৩৮ বছর সাজা পাওয়া এক কারাবন্দিকে বিয়ে করলেন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ওয়াংশিটন রাজ্যের এক কারাগারে হয় এই বিয়ে।
নবদম্পতি বলছেন, বিয়ের অনুষ্ঠানটি তাদের স্বপ্নের মতো না হলেও তারা খুবই খুশি এবং কৃতজ্ঞ। কারণ, তাদের মতো আরো যেসব প্রেমিক-প্রেমিকা কারাগারে আছেন তাদেরও বিয়ের সুযোগ তৈরি হলো।
ওয়াশিংটন রাজ্যের টাকোমার বাসিন্দা ক্রিস্টোফার ব্ল্যাকওয়েলের দুটি মামলা ৩৮ বছরের সাজা হয়েছে। ২০৪৫ সাল পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে তাকে। ২০০৭ সাল থেকে রাজ্যের মনরো সংশোধনাগারে আছেন তিনি।
সেখানেই ২০১৭ সালে বন্দিদের জন্য আয়োজিত স্বল্পমেয়াদি একটি কোর্সের ক্লাসে তার সঙ্গে দেখা স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের পিএইচডি শিক্ষার্থী চেলসি মুরের। ক্লাসের বিষয় ছিল নাগরিকের মৌলিক অধিকার।
বন্দিদের ক্লাস নিতে নিতেই ব্ল্যাকওয়েলের সঙ্গে পরিচয় হয় ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের ওজাই শহরের বাসিন্দা মুরের। পরে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। কোর্সটি শেষ হওয়ার পরও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখেন তারা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মুর জানিয়েছেন, কারাগারের ইমেইল সুবিধা ব্যবহার করে তার সঙ্গে গান, বই, সিনেমা নিয়ে আলাপ করতেন ব্ল্যাকওয়েল। এক পর্যায়ে প্রেমে পড়েন তারা। সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার।
কিন্তু বাদ সাধে আইনি প্রক্রিয়া ও করোনা মহামারি। ‘দীর্ঘ ও জটিল’ এক আইনি পথ পাড়ি দিয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারাগারেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন দুজন।
৩২ বছর বয়সী চেলসি মুর জানান, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বিয়ে করার সিদ্ধান নেন তারা। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে তা কঠিন হয়ে পড়েছিল। অনেক আইনি প্রক্রিয়ার পর প্রথমে ভার্চুয়ালি বিয়ে করার অনুমতি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।
তবে তার একদিন পরই দুজনকে অবাক করে দিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সশরীরে উপস্থিত থেকেই বিয়ে করতে পারবেন তারা। অবশ্য এজন্য বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেয়া হয়। বলা হয়, শর্ত না মানলে বাতিল করা হবে বিয়ের আয়োজন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ১৮ সেপ্টেম্বর মনরো সংশোধনাগারের দর্শনার্থী কক্ষে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। করোনা মহামারির কারণে নিজেদের মধ্যে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন পাত্র-পাত্রী। কারা কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা থাকায় পুরো সময়ে একবারের জন্যও কেউ কাউকে স্পর্শ করতে পারেননি। অতিথি বলতে ছিলেন কারাগারের কয়েকজন রক্ষী আর বিয়ের দুজন সাক্ষী।
চেলসি মুর জানিয়েছেন, বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর অনেক দিন তারা দেখা করতে পারেননি। ছয় মাস পর বিয়ের দিনই তারা মুখোমুখি হন। আবার কবে দেখা হবে তাও জানেন না তারা।
৩৯ বছর বয়সী ব্ল্যাকওয়েল টেলিফোনে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তরুণ বয়সের সব অপরাধের কথা জেনেও মুর তাকে বিয়ে করতে রাজি হন। তখনই তিনি নিশ্চিত হন, মুরই সেই মানুষ যার সঙ্গে তিনি জীবন কাটাতে চান।
