× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

স্বাস্থ্য
Sajne leaves benefits and rules of consumption
google_news print-icon

সজনে পাতার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

সজনে পাতা
দেহের অনেক পুষ্টির চাহিদা মেটায় সজনে পাতা। ছবি: সংগৃহীত
‘আসলে সজনে পাতাকে এখন বলা হচ্ছে অলৌকিক পাতা। বিজ্ঞানীরা সজনে পাতাকে বলছেন অলৌকিক পাতা। কেন? এত কিছু থাকতে সজনে পাতাকে অলৌকিক পাতা বলা হচ্ছে কেন? সজনে পাতার যে ফুড ভ্যালু (খাদ্যমান), এর নিউট্রিশন (পুষ্টি), এর কনটেন্ট যেকোনো মানুষকে বিস্মিত করবে। সে কারণেই বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন যে, এ সময়ের একটি অলৌকিক পাতা হচ্ছে সজনে পাতা।’

পরিণত বয়সী বাংলাদেশিদের মধ্যে সজনের ডাটা বা সজনে শাক খাননি, এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি হবে না। মৌসুমে পাতে নিয়মিতই সজনে রাখেন অনেকে, কিন্তু তাদের সবাই কি জানেন সজনে কতটা উপকারী? কীভাবে খেতে হয় সেটিও হয়তো জানা নেই অনেকের।

সজনে পাতা খাওয়ার নানাবিধ উপকারিতা এবং সেটি কীভাবে খেতে হয়, তা জানিয়েছেন কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাবের কোঅর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান, যেটি তার ভাষায় পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো।

‘অলৌকিক পাতা’

আজকে আমরা এ সময়ের একটি সুপারফুড নিয়ে আলোচনা করব, যেটি বলা যেতে পারে এ সময়ের আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি গবেষণা। সেটি হচ্ছে সজনে পাতা; সুপারফুড সজনে পাতা।

সজনে পাতার নাম তো আমরা ছোটকাল থেকেই শুনেছি। সজনে খেতে খেতে বড় হয়েছি। সজনে পাতার ভর্তা খেয়েছি, শাক খেয়েছি। এ আবার এমন কিছু কী? এর মধ্যে নতুনত্ব কী আছে, যেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে?

আসলে সজনে পাতাকে এখন বলা হচ্ছে অলৌকিক পাতা। বিজ্ঞানীরা সজনে পাতাকে বলছেন অলৌকিক পাতা। কেন? এত কিছু থাকতে সজনে পাতাকে অলৌকিক পাতা বলা হচ্ছে কেন? সজনে পাতার যে ফুড ভ্যালু (খাদ্যমান), এর নিউট্রিশন (পুষ্টি), এর কনটেন্ট যেকোনো মানুষকে বিস্মিত করবে। সে কারণেই বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন যে, এ সময়ের একটি অলৌকিক পাতা হচ্ছে সজনে পাতা।

কী আছে সজনে পাতায়

সজনে পাতায় আমিষ আছে ২৭ শতাংশ। অর্থাৎ এক কেজি সজনে পাতা যদি আপনি খান, তাহলে এর ২৭ শতাংশ, মানে কত? ২৭০ গ্রাম হচ্ছে আমিষ। ৩৮ শতাংশ হচ্ছে শর্করা (কার্বোহাইড্রেট)। ২ শতাংশ হচ্ছে ফ্যাট। ১৯ শতাংশ হচ্ছে ফাইবার বা আঁশ।

আমরা জানি যে, এখন ফাইবার বা আঁশকে খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। আঁশ কোনো ঐচ্ছিক খাবার নয় যে, ইচ্ছা হলে খেলাম; ইচ্ছা না হলে খেলাম না।

ইট ইজ অ্যা ম্যান্ডাটোরি কম্পোনেন্ট (এটা আবশ্যিক উপাদান)। প্রত্যেক দিন আপনার খাদ্যতালিকায় যেন পর্যাপ্ত আঁশ থাকে এবং সেই সজনে পাতায় আঁশ আছে ১৯ শতাংশ।

অ্যামাইনো অ্যাসিডের উৎস

সজনে পাতায় অ্যাসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে আটটি। ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’ আছে। রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক, আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এতগুলো নিউট্রিয়েন্ট থাকার কারণে বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, সজনে পাতা একটি অলৌকিক পাতা।

দুধের প্রায় সমান পুষ্টি

এটি (সজনে পাতা) যদি তুলনা করেন কোনো খাবারের সাথে, তাহলে আমরা সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি খাবারের সাথে তুলনা করতে পারি। সেটি হচ্ছে গরুর দুধ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গরুর দুধের পুষ্টি এবং সজনে পাতার পুষ্টি অলমোস্ট কাছাকাছি।

আমরা উপমহাদেশে বা বাংলাদেশে গরুর দুধ কেন খাই, কিসের জন্য খাই? মূলত কী লক্ষ্যে খাই? গরুর দুধ আমরা খাই মূলত ক্যালসিয়ামের জন্য, প্রোটিনের জন্য, আমিষের জন্য। গরুর দুধ খেয়ে আমরা বলি, এটা একটা সুষম খাবার।

গরুর দুধ এবং সজনে পাতার মধ্যে পুষ্টিগত কোনো পার্থক্য নাই। গরুর দুধে যা আছে, সজনে পাতাতেও তা আছে। যে লক্ষ্যে আমরা মূলত গরুর দুধ খাই, সে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম আছে সজনে পাতায়। পর্যাপ্ত আমিষও আছে।

ঔষধি গুণ

সজনে পাতার কিছু ঔষধি গুণ আছে এবং ঔষধি গুণের কারণে আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে এটি দারুণ কার্যকর। ইতোমধ্যেই আমরা এক্সপেরিমেন্ট করেছি। যাদের হাঁটু ব্যথা আছে, সজনে পাতার জুস খান। সজনে পাতার ভর্তা খান অথবা গুঁড়া খান। ছয় মাস খান। দেখেন আপনার আর্থ্রাইটিসের কী অবস্থা হয়।

শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে সজনে পাতা। আমরা জানি যে, আমাদের শরীরে ৭০ থেকে ১০০ ট্রিলিয়ন সেল বা কোষ আছে। প্রত্যেকটা কোষের ভেতরে লক্ষাধিক রিঅ্যাকশন হয় প্রত্যেক দিন; প্রতি মুহূর্তে এবং এই লক্ষাধিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, বিক্রিয়া হতে গিয়ে ভয়াবহ কিছু টক্সিন, কিছু বিষাণু, কিছু ক্ষতিকর পদার্থ সেলের ভেতরে তৈরি হয়। এগুলোকে আমরা বলি বর্জ্য পদার্থ, টক্সিন, ফ্রি রেডিক্যাল। এগুলো যদি সেলের ভেতরে থেকে যায়, আপনি কোনো দিন সুস্থ থাকতে পারবেন না। কেউ আপনাকে সুস্থ করতে পারবেন না।

