সিয়াম সাধনার মাস রমজানে দীর্ঘ সময় ধরে জেগে থাকতে হয় বলে চোখের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এ ক্ষেত্রে দরকার সতর্কতা। আবার নিয়মিত চোখের ওষুধ নেয়া অনেকে রমজানে সেটি কীভাবে নেবেন, তা নিয়েও থাকেন চিন্তায়। এসব বিষয়ে সাম্প্রতিক এক ভিডিওতে কথা বলেছেন গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ লায়ন্স আই হসপিটালের অধ্যাপক ডা. মো. জাফরুল হাসান। পরামর্শগুলো তার ভাষায় পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করা হলো।
১. রমজান মাস আসলে আমরা সাধারণত আমাদের ঘুমের যে ব্যাপারটা, সে ঘুমটা, সকালবেলা ওঠা, ভোররাতে ওঠা, তাহাজ্জুদ পড়া, তারপর আমাদের ইবাদতগুলো একটু বেড়ে যায়। ঘুমটা একটু কম হয়। তো আমরা নিয়মিত যারা ওষুধ ব্যবহার করি, তারা কীভাবে ওষুধগুলো ব্যবহার করব, এটা আবার রমজানের সাথে দেখা যায়, রোজা ভঙ্গ হয়ে যাওয়ার একটা ব্যাপার থাকে যে, আমরা ওষুধ ব্যবহার করব কি না। সবকিছু মিলেই আমরা আমাদের চোখের যত্নটা কীভাবে নেব, সেটা নিয়ে আজকে আলোচনা করব।
২. এখানে আমরা বলি রাখি, রমজানে আমরা ইবাদত করব। আমরা আমাদের স্বাভাবিক যে ইবাদত করি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, সাথে আমরা তাহাজ্জুদ পড়ি, আমরা আরও বেশি বেশি করে করব, কোরআন তেলাওয়াত করব। যারা হয়তো আমরা চল্লিশের কাছাকাছি চলে আসছি, তারা হয়তো আমাদের রিডিং গ্লাস লাগতে পারে। এটা আমরা আমাদের চেম্বারেও পাই যে, বয়স ৩৮, ৩৭ হয়ে গেছে। এখন বেশি বেশি পড়ার ইচ্ছা হলো। একটু মনে হয় কম দেখি। এ ক্ষেত্রে আমরা কী করব? আমরা চোখের ডাক্তারের একটু শরণাপন্ন হই। আমাদের যদি কারও গ্লাস লাগে, চল্লিশের দিকে চলে যায়, প্রেসবায়োপিয়া বলা হয়, একটা রিডিং গ্লাস আমরা যদি নিয়ে নিই, তাহলে আমরা কিন্তু আরামে পড়তে পারব।
৩. দেখা যায়, যে গ্লাস আপনি ইউজ করতেছেন, হয়তো অনেক দিন হয়ে গেছে, এটা একটু চেঞ্জ করা দরকার। কেমন জানি একটু কম লাগে। আমরা অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাব এবং এই গ্লাসটাকে আবার রিভিউ করে নেব যে, হ্যাঁ, ডাক্তার সাহেব দেখেন তো, দুই বছর তো হয়ে গেল, এই গ্লাসটা এখন জানি একটু কম লাগতেছে। এখন যে পড়ার ইয়েটা বেড়ে গেছে আমার, সে জন্যই বুঝতে পারতেছি, আমার একটু কম লাগতেছে। আমরা একটু ডাক্তারের কাছে যাব, আমরা গ্লাসটাকে চেঞ্জ করে নেব। ডাক্তার সাহেব বলবে, হ্যাঁ, আপনার পাওয়ারটা ওয়ান ছিল, এখন ওয়ান পয়েন্ট টুফাইভ লাগবে। তো এভাবে যদি আমরা নিজেরা চিন্তা করি চোখ নিয়ে, তাহলে এই জিনিসগুলো আমাদের চলে আসবে; আমরা সলভ করে নেব।
৪. আরেকটা জিনিস ঘুমটা একটু কম হয়। অনেকের দেখা যায় মাইগ্রেন থাকে, হেডেক থাকে। তো এই যে মাইগ্রেন, হেডেক, এটা কিন্তু অনেক সময় বেড়ে যায়। তো আমরা চেষ্টা করব যে, আমাদের ঘুমটাকে প্রপার করার জন্য, অন্তত সিক্স আওয়ারস, দিনে এবং রাতে মিলে যদি আমরা ঘুমায়া নিই, তাহলে আমরা কিন্তু মাইগ্রেন থেকে বেঁচে যাব। আমাদের মাইগ্রেন কিন্তু খুব প্রবলেম্যাটিক এবং কাজ বেড়ে যায়, সেহরি রেডি করতে হয়; ইফতার রেডি করতে হয়। আমার মা-বোনেরা, যারা আমরা মাইগ্রেনে ভুগি বেশি, ফ্যামিলিয়াল মেয়েদেরই মাইগ্রেন বেশি হয়। এই ক্ষেত্রে আমাদের কাজের চাপটা বেড়ে যায়। সেহরি রেডি করা, ইফতার রেডি করা। একটা পেরেশানি বেড়ে যায়। তো সে ক্ষেত্রে আমরা প্রপার রেস্ট নিতে পারি, প্রপার একটু ঘুমায়া নিতে পারি। তারপরে ইবাদত করতে হয়, ইবাদতটা একটু বাড়ায়া নিতে হয়। সবকিছু কম্প্রোইজ করে যদি আমরা চলি, তাহলে আমাদের চোখের ওপরে চাপ পড়বে না, আমরা চোখটাকে ঠিক রাখতে পারব; মাইগ্রেন থেকে আমরা বেঁচে যাব।
৫. আর যারা আমরা ওষুধ ব্যবহার করি চোখের, নিয়মিত ওষুধ, গ্লুকোমার পেশেন্ট যারা, রেটিনার পেশেন্ট, যারা আমরা ড্রাই আই পেশেন্ট, অনেক সময় ড্রাই আই বেড়ে যায় ঘুম কম হওয়ার কারণে। আমরা যদি আর্টিফিশিয়াল কেয়ার একটু ইউজ করি এই মাসে, চোখটা একটু পরিষ্কার থাকল, আরাম হলো। যদি আমরা ব্যবহার করতে পারি, তাহলে আমরা চোখটাকে সেভ করতে পারব।
৬. আমরা চোখের যত্ন যেটাকে আমরা বলি, নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করা, নিয়মিত চোখের প্রেশারটা চেক করা, আমার চশমাটা চেক করে নেয়া, এগুলা যদি আমরা একটু রমজানের আগে আগে আমরা একটু ডাক্তার সাহেবের কাছে যাই, একটু বলি ডাক্তার সাহেব, চোখের ব্যাপারটা একটু দেখে দেন, ডাক্তার সাহেব আপনাকে রিভিউ করে দিল যে, হ্যাঁ আপনি এভাবে এভাবে চলেন। আপনার কোনো অসুবিধা হবে না। এভাবে যদি রমজান মাসের আগে আগে আমরা চিন্তা করি নিই আমাদের চোখের ব্যাপারটাকে, আমরা ইনশাল্লাহ চোখটাকে ভালো রাখতে পারব। চোখের কাজটাই কিন্তু রমজান মাসে বেশি। এটা আমাদের বুঝতে হবে। রমজানে আমাদের ইবাদত, আমাদের পড়াশোনা—সবকিছু কিন্তু এই চোখের ওপরই। সুতরাং চোখ নিয়ে যদি আমরা আলাদা একটু চিন্তা করি, আমরা এগুলো সলভ করে নিতে পারব আশা করি।
