নারীদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। মাসের বিশেষ এ দিনগুলোতে হরমোনের পরিবর্তন হয়। ওই সময় পেটে ব্যথা হয় অনেকের। এমনকি শরীরও ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া মুড সুইং বা মেজাজ ওঠানামা, ক্লান্তি, অবসাদ তো রয়েছেই।
অনেকেই ব্যথা কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে ফেলেন, যেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পিরিয়ডের সময় ব্যথার কারণ এবং তা কীভাবে কমানো যায়, সেটি জানিয়েছেন ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ফারহানা শিশির।
পিরিয়ডের ব্যথার কারণ
পিরিয়ডের সময় জরায়ুতে চাপ পড়ে। জরায়ুর পেশিতে সংকোচন-প্রসারণের জন্য পেটে যন্ত্রণা হয়। ব্যথার তীব্রতা ছড়িয়ে পড়তে পারে কোমর ও শরীরে।
কিছু উপায় রয়েছে, যা পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
হট ওয়াটার ব্যাগ
পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে হট ওয়াটার ব্যাগ বা গরম পানির সেঁক বেশ কার্যকর হতে পারে। এটিই প্রাকৃতিক উপায়ে ব্যথা কমানোর প্রাথমিক ধাপ। পেটে গরম পানির সেঁক দিলে ব্যথা অনেক কমে গিয়ে আরামবোধ হয়।
কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলোও পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ক্যামোমাইল টি
পিরিয়ডের সময় ক্যামোমাইল টি উপকারে আসতে পারে। এ চায়ের রয়েছে ‘অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি’ এবং ‘অ্যান্টি স্প্যাসমোডিয়্যাক’ বৈশিষ্ট্য, যা ঋতুস্রাবজনিত ব্যথা অনেকটাই কমাতে সক্ষম।
এই চা পানের সঙ্গে সঙ্গে দেহে ‘গ্লাইসিন’ নামক একটি উপাদান তৈরি হয়, যা স্নায়ুকে নিস্তেজ করে দেয়। এতে যন্ত্রণা কম হয়।
আদা চা
পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চা পান করলে ব্যথা অনেকটাই কমে। আদা ব্যথা কমানো, বমি ভাব দূর করতে ভূমিকা রাখে।
ওষুধ
এ ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল কাজ করে না, তবে দুই-একটি হালকা ডোজের পেইন কিলার দেয়া যায়। সবচেয়ে বড় রিমেডি হট ওয়াটার ব্যাগ।
আরও পড়ুন:সরকারি চিকিৎসকদের প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস আগামী ৩০ মার্চ থেকে শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সরকারি চিকিৎসকদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি চিকিৎসকদের প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস আগামী ৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে শুরু করা হবে।
‘প্রাথমিকভাবে ১০টি জেলা হাসপাতাল এবং ২০টি উপজেলা হাসপাতালে এ কার্যক্রম শুরু হবে। কার্যক্রমের আওতায় বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা দিবেন চিকিৎসকরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকরা সপ্তাহে দুইদিন করে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের আওতায় রোগী দেখবেন। প্রাইভেট প্র্যাকটিসের আওতায় রোগী দেখাতে অধ্যাপককে ৫০০ টাকা, সহযোগী অধ্যাপককে ৪০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপককে ৩০০ টাকা এবং অন্য চিকিৎসককে ২০০ টাকা করে ফি দিতে হবে।
‘এসব ফি থেকে অধ্যাপকরা ৪০০ টাকা, সহযোগী অধ্যাপক ৩০০ টাকা সহকারী অধ্যাপক ২০০ টাকা এবং অন্যান্য চিকিৎসকরা ১৫০ টাকা করে পাবেন। বাকি টাকা সার্ভিস চার্জ বাবদ কাটা হবে এবং চিকিৎসকদের সহায়তাকারীরা পাবেন।’
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাতে সেহরি খেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকেন মুসলিমরা। এ সময়ে পানি ছাড়া প্রায় পুরো দিন কাটানো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। পানি আমাদের শরীরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা সবাই জানি। তাই সেহরি এবং ইফতারের সময় সঠিক পরিমাণে তরল পানীয় গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে আমাদের শরীরে পানির সুষ্ঠু পরিমাণ বজায় থাকে।
এ রমজানে চাঙা থাকতে নিচের ৫টি পানীয় আপনার সেহরি এবং ইফতারের তালিকায় থাকতে পারে।
ডাবের পানি
রমজান মাসে হাইড্রেটেড থাকার একটি সতেজ এবং প্রাকৃতিক উপায় হচ্ছে ডাবের পানি। এটি প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটস, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ যা আপনাকে আপনার শরীরের তরলের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে।
রুহ আফজা শরবত
রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি পান করা হয় রুহ আফজা শরবত। এটি একটি রিফ্রেশিং এবং সুগন্ধযুক্ত পানীয় যা আপনাকে দীর্ঘক্ষণ খাবার এবং পানি ছাড়াই তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করবে। এটি পানি বা দুধের সঙ্গে মিশ্রিত করতে পারেন। এ ছাড়া আরও নান্দনিকভাবে আনন্দদায়ক করতে তরমুজের ছোট টুকরা এবং তাজা পুদিনা পাতা দিয়ে সাজাতে পারেন রুহ আফজার শরবত।