এই বর্জ্য পদার্থকে বের করার জন্য আপনি সজনে পাতা খেতে পারেন। এটা দারুণ একটা ডিটক্স হিসেবে কাজ করতে পারে। আপনার শরীরকে ডিটক্সিফাই করবে এবং আপনারা এখন জানেন, আমরা সবাই জানি, বিশ্বব্যাপী এই ডিটক্স প্রোগ্রামগুলো দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

সাত দিন, ১৫ দিন আপনি একটা বিশেষ প্রোগ্রাম ফলো করবেন, বিশেষ খাবার খাবেন, আপনার শরীরে জমানো বর্জ্য পদার্থগুলো বেরিয়ে যাবে। তো সজনে পাতা সেই কাজটা করতে আপনাকে সাহায্য করবে। আপনার ভেতরের বর্জ্য পদার্থগুলো বের করে দেবে।

সজনে পাতা কীভাবে খাবেন

আমরা মনে করি যে, ফুল সিজনে সবচেয়ে উত্তম উপায় হচ্ছে এটিকে আপনি জুস করে খাবেন। কিছু সজনে পাতা নিন। ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়ে এটাকে ব্লেন্ডারে নিন। কিছু পানি যোগ করে টেস্টের জন্য কিছু আদা, কিছু জিরা, একটু বিট লবণ দিতে পারেন। ভালো করে ব্লেন্ড করেন। এরপর ছেঁকে নিন। ছেঁকে নিয়ে খাওয়ার সময় একটু মধু দিয়ে খেয়ে নিন। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জুসটি আপনার খাওয়া হয়ে গেল।

যদি আপনার জুস বানাতে ঝামেলা হয় অথবা সব দিন যদি জুস খেতে না পারেন, ভর্তা খান, তবে এটা কাঁচা হলে বেস্ট। যখন আপনি সিদ্ধ করলেন, এই যে নানাবিধ যে উপাদানগুলো আছে, এটি নষ্ট হয়ে যেতে থাকবে। সে জন্য কাঁচা পাতা ভালো করে বেটে নিয়ে এটাকে টেস্টি করার জন্য যা যা লাগে…সেখানে আপনি রসুন দেন, আদা দেন, মরিচ দেন, পেঁয়াজ দেন, যা যা দিলে টেস্টি হয়, দেন। তারপর আপনি খান। সিজনে।

অফ সিজনে গুঁড়া। সজনে পাতাকে আপনি সিজনে ভালো করে রোদে শুকান। শুকানোর পর এটাকে ক্রাশ করে ফেলেন। ছয় মাস এটা চমৎকার থাকবে এবং এক থেকে দুই চা চামচ সজনে পাতা যথেষ্ট আপনার পুষ্টির জন্য। তাই আমরা বলব যে, নিজের দেশের এই অ্যাভেইলেবল এই পাতাটিকে অবহেলা করবেন না।

আজ না হলে কাল থেকে শুরু করুন। অফ সিজনে আপনি গুঁড়ো সংগ্রহ করুন। প্রতিদিন এক চামচ সকালে, এক চামচ রাত্রে। ছয় মাস পর আপনি আপনার স্ট্রেংথ, আপনার কর্মক্ষমতা দেখে নিজেই বিস্মিত হবেন।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

স্বাস্থ্য
7 ways to avoid dehydration during fasting

রোজায় পানিশূন্যতা এড়ানোর ৭টি উপায়

রোজায় পানিশূন্যতা এড়ানোর ৭টি উপায় রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পান করতে হবে। ছবি: সংগৃহীত
‘ইফতারে উচ্চ মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এ ধরনের খাবার শরীরে পানির চাহিদা বাড়ায়। এ ছাড়া সালাদ ও তরকারিতে লবণ কম দেয়া উচিত। বেশি পরিমাণে লবণ খেলে বাড়তে পারে তৃষ্ণা।’

সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবারের পাশাপাশি পানি পান থেকে বিরত থাকেন মুসলিমরা। রোজা শীতকালে হলে তৃষ্ণার অনভূতি কম হয়, তবে গ্রীষ্মকালে রোজায় দেহে পানিশূন্যতার ঝুঁকি তৈরি হয়, যা থেকে হতে পারে অবসাদ ও বমি বমি ভাব।

কাতারের প্রধান অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন জানিয়েছে, সাধারণত শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক, ডায়াবেটিস, কিডনি বা অন্যান্য দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কিংবা সূর্যের নিচে শারীরিক ব্যায়াম করা লোকজন পানিশূন্যতার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন।

রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়

হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন পানিশূন্যতা এড়াতে সাতটি পরামর্শ দিয়েছে।

১. ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে আট থেকে ১২ কাপ পানি পান করুন। ঠান্ডা পানির তুলনায় দ্রুত শোষণ হয় বলে কুসুম গরম পানি পান করা যেতে পারে।

২. রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে প্রতিদিন স্যুপ খেতে পারেন। শরীরে তরলের চাহিদা পূরণের ভালো উৎস হতে পারে খাবারটি।

৩. তরমুজ, টমেটো, শসা, আঙুরের মতো ফল ও সবজিতে অনেক পানি থাকে, যা তৃষ্ণা কমাতে সাহায্য করে।

৪. ইফতারে উচ্চ মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এ ধরনের খাবার শরীরে পানির চাহিদা বাড়ায়। এ ছাড়া সালাদ ও তরকারিতে লবণ কম দেয়া উচিত। বেশি পরিমাণে লবণ খেলে বাড়তে পারে তৃষ্ণা।

৫. গবেষণায় দেখা যায়, প্রচুর চিনি থাকায় মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে তৃষ্ণা বাড়ে। এর পরিবর্তে ফল খেতে পারেন, যা দেহে তরলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তৃষ্ণাও মেটায়।

৬. ক্যাফেইন শরীরের তরল শুষে নিয়ে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে রমজানে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। এ ধরনের পানীয়র মধ্যে এনার্জি ও কার্বনযুক্ত পানীয়, চা ও কফি রয়েছে। ধূমপান মুখকে শুষ্ক করে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে ধূমপানও এড়িয়ে চলুন।

৭. গরমের দিনে সূর্যতাপে ব্যায়াম করলে প্রচুর পরিমাণে পানি পানের চাহিদা তৈরি হয়। এ কারণে রোজায় ব্যায়ামের সবচেয়ে ভালো সময় হলো ইফতারের পর। কারণ ইফতারের মধ্য দিয়ে শরীর পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানীয়র মাধ্যমে শক্তি পায়। রোজা ভেঙে ব্যায়াম করলে শরীর থেকে ঝরে যাওয়া তরলের চাহিদা পূরণের জন্যও পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:
রমজানে ১০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি করছেন এরশাদ
রোজা ভঙ্গের কারণ
ফেসবুকে পণ্যের দাম কমিয়ে বিজ্ঞাপন, রোজায় স্বস্তি ক্রেতাদের
বিভিন্ন ভাষায় রমজানের শুভেচ্ছা
রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা, যা ঘটে শরীরে

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Quick Recipe of Lachir for Diabetics on Fasting

