একটা ডিম, একটু ডাল আর ভাত হলে অনেকের হয়তো আর কিছু লাগে না। অভ্যাসবশত তারা হয়তো প্রতিদিনই একইভাবে ডিম খেয়ে থাকেন। অথচ সেভাবে ডিমটি খাওয়ার ফলে শরীর যথাযথ পুষ্টি পায় কি না, তা হয়তো তারা জানেন না।
ডিমের উপকারিতা এবং সেটি কীভাবে খেতে হয়, তা একটি ভিডিওতে তুলে ধরেছেন পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকা। এ পরামর্শগুলো তার ভাষাতেই তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের সামনে।
‘বিশ্বের সেরা সুপারফুড’
ডিম নিয়ে আসলে এত এত বেশি প্রশ্ন এবং অ্যাকচুয়ালি এই প্রশ্নটাই কমনলি থাকে যে, ডিমটা কোন প্রসেসে খেলে সবচাইতে ভালো হবে। ডিম কি আসলে সবার জন্য প্রযোজ্য কি না, এই প্রশ্নটাও থাকে।
আমি একটা কথা সবসময় বলে থাকি যে, ডিম হলো ওয়ার্ল্ড’স বেস্ট সুপারফুড। অর্থাৎ আর কোনো প্রোটিন যদি আমি না খাই, শুধু ডিম দিয়ে আমার প্রোটিনের চাহিদাটা কিন্তু পূরণ হয়ে যায়। কারণ পৃথিবীর যেকোনো দেশে গেলে আমরা এই একটা প্রোটিনকে নিশ্চিত করতে পারি এবং এটাকে আমরা সহজেই খেতে পারি।
ডিমের মতো একটি খাবারকে যখন আমি খাদ্যতালিকায় যোগ করব, আমি যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং প্রচুর পরিমাণে মাইক্রো এবং ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট পেয়ে যাব, তখন কিন্তু আমাকে এই খাবারটা খাদ্যতালিকায় রাখতেই হবে।
প্রোটিনের উৎস
আমাদের বডিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয় এবং সেটা কিন্তু প্রোটিন থেকে আসে। ডিম এমন একটা প্রোটিনের সোর্স যেখান থেকে খুব ভালো অ্যামাইনো অ্যাসিড আমরা পাই।
ডিমে যে প্রোটিন আছে অ্যালবুমিন, এটা কিন্তু ডিম ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো খাবারে নাই। এই অ্যালবুমিনটা আমাদের বডির জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের অনেকগুলো অর্গানের সাথে, অনেকগুলো রোগের জন্য এই অ্যালবুমিনটা কিন্তু ইনটেক করতে হয়। এটাকে রেফারেন্স প্রোটিন বলা হয়। অর্থাৎ আপনি অন্য প্রোটিন খেতে পারছেন না, তাহলে ডিমের মতো প্রোটিনকে আপনি খাদ্যতালিকায় যোগ করুন। কারণ আপনার বডির যে সেল রিপেয়ারমেন্ট (নতুন কোষ তৈরি) থাকে, বিশেষ করে একজন ক্যানসার রোগীর প্রচুর সেল নষ্ট হয়, তখন তার ট্রিটমেন্টের একটা মেজর পার্ট, তার ডায়েটের একটা মেজর পার্ট থাকে কিন্তু এই ডিম। একজন ক্যানসার পেশেন্টকে পার ডেতে আমাদেরকে অনেক সময় পাঁচ থেকে ছয়টা করেও কিন্তু ডিম খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হয।
সামটাইমস যিনি কিডনি ডিজিজে ভোগেন, তিনি যদি ডায়ালাইসিসে চলে যান, সে সময় তাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আমাদেরকে দিতে হয়। সেই ক্ষেত্রে ডিম থেকেই কিন্তু আমরা ম্যাক্সিমাম সময় রিকভার করে থাকি।
কোন প্রক্রিয়ায় খেতে হবে
এখন আসি যে, ডিমটা আসলে কোন প্রসেসে খেতে হবে। প্রত্যেকটি খাবারেরই কিন্তু প্রসেসিং অবস্থায় পুষ্টিগুণটা নষ্ট হয়ে যায়। ডিমটা যখন আমরা বয়েল ফরমে (সিদ্ধ করে) খাব, তখন কিন্তু ফুল নিউট্রশনটা পাব; ক্যালোরিটা পুরোটা পাচ্ছি এখানে আমরা, কিন্তু একটা বিষয় তখন পাই না। সেটা হলো যে, বয়েল করার কারণে প্রোটিন ঠিক আছে, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টও ঠিক আছে, কিন্তু ফ্যাট সলুয়েবল যেসব ভিটামিনগুলো আছে, ভিটামিন ‘এ’, ‘ডি’, ‘ই’, ‘কে’, এই চারটা জিনিস কিন্তু শুধু বয়েল করে খেলে অনেক সময় পাওয়া যাবে না, কিন্তু আমরা বয়েল ডিমের সাথে যদি অন্য একটা ফ্যাট, লাইক দুধ খেয়ে নিই, পাশাপাশি দুধ এবং ডিম খেয়ে নিই, তাহলে দুধের ফ্যাট, ডিমের ভিটামিন এ,ডি, ই, কে এই চারটাকে ধারণ করছে।
যদি আমি ডিম খেতে না পারি, তাহলে আমি কী করব? তাহলে হয়তো ব্রেডের সঙ্গে যদি একটু বাটার নেওয়া হয় বা সামটাইমস অনেক সময় আছে যে, ডিমটা খেলাম, একটু বাটার খেলাম। তাতেও কিন্তু আমাদের কাজ হবে অথবা ডিমটাকে এভাবে খাওয়া যেতে পারে, সপ্তাহে তিন দিন বয়েল করে খেলাম, চার দিন আমি পোচ করে খেলাম। অর্থাৎ জাস্ট ফ্রাইপ্যানে তেলটাকে দিয়ে বা বাটারটাকে দিয়ে ডিমটাকে ছেড়ে দেওয়া হলো। সে ক্ষেত্রে ক্যালোরিটা বেড়ে গেল। অর্থাৎ প্রত্যেকটা উপাদান পাওয়া গেল।
