ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসজনিত রোগে (কোভিড-১৯) এক দিনে সর্বোচ্চ তিন হাজার ২৮১ জন আক্রান্ত হয়েছে।
বুধবার রাতের বুলেটিনে রাজ্য সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে ২৩ আগস্ট একদিনে আক্রান্ত হয়েছিল তিন হাজার ২৭৪ জন।
বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে সুস্থতার হার একই রয়েছে। কমেছে মৃত্যুর গড়ও।
বুধবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয় দুই লাখ ৫৭ হাজার ৪৯ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দুই লাখ ২৫ হাজার ৭৫৯ জন। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৬ হাজার ৩৩২ জন।
পশ্চিমবঙ্গে সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ৯৫৮ জনের।
করোনা সংক্রমণের এ পরিস্থিতির মধ্যে উত্তরবঙ্গ সফর করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার তিনি বলেন, ‘কোভিড নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। রাজ্য সরকার সব রকম চেষ্টা করছে।’
তবে বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাস শুনতে রাজি নন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘কোভিড মোকাবিলায় রাজ্য সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। ভারত সরকার টাকা দিলেও মানুষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। চলছে দুর্নীতি।’
ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৬৩ লাখ ১২ হাজার ৫৮৪ জন। রোগে মৃত্যু হয়েছে ৯৮ হাজার ৭০৮ জনের। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৫২ লাখ ৭৩ হাজার ২০১ জন।
এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে গোটা দেশে আনলক-৫। আরও শিথিল হচ্ছে লকডাউন। খুলে যাচ্ছে সিনেমা হল, সুইমিং পুল।
তবে দেশটিতে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকছে। ট্রেন চলাচল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকছে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা।
পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন চললেও অনেকেই মানছে না শারীরিক দূরত্ব। বিশেষ করে হাটবাজার বা গণপরিবহণে ভিড় নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এক নিমেষে বন্ধ করতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। দেশটির এক সিদ্ধান্তেই ‘সঙ্গে সঙ্গে’ যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এমনটাই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এতদিন কেন সেটা ঘটল না, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
পূর্ব ইউরোপের যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সৌদি আরবের কী করা উচিত, সেটাও বলে দিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, সৌদি আরব ও তেল রপ্তানিকারী অন্য দেশগুলোর উচিত অবিলম্বে তেলের দাম কমিয়ে দেওয়া। তা হলেই রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে।
আল জাজিরার উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য শহর দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভা চলছে। সেখানেই স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফোরামের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, তেল রপ্তানিকারী দেশগুলো যে এখনও তেলের দাম কমায়নি, তাতে তিনি বিস্মিত।
তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনেক আগেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল সৌদিসহ অন্যদের।
পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের সদস্যদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘সৌদি ও ওপেকের সবাইকে আমি বলব, তেলের দাম কমান। আপনাদের এটা করতেই হবে।
‘সত্যি কথা বলতে, এখনও যে এটা করা হয়নি, তাতে আমি অবাক। তেলের দাম কমলে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘খনিজ তেলের দাম এখন অনেক বেশি। তাই যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইলে আপনাদের তেলের দাম কমাতে হবে।
‘যা হচ্ছে, তার জন্য ওই দেশগুলো অনেকাংশে দায়ী। এত মানুষ মারা যাচ্ছে! তেলের দাম কমার পর আমি সুদের হারও কমাতে বলব।’
ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর প্রায় তিন বছর ধরে চলছে রক্তক্ষয়ী এ সংঘাত।
দীর্ঘ এ সময়ে দুই পক্ষের পাল্টা হামলায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।
ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলে আসছেন ট্রাম্প।
তিনি প্রায়ই বলতেন, ক্ষমতায় থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধান করে ফেলতেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সম্প্রতি ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। বৈঠকের আয়োজন চলছে।
গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেন ট্রাম্প। এরপর অবিলম্বে এ সংঘাতের সমাধান দাবি করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে বলেও হুঁশিয়ারি করে দিয়েছেন আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের সঙ্গে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ হাজার যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে এমন খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের জন্য ক্রমাগত হুমকি হিসেবেই থেকে যাচ্ছে ইরান-সমর্থিত হামাস।
যুদ্ধে একই পরিমাণ হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে আভাস দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে যায় হামাস ও ইসরায়েল। এর আগে ১৫ মাসের যুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে রূপান্তরিত হয় গাজা উপত্যকা। পুরো মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
খবরে বলা হয়, হামাসে যোগ দেওয়া নতুন সদস্যরা বয়সে তরুণ ও অপ্রশিক্ষিত। তাদের এখন শুধু নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের অফিসে যোগাযোগ করা হলে সাড়া মেলেনি।
গত ১৪ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গাজায় যতজন যোদ্ধা হারিয়েছে হামাস, ততজনই তারা নতুন করে নিয়োগ দিয়েছে। এটি একটি চিরস্থায়ী বিদ্রোহ ও যুদ্ধেরই প্রস্তুতি।’
এ বিষয়ে তার কাছ থেকে আর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘গাজা যুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হন।’
হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েল।
গেল বছরের জুলাইয়ে হামাসের সামারিক শাখার প্রধান আবু ওবায়দা বলেন, ‘তারা কয়েক হাজার নতুন যোদ্ধা নিয়োগ দিতে সক্ষম।’
এবারের যুদ্ধে ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস করে দেওয়ার অঙ্গীকার করলেও গাজা উপত্যকায় গভীরভাবে নিজের অবস্থান জারি রেখেছে সংগঠনটি।
গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে হামাস সেখানে নিরাপত্তা কার্যক্রম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। পাশাপাশি নাগরিকদের মৌলিক সেবাগুলোও তারা পুনর্বহাল করতে সক্ষম হয়।
গাজা যুদ্ধে কতজন হামাস যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন, আমেরিকান কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাদের ভাষ্য, ফিলিস্তিনি এ প্রতিরোধ বাহিনীর ব্যাপক শক্তি ক্ষয় হয়েছে। সম্ভবত কয়েক হাজার যোদ্ধা খুইয়েছে তারা।
ইসরায়েলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অতর্কিত হামলা চালান হামাস যোদ্ধারা। এতে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এ ছাড়াও ২৫০ ইসরায়েলিকে তারা জিম্মি করেছিল।
পরবর্তী সময়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৬ হাজার মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত বৃহস্পতিবার জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রাপ্তির অধিকারকে সীমিত করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করার নির্বাহী আদেশকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন ওয়াশিংটনের সিয়াটল ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক জন কফেনৌর।
নির্বাহী আদেশের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন তিনি।
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, তার একটি জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বাতিল সংক্রান্ত।
ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ চ্যালেঞ্জ করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আবেদন জমা পড়ছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদেশটিকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেন ওয়াশিংটনের সিয়াটল ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক জন কফেনৌর। একই সঙ্গে নির্বাহী আদেশের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন তিনি।
ট্রাম্পের আদেশটি আটকে দিতে ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল নিক ব্রাউন এবং তিনটি ডেমোক্র্যাট শাসিত রাজ্যের পক্ষ থেকে করা আবেদনের পক্ষে রায় দেন বিচারক কফেনৌর।
আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়, এই আদেশে রাজ্যগুলোর তাৎক্ষণিক ক্ষতি হয়েছে এবং আরও বিচার বিভাগীয় আলোচনা ছাড়াই বিচারকের সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত নয়। তবে বিচারক তার স্থগিতাদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।
এদিকে নির্বাহী আদেশের ওপর দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই চলবে।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান (এমবিএস) জানিয়েছেন, তার দেশ আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৬০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনালাপে এ পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
ফোনালাপে সৌদি যুবরাজ বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যাশিত সংস্কার ‘অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’ তৈরি করতে পারে। সৌদি আরব এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চায়। আরও সুযোগ সৃষ্টি হলে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) বৃহস্পতিবার সকালে জানায়, দ্বিতীয় দফায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ওভাল অফিসে ফিরে আসার জন্য ট্রাম্পকে নিজের এবং বাদশাহ সালমানের অভিনন্দনবার্তা পৌঁছে দেন তিনি।