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের লাচ্ছির কুইক রেসিপি

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের লাচ্ছির কুইক রেসিপি রোজায় টক দই দিয়ে সহজেই লাচ্ছি তৈরি করা যায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। ছবি: সংগৃহীত
রোজায় লাচ্ছি খেতে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব সহজেই পানীয়টি তৈরি করা যায়।

সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অন্য অনেকের মতো রোজা রাখেন ডায়াবেটিস রোগীরা। এ ক্ষেত্রে মাসজুড়ে খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে তাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। সতর্কতার সঙ্গে খাদ্যগ্রহণ কিংবা চলাচল করলে তারা অনেক বিপদের ঝুঁকি কমাতে পারেন।

রোজায় লাচ্ছি খেতে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কীভাবে পানীয়টি তৈরি করতে হয়, তা তুলে ধরা হয়েছে বিটিভির এক অনুষ্ঠানে। এ প্রক্রিয়ায় খুব সহজেই লাচ্ছি বানানো যাবে।

উপকরণ

তিনটি খেজুর ও দুই টেবিল চামচ টক দই।

প্রস্তুত প্রণালি

খেজুর কুচি ও টক দই একসাথে মিশিয়ে ব্লেন্ডারে নিয়ে তাতে কিছু বরফকুচি ও অল্প পরিমাণ পানি দিন। এবার ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পরিবেশন করুন।

আরও পড়ুন:
রোজা ভঙ্গের কারণ
ফেসবুকে পণ্যের দাম কমিয়ে বিজ্ঞাপন, রোজায় স্বস্তি ক্রেতাদের
বিভিন্ন ভাষায় রমজানের শুভেচ্ছা
রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা, যা ঘটে শরীরে
রমজানে বেশি দাম নিলে দোকান বন্ধের হুঁশিয়ারি মেয়র আতিকের

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Air pollution accounts for 20 percent of premature deaths in Bangladesh

বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর ২০ শতাংশই বায়ুদূষণে

বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর ২০ শতাংশই বায়ুদূষণে ‘স্ট্রিভিং ফর ক্লিন এয়ার: এয়ার পল্যুশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার ঢাকায় উপস্থাপন করা হয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের ১০টি সর্বাধিক বায়ুদূষণ শহরের ৯টিই দক্ষিণ এশিয়ার। এর মধ্যে ঢাকা অন্যতম। বায়ুদূষণ রোধে বাংলাদেশের জরুরি পদক্ষেপ দরকার। বিশুদ্ধ বায়ু নিশ্চিত করার জন্য সাশ্রয়ী সমাধান রয়েছে। তবে এর জন্য দেশগুলোর মধ্যে নীতিমালা ও বিনিয়োগের সমন্বয় প্রয়োজন।

বিশ্বের ১০টি সর্বাধিক বায়ু দূষণ শহরের মধ্যে নয়টিই দক্ষিণ এশিয়াতে এবং ঢাকা এদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে মোট অকাল মৃত্যুর ২০ শতাংশের জন্যই দায়ী এই বায়ু দূষণ।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বিশুদ্ধ বায়ু নিশ্চিত করার জন্য অর্থনৈতিকভাবে সম্ভব এবং সাশ্রয়ী সমাধান রয়েছে। তবে এর জন্য দেশগুলোর মধ্যে নীতিমালা ও বিনিয়োগের সমন্বয় প্রয়োজন।

‘স্ট্রিভিং ফর ক্লিন এয়ার: এয়ার পল্যুশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার ঢাকায় উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর ২০ শতাংশই বায়ুদূষণে
ধুলায় আচ্ছন্ন সড়ক ধরে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। ছবি: গ্রিন ল্যাব

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই অঞ্চলের কিছু অতি ঘনবসতিপূর্ণ ও দরিদ্র এলাকার বায়ূকণা যেমন ঝুল এবং ধূলিকণা (পিএম২.৫) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত নিরাপদ মানদণ্ডের চেয়ে ২০ গুণ বেশি। দক্ষিণ এশিয়ায় এই বায়ুদূষণ প্রতি বছর আনুমানিক দুই মিলিয়ন লোকের অকাল মৃত্যু ঘটায়। এর কারণে অর্থনৈতিক ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।

‘মারাত্মক বায়ুদূষণের ফলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয়, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ দেখা দেয় এবং এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। এটি একটি দেশের স্বাস্থ্যসেবার খরচ বাড়ায় এবং উৎপাদন ক্ষমতা ও কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেয়।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক বলেন, ‘বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। এমন অনেক নজির রয়েছে যে অঙ্গীকার, সঠিক পদক্ষেপ ও নীতিমালা গৃহীত হলে এই বায়ুদূষণ মোকাবিলা করা সম্ভব।

‘বাতাসের গুণমান ব্যবস্থাপনা বাড়াতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বায়ূদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইনসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে এই শক্তিশালী পদক্ষেপের পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত সমাধান এই বায়ুদূষণ কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি বড় এয়ারশেড চিহ্নিত করা হয়েছে- যেখানে স্থানিক বাতাসের গুণমানে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বেশি। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তান- ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমিতে বিস্তৃত একটি সাধারণ এয়ারশেডের আওতাভুক্ত। প্রতিটি এয়ারশেডের বায়ূকণা বিভিন্ন উৎস ও অবস্থান থেকে আসে। উদাহরণস্বরূপ- ঢাকা, কাঠমান্ডু ও কলম্বোর মতো শহরে শুধু সংশ্লিষ্ট শহরের মধ্যে থেকেই এক-তৃতীয়াংশ বায়ুদূষণ সৃষ্টি হয়। এই বায়ুদূষণের আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতি বিবেচনায় নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার এই চারটি দেশ ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয় পাদদেশের বাতাসের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে কাঠমাণ্ডু রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক সমন্বয় পরিচালক সিসিল ফ্রুম্যান বলেন, ‘বায়ুদূষণ একটি শহর, রাজ্য বা জাতীয় সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অল্প কিছুসংখ্যক দেশ বাতাসের মান উন্নয়নে নীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু জেলা ও গ্রাম পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা অতিজরুরি।’

প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে পাওয়ার প্ল্যান্ট, বড় কারখানা ও পরিবহনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে চলমান নীতিগত পদক্ষেপগুলো যদি দক্ষিণ এশিয়াজুড়েও সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলেও শুধু পিএম২.৫ হ্রাসের মতো আংশিক সাফল্য আসবে।

বৃহত্তর অর্জনের লক্ষ্যে অন্যান্য খাত বিশেষ করে ছোট উৎপাদন, কৃষি, আবাসিক রান্না এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপরও নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি দিতে হবে।

আরও পড়ুন:
দিল্লির বাতাস ‘বিপজ্জনক’, ঢাকার বায়ু ‘অস্বাস্থ্যকর’
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে ঢাকা
ঢাকার বাতাসের মানের আরও উন্নতি
বায়ুদূষণে জিডিপির ক্ষতি অন্তত সাড়ে ৪ শতাংশ
বায়ুদূষণ: দিল্লির মানুষের আয়ু কমছে ১০ বছর

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Types of headache causes and remedies

