লিভারের মারাত্মক এক রোগ লিভার সিরোসিস। এ রোগে প্রতি বছরই অনেকের মৃত্যু হয়। প্রাণঘাতী রোগটির চিকিৎসা পদ্ধতি গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক ভিডিওতে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হেপাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেডিসিন, লিভার ও পরিপাকতন্ত্র রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফরহাদ হোসেন মো. শাহেদ। পরামর্শগুলো তার ভাষায় পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো।
লিভার সিরোসিসের চিকিৎসাটা আমরা তিন ভাগে ভাগ করে থাকি। একটা হলো সাধারণ চিকিৎসা, একটা হলো যে সমস্ত কারণে লিভার সিরোসিস হয়, কারণভিত্তিক চিকিৎসা এবং সর্বশেষ হচ্ছে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন।
সাধারণ চিকিৎসা
সাধারণ চিকিৎসার মধ্যে আসবে রোগীর খাওয়া-দাওয়া। সাধারণত লিভার সিরোসিসের রোগীদের আমরা হাই প্রোটিন ডায়েট দিই, হাই ফাইবার ডায়েট দিই এবং ব্রাঞ্চড চেইন অ্যামাইনো অ্যাসিড দিই।
হাই প্রোটিন ডায়েটের মধ্যে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এগুলো থাকবে। হাই ফাইবার ডায়েটের মধ্যে টাটকা শাকসবজি, ফলমূল এগুলো থাকবে। আর ব্রাঞ্চড চেইন অ্যামাইনো অ্যাসিডেরে মধ্যে মটরশুঁটি, মসুরের ডাল, বাদাম এগুলো থাকবে।
এ ধরনের খাবারগুলো দেওয়া হয়, কারণ লিভার সিরোসিস হচ্ছে একটা ক্ষয়জনিত রোগ। এখানে লিভার কাজ করে না। লিভার না কাজ করার কারণে রোগীরা শরীরে শক্তি পায় না। এভাবে আস্তে আস্তে ওয়েট (ওজন) কমে যায়। এ জন্য প্রোটিনটা খুবই ইম্পরট্যান্ট। প্রোটিন যাতে রোগীরা সঠিকভাবে পায়, এটা আমাদের খেয়াল রাখতে হয়।
লিভার সিরোসিস রোগীদের সাধারণ চিকিৎসার মধ্যে দুই নম্বর হলো সবসময় লিভার সিরোসিস রোগীদের কিছু না কিছু ইনফেকশন থাকে এবং অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া লাগে। তারপরে রোগীর বাথরুম যাতে ক্লিয়ার থাকে। গাট স্টেরিলাইজেশন। এ জন্য আমরা লেক্সেটিভজাতীয় কিছু দিয়ে থাকি, যেমন: অ্যাভোলাক সিরাপ, লেকটিটলের মতো ওষুধ দিয়ে থাকি, যাতে বাথরুম দুই থেকে তিনবার হয়। তাহলে রোগীর ইনফেকশনটাও কম হয়, গাট স্টেরিলাইজ থাকে। রোগীর ইমপ্রুভ থাকে।
এরপর হলো পোর্টাল হাইপারটেনশন থাকে। লিভার সিরোসিসের রোগীদের পোর্টাল প্রেশারটা কমায়া রাখতে হয়, যে কারণে আমরা ইনডেভারের মতো ওষুধগুলো প্রেসক্রাইব করে থাকি। পোর্টাল প্রেশার কম থাকলে ব্লিডিংয়ের সম্ভাবনাও কম থাকে। এগুলো হচ্ছে সাধারণ চিকিৎসা।
কারণজনিত চিকিৎসা
কারণের চিকিৎসার মধ্যে আছে, যাদের হেপাটাইটিস বি বা বি ভাইরাস থাকে, তাদের বি ভাইরাসের চিকিৎসা দেওয়া হয়। বি ভাইরাসের জন্য আগে ভাইরাস ধরা পড়লে আমরা এক বছর, দুই বছর, তিনি বছর পরীক্ষার মাধ্যমে যতটুকু ইন্ডিকেশন দিতাম, কিন্তু এখন যেটা গেছে ভাইরাসের চিকিৎসা বন্ধ করার পর অনেক রোগী আমাদের কাছে সিরোসিস বা ক্যানসার নিয়ে আসে।
কাজেই এখন ট্রেন্ড হচ্ছে ভাইরাসের ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শমতো প্রয়োজনে ৪ বছর, ১০ বছর, ১৫ বছর যা লাগে, সবসময় কন্টিনিউ করতে হবে। লিভার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে যেভাবে খেলে ভালো হয়, সেভাবে খেতে হবে।
সি ভাইরাস যদি থাকে, আমরা সি ভাইরাসের চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এটার একটা ভালো চিকিৎসা আছে।
ফ্যাটি লিভার যদি থাকে, অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে আমরা অ্যালকোহল বন্ধ করে দিই। আর নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের কারণগুলোর মধ্যে হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, ওবেসিটি এগুলো কমানোর কথা বলে থাকি।
এগুলো কমানোর সাথে সাথে এগুলো কন্ট্রোলের যে ওষুধ, সেগুলো আমরা খেতে বলি।
এরপর অটোইমিউন হেপাটাইটিস যদি থেকে থাকে, সেখানে আমরা স্টেরয়েড দিয়ে থাকি। এ ছাড়া যদি অটোইমিউন বিগ ডিজিজ থাকে, এগুলো চিকিৎসা করা হয়। এ ছাড়া উইলসন’স ডিজিজের মতো বংশগত যেসব রোগ আছে, এগুলোর সুন্দর চিকিৎসা আছে। চিকিৎসা করলে রোগী ইমপ্রুভ করে, অনেক দিন ভালো থাকে।
হার্ট ফেইলিউর রোগীদের যদি লিভার সিরোসিস থাকে, আমরা হার্ট ফেইলিউর কন্ট্রোল করি। তখন রোগী অনেক দিন ভালো থাকে।
ড্রাগসের কারণে যদি লিভার সিরোসিস হয়, সে অনুযায়ী ওষুধ পরিবর্তন করা হয়।
লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট
লিভার সিরোসিসের আমরা যে চিকিৎসাগুলো বলেছি, এগুলো এ কারণে যে, রোগী যেন জাস্ট সুস্থ থাকে এবং উপসর্গবিহীন থাকে, কিন্তু লিভার সিরোসিস যেটা হয়ে গেছে, এটার আসলে কোনো চিকিৎসা নাই। এর একটাই চিকিৎসা; লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট। এটা আমাদের দেশে চার-পাঁচটা অলরেডি হয়ে গেছে এবং সাকসেস খুবই ভালো। এ জন্য আমাদের বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অতি শিগগিরই লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট শুরু হচ্ছে। এটা নিয়ে এখন আর আমাদের কোনো চিন্তা নাই।
ইনশাল্লাহ যে সমস্ত লিভার সিরোসিস রোগী আছেন, আপনাদের চিকিৎসা ইনশাল্লাহ আছে। এটাও একটা চিকিৎসা, যেটাতে রোগী ইনশাল্লাহ সুস্থ হয়ে যায়, যে জন্য লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট এটা হচ্ছে লেটেস্ট ট্রিটমেন্ট। এটার মাধ্যমে রোগী সুস্থ হয়।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন।
আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মশাবাহিত রোগটিতে বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন চারজন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মারা গেছেন একজন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৪৪ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৫৭০ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। আর মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন।
বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৭৩ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৩০৩ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় সাপের দংশনে আহত হয়েছেন মিলন আলী নামে এক কৃষক। পরে অন্য কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় মিলন আলী সাপটিও হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি এলাকার একটি ধানক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে। আহত মিলন আলী ওই এলাকার তোবজুল হকের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলন আলী বলেন, ‘সাপের ধরন চিহ্নিত করতে ও সঠিক চিকিৎসার জন্য সাপটি ধরে আমার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। তাই সে সাপটি ব্যাগে করে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা সাপটি দেখে রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেছেন।’
শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মামুন কবির জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি একটি সাপের বাচ্চাসহ হাসপাতালে আসেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনিশঙ্কামুক্ত। তারপরও আমরা ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
মাদারীপুরের শিবচরে একই দিনে তিনজনকে সাপে দংশন করেছে। তাদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে শিবচর উপজেলার চর বাচামারা গ্রামের লোকমান খান বাড়ির পাশে বাদাম ক্ষেতে রাখা ঝাকার নিচ থেকে হাতে কাঁচি তুলছিলেন। এ সময় একটি সাপ তার হাতে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে তাকে বিষধর সাপে দংশন করেছে। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বজনদের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করতে বললে তারা অস্বীকার করেন। এজন্য স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোগীকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
অপরদিকে একই দিন দুপুরে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের আলেপখাঁর খাঁড়াকান্দি গ্রামের শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বাড়িতে পালা থেকে গরুর জন্য খড় বের করার সময় একটি সাপ তাকে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
একই দিন সকালে উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের মোসলেম কাজী বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা সুলতানা বলেন, সাপের দংশনে আহত তিনজন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি দুজনকে বিষধর সাপে কাটেনি। তাই তাদেরকে এন্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে তাদেরকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওষুধপত্র, স্যালাইনসহ হাসপাতালে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হলে এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ নেয়া হবে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করা উচিত। শিগগিরই এ বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হবে।
যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা জোরদার করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করা উচিত।
জেনেভা সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ফাইলেরিয়া নির্মূল এবং বিশ্বে প্রথম কালাজ্বর নির্মূল করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ৭৭তম সাধারণ সভায় তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মহাপরিচালক বলেছেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ হতে পারে একটি যথাযথ রোল মডেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যাবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হিসাবে এই তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এই সময়ের মধ্যে ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৮৮০ জন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসকের ওপর কোনো আক্রমণ যেমন আমি সহ্য করব না, তেমন রোগীর প্রতি কোনো চিকিৎসকের অবহেলাও বরদাস্ত করা হবে না।
রোববার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, মন্ত্রী হিসেবে আমার বয়স মাত্র সাড়ে ৩ মাস। এই অল্প সময়ে আমি যেখানে গিয়েছি একটা কথাই বলেছি, আমি যেমন চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, ঠিক তেমনি আমি রোগীদেরও মন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে শুধু একটা প্রতিশ্রুতিই আমি দিতে পারি, তোমরা তোমাদের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিয়ে যাও, তোমাদের বিষয়গুলোও আমি দেখব।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আর বানু প্রমুখ।
নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ অতি সাধারণ। তাদের চাওয়া-পাওয়াও সীমিত। ডাক্তারের কাছে এলে তারা প্রথমে চায় একটু ভালো ব্যবহার। একটু ভালো করে তাদের সাথে কথা বলা, একটু মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনা। এটুকু পেলেই তারা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া। আমি মনে করি সে স্বপ্ন পূরণ করার কারিগর হচ্ছো তোমরা। যারা আজকে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছো। আমার বিশ্বাস, তোমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে ৪১তম বিসিএস স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে ১০৩ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ১৭১ জন এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১৫৩ জন যোগদান করেন।
মন্তব্য