৭. চোখের ওষুধ আপনি নিশ্চিন্ত মনে ব্যবহার করতে পারেন। যারা সকালে ব্যবহার করবেন, তারা একটু সেহরির আগে, যারা রাতে ব্যবহার করবেন, তারা ইফতারের পরে। মাঝের যে ড্রপটা, সেটা আপনারা দিলেন। দেয়ার পরে যদি গলায় একটু মনেও হয়, থু দিয়ে ফেলেন দিলেন। এভাবে আমরা সবকিছু মিলে যদি ব্যবহার করি, ইনশাল্লাহ আমরা চোখটাকে ভালো রাখতে পারব এবং চোখের যত্ন আমরা নিতে পারব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় সাপের দংশনে আহত হয়েছেন মিলন আলী নামে এক কৃষক। পরে অন্য কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় মিলন আলী সাপটিও হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি এলাকার একটি ধানক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে। আহত মিলন আলী ওই এলাকার তোবজুল হকের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলন আলী বলেন, ‘সাপের ধরন চিহ্নিত করতে ও সঠিক চিকিৎসার জন্য সাপটি ধরে আমার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। তাই সে সাপটি ব্যাগে করে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা সাপটি দেখে রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেছেন।’
শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মামুন কবির জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি একটি সাপের বাচ্চাসহ হাসপাতালে আসেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনিশঙ্কামুক্ত। তারপরও আমরা ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
মাদারীপুরের শিবচরে একই দিনে তিনজনকে সাপে দংশন করেছে। তাদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে শিবচর উপজেলার চর বাচামারা গ্রামের লোকমান খান বাড়ির পাশে বাদাম ক্ষেতে রাখা ঝাকার নিচ থেকে হাতে কাঁচি তুলছিলেন। এ সময় একটি সাপ তার হাতে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে তাকে বিষধর সাপে দংশন করেছে। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বজনদের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করতে বললে তারা অস্বীকার করেন। এজন্য স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোগীকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
অপরদিকে একই দিন দুপুরে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের আলেপখাঁর খাঁড়াকান্দি গ্রামের শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বাড়িতে পালা থেকে গরুর জন্য খড় বের করার সময় একটি সাপ তাকে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
একই দিন সকালে উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের মোসলেম কাজী বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা সুলতানা বলেন, সাপের দংশনে আহত তিনজন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি দুজনকে বিষধর সাপে কাটেনি। তাই তাদেরকে এন্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে তাদেরকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওষুধপত্র, স্যালাইনসহ হাসপাতালে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হলে এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ নেয়া হবে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করা উচিত। শিগগিরই এ বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হবে।
যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা জোরদার করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করা উচিত।
জেনেভা সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ফাইলেরিয়া নির্মূল এবং বিশ্বে প্রথম কালাজ্বর নির্মূল করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ৭৭তম সাধারণ সভায় তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মহাপরিচালক বলেছেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ হতে পারে একটি যথাযথ রোল মডেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যাবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হিসাবে এই তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এই সময়ের মধ্যে ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৮৮০ জন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসকের ওপর কোনো আক্রমণ যেমন আমি সহ্য করব না, তেমন রোগীর প্রতি কোনো চিকিৎসকের অবহেলাও বরদাস্ত করা হবে না।