ভেষজ উপাদানের পানীয়
পানিতে একটি সাধারণ টুইস্ট দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে সুস্বাদু করে তুলতে স্পিয়ারমিন্ট, পেপারমিন্ট এবং লেমনগ্রাসের মতো ভেষজগুলির তুলনা হয়না। এতে রয়েছে শীতল উপাদান যা পানিতে মিশ্রিত করলে স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরি হবে।
আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, একটি পাত্রে পানি নিয়ে পুদিনা পাতা এবং লেবুর রস যোগ করা। এর সঙ্গে আপনার পছন্দের ফলের টুকরাও যোগ করতে পারেন। ভালোভাবে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন, সঙ্গে সামান্য গোলমরিচ, হালকা লবণ ও বরফ কুঁচি দিয়ে পরিবেশন করুন। ইফতারে এটি দিবে দারুণ সতেজতা।
দুধ ও খেজুরের স্মুদি
দুধ এবং খেজুর স্মুদি অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি পানীয় যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। খেজুর চটজলদি এবং সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙেন। ঘরে বসেই খেজুর থেকে পুষ্টিকর পানীয় তৈরি করতে পারেন।
শুধু খেজুর গুঁড়ো করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। খেজুর দুধের সঙ্গে সুন্দরভাবে মিশে গেলেই আপনার শক্তি বৃদ্ধিকারী পানীয় প্রস্তুত হয়ে যাবে।
ফলের জুস
এ রমজানে ফলের রস তৃষ্ণা নিবারণের জন্য একটি অসাধারণ পানীয় হতে পারে। তাজা ফলের রস প্রাকৃতিক উপাদানের পুষ্টিতে ভরপুর। এগুলো সুস্বাদু এবং প্রস্তুত করা সহজ।
আপনার পছন্দমতো যেকোনো ফলের জুস তৈরি করতে পারেন। তরমুজ, কমলা, পেঁপে, আঙ্গুর, লেবু, আনারসের মতো পানিযুক্ত উপাদানের ফল খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। সুস্বাদু মিশ্র ফলের জুসও তৈরি করতে পারেন একসঙ্গে।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সাংসদের সহধর্মিণী সালমা ওসমান লিপি ও ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন বৃহস্পতিবার এ খবর জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে শামীম ওসমানের সুস্থতা কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সবার দোয়া কামনা করা হয়েছে।
অয়ন নিউজবাংলাকে জানান, তার বাবা (শামীম ওসমান) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি সবার কাছে তার বাবার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়েছেন৷
এর আগে সালমা ওসমান লিপি ফেসবুকে লিখেন, ‘সংসদ সদস্য শামীম ওসমান গতকাল (বুধবার) রাত থেকে অসুস্থ। তিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপনারা সবাই ওনার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।
শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম নিউজবাংলাকে জানান, ‘খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম, ঠিকমতো না ঘুমানোর কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। তিনি এখন অনেকটা সুস্থ বোধ করছেন।’
নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফেরদৌস জুয়েল জানান, ‘বর্তমানে শামীম ওসমান শারীরিকভাবে অনেকটা ভালো আছেন। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন৷’
আরও পড়ুন:ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া স্কুল-কলেজে ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম আয়োজন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এক চিঠিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই ‘বিশেষ অনুরোধ’ জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৬ হাজার নারীকে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন দেয়ার খবর প্রকাশের পর ১৯ মার্চ চিঠিটি দেয়া হয়। এর আগের দিন অভিযান চালিয়ে রাজধানীর দারুসসালামে ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশন থেকে নকল ভ্যাকসিনের আলামত উদ্ধার করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে সব জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সব জেলার ঔষধ প্রশাসনকে।
তাতে বলা হয়েছে, সেরাভিক্স ভ্যাকসিন নকল পাওয়া গেছে। আন-রেজিস্টার্ড হেপাটাইটিস-বি’র ভ্যাকসিনের ভায়াল থেকে খালি ভায়ালে আংশিক ভরে সেরাভিক্স ভ্যাকসিনের লেবেল লাগিয়ে একটি চক্র নকল করছে।
গত ১৮ মার্চ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দারুসসালামের ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশন থেকে নকল ভ্যাকসিনের আলামত পেয়েছে। গাজীপুর জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে নকল ভ্যাকসিনের প্রচারণা করা হয়েছে।
