সাত মাস পর বেশি মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববী।
রোববার থেকে এই দুটি পবিত্র স্থানে নামাজ আদায় করতে পারছেন মুসল্লিরা। একইসঙ্গে মসজিদে নববীতে মহানবী হযরত মোহাম্মদের (স.) কবর জিয়ারতও করতে পারছেন তারা।
তবে শুধু স্থানীয় নাগরিক ও দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশিরাই এ সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছে সরকার।
মহানবীর জন্ম মাস রবিউল আউয়ালের শুরুতে এই সিদ্ধান্ত নিল সৌদি কর্তৃপক্ষ।
রোববার মদিনার মসজিদে নববীর বিশেষ স্থান রিয়াজুল জান্নাহতে নামাজ আদায় ও রওজা শরিফ জেয়ারত শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এশা ছাড়া চার ওয়াক্তের নামাজের পর এ কার্যক্রম চালু থাকবে।
এজন্য ‘ইতামারনা’ নামে একটি অ্যাপে নিবন্ধন করতে হচ্ছে। বেঁধে দেয়া হয়েছে নামাজ আদায় ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনের সময়।
একজন নিবন্ধনকারী নামাজসহ সবধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার জন্য ৩০ মিনিট সময় পাবেন। নিবন্ধনের সময় করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে সবাইকে।
কয়েক ধাপে ওমরাহ পালনের সুযোগ দেয়ার পরিকল্পনাও করেছে সৌদি সরকার।
প্রথম ধাপে ৪ অক্টোবর ওমরাহ পালন শুরু হয়। দিনে ছয় হাজার মুসলমান পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফের সুযোগ পাচ্ছিলেন।
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দ্বিতীয় ধাপে রোববার (১৮ অক্টোবর) এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হলে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নামাজ পড়ার অনুমতি দেয় হারামাইন কর্তৃপক্ষ।
তবে মসজিদে প্রবেশ করার অনুমতি ছিল না সাধারণ মুসল্লিদের। শুধু ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ মসজিদুল হারামের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে নামাজ আদায় করতে পারতেন।
৩১ মে মসজিদে নববী খুলে দেয়া হলেও পুরাতন মসজিদ ও রিয়াজুল জান্নাহতে নামাজ এবং রওজা শরীফের জিয়ারত স্থগিত ছিল।
সরকারি শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের আশায় মালয়েশিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশি প্রবাসীদের পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়েক মাস বা তার বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও অসম্মানজনক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা বিশেষজ্ঞরা হলেন- দাসত্বের সমসাময়িক রূপ, কারণ ও পরিণতি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টোমোয়া ওবোকাতা, মানবপাচার বিশেষ করে নারী ও শিশুপাচার সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিনিধি সিওভান মুল্লালি, প্রবাসীদের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত গেহাদ মাদি ও রবার্ট ম্যাককরকোডেল (চেয়ার-র্যাপোর্টিয়ার), ফার্নান্দা হপেনহাইম (ভাইস-চেয়ার), পিচামন ইয়োফানটং, দামিলোলা ওলাউই, এলজবিয়েতা কারস্কা এবং ব্যবসা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা দল।
জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘প্রবাসীদের ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং তাদের শোষণ, অপরাধীকরণ ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার জন্য মালয়েশিয়ার জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার।’
তারা উল্লেখ করেন, অনেক প্রবাসী মালয়েশিয়ায় এসে দেখেন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি নেই এবং অনেক সময় তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থাকতে বাধ্য করা হয়।
এর ফলে এসব প্রবাসী গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার ও বহিষ্কারের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রবাসী কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সক্রিয় অপরাধী চক্র। এতে প্রবাসীরা প্রতারিত হচ্ছেন, ঘন ঘন ভুয়া কোম্পানিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে এবং অতিরিক্ত নিয়োগ ফি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যে কারণে তাদের ঋণের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে।’
