লিভারে অতিরিক্ত ফ্যাট বা চর্বি জমে যে রোগ হয়, সেটি পরিচিত ফ্যাটি লিভার হিসেবে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে অনেকে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
এক ভিডিওতে এ রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হেপাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হোসেন মো. শাহেদ। পরামর্শগুলো তার ভাষায় তুলে ধরা হলো পাঠকদের সামনে।
কারণ
বর্তমানে ফ্যাটি লিভারটা খুব বেড়ে গেছে আমাদের সমাজে। এটার কারণ হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। যেমন: আমাদের খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম, আমাদের চলাফেরায় অনিয়ম, আমাদের জীবনযাপনে অনিয়ম, ঘুমের অনিয়ম। এই ধরনের অনিয়মের কারণে আমরা ফ্যাটি লিভারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছি।
লক্ষণ বা উপসর্গ
ফ্যাটি লিভার হলে প্রাথমিকভাবে উপসর্গ দেখা দেবে। শরীরে একটা অশান্তি বা অস্থিরতা কাজ করবে। শরীরের ওজন বেড়ে যাবে। পেটটা বড় হয়ে যাবে। পেটে একটা অশান্তি লাগবে। খাওয়ার অরুচি ধরবে।
এ ধরনের রোগীদের দেখা যায় যে, আস্তে আস্তে ডায়াবেটিস ডেভলাপ করে, হাইপারটেনশন ডেভলাপ করে। হাই কোলেস্টেরল ডেভলাপ করে।
পরীক্ষা
এ জন্য যখন দেখা যাবে যে, খাওয়ার অরুচি হচ্ছে বা শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছে বা একটা অস্থির অস্থির ভাব লাগতেছে, তখন নিকটস্থ ডাক্তারের সাথে বা লিভার রোগের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। করলে দেখা যাবে যে, রক্তের মধ্যে কোলেস্টেরল বেশি বা ব্লাড সুগারটা হয়তো বেশি থাকতে পারে, প্রেশারটা বেশি থাকতে পারে। তো এই ধরনের রোগীগুলো যখন কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যান বা আমাদের লিভার রোগের ডাক্তারের কাছে আসেন, আমরা তখন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি।
১. আমরা ব্লাড সুগার প্রথমেই করি। ডায়াবেটিস আছে কি না, কোলেস্টেরল বা রক্তে চর্বির পরিমাণটা মাপি। হয়তো দেখা যাবে যে, কোলেস্টেরলটা অনেক বেশি থাকে।
২. তারপরে লিভার ফাংশনটা আমরা পরীক্ষা করি। তখন দেখা যায় যে, এলজিবিটি বলে একটা লিভার ফাংশন টেস্ট, এলজিবিটি অনেক বেশি থাকে।
৩. তারপর আমরা আল্ট্রাসনোগ্রাম করি পেটের। তখন দেখা যাবে, ফ্যাটি লিভার ধরা পড়ে। আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভারটা প্রথমে ডায়াগনসিস হয়।
৪. এরপরে আমরা আরও সূক্ষ্মভাবে ফ্যাটি লিভারটা ধরার জন্য ফাইব্রোস্ক্যান অব দ্য লিভার নামের একটা নতুন টেস্ট আছে, এই পরীক্ষাটা করা হয়। এটা করলে আপনার লিভারে চর্বির পরিমাণ কতটুকু আছে, এর মাত্রাটা ধরা পড়ে। এই চর্বিটা লিভারের কোনো ক্ষতি করতেছে কি না বা ফাইব্রোসিস করতেছে কি না, এটারও একটা মাত্রা ধরা পড়ে। তখন আমরা ফাইব্রোস্ক্যানের যে রিপোর্ট, ফ্যাট কনটেন্ট এবং ফাইব্রোসিসের মাত্রা দেখে ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসাটা শুরু করি।
প্রতিকার
১.চিকিৎসার মধ্যে আমরা প্রাথমিকভাবে লাইফস্টাইল মডিফিকেশনটা (জীবনযাপনে পরিবর্তন) ফার্স্ট করি। মানে রোগী কী খাবে, কীভাবে ঘুমাবে, কীভাবে চলাফেরা করবে। এর মধ্যে আমরা প্রাথমিকভাবে যেটা করি, চর্বিযুক্ত খাবারটা পরিহার করতে বলি। ভাত এক বেলা খেতে বলি; রুটি দুই বেলা খেতে বলি। আর দৈনিক আধা ঘণ্টা থেকে ৪০ মিনিট; কারও কারও ক্ষেত্রে এক ঘণ্টা ব্যায়াম করতে বলি।
২. আমরা বডি হাইট (উচ্চতা) ও ওয়েট (ওজন) মেপে কতটুকু আইডিয়াল ওয়েট (আদর্শ ওজন) থাকা উচিত, প্রত্যেকটা প্যাশেন্টকে আমরা বলে দিই। যখন প্রতিটা প্যাশেন্ট উনাদের আইডিয়াল ওয়েট জানতে পারে, ওই অনুসারে উনাদের ওয়েটটা কমাতে হয়।
৩. ফ্যাটি লিভারের সাথে অ্যাসোসিয়েটেড যে কয়েকটা রোগ থাকে, কারও যদি হাইপারটেনশন থাকে, প্রেশার কন্ট্রোল করতে বলি। কারও ডায়াবেটিস থাকলে ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে বলি। অনেকের দেখা যায় হার্টের রোগ থাকে, অন্যান্য রোগ থাকে। ওই রোগগুলো কন্ট্রোল করতে বলি।
৪. ফ্যাটি লিভারের এখন কিছু স্পেসিফিক চিকিৎসা বের হয়েছে। ওবেটিকোলিক অ্যাসিড বা সোডিঅক্সিকোলিক অ্যাসিড। এ ধরনের ওষুধগুলো আমরা প্রেসক্রাইব করে থাকি।
৫. ফ্যাটি লিভার হলে যে চিকিৎসা করতে হবে এমন কোনো কথা নাই। ডাক্তারের কাছে পরামর্শ করতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে কী ধরনের চিকিৎসা লাগবে, ডাক্তারই পরামর্শ দিয়ে থাকে, তবে মন খারাপ করার কিছু নাই। অনেক সময় ফ্যাটি লিভার ভালো হতে অনেক দিন সময় লাগে; ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করতে হয়।
