চলমান ডেঙ্গুর প্রকোপে জ্বর ও শরীর ব্যথা হলেই স্থানীয় ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক সংগ্রহ করে তা গ্রহণ করেন অনেকে। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে জ্বর ও শরীরের ব্যথা প্রশমনে গ্রহণ করা অ্যান্টিবায়োটিক ডেঙ্গুর জটিলতা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. সাজেদ হোসাইন।
তিনি বলেন, ‘জ্বর হলেই স্থানীয় ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়ার সময় এখন আর নেই। কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ডেঙ্গুর জঠিলতা আরও বাড়িয়ে দেয়। ডেঙ্গুর একটি সাধারণ এবং খারাপ লক্ষণ হচ্ছে শরীরে ব্যথা। এক্ষেত্রে সবাই ব্যথার ওষুধ খায়। কিন্তু ডেঙ্গুর সময় ব্যথার ওষুধ মারাত্মক অ্যাফেক্ট (প্রভাব) ফেলে শরীরের ওপর।
‘ডেঙ্গুতে প্যারাসিটামল ব্যতীত অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ খাওয়া যাবে না।’
মঙ্গলবার নগরীর ফতেয়াবাদ সিটি করপোরেশন ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে ফার্স্ট এইড ও ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতামূলক এক সেমিনারে এসব কথা জানান তিনি৷
চলমান ডেঙ্গুর প্রকোপে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে সেমিনারটির আয়োজন করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন কণিকা।
সেমিনারে মূখ্য আলোচক হিসেবে ডেঙ্গু ও প্রাথমিক চিকিৎসার নানা বিষয়ে আলোচনা করেন চিকিৎসক মো. সাজেদ হোসাইন।
ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো নিয়ে তিনি বলেন, ‘জ্বর হলে প্রথম ওষুধ হচ্ছে শরীরের ওজন অনুযায়ী চারবেলা করে প্যারাসিটামল। দ্বিতীয়ত তরল; ডেঙ্গুতে অনেক রোগী মারা যায় ডিহাইট্রেশনের (পানিশূন্যতা) জন্য। কিডনিকে কোনোভাবেই ডিহাইড্রেট করা যাবে না। বাসায় বসে স্যালাইন খাবেন। তৃতীয়ত, দুই থেকে তিন দিনেও জ্বর না কমলে অন্তত একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দেখাবেন।’
তিনি বলেন, ‘অনেক চিকিৎসক আছেন অল্প টাকায় রোগী দেখেন। তাদের কাছে যাবেন, তাও কম্পাউন্ডারের (ফার্মেসি চিকিৎসক, এলএমএফ চিকিৎসক) কাছে যাবেন না। একান্তই আর্থিক সমস্যা থাকলে সরকারি হাসপাতালে ১০ টাকার টিকিট কেটে ডাক্তার দেখান।’
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে কয়েকটি বিপজ্জনক লক্ষণের বিষয়ে জানিয়ে এ চিকিৎসক বলেন, ‘জ্বরের পর শরীরের কোথাও যদি লাল লাল দাগ দেখা যায় বা শরীরের কোথাও রক্তক্ষরণ হয়, যেমন- দাঁতের মাড়িতে রক্তক্ষরণ হতে পারে, নাক দিয়ে পড়তে পারে, মুখ দিয়ে পড়তে পারে, মল-মূত্রসহ শরীরের যে কোনো স্থান দিয়ে ব্লাড যেতে পারে। ডেঙ্গুতে ব্লাড যাওয়াটা বিপজ্জনক সংকেত। ব্লাড গেলে তখনই আপনার হাসপাতালে যাওয়া দরকার; একজন চিকিৎসককে অবশ্যই দেখানো দরকার।
‘প্রচণ্ড জ্বরে দুর্বল হয়ে গেলে বুঝবেন আপনার পানি স্বল্পতা তৈরি হচ্ছে। তখনই দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, ডিহাইড্রেট হলে স্যালাইন দেয়া জরুরি। আরেকটা বিপজ্জনক সংকেত হলো- পেটে পানি চলে আসা, এটা হলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
‘আরও একটা বিষয় আছে। অনেকেই হৃদরোগী আছেন, তারা ইকোস্প্রিন নামের একটি ওষুধ খান। কিন্তু ডেঙ্গুর সময় এ ওষুধটা খাওয়া যায় না। যদি খান, তাহলে রক্তক্ষরণ থামানো অনেক কষ্টকর হবে।’
ডেঙ্গু প্রতিরোধ উপায় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ডেঙ্গু নিয়ে দুটো বিষয়ে সচেতন থাকবেন। একটা হচ্ছে ডেঙ্গু যেন না হয় সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া, অন্যটি হলো ডেঙ্গু হলে কী করবেন?