রোববার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, মন্ত্রী হিসেবে আমার বয়স মাত্র সাড়ে ৩ মাস। এই অল্প সময়ে আমি যেখানে গিয়েছি একটা কথাই বলেছি, আমি যেমন চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, ঠিক তেমনি আমি রোগীদেরও মন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে শুধু একটা প্রতিশ্রুতিই আমি দিতে পারি, তোমরা তোমাদের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিয়ে যাও, তোমাদের বিষয়গুলোও আমি দেখব।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আর বানু প্রমুখ।
নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ অতি সাধারণ। তাদের চাওয়া-পাওয়াও সীমিত। ডাক্তারের কাছে এলে তারা প্রথমে চায় একটু ভালো ব্যবহার। একটু ভালো করে তাদের সাথে কথা বলা, একটু মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনা। এটুকু পেলেই তারা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া। আমি মনে করি সে স্বপ্ন পূরণ করার কারিগর হচ্ছো তোমরা। যারা আজকে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছো। আমার বিশ্বাস, তোমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে ৪১তম বিসিএস স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে ১০৩ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ১৭১ জন এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১৫৩ জন যোগদান করেন।
দেশে আরও ২৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার এই হিসাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
এতে জানানো হয়, নতুন করে ১৪ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৫ জনে।
তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৪ জনের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। একই সময় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৭ হাজার ৩৭৪ জনে।
দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও উত্তপ্ত তাপমাত্রার কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।
বুধবার ইয়েট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আপনার প্রতিবেশিদের দিকে নজর রাখুন- দুর্বল পরিবার, প্রতিবন্ধী শিশু, গর্ভবতী নারী এবং বৃদ্ধরা তাপপ্রবাহের সময় অসুস্থতা বা মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। সময় নিয়ে প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নিন, বিশেষ করে যারা একা থাকেন।’
ইউনিসেফের ২০২১ সালের শিশুদের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ‘অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা।
ইউনিসেফের মতে, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে, বিশেষ করে নবজাতক, শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য যারা তাপজনিত অসুস্থতা যেমন হিট স্ট্রোক এবং ডিহাইড্রেশনের কারণে বিশেষভাবে ডায়রিয়া ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যা হিসেবে বিবেচিত হয়।
ইয়েট বলেন, ‘যেহেতু শিশুদের ওপর ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাবের উদ্বেগের কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, তাই ইউনিসেফ অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের হাইড্রেটেড ও নিরাপদ রাখতে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।’
এই তাপপ্রবাহের তীব্রতা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।
তাপমাত্রা নজিরহীনভাবে বাড়তে থাকায় অবশ্যই শিশু এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে জানান ইয়েট।
এই তাপপ্রবাহ থেকে ইউনিসেফ কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, যত্নগ্রহণকারী এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের রক্ষায় নিচের পদক্ষেপগুলো নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে-
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
প্রাথমিক চিকিৎসা
যদি কোনো শিশু বা গর্ভবতী নারীর হিটস্ট্রেসের লক্ষণগুলো দেখা যায়, যেমন- মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম, বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, নাক দিয়ে রক্তপাত, পেশি খিঁচুনি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি; ওই ব্যক্তিকে ভালো বায়ু চলাচলসহ শীতল, ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখুন এবং ভেজা তোয়ালে বা শীতল পানি দিয়ে শরীর মুছে দিন।
পানি বা ওরাল রিহাইড্রেশন লবণ (ওআরএস) গ্রহণ করুন।
হিটস্ট্রেসের গুরুতর লক্ষণগুলোতে (যেমন: বিভ্রান্তি বা প্রতিক্রিয়া জানাতে অক্ষমতা, অজ্ঞান হওয়া, শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, খিঁচুনি এবং চেতনা হ্রাস) হলে জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
মন্তব্য