দেশে লো কমোড বা প্যান কমোডকে সরিয়ে দিন দিন বাড়ছে হাই কমোডের ব্যবহার। মানুষের আর্থিক সামর্থ্য এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে উঁচু কমোড। তবে গ্রামে এখনও লো কমোডের প্রচলন বেশি।
টয়লেট এবং টাইলস সামগ্রী বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, লোকে এখন বাড়ি তৈরি করলে বাজেটের একটা বড় অংশ টয়লেটের পেছনে ব্যয় করে। আর প্রতিটি ফ্ল্যাটবাড়িতে একটির জায়গায় এখন দুই থেকে তিনটি টয়লেট থাকে, যেগুলোর বেশির ভাগে হাই কমোড যুক্ত করা হয়।
হাই ও লো কমোডের মধ্যে কোনটি বেশি স্বাস্থ্যসম্মত– এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার তাহমিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, টয়লেটের প্যান অথবা কমোড দুটোই স্বাস্থ্যসম্মত। আসলে টয়লেটের যেটাতে পানি আটকে থাকে, সেটাই স্বাস্থ্যসম্মত। কারণ পোকামাকড়, মাছি এই পানিতে থাকা টয়লেট বর্জ্যের ওপর বসতে পারে না।
আজ ‘বিশ্ব টয়লেট দিবস’। ২০০১ সালে বিশ্বে টয়লেট ব্যবহার ও স্যানিটাইজেশন সম্পর্কে ক্যাম্পেইন শুরু করে ওয়ার্ল্ড টয়লেট অরগানাইজেশন (ডব্লিউটিও)। এরপর থেকে প্রতিবছর ১৯ নভেম্বর পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব টয়লেট দিবস। ২০১৩ সাল থেকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিবসের স্বীকৃতি দেয়। দিনটির উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবহারে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য শৌচাগারের সুবিধা নিশ্চিত করা।
শতভাগ টয়লেট সুবিধা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দিবসটি পালন করে থাকে। বাংলাদেশেও আজ দিবসটি পালিত হচ্ছে।
টয়লেট বা স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বেশি। ভারতে যেখানে প্রায় অর্ধশত কোটি মানুষের টয়লেট নেই, সেখানে বাংলাদেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ বাড়িতেই টয়লেট রয়েছে।
টয়লেট এখন দ্রুত বিকাশমান শিল্প
একসময় দেশে আধুনিক টয়লেট তো দূরের কথা, সাধারণ মানের টয়লেটও মানুষ ব্যবহার করত না। সেই দিন এখন পাল্টেছে। দেশে এখন ৭০ শতাংশ মানুষ মোটামুটি ভালো মানের টয়লেট ব্যবহার করে।
দেশে টয়লেট সামগ্রীর শিল্প এখন ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। আগে এটি আমদানিনির্ভর থাকলেও এখন পুরোপুরি স্বনির্ভর। বাংলাদেশ এখন টয়লেট সামগ্রী রপ্তানিও করছে।
রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত টয়লেট সামগ্রীর দোকান কেলিফ সিরামিক। এর ম্যানেজার ওয়াদুদ বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, দেশে এই ব্যবসা দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশির ভাগ পণ্য এখন দেশেই উৎপাদন হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশে লো কমোডের দাম দুই-তিন হাজার থেকে শুরু হয়। আর হাই কমোডের দাম ছয়-সাত হাজার থেকে শুরু করে এক-দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে ১৫-২০ হাজারের মধ্যেই মানুষ বেশি কেনে।
বাংলাদেশ টাইলস ডিলারস অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম ইউ গোলাম রাসুল বেলাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে দেশের বেশির ভাগ মানুষ কোনো টয়লেটই ব্যবহার করত না। আর যারা ব্যবহার করত, তারা সিমেন্টের তৈরি লো কমোড ব্যবহার করত। কবে থেকে সিরামিকের কমোড দেশে ব্যবহার শুরু হয়, সেটা আমি বলতে পারব না। তবে আমার ধারণা ৯০ দশকের পর থেকে দেশে হাই কমোড ব্যবহার শুরু হয়। সে সময় দেশের ধনীরা বিদেশ থেকে এই কমোড আমদানি করে ব্যবহার করত। কিন্তু তখন এর চাহিদা ছিল খুবই কম।
‘সেই দিন আর নেই। এখন মানুষ বাড়ি তৈরিতে সবচেয়ে বেশি খরচ করে টয়লেটে। আগে যেখানে কয়েকটি পরিবারের জন্য একটি টয়লেট ছিল, এখন সেখানে প্রতিটা ফ্ল্যাটেই ২-৩টা টয়লেট থাকে। এর বেশিও থাকে।’
তিনি আরো জানান, শহরগুলোতে এখন লো-কমোডের ব্যবহার কমছে। হাই কমোডের ব্যবহার বেশি। শহরের একটা ফ্ল্যাটে তিনটা টয়লেট থাকলে দুটা থাকে হাই কমোড। আর একটা হয় লো কমোড। অনেক সময় তিনটাই হাই কমোড হয়। গ্রামে লো কমোডের ব্যবহার বেশি।