বিয়ে সামনে রেখে জেলখানায় নিজের হাতে তৈরি জিনিস বিক্রির টাকা দিয়ে মুরের জন্য আংটি কেনেন ব্ল্যাকওয়েল। প্রবেশপথের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিয়ের অনুষ্ঠানে পৌঁছাতে চল্লিশ মিনিট দেরি হয়ে যায় মুরের। একটা লম্বা সাদা বিয়ের গাউন পরে ছিলেন তিনি। ব্ল্যাকওয়েলের পরনে ছিল কারাগার থেকে নির্ধারণ করা দেয়া পোশাক।
কারাগারের একজন যাজক তাদের বিয়ে পড়ান। বিয়ের কাগজপত্রে সই করার পরে কয়েকটি ছবি তোলেন তারা। এরপরই অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
বিয়ের সাক্ষী ছিলেন মুরের বন্ধু মেগান রোজ ডোনোভান। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেন, ‘অনেকটা পরাবাস্তব মুহূর্ত ছিল এই বিয়ে।’
কারাবন্দি ব্ল্যাকওয়েল নিজেকে অনেকটা বদলে নিয়েছেন। জেলে বসেই অর্জন করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ডিগ্রি। কারা জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়েও লেখালেখি করছেন। সেগুলো প্রকাশিত হচ্ছে বিভিন্ন ব্লগে।
মুরের আগ্রহ কারাবন্দিদের শাস্তির মেয়াদের সংস্কার নিয়ে, বিশেষ করে যারা অল্প বয়সে করা অপরাধের জন্য নানা কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে মুর বলেন, সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ২৫ বছর বয়সের আগে একজন মানুষের মস্তিষ্ক পুরোপুরি বিকশিত হয় না। অথচ ১৮ বছর পার হলেই একজনকে কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। ২৫ বছর বয়সের আগে করা অপরাধে কাউকে যদি দীর্ঘ সাজা দিতেই হয়, তাহলে তার জন্য যেন নিয়মিত প্যারোল সুবিধা থাকে।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। দেশের নাগরিকদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন কোম্পানি।
দক্ষিণ ভারতের বেঙ্গালুরুতে নাগরিকদের ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে অনেক কোম্পানি বিনামূল্যে খাবার থেকে শুরু করে ফ্রিতে ট্যাক্সি পর্যন্ত অফার করেছে।
প্রতিবারই কম ভোটার উপস্থিতির জন্য খবরের শিরোনাম হয় কর্ণাটক রাজ্যের শহর বেঙ্গালুরু। তাই ভোটারদের ভোটের মাঠে আকৃষ্ট করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি কোমর বেঁধে নেমেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। ভোট দেয়ার পুরস্কার হিসেবে সেখানে হোটেল, ট্যাক্সি পরিষেবা এমনকি কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের প্রণোদনা দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এসব সুবিধার মধ্যে ফ্রি বিয়ার, বিনামূল্যে ট্যাক্সি রাইড এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার মতো সুবিধাকে উল্লেখযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করছে বিবিসি।
এছাড়া আঙুলে ভোটের কালি দেখাতে পারলে অনেক হোটেল ক্রেতাদের বিনামূল্যে খাবার খাওয়াবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে।
বুধবার নির্বাচনি আইন লঙ্ঘন না করার শর্তে স্থানীয় হোটেল মালিক সমিতিকে ফ্রিতে বা বিশেষ ছাড়ে খাবার বিক্রির অনুমতি দিয়েছে রাজ্যের উচ্চ আদালত।
এ বিষয়ে ব্যাঙ্গালুরুর হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি পিসি রাও ডেইলি মিররকে বলেন, ‘ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে হোটেলগুলো বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছে। কেউ কেউ বিনামূল্যে কফি, ডোসা দেবে। আবার কেউ কেউ গরমে ভোটারদের জুস খাওয়াবে। কিছু হোটেল তো খাবারের ওপর বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে।’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কর্ণাটক রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পড়ে দক্ষিণ ব্যাঙ্গালুরুতে। সেবার ওই নির্বাচনি এলাকার মোট ভোটারদের ৫৩.৭ শতাংশ নাগরিক ভোট দিয়েছিলেন।