বিন সালমান বলেন, সৌদি নেতারা আমেরিকার জনগণের আরও অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। ওই সময় ট্রাম্প বাদশাহ সালমান ও যুবরাজকে ধন্যবাদ জানান এবং উভয় দেশের সাধারণ স্বার্থে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
যুবরাজ এমবিএস ২০১৮ সালে বলেছিলেন, ‘অস্ত্র সরঞ্জামের একটি অংশ সৌদি আরবে তৈরি হবে। এ উদ্যোগ আমেরিকা ও সৌদি আরবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
‘উভয় দেশের জন্য ভালো বাণিজ্য, ভালো সুবিধা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে আসবে। পাশাপাশি এটি আমাদের নিরাপত্তাকে সহায়তা করবে।’
ট্রাম্পের নতুন মেয়াদেও নিজেদের মধ্যে এ সহযোগিতা ধরে রাখতে চান তিনি।
প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে তিনি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ এমবিএসের সঙ্গে রিয়াদে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তরবারি নৃত্য এবং বিমান বাহিনীর ফ্লাই পাস্টের মাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
সে সময় সৌদি বাদশাহ দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘কলার অব আবদুল আজিজ আল সৌদ’-এ ভূষিত করেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে।
প্রথম দফার শাসনামলে সৌদি আরবকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও নিরাপত্তা অংশীদার’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করা ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত ভবনের নিচ থেকে ২১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানায়।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, উপত্যকায় ৫ হাজার নারী ও শিশুসহ ১৪ হাজার ২০০ মানুষ এখনও নিখোঁজ।
গাজা সীমান্তের কাছে গত বছরের ৭ অক্টোবর স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভেতরে অনুপ্রবেশ করে কিব্বুৎজ এলাকার বাসিন্দাদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বেশ কিছু ইসরায়েলি বাসিন্দাকে হত্যা করেন এবং নারী-পুরুষ ও বয়োবৃদ্ধসহ প্রায় ২৪০ জনকে অপহরণ করেন। সে সময় থেকে মধ্যপ্রাচ্যে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
একই দিন ইসরায়েল গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় এবং উপত্যকায় বোমাবর্ষণ শুরু করে।
গত ১৫ জানুয়ারি মধ্যস্থতাকারীরা ঘোষণা দিয়েছিল, ইসরায়েল ও হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষ বন্দি বিনিময়ও করেছে।
হামাস যোদ্ধারা তিন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলও ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম দফায় ৪২ দিনে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েক শ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেবে। গত ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে নতুন করে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার ৯ হাজার ৪০০ একরেরও বেশি ভূমি গ্রাস করে ফেলে আগুন।
জোরালো বাতাস ও শুষ্ক ঝোঁপঝাড়ের কারণে খুবই দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে দাবানল। এমন পরিস্থিতিতে ৩১ হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সিবিএস নিউজের খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় পৌনে ১১টায় লেক হিউজেস রোড থেকে শুরু হয় দাবানল। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই ৫০০ একর এলাকায় সেটি ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ারফাইটাররা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। এর আগেও মহানগর এলাকার দুটি বড় দাবানল তারা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছিলেন।
আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়িয়ে পড়া সবচেয়ে বিধ্বংসী দাবানলের একটি ইয়াটন ফায়ার।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ক্যাসটেইক লেক এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, তীব্র শুষ্ক ঝোড়ো বাতাসের কারণে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় ব্যাপক অগ্নিঝুঁকি রয়েছে। এতে নাগরিকদের জন্য শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে দাবানল এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও ২১ হাজারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তাদেরও নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়া লাগতে পারে।
গেল ৯ মাসে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়নি। এতে পুরো অঞ্চলটিতে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আগামী শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সেটি ঘটলে ফায়ারফাইটাররা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য