ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় দফার জাতীয় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনার সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রী বরিস জনসন ‘চিকিৎসা ও মানবিক বিপর্যয়ের’ আশঙ্কায় শনিবার লকাউনের এ ঘোষণা দেন।
৫ নভেম্বর থেকে এ লকডাউন শুরু হচ্ছে।
ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন বলেন, ‘চলতি বছরের ক্রিসমাস অন্যরকম হতে যাচ্ছে। তবে এটা আমার আন্তরিক আশা এবং বিশ্বাস যে, লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ ক্রিসমাসে পরিবারগুলোকে একত্র করবে।’
তিনি বলেন, লকডাউনের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর যে প্রভাব পড়বে, তার জন্য তিনি সত্যি সত্যিই দুঃখিত। তবে কোনো দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী সেসব পরিসংখ্যানকে উপেক্ষা করতে পারেন না, যেখানে কি না বলা হচ্ছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা একদিনে কয়েক হাজারে পৌঁছে যাবে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাব, রেস্তোরাঁ, জিম, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করে না এমন সব দোকান ৫ নভেম্বর থেকে চার সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে।
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। ২ ডিসেম্বরের পর লকডাউন ধাপে ধাপে শিথিল করা হবে।
দ্বিতীয় দফার লকডাউনে ইংল্যান্ডের জনগণকে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, সবাইকে বাড়িতে থাকতে হবে। কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া (যেমন: কর্মস্থল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া) কেউ বাইরে যেতে পারবে না।
চিকিৎসা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা এবং বিপন্ন মানুষকে সাহায্য করার প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হতে পারবে লোকজন।
বাড়ির ভেতরে ও বাগানে কারও সঙ্গে দেখা করা যাবে না। তবে বাড়ির বাইরে গিয়ে দেখা করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ১১ হাজার ৬৬০ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৪৬ হাজার ৫৫৫ জন।
গত সপ্তাহে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিয়ে নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই মানুষের, কোথাও কোথাও তো বছরের কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বিয়ের ‘মৌসুমও’ হয়ে ওঠে কয়েকটি দিন। চীনেও আছে এমন এক সময়। তবে এবার সে মৌসুম উযদাপনে সাড়া মেলেনি।
বছরের সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে ওক্সি ফেস্টিভল নামে এক উৎসব হয় চীনে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মতোই হয় এর আয়োজন। আয়োজনের দিনে অনেক তরুণ-তরুণী বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। তবে এ বছরের আয়োজন উদযাপনে আয়োজকরা বরং ক্ষতির মুখেই পড়েছেন।
এর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, বিয়েতে আগ্রহ হারিয়েছেন চীনের বাসিন্দারা। তার চেয়ে বরং লিভ টুগেদার বা সিঙ্গেল থাকতে চান তারা। কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছেন, বিয়ের আরেক নাম হলো মৃত্যু।
আল জাজিরা বলছে, গত ২২ আগস্ট ওক্সি ফেস্টিভলের দিনে সিচুয়ান প্রদেশের মিয়ানয়াং শহরের একটি বিবাহ নিবন্ধন অফিস বিবাহ নিবন্ধন সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ওই দিন সে এলাকায় বিয়ে করতে আসেন খুব জুটিই।
শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। বিয়ে নিবন্ধন হলের অনুষ্ঠানের পরিবর্তে লাইভে দেখানো হয় শহরের মনোরম দৃশ্য।
এ ঘটনাটি নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে। বিয়েতে অনাগ্রহের পেছনের কারণও বেরিয়ে আসছে অনেক।
