সুদীর্ঘকাল ধরে খাদ্যের পাশাপাশি ওষুধের বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিনিয়ত মধু খেয়ে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, কিন্তু তাদের অনেকেই হয়তো মধুর বহুমাত্রিক উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি জানেন না।
বিশ্বজুড়ে অনেকের প্রিয় খাদ্য মধুর ভালো-মন্দ ও সেটি খাওয়ার নিয়ম তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মধুকে প্রায়ই চিনির বিকল্প হিসেবে বাজারজাত করা হয়। মূলত বহুবিধ শারীরিক উপকারিতা ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এমনটি করা হয়ে থাকে।
কেউ কেউ মধুকে মিষ্টির সুস্বাদু ও পুষ্টিকর বিকল্প হিসেবে দেখেন। বিপরীতে কেউ কেউ একে উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার মনে করেন।
মধুর উপকারিতা
মধুর পুষ্টি নির্ভর করে ধরনের ওপর। সাধারণত এক টেবিল চামচ (২১ গ্রাম) মধুতে ৬৪ ক্যালোরি ও ১৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা থাকে। এর বাইরে সামান্য ফ্যাট, ফাইবার ও প্রোটিন থাকতে পারে এতে।
বেশ কিছু অনুপুষ্টি বা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টও সামান্য পরিমাণে থাকে মধুতে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক।
উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
ভালো মানের মধুতে ফেনোলিক অ্যাসিড ও ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা সুস্বাস্থ্যে সহায়ক হতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
হৃৎপিণ্ডের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে
চিনির পরিবর্তে উচ্চমানের মধু খাওয়ার ফলে হৃৎপিণ্ডের নানামাত্রিক উপকার হতে পারে। এটি হৃদরোগের বেশ কিছু ঝুঁকি কমানোয় সহায়ক হতে পারে। ৩০ দিনের একটি গবেষণায় অংশ নেয়া ৫৫ জনের ওপর চিনি ও মধুর প্রভাব পরীক্ষা করা হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, মধু অংশগ্রহণকারীদের ‘ক্ষতিকর’ এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করেছে। অন্যদিকে ‘ভালো’ কোলেস্টেরল এইচডিএল বাড়াতে সহায়তা করেছে মধু।
ক্ষত নিরাময়
আয়ুর্বেদের মতো প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী ক্ষত নিরাময়ে ত্বকে সরাসরি মধু ব্যবহার করা হতো। মধুর ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান এবং সংক্রমণ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বৃদ্ধি রোধে এর সক্ষমতার কারণে এমনটি করা হতো।
পরিশোধিত চিনির চেয়ে ভালো
উচ্চমাত্রায় চিনি ও ক্যালোরি থাকার পরও পরিশোধিত চিনির চেয়ে ভালো বিকল্প মধু। পরিশোধিত চিনিতে পুষ্টির উপাদান যেখানে প্রায় শূন্যের কোঠায়, মধু সেখানে ফেনোলিক অ্যাসিড ও ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৪৮ জনের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, মধু রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ালেও চিনির মতো বৃদ্ধি করে না।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
পরিশোধিত চিনির চেয়ে ভালো বিকল্প হলেও মধু এমন পরিমাণে খাওয়া উচিত যাতে করে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে। খাদ্যটির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিচে দেওয়া হলো।
উচ্চমাত্রায় চিনি ও ক্যালোরি থাকায় ওজন কমানোর অন্য ব্যবস্থা না নিলে মধু মুটিয়ে যাওয়ায় ভূমিকা রাখতে পারে। মধুতে উচ্চমাত্রার চিনি (যেটি দ্রুত হজম হয়) রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে পারে, যা ক্ষুধা বাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদে ওজন বাড়ানোয় প্রভাব রাখতে পারে। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, বাড়তি চিনি ওজন বাড়া ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।
গবেষণায় আরও বলা হয়, উচ্চমাত্রার চিনিযুক্ত খাবার স্থূলতা, প্রদাহ, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, লিভার ও হৃৎপিণ্ডে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
অতিমাত্রায় চিনিযুক্ত খাবার বিষণ্নতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, এমনকি কিছু ধরনের ক্যানসারেও ভূমিকা রাখতে পারে।
খাওয়ার নিয়ম
হাতের তালুতে নিয়ে চেটে খাওয়া ছাড়াও মধু বিভিন্নভাবে পান করা যায়। র আর্টিসান হানি নামের একটি ওয়েবসাইটে মধু খাওয়ার কিছু উপায়ের কথা জানানো হয়েছে।
জাউ বা দই
জাউজাতীয় খাবার কিংবা টকদইয়ে মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়। মধু মেশানোয় এ খাবারগুলো সুস্বাদু হয়।
পাউরুটি-মাখন
পাউরুটি ও মাখনের সঙ্গে মধু মিশিয়ে অনেকেই খেয়ে থাকেন। এতে খাবার দুটি আরও মুখরোচক হতে পারে।
সালাদ
সালাদেও অনেকে মধু খেয়ে থাকেন। তারা সবুজ সবজি ও বাদামের মতো ফলে মধু মেশান।
কেক
কেকে চিনির পরিবর্তে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে মধুর রং যত ধূসর হবে, স্বাদ তত ভালো হবে।
বাদাম
বাদামে মিশিয়ে মধু খেয়ে থাকেন অনেকে। বাদামের সঙ্গে মধুর মিশেলে জম্পেশ হতে পারে বিকেলের নাশতা।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগে শুক্রবার আগুন ধরেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।
আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রোববার ও সোমবার দুই ঘণ্টা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা। বলা হয়েছে, এই দুদিন চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসও করবেন না।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। সূত্র: ইউএনবি
বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, স্বাধীনতা প্রকাশ পরিষদ, চট্টগ্রাম প্রকাশ সমিতিসহ ৯টি সংগঠন অংশ নেয়।
বিএমএ নেতারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চিকিৎসকরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বিচার না হওয়ায় চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে। চিকিৎসকরা তাদের কর্মস্থলে খুবই অনিরাপদ।
চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা।
মুজিবুল হক বলেন, ‘হামলার বিচার পাওয়ার জন্য আমরা পাঁচদিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’
প্রসঙ্গত, ১০ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত এক রোগীর চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হামলায় গুরুতর আহত হন চট্টগ্রামের পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রক্তিম দাস।
পরে ১৪ এপ্রিল ভুল চিকিৎসায় এক বছরের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে রোগীর স্বজনদের হামলায় রিয়াজ উদ্দিন শিবলু নামে আরেক চিকিৎসক আহত হন।
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যসেবায় চিকিৎসকদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, ‘কোনো চিকিৎসকের ওপর হামলা যেমন মেনে নেব না, তেমনই চিকিৎসায় কোন ধরনের অবহেলা হলে সেটাও মেনে নিতে পারব না।’
বুধবার বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে চিকিৎসদের নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) চট্টগ্রামের পটিয়ায় চিকিৎসদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে চিকিৎসা কাজে চিকিৎসকদের আরও বেশি মনোযোগী ও আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের যেমন সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব আমার, রোগীদের সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্বও আমার। কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা নিয়ে সম্প্রতি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ভূয়সী প্রশংসা করেন। ভুটান রাজার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকার ভুটানে বার্ন হাসপাতাল করার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত করোনার টিকা নেয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চর্ম রোগ দেখা দেয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোনো ড্রাগেই এলার্জি প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। তবে এ বিষয়টি আমি এখনও শুনিনি।’
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনার প্রধান মুখপাত্র প্রফেসর ফলস-এর গবেষণায় এখনও এমন কোনো তথ্য উঠে আসেনি। তবে এমনও হতে পারে যে করোনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো এখন দেখা দিচ্ছে।’
এর আগে চান্দিনার মাধাইয়া ইউনিয়নের সোনাপুর কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব কমল কুমার ঘোষ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারওয়ার হোসেন, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার, চান্দিনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন বক্সী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাবের মো. সোয়াইব, পৌর মেয়র শওকত হোসেন ভূইয়া, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:পাবনায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় দুই প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক তদন্ত করে হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়েছেন সিভিল সার্জন। একইসঙ্গে অভিযোগ তদন্তে ডেপুটি সিভিল সার্জনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গা-ঢাকা দিয়েছে।
সোমবার ঘটনাটি জানাজানি হলে জেলা সিভিল সার্জন সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির প্রাথমিক তদন্ত করে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেন।
পাবনা সদর পৌর এলাকার শালগাড়িয়া হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত বেসরকারি আইডিয়াল হাসপাতালে রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে পৃথক চিকিৎসক দ্বারা সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। এর আগে দুপুরে রোগীদের সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়।
অভিযোগে জানা যায়, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ এলাকার মাহবুব বিশ্বাসের স্ত্রী ইনসানা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে রোববার দুপুরে তাকে পাবনা আইডিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় জাহিদা জহুরা লীজা নামক এক চিকিৎসক অপারেশন করতে গেলে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়।
