সরকারবিরোধীদের টানা আন্দোলন দমাতে রাজ পরিবারের সমালোচনা বন্ধের বিতর্কিত আইন ফের বলবৎ করেছে থাইল্যান্ড।
লিজ-মেজেস্টি (রাজতন্ত্রের অবমাননা) আইনের অধীনে করা মামলায় এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে তলব করা হয়েছে। মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হবে।
দুই বছরেরও বেশি সময় পর এই আইনে মামলা হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচার পদত্যাগ, সাংবিধানিক সংস্কার ও রাজতন্ত্রের ক্ষমতা খর্বের দাবিতে কয়েক মাস ধরে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে দেশটির গণতন্ত্রমনা জনগণ আন্দোলন করে আসছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সামনের সারির ২২ বছর বয়সী ছাত্রনেতা পারিত চিওয়ারাক জানান, লিজ-মেজেস্টি আইনে করা মামলায় তাকে তলব করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অন্য মামলাও হয়েছে। তিনি মোটেও ভীত নন।
চিওয়ারাক এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না।’
থাইল্যান্ডের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকার আইনজীবী আনন নাম্পা, পানুসায়া সিথিজিরাওয়াত্তানাকুলসহ আন্দোলনের কমপক্ষে ছয় নেতার বিরুদ্ধে লিজ-মেজেস্টি আইনে মামলা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ক্রাউন প্রপার্টি ব্যুরোর (রাজতন্ত্রের পক্ষে রাজ পরিবারের সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা) সামনে পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভের আগের দিন লিজ-মেজেস্টির অধীনে মামলা পুনঃপ্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নিল থাই সরকার।
বছরের বেশির ভাগ সময় জার্মানিতে কাটানোয় দীর্ঘদিন ধরে সমালোচিত হয়ে আসছেন থাইল্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালংকর্ন।
সম্প্রতি রাজতন্ত্রের বর্ধিত ক্ষমতা কমাতে ও রাজ সম্পত্তিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে বাজিরালংকর্নের ঘোষণার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আন্দোলন চলছে থাইল্যান্ডে। এ সিদ্ধান্ত বাজিরালংকর্নকে দেশটির সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিতে পরিণত করবে।
গত সপ্তাহে ব্যাংককে পার্লামেন্ট অভিমুখে মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৪১ জন আহত হয়।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শাসক গোষ্ঠী হামাস সরকারের প্রধান রাহী মুস্তাহাসহ আরও দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে হত্যার দাবি করেছে দখলদার ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, গাজায় হামাস সরকারের প্রধান রাহী মুস্তাহা এবং হামাস কর্মকর্তা সামেহ আল-সিরাজ ও সামি ওদেহকে লক্ষ্য করে তিন মাস আগে হামলা চালানো হয়। এখন তারা নিশ্চিত হয়েছে যে ওই হামলায় উল্লিখিত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের সংবাদ মাধ্যম টাইমস অফ ইসরায়েল এ খবর জানিয়েছে।
আইডিএফ জানায়, যখন হামলা চালানো হয় তখন এই তিনজন গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি সুড়ঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি বাহিনী আরও দাবি করেছে, যে সুড়ঙ্গে গাজার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেটিতে অনেক সুযোগ-সুবিধা ছিল এবং দীর্ঘদিন অবস্থান করার মতো রসদ সেখানে মজুদ রাখা ছিল।
হামাসের যোদ্ধাদের যেন মনোবল না ভাঙে সেজন্য এতদিন হামাস এই তথ্য গোপন রেখেছিল বলেও দাবি করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসক গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় গত বছরের ৭ অক্টোবর। দীর্ঘ এক বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েল। এর মধ্যে হামাসের যোদ্ধা, কর্মকর্তা ছাড়াও নারী-শিশুসহ হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ রয়েছেন।
যুদ্ধের শুরুতে ইসরায়েল জানিয়েছিল, গাজা থেকে হামাসকে তারা পুরোপুরি নির্মূল করে দেবে। তবে এখন পর্যন্ত দখলদার ইসরায়েল তাদের সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। দখলদার রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে আজও পূর্ণোদ্যমে লড়ে যাচ্ছে হামাস।
আরও পড়ুন:লেবাননের রাজধানী বৈরুতের প্রাণকেন্দ্রে বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে ইসরায়েলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, লেবানন সীমান্তে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে বছর ধরে চলা সংঘাতে ইসরায়েলি সেনারা সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হওয়ার পর ওই হামলা চালায় তেল আবিব।
ইসরায়েলের ভাষ্য, বৈরুতে নিখুঁত বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটি।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানান, তারা বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
অন্যদিকে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানায়, মধ্যাঞ্চলীয় বাশুরা এলাকায় লেবাননের পার্লামেন্টের কাছে একটি ভবনকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। লেবাননের প্রাণকেন্দ্রের এত গভীরে গত এক বছরে এটিই দেশটির প্রথম হামলা।
দক্ষিণ ইসরায়েলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার শাসক দল হামাসের হামলার পর একই দিন ফিলিস্তিনের উপত্যকাটিতে পাল্টা হামলা শুরু করে তেল আবিব।
প্রায় এক বছর ধরে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় সাড়ে ৪১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। হামাসের ওই হামলায় নিহত হয় এক হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদের কথা জানিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকেই ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অবস্থান লক্ষ্য করে প্রায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এতে নতুন মাত্রা যোগ করে মঙ্গলবার তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।
