বিশ্বে বর্তমানে আটজনের মধ্যে একজন অর্থাৎ ১০০ কোটির বেশি অভিবাসী রয়েছে। ২৮১ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক অভিবাসীসহ কয়েক মিলিয়ন রাষ্ট্রহীন রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য বেড়ে যাওয়া, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে। শরণার্থী ও অভিবাসীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষা এবং সব ধরনের চাহিদা পূরণে স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বনানী শেরাটনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), বাংলাদেশ আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলা হয়। ডব্লিউএইচও ঢাকায় শরণার্থী এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বার্ষিক গ্লোবাল স্কুলের তৃতীয় সংস্করণের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রস আধানম বলেন, ‘অভিবাসন এবং বাসস্থানের পরিবর্তন শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক বাধা এবং বৈষম্য সবই তাদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা দানের পথকেও বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’
তিনি বলেন, এই বাধাগুলো অতিক্রম করতে স্বাস্থ্যকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শরণার্থী এবং অভিবাসীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ‘ডব্লিউএইচও গ্লোবাল স্কুল’ স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যদিও সব শরণার্থী এবং অভিবাসীরা দুর্বল না। তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বৈষম্য থেকে দরিদ্র জীবনযাপন, আবাসন এবং কাজের পরিস্থিতির স্বীকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্থানীয় পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘স্বাস্থ্য এমন একটি মানবাধিকার যা সবার জন্যই মৌলিক। বিশেষ করে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের জন্য আরও বেশি। কারণ তাদের মধ্যে যারা ঝুঁকিতে রয়েছেন বা ইতিমধ্যেই পিছিয়ে রয়েছেন।’
প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল স্কুলের লক্ষ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সেসব দেশের সরকারের সহযোগিতায় দেশগুলোর শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো।
পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, ‘এই বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৭.১ মিলিয়নেরও বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যা ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩.৩ মিলিয়নে পৌঁছাতে পারে। ১৯৭৮ সাল থেকে দেশের কিছু মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা হয়। পাশাপাশি মিয়ানমারের নাগরিকদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। যাদের প্রত্যেকের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন। আর কক্সবাজারকে বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পগুলির মধ্যে একটি চিহ্নিত করা হয়েছে।’
স্থানীয় পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ শুধুমাত্র তাদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবাই দেয়নি। এর মধ্যে সম্প্রতি কোভিড টিকাও দিয়েছে। তবে ডব্লিউএইচও গ্লোবাল স্কুল প্রধান সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং আইনি দুর্বলতাগুলি দূর তরতে সমন্বিত চেষ্টা করছে।’
আরও পড়ুন:
নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে দেশের ২৮টি জেলায়। এ পরিস্থিতিতে রাজধানীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে ১০ বেডের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শেখ দাউদ আদনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার এ নির্দেশ দেয়া হয়।।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের ২৮ জেলায় নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ায় ডিএনসিসি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে ১০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং ১০ বেডের আইসিইউ প্রস্তুত রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।
২০০১ সালে দেশে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২০২২ সাল পর্যন্ত সরকারিভাবে ৩২৫ জনের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩০ জনের। গত বছর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজই মারা গেছেন।
সম্প্রতি সচিবালয়ে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত আটজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাসে মৃত্যুর হার শতকরা ৭০ শতাংশ।
১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়ায় প্রথম নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সংক্রমণের উৎস ছিল নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত অসুস্থ শূকর। নিপাহ ভাইরাস প্রাণী থেকে বিশেষ করে বাদুড় ও শূকর থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়ে থাকে।
