মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনার জন্য বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে পরস্পরের প্রতি ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এক মন্ত্রী।
সেনা শাসক পারভেজ মোশাররফের আমলে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া জাভেদ জব্বারের দাবি, ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে অবাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে বাঙালিরা।
তিনি মুক্তিযুদ্ধকে তুলনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের সঙ্গে। তার দাবি, সে সময় বাঙালিরা অবাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, ভারত সুযোগ নিয়ে ‘দুই ভাইয়ের মধ্যে’ বিভেদ তৈরি করেছে। আর ভৌগলিক দূরত্বের কারণে পাকিস্তান তার মাটি রক্ষা করতে পারেনি।
যুদ্ধ চলাকালে তার দেশ যে হত্যা, ধ্বংস, নারী নির্যাতন করেছে, তার বর্ণনা উপেক্ষা করে, এক শব্দে বর্ণনা করেছেন সাবেক পাকিস্তানি মন্ত্রী।
শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে দারুণ মিল আছে দাবি করে অদূর ভবিষ্যতে ‘সোনার বাংলা’ ও ‘সোনার পাকিস্তানের’ এক হওয়ার খায়েশও জন্মেছে পাকিস্তানের এই রাজনীতিক ও কলাম লেখকের মধ্যে।
বাংলাদেশের বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানে পালিত হয় ঢাকা পতন দিবস। তবে গত কয়েক বছর ধরে এই দিনটিকে স্মরণ করাও ছেড়ে দিয়েছে পাকিস্তান। যদিও সে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে নানা ধরনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ছাপা হয়, যাতে ৭১ এর দায় দেয়া হয় বাঙালিদের, দায় দেয়া হয় মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করা ভারতকে।
‘ঢাকা পতনের’ ৪৯ তম বার্ষিকীতে বুধবার পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ‘দ্য ডন’ ছেপেছে সাবেক মন্ত্রীর কলাম। এর শিরোনাম করা হয়েছে, ‘ফ্রম ১৯৭১ টু, ২০২১’।
এতে বলা হয়, আগামী বছর বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক ও নাগরিক সমাজ পর্যায়ে সম্পর্ক বাড়াতে পারে। আর পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তান ক্ষমা চেয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারে।
পাকিস্তানি মন্ত্রীর এ ক্ষেত্রে পরামর্শ, প্রথমে ক্ষমা চাইবে পাকিস্তান। এতে গলবে বরফ।
তিনি লেখেন, বাংলাদেশ যদি ‘অবাঙালিদের হত্যার জন্য’ আনুষ্ঠানিক ক্ষমা নাও চায়, তাহলেও সম্পর্ক উন্নয়নে এ দায় পাকিস্তানের ওপর থেকে যাবে।
একাত্তরের নৃশংসতার জন্য পাকিস্তান আনুষ্ঠানিক ক্ষমা না চাইলেও দেশটির সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ও পারভেজ মোশাররফ দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে উল্লেখ করেন। তবে তার দেশে বুদ্ধিজীবী, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও রাজনীতিকদের একাংশ আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার পক্ষে সোচ্চার বলেও উল্লেখ করেন জাবেদ জব্বার।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা যে নজিরবিহীন হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংস, নারী নির্যাতন করেছিল, তাকে ‘বেশি বাড়াবাড়ি’ হিসেবে উল্লেখ করেন দেশটির সাবেক এই মন্ত্রী।
তার দেশের সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতনের কথা উল্লেখ না করলেও জাভেদ জব্বার দাবি করেছেন, তাদের পক্ষে থাকা লোকদের নাকি গণহত্যা করা হয়েছে। একাত্তরের ১ মার্চ থেকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা’ (স্বাধীনতাকামী বাঙালি) এই অংশে অবাঙালিদের উপর ‘নির্মমভাবে’ চড়াও হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
‘তিক্ত অতীত’ ভুলে গিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ ভবিষ্যত গড়ার তাগিদ দেয়া সাবেক পাকিস্তানি মন্ত্রী বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের সমালোচনাও করেন।
তার দৃষ্টিতে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে অবিচার করে কয়েকজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের দুটি প্রজন্মের মধ্যে পাকিস্তান প্রশ্নে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
জাভেদ জব্বারের অভিযোগ, গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞের ব্যাপক প্রচার চালিয়ে পাকিস্তান বিদ্বেষী মনোভাব তৈরি করে রেখেছে।
জাভেদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করলেও তাদের সৈন্যরা যে বীরত্ব দেখিয়েছে সেটা ভুলা যাবে না। তার দাবি, তাদের ছিল মাত্র ৩৪ হাজার নিয়মিত এবং ৪৫ হাজার অনিয়মিত সেনা। অন্যদিকে বিপক্ষে ছিল আড়াই লাখ ভারতীয় সেনা এবং দেড় লাখ মুক্তিযোদ্ধা।