ব্যাঙ্গালুরুর জনপ্রিয় পার্ক ‘ওয়ান্ডারলা’ ভোটারদের জন্য টিকিটে বিশেষ মূল্যছাড় দিয়েছে। অন্যদিকে ভোট দিয়ে আসা প্রথম পঞ্চাশ জন ক্রেতাকে বিনামূল্যে বিয়ার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ‘ডেক অফ ব্রুস’ নামের একটি পানশালা।
স্থানীয় রাইড শেয়ার অ্যাপ ‘ব্লু-স্মার্ট’ ভোটকেন্দ্রের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে ভোটারদের রাইডে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। এছাড়া ‘র্যাপিডো’ নামের ট্যাক্সি শেয়ারিং কোম্পানি ভোটারদের বিনামূল্যে রাইড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
মিস্টার ফিলি’স নামের একটি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁ প্রথম ১০০ জন ভোটারকে বার্গার ও মিল্কশেকের ওপর ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘এটি আসলে নাগরিকদের ভোটের গুরুত্ব বোঝানো এবং আমাদের গণতন্ত্র উদযাপনের উপায়।’
তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এই উদ্যোগটি ব্যাঙ্গালুরুর নাগরিকদের মধ্যে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও পরিবর্তন আনতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।’
উল্লেখ্য, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২১টি রাজ্যের ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির নির্বাচন কমিশনের মতে, প্রথম দফা নির্বাচনে সব রাজ্যে গড়ে প্রায় ৬০-৬৫ শতাংশের বেশি ভোটারের উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় দেশটির ১৩ রাজ্যের ৮৯টি লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরালা, আসাম, বিহার, মণিপুর, রাজস্থান, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু-কাশ্মীরে শুক্রবার ভোটগ্রহণ হবে।
এবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে সাত ধাপে, চলবে প্রায় দুই মাস ধরে। ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হবে আগামী ১ জুন এবং ৪ জুন ভোটের ফল ঘোষণা হবে।
ময়মনসিংহে মসজিদ বানিয়েছেন স্থানীয় ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়। নগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চর কালীবাড়ী এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সরকারি জমিতে তারা টিনশেডের এই মসজিদ গড়ে তুলেছেন।
মসজিদটির নাম দক্ষিণ চর কালীবাড়ী আশ্রয়ণ জামে মসজিদ। চলতি মাসে মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়। মসজিদটির জন্য বেশ কয়েকজন স্থানীয় ট্রান্সজেন্ডার নিজেদের সময়, শ্রম ও অর্থ দিয়েছেন।
সম্প্রদায়ের নেতা ২৮ বছর বয়সী জয়িতা তনু বলেন, ‘এখন থেকে কেউ ট্রান্সজেন্ডারদের মসজিদে নামাজ পড়ায় বাধা দিতে পারবে না। কেউ আমাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতে পারবে না।’
সোনিয়া নামের ৪২ বছর বয়সী আরেকজন বলেন, ‘জীবনে আবার মসজিদে নামাজ পড়তে পারব, সেটি স্বপ্নেও ভাবিনি।’
সোনিয়া ছোটবেলায় কুরআন তেলাওয়াত করতে পছন্দ করতেন এবং ধর্মীয় শিক্ষার জন্য মক্তবেও যেতেন, কিন্তু সবাই যখন বুঝতে পারেন যে তিনি ট্রান্সজেন্ডার, তখন থেকে তাকে আর মসজিদে ঢুকতে দেয়া হতো না।
সোনিয়া বলেন, ‘মানুষ আমাদের বলত, তোমরা ট্রান্সজেন্ডাররা কেন মসজিদে আসো? তোমাদের ঘরেই নামাজ পড়া উচিত, মসজিদে এসো না।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জন্য ছিল খুবই লজ্জার। তাই আমরা আর মসজিদে যেতাম না।
‘এখন এটি আমাদের মসজিদ। আর কেউ কিছু বলতে পারবে না।’