চিঠিতে বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়েছে, স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি পর্যায়ে কোনো ধরনের ভ্যাকসিনেশন করতে হলে এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পূর্বানুমোদন থাকা আবশ্যক। ঔষধ প্রশাসন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পূর্বানুমতি ছাড়া এ ধরনের ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম স্কুল-কলেজে না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৮ মার্চ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দারুস সালাামের ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশনে অভিযান চালিয়ে নকল ভ্যাকসিনের আলামত পেয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে অধিদপ্তর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গত কয়েকদিনে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছি। কিছু সন্দেহভাজন প্রতিষ্ঠান নকল ভ্যাকসিন উদ্ধারের খবর পেয়ে সতর্ক হয়ে গেছে।
‘আমরা এখন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের অভিযান চলাকালেও এ ধরনের মাইকিং শুনতে পেয়ে ধাওয়া করেছিলাম। কিন্তু তারা পালিয়ে যায়।’
গত ১৫ মার্চ নকল ভ্যাকসিন তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম শিপন, ফয়সাল আহম্মেদ, আল আমিন, নুরুজ্জামান সাগর ও আতিকুল ইসলাম নামে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের প্রত্যেককে দুইদিন করে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিন বছর ধরে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্স বাংলাদেশে আমদানি বন্ধ রয়েছে। আর এটাকে সুযোগ হিসিবে কাজে লাগায় প্রতারক চক্রটি। হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিনের একটি অ্যাম্পুল খুলে অন্তত ১০টি জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন বানিয়ে বিক্রি করছে চক্রটি।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের বরাত দিয়ে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের গোয়েন্দারা জানান, চোরাইপথে ভারত থেকে এই ভ্যাকসিন আনতে অ্যাম্পুল প্রতি খরচ হয় ৩৫০ টাকা। একটি অ্যাম্পুল খুলে ১০টি অ্যাম্পুল বানানো হয়। পরে সেগুলোতে লাগিয়ে দেয়া হয় জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের লেবেল।
লেভেল লাগানোর পর জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের প্রতিটি অ্যাম্পুল বিক্রি করা হয় আড়াই হাজার টাকা করে। গাজীপুরের প্রায় ৬ হাজার নারীর কাছে জনপ্রতি তিনটি করে ১৮ হাজার অ্যাম্পুল ভ্যাকসিন বিক্রি করে চক্রের সদস্যরা। এর মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা।
পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকা ও আশপাশের প্রায় ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প করে নকল টিকা বিক্রির তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী, শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের কাছে নকল ভ্যাকসিনের তিনটি করে ডোজ বিক্রি করেছে ওই প্রতারক চক্র।
নকল ভ্যাকসিন তৈরির কারখানা মালিক গ্রেপ্তার
নকল ভ্যাকসিন তৈরির কারখানা মালিক হিমেলকে রোববার গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগ। তাকে দু’দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। এর আগে নকল ভ্যাকসিন তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. গোলাম সবুর বলেন, ‘কারখানা মালিক হিমেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই নকল ভ্যাকসিন তৈরি ও বিপণনে জড়িত অন্যদের বিষয়ে জানা সম্ভব হবে বলে মনে করছি।’
আরও পড়ুন:ত্বকে লাবণ্য ফেরানোর পাশাপাশি রোদে পোড়া দেহের যত্নে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। হলুদ দিয়ে তৈরি হয় সাবান, যা প্রসাধনী হিসেবে বেশ কার্যকর।
ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করার পাশাপাশি প্রসাধনী হিসেবে হলুদের তৈরি সাবানের উপকারিতা নিয়ে জানিয়েছেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন অ্যান্ড হেয়ার কেয়ার ক্লিনিকের রূপ বিশেষজ্ঞ শাহীনা আফরিন মৌসুমি। পরামর্শগুলোর তার ভাষায় পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করা হলো।
সুপ্রাচীনকাল থেকেই ত্বকের যত্ন ও নানা রোগের ওষুধ হিসেবে হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে। নানা আয়ুর্বেদিক গুণ থাকা কাঁচা হলুদ, শুকনো হলুদ গুঁড়ো বিভিন্ন উপায়ে আমরা ব্যবহার করি দৈনন্দিন জীবনে।
রোদে পোড়া ত্বকের জন্য হলুদ খুবই উপকারী। ত্বকের ধরন অনু্যায়ী হলুদের ব্যবহার একটু ভিন্নভাবে করতে হয়।
