রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে রক্তশূন্যতা ধরা হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে একে বলা হয় অ্যানিমিয়া। হিমোগ্লোবিনের প্রধান কাজ শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করা। হিমোগ্লোবিন রক্তের লোহিত কণিকায় থাকে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে রক্তে স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ১৪ থেকে ১৭ গ্রাম। নারীদের ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৫ গ্রাম। এ মাত্রা কমে নারী ও পুরুষ উভয়ের রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
রক্তশূন্যতা কেন হয়, বিশেষত নারীরা কেন এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন, সে বিষয়ে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও হেমাটোলজিস্ট মনিরুল ইসলাম।
রক্তশূন্যতা কেন হয়
বিভিন্ন কারণেই রক্তশূন্যতা হতে পারে। রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরির অন্যতম প্রধান উপাদান হলো আয়রন। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া হতে পারে। একে বলে ‘আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া’। এ ছাড়া ভিটামিন-বি ও ফলিক অ্যাসিডের অভাব, দীর্ঘমেয়াদি বিশেষ কিছু রোগ, যেমন: কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া, যক্ষা, ব্লাড ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া, রক্তক্ষরণ ইত্যাদি কারণে রক্তশূন্যতা হতে পারে।
আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতার হারই সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে। নারীদের মধ্যে এর হার বেশি।
বাংলাদেশে নারীদের গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতার হার সবচেয়ে বেশি। এই রক্তশূন্যতার কারণে গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু হতে পারে।
আয়রনের ঘাটতির কারণ
সাধারণত অপুষ্টির কারণে আয়রনের ঘাটতি হয়। খাদ্যে পর্যাপ্ত আয়রন না থাকলে এ অভাব দেখা দেয়। গর্ভাবস্থায় নারীদের বাড়তি আয়রনের প্রয়োজন, কিন্তু দেখা যায় আমাদের দেশে গর্ভবতী মায়েরা অনেক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের সুযোগ পান না।
আরও একটি কারণে নারীরা আয়রনের ঘাটতিতে ভোগেন। সেটি হলো ঋতুস্রাবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। আবার দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষরণ হলেও আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। পেপটিক আলসার, পাইলসের মতো জটিলতার কারণেও আয়রনের ঘাটতি হয়ে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) পরীক্ষা করলেই রক্তশূন্যতা আছে কি না বোঝা যায়।
প্রতিকার
অ্যানিমিয়া প্রতিকারের মুলমন্ত্র খাবারে নিহিত। আপনি যদি রক্তশূন্যতায় ভোগেন, তাহলে সবার আগে নজর দেবেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। আর চেষ্টা করতে হবে অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতিকার না খুঁজে আগেই প্রতিরোধ করার। কারণ একবার কোনো রোগ হয়ে গেলে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া কষ্টকর। আর গর্ভবতী মায়েদের সঠিক নিয়মে খাওয়া-দাওয়া আরও বেশি জরুরি। তা না হলে তিনি ও তার অনাগত সন্তান উভয়ের ওপরই প্রভাব পড়বে।
রক্তশূন্যতায় কী কারণে আয়রনের ঘাটতি হলো তা আগে জানতে হবে।
সাপ্লিমেন্ট হিসেবে আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে। এ ছাড়া আয়রনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন: কচুশাক, ডাঁটাশাক, পালং শাক, শিম ও শিমের বিচি, কাঁচা কলা, সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, গরু-খাসির মাংসে প্রচুর আয়রন থাকে।
বাংলাদেশের নারীদের বিশেষ করে গর্ভকালীন একটা বড় সমস্যা রক্তশূন্যতা। একটু সচেতন হলেই এর সমাধান সম্ভব।
আরও পড়ুন:চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ১৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে ৭ জুন একদিনে ১৪৭ জন ভর্তি হবার রেকর্ড ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শনিবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫৬ জন। এ সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের। চলতি জুন মাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু এনিয়ে ৯ জন মারা গেছেন।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৫৬ জনের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৮ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮ জন।
বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫৪৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ৪৭৩ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৭৬ জন।
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ২১ জন আর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ২৭৬ জন।