বিয়েতে উদ্বুদ্ধ করতে সরকার নানা উৎসাহমূলক পদক্ষেপ নিলেও কয়েক বছর ধরে চীনে বিয়েতে আগ্রহ কমছে মানুষের।
এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে বার্ষিক প্রায় সাড়ে ১ কোটি ৩৫ লাখের মতো বিয়ে হয়েছে চীনে, অথচ গত বিয়ের বিয়ে হয়েছে প্রায় ৭০ লাখ।
এসব পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে, চীনের বাসিন্দারাও পরে বিয়ে করছেন। বিবাহবিচ্ছেদের হার বাড়ছে এবং সিঙ্গেল থাকতে চাওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।
চীনা তরুণরা মনে করছেন, বিয়ে তাদের আধুনিক জীবনের সঙ্গে বেমানান। সাংহাইয়ের বাসিন্দা বছর বয়সী ইউ ঝাং আল বলেছেন, ‘চীনে বিয়ে এক প্রকারের মৃত্যু।’
পেশায় ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান এই যুবক বলেন, দুই বছর ধরে আমি আমার প্রেমিকার সঙ্গে এক সঙ্গে আছি। আমরা প্রায়ই বিয়ের কথা আলোচনা করেছি। তবে সবসময় একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি- বিয়ে করার চিন্তা করলে দেখি সেটি আমাদের সুখের চেয়ে চাপই বেশি দেয়।
চীনের বিবাহযোগ্য অনেকে মনে করেন, দুটি পরিবারের এক হওয়ার পাশাপাশি বিয়ের মাধ্যমে একটি বাড়ি কিনে সংসারও শুরু করতে হয়। এই মুহূর্তে, এই তিনটি লক্ষ্য অবাস্তব বলে মনে হচ্ছে।
বিয়েতে আগ্রহ বাড়াতে প্রচারণা চালাচ্ছে চীন। এ লক্ষ্যে গত মে মাসে ২০ টিরও বেশি চীনা শহরে ঘোষণা করা নতুন পদক্ষেপ। ঝেজিয়াং প্রদেশের একটি কাউন্টি গত মাসে ঘোষণা করেছে, পাত্রীর বয়স ২৫ বা তার কম হলে তারা আর্থিক পুরস্কার পাবেন।
এ ছাড়া কর্মকর্তারা জনসাধারণকে ‘সঠিক বয়সে’ বিয়ে করতে এবং সন্তান ধারণের জন্য জনসাধারণকে উৎসাহিত করেছেন। সাম্প্রতিক টিভি শো এবং ফ্যাশন শোতে বিয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হচ্ছে।
গুয়াংজু শহরের জেসিকা ফু বিশ্বাস করেন, বিয়ের প্রতি যে মনোযোগ দেয়া হয়েছে তা দেশের জন্মহার বাড়ানোর সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে যুক্ত। তবে কোনো কিছুতেই সংকট কাটছে না।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের চীনা ও এশিয়ান স্টাডিজের সিনিয়র লেকচারার প্যান ওয়াংয়ে মতে, ব্যক্তিগত পছন্দের আবির্ভাব চীনা সমাজে বিয়ের গতিপথ বদলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিবাহিত জীবন আজ অনেকগুলি জীবনধারার বিকল্পগুলোর মধ্যে একটি মাত্র।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কুকুর আবারও কামড়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। এবার যে কুকুরটি এক কর্মীকে কামড়েছে, সেই কুকুরটি এর মধ্যদিয়ে এমন ঘটনা ঘটাল ১১তম বার।
সর্বশেষ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেটে সার্ভিস এজেন্টের কর্মীকে বাইডেনের দুই বছর বয়সী জার্মান শেফার্ড কমান্ডার কামড়ে দিয়েছে বলে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সির প্রধান অ্যান্টনি গুগলিয়েলমি মঙ্গলবার বিবৃতিতে বলেছেন, রাত 8টার দিকে একজন সিক্রেট সার্ভিস ইউনিফর্মড ডিভিশনের পুলিশ অফিসারকে কামড় দিয়েছে কমান্ডার। তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আহত ওই কর্মীর অবস্থা এখন ভালো বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, কমান্ডার হোয়াইট হাউসে এবং ডেলাওয়্যারে কমপক্ষে ১১টি কামড়ের ঘটনায় জড়িত। ২০২২ সালের নভেম্বরের এক ঘটনায় এই কুকুরের কামড়ে আহত একজন কর্মকর্তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
