যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মিসর, ওমান, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। তবে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব।
আরব নিউজ ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুটি প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
রোববার আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছে ইউএই, ওমান, জর্ডান, লেবানন, মিশর ও ইরাকের রাষ্ট্রপ্রধানরা।
ইউএইর আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বাইডেন ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়ে এক টুইট বার্তায় লিখেন, ‘ইউএই ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবেই শক্তিশালী বন্ধুত্ব রয়েছে। আমরা আশা করছি এটি আরও জোরদার হবে।’
বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল সিসি। সিসির মুখপাত্র বাসাম রাদি এক বিবৃতিতে দুটি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের’ মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের আস্থা অর্জন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় জো বাইডেনের প্রতি অভিনন্দনপত্র পাঠিয়েছেন ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিক আল সাইদ।
জর্ডান ও যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে প্রত্যাশা করে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাইডেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন আশা করছেন, বাইডেনের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে ভারসাম্য ফিরে আসবে।
ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালিহ শনিবার এক টুইটবার্তায় লিখেন, ‘বাইডেন ইরাকের পরীক্ষিত বন্ধু। তিনি উন্নত ইরাক গড়ে তোলার অংশীদার।’
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাইডেন ভূমিকা রাখবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তবে বাইডেনের জয়ে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
রোববার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে বাইডেনের কাছে পরাজিত রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ও প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। তার বিরুদ্ধে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সালমানের নেতৃত্বে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ইয়েমেনে যুদ্ধের পেছনেও ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন আছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এমন অবস্থায় ট্রাম্পের পরাজয় সৌদি যুবরাজকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে এর আগে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন বাইডেন। খাশোগজি হত্যাকাণ্ডের অধিকতর স্বচ্ছ তদন্ত ও ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধেরও দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে এক ধরনের অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিয়ে সৌদি পত্রিকা ওকাজ লিখেছে, ‘বাইডেন জেতার পরে কী ঘটবে তার জন্য এখন অপেক্ষা করছে ও প্রস্তুতি নিচ্ছে এই অঞ্চল।’
তবে একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার সামর্থ্য আছে সৌদি প্রশাসনের।
অস্ট্রেলিয়ায় যেসব বিদেশিরা বাড়ি কিনে তা খালি রাখবেন তাদের ওপর কর বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
স্কাই নিউজ অস্ট্রেলিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কোষাধ্যক্ষ জিম চালমারস জানান, বাড়ি ভাড়ার সংকট কমানোর চেষ্টায় ও ধনী শহরতলিতে তথাকথিত ‘ভূতের বাড়ি’ (খালি বাড়ি) থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য রোববার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার অনেক বাসিন্দাদের থাকার জন্য বাড়ির প্রয়োজন, কিন্তু সে অনুযায়ী পর্যাপ্ত বাড়ি নেই শহরে।’
বিদেশিদের ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিষ্ঠিত বাড়ি কেনার থেকে নিষেধ করা হয়েছে, যদি না তারা কাজ বা অধ্যয়নের জন্য সেখানে থাকেন। তারা যখন চলে যান, তখন তাদের সাধারণত বাড়ি বিক্রি করতে হয়।
এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যারা ভাড়া দেয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি তৈরি করতে চান তাদের দ্বারা প্রদত্ত ফি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নতুন আইনে ‘ভূতের বাড়ির’ বিদেশি মালিকদের জন্য কর তিনগুণ বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান জিম চালমারস।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের জামাকাপড় খুলে আন্ডারওয়্যার পরানোর পক্ষে সাফাই গেয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মার্ক রেজেভ।
আল জাজিরা রোববার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাদের পাহারার মধ্যে চোখ বাঁধা অবস্থায় হাঁটু গেড়ে বসে থাকা প্রায় পুরোপুরি নগ্ন ফিলিস্তিনিদের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর থেকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কাই নিউজকে মার্ক রেজেভ বলেন, ভেতরে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছেন কি না, তা দেখতে ফিলিস্তিনিদের জামা খোলা হয়। উষ্ণ আবহাওয়ায় এটা গুরুতর কিছু নয়।
তিনি বলেন, ‘প্রথমত মনে রাখতে হবে, এটা মধ্যপ্রাচ্য এবং অপেক্ষাকৃত উষ্ণ জায়গা এবং বিশেষত রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে জামা খুলতে বলাটা সন্তোষজনক না হলেও এটি গুরুতর কিছু নয়।’