দেশের জনসংখ্যার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ ধূমপানসহ বিভিন্ন তামাকজাত দ্রব্যে আসক্ত। তামাকজনিত রোগে বছরে এক লাখ ৬১ হাজার লোক মারা যায় এবং তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। এ ছাড়া দেশের মোট মৃত্যুর ৬৭% শতাংশ অসংক্রামক রোগের কারণে হয়। এই অসংক্রামক রোগের পেছনে তামাকের ব্যবহার বহুলাংশে দায়ী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে এ সব তথ্য জানান জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কারিগরি উপদেষ্টা সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, “আইন অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, শিশুপার্ক ও খেলাধুলার স্থান থেকে এক শ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষেধ। তামাকজাত দ্রব্য অথবা সিগারেট ফেরি করে বা ভ্রাম্যমান দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করা যাবে না। সিগারেটের বিজ্ঞাপন প্রচার ও নাটক-সিনেমার দৃশ্যে ধূমপান ও মাদক গ্রহণের দৃশ্য প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ। পাবলিক প্লেস, গণপরিবহন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে ‘ধূমপানমুক্ত এলাকা’ সাইন বোর্ড স্থাপনা না করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আর্থিক জরিমানার মুখোমুখি করা হয়।
“ধূমপান মানে জেনেশুনে বিষপান। তামাকজাত দ্রব্য অথবা ধূমপানের ইতিবাচক কোনো প্রাপ্তি নেই বরং ক্ষতির অনেক দিক রয়েছে। ধূমপায়ী ব্যক্তি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আশপাশে থাকা মানুষদেরও ক্ষতি করে।”
কালের বিবর্তনে তামাকের ব্যবহারেও ভিন্নতা এসেছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তামাক, জর্দা, হুক্কা, বিড়ি, সিগারেট পেরিয়ে তরল নিকোটিন বহনকারী ক্ষতিকর ই-সিগারেটের ব্যবহারও এখন দৃশ্যমান।’
এ সময় তামাক চাষ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘তামাক চাষ কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট করে। সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে বিড়ি, সিগারেট, জর্দার মতো তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশের মানুষ তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সহযোগিতায় খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. ফিরোজ শাহের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার দপ্তরের পরিচালক মো. হুসাইন শওকত।
সেমিনারে বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন:সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ সময় ১৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়। বুধবারও ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২ জন ডেঙ্গু রোগী।
বর্তমানে সারা দেশে ৫০৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৩৭ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৬৯ জন।
এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ২১ জনের।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ২ হাজার ৮৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২ হাজার ১১৯ জন ও ঢাকার বাইরে সারা দেশে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৩৫ জন।
ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৩২৭ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৬৬৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬৬২ জন।
আরও পড়ুন:গত বছরের তুলনায় স্বাস্থ্যখাতে বাজেটে বরাদ্দ ১২শ’ কোটি টাকা বাড়লেও তা দেশের জনসংখ্যার তুলনায় স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধিতে অপর্যাপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এটি জিডিপির তিন শতাংশ হলে ভালো হতো বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনায় আমরা বুঝতে পেরেছি স্বাস্থ্যখাত কত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত বিশ্বে মোট বাজেটের ১০ ভাগেরও বেশি রাখা হয় স্বাস্থ্যখাতের জন্য। আমাদের বর্তমান বাজেটের মাত্র প্রায় ১ শতাংশ রয়েছে স্বাস্থ্যখাতের জন্য। স্বাস্থ্যখাতের জন্য এবারের বাজেটে মোট বাজেটের ৩ শতাংশ বরাদ্দ করা হলে, দেশের মোট জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে আরও দ্বিগুণ স্বাস্থ্যসেবা দেয়া সম্ভব হতো।'
দেশে বর্তমানে ৪৫ হাজার নার্স ও মিডওয়াইফারি কর্মরত রয়েছে যা আগে মাত্র ২০ হাজার ছিল বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। করোনা মোকাবিলায় নার্সদের ব্যাপক ভূমিকার কথাও এসময় তুলে ধরেন মন্ত্রী।
তবে, হাসপাতাল আরও পরিচ্ছন্ন রাখা, রোগীর সেবা বৃদ্ধি করার কাজে নার্সদের আরও সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে হবে বলে জানান তিনি।