অধিক তাপ দেওয়া যাবে না
খেয়াল করতে হবে ডিমটি কিন্তু অধিক তাপ দেওয়া যাবে না। যখন আপনি অধিক তাপে ডিমটাকে কুক করবেন, সে ক্ষেত্রে ডিমের প্রোটিনটা কিন্তু নষ্ট হয়ে যাবে। অনেকগুলো মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টই কিন্তু তখন চলে যায়।
ডিমটাকে অনেক সময় আছেন অনেকে ডুবো তেলে দিয়ে দিচ্ছেন। আমি বলি যে, জাস্ট ফ্রাই প্যানে বসাবে। চুলাতে জাস্ট এক চামচ তেলটাকে ব্রাশ করবে। সাথে সাথে ডিমটাকে ছেড়ে দেবে। অর্থাৎ হিট করবে না। তেলটাকে হিট না করে ডিম ছেড়ে দিতে হবে।
অমলেটে সতর্কতা
আরেকটা ফরমে অনেকে খায়। সেটা হলো ডিমটাকে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ দিয়ে অমলেট করে খায়। এই ফরমটাকে যদি আমি নিউট্রিশনাল (পুষ্টিগত) দিক থেকে ক্যালকুলেট করি, তাহলে আমি ডিসকারেজই (নিরুৎসাহিত) করব। কারণ এতে অনেক কিছু যোগ করা হয়। টেস্টটা অনেক বাড়ে। খেতে খুব ভালো লাগে, কিন্তু অনেকক্ষণ চুলোতে থাকার কারণে, তাপের কারণে এখানে কিন্তু প্রোটিনটা নষ্ট হয়ে যায়।
ওয়াটার পোচ
যেহেতু আমি মেইনলি প্রোটিনের জন্য ডিমটা খাব, তাহলে আমাকে প্রোটিন নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বয়েল ফরমটা আমার কাছে বেস্ট মনে হয়। সেকেন্ড অপশন হলো ডিমটাকে পোচ করে খাওয়া। আরেকটা প্রসেস হলো যারা হার্টের রোগী বা যাদের বডিতে অনেক বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে, তাদের বলব ওয়াটার পোচ (সামান্য গরম পানিতে পোচ) করে খাওয়ার জন্য। সে ক্ষেত্রে কিন্তু ডিমটা শরীরের জন্য অনেক উপযোগী এবং এটা সহজে হজমযোগ্য কিন্তু আমাদের হয়।
অনেকে আছে স্ক্রাম্বল এগ (ডিমের ঝুরি ভাজা) করে। এ ক্ষেত্রে বলব যে, স্ক্রাম্বল এগ করার ক্ষেত্রে অনেকে আছে একটু ভেজিটেবল মিক্স করে নেন। এখানে আমরা একটু ঘি বা বাটার অ্যাড করে নিতে পারি।
অনেকে এটাতে একটু সুগার ইউজ করেন। এখানে বরং আপনি, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, টমেটো দিয়ে খুব দ্রুত, অর্থাৎ খুব অল্প সময়ে স্ক্রাম্বল করা যায়। স্ক্রাম্বল এগও আমাদের নিউট্রিশনাল ফ্যাক্টটা ভালো রাখে। অনেকক্ষণ আমাদেরকে তাপ দিতে কিন্তু হয় না।
ডেজার্ট
আরেকটা ফরম যদি বলি, ডিমের তৈরি যে ডেজার্ট, লাইক হলো আমরা যদি পুডিংয়ের কথা বলি, দুধ এবং ডিম যোগ করে যে পুডিংটা করা হয়, সেটা ভাপে বা মাইক্রোওয়েভে করা হয়। এটাতেও কিন্তু পুষ্টিগুণটা একেবারে ঠিক থাকে।
সো এই ফরমগুলোতে যদি আমরা ডিমটাকে খাই, তাহলে প্রোপার পুষ্টি কিন্তু আমরা নিশ্চিত করতে পারব।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় সাপের দংশনে আহত হয়েছেন মিলন আলী নামে এক কৃষক। পরে অন্য কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় মিলন আলী সাপটিও হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি এলাকার একটি ধানক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে। আহত মিলন আলী ওই এলাকার তোবজুল হকের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলন আলী বলেন, ‘সাপের ধরন চিহ্নিত করতে ও সঠিক চিকিৎসার জন্য সাপটি ধরে আমার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। তাই সে সাপটি ব্যাগে করে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা সাপটি দেখে রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেছেন।’
শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মামুন কবির জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি একটি সাপের বাচ্চাসহ হাসপাতালে আসেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনিশঙ্কামুক্ত। তারপরও আমরা ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