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, সাম্প্রতিক ঘটনায় প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনি পুরুষকে প্রায় পুরোপুরি নগ্ন করেন ইসরায়েলি সেনারা। এসব ফিলিস্তিনির কয়েকজনকে পরবর্তী সময়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
ওই ঘটনার ভিডিও ও ছবি দেখে তীব্র নিন্দা জানান ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে একে ‘অপমানজনক’ ও ‘নিষ্ঠুর’ হিসেবে আখ্যা দেয়।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৭৫তম বার্ষিকী ১০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে ১৩টি দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধিনিষেধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, মানবাধিকারের অপব্যবহার ও লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িতদের দায়ী করতে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নিচ্ছে। দেশটির স্টেট ও ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট শুক্রবার ১৩ দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধিনিষেধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, বিধিনিষেধ ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ও ক্ষতিকর ধরনকে (যেমন: সংঘাতজনিত যৌন সহিংসতা, জোরপূর্বক শ্রম ও আন্তদেশীয় নিপীড়ন) সামনে এনেছে।
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ সুদান, আফগানিস্তান, ইরান, চীন, জিম্বাবুয়ে, সিরিয়া, উগান্ডা, সুদান, হাইতি ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি)।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের তীব্র চাপের মধ্যে শুক্রবার গাজা বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর বিষয়ে বৈঠকে ভোট গ্রহণ করা হবে।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এবং ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের মধ্যে জীবনযাত্রার অবস্থাকে বিপর্যয়কর হিসেবে বর্ণনা করা সত্ত্বেও সেশনের ফলাফল সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না। খবর এএফপির
বুধবার কাউন্সিলের কাছে একটি চিঠিতে, গুতেরেস জাতিসংঘের সনদের আর্টিকেল ৯৯ আহ্বান করার অসাধারণ পদক্ষেপ নেয়, যেখানে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক রক্ষণাবেক্ষণের এবং শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে তার মতে এমন যে কোনও বিষয় মহাসচিব কাউন্সিলের নজরে আনতে পারেন। বিগত কয়েক দশক ধরে নিয়োজিত থাকা কোনো মহাসচিব এ জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
গুতেরেস লিখেছেন, ‘ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর ক্রমাগত বোমাবর্ষণের মধ্যে, এবং আশ্রয় বা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না থাকায় আমি আশঙ্কা করছি যে মরিয়া পরিস্থিতির কারণে জনশৃঙ্খলা শিগগিরই সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়বে, এমনকি সীমিত মানবিক সহায়তাও অসম্ভব হয়ে উঠবে।’
তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্ভাব্য অপরিবর্তনীয় প্রভাব এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে এক বিপর্যয় প্রতিরোধে ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানান।
কাউন্সিল গুতেরেসের জরুরি আবেদনে মনোযোগ দেবে বলে জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক আশা প্রকাশ করেছেন।
ডুজারিক বলেন, বুধবার থেকে জাতিসংঘ প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন এবং অন্যান্য বেশ কটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাসের চলা তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিও ফুটেজে বেশ কিছু পুরুষকে তাদের অন্তর্বাস খুলে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসা অবস্থায় দেখা গেছে।
উপত্যকাটির সুদূর উত্তরে বেইট লাহিয়ায় ওই ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অবশ্য কয়েকজনকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে।
বিবিসি ফুটেজ যাচাই করে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ভিডিও ফুটেজ সম্পর্কে ইসরায়েলি সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাদের যে এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে, ওই এলাকা থেকে বেসামরিক লোকজনকে সপ্তাহ আগেই সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, তাদের অন্তর্বাস খুলে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন বেশ কয়েকজন পুরুষ এবং ইসরায়েলি সেনারা তাদের পাহারা দিচ্ছে।
আরেক ভিডিওতে কয়েক ডজন পুরুষকে একটি ফুটপাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাদের পাহারা দিচ্ছিল ইসরায়েলি সেনারা, সঙ্গে ছিল সাঁজোয়া যান।
অন্য কয়েকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন পুরুষকে সামরিক ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এসব বন্দিদের আত্মসমর্পণকারী হামাস যোদ্ধা হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) সরাসরি ফুটেজ ও ছবিগুলো নিয়ে মন্তব্য করেনি, তবে মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, সন্দেহভাজনদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই গত ২৪ ঘন্টায় আমাদের বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য এসেছে তা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে।
শুক্রবার, ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি বলেছেন, যে লোকদের উত্তর গাজার জাবালিয়া এবং শেজাইয়াতে আটক করা হয়েছে ওই এলাকাগুলো হামাসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি সুপরিচিত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক দিয়া আল-কাহলুত, কাজ করেন আল-আরাবি আল-জাদেদের সংবাদদাতা হিসেবে।