গত জুলাইয়ে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, বাইডেন পরিবারের পোষা প্রাণীদের জন্য নতুন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে বাইডেন পরিবারের আরেক জার্মান শেফার্ড মেজরও হোয়াইট হাউসে কামড়ে দিয়েছিল বেশ কয়েকজনকে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ডেলাওয়্যারে তার পৈতৃক বাড়িতে ছিল এই মেজর। সময়ের পরিক্রমায় বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিন বছর বয়সী কুকুরটিকে নিয়ে আসেন হোয়াইট হাউজে।
১৮ একরের এই কমপ্লেক্সে এসে বিচরণের বিশাল জায়গা পায় মেজর ও কমান্ডার। কিন্তু নতুন পরিবেশকে আপন করে নিতে পারেনি এই দুই প্রাণী। এর প্রমাণ মিলছে হোয়াইট হাউজের কর্মীদের কামড়ে দেয়ার ঘটনায়।
আরও পড়ুন:রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে বিলিয়নেয়ার মুকেশ আম্বানির তিন সন্তানকে কোনো বেতন দেয়া হবে না। শুধু বোর্ড ও কমিটির সভায় যোগদানের জন্য ফি প্রদান করা হবে তাদের।
এনডিটিভির মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, আম্বানির দুই যমজ সন্তান আকাশ ও ইশা এবং অনন্ত কোম্পানির অর্জিত লাভের ওপর শুধু সিটিং ফি ও কমিশন পাবেন।
রিলায়েন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও মুকেশ আম্বানিও ২০২০-২১ অর্থবছরে কোম্পানি থেকে কোনো বেতন নেননি। তার চাচাত ভাই নিখিল ও হিতালসহ অন্যান্য নির্বাহী পরিচালকদের বেতন, ভাতা ও কমিশন দেয়া হয়।
আম্বানির স্ত্রী নীতাকে ২০১৪ সালে কোম্পানির বোর্ডে নিয়োগ দেয়া হয়। কোম্পানির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছয় লাখ রুপি সিটিং ফি ও দুই কোটি রুপি কমিশন অর্জন করেন।
আম্বানির তিন সন্তান আকাশ, ইশা ও অনন্তকে রিলায়েন্সের পরিচালনা পর্ষদে (বিওডি) অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি গত মাসে কোম্পানির বার্ষিক শেয়ারহোল্ডারদের সভায় ঘোষণা করেন আম্বানি।
ওই সময় আম্বানি জানান, তিনি আরও পাঁচ বছরের জন্য কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে থাকবেন।
রিলায়েন্স কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে আম্বানির তিন সন্তানকে নিয়োগের জন্য সম্মতি চেয়ে শেয়ারহোল্ডারদের কাছে বিজ্ঞপ্তিসহ একটি পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বোর্ড বা কমিটির সভাগুলোতে যোগদানের জন্য বা বোর্ড কর্তৃক সিদ্ধান্ত নেয়া অন্য যেকোনো মিটিং, বোর্ড ও অন্যান্য সভা এবং লভ্যাংশ-সম্পর্কিত কমিশনে তাদের পারিশ্রমিক দেয়া হবে।’
রিলায়েন্সে ইশা আম্বানির সরাসরি ০ দশমিক ১২ শতাংশ ইক্যুইটি শেয়ার রয়েছে। আর কোম্পানির ৪১ দশমিক ৪৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক মুকেশ আম্বানি।
আরও পড়ুন:ধর্ষণের শিকার হয়ে রক্তাক্ত অর্ধগগ্ন শিশুটি ঘুরছিল রাস্তায় রাস্তায়। এভাবে ঘুরে ঘুরে মানুষের কাছে সহায়তা চাইছিল সে, তবে পায়নি। উল্টো একজন তো তাড়িয়েই দিলেন তাকে।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী শহরের বাদনগর রোডের এ ঘটনার ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বলে বুধবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি ১২ বছর বয়সী এই শিশুটি ওইভাবে ঘুরতে ঘুরতে সাহায্যের জন্য একটি আশ্রমে গিয়ে পৌঁছায়। সেখানে একজন পুরোহিত সন্দেহ করেন, সে যৌন সহিংসতার শিকার।
তোয়ালে দিয়ে তার শরীর ঢেকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান পুরোহিত। হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষায় তাকে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্যাতনের শিকার শিশুটির অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাকে রক্ত দিতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে পুলিশ। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দিপা সিন্ধে মেয়েটির নাম জানতে চেয়েছিলেন। তবে সে তার নাম বা কোনো পরিচয় দিতে পারেনি। তার বাসা কোথাও সে সম্পর্কেও কিছু জানাতে পারেনি সে। অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে এ ঘটনায় একটি ধর্ষণের মামলা হয়েছে।