তারা বলেন, ‘আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে উভয় সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বা এটি প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এটা অগ্রহণযোগ্য এবং এর অবসান হওয়া দরকার।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘এই শোষণমূলক নিয়োগের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এখন পর্যন্ত এই বেসরকারি ব্যবসা এবং প্রতারণামূলক নিয়োগ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয় দেশের ভূমিকাই অপর্যাপ্ত।’
তারা আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক অসহায় প্রবাসীদের অপরাধীতে পরিণত করা হয়েছে এবং শোষণের শিকার হওয়ার কথা জানাতে গিয়ে কেউ কেউ তীব্র প্রতিহিংসার মুখোমুখি হয়েছেন।’
বিবৃতিতে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশকে এসব ঘটনার তদন্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের নীতিমালা মেনে চলতে মালয়েশিয়াকে আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘মালয়েশিয়াকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শ্রম অভিবাসনকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে।’
মালয়েশিয়ার ব্যবসাক্ষেত্রগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাত থেকে প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ষা করতে এবং এই ব্যবসাগুলোতে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে তাদের পরামর্শ হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, সুরক্ষা ও সহায়তা, মানবপাচারের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনি সুরক্ষা প্রয়োগ এবং দেশের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা সমুন্নত রাখতে মালয়েশিয়াকে অবশ্যই প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা এর আগে এসব বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন:পর্তুগালের প্রবাসীরা বেশির ভাগই দেশটির প্রথম রেসিডেন্ট কার্ড পাওয়ার ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পরই পাসপোর্ট আবেদন করতেন, এরপর নিজের পাসপোর্ট পাওয়ার পর স্ত্রী বা স্বামী ও ছেলে-মেয়েদের জন্য আবেদন করতেন।
তবে গত সপ্তাহে জাতীয়তা আইনের দশম সংশোধনী গেজেট আকারে প্রকাশিত হওয়ায়তে প্রবাসীদের জন্য সুখবর এলো। এখন সেফ বা এআইএমএ এন্ট্রি বা পর্তুগালের বসবাসের আবেদন থেকেই শুরু হবে নাগরিকত্ব (পাসপোর্ট) আবেদনের ৫ বছর।
সেফ বা এআইএমএ এন্ট্রি আবেদন অ্যাপ্রুভ হয়েছে এবং রেসিডেন্ট পেয়েছেন এরকম হতে হবে। এই সংশোধিত আইনের মাধ্যমে প্রবাসীদের পাসপোর্ট পাওয়ার অনেক বড় একটা সময় হিসাবের মধ্যে চলে এলো। প্রবাসীদের জন্য এটা বড় সংবাদ। আসন্ন এপ্রিল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিযেছেন আইনজীবীরা।
এই আবেদন অ্যাপ্রুভ হওয়ার পরই নাগরিক কার্ড/ সিটিজেন কার্ড ও পাসপোর্ট নেয়া যায়। জাতীয়তা বা ন্যাশনালিটি আবেদনে যেসব ডকুমেন্ট লাগবে।
দেশের ডকুমেন্টস
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, তিন মাস মেয়াদের প্রাপ্ত বয়স্কদের। জন্ম সনদ, ইংলিশ। দেশে নোটারি, ফরেন মিনিস্ট্রি, ল অ্যান্ড জাস্টিস মিনিস্ট্রি সত্যায়ন। এরপর এই দুটি ডকুমেন্ট নিকটস্থ পর্তুগাল কনসুলার ইন্ডিয়াতে পাঠাতে হয় এটাস্টেশনের জন্য। কারণ বাংলাদেশে পর্তুগালের কোনো অ্যাম্বাসি নেই।
ভারতে প্রথমে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির সত্যায়ন এরপর পর্তুগাল অ্যাম্বাসির সত্যায়ন করে পর্তুগালে আনতে হয়। পর্তুগাল শুধু নোটারীরি ও ট্রান্সলেশন করার পর এই দুটি ডকুমেন্ট আবেদনের জন্য রেডি হয়।
পর্তুগালের ডকুমেন্ট
সরাসরি নিজে অফিসে গিয়ে আবেদনের জন্য পাসপোর্ট, রেসিডেন্ট কার্ড, প্রথম রেসিডেন্ট কার্ড, বেসিক পর্তুগিজ সার্টিফিকেট (A1ও A2), পূরণ করা ন্যাশনালিটি আবেদন ফরম ও ২৫০ ইউরো।