গাজার অবস্থা জানিয়ে রয়টার্স বলছে, টানা বিমান হামলার পর দক্ষিণ গাজায় স্থলপথে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলের সেনারা। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তরাঞ্চলে এই অভিযান চলছে ব্যাপকভাবে। ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের ধারণা, হামাস নেতৃত্বের সদস্যরা খান ইউনিস শহরে লুকিয়ে আছে।
হামলায় বহু প্রাণহানির পর সাত দিনের জন্য ছিল যুদ্ধবিরতি, তবে সেই বিরতি শেষ হওয়ায় গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা শুরু হয় গত ১ ডিসেম্বর।
উত্তর গাজায় হামলা শুরুর পর এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণ গাজায় চলে যেতে বলা হয়। এখন সেই দক্ষিণ গাজাতে হামলা হচ্ছে। বিমান হামলা হয়েছে খান ইউনিস শহরে, এই হামলার যে তীব্রতা; যুদ্ধ শুরুর পর তা কখনও দেখা যায়নি।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কদিন আগে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
এ অবস্থায় গাজায় জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্তি ও ইরসায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ও গাজায় মানবিক সহায়তায় পাঠানোর শর্তে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
এরপর এই যুদ্ধবিরতি চলে সাত দিন। এই সাত দিনে হামাস ১১০ জনকে এবং ইসরায়েল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে। আন্তর্জাতিক নানা মহলের চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
আরও পড়ুন:ভারতের তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
‘প্রশ্নঘুষ’ কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তারা শুক্রবার জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, কংগ্রেস এবং বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে স্পিকারের কাছে সময়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি।
বহিষ্কারের ঘোষণা হওয়ার পর পরই সংসদের বাইরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহুয়া মৈত্র। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভেতরে এবং বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত এই সংসদ সদস্য।
লোকসভা থেকে বেরিয়ে মহুয়া বলেন, লোকসভার এথিক্স কমিটিতে ‘এথিক্স’ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছে। এমন একটা কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হলো, যা লোকসভার সব সদস্যের মধ্যে প্রচলিত একটি অভ্যাস। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনো উপহার নিয়েছি, তার কোনো প্রমাণ নেই।
তিনি আরও বলেন, মোদি সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে।
লোকসভা থেকে বহিষ্কারের পর এবার তার কাছেও সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থা পাঠানো হবে, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মহুয়া। তিনি বলেন, এবার আমার কাছে সিবিআই আসবে। ছয় মাস আমাকে সিবিআই দিয়ে হেনস্থা করা হবে।
শুক্রবার লোকসভায় তৃণমূল, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলের পক্ষে মহুয়াকে নিজের বক্তব্য জানানো এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই অনুরোধও রাখেননি স্পিকার।
অতীতের দৃষ্টান্ত টেনে তিনি জানান, আগেও এই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত সদস্য কিছু বলার সুযোগ পাননি। পাশাপাশি বিজেপির যুক্তি ছিল, মহুয়া আগে নিজের কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তিনি সভাকক্ষ থেকে ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান।
অন্যদিকে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেয়া হয়নি। একজন নারীকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যেভাবে হেনস্থা করল, তাতে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হলো। দল মহুয়ার পাশে ছিল, আছে। বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি প্রমাণিত।
সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তার অভিযোগ, লোকসভায় প্রশ্ন করার বিনিময়ে মহুয়া শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছে থেকে ঘুষবাবদ নগদ এবং উপহার নিয়েছিলেন।
ফিলিস্তিনের গাজায় গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের পাল্টা হামলা শুরুর পর থেকে ২১ হাসপাতালের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ রয়েছে কমপক্ষে ১১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের বরাত দিয়ে শুক্রবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই মাসে ইসরায়েলি হামলায় ২৮৭ স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হন। এ ছাড়া কমপক্ষে ৫৮টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়। এর ফলে গাজায় স্বাস্থ্যসেবা চালু থাকা কেন্দ্রগুলোতে আহত ব্যক্তিদের পরিবহন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ইসরায়েলে ঢুকে গত ৭ অক্টোবর গাজার শাসক দল হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন থেকে উপত্যকায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। পরবর্তী সময়ে গাজায় স্থল অভিযানও শুরু করে ইসরায়েল।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে কমপক্ষে ১৭ হাজার ১৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। অন্যদিকে হামাসের হামলায় প্রায় এক হাজার ১৫০ ইসরায়েলি নিহত হয় বলে জানায় দেশটির সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
মন্তব্য