মাথাব্যথার ধরন, কারণ ও দূর করার উপায়

মাথাব্যথার ধরন, কারণ ও দূর করার উপায় মাথাব্যথার রয়েছে অনেক ধরন। ছবি: সংগৃহীত
“মাইগ্রেনে হেডেকটা হয় মাথার এক দিকে। রোগীরা সাধারণত বলে ‘ধব ধব’ করে এবং ব্যথা ‍শুরুর আগে পেশেন্ট বুঝতে পারেন। কারণ অনেক সময় তিনি আলোকচ্ছ্বটা দেখতে পান চোখে এবং যখন ব্যথাটা ওঠে, তখন সাধারণত পেশেন্ট প্রেফার করে কোনো অন্ধকার, কাম অ্যান্ড নয়েজ ফ্রি একটা এনভায়রনমেন্টে থাকার জন্য।”

জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে আমরা মাথাব্যথার শিকার হই। কেউ কেউ প্রায়ই এ সমস্যায় ভোগেন। এক ভিডিওতে এ সমস্যার ধরন, কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে কথা বলেছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নওসাবাহ্ নূর। পরামর্শগুলো তার ভাষায় তুলে ধরা হলো পাঠকদের সামনে।

ধরন

আমাদের মধ্যে এমন কেউ হয়তো নেই, যার জীবনে কখনও মাথাব্যথা হয়নি। আবার এমন অনেকে আছেন, যাদের মাথাব্যথা থেকে জীবন আজ হুমকির পথে। এ জন্য আমাদের সবার মাথাব্যথা সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু ধারণা থাকা প্রয়োজন।

মাথাব্যথা অনেক রকমের হয়ে থাকে। আজকে আমি ভিডিওতে অনেক ধরনের মাথাব্যথা সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু ধারণা দেব এবং সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ যেটা সেটা হলো মাথাব্যথার সাথে কী কী উপসর্গ বা ওয়ার্নিং সাইন থাকলে দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে চলে যাবেন। প্রথমেই আসি আমরা ডাক্তাররা মাথাব্যথাকে কীভাবে ক্লাসিফাই বা শ্রেণিবিভাগ করি।

যখনই কোনো রোগী আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা মাথাব্যথার সব হিস্ট্রি নিয়ে আসেন, আমরা দুই ভাগে সাধারণত ভাগ করার চেষ্টা করি। এক হলো প্রাইমারি হেডেক, আরেক হলো সেকেন্ডারি হেডেক। এই ক্লাসিফিকেশন (শ্রেণিকরণ) কেন জরুরি? কারণ প্রাইমারি হেডেকে কোনো ইনভেস্টিগেশন, যেমন: সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করার কোনো প্রয়োজন নেই এবং সেকেন্ডোরি হেডেকে এই ইনভেস্টিগেশন করাটা খুবই আর্জেন্ট।

প্রাইমারি হেডেক বা মাথাব্যথার প্রাথমিক ধরন

প্রাইমারি হেডেক অনেক রকমের হয়ে থাকে। আমি মূলত তিন রকমের হেডেক নিয়ে কথা বলব, যেগুলো সবচেয়ে কমন।

১. টেনশন হেডেক

২. মাইগ্রেন

৩. ক্লাস্টার হেডেক

টেনশন হেডেক

প্রথমে আসি টেনশন হেডেক নিয়ে। আমরা যে বলেছিলাম, আমাদের সবার কখনও না কখনও মাথাব্যথা হয়েছে, টেনশন হেডেক মোস্ট লাইকলি (খুব সম্ভবত) আপনি সাফার করেছেন কখনও না কখনও। কারণ এটা হচ্ছে সবচেয়ে কমন টাইপ অব হেডেক।

এ মাথাব্যথাটা কেমন হয়? এ মাথাব্যথাটা ব্যান্ডের মতো সারা মাথাজুড়ে হয় এবং চাপ ধরা একটা ব্যথা থাকে। সাধারণত কাজের শেষে, দিনের শেষে আমাদের এ ব্যথাটা হয়ে থাকে। কিছু রিস্ক ফ্যাক্টরস (কারণ) আছে এ মাথাব্যথার। যেমন: আপনার ঘুম যখন কম হয়, আপনি যখন স্ট্রেসড থাকেন অথবা খাবার কোনো কারণে মিস হয়ে গেছে অথবা ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন, তখনই হেডেকটা হয়ে থাকে। আমরা সাধারণত এটা কমানোর জন্য পেইন কিলার এবং মাসল রিলাক্সেন্ট দিয়ে থাকি।

মাইগ্রেন হেডেক

এরপর আসি মাইগ্রেন হেডেক নিয়ে। মাইগ্রেনে হেডেকটা হয় মাথার এক দিকে। রোগীরা সাধারণত বলে ‘ধব ধব’ করে এবং ব্যথা ‍শুরুর আগে পেশেন্ট বুঝতে পারেন। কারণ অনেক সময় তিনি আলোকচ্ছ্বটা দেখতে পান চোখে এবং যখন ব্যথাটা ওঠে, তখন সাধারণত পেশেন্ট প্রেফার করে কোনো অন্ধকার, কাম অ্যান্ড নয়েজ ফ্রি একটা এনভায়রনমেন্টে থাকার জন্য। এই মাথাব্যথার সাথে বমি বমি ভাব, এমনকি বমিও হতে পারে।

কিছু খাবার আছে, যেগুলো থেকে মাইগ্রেন অ্যাটাক ফ্রিকোয়েন্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন: চকলেট, কফি অথবা যারা জন্মবিরতিকরণ পিল খাচ্ছেন, তাদের মাইগ্রেন হেডেক হয়ে থাকে এবং এটা কন্ট্রোল করার জন্য আমরা কী ট্রিটমেন্ট দিই?

মেইনলি দিই পেইন কিলার অথবা বমির জন্য আমরা কোনো অ্যান্টি ভমিটিং দিয়ে থাকি এবং যাদের মাসে দুইবারের বেশি অ্যাটাক হয়ে থাকে, তাদের আমরা ফারদার কিছু ট্রিটমেন্ট দিই টু প্রিভেন্ট মাইগ্রেন ফারদার অ্যাটাকস (পরবর্তী সময়ে মাইগ্রেনের ব্যথা যাতে না হয়, সে জন্য ওষুধ)।

মাইগ্রেনের ব্যথাটা যাতে ফেরত না আসে, আমরা ছয় মাসের মতো একটা চিকিৎসা দিয়ে থাকি।

ক্লাস্টার হেডেক

এরপর আসি থার্ড হেডেক, যেটা হচ্ছে ক্লাস্টার হেডেক নিয়ে। ক্লাস্টার হেডেক খুবই রেয়ার (অতি বিরল)। এটা খুব পেইনফুল একটা সিচুয়েশন। কোনো একটা চোখের চারপাশে অথবা মাথার এক পাশে হয়। খুব স্ট্যাবিং টাইপের শার্প (ছুরিকাঘাতের মতো তীক্ষ্ণ) একটা পেইন হয় এবং যখন পেইনটা হয়, তখন দিনে বেশ কয়েকটা অ্যাটাক হয়ে থাকে।