৬. আপনারা যারা ফ্যাটি লিভার বা এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বা এখনও জানেন না ফ্যাটি লিভার আছে, কিন্তু প্রেশার আছে, ডায়াবেটিস আছে, আপনারা অবশ্যই ফ্যাটি লিভার আছে কি না, চেক করে নেবেন। সেই ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভার ধরা পড়লে এটার চিকিৎসা শুরু করা যাবে।
বাংলাদেশে রোগী অনুপাতে ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসার নূন্যতম আর্থিক মূল্য ৭৫ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা জানিয়ে হেপাটোলজি সোসাইটি বলেছে, এ অর্থ জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের দ্বিগুণ।
ষষ্ঠ আর্ন্তজাতিক ন্যাশ দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে হেপাটোলজি সোসাইটি আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহিনুল আলম।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন লিভার বিশেষজ্ঞ ও হেপাটোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মবিন খান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অধ্যাপক ডা. এ এস এম মতিউর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম হারুন উর রশিদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আমির খসরু ও গ্লোবাল লিভার ইনস্টিটিউটের সভাপতি ডোনা ক্রাইয়ার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. মো. সাইফুল ইসলাম এলিন বাংলাদেশে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের বিষয়ে বলেন, দেশে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি লোক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। দিনে দিনে তা বেড়েই চলেছে। তাই ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ বিষয়ে আলোকপাত করে একই বিভাগের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, জীবনাচরণ পরিবর্তনের পাশাপাশি ৭ থেকে ১০ শতাংশ ওজন হ্রাস হচ্ছে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের মূলমন্ত্র।
ফ্যাটি লিভারের কারণে দেশে যে আর্থিক বোঝা তৈরি হচ্ছে তার একটি হিসাব দেখান হেপাটোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম। তার টিমের গবেষণালব্ধ উপাত্ত অনুযায়ী, প্রতিটি ফ্যাটি লিভার রোগীর হাসপাতালে একবার চিকিৎসা নিতে গড়ে ১৬ হাজার ৮১০ টাকা ব্যয় হয়। সে হিসাবে সব রোগী একবারের জন্য চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে গেলে মোট ব্যয় ৭৫ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা, যা জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের দ্বিগুণ।
অধ্যাপক আলম জানান, ফ্যাটি লিভারজনিত সিরোসিস ও লিভার ক্যানসারের রোগী ক্রমাগত বাড়ছে। এ সংক্রান্ত জটিলতার ক্ষেত্রে শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
১০ সুপারিশ
বাংলাদেশকে বিপুল আর্থিক বোঝা থেকে পরিত্রাণ দিতে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ এবং দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ওপর জোর দিয়ে হেপাটোলজি সোসাইটি গোলটেবিল বৈঠকে ১০টি সুপারিশ উত্থাপন করে।
১. প্রত্যেক ব্যক্তির সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে হাঁটতে হবে।
২. সম্ভব হলে দড়ি লাফ, সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটার মাধ্যমে শরীরচর্চা প্রয়োজন।
৩. হাঁটা ও শরীরচর্চার জন্য পর্যাপ্ত সবুজ জায়গার ব্যবস্থা করা আবশ্যক।
৪. ‘স্বাস্থ্যকর নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যকর নগর’ স্লোগানের আওতায় শহরগুলোকে সবুজ, পরিচ্ছন্ন এবং
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের উপযোগী করে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।
৫. প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজাপোড়া কমাতে হবে এবং দুধ, ফল ও শাকসবজি খাওয়া বাড়াতে হবে।