মাদারীপুরের শিবচরে একই দিনে তিনজনকে সাপে দংশন করেছে। তাদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে শিবচর উপজেলার চর বাচামারা গ্রামের লোকমান খান বাড়ির পাশে বাদাম ক্ষেতে রাখা ঝাকার নিচ থেকে হাতে কাঁচি তুলছিলেন। এ সময় একটি সাপ তার হাতে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে তাকে বিষধর সাপে দংশন করেছে। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বজনদের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করতে বললে তারা অস্বীকার করেন। এজন্য স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোগীকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
অপরদিকে একই দিন দুপুরে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের আলেপখাঁর খাঁড়াকান্দি গ্রামের শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বাড়িতে পালা থেকে গরুর জন্য খড় বের করার সময় একটি সাপ তাকে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
একই দিন সকালে উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের মোসলেম কাজী বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা সুলতানা বলেন, সাপের দংশনে আহত তিনজন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি দুজনকে বিষধর সাপে কাটেনি। তাই তাদেরকে এন্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে তাদেরকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওষুধপত্র, স্যালাইনসহ হাসপাতালে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হলে এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ নেয়া হবে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করা উচিত। শিগগিরই এ বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হবে।
যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা জোরদার করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করা উচিত।
জেনেভা সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ফাইলেরিয়া নির্মূল এবং বিশ্বে প্রথম কালাজ্বর নির্মূল করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ৭৭তম সাধারণ সভায় তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মহাপরিচালক বলেছেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ হতে পারে একটি যথাযথ রোল মডেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যাবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হিসাবে এই তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এই সময়ের মধ্যে ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৮৮০ জন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসকের ওপর কোনো আক্রমণ যেমন আমি সহ্য করব না, তেমন রোগীর প্রতি কোনো চিকিৎসকের অবহেলাও বরদাস্ত করা হবে না।
রোববার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, মন্ত্রী হিসেবে আমার বয়স মাত্র সাড়ে ৩ মাস। এই অল্প সময়ে আমি যেখানে গিয়েছি একটা কথাই বলেছি, আমি যেমন চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, ঠিক তেমনি আমি রোগীদেরও মন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে শুধু একটা প্রতিশ্রুতিই আমি দিতে পারি, তোমরা তোমাদের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিয়ে যাও, তোমাদের বিষয়গুলোও আমি দেখব।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আর বানু প্রমুখ।
নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ অতি সাধারণ। তাদের চাওয়া-পাওয়াও সীমিত। ডাক্তারের কাছে এলে তারা প্রথমে চায় একটু ভালো ব্যবহার। একটু ভালো করে তাদের সাথে কথা বলা, একটু মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনা। এটুকু পেলেই তারা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া। আমি মনে করি সে স্বপ্ন পূরণ করার কারিগর হচ্ছো তোমরা। যারা আজকে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছো। আমার বিশ্বাস, তোমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে ৪১তম বিসিএস স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে ১০৩ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ১৭১ জন এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১৫৩ জন যোগদান করেন।
দেশে আরও ২৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার এই হিসাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
এতে জানানো হয়, নতুন করে ১৪ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৫ জনে।
তবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৪ জনের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। একই সময় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৭ হাজার ৩৭৪ জনে।
দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও উত্তপ্ত তাপমাত্রার কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।
বুধবার ইয়েট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আপনার প্রতিবেশিদের দিকে নজর রাখুন- দুর্বল পরিবার, প্রতিবন্ধী শিশু, গর্ভবতী নারী এবং বৃদ্ধরা তাপপ্রবাহের সময় অসুস্থতা বা মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। সময় নিয়ে প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নিন, বিশেষ করে যারা একা থাকেন।’
ইউনিসেফের ২০২১ সালের শিশুদের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ‘অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা।
ইউনিসেফের মতে, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে, বিশেষ করে নবজাতক, শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য যারা তাপজনিত অসুস্থতা যেমন হিট স্ট্রোক এবং ডিহাইড্রেশনের কারণে বিশেষভাবে ডায়রিয়া ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যা হিসেবে বিবেচিত হয়।
ইয়েট বলেন, ‘যেহেতু শিশুদের ওপর ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাবের উদ্বেগের কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, তাই ইউনিসেফ অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের হাইড্রেটেড ও নিরাপদ রাখতে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।’
এই তাপপ্রবাহের তীব্রতা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।
তাপমাত্রা নজিরহীনভাবে বাড়তে থাকায় অবশ্যই শিশু এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে জানান ইয়েট।
এই তাপপ্রবাহ থেকে ইউনিসেফ কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, যত্নগ্রহণকারী এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের রক্ষায় নিচের পদক্ষেপগুলো নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে-
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
প্রাথমিক চিকিৎসা
যদি কোনো শিশু বা গর্ভবতী নারীর হিটস্ট্রেসের লক্ষণগুলো দেখা যায়, যেমন- মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম, বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, নাক দিয়ে রক্তপাত, পেশি খিঁচুনি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি; ওই ব্যক্তিকে ভালো বায়ু চলাচলসহ শীতল, ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখুন এবং ভেজা তোয়ালে বা শীতল পানি দিয়ে শরীর মুছে দিন।
পানি বা ওরাল রিহাইড্রেশন লবণ (ওআরএস) গ্রহণ করুন।
হিটস্ট্রেসের গুরুতর লক্ষণগুলোতে (যেমন: বিভ্রান্তি বা প্রতিক্রিয়া জানাতে অক্ষমতা, অজ্ঞান হওয়া, শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, খিঁচুনি এবং চেতনা হ্রাস) হলে জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
মন্তব্য