আক্রান্ত বাদুড় কোনো ফল খেলে বা খেজুরের রস পান করলে এটির লালা, প্রস্রাব বা অন্যান্য বর্জ্য দিয়ে সরাসরি সেই ফল বা খেজুরের রস দূষিত হয়ে যায়। কেউ সেই ফল বা কাঁচা খেজুরের রস পান করলে তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া আক্রান্তের সরাসরি সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিও এতে আক্রান্ত হতে পারেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক শিশুকে ফেলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর থেকে শিশুটি হাসপাতালের পুরনো ভবনের ১১০ নম্বর ওয়ার্ড নার্সিং স্টেশনের পাশে বাথরুমের বারান্দায় ট্রলিতে পড়ে ছিল।
রাতে শিশুটিকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন হাসপাতাল ক্যাম্প পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। শিশুটির বয়স আনুমানিক ১০ বছর।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করার পর ঢামেক হাসপাতালের পরিচালকের নির্দেশে ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান ২০৮ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে তার রেফারেন্সে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।
ঢামেকে ডিউটিরত আনসার সদস্য (এপিসি) জামাল উদ্দিন বলেন, ‘দুপুর থেকে শিশুটি ওখানে ট্রলিতে পড়ে থাকার দৃশ্য আমাদের নজরে আসে। বার বার ঘুরে গিয়ে দেখি শিশুটির জন্য কেউ আসছে কী না।
পরে বুঝতে পারি প্রতিবন্ধী শিশুটিকে কেউ এখানে ফেলে চলে গেছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিষয়টি ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়াকে জানাই। ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হকের নির্দেশে পরে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি দেয়া হয়েছে।’
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রেই আলাদা প্র্যাকটিসের সুযোগ দেয়া হচ্ছে; নির্দিষ্ট অফিস সময়ের বাইরে আলাদাভাবে সেখানেই চেম্বার করে তারা রোগী দেখতে পারবেন।
সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১ মার্চ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইনস্টিটিউশনাল প্রাকটিস বিষয়ক সভায় তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের ডিউটি সময়ের বাইরে বিভিন্ন ক্লিনিক বা ফার্মেসিতে যেভাবে চেম্বার খুলে রোগী দেখতে হতো, সরকারি এই বিশেষ সুবিধার ফলে নিজ নিজ সরকারি কর্মস্থলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেম্বারে রোগী দেখতে পারবেন।
‘এ বিষয়ে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়েছে সরকার। কাজটি শুরু করতে দ্রুতই একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। দেশের মানুষের জন্য এই কাজের শুরু হবে মহান স্বাধীনতার মাস মার্চের শুরু থেকেই। এতে লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন ক্লিনিক, ফার্মেসিতে ডাক্তার দেখানোর ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে।’
সভায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এএইচএম এনায়েত হোসেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নিউরো হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
গত এক সপ্তাহে চীনের হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এ তথ্য জানায়।
সংস্থাটি জানায়, গত ১৩ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চীনা হাসপাতালে শ্বাসযন্ত্র বন্ধ হয়ে ৬৮১ জন ও অন্যান্য রোগে ১১ হাজার ৯৭৭ জন মারা গেছেন। মৃতরা সবাই করোনা পজিটিভি ছিলেন।
সংস্থাটি আরও জানায়, চীনে এরইমধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ নিয়ে চীনা সিডিসির প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ উ জুনিউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে বলেন, চলমান চন্দ্র নববর্ষের ছুটিতে মানুষের ব্যাপক যাতায়াত মহামারি ছড়িয়ে দিতে পারে, কিছু এলাকায় সংক্রমণ বাড়াতে পারে, তবে অদূরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় করোনার ঢেউ দেখার সম্ভাবনা নেই।
এর আগে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের অধীনস্থ ব্যুরো অব মেডিকেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান জিয়াও ইয়াহুই জানিয়েছিলেন যে, ডিসেম্বরের ৮ তারিখ থেকে জানুয়ারির ১২ তারিখ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫৯ হাজার ৯৩৮ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের ৯০ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের বেশি।
বিক্ষোভের মুখে গত মাসে কঠোর করোনা বিধি থেকে সরে আসে চীন। এর পর থেকেই দেশটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণ বড় পরিসরে বাড়তে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। কারণ দেশটি শুধু হাসপাতালে মারা যাওয়া করোনা রোগীদের সংখ্যাই প্রকাশ করছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে প্রথমবার মতো ‘ব্রেন ডেড’ রোগীর শরীরের দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
একটির ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। অন্যটি করেছে ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন।
বুধবার রাতে ২০ বছর বয়সী সারা নামের এক নারীর শরীর থেকে কিডনি দুটি দুজন নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন অফিসার সুব্রত মন্ডল।
হাসপাতালে অনেক ‘ব্রেন ডেড’ রোগী থাকেন, যাদের চিকিৎসা হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস ফ্লুইডের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে কিছুদিন চালু রাখা গেলেও তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে না।