‘ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটা ভ্যারিয়েন্ট আছে। একেকজনকে একটা ভ্যারিয়েন্ট আক্রমণ করছে। এতে দেখা যাচ্ছে- কারো শুধু জ্বরের মাধ্যমে সেরে যাচ্ছে, কারো প্লাটিলেট আর রক্তচাপ কমে, এমনকি কিডনি ড্যামেজ হয়ে মারা যাচ্ছে।
‘ডেঙ্গু মানে শুধু জ্বর নয়, ভ্যারিয়েন্ট অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন জটিলতা শরীরে দেখা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বাসায় যেটা করতে পারেন, ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা কোন পানিতে বেশি জন্মায় সেটা জানতে হবে। স্বচ্ছ ও স্থির পানিতেই এডিস মশা বেশি জন্মায়। বারান্দায়, ফুলের টব বা জমে থাকা বৃষ্টির পানি থাকলে পানিটা ফেলে দেওয়া উচিৎ দ্রুত। সব জায়গাগুলো শুকনো রাখার চেষ্টা করতে হবে। শুধু তাই নয়, বাসার আশেপাশে আপনার প্রতিবেশীদেরও এটা বোঝাতে হবে।
‘আশেপাশে বেশি পানির স্থির কোনো জলাশয় থাকতে পারে, সেখানেও তো এডিস মশা জন্মাতে পারে৷ সেক্ষেত্রে কী করা যাবে? সেক্ষেত্রে আপনার জানালায় ছোট ছোট জাল আটকে দিতে পারেন, যেন এটা সবসময় থাকে। তাছাড়া ঘুমানোর সময় মশারি টাঙাতে হবে।’
কণিকার সভাপতি মো. কফিল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নঈমউদ্দীন হাসান তিবরিজী। এসময় কণিকার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইফুল্লাহ মুনির, কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কণিকার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
যুব রেড ক্রিসেন্টের সহযোগিতায় সেমিনার ছাড়াও এইদিন কলেজ প্রাঙ্গণে রক্তদাতাদের সম্মাননা, ফ্রী ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পেইন, বৃক্ষরোপন ও কুইজ প্রতিযোগিতার অয়োজন করে রক্তদাতা সংগঠন কণিকা।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন।
আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মশাবাহিত রোগটিতে বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন চারজন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মারা গেছেন একজন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৪৪ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৫৭০ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। আর মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন।
বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৭৩ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৩০৩ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় সাপের দংশনে আহত হয়েছেন মিলন আলী নামে এক কৃষক। পরে অন্য কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় মিলন আলী সাপটিও হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি এলাকার একটি ধানক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে। আহত মিলন আলী ওই এলাকার তোবজুল হকের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলন আলী বলেন, ‘সাপের ধরন চিহ্নিত করতে ও সঠিক চিকিৎসার জন্য সাপটি ধরে আমার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। তাই সে সাপটি ব্যাগে করে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা সাপটি দেখে রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেছেন।’
শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মামুন কবির জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি একটি সাপের বাচ্চাসহ হাসপাতালে আসেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনিশঙ্কামুক্ত। তারপরও আমরা ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
মাদারীপুরের শিবচরে একই দিনে তিনজনকে সাপে দংশন করেছে। তাদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে শিবচর উপজেলার চর বাচামারা গ্রামের লোকমান খান বাড়ির পাশে বাদাম ক্ষেতে রাখা ঝাকার নিচ থেকে হাতে কাঁচি তুলছিলেন। এ সময় একটি সাপ তার হাতে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে তাকে বিষধর সাপে দংশন করেছে। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বজনদের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করতে বললে তারা অস্বীকার করেন। এজন্য স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোগীকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
অপরদিকে একই দিন দুপুরে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের আলেপখাঁর খাঁড়াকান্দি গ্রামের শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বাড়িতে পালা থেকে গরুর জন্য খড় বের করার সময় একটি সাপ তাকে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
একই দিন সকালে উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের মোসলেম কাজী বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা সুলতানা বলেন, সাপের দংশনে আহত তিনজন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি দুজনকে বিষধর সাপে কাটেনি। তাই তাদেরকে এন্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে তাদেরকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওষুধপত্র, স্যালাইনসহ হাসপাতালে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হলে এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ নেয়া হবে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করা উচিত। শিগগিরই এ বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হবে।
যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা জোরদার করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করা উচিত।
জেনেভা সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ফাইলেরিয়া নির্মূল এবং বিশ্বে প্রথম কালাজ্বর নির্মূল করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ৭৭তম সাধারণ সভায় তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মহাপরিচালক বলেছেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ হতে পারে একটি যথাযথ রোল মডেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যাবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হিসাবে এই তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এই সময়ের মধ্যে ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৮৮০ জন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসকের ওপর কোনো আক্রমণ যেমন আমি সহ্য করব না, তেমন রোগীর প্রতি কোনো চিকিৎসকের অবহেলাও বরদাস্ত করা হবে না।
রোববার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, মন্ত্রী হিসেবে আমার বয়স মাত্র সাড়ে ৩ মাস। এই অল্প সময়ে আমি যেখানে গিয়েছি একটা কথাই বলেছি, আমি যেমন চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, ঠিক তেমনি আমি রোগীদেরও মন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে শুধু একটা প্রতিশ্রুতিই আমি দিতে পারি, তোমরা তোমাদের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিয়ে যাও, তোমাদের বিষয়গুলোও আমি দেখব।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আর বানু প্রমুখ।
নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ অতি সাধারণ। তাদের চাওয়া-পাওয়াও সীমিত। ডাক্তারের কাছে এলে তারা প্রথমে চায় একটু ভালো ব্যবহার। একটু ভালো করে তাদের সাথে কথা বলা, একটু মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনা। এটুকু পেলেই তারা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া। আমি মনে করি সে স্বপ্ন পূরণ করার কারিগর হচ্ছো তোমরা। যারা আজকে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছো। আমার বিশ্বাস, তোমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে ৪১তম বিসিএস স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে ১০৩ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ১৭১ জন এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১৫৩ জন যোগদান করেন।
মন্তব্য