অপর ঘটনায় একই সময়ে পাবনার আটঘরিয়ার স্বপ্না খাতুন নামক এক রোগী কাজী নাহিদা আক্তার লিপির কাছে সিজারিয়ান অপারেশন করতে আসেন। ভুল চিকিৎসায় তারও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে কর্তৃপক্ষ রাতেই রোগীসহ স্বজনদের হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়লে তা ধামাচাপা দিতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মরদেহসহ স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় সঠিক তদন্ত শেষে হাসপাতাল-সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করার সময়ে যেসব উপকরণ ও মেডিসিন ব্যবহার হয়েছে সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লা দেওয়ান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন বা ওষুধ সেবনের ফলে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যারা জড়িত রয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি ক্লিনিকটি যেহেতু স্বাস্থ্য বিভাগের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত, তাই নিয়ম মেনে সব কার্যক্রম চলছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’
পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ‘ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখনও কোনো পরিবার থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
আরও পড়ুন:‘দাদির মৃত্যুর সময় গ্রামের বাড়িতে আপনজন কেউ ছিলেন না। এ অবস্থায় তাকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পাননি তিনি।
‘এই মনঃকষ্ট থেকেই করিমগঞ্জবাসীর জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করার চিন্তা করে আমাদের পরিবার। ভবিষ্যতে বেকারদের চাকরির সংস্থান করার ক্ষেত্রেও আমাদের পরিবার ভূমিকা রাখবে।’
কথাগুলো বলছিলেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের ব্যবসায়ী শফিউল আলম জনি। উপজেলার বাসিন্দাদের জন্য বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছেন ঢাকাকেন্দ্রিক এ ব্যবসায়ী।
শফিউল আলম জনির বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের হাইধনখালী গ্রামে। জনসেবামূলক উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয়দের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শনিবার বিকেলে বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু।
করিমগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মুসলেহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে অ্যাম্বুলেন্সদাতা শফিউল আলম জনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াদ শাহেদ রনি ও ব্যবসায়ী রফিকুর রহমান।
এতে জনি জানান, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ব্যবস্থাপনায় থাকবে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। দাতা হিসেবে তিনিও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে থাকবেন।
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান। তাই দল-মত নির্বিশেষে এখানে উপস্থিত হয়েছি। জনির মতো সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসলে উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষ।’
আরও পড়ুন:ঈদের দিন আকস্মিকভাবে রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালগুলোতে পরিদর্শনে যান। ঈদ ছুটিতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেই মূলত তিনি হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে এটা আমার প্রথম ঈদ। আশা করছি, দেশের মানুষ খুব সুন্দরভাবে ঈদ পালন করছেন। ঈদে লম্বা ছুটি। এর মধ্যেও দেশের কোনো হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার ব্যাঘাত ঘটেনি।”
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনকালে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমি বুধবার কয়েকটা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আজকে আরও কয়েকটি হাসপাতালে যাব। গতকাল দুটি হাসপাতালে গিয়েছি, দুই জায়গায়ই আমি পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্স পেয়েছি। আমি সন্তুষ্ট।’
তিনি বলেন, ‘রোগীদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। সকালে দেশের সকল হাসপাতালের পরিচালকদের মেসেজ পাঠিয়েছি৷ আমি এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি, সব জায়গায় চিকিৎসা চলছে। কোথাও ব্যত্যয় ঘটেনি।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রীর এই আকস্মিক পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে ।
তবে রোগীদের সুবিধার্থে ১৩ এপ্রিল শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিএসএমএমইউয়ের বহির্বিভাগ খোলা থাকবে। তাছাড়া প্রতিদিনই হাসপাতালের ইনডোর ও জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। হাসপাতালের জরুরি ল্যাব সেবাও চালু থাকবে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস, অফিস, বৈকালিক স্পেশালাইজড কনসালটেশন সার্ভিস, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনসালটেশন সার্ভিস, পিসিআর ল্যাব, কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম বুধবার থেকে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারী এবং শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির দিনগুলোতে যাতে চিকিৎসা ব্যবস্থার কোনো ঘাটতি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য। রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্তব্য