উজ্জয়িনী পুলিশ প্রধান শচীন শর্মা বলেছেন, অপরাধীদের শনাক্ত করতে এবং দ্রুত ধরতে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। পরীক্ষায় ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছি এবং এটি নিবিড়ভাবে দেখছি। জনগণের কাছে আবেদন করছি, কোনো তথ্য পেলে পুলিশকে জানান।
কোথায় মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে, এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। শিগগিরই আমরা তথ্য নিয়ে আসব।
তিনি বলেন, মেয়েটি আমাদের সঠিকভাবে বলতে পারেনি যে, সে কোথা থেকে এসেছে। তবে তার উচ্চারণ থেকে বোঝা যায় সে উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ থেকে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি আদালতে করা জালিয়াতির মামলায় ব্যবসা ও ব্যাংক সংক্রান্ত প্রতারণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করা হয়েছে।
আল জাজিরার মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তোলার সময় বছরের পর বছর ধরে জালিয়াতি করেছেন ট্রাম্প।
নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল জেমসের করা ওই মামলার রায় দেন বিচারক আর্থার এনগোরন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, প্রেসিডেন্ট ও তার কোম্পানি ব্যাংক, বিমাকারী ও অন্যান্যদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। অর্থায়ন নিশ্চিত করতে ট্রাম্প তার সম্পদ ও নেট মূল্যকে কাগজপত্রে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করেছেন।
এনগোরন জানান, শাস্তি হিসেবে ট্রাম্পের কিছু ব্যবসায়িক লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ ছাড়াও ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ অব্যাহত থাকবে।
ট্রাম্পের কোনো মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে রায়ের বিষয়ে মন্তব্য জানাননি, তবে ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে জোর দিয়ে বলে আসছেন, তিনি কোনো ভুল করেননি।
এনগোরন আরও জানান, ট্রাম্প নিজের সম্পদকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছেন। তার কোম্পানি ও প্রধান নির্বাহীরা বারবার বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিতে ভুল তথ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ট্রম্পের এসব কর্মকাণ্ড সীমা অতিক্রম ও আইন লঙ্ঘন করেছে।’
চলতি বছর ২ অক্টোবর থেকে একটি নন-জুরি ট্রায়াল শুরু করা হবে, যা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে বলে জানান এনগোরন।
এর আগে ট্রাম্পের আইনজীবীরা বিচারককে মামলাটি বাতিল করতে বলেছিলেন। তাদের দাবি, জেমসকে আইনি মামলা করার অনুমতি দেয়া হয়নি। কারণ ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডে জনগণের ক্ষতি হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই।
জেমস একজন ডেমোক্র্যাট। তিনি এক বছর আগে ট্রাম্প ও ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের নামে মামলা করেন।
আরও পড়ুন:ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় নিনেভেহ প্রদেশে মঙ্গলবার রাতে বিয়ের অনুষ্ঠানে আগুনে কমপক্ষে ১১৩ জনের প্রাণহানি ও ১৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তা ও জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
নিনেভেহর ডেপুটি গভর্নর হাসান আল-আলাক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, আগুনে ১১৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে আগুন ধরার খবর পাওয়া যায়।