এই অ্যাটাকটা কয়েক দিন থাকার পর আবার রোগী একদম ভালো হয়ে যায়। হেডেকটা হলেও আমরা সাধারণত কিছু ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকি টু প্রিভেন্ট, যাতে আর কোনো অ্যাটাক ফেরত না আসে।

সেকেন্ডোরি হেডেক

এবার আসি সেকেন্ডারি হেডেক নিয়ে। আপনার মাথায় যদি কোনো টিউমার অথবা রক্তক্ষরণ অথবা ব্লাড ভেসেলসে প্রদাহজনিত কারণ অথবা মাথায় কোনো কারণে প্রেশার বেড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এই হেডেকটি হয়ে থাকে। এই হেডেকটি সাধারণত দেখা যায় দিনের প্রথমাংশে বেশি হয় এবং পারসিস্টেন্ট একটা হেডেক (দীর্ঘসময় ধরে মাথাব্যথা) থাকে। পেশেন্ট বমি অথবা চোখে দেখতে সমস্যা অথবা চোখে ঘোলাও দেখতে পারেন।

অন্যান্য ধরন

১. এ ছাড়া আরও কিছু হেডেক সম্পর্কে আমি বলতে চাই। যেমন: কিছু ড্রাগস আছে, বিশেষ করে ব্লাড প্রেশারের ওষুধ অথবা হার্টের ওষুধ, যেটা থেকে আমাদের এই হেডেক হতে পারে। আমাদের মধ্যে যারা গর্ভবতী মা আছেন, তাদের ক্ষেত্রে হেডেকটা খুবই ইম্পরট্যান্ট; একটা গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্নিং সাইন। যখন একজন প্রেগন্যান্ট মার হেডেক থাকে, তখন এটাকে প্রোপারলি ইভালুয়েট করি যে, তারা কোনো এক্লাম্পশিয়া বা প্রিএক্লাম্পশিয়ার (গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বাড়া ও খিঁচুনি হওয়া) দিকে যাচ্ছি কি না।

২. রাতে যারা ঘুমানোর সময় নাক ডাকেন, আমরা মেডিক্যালের ভাষায় বলে থাকি যে, তার অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে, তাদেরও দিনের প্রথম অংশে, সকালের দিকে একটা চাপা হেডেক থাকতে পারে।

৩. কোভিড টাইমে অনেকেই আছে, যারা অনেকটা সময় বাইরে থাকার জন্য মাস্ক পরে থাকতে হয়। এই জন্য দিনের শেষে কিছুটা মাথাব্যথা হয়ে থাকে।

৪. এ ছাড়া আরেক ধরনের হেডেক আছে, যেটা হচ্ছে অ্যানালজেসিক ওভারইউজিং হেডেক, যেটা হচ্ছে আপনি যদি মাসে ১৫ দিনের বেশি মাথাব্যথার জন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন, তখন এই অতিরিক্ত ওষুধ, পেইন কিলার থেকেও মাথাব্যথা হয়ে থাকে। এটাকে আমরা বলি অ্যানালজেসিক ওভারইউজ হেডেক।

এটার চিকিৎসা হলো সব ধরনের ব্যথার ওষুধ বন্ধ করে দিতে হবে।

কোন কোন উপসর্গে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে

এবার আসি আপনার কোন কোন ওয়ার্নিং সাইন বা উপসর্গ থাকলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাবেন।

১. প্রথমত, আপনার যদি ব্যথাটা হঠাৎ করে শুরু হয় এবং খুব তীব্র ব্যথা হয়, রোগীরা বলে থাকে আমার এ রকম হেডেক জীবনে আগে কখনও হয়নি।

২. আপনার যদি হেডেকটা থাকে এবং পারসিস্ট্যান্ট, কোনোভাবেই কমছে না এবং দিনে দিনে ব্যথাটা বাড়ছে,

৩. চেঞ্জিং প্যাটার্ন অব হেডেক। আপনার আগে এক রকম ব্যথা ছিল। এখন অন্য রকমের ব্যথাটা হচ্ছে এবং ব্যথার প্যাটার্নটা চেঞ্জ হয়ে গেছে।

৪. আপনার বয়স যদি ৬০ বছরের ওপরে হয় এবং তখন নতুন করে ব্যথাটা শুরু হয়।

৫. আপনার যদি মাথাব্যথার সাথে অতিরিক্ত ওজন কমে যায় কোনো কারণ ছাড়া, সেটাও একটা ইম্পরট্যান্ট সাইন।

৬. মাথাব্যথার সাথে যদি আপনার জ্বর অথবা বমি এ ধরনের যদি সমস্যা থেকে থাকে।

৭. আপনার যদি প্যারালাইসিস, অর্থাৎ কোনো এক দিক অবশ অথবা অনুভূতি কম বুঝতে পারছেন অথবা কথা জড়িয়ে আসছে, চোখে দেখতে সমস্যা হচ্ছে, এগুলা আমাদের ইম্পরট্যান্ট একটা ওয়ার্নিং সাইন।

৮. লাস্টল আরেকটি হলো বয়স্ক যারা আছেন, তাদের যদি মাথাব্যতার সাথে চোয়ালে ব্যথা, বিশেষ করে খাবার সময় যদি ব্যথা হয়ে থাকে চোয়ালে, সেটাও একটা ইম্পরট্যান্ট সাইন।

এই উপসর্গগুলো দেখলে আপনি অবশ্যই দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। হয়তো আপনার সিভিয়ার কিছু নেই। তারপরও চেক করে নেওয়া অবশ্যই জরুরি।

আরও পড়ুন:
পায়ের পেশির ব্যায়াম
সকালে খালি পায়ে হাঁটার উপকারিতা
অ্যালার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় যা জানা জরুরী
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ও প্রতিকার
ইন্টারনেট ব্রাউজারের গতি বাড়ানোর উপায়

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
What to do for diabetic patients wishing to perform Hajj

হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়

হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয় পবিত্র কাবা ঘিরে নামাজরত মুসল্লিরা। ছবি: হারামাইন শরিফাইন
হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ডায়াবেটিস প্রিভেনশন থ্রো রিলিজিয়াস লিডার্স (ডিপিআরএল) নামের উদ্যোগ। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ নিয়ে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রোগ্রামের যৌথ এ প্রয়াসে সহযোগিতা করেছে ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন।

ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ। প্রতি বছর সারা বিশ্বের মুসলিমরা হজ পালন করেন। ব্যতিক্রম নন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও। এ ক্ষেত্রে তাদের অবলম্বন করতে হয় বেশ কিছু সতর্কতা।

নির্দেশনা

হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ডায়াবেটিস প্রিভেনশন থ্রো রিলিজিয়াস লিডার্স (ডিপিআরএল) নামের উদ্যোগ। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ নিয়ে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রোগ্রামের যৌথ এ প্রয়াসে সহযোগিতা করেছে ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন।

হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডিপিআরএলের পরামর্শগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

১. হজযাত্রার দুই মাস আগেই ডায়াবেটিস চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