কিডনি প্রতিস্থাপনের এই প্রক্রিয়াকে ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট বলা হয়। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল।
বিকেলে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে বলে জানান সুব্রত।
আরও পড়ুন:ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে পাঁচ হাজার শয্যায় উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এর বাস্তবায়ন শুরু হবে শিগগিরই।
দেশের আরও ৪৫ উপজেলায় বুধবার বেলা ১১টার দিকে কমিউনিটি ভিশন কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সরকারপ্রধান এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এর আগে আরও ৭০ উপজেলায় তিনি কমিউনিটি ভিশন কার্যক্রম উদ্বোধন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চিকিৎসা সেবার সঙ্গে গবেষণাও জোরদার করেছি। দেশের বড় বড় জেলাগুলোতে মেডিক্যাল করেছি। বিভাগগুলোতে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব। সেভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে।’
অনুষ্ঠানে চোখের চিকিৎসাকে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আই ভিশন সেন্টারগুলো আমরা উদ্বোধন করছি, তবে অন্যান্য সেবার সঙ্গে অবশ্যই চোখের চিকিৎসাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ আমাদের এই উদ্যোগের ফলে এখন অনেক অন্ধ মানুষের চোখের আলো ফিরে এসেছে।
‘এর মাধ্যমে উপজেলাগুলোতে হাসপাতালেই সব ধরনের চোখের সমস্যায় রোগীরা সেবা নিতে পারবেন বলে আশা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগে ৭০টি এবং আজ ৪৫টি উপজেলায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করলাম। লোকজন যেন সহজে হাসপাতালে আসতে পারেন, সে জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করে দিয়েছি।
‘আমরা চাই হাসপাতালগুলোতে রোগীর সেবা আরও যেন বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সহায়তা করতে হবে।’
সরকার সফলভাবে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেয়ায় করোনায় মৃত্যু কম হয়েছে। আমরা সাহস করে টিকা এনেছিলাম। বিনা মূল্যে মানুষকে টিকা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে দেশের হাসপাতালগুলোতে বেড ছিল ৩৮ হাজার। এটি ৬৭ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটসহ প্রতিটি ইনস্টিটিউট আওয়ামী লীগের সময়ে প্রতিষ্ঠিত।
‘শিশু হাসপাতাল প্রতিটি বিভাগে হওয়া উচিত। শিশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে ট্যাক্স তুলে নেয়া হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনায় ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছি।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজকে ৫ হাজার শয্যায় উন্নীত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ৫ হাজার শয্যায় উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে। করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে শুরু করতে পারিনি, তবে শিগগিরই করে ফেলব।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ অনেকে।
কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে দেশের সাত বিভাগের ৩৯ জেলার ১৩৫ উপজেলায় সমন্বিত চক্ষু চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হয়েছে। এতে দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবার আওতায় আসবে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী বেড়ে গেছে সারের দাম। এ সংকট মলমূত্র দিয়ে নিরসন করা যেতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
এ সংশ্লিষ্ট একটি গবেষণা সোমবার ফ্রন্টিয়ার্স ইন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশ হয়েছে। এতে বলা হয়, মলমূত্র থেকে তৈরি সার মানুষের জন্য নিরাপদ। ওষুধ থেকে মানুষের শরীরে যাওয়া রাসায়নিক পদার্থ খুব কম মাত্রায় এ সারের মাধ্যমে খাদ্যে প্রবেশ করবে।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর গ্যাসের দাম যাওয়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সার উৎপাদনে হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প উপায় খুঁজছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
গবেষকরা ৩১০টি রাসায়নিক দ্রব্যের খোঁজে মানুষের মলমূত্রে পরীক্ষা করেছেন। এতে দেখা যায়, মাত্র সাড়ে ছয় শতাংশ রাসায়নিক দ্রব্য শনাক্ত করা গেছে এবং এগুলোর ঘনত্বও কম ছিল।
এ নিয়ে গবেষণায় বলা হয়, ওষুধের রাসায়নিক যৌগগুলো মলমূত্রের সার হয়ে খাবারে প্রবেশ করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য কম ঝুঁকির।
এদিকে গবেষণায় বাঁধাকপির ভেতর দুটি ওষুধের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে একটি হলো ব্যথানাশক আইবুপ্রোফেন ও মৃগী রোগের ওষুধ কার্বামাজেপাইন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, একটি কার্বামাজেপাইন ট্যাবলেটের কাজ করতে পারে প্রায় পাঁচ লাখ বাঁধাকপি।
গবেষণার প্রধান লেখক আরিয়ান ক্রাউস বলেন, ‘মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রস্তুত হলে জার্মানিতে ২৫ শতাংশ কৃত্রিম খনিজ সারের পরিবর্তে মানুষের মলমূত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য