নার্সিং ও মিডওয়াইফ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বর্দন জং রানা, জাইকার সিনিয়র প্রতিনিধি কমোটি তাকাশি, কানাডা হাইকমিশনারের প্রথম সচিব জোসেফ সেভাটুসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:দেশজুড়ে চলছে তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ। কোথাও সেটি মৃদু থেকে মাঝারি, কোথাও আবার তীব্র। এমন পরিস্থিতিতে হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এটি প্রতিরোধে কী কী করা উচিত, তা ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি।
প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, হিট স্ট্রোকের সর্বোচ্চ ঝুঁকি আছে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, শ্রমজীবী ব্যক্তি (যেমন: রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক), অতিরিক্ত ওজন থাকা ব্যক্তি, শারীরিকভাবে অসুস্থ, বিশেষত হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ থাকা ব্যক্তির।
করণীয়
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু করণীয় জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি, যেগুলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
ডেঙ্গুর চিকিৎসায় সরকারের সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, মশা কমলে ডেঙ্গু কমবে। কিন্তু রোগীর চিকিৎসায় আমরা প্রস্তুত।’
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের জন্য দেশের সব পর্যায়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঢাকা শহরে বলেন, অন্যান্য ডিভিশনাল শহরে বলেন, কিংবা জেলা শহরে বলেন, সব জায়গায় ডেঙ্গু চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে; কর্নার আছে, ডাক্তার-নার্সদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে এবং রোগীদের যে ওষুধ দরকার হবে, সে ব্যবস্থাও করা আছে।’
ডেঙ্গু চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করেন তিনি।
তবে নিজেদেরও সচেতন হতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাড়ির ভেতরে-বাইরে যেন পরিত্যক্ত জিনিস পড়ে না থাকে, ফুলের টবে পানি জমে না থাকে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।’
বাংলাদেশে ২০০০ সালে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয় দেশে। সে বছরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন আর মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের।
২০২০ সালে শুরু হয় মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। করোনায় কমে আসে ডেঙ্গুর প্রকোপ। রোগী শনাক্ত হয় ১ হাজার ৪০৫ জন। তাদের মধ্যে মারা যান সাতজন।
এ ছাড়া ২০২১ সালে শনাক্ত হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন, মৃত্যু হয় ১০৫ জনের। সবশেষ ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন মোট ৬২ হাজার। মারা যান ২৮১ জন।
আরও পড়ুন:এডিস মশার প্রজনন মৌসুমের আগেই এবারে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছে। আর দিন যত যাচ্ছে, ততই প্রকোপ বাড়ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৪৭ জন। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ ভর্তি রোগীর সংখ্যা। চলতি মাসের প্রথম সাতদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৯৮ জন। এ সাতদিনে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৬ জুন সকাল ৮টা থেকে ৭ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৪৭ জন; যা চলতি ডেঙ্গু মৌসুমে একদিনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যায় সর্বোচ্চ। এর আগে গত ৩ জুন একদিনে ১৪১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হবার তথ্য দিয়েছিল অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর জানায়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৪৭ জনের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২৭ জন আর অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি ২০ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪৮০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ৪১১ জন ও অন্যান্য বিভাগে ৬৯ জন।
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৭২০ জন আর তাদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ৯৯৭ জন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও দুইজনের। তাদের নিয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হলো ১৯ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৬৬ জন। তাদের মধ্যে মারা যান ৬ জন। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন ভর্তি হন, মৃত্যু হয় তিনজনের।
মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হন ১১১ জন। এপ্রিলে ভর্তি হন ১৪৩ জন আর মৃত্যু হয় দুজনের।
চলতি মাসে ডেঙ্গুতে মারা যান দুজন। গত মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন আর চলতি মাসের প্রথম দুইদিনে কারও মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হন ২৫৭ জন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য