স্থানীয় ট্রান্সজেন্ডার কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আবদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘দেশে এমন মসজিদ এই প্রথম। আগেও একটি শহরে মসজিদ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, তবে স্থানীয়দের প্রতিবাদে তা আর হয়ে ওঠেনি।’
এ ছাড়াও ট্রান্সজেন্ডারদের উদ্যোগে একটি কবরস্থানও তৈরি করা হয়েছে।
মসজিদটির ইমাম আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘অন্য মানুষের মতো তারাও আল্লাহর সৃষ্টি। কারও সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ ধর্মে নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মানুষ। কেউ পুরুষ, কেউ নারী, কিন্তু সবাই মানুষ। কুরআন আল্লাহ সবার জন্যই নাজিল করেছেন। তাই প্রত্যেকেরই প্রার্থনা করার অধিকার রয়েছে। কেউ কাউকে অস্বীকার করতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রান্সজেন্ডারদের এই বিশ্বাস অন্যদের জন্য শিক্ষনীয় হতে পারে। আমি যতদিন হলো এ মসজিদে আছি, তাদের চরিত্র ও কর্ম দেখে মুগ্ধ হয়েছি।’
মসজিদটিতে ট্রান্সজেন্ডারদের পাশাপাশি স্থানীয় অনেকেই নিয়মিত নামাজ আদায় করেন।
তোফাজ্জল হোসেন নামের ৫৩ বছর বয়সী এক মুসল্লি জানান, ট্রান্সজেন্ডারদের সম্পর্কে তার ভ্রান্ত ধারণা ছিল। তাদের সঙ্গে ওঠা-বসার মাধ্যমে সেটি দূর হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথমদিকে তারা যখন আমাদের সঙ্গে থাকতে শুরু করলেন, তখন অনেকে অনেক কথাই বলতেন। কিন্তু আমরা পরে বুঝতে পেরেছিলাম যে, মানুষ যা বলছে তা সঠিক নয়। তারাও অন্য মুসলমানের মতো সৎ জীবনযাপন করেন।’
ভবিষ্যতে এ মসজিদটি আরও বড় করতে চান তনু, যাতে করে আরও বেশি মানুষ নামাজ পড়তে পারেন।
আরও পড়ুন:নীলফামারীতে জমির জন্য বাবার মরদেহ দাফন করতে বাধা দিয়েছেন ছেলে। বাবার কবরে শুয়ে কবর দিতে বাধা প্রদান করেন তিনি। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
শুক্রবার নীলফামারী সদর উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের যাদুরহাট বাটুলটারিতে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার রাতে মারা যান ওই এলাকার বাসিন্দা মজিবুর রহমান। জমি রেজিস্ট্রির করার আগে বাবার মৃত্যু হওয়ায় ছেলে নওশাদ আলী মরদেহ দাফনে বাধা দেন ছেলে নওশাদ আলী।
স্থানীয়রা জানান, সদ্য প্রয়াত মুজিবুর রহমানের দুই স্ত্রী রয়েছেন। মৃত্যুর আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ২ শতাংশ ও ছোট ছেলেকে ৫ শতাংশ জমি লিখে দেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর তিন ছেলের মধ্যে ওয়াজেদ আলী, খয়রাত আলী ও নওশাদ আলীকে মৌখিকভাবে ৩ শতাংশ জমি প্রদান করেন বাবা মজিবুর রহমান। কিন্তু মৃত্যুর আগে প্রথম পক্ষের তিন ছেলেকে দেয়া জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবার মরদেহ দাফনে বাধা দেন নওশাদ। এক পর্যায়ে কবরে শুয়ে পড়েন তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চাপড়া ইউনিয়নের পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘জমি লিখে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে বাধা প্রদানের ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
সাধারণত মাথা কেটে ফেলার পরও মুরগি কিছুক্ষণ নড়াচড়া করতে থাকে। তবে ইতিহাসে একবার ঘটেছিল বিরল ঘটনা। ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ফ্রুইটাতে মাথা ছাড়া ১৮ মাস বেঁচে ছিল একটি মুরগি।
এ ঘটনা সে সময় তোলপাড় তুলেছিল। অনেকে এটিকে অলৌকিক ঘটনা বলেই বিশ্বাস করতেন। তবে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী?