৬. গণসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাংক ফুড পরিহার এবং বাসায় বানানো স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৭. প্রক্রিয়াজাত খাবারের ক্ষেত্রে প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠানকে পুষ্টিমাণ বজায় রাখার জন্য আদর্শমান সরবরাহ এবং আইন করে তা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. দেশের প্রতিটি স্কুলে ‘স্কুল হেলথ প্রোগ্রাম’-এর আওতায় খেলার মাঠ বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং ক্লাসের শুরুতে শরীরচর্চার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৯. স্কুলভিত্তিক স্বাস্থ্যকর খাবার টিফিন হিসেবে প্রদান নিয়মে পরিণত করতে হবে।
১০. দেশি প্রতিটি বড় রাস্তার পাশে বাইসাইকেল চালানোর লেন করতে হবে এবং সবাইকে মোটরযানের পরিবর্তে বাইসাইকেল চালাতে উৎসাহিত করতে হবে।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চলতি বছর একদিনে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। এই সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৭ জন। আর চলতি মাসের প্রথম ৩ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৪ ডেঙ্গু রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৯৭ জনের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৭ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩৮৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছে ৩৩৮ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালে রয়েছেন ৪৯ জন। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৩৭৬ জন আর বাড়ি ফিরে গেছেন এক হাজার ৯৭৩ জন।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া তিনজনসহ এ বছর মৃত্যু হলো ১৬ জনের। মারা যাওয়া তিনজন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রাজধানীর এই হাসপাতালেই ভর্তি ৪৮৭ জন। যা অন্য হাসপাতালের চেয়ে সর্বাধিক। সেখানে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০৮ জন। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
অন্যদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৫৩ জন। এখানে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪০ জন আর মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বাকি ৩ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৬৬ জন। তাদের মধ্যে মারা যান ৬ জন। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন ভর্তি হয়, মৃত্যু হয় তিনজনের। মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হয় ১১১ জন। এপ্রিলে ভর্তি হয় ১৪৩ জন আর মৃত্যু হয় দুজনের। চলতি মাসে ডেঙ্গুতে মারা যান দুজন আর গত মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন।
সাধারণত দেশে জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, কিন্তু এবার মে মাসেই সর্বাধিক ডেঙ্গু রোগী সারা দেশে শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
২৪ ঘণ্টার হিসাবে শুক্রবার বিকেলে এক সাংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দুজনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৪৮ জন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত দুজনের মধ্যে একজন পুরুষ ও একজন নারী। তারা ঢাকা বিভাগের সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে।
একই দিনে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৮৯ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৯ হাজার ৫০৬ জনে।
অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ৬ হাজার ৩১৩ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১ হাজার ৫০৯টি এবং মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ৫১৫টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন:দেশে ডেঙ্গু ও করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিনই রাজধানীসহ সারা দেশে ভর্তি হচ্ছেন এডিস মশার কামড় খাওয়া ও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীরা।
২৪ ঘণ্টার হিসাবে রোববার সর্বশেষ ডেঙ্গুতে দেশে ৬৭ জন এবং করোনায় ৭৩ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমের আগেই বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকবে। বাড়বে করোনাও। এখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ডেঙ্গু
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে ঢাকায় নতুন ভর্তি রোগী ৫৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৯ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগী ২০৯ জন এবং ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগী ১৮০ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে ভর্তি রোগী ২৯ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ মে পর্যন্ত মোট ভর্তি রোগী ১ হাজার ৭৭১ জন। এর মধ্যে ঢাকায় মোট ভর্তি রোগী ১১৭৭ জন। ঢাকার বাইরে ভর্তি রোগী ৫৯৪ জন।
এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৪৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৯৮৭ জন, ঢাকার বাইরে ৫৬২ জন।
এ বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনা
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আগের দিন ৯২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৬১ জনের। সংক্রমণ কমেছে ১ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনিবার শনাক্তের হার ছিল ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। রোববার কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৪ লাখ ১৮ হাজার ৮১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭১ জন। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যাননি। এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৪৬ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ১৮ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ২০ লাখ ৬ হাজার ২১২ জন। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। শনিবার সুস্থতার হার ছিল ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। সূত্র: বাসস
আরও পড়ুন:মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা বেশি। তাই রাজধানীবাসীসহ দেশের মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়। কারণ ওই সময়ে শুরু হয় বর্ষাকাল। এই প্রাদুর্ভাব চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ বছর মৌসুম শুরুর আগেই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
সিটি করপোরেশনকে আরও বেশি তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, প্রাক মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক জনবহুল, তার ওপর এখানে দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। ফলে এখানে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সহজ না। এরই মাঝে অপ্রত্যাশিত কিছু মৃত্যু হয়েছে। মে মাসে যেটুকু হয়েছে, তা অন্যান্য সময়ে হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, নগরায়নের কারণে ঢাকা মহানগরে রোগীর সংখ্যা বেশি। আমাদের পরিসংখ্যান না দেখে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা শহরে ৯ ধরনের গবেষণা করে থাকি। এসব গবেষণার মাধ্যমে ডেঙ্গু পরিস্থিতি দেখি এবং পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় যেখানে ঘনবসতি সেখানে মশার উপদ্রব বেশি। তবে নির্দিষ্ট করে কোন এলাকায় সবচেয়ে বেশি সেটি বলা এ মুহূর্তে কঠিন। রোগীদের তথ্য যাচাই করে তারপর বলা যাবে। আমরা পুরো ঢাকা শহরকেই বিবেচনায় নিচ্ছি। আমাদের কাজ রোগী ব্যবস্থাপনা। ডেঙ্গু কোথায় বেশি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় সরকারের।
অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন বলেন, ঢাকায় অপরিকল্পিতভাবে নগরী গড়ে উঠছে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে আমরা প্লাটিলেটকে সামনে আনি। অথচ এটি সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের উচিত সচেতনতায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া।
ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সংক্রমণের পরীক্ষা সর্বোচ্চ মূল্য ৫০০ টাকা ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরীক্ষা ১০০ টাকা। কোনো হাসপাতালে এর বেশি নেওয়া হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা মহানগরীর পর কক্সবাজারে বেশি ডেঙ্গু রোগী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১০৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর কক্সবাজারে থাকা বাংলাদেশীদের মধ্যে এই সংখ্যা ৪২৬। এ বছর সব মিলিয়ে ১৭৫০ জন ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১৬০ জন ঢাকায় এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৩ জন, যাদের দশজন ঢাকার।
রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলতি বছর ১ হাজার ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে এ ক্যাম্পে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা কঠিন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানুষের ঘনত্ব বেশি এবং পানি সংকটের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে পানি পাত্রে জমিয়ে রাখা হয়, আর এ পানিতেই মশা জন্ম নেয়। তবে ভাষাগত সমস্যা ও ক্যাম্পের ভেতরে প্রবেশজনিত সমস্যার কারণে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেখানকার উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের টিম গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক রাশেদা ইসলাম, অধ্যাপক কাজী তারিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২২০ জন।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে গত ২৪ ঘণ্টার এ হিসাব দেয়া হয়েছে।
নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদর মধ্যে ঢাকায় ১০৪ এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ১১৬ জন ভর্তি হয়েছেন।
অধিদপ্তর থেকে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট এক হাজার ৬০ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৫৯১ এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি ৪৬৯ জন রোগী।
এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে ৬০ হাজার ২৯৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৮ হাজার ১০৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ২২ হাজার ১৯৪ জন।
এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে ২৬৬ জন মারা গেছেন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫৮ হাজার ৯৭২ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৭ হাজার ৩৪৯ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে ২১ হাজার ৬২৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন:দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। পুরুষদের তুলনায় নারীরা এই সমস্যায় পড়েছেন চার থেকে পাঁচ গুণ।
বুধবার রাজধানীতে অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অফ বাংলাদেশ (এসিইডিবি) আয়োজিত বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এসিইডিবির অফিসে সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এ হালিম খান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, থাইরয়েড রোগীর অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেন না যে তারা এ সমস্যায় ভুগছেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন, বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ থাইরয়েড সমস্যা। তাই গর্ভধারণ সংক্রান্ত সমস্যা হলে গাইনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শের পাশাপাশি থাইরয়েডের চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। তা না হলে নবজাতকের মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় শিশু অস্বাভাবিক হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভবতী অবস্থায় ও প্রসবের আগে থাইরয়েড পরীক্ষা জরুরি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমান বলেন, সাধারণত আয়োডিনের অভাবে গলাফুলা রোগ হয়ে থাকে, যাকে সাধারণ ভাষায় ঘ্যাগ রোগ বলা হয়।
বাংলাদেশে আয়োডিন যুক্ত লবণ খাওয়া হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দেশের বেশিরভাগ স্কুলগামী শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের আয়োডিনের অভাব রয়েছে। আয়োডিন শরীরে খুব প্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অনুষ্ঠানে থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, থাইরয়েডের বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। থাইরয়েডের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় অনেকে দেরিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ না জেনেই অনেকের পরামর্শে পরামর্শে ওষুধ খান। এতে অনেক সময় ভুল ওষুধ খাচ্ছেন। এতে রোগের জটিলতা বাড়ছে।
থাইরয়েডের প্রকারভেদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হাইপো থাইরয়েড হলে, অল্প খাবার খেয়েও মানুষের ওজন বেড়ে যাবে, শরীর দুর্বল লাগবে। এসব রোগীদর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, নারীদের ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত মাসিকের সমস্যা হয়। অপরদিকে হাইপার থাইরয়েডের ক্ষেত্রে তার বিপরীত লক্ষণ দেখা যায়। এর চিকিৎসাও আলাদা হবে।
মন্তব্য