লেবাননের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় ছয়জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি সাতজন আহত হয়।
দেশটির বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, ভবনটির দ্বিতীয় তলায় জ্বলছে আগুন।
ছবিটির সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
লেবাননের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহর দাহিয়েহতেও তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া যায়, যে এলাকায় গত সপ্তাহে হামলায় প্রাণ হারান হিজবুল্লাহর প্রধান নাসরাল্লাহ। এলাকাটিতে বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ পাওয়া যায়।
এর আগে বুধবার দিনভর দক্ষিণাঞ্চলীয় উপশহরে ডজনের বেশি হামলা চালায় ইসরায়েল।
দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ ঘরবাড়ি ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে যাওয়া লেবাননের গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের পরবর্তী নোটিশের আগ পর্যন্ত না ফেরার অনুরোধ করেছে।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ বা অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। একইসঙ্গে দেশটিতে প্রবেশে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সরাসরি নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনে ইসরায়েল বুধবার এমন পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেছে, ‘যিনি ইরানের ভয়াবহ আক্রমণের সরাসরি নিন্দা জানাতে পারেন না, তিনি ইসরায়েলের মাটিতে পা রাখার যোগ্য নন।
‘গুতেরেস এখন পর্যন্ত ৭ অক্টোবর হামাসের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ও যৌন সহিংসতার নিন্দা করেননি। তিনি হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেও ঘোষণা দেননি।’
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘হামাস, হিজবুল্লাহ, হুথি ও ইরান বৈশ্বিক সন্ত্রাসের মূল কেন্দ্র। তিনি এমন একজন মহাসচিব যিনি এদের মতো সন্ত্রাসী, ধর্ষক ও হত্যাকারীদের সমর্থন দেন। তাকে জাতিসংঘের ইতিহাসে একটি কলঙ্ক হিসেবে স্মরণ করা হবে।
‘অ্যান্তোনিও গুতেরেস থাকুন বা না থাকুন, ইসরায়েল নিজের নাগরিকদের রক্ষা করতে এবং জাতীয় মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।’
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল লেবাননে বিমান হামলার পর স্থল অভিযান শুরুর পর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলের দিকে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। গত সাত মাসের মধ্যে ইসরায়েলে ইরানের চালানো এটি দ্বিতীয় হামলা। হিজবুল্লাহ ও হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ইরান।
আরও পড়ুন:লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাতের মাত্রা বৃদ্ধির মধ্যে মঙ্গলবার ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
আল জাজিরা জানায়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে বেজেছে বিমান হামলার সাইরেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানান, হামলায় নিহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলের আকাশসীমায় আর কোনো হুমকি দেখছে না সেনাবাহিনী।
তিনি ইসরায়েলের জনগণের উদ্দেশে বলেন, তারা এ মুহূর্তে নিরাপদ। চাইলে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যেতে পারেন তারা।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষ জানায়, তেল আবিব এলাকায় সামান্য আহত হয়েছেন অন্তত দুজন মানুষ।
এর আগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সতর্ক করে বলেছিল, ইরান থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সম্ভাবনা প্রবল।
ওই সতর্কবার্তায় জনগণকে নিরাপদ কক্ষগুলোতে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি) জানায়, গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা, চলতি বছর হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার জবাবে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
আইআরজিসির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসমাইল হানিয়া, হাসান নাসরাল্লাহ ও (আইআরজিসি গার্ডস কমান্ডার) নিলফরোশানের শাহাদাতের জবাবে আমরা দখলকৃত ভূখণ্ডের (ইসরায়েল) প্রাণকেন্দ্রকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছি।’
আরও পড়ুন:কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদী সানে তাকাইচিকে রান-অফ ভোটে পরাজিত করার কয়েকদিন পর জাপানের সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শিগেরু ইশিবা মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্ট কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। টোকিও থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
সংখ্যাগরিষ্ঠ রক্ষণশীল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) নেতা ইশিবা নিরাপত্তা পলিসি বিষয়ে তার গভীর জ্ঞানের জন্য পরিচিত।
সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং একটি এশিয়ান ন্যাটো গঠনে ইশিবার আহ্বান বেইজিংকে ক্ষুব্ধ করতে পারে। তবে তিনি চীনের বিষয়ে তার কথায় সতর্ক।
ক্ষমতাসীন দল শিগেরু ইশিবাকে নেতা নির্বাচিত করার পর শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি জাপানের ভূখণ্ড রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।
‘জাপান চায় আমরা সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করি এবং এই অঞ্চলে কীভাবে শান্তি স্থাপন করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা শুরু করি।’
চীন ও রাশিয়ার জাপানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশের পর উত্তেজনা চলছে। একটি জাপানি যুদ্ধজাহাজও গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে যাত্রা করে।
ইশিবা এবার একজন জাতীয়তাবাদীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার আগে তার এলডিপি’র নেতৃত্ব পেতে চার বার ব্যর্থ হন। এর মধ্যে একটি চেষ্টা ছিল তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শিনজো আবের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির অধ্যাপক ইউ উচিয়ামা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ইশিবা তার ‘আবের অধীনে এলডিপি নীতির স্পষ্টভাষী সমালোচনা’ দিয়ে দলের হেভিওয়েটদের বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলেন।