‘দায় ভারতের’
মুক্তিযুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী জব্বার বলেন, ১৮৬১ থেকে ১৮৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চলা গৃহযুদ্ধের মতোই ছিল একাত্তর। যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের পর, সবগুলো রাজ্য এক থাকলেও, পূর্ব আর পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব ছিল, হাজার মাইলের বেশি। দূরত্ব বেশি হওয়ায়, পূর্ব অংশের বাসিন্দারা সুযোগ সুবিধাও কম পেতেন পশ্চিমের তুলনায়। আর এই অবস্থার সুযোগ নিয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এবং তাদের সহযোগিতা করেছে ‘ভারতীয় চররা’।
পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রীর দাবি, ২০২১ সাল তার দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের জন্য এক সুযোগ নিয়ে আসতে পারে। তার দাবি, ১৯৭১ সালে বাঙালি নিধন তাদের উদ্দেশ্য ছিল না, লক্ষ্য ছিল কেবল দেশের ঐক্য অঁটুট রাখা।
সোনার বাংলা ও ‘সোনার পাকিস্তান’ এক হওয়ার স্বপ্ন
কলামে পাকিস্তানি রাজনীতিক জব্বার লেখেন, বাস্তবতা মেনে অতীত ভুলে দুই দেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে, লাভবান হতে পারে।
তিনি লেখেন, “দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় দুই মুসলিম দেশ ২০২১ সাল থেকে নতুন ভবিষ্যত গড়ার জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে পারে। সামরিক, সাংস্কৃতিক, শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন খাতে বিনিময়ের মাধ্যমে পাকিস্তানের সোনালী মাটির সঙ্গে সোনার বাংলা মাটি ও আত্মার এক নতুন বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে চমৎকার ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারে।’
বাংলাদেশের বিছিন্ন হয়ে যাওয়ায়টা প্রতিটা পাকিস্তানির এখনও দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া দেয় উল্লেখ করে জব্বার বলেন, ‘পাকিস্তান সরকারের অভ্যন্তরীণ কিছু মতবিরোধে দুই দেশের কূটনীতিক সম্পর্ক এগুচ্ছে না।’
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের সংঘাত নিষ্পত্তির শর্তাবলীতে রাশিয়া একমত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ফ্লোরিডা যাওয়ার আগে ওয়াশিংটনের নিকটস্থ জয়েন্ট বেজ অ্যান্ড্রুজে সাংবাদিকদের ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা রাশিয়া থেকে বেশ কিছু ভালো খবর পেয়েছি। আমি মনে করি, রাশিয়া আমাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চলেছে, আমি এটা আশা করি।’
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা তাস জানায়, কী খবর পেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প।
মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে কথোপকথনের বিষয়টি উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি এবং ইউক্রেন অপেক্ষা করছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি এবং শেষ পর্যন্ত একটি চুক্তি নিয়ে আমি রাশিয়া থেকে বেশ কিছু ভালো অনুভূতি পাচ্ছি।’
এর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, পুতিন বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে অভ্যর্থনা জানান এবং তাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে বলেন।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগতদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী একটি গোষ্ঠী এমন তথ্য দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর অনুসারে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির ১৪ বছরে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা এটি।
ব্রিটিশভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, ৭৪৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ সদস্য ও আসাদসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠীর ১৪৮ জন নিহত হন। খুব কাছ থেকে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়।
এ ছাড়া লাতাকিয়া শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ও খাবার পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ সংঘাতের শুরু হয়েছে, যা সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে মাস তিনেক আগে সিরিয়ার কর্তৃত্ব গ্রহণ করে বিদ্রোহীরা।
সরকার জানিয়েছে, আসাদ বাহিনীর অবশিষ্টাংশের হামলার জবাব দিচ্ছে তারা। আর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার জন্য ব্যক্তিগত হামলার ঘটনাকে দায়ী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘কৌশলগত বিটকয়েন রিজার্ভ’ তৈরির নির্বাহী এক আদেশে সই করেছেন।