ঠিকানা: দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত Conservatorio do Registo Civil - Almada/Amadora/Aveiro/Barreiro/Braga/Combra/Evora/Faro/Guimares/Lisboa/Mangualde/Ovar /Pombal /Portalegre/Porto/Santarem/Silves/Tondela/Torres Vedras/Vila nova de Gaia অফিস গুলোতে সকালে গিয়ে আবেদন নিজে নিজে করে নিতে পারেন। প্রয়োজনে অ্যাড্রেস ইন্টারনেট থেকে দেখে সাহায্য নিতে পারবেন।
লিসবনের মধ্যে একটি অফিসের ঠিকানা- Conservatorio do Registo Civil, RUA RODRIGO DA FONSECA ,198 1099-003 , LISBOA
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আবেদন করলে- পাসপোর্ট কপি নোটারি, রেসিডেন্ট কার্ড কপি নোটারি, প্রথম রেসিডেন্ট কার্ড নোটারি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তিন মাস মেয়াদের প্রাপ্ত বয়স্কদের, জন্ম সনদ, বেসিক পর্তুগিজ সার্টিফিকেট (A1ও A2), পূরণ করা ন্যাশনালিটি আবেদন ফরম, ২৫০ ইউরোর VALE DE POSTAL ।
নিচের অফিসগুলোর মধ্যে যেখানে আবেদন করবেন ইন্টারনেট থেকে ঠিকানা সংগ্রহ করে সেটি বরাবর Conservatorio do Registo Civil - Almada/Amadora/Aveiro/Barreiro/Braga/Combra/Evora/Faro/Guimares/Lisboa/Mangualde/Ovar /Pombal /Portalegre/Porto/Santarem/Silves/Tondela/Torres Vedras/Vila nova de Gaia
CTT EXPRESSO সার্ভিস।
আইনজীবীর মাধ্যমে অনলাইন আবেদন করলে ওপরের সব ডকুমেন্ট লাগবে। কনফিডেন্স কম থাকলে কোনো উকিলের মাধ্যমেই ন্যাশনালিটির আবেদনটি সাবমিট করাই ভালো। আবেদন সাবমিট করার সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে একটি লেটার আসবে।
এখন https://nacionalidade.justica.gov.pt/ গিয়ে, লেটারে A senha para consulta do processo e xxxx-xxxx-xxxx ১২ ডিজিটের সংখ্যাটি দিয়ে টিক চিহ্ন দিয়ে pesquisar দিলেই দেখা যায় ৭টি ধাপের অগ্রগতি। সবগুলো ধাপ সবুজ হলেই এই আবেদন এর কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
এই ধাপ গুলোতেই থাকা অবস্থায় বিভিন্ন অপরিপূর্ণ ডকুমেন্ট আবার চাইতে পারে। এরপরই সিটিজেন কার্ড ও পর্তুগালের পাসপোর্ট জন্য আবেদন করা যাবে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের অভিজাত হোটেল পেনিনসুলা থেকে পোল্যান্ডের এক নাগরিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম জজলো মাইকেল সিজারবেয়া। তিনি হত্যাকাণ্ডে শিকার হয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সোমবার সকালে নগরীর জিইসি মোড়ের পেনিনসুলা হোটেলের ৯১৫ নম্বর কক্ষের বিছানা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-দক্ষিণ) নোবেল চাকমা বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল থেকে থানায় খবর দেয়া হয় যে, ৯০৫ নম্বর কক্ষে একজন ব্যক্তির সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
‘খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করা হয়। ঘরের ভেতরে তাকে বিছানার একপাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।’
পুলিশ জানায়, মৃত জজলো মাইকেল সিজারবেয়া ঢাকার বিগেস্টার বায়িং হাউজের কোয়ালিটি কন্ট্রোলারের দায়িত্ব পালন করতেন। তবে তিনি চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) ক্যানপার্কের কোয়ালিটি চেক করতে এসেছিলেন।
কীভাবে তার মৃত্যু হলো, তা তদন্ত করছে পুলিশ।
সিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান (পিপিএম) জানান, নিহত ব্যক্তির মাথার পেছনে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খাটে ও ফ্লোরে রক্তের দাগও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার রুমটি ছিল এলোমেলো।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি হত্যাকাণ্ড। আমরা তদন্ত করছি।’
বিউটি পার্লারে বিয়ের কনের সাজ সাজতে গিয়ে আইফোন খুইয়েছেন প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসা ইন্দোনেশীয় তরুণী। মাদারীপুরের শিবচরের যুবক শামীম মাদবরকে বিয়ে করতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসেন ভিনদেশী তরুণী ইফহা।
শুক্রবার সকালে বিয়ের জন্য সাজতে শিবচর পৌর এলাকার ‘পাকিস্তানি বিউটি পার্লার’ নামের একটি বিউটি পার্লারে গিয়ে সাজগোজের সময় তার আইফোনটি চুরি হয়ে যায়।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালে ওই পার্লারে থাকা অবস্থাতেই নিজের আইফোন ১৫+ মডেলের ফোনটি একটি টেবিলের উপর রাখেন। পরে ফোনটি আর খুঁজে পাননি তিনি।