তিনি আরও জানান, টয়লেট পণ্যের বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে। মানুষের রুচিও বাড়ছে। এখন মানুষ দোকানে এসে ভালো মানের কমোড কিনতে চায়। আগে যেখানে কোনো রকম একটা কমোড হলেই হতো, সেখানে এখন মানুষ দৃষ্টিনন্দন পণ্য খোঁজে। আগে যেখানে জেলা শহরে এক-দুইটা টয়লেট পণ্যের দোকান ছিল, এখন সেখানে শতাধিক দোকান।
স্যানিটেশনে বিপ্লব
খোলা জায়গায় মলত্যাগের হার দুই দশক ধরে বাংলাদেশে কমেছে। ২০২২ সালে প্রকাশিত জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের ১ দশমিক ২৩ শতাংশ মানুষ এখনও খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে। দেশের আট বিভাগের মধ্যে রংপুর বিভাগে খোলা জায়গায় মলত্যাগের হার সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে, শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ।
আগের তুলনায় উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ বন্ধ হলেও মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখন স্যানিটেশনের নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার তাহমিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, দেশে শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো যাদের যথাযথ টয়লেট নাই, তাদের টয়লেটের ব্যবস্থা করা। এরপর আসবে গ্রাম আর শহরে টয়লেট বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা। টয়লেট ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো। কিন্তু টয়লেট ব্যবহার করেও যদি সেই বর্জ্য খাল, নদী ও পরিবেশে মিশে গিয়ে দূষণ সৃষ্টি করে, তাহলে সেই টয়লেট ব্যবহার সুফল বয়ে আনে না। তাই নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা আরেকটি চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ‘এটা করতে গেলে শহরাঞ্চলে দুটো জিনিস লাগবে। একটা হলো নিরাপদ স্যানিটেশনের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা। যেখানে একটি টয়লেটের সাথে যথোপযুক্ত একটা কনটেইনমেন্ট ব্যবস্থা থাকবে। অর্থ্যাৎ সেফটিক ট্যাংক বা পিট থাকবে। আর দ্বিতীয় হলো শহরে একটা বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টসহ সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকবে। বর্তমানে বাংলাদেশের হাতে গোনা কয়েকটি শহরে এ ধরনের ব্যবস্থা আছে। সরকারি পরিকল্পনায় এক শর ওপরে শহরে শিগগিরই বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু হবে। সে ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনগুলোয় কনটেইনমেন্ট থেকে প্ল্যান্টে আসা পর্যন্ত সঠিক ব্যবস্থাপনা আছে।
‘এখনও অসংখ্য শহর এই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের বাইরেই রয়ে গেছে। এইগুলো যতক্ষণ আমরা করতে পারব না, ততক্ষণ আমাদের চ্যালেঞ্জটা রয়েই যায়। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ৩৩৭টি শহরেই এ ব্যবস্থাপনা করা দরকার।’
ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যান্সার-এরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।
এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। ক্যাম্পেইন-এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ ও সেশন। এর বাইরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের নারীদের জন্য সহজে ও সুলভ মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহরে সুবধর্িাথরে জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে ফ্রেশ অনন্যা।
ফ্রেশ অনন্যা-ই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র স্যানিটারি ন্যাপকিন, যাতে রয়েছে ডাবল লেয়ারড অ্যাডভান্সড অ্যাবজর্পশন টেকনোলজি। সুবিধা ও উপযোগিতার কথা বিবেচনায় রেখে, ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এ ব্যবহার করা হয়েছে এয়ারলেইড পেপার এবং এডিএল লেয়ার। যা নিশ্চিত করে আরও দ্রুত শোষণ এবং সুরক্ষা। তাই পিরিয়ডের দিনগুলো কাটে আরও বেশি স্বস্তিতে।
ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ইত্যাদি।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:
মন্তব্য