লয়েড ওলসেন নামে এক ব্যক্তি তার পারিবারিক খামারে কাজ করছিলেন। বাজারে নেয়ার জন্য মুরগিটি জবাই করছিলেন তিনি। এর মধ্যে একটি মুরগি আশ্চর্যজনকভাবে মাথা কাটার পরও দৌড়াচ্ছিল।
ওলসেন মুরগিটিকে ধরে একটি বাক্সের মধ্যে রাখেন। তিনি নিজেই এই ঘটনায় কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। বাক্সে রাখা মুরগীটির নাম দেন তিনি ‘মাইক’। আশ্চর্যজনকভাবে পরের দিন সকালেও ওলসেন দেখলেন মুরগিটি বেঁচে আছে।
কীভাবে বেঁচে ছিল?
মুরগির মস্তিষ্কের বেশির ভাগ অংশ মাথা ও চোখের পেছনে থাকে। যখন ওলসেন মাথা কাটার জন্য কোপ দেন তখন মাইকের মাথার সামনের বেশির ভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শ্বাস-প্রশ্বাস, হজম ও অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত মস্তিষ্কের অংশটি অক্ষত রয়ে যায়।
পরবর্তীতে তিনি মুরগিটিকে খাওয়ানোর কৌশল আবিষ্কার করেন। সেটির খাদ্যনালীতে ড্রপার দিয়ে পানি ও তরল খাবার দিতেন। পাশাপাশি সিরিঞ্জ দিয়ে গলা থেকে শ্লেষ্মা অপসারণ করতেন। এভাবে বেশ সুস্থ সবল শরীর নিয়েই বেঁচে ছিল মাইক।
সে সময় মাইক এতটাই বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল যে, টাইম ম্যাগাজিনও এটিকে নিয়ে প্রতিবেদন ছেপেছিল।
এ ঘটনায় ওলসেন বুঝতে পারেন, মাইক বিখ্যাত হতে যাচ্ছে! মানুষ এটিকে টাকা দিয়ে দেখতে আসবে। ঘটনার পরের ১৮ মাস বিভিন্ন মেলা, কার্নিভ্যাল ও অন্যান্য পাবলিক ইভেন্টে এই মস্তকবিহীন মুরগিটি প্রদর্শন করেন ওলসেন। এগুলো করে বেশ অর্থও কামান তিনি।
১৯৪৭ সালের ১৭ মার্চ অ্যারিজোনার ফিনিক্সে প্রদর্শনীর জন্য সফরকালে মাইক মারা যায়। ওলসেন ও তার স্ত্রী ক্লারা তাদের হোটেলের ঘরে মাইকের শ্বাসনালির গড়গড় শব্দে জেগে ওঠেন। মাইককে বাঁচানোর জন্য তারা সিরিঞ্জ খুঁজছিলেন, কিন্তু সিরিঞ্জটি ভুলবশত এটি সাইড শো-তে রেখে এসেছিলেন। ফলে মাইকের গলা থেকে শ্লেষ্মা টেনে বের করা যায়নি। এতে একসময় দম বন্ধ হয়ে মারা যায় মুরগিটি।
এই আশ্চর্যজনক ঘটনাটি বহু দশক আগে ঘটলেও, ফ্রুইটারের নাগরিকরা মুরগিটিকে ভুলে যায়নি। এটিকে সেখানকার জনগণ ‘মাইক দ্য হেডলেস চিকেন’ নামে চেনে।
প্রতি বছর ওই শহরে মাইকের স্মরণে একটি উৎসব আয়োজন করা হয়। এ উৎসবে শত শত মানুষ জমায়েত হয়।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সম্ররা মুন্ডা নামের এক জেলের পেট থেকে অস্ত্রোপচার করে একটি কুঁচিয়া বের করা হয়েছে। মাছ ধরার সময় পায়ুপথ দিয়ে কুঁচিয়াটি পেটের ভেতর ঢুকে যায়।
শনিবার দিনের বেলা এ ঘটনা ঘটলেও সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা কুচিয়াটি এক দিন পর জীবিত অবস্থায় ওই জেলের পেট থেকে অস্ত্রোপচার করে বের করেন।