শুষ্ক ত্বক
শুষ্ক ত্বকের জন্য প্রথমে হলুদের রসটাকে বের করে নিতে হবে। তারপর সেটা দুই থেকে তিন মিনিট চুলায় ফুটিয়ে নিতে হবে। এর সঙ্গে বেসন ও ডিমের কুসুম মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে যায়।
তৈলাক্ত ত্বক
এ ক্ষেত্রেও একইভাবে হলুদের রস ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর মুলতানি মাটি নিয়ে হলুদের রসে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তার সঙ্গে এক চামচ পুদিনা পাতা ও এক চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে হাত ও মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মিশ্র ত্বক
মিশ্র ত্বকের যত্নটা একটু ভিন্নভাবে নিতে হয়। কারণ এ ধরনের ত্বক একটু বেশি স্পর্শকাতর হয়। সে জন্য আগের মতোই হলুদের রস নিয়ে তার মধ্যে দেশি সবুজ মুগডাল ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর একে পেস্ট করে তুলসী পাতার রস ও কেওলিন পাওডার মিশিয়ে মুখ ও হাত-পায়ে লাগাতে পারেন। এতে যেমন ত্বকের কালচে ভাব দূর হবে, তেমনি হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।
আর সব ধরনের ত্বকেই হলুদের রসের সঙ্গে ব্রাউন সুগার নিয়ে স্ক্রাবিং করতে পারেন। এতে ব্ল্যাকহেডস দূর হয়।
কখন ব্যবহারে বেশি উপকার
হলুদ সবসময় রাতে ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হলুদের যেকোনো প্যাক লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে একটা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিলে ত্বকের সজীবতা বাড়ে। আর হলুদের রস বা গুঁড়ো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলেও ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়।
আরও পড়ুন:দেশের যুবসমাজকে নার্সিং শিক্ষা গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘নার্সের শিক্ষা গ্রহণ করলে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও কর্মসংস্থান হবে। সারাবিশ্বে নার্সিং পেশার গুরুত্ব ও খ্যাতি বাড়ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বুধবার গাজীপুরের কাশিমপুরে ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজ’-এর দ্বিতীয় স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান-২০২৩ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা গ্রাজুয়েট হলেন, ডিগ্রি পেলেন, তাদেরকে জনগণকে সেবা দেয়ার কথা সব সময় মনে রাখতে হবে। একজন রোগী চিকিৎসা ও ওষুধে যতটা না সুস্থ হবে তার চেয়ে বেশি ও দ্রুত সুস্থ হবে ডাক্তারদের সহানুভূতি এবং নার্সদের সেবা পেয়ে।’
এ সময় খ্যাতনামা নার্স ও মানবসেবী ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কলেজের ২১০ জন স্নাতকের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন। তিনি ছয়জন স্নাতক শিক্ষার্থীকে তাদের অসামান্য একাডেমিক রেকর্ডের জন্য ‘প্রাইম মিনিস্টার্স অ্যাওয়ার্ড’ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটি অ্যানালিটিক প্রতিষ্ঠান ‘গ্যালাপ’-এর হিসাব অনুযায়ী ২০২১ সালের মতো আবারও ২০২২ সালে নার্সিংকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত পেশার খ্যাতি দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নার্সিং পেশাকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করেছে এবং প্রায় ৪০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে। তাছাড়া অভিজ্ঞতার জন্য চাকরির বয়সসীমাও শিথিল করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশ-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, সরকার দেশে প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার পর এখন বিভাগীয় পর্যায়েও মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করছে। পর্যায়ক্রমে সব বিভাগে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হবে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘পুরনো ২৩টি নার্সিং ইনস্টিটিউটকে নার্সিং কলেজে উন্নীত করে চার বছর মেয়াদি বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স ও পোস্ট বেসিক কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে। আরও ১৬টি নার্সিং ইনস্টিটিউটকে নার্সিং কলেজে উন্নীতকরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
‘সরকারি পর্যায়ে বর্তমানে ৬৯টি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা, বিএসসি বেসিক ও পোস্ট বেসিক এবং মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। নার্সিং ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড নার্সিং এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (নিয়েনার) প্রতিষ্ঠা করেছি।’