কিন্তু সম্প্রতি তিনি ‘তহবিল কেলেঙ্কারি এবং অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে এলডিপির একটি নতুন অধ্যায় সূচনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন’, যা তার পক্ষে কাজ করতে পারে।”
৬৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ দুর্যোগ প্রতিরোধের দায়িত্বে একটি সরকারি সংস্থা প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করেছেন।
উল্লেখ্য, জাপান এটি ভূমিকম্প-প্রবণ দেশ এবং এটি প্রায়ই টাইফুন ও ভারী বৃষ্টিপাতের শিকার হয়।
ইশিবা বলেছেন, ২৭ অক্টোবর তিনি সাধারণ নির্বাচন ডাকতে চান।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামগুলোর ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে’ স্থল অভিযান শুরু করার কথা জানিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধরত ইসরায়েল।
দেশটির সেনাবাহিনী মঙ্গলবার এ কথা জানায়।
হিজবুল্লাহ দেশটির সীমান্তে শত্রু সেনাদের লক্ষ্যবস্ত করার ঘোষণার পর ইসরায়েল এ স্থল অভিযান শুরু করে।
লেবাননের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, দক্ষিণ বৈরুতে ইসরায়েল অন্তত ছয় দফা হামলা চালায়।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, রাজধানী দামেস্কের আশপাশেও ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে।
সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করেই ইসরায়েল এ হামলা চালায় এবং হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, দক্ষিণ লেবাননের সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলোয় হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও শুরু হয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এ অভিযানের অনুমতি দেয়।
সামরিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য, এর মধ্য দিয়ে লেবাননে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের লড়াই নতুন মাত্রা পেয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার ইসরায়েলের স্থল অভিযানের বিরোধিতা করে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
হিজবুল্লাহ বলেছে, ইসরায়েলের স্থল হামলা মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
এদিকে সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা সানা বলেছে, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাজধানী দামেস্ক এলাকায় তিন দফা হামলা প্রতিহত করেছে, তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
গত সপ্তাহে রাজধানী বৈরুতসহ লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে জোরালো হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গত শুক্রবার বৈরুতের দক্ষিণে ইসরায়েল বোমা হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করে।
ইসরায়েলি হামলার কারণে লেবাননে এরই মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হলে হিজবুল্লাহর সঙ্গে তেল আবিরের পুরোনো বিরোধ তীব্র রূপ নেয়।
হিজবুল্লাহ হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছিল। ইসরায়েলও এসব হামলার পাল্টা জবাব দিয়ে আসছিল।
এমন বাস্তবতায় লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সাম্প্রতিক প্রস্তাবের ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি এবং লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:নেপালে ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ১৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত অবস্থায় ৯৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৩১ জন।
সোমবার দেশটির পুলিশ জানায়, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী কাঠমান্ডু। শহরটিতে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সূত্র: সিনহুয়া/ইউএনবি
নেপালের ৮০টি জাতীয় মহাসড়কের মধ্যে ৪৭টি বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ভৌত অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয়।
এছাড়াও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও সেচ সুবিধা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার আনুমানিক পরিমাণ তিন কোটি ২৬ লাখ ডলার।
জ্বালানি, পানিসম্পদ ও সেচ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, শুক্র ও শনিবার টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগে জলবিদ্যুৎ ও সঞ্চালন প্রকল্পে আনুমানিক তিন বিলিয়ন রুপি (২২.৫ মিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে নদী নিয়ন্ত্রণ ও সেচ প্রকল্পে আনুমানিক ১.৩৫ বিলিয়ন রুপি (১০.১ মিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হয়েছে।
কর্মকর্তা আরও জানান, বন্যায় ৬২৫.৯৬ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ১১টি চালু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য চালু বিদ্যুৎকেন্দ্রও বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখতে হয়েছে। এতে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, যা দেশের চালু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট সক্ষমতার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এছাড়াও নির্মাণাধীন ১৫টি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে।
তবে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কাজ দ্রুতগতিতে শুরু হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্যা ও ভূমিধসে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হবে এবং নিহতদের পরিবার ও আহতদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।
উদ্ভূত দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে দেশের সব স্কুল-কলেজ তিনদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
মন্তব্য