২. প্রয়োজনীয় টিকা তথা ভ্যাকসিন নিতে হবে।

৩. চিকিৎসকের কাছ থেকে পরিপূর্ণ ব্যবস্থাপত্র বা প্রেসক্রিপশন নিয়ে নিতে হবে।

৪. জরুরি অবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা করে নিতে হবে। (কমপক্ষে ৪৫ দিনের ওষুধ)

৫. অসুস্থতার দিনে (যেমন: ডায়রিয়া, বমি, সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি) আপনার করণীয় সম্পর্কে চিকিৎসক অথবা হেলথ এডুকেটরের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক, প্যারাসিটামল ও ওআরএসের মতো ওষুধ সঙ্গে নিতে হবে।

৬. একটি ভালো গ্লুকোমিটার, স্ট্রিপ, লেনসেট ও অ্যালকোহল সোয়াব সঙ্গে নিতে হবে।

৭. ইনসুলিন ব্যবহার করলে ইনসুলিন ভায়াল, পেন, সিরিঞ্জ ও নিডল সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। যদি ঠান্ডা জায়গায় রাখার ব্যবস্থা না থাকে মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে, সে ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রয়োজনমতো ইনসুলিন নিয়ে যাবেন। বাকি ইনসুলিন মক্কায় আপনার ফ্রিজে রেখে যাবেন।

৮. হাইপোগ্লাইসেমিয়া চিকিৎসার জন্য দ্রব্যাদি, যেমন: গ্লুকোজের ট্যাবলেট, চকলেট, জেল বা জেলি, জুস, মিষ্টি বিস্কুট বা কেক সঙ্গে রাখতে হবে।

৯. খাবার খেতে বা পেতে দেরি হলে তা মোকাবিলার জন্য শর্করাজাতীয় পানীয় সঙ্গে রাখুন, তবে অত্যধিক শর্করাজাতীয় পানীয়, ফ্রুট জুস ও খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

১০. আরামদায়ক ও সঠিক মাপের জুতা সঙ্গে নিতে হবে।

পায়ের যত্নে করণীয়

১. সবসময় নরম, বদ্ধ ও আরামদায়ক স্যান্ডেল বা কাপড়ের জুতা ব্যবহার করা উচিত।

২. নতুন জুতা না পরা ভালো। অভ্যস্ত হতে সময় লাগে এমনকি পায়ে ফোসকা পড়তে পারে। হজের দুই-তিন মাস আগে কেনা জুতা, যা পায়ে ফিট হয়ে গেছে, তাই পরা ভালো।

৩. পা ধোয়া, অজু বা গোসল করার পরে খেয়াল রাখতে হবে যাতে পায়ের আঙুলের ফাঁকে ভেজা না থাকে। টিস্যু পেপার দিয়ে পা শুকিয়ে নিন। পায়ে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকলে তাওয়াফ ও সা’ঈ করার সময় নরম মোজা ব্যবহার করতে পারেন।

৪. যেকোনো ভিড়ের সময় পা সাবধানে রাখা উচিত।

৫. পা পরিষ্কার ও নখ কেটে ছোট করা উচিত।

৬. প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার পায়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগানো উচিত।

৭. প্রতিদিন পা পর্যবেক্ষণ করুন। বিশেষ করে ওপরের দিক, পায়ের আঙুলের ফাঁকে, পায়ের তলা এবং গোড়ালি ভালোভাবে পরীক্ষা করা জরুরি।

৮. যদি কখনও পায়ে আঘাত লাগে বা ক্ষত সৃষ্টি হয়, তবে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসাকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।

আরও পড়ুন:
বিমানের হজ ফ্লাইট শুরু ২১ মে
হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আবার বাড়ল
হজ প্যাকেজের দাম বাড়ার কারণ জানাল ধর্ম মন্ত্রণালয়
পৌনে ৭ লাখ টাকার হজ প্যাকেজ অমানবিক: হাইকোর্ট
কীভাবে কোমরে ব্যথা পেলেন, জানালেন মেহজাবীন

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Rules for taking medicines for diabetic patients during fasting

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধ খাওয়ার নিয়ম

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধ খাওয়ার নিয়ম রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধ খাওয়ার অভ্যাসে আনতে হয় পরিবর্তন। ছবি: সংগৃহীত
ডিপিআরএল ডায়াবেটিস রোগীদের ১০টি নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ ও রোজা ভেঙে ফেলার প্রস্তুতিতে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে।

সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অন্য অনেকের মতো রোজা রাখেন ডায়াবেটিস রোগীরা। এ ক্ষেত্রে মাসজুড়ে তাদের বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।

রোজার মাসে ডায়াবেটিস রোগীরা কী করবেন, সে বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ ডায়াবেটিস প্রিভেনশন থ্রো রিলিজিয়াস লিডারস তথা ডিপিআরএল।

এটি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের যৌথ প্রয়াস। এতে আর্থিক সহযোগিতা করেছে ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন।

ডিপিআরএলের নির্দেশনা

ডিপিআরএল বলেছে, শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখতে পারবেন কি না, সুস্বাস্থ্যকর খাবার কীভাবে খেতে হবে, দৈনন্দিন কায়িক পরিশ্রম কীভাবে করতে হবে, কীভাবে ঘরে বসে নিজের রক্ত পরীক্ষা করতে হবে, খাবার বড়ি বা ইনসুলিনের মাত্রা কী হবে, শর্করা কমে গেলে ও অন্যান্য অসুস্থতা হলে কী করণীয়, এই বিষয়গুলো চিকিৎসকের কাছ থেকে বিশদভাবে জেনে নিতে হবে। এর বাইরেও ১০টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ডিপিআরএলের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ ও রোজা ভেঙে ফেলার প্রস্তুতিতে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে।

১. সারা দিন রোজা রাখার পর এমন খাবার খেতে হবে, যাতে শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

২. ইফতারের সময় চিনিজাতীয় খাবার খাবেন না। চিনিুমক্ত পানীয় বেছে নিন। পানীয়র সঙ্গে চিনি মেশাবেন না। যদি মিষ্টি পানীয় পছন্দ করে থাকেন, তবে আর্টিফিশিয়াল (ডায়াবেটিসের চিনি) সু্ইটনার, যেমন: ক্যানডেরেল বা সুইটেক্স ব্যবহার করতে পারেন।

৩. ভাজা খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। যেমন: পরোটা, সমুচা, কাবাব ইত্যাদি।

৪. খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ফলমূল, শাকসবজি, আঁশযুক্ত খাবার রাখুন।

৫. সেহরির খাবার শেষ সময়ের অল্প কিছু আগে খাওয়া বাঞ্ছনীয়। সেহরির সময় নামমাত্র পরিমাণে খাবার খেয়ে রোজা রাখা উচিত নয়। এমনটি করলে আপনার গ্লুকোজের সঠিক ভারসাম্য বজায় থাকবে না।

৬. রোজার দিনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অতিরিক্ত ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই, তবে দৈনন্দিন কাজকর্ম করা উচিত। রোজার সময় তারাবিহর নামাজে যে শারীরিক শ্রম হয়, নিয়মিত হাঁটার সমান হওয়ায় রোজার মধ্যে আলাদা করে হাঁটার প্রয়োজন নেই।