প্রাদেশিক গভর্নর নাজিম আল-জাবুরি মঙ্গলবার গভীর রাতে সতর্ক করে বলেন, অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির চূড়ান্ত সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। এর অর্থ হলো আগুনে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে।
ইরাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইফ আল-বদর বলেন, দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে ত্রাণ সহায়তা দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে।
দেশটির এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা আইএনএকে জানান, নিনেভেহ প্রদেশের হামদানিয়াহ জেলায় একটি ইভেন্ট হলে আগুনে ১৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় শহর মসুলের পাশাপাশি এলাকা হামদানিয়াহ। এটি রাজধানী বাগদাদ থেকে ৪০০ কিলোমিটারের মতো উত্তর-পশ্চিমে।
আরও পড়ুন:বিতর্কিত নাগোর্নো-কারাবাখ এলাকা আজারবাইজানের দখলে যাওয়ার পর থেকে হাজার হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ানরা ওই এলাকা ছাড়ছেন।
গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজারের মতো বাসিন্দা ওই ছিটমহলটি ছেড়ে আর্মেনিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে বিবিসির মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ এলাকায় এক লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ানের বাস ছিল। আর্মেনিয়ার সরকার যুদ্ধের কারণে বাস্তুহারা মানুষকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর থেকেই তারা এলাকা ছাড়তে শুরু করেন।
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওই এলাকায় জাতিগত নিধন চলছে।
বিবিসি বলছে, নাগোর্নো-কারাবাখ দক্ষিণ ককেসাস এলাকার একটি পাহাড়ি এলাকা। এটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তবে তিন দশক ধরে এটি জাতিগত আর্মেনিয়ানরা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
এই ছিটমহলের প্রতি আর্মেনিয়া এবং তাদের মিত্র রাশিয়ার সমর্থন ছিল। বছরের পর বছর ধরে সেখানে শত শত রুশ সেনা ছিল।
গত সপ্তাহে আজারবাইজানের সেনারা আক্রমণ চালালে রাশিয়ার পাঁচজন শান্তিরক্ষী এবং ২০০ জন জাতিগত আর্মেনিয়ান এবং কয়েক ডজন আজারবানি সেনা নিহত হন।
আর্মেনয়িয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে সেখানে এটাই চলছে এবং এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, কারণ এ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানানোর চেষ্টা করছি।
আজারবাইজান বলেছে, তারা জাতিগত আর্মেনিয়ানদেরকে ‘সমান নাগরিক’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী গেগহাম স্টিপানিয়ান এক্স-এর (সাবেক টুইটার) মাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছেন, কারাবাখের প্রধান শহর স্টেপানাকার্টের একটি পেট্রোল স্টেশনে বিস্ফোরণে ২০০ বেশি মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
তবে বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।
মানুষের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে আর্মেনিয়ার সীমান্তে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে।
রোবববার আর্মেনিয়ার গোরিস শহরে যেসব শরণার্থীরা এসে আশ্রয় নিয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। এই শহরটি কারাবাখের সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।
এক ব্যক্তি বলেন, আমি আমার সারা জীবন আমার মাতৃভূমির প্রতি উৎসর্গ করেছি। এভাবে পালিয়ে আসার চেয়ে তারা যদি আমাকে মেরে ফেলতো তাহলে বেশি ভাল হতো।
ভেরোনিকা নামে এক নারী জানান, দ্বিতীয় বারের মতো শরণার্থী হয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের লড়াইয়ের সময় প্রথমবার শরণার্থীতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি।
মন্তব্য