জানা যায়, উপজেলার মিতিঙ্গগা চা বাগানের উপজাতি জেলে সম্ররা মুন্ডা কুচিয়া মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিদিনের মতো শনিবারও (২৩ মার্চ) তিনি মাছ ধরতে যান। এ সময় হঠাৎ কাদায় আটকে গেলে তার দুই হাতে থাকা দুটি কুঁচিয়া কাদায় পড়ে যায়। তখন তিনি অনুভব করেন তার পায়ুপথে কী যেন ঢুকছে। তবে তখন বিষয়টিকে তিনি গুরুত্ব দেননি। তিনি বাড়ি ফেরার পর পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন।
রোববার স্থানীয় হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানকার চিকিৎসকরা তার কথা শুনে এক্স-রের মাধ্যমে পেটের ভিতর লম্বা আকৃতির একটি বস্তু দেখতে পান। পরবর্তীতে সম্ররা মুন্ডাকে ওইদিন সন্ধ্যায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার চালিয়ে তার পেটের ভেতর থেকে জীবন্ত অবস্থায় কুঁচিয়া মাছটি বের করেন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় ডাক্তাররাও বিস্মিত।
ওসমানী মেডিক্যালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পেট থেকে জীবিত ২৫ ইঞ্চি লম্বা একটি কুঁচিয়া মাছ বের করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ওসমানী মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি।
পঞ্চগড়ে এক মাস বয়সী শিশু কন্যাকে বিক্রির জন্য বাজারে তুলে এলাকায় চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছেন এক নার।
সোমবার বিকেলে পঞ্চগড় শহরের মেডিসিন রোড এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
তবে ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মানসিক ভারসাম্য না থাকায় জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে বেড়াতেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে নেটিজেনদের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন নারী তার কোলে থাকা ১ মাস বয়সের একটি কন্যা শিশুকে আড়াই হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন। দর কষাকষির মাধ্যমে ওই শিশুকে ক্রয় করছেন এক বৃদ্ধ। এক পর্যায়ে টাকা দিয়ে শিশুটিকে নিজ কোলে নেন ওই বৃদ্ধ।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার নিজের সন্তানকে বিক্রির জন্য দাম হাঁকান ওই নারী। এরপর শহরের ট্রাক টার্মিনাল এলাকার বৃদ্ধ মেকানিক ইসমাইল হোসেন শিশুটিকে ২৫ শ’ টাকার বিনিময়ে কিনে নেন। বিক্রির বেশ কিছু সময় পর শিশুটিকে আবারও অবশ্য ফেরত নিয়ে নেন ওই নারী।
এ বিষয়ে ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সোমবারে বাজার করার সময় দেখি, ওই মেয়েটি তার সন্তাকে বিক্রি করবে বলছে। আমার এক ভাগনির সন্তান নেই। বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ভাগনির জন্য বাচ্চাটি কিনতে চাই। পরে টাকা বুঝিয়ে দিয়ে বাচ্চাটিকে নিজের কোলে নেই। এরপর বাড়ি ফেরার পথে সে আবার দৌড়ে এসে টাকা ফেরত দিয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে নেয়।’
বিষয়টি জানতে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তারপরও বিষয়টি দেখতে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।’