তিনি জানান, বর্তমানে দেশের সরকারি স্বাস্থ্য সেবায় ৪৪ হাজার ৫৩৪ জন নার্স ও মিডওয়াইফ কর্মরত। ২ হাজার ৩৬৭টি শূন্য পদের বিপরীতে সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান। এছাড়া ১০ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ৫ হাজার মিডওয়াইফের নতুন পদ সৃজন প্রক্রিয়াধীন আছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড নার্সিং কলেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তৌফিক বিন ইসমাইল এবং দ্বিতীয় ব্যাচের স্নাতক শিক্ষার্থী আনামুল হক।
স্নাতক বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কেপিজে হেলথকেয়ার বেরহাদের সভাপতি নরহাইজাম বিনতি মোহাম্মদ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ মল্লিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-২৩ এর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা করল বাংলাদেশের ব্রিটিশ কাউন্সিল ।
সোমবার ফুলার রোডে অবস্থিত ব্রিটিশ কাউন্সিল কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, উদ্যোক্তা ও কমিউনিটি লিডার হিসেবে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই সদস্যদের পুরস্কৃত করা হয়। যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, যারা নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্ব অর্জন করেছেন এবং যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে ভূমিকা রেখেছেন তাদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সরকারের প্রতিনিধি ও যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাই সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাওয়ার্ডের বিচারক প্যানেল চারটি বিভাগে বিজয়ী নির্বাচন করেন; বিভাগগুলো হলো: সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি অ্যাওয়ার্ড, কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি অ্যাওয়ার্ড, সোশ্যাল অ্যাকশন অ্যাওয়ার্ড এবং বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড। নবম বছরে এ অ্যাওয়ার্ডের জন্য বিশ্বের প্রায় ১শ’টি দেশ থেকে যুক্তরাজ্যের ১২০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইরা আবেদন করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, “এ বছরের স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত। আমরা আমাদের অ্যালামনাইদের জন্য অত্যন্ত আনন্দিত, যারা তাদের শিক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে পৌঁছেছেন, সামাজিক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছেন এবং তাদের আশেপাশের মানুষের জীবনের মানোনয়নে ভূমিকা রেখেছেন। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। আমরা যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উভয় দেশের প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করি এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে যে সংযোগ রয়েছে, তারাই এর প্রমাণ। সকল ফাইনালিস্ট এবং বিজয়ীদের আমার অভিনন্দন।”
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টম মিশসা বলেন, যারা যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছেন এবং দেশে ফিরে এসে বিজ্ঞান, ব্যবসা, সুশীল সমাজ ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রেখেছেন তাদেরকে এ পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। নির্বাচিত চার ফাইনালিস্টকে অভিনন্দন এবং যেসব অ্যালামনাই এ অ্যাওয়ার্ডে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের অ্যালামনাই আরিক আনাম খান কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ফোরকাস্ট ফিলমসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার।
সোশ্যাল অ্যাকশন পুরস্কার পেয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী কাজী হাসান রবিন। তিনি একাধারে অ্যাকাডেমিশিয়ান, গবেষক ও লেখক। তিনি ইয়ুথ লিডারশিপ কার্নিভাল ২০১৯ -এ ইয়ুথ এক্সেলেন্স পুরস্কার পেয়েছেন।
ইউনিভার্সিটি অফ বার্মিংহামের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. সামিউল মাহমুদ পেয়েছেন বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন পুরস্কার। তিনি অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব ব্যাংকের ফাইন্যান্স রিফর্মে সিনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি পুরস্কার পেয়েছেন ড. সাকিব আমিন। তিনি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এসেক্স এবং ইউনিভার্সিটি অব ডুরহামে অধ্যয়ন করেছেন। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য