দেশের জনসংখ্যার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ ধূমপানসহ বিভিন্ন তামাকজাত দ্রব্যে আসক্ত। তামাকজনিত রোগে বছরে এক লাখ ৬১ হাজার লোক মারা যায় এবং তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। এ ছাড়া দেশের মোট মৃত্যুর ৬৭% শতাংশ অসংক্রামক রোগের কারণে হয়। এই অসংক্রামক রোগের পেছনে তামাকের ব্যবহার বহুলাংশে দায়ী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে এ সব তথ্য জানান জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কারিগরি উপদেষ্টা সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, “আইন অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, শিশুপার্ক ও খেলাধুলার স্থান থেকে এক শ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষেধ। তামাকজাত দ্রব্য অথবা সিগারেট ফেরি করে বা ভ্রাম্যমান দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করা যাবে না। সিগারেটের বিজ্ঞাপন প্রচার ও নাটক-সিনেমার দৃশ্যে ধূমপান ও মাদক গ্রহণের দৃশ্য প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ। পাবলিক প্লেস, গণপরিবহন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে ‘ধূমপানমুক্ত এলাকা’ সাইন বোর্ড স্থাপনা না করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আর্থিক জরিমানার মুখোমুখি করা হয়।
“ধূমপান মানে জেনেশুনে বিষপান। তামাকজাত দ্রব্য অথবা ধূমপানের ইতিবাচক কোনো প্রাপ্তি নেই বরং ক্ষতির অনেক দিক রয়েছে। ধূমপায়ী ব্যক্তি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আশপাশে থাকা মানুষদেরও ক্ষতি করে।”
কালের বিবর্তনে তামাকের ব্যবহারেও ভিন্নতা এসেছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তামাক, জর্দা, হুক্কা, বিড়ি, সিগারেট পেরিয়ে তরল নিকোটিন বহনকারী ক্ষতিকর ই-সিগারেটের ব্যবহারও এখন দৃশ্যমান।’
এ সময় তামাক চাষ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘তামাক চাষ কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট করে। সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে বিড়ি, সিগারেট, জর্দার মতো তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশের মানুষ তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সহযোগিতায় খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. ফিরোজ শাহের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার দপ্তরের পরিচালক মো. হুসাইন শওকত।
সেমিনারে বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোববার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৮ জন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯৫ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯৬ হাজার ৭০৬ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একদিনে দেশে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৯৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৫২৯ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬ হাজার ২২৮ জন।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬২ জন। এদিকে নতুন পাঁচজনসহ ডেঙ্গুতে চলতি বছরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২২ জন।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৫০৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯২ হাজার ৭০২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯৫ হাজার ৬৩২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুক্রবার নিয়মিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনই নারী। একই সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যত্র হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫১৭ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৭০ জন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দু’জন পুরুষ ও বাকি তিনজন নারী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫১৪ জন। একই সময়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৮৮৪ জন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য (ভিসি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্যের (অ্যাকাডেমিক) দায়িত্বরত অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহিনুল আলম।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের (চিকিৎসা শিক্ষা-১) উপসচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ প্রদানপূর্বক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়, যা গত ১০/১১/২০২৪ তারিখে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। তৎপ্রেক্ষিতে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য পদটি শূন্য রয়েছে।
“এই অবস্থায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯৮’-এর ধারা ১৩ অনুযায়ী উপাচার্যের পদ শূন্য থাকায় উপ-উপাচার্যগণের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠ উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিএসএমএমইউর অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।”
যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলমকে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম মেটাবোলিক অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাটি লিভার রোগের অগ্রগণ্য গবেষক এবং এই বিষয়ে দেশের পথপ্রদর্শক বিজ্ঞানী। শুধু দেশেই নয়, তিনি এশিয়া প্রশান্ত মহসাগরীয় অঞ্চলের জন্য ফ্যাটি লিভার রোগ নির্ণয়, ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
তিনি অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে অনেক গবেষণাপত্রের সহলেখক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। এ ছাড়াও তিনি স্কোপাস ইনডেক্সিং বিএসএমএমইউ’র একজন নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানী।
অধ্যাপক শাহিনুল আলম এশিয়ান প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অফ দ্য লিভার (এপিএএসএল), আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডি অফ দ্য লিভার (এএএসএলডি), ইউএসএ-জাপান জয়েন্ট মেডিকেলসহ ৭টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
এ চিকিৎসক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন গ্লোবাল ন্যাশ কাউন্সিলের সদস্য। তিনি এমডি হেপাটোলজি কোর্সের কোর্স কো-অর্ডিনেটর এবং একই বিষয়ে কোর্স কারিকুলামের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও তিনি বিএসএমএমইউর বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স কমিটির (আইকিউএসি) সদস্য সচিব এ অধ্যাপক।
আরও পড়ুন:চলতি বছরে দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পাঁচশ’ ছাড়িয়ে গেল। সবশেষে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬২৯ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ৫০৪ জন। তাদের মধ্যে ২৪৫ জন পুরুষ ও ২৫৯ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৬৮৫ জন।
আর সবশেষ এই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮৪২ জন ডেঙ্গু রোগী।
মন্তব্য