ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একজন শিক্ষার্থীর বাবার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনে ১৯৭৭ সালের ২ নভেম্বর স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অধ্যাপক ডা. আবদুল কাদেরের সহযোগিতা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানীর উদ্যোগে সে কর্মসূচিতে রক্তদান করেন মেডিক্যাল কলেজের ২৭ শিক্ষার্থী।
সন্ধানীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইদ্রিস আলী মঞ্জু সর্বপ্রথম রক্তদান করেন। আর নারীদের মধ্যে প্রথম রক্ত দেন মেডিক্যালের তৃতীয় বর্ষের হোসনে আরা লাকী। স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির শুরু সেই থেকে; দেশজুড়ে এখন যার বিস্তৃতি।
দিনটি স্মরণে প্রতি বছরের ২ নভেম্বর জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্ত ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালন করা হচ্ছে। ১৯৯৬ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে।
স্বেচ্ছায় রক্তদান জোরদার হওয়ার পরও সংকট
দেশে বছরে প্রায় ৮ থেকে ৯ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। বিপরীতে সংগৃহীত হয় ৬ থেকে সাড়ে ৬ লাখ ব্যাগ। বর্তমানে সন্ধানী, বাঁধনের মতো বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রক্ত সংগ্রহ কার্যক্রম চালালেও বছরে প্রায় তিন লাখ ব্যাগ রক্তের ঘাটতি থাকে।
সংগৃহীত রক্তের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ আসে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের কাছ থেকে। একজন রক্তদাতা রক্ত দেয়ার মাত্র দুই-এক দিনের মধ্যেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। একবার রক্ত দিলে শরীর থেকে যে আয়রনের ঘাটতি হয়, সেটিও পূরণ হয়ে যায় কয়েক দিনের মধ্যে।
সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি হাসিবুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিনই আমাদের রক্তদান কর্মসূচি চলছে। আমরা পাঁচটি পরীক্ষা—সিফিলিস, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, ম্যালেরিয়া এবং এইচআইভি টেস্ট করে সব ঠিক থাকলে সেই রক্ত সংগ্রহ করি। এই টেস্ট ছাড়া কারও রক্ত নেয়া হয় না।’
তিনি জানান, সারা দেশে সন্ধানীর ৩৪টি ইউনিট রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে প্রতিটি ইউনিটে ২০ থেকে ৩০ জন রক্তদান করেন।
হাসিবুল হক বলেন, ‘আমরা যে রক্ত সংগ্রহ করি, চাহিদা তার চেয়ে অনেক বেশি। প্রতিটি হাসপাতালে প্রতিদিন সার্জারি হচ্ছে। প্রায় সব সার্জারিতেই রক্ত লাগে। আবার প্রায় সব থ্যালাসেমিয়া রোগীকে প্রতি মাসে রক্ত দিতে হয়। তারা সন্ধানীর দিকে তাকিয়ে থাকে।
‘বিশেষ করে যে গ্রুপগুলো অর্থাৎ নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত কম পাওয়া যায়। রক্তদানে মানুষের আগ্রহ রয়েছে, তবে চাহিদা অনুযায়ী রক্ত পাওয়ার সংখ্যা অনেক কম।’
বাঁধনের সভাপতি মো. নাহিদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ২৫ বছর ধরে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছি। এ পর্যন্ত ১০ লাখ মানুষের স্বেচ্ছায় দেয়া রক্ত সংগ্রহ করেছি এবং ২১ লাখ মানুষকে বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের ৫৩টি জেলায় সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমাদের ১৪২টি ইউনিট আছে। প্রতিটি ইউনিটে গড়ে প্রায় ২০০ জন স্বেচ্ছায় রক্ত দিচ্ছেন, তবে আমরা এখনও পুরোপুরি চাহিদা পূরণ করতে পারিনি।
‘নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত যাদের, তাদের একটি ডেটা আছে আমাদের কাছে। তা ছাড়া আমরা একটি অ্যাপ চালু করতে যাচ্ছি, যেখানে সব গ্রুপের তথ্য পাওয়া যাবে।’
অন্ধত্বের শিকার ৫ লাখ, বছরে কর্নিয়া মেলে ৩০টি
স্বেচ্ছায় রক্তদানে দেশ অনেকটা এগিয়ে গেলেও মরণোত্তর চক্ষুদান পরিস্থিতি নাজুক পর্যায়ে। মরণোত্তর চক্ষুদানকে উৎসাহ দিতে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা হয় সন্ধানী চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষু ব্যাংক।
সংগঠনের সাবেক মহাসচিব ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথম মরণোত্তর চক্ষুদান কর্মসূচি শুরু করে সন্ধানী। ১৯৮৪ সালের ২৫ নভেম্বর শ্রীলঙ্কার একজন ডাক্তার হার্সন সিলভা বাংলাদেশে আসেন।
‘তিনি মরণোত্তর চক্ষুদানের বিষয়ে আন্দোলন করেছিলেন। ডা. হার্সনই প্রথম রংপুরের টুনটুনি নামের একটি মেয়ের চোখে কর্নিয়া সংযোজন করেন।’
শুরুর দিকের প্রায় দেড় দশক বেওয়ারিশ মরদেহ থেকেই মূলত কর্নিয়া সংগ্রহ করা হতো জানিয়ে তিনি বলেন, এখন সেই পরিস্থিতি বদলে গেছে। ফলে তৈরি হয়েছে তীব্র সংকট।
ডা. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘মৃত্যুর ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে কর্নিয়া সংগ্রহ করতে হয়। শুরুর দিকে বেওয়ারিশ লাশের দাবিদার পাওয়া যেত না। কারণ তখন প্রযুক্তি উন্নত ছিল না। এখন বেওয়ারিশ লাশ পাওয়ার সংখ্যা খুব কম।’
