণমাধ্যমে সার্কের বিকল্প জোট হিসেবে প্রচার করার বিষয়টিকেও নাকচ করে দেন মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই ব্যাখ্যা মোটেও সঠিক নয়। তিনি আরও যোগ করেন, ‘বৈঠকটি কখনোই সার্কের বিকল্প ছিল না। এটি ছিল সহযোগিতার কিছু ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক এবং এটি কোনোভাবেই কোনো জোট নয়।’
মন্তব্য