৭. রোজার দিনে বিকেলে দৈহিক পরিশ্রমের কাজ না করে বিশ্রাম নেয়া ভালো।

৮. রোজা রেখে ইনসুলিন নেয়া যাবে।

৯. ডায়াবেটিস রোগীর সকালের ওষুধ ইফতারের সময় খেতে হবে। রাতের ওষুধ খেতে হবে সেহরির সময় (রাতের ওষুধের ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক কমিয়ে সেহরির সময় খেতে হবে)। মুখে খাবার ওষুধ ও ইনসুলিনের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক করে নিতে হবে এবং তা অবশ্যই রোজার আগেই করতে হবে।

১০. নিম্নের বিশেষ অবস্থায় রোজা ভেঙে ফেলতে হতে পারে।

(ক) রক্তের গ্লুকোজ ৭০ মিগ্রা/ডিএল (৩.৯ মিমো/লি)-এর কম হলে

(খ) রক্তের গ্লুকোজ ৩০০ মিগ্রা/ডিএল (১৬.৭ মিমো/লি.)-এর বেশি হলে

(গ) যেকোনো অসুস্থতায়

আরও পড়ুন:
রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা, যা ঘটে শরীরে
রমজানে বেশি দাম নিলে দোকান বন্ধের হুঁশিয়ারি মেয়র আতিকের
রমজানে রাজধানীতে যানজট কমাতে ১৫ নির্দেশনা
প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫ রমজান পর্যন্ত খোলা, নতুন সময়সূচি
প্ল্যাটিনাম হোটেলস্ বাই শেলটেকে ইফতার ও সেহরির বিশেষ আয়োজন

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Health benefits of fasting that occur in the body

রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা, যা ঘটে শরীরে

রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা, যা ঘটে শরীরে রোজায় নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় শরীর। ছবি: সংগৃহীত
‘বিজ্ঞানীরা বলছেন, আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে রোজা রাখতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আপনার বাড়তি ওজন কমবে। বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলে আপনি একজন স্লিম, স্মার্ট মানুষে রূপান্তরিত হবেন। আর যদি রোজার পরেও আপনার বাড়তি ওজন থেকে যায়, এইটুকু পরিষ্কারভাবে বলা যায়, যে পদ্ধতিতে রোজা রাখার কথা ছিল, সেই পদ্ধতিতে রোজা রাখতে পারেন নাই; রোজা রাখা হয় নাই। ফলে আপনি আপনার ওজন কমাতে ব্যর্থ হয়েছেন।’

সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাতে সেহরি খেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার বর্জন করেন মুসলিমরা। এ সময়ে পাকস্থলীসহ শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিশ্রাম পায়। এতে করে শরীরে নানাবিধ ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

রোজার স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন উপকারিতার কথা এক ভিডিওতে তুলে ধরেছেন মনোদৈহিক ও জীবনযাপনবিষয়ক রোগের থেরাপিস্ট এবং কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাবের কোঅর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান। পরামর্শগুলো তার ভাষায় উপস্থাপন করা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের সামনে।

শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিশ্রাম

রমজান আসল, রমজান চলে গেল। ৩০টি রোজা আমি রাখলামও। ৩০টি রোজার পরেও আমার ওজনের একটুও কম-বেশি হলো না। এইটুকু খোলা চোখে বলে দেয়া যায়, রোজা থেকে আমি কোনো কিছু ফায়দা নিতে পারলাম না। আমি ব্যর্থ হয়েছি রোজার মূল উদ্দেশ্য অর্জন করতে। বিজ্ঞান কী বলে?

সর্বপ্রথম ১৯৯৪ সালে মরক্কোর ক্যাসাব্লাঙ্কা শহরে সারা বিশ্ব থেকে বিজ্ঞানীরা একত্রিত হয়ে ৫০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র তারা উপস্থাপন করেন। সেই সম্মেলনের নাম ছিল হেলথ অ্যান্ড রামাদান; সুস্থতা এবং রমজান। সেই সেমিনারে বক্তারা বলেন, রমজানের ৩০টি রোজা আমাদের শরীরের জন্য একটা বিশাল অপরচুনিটি; একটা বিশাল সুযোগ। তারা এভাবে তুলনা করে বলছেন, একটা জটিল মেশিন থেকে যদি সারা বছর পূর্ণ সার্ভিস চান, তাহলে অবশ্যই মাঝে মাঝে তাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও তাকে বিশ্রামে রাখতে হবে। তো আমাদের শরীরটাও একটা মেশিন। এর মধ্যে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র রয়েছে; হার্ট, লাং, লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক, পরিপাকতন্ত্র…কত ধরনের হার্ড ডিস্ক। এইসব মেশিনপত্র থেকে যদি আপনি সারা বছর পুরো সার্ভিস চান, তাহলে তাকে বছরের একটি মাস বিশ্রাম দিতে হবে। তাহলে বাকি ১১টা মাস সে পূর্ণোদ্যমে কাজ করে আপনাকে পূর্ণ সাপোর্ট দিতে পারবে। আপনি তার থেকে পুরো আউটপুট পাবেন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে রোজা রাখতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আপনার বাড়তি ওজন কমবে। বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলে আপনি একজন স্লিম, স্মার্ট মানুষে রূপান্তরিত হবেন। আর যদি রোজার পরেও আপনার বাড়তি ওজন থেকে যায়, এইটুকু পরিষ্কারভাবে বলা যায়, যে পদ্ধতিতে রোজা রাখার কথা ছিল, সেই পদ্ধতিতে রোজা রাখতে পারেন নাই; রোজা রাখা হয় নাই। ফলে আপনি আপনার ওজন কমাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

মস্তিষ্ককে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা

আমেরিকার সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের (এনআইএইচ) একটি শাখা হচ্ছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন এজিং। সেখানকার প্রখ্যাত নিউরোসায়েন্টিস্ট ড. মার্ক ম্যাটসন এবং তার সহযোগীরা দীর্ঘ গবেষণা করেন ফাস্টিং নিয়ে। এরপর তারা পাবলিশ করেন এর ফলাফল। সেখানে তারা পরিষ্কার করে বলছেন যে, একজন মানুষ যদি মাঝে মাঝেই ফাস্টিং থাকে, নিজেকে সকল ধরনের খাবার এবং পানীয় থেকে বিরত রাখে, তবে তিনি তার ব্রেনের যে এজিং, সে এজিংটাকে প্রতিরোধ করতে পারবে। ব্রেনকে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে এবং বৃদ্ধ বয়সে এখন যে রোগগুলো খুব দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধ বয়সে এসে আমাদের স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং যেসব রোগগুলোতে স্মৃতি হারিয়ে যাচ্ছে, সেই রোগগুলোকে বলা হয় আলঝেইমারস, ডিমেনশিয়া, হান্টিংটন, পারকিনসনের মতো রোগগুলো আপনি প্রতিরোধ করতে পারবেন।

রক্ত পরিশোধন

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের রক্তে নানা রকম বর্জ্য পদার্থ এবং ক্ষতিকর পদার্থ ঘুরে বেড়ায়। এই রক্তকে পরিশোধন করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে রোজা।