এ ঘটনায় শিবচর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
তরুণীর স্বামী শামীম মাদবর বলেন, ‘সকালে শিবচরের স্বর্ণকার পট্টির পাকিস্তানি বিউটি পার্লারে সাজার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ইফহাকে। পার্লারের ভেতরে সাজের সময় ফোনটি চুরি হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বোরকা পরিহিত এক নারী পার্লারের দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে ফোনটি নিয়ে দ্রুত বের হয়ে যান।’
তিনি বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক। পার্লারে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। পরে আমরা শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।’
পাকিস্তানি বিউটি পার্লারের স্বত্তাধিকারী রেশমা আক্তার বলেন, ‘আমার পার্লারে সারাক্ষণই কাস্টমার থাকে। ওই বিদেশী মেয়ে আর তার সঙ্গে আরও একজনসহ দুইজন সাজের জন্য আসেন। ফোনটি সারাক্ষণই তার হাতে ছিল। সাজ শেষে তিনি ফোনটি নিয়ে দরজার কাছের টেবিলের ওপর রেখে নাকফুল পরতে গেলে ওই সময়ই বোরকা পরা এক মহিলা এসে ফোনটি নিয়ে বেরিয়ে যান। তখন আমি আরেকটি কাজ করছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় কাস্টমারের মালামাল নিজেদের সঙ্গে রাখতে বলি। নিজ দায়িত্বে রাখার জন্য বলা হয়।’
শিবচর থানার ওসি সুব্রত গোলদার বলেন, ‘ভুক্তভোগী এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা তদন্ত করছি।’
আরও পড়ুন:‘আমি এখন বাংলাদেশে। আমার বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে এসেছি। এখানকার কৃষিজমিতে ফসল সুন্দর। মানুষজন আমাকে আপন করে নিয়েছে।
‘আমি খুব আনন্দে আছি। বিয়েতে দারুণ সব খাবারের আয়োজন করেছে। আমি মুগ্ধ। বন্ধুরা, ভিডিওতে তোমরা দেখো।’
আরবি ভাষায় এভাবে নিজের সুখানুভূতি প্রকাশ করছিলেন কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর।
কয়েক দিন আগে বন্ধুর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে আসেন এ কুয়েতি। বন্ধুর মেয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সবকিছুতেই মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। গ্রামের প্রাণ-প্রকৃতিও তাকে বেশ টেনেছে।
নিজের গ্রামে কুয়েতি বন্ধুকে পেয়ে আনন্দিত তার বন্ধু ইকবাল হোসেনসহ স্থানীয়রা। শনিবার সকালে দেখা যায়, স্থানীয়দের নিয়ে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর ঘুরে ঘুরে ছবি তুলছেন। মোবাইল ফোনে লাইভে যাচ্ছেন। শিশুদের মতো উল্লাস প্রকাশ করছেন।
বন্ধুত্ব যেভাবে
কুয়েতির সঙ্গে কীভাবে বন্ধুত্ব হলো সে বিষয়ে ইকবাল বলেন, ‘২০১৫ সালে আমি কুয়েতে যাই। সেখানে কাজের সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। এখন অবসরে আছেন।
‘কাজের সুবাদে আমাদের সম্পর্ক গাঢ় হয়। আমরা একে অপরের বন্ধু হই। বয়সের একটু ব্যবধান থাকলেও মনের কোনো ব্যবধান নেই আমাদের।’
তিনি বলেন, “গত বছরের শেষের দিকে আমি আমার বন্ধু আবদুল্লাকে বলি আমার মেয়ের বিয়ের বিষয়ে। সে আমাকে বলে, ‘তোমার মেয়ের বিয়ে দেখতে তোমার দেশে যাব।’ যেই কথা সেই কাজ।
“গত ১৪ ফেব্রুয়ারিতে সে কুয়েত থেকে আমার বাড়িতে আসে। আমি খুব অবাক হয়েছি। সে এখানে খুব আনন্দ করছে। আমার মেয়ের বিয়েতে এসে ছবি ভিডিও তুলে রাখছে। কুয়েতে গিয়ে সবাইকে দেখাবে।”
ইকবালের ভাই এসএন ইউসুফ বলেন, ‘আমার ভাতিজির বিয়েতে একজন কুয়েতি নাগরিক এসেছেন। তিনি আমার ভাইয়ের বন্ধু। অন্য একটি দেশ থেকে এসে তিনি যে আনন্দ পাচ্ছেন, আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে।
‘কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর আমাদের গ্রামে এ বিয়েতে অংশগ্রহণ করাতে বিয়ের উৎসব আরও দ্বিগুণ হয়েছে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, ‘শুনেছি একজন কুয়েতি নাগরিক চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নে তার বন্ধুর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছেন। তিনি বেশ কিছুদিন বাংলাদেশে অবস্থান করবেন।
