বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শিশু স্নায়ুরোগের সেবায় ইএমজি সেবা ও নিউরো-মাসকুলার ডিজঅর্ডার ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো ডিজঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা) ও শিশু নিউরোলজী বিভাগে প্রধান অতিথি হিসেবে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এর উদ্বোধন করেন।
এসব চালু করার মাধ্যমে শিশু স্নায়ু রোগীদের চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য নতুন একটু দ্বার উন্মোচিত হলো। নার্ভ কনডাকশন স্টাডি (এনসিএস) ও ইলেকেট্রোমায়োগ্রাম (ইএমজি) পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুদের স্নায়ুরোগ ও মাংসপেশির রোগ সনাক্ত করনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক বলেন, ‘আজ ইনিস্টিটিউট-অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা) ও শিশু নিউরোলজি বিভাগের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। ইপনায় সেবা নিতে আসা বিশেষ শিশুরা বেশ সংবেদনশীল। তাদের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। চিকিৎসকরা যেমন বিশেষ শিশুদের যত্ন দেবেন, তার চেয়ে বেশী সেবা পরিজনদের মাধ্যমে দিতে হবে। এতে বিশেষ শিশুরা দেশের সম্পদে পরিণত হবে। বিশেষ শিশুদের মেধার বিকাশে কাজ করছে ইপনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিশু স্নায়ুরোগীসহ সকল বিভাগে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা প্রদানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন বেশ মনোযোগী। শিশুদের ¯স্নায়ুরোগীদের সেবার জন্য বিশ্বে যে ধরনের সেবা দেয়া হয় সেটিও এখানে দেয়া হচ্ছে। সামনে আরও উন্নতমানের সেবা দেবার লক্ষে আমরা কাজ করছি।’
এ সময় ইপনার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আক্তার, শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা, অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুন্ডু, অধ্যাপক ডা. সাঈদা তাবাস্সুম আলম, সহকারী অধ্যাপক ডা. বিকাশ চন্দ্র পাল, সহকারী অধ্যাপক ডা. সানজিদা আহমেদ, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ প্রমখসহ বিভাগের সকল ফ্যাকালটি ও চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।
দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত নারী সানজিদা আক্তার মারা গেছেন।
মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র বৃহস্পতিবার এমন তথ্য নিশ্চিত করে।
তারা বলেন, ‘এইচএমপিভির একটা কেসই আমরা এ বছর পেয়েছি। এ রোগী গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মারা যান। শুধু এইচএমপিভির কারণে মারা গেছেন, তা মনে হচ্ছে না।
‘এর সঙ্গে আরও একটি অর্গানিজম পেয়েছি। এ ছাড়া তার অনেকগুলো জটিলতা ছিল। শুধু এইচএমপিভি ভাইরাসের কারণে তিনি মারা গেছেন এমনটি বলা যাবে না। এইচএমপিভি ভাইরাসে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
এ বিষয়ে দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ব্রিফ করবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) রোববার জানায়, ভাইরাসটিতে একজন নারী আক্রান্ত হন, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতি বছরই দু-চারজন রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন।’
চীনের উত্তরাঞ্চলে রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এতে আরেকটি মহামারির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সিডিসি)।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিয়াং বলেন, শীত মৌসুমে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগটির সংক্রমণ বেশি ঘটে। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কমই ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি) প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এক বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর জানায়, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি উদ্বেগজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে এ সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সেই সাথে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন: হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।’
পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা গেছে। কিন্তু রোগটি যাতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনা
১. শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
২. হাঁচি-কাশির সময় বাহু/টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন
৩. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন
৪. আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন
৫. ঘন ঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুইতে হবে(অন্তত ২০ সেকেন্ড)
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না
৭. আপনি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। প্রয়োজনে কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা রোববার জানান, বাংলাদেশের এক নারী এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এইচএমপিভি না, নিউমোনিয়ার কারণে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন।
চীনের উত্তরাঞ্চলে রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এতে আরেকটি মহামারির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নাগরিকদের পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সিডিসি)।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিয়াং জানান, শীত মৌসুমে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগটির সংক্রমণ বেশি ঘটে। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কমই ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন রোববার এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তার স্বাস্থ্যের রুটিন পরীক্ষা প্রতিদিনই চলছে। তবে সোমবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশেষ কিছু পরীক্ষা করা হতে পারে। হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখেছেন বিখ্যাত হেপাটোলজিস্ট অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডি। এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনেই তার চিকিৎসা চলছে।
‘হাসপাতালে ভর্তির পরই খালেদা জিয়ার ফিজিওথেরাপি করানো হয়েছে। এতে তার শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন বলেও জানান জাহিদ হোসেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া লন্ডনে যান। ওই দিনই হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বিশেষায়িত হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা হয়।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা এরই করা হয়েছে। সেই পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে তার চিকিৎসা চলছে।
লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
আরও পড়ুন:দেশে প্রথমবারের মতো রিওভাইরাস শনাক্ত করেছে ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর)।
পাঁচজনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হলেও কারও অবস্থাই গুরুতর ছিল না।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, রিওভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই।