হোয়াইট হাউস ক্রিপ্টো এবং এআই জার ডেভিড স্যাকস বলেছেন, রিজার্ভটি কেবল ফৌজদারি এবং দেওয়ানি বাজেয়াপ্তির মামলায় জব্দ করা বিটকয়েন দিয়ে অর্থায়ন করা হবে, যাতে করদাতাদের কোনো আর্থিক বোঝা বহন করতে না হয়।
এ আদেশে অন্যান্য বাজেয়াপ্ত ক্রিপ্টোকারেন্সি সংরক্ষণের জন্য ট্রেজারি বিভাগ পরিচালিত আমেরিকান ডিজিটাল সম্পদ মজুতও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, অনুমান অনুসারে যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রায় ২ লাখ বিটকয়েন নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও এর পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা কখনও করা হয়নি।
ট্রাম্পের আদেশে ফেডারেল ডিজিটাল সম্পদের ধারণক্ষমতার একটি বিস্তৃত হিসাব রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং রিজার্ভ থেকে বিটকয়েন বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটিকে মূল্যের স্থায়ী ভান্ডার হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে বিটকয়েন বিলিয়নেয়ার টাইলার উইঙ্কলভস লিখেন, ‘ওএক্সআরপি, এসওএল অথবা এডিএর বিরুদ্ধে আমার কিছু বলার নেই, কিন্তু আমি মনে করি না যে এগুলো স্ট্র্যাটেজিক রিজার্ভের জন্য উপযুক্ত।
‘বিশ্বে এ মুহূর্তে কেবল একটি ডিজিটাল সম্পদই সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং সেই ডিজিটাল সম্পদ হলো বিটকয়েন।’
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার শেষের দিকে এসওএল, ইথার এবং বিটকয়েনের দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে, যেখানে এডিএর দাম প্রায় ১২ শতাংশ কমেছে।
ঘোষণার আগে ক্যাসেল আইল্যান্ড ভেঞ্চারের নিক কার্টার সিএনবিসিকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু বিটকয়েন-রিজার্ভের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলে বিটকয়েনকে বিশ্বব্যাপী সম্পদ হিসেবে অনুমোদন করা হবে।
আরও পড়ুন:ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ রবিবার বলেছেন, লন্ডনে সংকট নিয়ে আলোচনার পর ইউক্রেনের আকাশ, সমুদ্র ও জ্বালানি অবকাঠামোতে এক মাসের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছে ফ্রান্স ও ব্রিটেন।
প্যারিস থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ফ্রান্সের লে ফিগারো সংবাদপত্রের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন, এ ধরনের যুদ্ধবিরতি, প্রাথমিকভাবে অন্তত স্থল যুদ্ধকে অন্তর্ভুক্ত করবে না।
তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা হবে।
মাখোঁ আরও বলেন, ‘আগামী সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের মাটিতে ইউরোপীয় সেনা থাকবে না।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, ওয়াশিংটনের পরিবর্তনশীল অগ্রাধিকার ও রাশিয়ার সামরিকীকরণের প্রতিক্রিয়া জানাতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৩ থেকে ৩.৫ শতাংশের মধ্যে বৃদ্ধি করা উচিত।
তিনি সংবাদপত্রটিকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে, রাশিয়ানরা তাদের জিডিপির ১০ শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয় করেছে।
‘তাই আমাদের পরবর্তী সময়ে কী হবে তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় রবিবার জানিয়েছে, পবিত্র রমজান মাস ও এপ্রিলের মাঝামাঝি ইহুদিদের বসন্তকালীন উৎসব ‘পাসওভার’ ছুটির দিন পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইসরায়েল।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতের ঠিক পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, রমজানে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ইসরাইল, যা মার্চের শেষের দিকে শেষ হবে এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে আট দিনের ইহুদি পাসওভার পালন করা হবে।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শনিবার শেষ হয়েছে। এর পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পক্ষ থেকে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সায় থাকার কথা জানানো হলো।
এই চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্দেশ্য ছিল গাজায় এখনও থাকা কয়েক ডজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের পথ প্রশস্ত করা।
নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের মতে, ইসরায়েল ও হামাস আলোচনার অচলাবস্থায় রয়েছে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তাবলীতে তাৎক্ষণিকভাবে তারা একমত হতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে উইটকফ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য