‘কুয়েতি নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। তার আগমনকে আমরা স্বাগত জানাই।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশকে যাতে রাজাকারদের দেশে পরিণত করা না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে জার্মানির মিউনিখের হোটেল বার্গারহাউস গার্চিংয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সংবর্ধনায় তিনি এ আহ্বান জানান বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অবশ্যই এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। দেশকে কেউ যেন পেছনের দিকে ঠেলে দিতে ও রাজাকারের দেশে পরিণত করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।’
বক্তব্যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, দেশের প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমরা জাতির পিতার বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট সোনার বাংলাদেশে রূপান্তরিত করব।’
সরকারপ্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ফল সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় বৃথা যেতে দেবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি কখনই ভাবি না আমার কী দরকার, বরং আমি ভাবি যে আমি দেশ এবং এর জনগণের উন্নতির জন্য কী করতে পারি।’
ওই সময় শেখ হাসিনা বলেন, তার সন্তানরাও জনগণের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন।
আওয়ামী লীগকে গণমুখী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে দলটির সভাপতি বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের মানুষ মাতৃভাষা বাংলা ও দেশের স্বাধীনতা সহ সব কিছু পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের দল ক্ষমতায় থাকায় আমরা কোভিড-১৯ মহামারির মতো বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পেরেছি।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বিশ্বকে চমকে দিয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশকে মর্যাদার আসনে আসীন করেছেন বলেই বিশ্বের সকল দেশ বাংলদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কালচার মিলনায়তনে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কমিউনিটি বেলজিয়াম এবং বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ এক নাগরিক সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। ওই সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী রতন। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান। এ ছাড়া ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাশেম, ড. ফারুক মির্জা, মোতাহার চৌধুরী, মনির হোসেন পলিন প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।
ড. হাছান বলেন, ‘উন্নয়নের সকল সূচকে বাংলাদেশ আজ অনেক দূর এগিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের ‘পলিটিক্স অফ ডিনায়াল’ এবং ‘পলিটিক্স অফ কনফ্রন্টেশন’ অর্থাৎ সবকিছুতে না বলার অপসংস্কৃতি ও সাংঘর্ষিক রাজনীতি যদি না থাকত, তাদের জ্বালাও-পোড়াও যদি না থাকতো, তাহলে দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেত।
এ সময় রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখার জন্য প্রবাসীদের প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদেরকে সব সময় বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়েছেন বলেও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
প্রবাসী বক্তারা বেলজিয়ামে দীর্ঘকাল অধ্যয়নকারী ড. হাছান মাহমুদকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তারা বাংলাদেশ কমিউনিটি বেলজিয়ামের পক্ষ থেকে মন্ত্রী হাছান মাহমুদকে ফুল ও সংবর্ধনা স্মারক দিয়ে ভূষিত করেন।
এর আগে শুক্রবার ব্রাসেলসে তৃতীয় ইইউ ইন্দো-প্যাসিফিক মিনিস্টেরিয়াল ফোরামে দেশের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন ড. হাছান। ফোরামে বক্তৃতার পাশাপাশি তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস-প্রেসিডেন্ট, কমিশনার ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপস, কমিশনার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এবং দশটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য