আরও পড়ুন:নিরাপত্তার ইস্যুতে বন্ধ রাখা হয়েছে সারা বিশ্বে শিশুদের কাছে জনপ্রিয় সিরিজ হ্যারি পটারের বিভিন্ন পর্বে প্রদর্শিত বাষ্পচালিত ট্রেন পরিষেবা ‘দ্য হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস’।
স্থানীয়ভাবে ‘দ্য জ্যাকোবাইট সার্ভিস’ নামে পরিচিত এ সেবাটি যুক্তরাজ্যে দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। ট্রেনটি বন্ধ থাকার ফলে প্রায় ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত লোকসান হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন এর অপারেটর।
বিবিসির খবরে বলা হয়, হ্যারি পটার সিনেমাখ্যাত এই হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পর্যটকদের সেবা দিয়ে আসছে। বাষ্প ইঞ্জিনের এই ট্রেন এতদিন যাবত বিশেষ ছাড়ের অধীনে পর্যটকদের মনোরঞ্জন করে আসছিল। তবে এখন বাঁধ সেধেছে ট্রেনটির পুরোনো ধাঁচের দরজা।
বর্তমানে এই দরজার অনুমোদন নেই দেশটিতে। তাই ওয়েস্ট কোস্ট রেলওয়ের (ডব্লিউসিআর) এই পরিষেবাটি আবারও চালু করতে অনুমোদন লাগবে ইংল্যান্ডের অফিস অফ রেল অ্যান্ড রোডের (ওআরআর)। এই সংস্থা অনুমোদ দিলেই পুনরায় চলতে পারবে দ্য হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস।
২০০২ সালে জে কে রাউলিংয়ের বিখ্যাত শিশুতোষ সিরিজ হ্যারি পটারের দ্বিতীয় খণ্ড ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস’-এ প্রথম প্রদর্শিত হয়েছিল এই বাষ্পচালিত ট্রেন। এরপর এটি আরও কয়েকটি খণ্ডে প্রদর্শিত হয়। মূলত সেখান থেকেই দর্শকদের আকর্ষণের জায়গা হয়ে ওঠে হাইল্যান্ডসের গ্লেনফিনান ভায়াডাক্টের ওপর দিয়ে মালাইগ থেকে ফোর্ট উইলিয়াম পর্যন্ত পাড়ি দেওয়া এই হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস।
পরিষেবাটি বছরের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চালু থাকে। এ বছরও দর্শনার্থীদের পরিষেবা দিতে ট্রেনটি বিশেষ ছাড়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত দ্য জ্যাকোবাইট সার্ভিসটি বন্ধ থাকবে। তবে যারা এতে চড়তে আগেই টিকিট বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন, তারা পুরো টাকা ফেরত পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
ডব্লিউসিআরের বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক জেমস শাটলওয়ার্থ বলেন, ‘পরিষেবাটি স্থগিত হওয়ায় আমরা হতাশ; আমাদের ট্রিপ বুক করা গ্রাহকদের অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
তিনি বলেন, ‘জ্যাকোবাইট পরিষেবাটি হাজার হাজার পর্যটকের আকর্ষণের জায়গা। এটি মালাইগ এবং ফোর্ট উইলিয়ামের স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশপাশি যুক্তরাজ্যের পর্যটন খাতে প্রতি বছর অন্তত ২০ মিলিয়ন পাউন্ড যোগ করে। ওআরআর যদি আমাদের আবারও ছাড় না দেয়, তাহলে এতে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে অন্তত ৫০ মিলিয়ন পাউন্ড লোকসান হতে পারে।’
মন্তব্য