এ ছাড়া ২০২৪ সালে নিপা ভাইরাস লক্ষ্মণ নিয়ে আসা রোগীদের পরীক্ষা করে পাঁচজনের শরীরে এটি পাওয়া যায়।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন ইউএনবিকে বলেন, ‘এটা আমরা ২০২৪ সালে পেয়েছি। আক্রান্তদের মধ্যে কেউই গুরুতর অসুস্থ হননি। চিকিৎসার পর সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।’
শীতে খেজুরের কাঁচা রস পান করার পর প্রতি বছর অনেকেই নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আসেন। যে ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস পাওয়া গেছে, তারা সবাই নিপা ভাইরাস নেগেটিভ ছিল।
তাদের শনাক্ত করা হয় ২০২৪ সালে। সে সময় রোগটি তেমন বিস্তার লাভ করেনি। দেশে ওই পাঁচজনই প্রথম।
যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় আইইডিসিআরের নিয়মিত গবেষণার মাধ্যমে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের সারাদেশে সব সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হেলথ কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বুধবার সন্ধ্যায় এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় অভ্যুত্থানে আহত দুজন শিক্ষার্থীর হাতে হেলথ কার্ড তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা। গণঅভ্যুত্থানের এই দুই যোদ্ধা হলেন- নরসিংদী ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী ইফাত হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু।
গত বছরের ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান ইফাত। তিনি এখনও এক চোখে দেখতে পান না। পরদিকে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত ইসরাত বর্তমানে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন। তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ নেন প্রধান উপদেষ্টা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট জেলায় হেলথ কার্ড বিতরণ করা হবে।
এ সময় জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টাকে চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে এক হাজার ৭৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৯ জনের দু’চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া প্রায় ৪৫০ জনের এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
খায়ের আহমেদ চৌধুরী জানান, চোখের ইনজুরির জন্য প্রায় ৬৫০ অপারেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে তিনশর বেশি রেটিনা সার্জারি হয়। চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বাইরে দুটো হাসপাতালে ৬০ জন রোগীর অপারেশন হয়েছে। কোনো কোনো রোগীর তৃতীয় ধাপেও অপারেশন প্রয়োজন পড়ছে।
তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত চীন, ফ্রান্স, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিকিৎসকরা চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছেন এবং যে প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তাতে চিকিৎসকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এখন পর্যন্ত চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ৬৫ জন রোগীর চোখ ভালো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবুল কেনান প্রধান উপদেষ্টাকে তার হাসপাতালের চিকিৎসার অগ্রগতি জানিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের হাসপাতালে ২১ জন রোগীর হাত অথবা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। কয়েকজন রোগীকে বিদেশে নেয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীই ধীরে ধীরে সুস্থ হবে এবং তাদের কেউ মৃত্যু-ঝুঁকিতে নেই।
হেলথ কার্ডের উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই হেলথ কার্ড থাকার অর্থ হলো এক বছর পরে হোক, দু’বছর পরে হোক যেকোনো সময় দেশের যেকোনো সরকারি হাসপাতালে কার্ডধারীরা চিকিৎসা পাবেন। এই কার্ড সবসময়ই থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ে আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা করব। অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তাদের আর্থিক নিরাপত্তা সরকার নিশ্চিত করবে।
‘তবে এর পাশাপাশি জুলাইয়ে আহত যোদ্ধাদের মানসিকভাবে, সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করার বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষগুলো যেন আনন্দে তাদের জীবনযাপন করতে পারে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সে বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।’
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও সম্পাদক সারজিস আলমসহ আরও অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার জন্য আজ বুধবার থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টারের অফলাইন ও অনলাইন কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিজিএমই) মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য দেশের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন নীতিনির্ধারণী মহল সজাগ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এবং সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, সতর্কতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখার নির্দেশনার আলোকে ১ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সব পর্যায়ে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত মেডিক্যাল কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি সব মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আর ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি।
বিএসএমএমইউ ও বিসিপিএসের অধিভুক্ত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা পঞ্চাশ হাজার টাকা করার দাবিতে সোমবার দুপুর ১২টা থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন চিকিৎসকরা।
বর্তমানে অর্থাৎ জানুয়ারি মাস থেকে ট্রেইনি চিকিৎসকদের ৩০ হাজার টাকা করে ভাতা পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে সোমবার সরকারের তরফ থেকে জুলাই মাস থেকে ভাতা ৩৫ হাজার টাকা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা মানেননি আন্দোলনরত ট্রেইনি চিকিৎসকরা।
ভাতা ৫০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে শাহবাগ অবরোধ করার আগে বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডক্টর মুভমেন্ট ফর জাস্টিস-এর সভাপতি ডাক্তার জাবির হোসেন। সেই বৈঠকে প্রস্তাব করা হয় আপাতত ৩০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা করার যে সিদ্ধান্ত সেটি মেনে নিতে। জুলাই মাস থেকে তাদের এই ভাতা ৩৫ হাজার করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
প্রতিনিধিরা আন্দোলনস্থলে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানান।
এরপর বিকেল ৪টার দিকে শাহবাগ মোড়ে এসে আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিনিধি দল। এ সময় সবাই এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। চিকিৎসকরা বলেন, জানুয়ারি মাস থেকেই ভাতা ৩৫ হাজার টাকা করলে তারা অবরোধ ছেড়ে দেবেন। যতক্ষণ এটি করা না হবে ততক্ষণ অবরোধ না ছাড়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনরতরা।
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ সিলেটের পোস্টগ্রাজুয়েট ট্রেইনি ডাক্তার আশানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এই দাবি শুনে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে আমাদের বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আমাদের আন্দোলনস্থলে আসছেন। আমরা ওনার জন্য অপেক্ষা করে আছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য