১৯৯৯ সালে প্রণীত ‘মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন’-এ বেওয়ারিশ মৃতদেহ ঘোষণার সময়সীমা বাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টা করায় এ ধরনের মৃতদেহ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ আর সম্ভব হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।
এই আইনের ৪ (গ) ধারায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তির ব্রেন ডেথ ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনো দাবিদার না থাকলে ব্রেন ডেথ ঘোষণাকারী হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্তৃত্ব পালনকারী ব্যক্তি ধারা ৫ এর বিধান সাপেক্ষে দেহ হতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অন্য কোনো ব্যক্তির দেহে সংযোজনের উদ্দেশ্যে বিযুক্ত করতে পারবেন।
এ ধরনের অবস্থায় মরণোত্তর চক্ষুদান কার্যক্রমের ওপর জোর দিয়ে ডা. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাদের মূল যে বিষয়ে নজর দিতে হবে সেটি হলো মরণোত্তর চক্ষুদান করা ব্যক্তির মৃতদেহ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ। এই বিষয়ে আইনে অনুমতি রয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিবারের সহযোগিতায় এটির প্রচলন বাড়ানো সম্ভব।’
দেশে বর্তমানে অন্ধত্বের শিকার ব্যক্তি ৫ লাখ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর নতুন করে ৩০ হাজার এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে। অথচ প্রতি বছর আমরা মাত্র ২০ থেকে ৩০টি কর্নিয়া পাচ্ছি। তাও এর মধ্যে অনেক বিদেশ থেকে আনা হয়।
‘চাহিদার তুলনায় এটি একেবারেই অপ্রতুল। এভাবে চলতে থাকলে দেশে অন্ধত্ব দূর করতে ১০ হাজার বছর লেগে যাবে।’
সন্ধানী ১৯৮৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের মতো কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেছে বলেও জানান তিনি।
চক্ষুদানের পাশাপাশি মরণোত্তর দেহদানের ওপরও জোর দেন ডা. জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে উৎসাহিত করা গেলে একটি মানুষের শরীরের বিভিন্ন অরগান নিয়ে আটজন মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।’
চোখে কর্নিয়া সংযোজন পরিস্থিতি জানতে চাইলে ধানমন্ডির বাংলাদেশ আই হসপিটালের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের মধ্যে আমাদের হাসপাতালেই সবচেয়ে বেশি কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। যেমন: আজই পাঁচটি করা হবে, তবে এগুলোর সবই আমেরিকা থেকে আনা।’
একটি কর্নিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনতে প্রায় এক হাজার ডলার বা প্রায় এক লাখ টাকা লাগে বলে জানান ডা. আমিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের খরচসহ প্রায় দেড় লাখ টাকায় পুরো সংযোজন প্রক্রিয়া শেষ করা যায়।’
দেশে মরণোত্তর চক্ষুদান সেভাবে কার্যকর না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেকেই চক্ষুদানের জন্য ফরম পূরণ করে যান, কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর কেউ যোগাযোগ করে না। এখানে পরিবারের একটি আবেগ কাজ করে। আবার অনেক সময় সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্নিয়া সংগ্রহ করাও সম্ভব হয় না।
‘এ ক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। যেসব সংস্থা কাজ করছে তাদের প্রচারণা বাড়ানো। মনে রাখতে হবে, একটি মৃতদেহ থেকে আরেকটি প্রাণ বাঁচতে পারে। এটাও কিন্তু একটা আবেগের জায়গা। এটা মানুষকে বোঝাতে হবে।’
আরও পড়ুন:ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যান্সার-এরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।
এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। ক্যাম্পেইন-এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ ও সেশন। এর বাইরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের নারীদের জন্য সহজে ও সুলভ মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহরে সুবধর্িাথরে জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে ফ্রেশ অনন্যা।
ফ্রেশ অনন্যা-ই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র স্যানিটারি ন্যাপকিন, যাতে রয়েছে ডাবল লেয়ারড অ্যাডভান্সড অ্যাবজর্পশন টেকনোলজি। সুবিধা ও উপযোগিতার কথা বিবেচনায় রেখে, ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এ ব্যবহার করা হয়েছে এয়ারলেইড পেপার এবং এডিএল লেয়ার। যা নিশ্চিত করে আরও দ্রুত শোষণ এবং সুরক্ষা। তাই পিরিয়ডের দিনগুলো কাটে আরও বেশি স্বস্তিতে।
ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ইত্যাদি।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:
মন্তব্য