কোষ পরিষ্কার

আমাদের শরীরে ৩০ ট্রিলিয়ন সেল বা কোষ আছে। এই কোষের ভিতরে প্রতিনিয়ত নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তৈরি হচ্ছে বিপাকক্রিয়ার ফলে এবং নানা ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে। শক্তি তৈরি হচ্ছে, হরমোন তৈরি হচ্ছে, এনজাইম তৈরি হচ্ছে। এগুলো তৈরির পাশাপাশি কিছু বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন তৈরি হচ্ছে। এইসব বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন দূর করার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে ফাস্টিং বা রোজা। এটা নিয়ে গবেষণা করে ‍যিনি নোবেল প্রাইজ পান, তিনি হচ্ছেন ড. ইয়োশিনোরি ওহসুমি। তিনিসহ অন্য বিজ্ঞানীরা এটার নাম দিয়েছেন অটোফেজি। এটি (অটোফেজি) যখন ১২ ঘণ্টা থেকে ১৬ ঘণ্টা হবে, এটি চমৎকার কাজ করবে। এটি যখন ১৮ ঘণ্টা, ২০ ঘণ্টা, ২২ ঘণ্টা, ২৪ ঘণ্টা হবে এক্সিলেন্ট।

টাইপ টু ডায়াবেটিস রোধে সহায়ক

আমরা জানি টাইপ টু ডায়াবেটিসের মূল কারণ হচ্ছে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। সম্প্রতি দুটো গবেষণা বলছে, টাইপ টু ডায়াবেটিস রিভার্স করতে চাইলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং কেউ যদি সপ্তাহে তিন দিন করেন, তবে তিনি টাইপ টু ডায়াবেটিস নিরাময় করতে সক্ষম হবেন। সেই সময় তার স্থূলতাও তার শরীর থেকে চলে যাবে।

দীর্ঘায়ু হওয়ায় সহায়তা

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাঝে মাঝে রোজা, উপবাস বা ফাস্টিং একজন মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করে তাকে দীর্ঘজীবী করে। এই যে দেখেন না, হজরত শাহজালাল (র.) ১৫০ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি স্বল্পাহারি ছিলেন এবং প্রায়ই রোজা রাখতেন। তিনি এক বেলা খেতেন। এই যে ঢাকা থেকে কাছে সোনারগাঁয়ে ছিলেন বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী। ১৬০ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনিও স্বল্পাহারি ছিলেন। প্রায়ই উপবাস করতেন।

আমাদের প্রিয় মহানবী (সা.) সপ্তাহে দুই দিন রোজা রাখতেন; সোমবার এবং বৃহস্পতিবার। এ ছাড়াও তিনি প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোজা রাখতেন।

রোজা রাখলে কী ঘটে শরীরে

রোজায় দীর্ঘ সময় পাকস্থলী খালি থাকায় নানা ধরনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় শরীর। ধাপে ধাপে সেটি কীভাবে হয়, তা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে সুস্থতা নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট মাইন্ডবডিগ্রিন ডটকম।

প্রথম চার ঘণ্টা

খাওয়ার পর প্রথম চার ঘণ্টায় অভ্যন্তরীণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সচল রাখার পাশাপাশি কোষ ও টিস্যুর বিকাশ ঘটায় শরীর। এ সময়ে দরকারি হরমোন ইনসুলিন উৎপন্ন করে অগ্ন্যাশয়। এর মধ্য দিয়ে রক্তে নিঃসৃত গ্লুকোজ ব্যবহারের পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে ব্যবহারের জন্য কোষে বাড়তি শক্তিও মজুত করা যায়।

চার থেকে ১৬ ঘণ্টা

দেশভেদে সেহরি থেকে ইফতারের মধ্যকার সময়ে তারতম্য হয়। কোনো কোনো দেশে ১৬ ঘণ্টার বেশি সময় উপবাস থাকতে হয় রোজাদারদের।

১৬ ঘণ্টার মতো যারা রোজা রাখবেন, তাদের শারীরিক ক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে চতুর্থ ঘণ্টা থেকে। এ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাতে সঞ্চিত অতিরিক্ত পুষ্টি ব্যবহার করা শুরু করে শরীর।

কোষে থাকা শক্তি ফুরিয়ে গেলে শরীর নজর দেয় সঞ্চিত চর্বি বা ফ্যাটে। শরীর থেকে চর্বি নির্গমন এবং শক্তি জোগাতে এগুলো পুড়িয়ে ফেলার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘কিটন বডিজ ফর এনার্জি’। এটি সাধারণত ঘটে ১৬তম ঘণ্টার কাছাকাছি সময়ে।

শরীর সঞ্চিত চর্বি পোড়ানোর পর্যায়ে কখন যাবে, সেটি নির্ভর করে রোজা বা উপবাস শুরুর আগে গ্রহণ করা খাদ্যের ধরনের ওপর। কেউ প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও শ্বেতসার খাবার খেলে এ পর্যায় দেরিতে শুরু হবে। বিপরীতে কেউ চর্বি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে আগেই সে পর্যায়ে পৌঁছাবে।

রোজা বা উপবাসের সবচেয়ে শক্তিশালী বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি অটোফেজি। ১৬ ঘণ্টার আশপাশের সময়ে এটি শুরু হয়।

অটোফেজি হলো এমন এক প্রক্রিয়া যার মধ্য দিয়ে কোষে থাকা মৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত বস্তুগুলো সরিয়ে দেয় শরীর। এসব বস্তু বার্ধক্য, ক্যানসার ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে।

১৬ থেকে ২৪ ঘণ্টা

রোজার সময় ১৬ ঘণ্টার বেশি হলে কোষে থাকা গ্লুকোজ ও লিভারে থাকা গ্লাইকোজেন এবং পেশিগুলো দ্রুত ক্ষীণ হতে থাকে। ফলে শক্তি জোগাতে জমানো চর্বি গলাতে হয় শরীরকে।

এ পর্যায়ে এসে শরীরে শক্তির চাহিদার অনেক বেশি পরিবর্তন দেখা যায় না। রোজাদার বা উপবাসে থাকা ব্যক্তি তখনও জেগে থাকা, দৈনন্দিন কাজ করা, লোকজনের সঙ্গে লেনদেন করা কিংবা ব্যায়াম করতে পারেন। এ কারণে উল্লেখযোগ্য মাত্রার শক্তির দরকার হতে পারে।

১৬ ঘণ্টার পরে শরীরে এএমপিকে নামের আরেকটি রাসায়নিক উৎপন্ন হয়। এটি শরীরজুড়ে অটোফেজি আরও বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুন:
সৌদির সঙ্গে ৯৫ বছর ধরে রোজা হচ্ছে চাঁদপুরে: পির আরিফ
সেহরির দোয়া
রোজায় ত্বকের যত্নে কী করবেন
সৌদির সঙ্গে রোজা পালন শুরু শরীয়তপুরের ২০ গ্রামে
রমজানজুড়ে সুস্থ থাকতে করণীয়

মন্তব্য

p
উপরে