শীতের আগে আগে ডেঙ্গুর যে বিস্তার, তাতে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর রোগটিতে মৃত্যু হয়েছে মোট ১২৩ জনের। বাংলাদেশে এর চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ২০১৯ সালে।
এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ৮৯৯ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ৪৯১ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪০৮ জন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বর্তমানে সারা দেশে ৩ হাজার ৪৮০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৫৩টি হাসপাতালে ২ হাজার ২৫০ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ২৩০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৪ হাজার ৮২২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪ হাজার ৯৩ জন এবং ঢাকার বাইরে সারা দেশে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৭২৯ জন।
একই সময়ে সারা দেশে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ৩১ হাজার ২১৯ জন। এর মধ্যে ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২১ হাজার ৭৭২ জন এবং ঢাকার বাইরে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন ৯ হাজার ৪৪৭ জন।
সাধারণত বর্ষাকালে ডেঙ্গুর বিস্তার হলেও চলতি বছর বর্ষা শেষে সেপ্টেম্বরে রোগটির প্রকোপ দেখা যায়। অক্টোবরের মাঝামাঝি রোগটি নির্মূল হয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস ছিল বিশেষজ্ঞদের। তবে দেখা যাচ্ছে, এই মাসেই রোগটির বিস্তার বেশি হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে ৯ হাজার ৯১১ রোগীর পর অক্টোবরের ২৭ দিনে রোগী পাওয়া গেল ১৮ হাজার ৭৩০ জন। এই মাসে কখনও এত বেশি রোগী পাওয়া যায়নি এর আগে।
চলতি বছর রোগীর মতো অক্টোবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুতেও হয়েছে রেকর্ড। গত ২৭ দিনে মারা গেছে মোট ৬১ জন, যা বছরে মোট মৃত্যুর প্রায় অর্ধেক।
আরও পড়ুন:সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে সুচিকিৎসাসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘নিরাপদ হাসপাতাল চাই’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার মানববন্ধনে এ দাবি করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তাদের একজন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও সব নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারিনি। অনেকে অর্থের অভাবে এখনও চিকিৎসা করাতে পারছে না। সঙ্গে ভুল ও অপচিকিৎসার শিকার তো নিত্যদিনের বিষয়। ডাক্তার থাকলে ওষুধ থাকে না; ওষুধ থাকলে ডাক্তারের দেখা মেলে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবতা হলো চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশের ২৪ শতাংশ পরিবার বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে এ হার সবচেয়ে কম ভুটানে।’
পাঁচ দফা দাবি
১. দালালমুক্ত ও রোগীবান্ধব হাসপাতাল গড়ে তোলা।
২. জেলা সদরের হাসপাতালগুলোতে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) স্থাপনসহ সব পরীক্ষা সেবা নিশ্চিত করে আসন বাড়ানো।
৩. রোগী ও চিকিৎসকদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪. হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা নিশ্চিত করা।
৫. পরীক্ষা ফি ও ওষুধের মূল্য নির্ধারণ।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ হাসপাতাল চাইয়ের সমন্বয়ক এফ. এ. শাহেদ, সহসমন্বয়ক শাহরিয়ার সোহাগ, সদস্য সালেকুজ্জামান রাজিব, আহসান হাবিব সবুজ, ইঞ্জিনিয়ার ফকর উদ্দিন মানিকসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:সারা দেশে ২০২২ সালে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ৪৪৬ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে জানিয়ে আঁচল ফাউন্ডেশন বলেছে, তাদের বেশির ভাগ অভিমান থেকে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে।
আত্মহত্যা নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির ‘স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা: সমাধান কোন পথে’ শীর্ষক সমীক্ষায় বিষয়টি উঠে এসেছে।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার সমীক্ষা প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আঁচল ফাউন্ডেশন। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট শাহরিনা ফেরদৌস এবং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ।
আঁচল ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের দেড় শতাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থকে শিক্ষার্থীদের আত্মহননের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে গত বছর স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের আত্মহত্যাকারী ৪৪৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে স্কুল ও সমমান পর্যায়ের রয়েছে ৩৪০ জন। কলেজ ও সমমান পর্যায়ে ১০৬ শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নেন, যাদের মধ্যে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ৫৪ জন।
এতে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৮৫ ছাত্রী ও ১৬১ ছাত্র রয়েছে। একই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন।
আত্মহত্যার কারণ নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে মান-অভিমান থেকে সবচেয়ে বেশি আত্মহননের ঘটনা ঘটেছে। ২৭.৩৬ শতাংশ স্কুল ও কলেজশিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে অভিমান করে। তাদের বড় অংশেরই অভিমান ছিল পরিবারের সঙ্গে।
এর বাইরে প্রেমঘটিত কারণে ২৩.৩২ শতাংশ, পারিবারিক কলহে ৩.১৪ শতাংশ, হতাশায় ২.০১ শতাংশ, মানসিক সমস্যায় ১.৭৯ শতাংশ, আর্থিক সমস্যায় ১.৭৯ শতাংশ, উত্ত্যক্ত, ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে ৩.১৩ শতাংশ স্কুল ও কলেজশিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে বলে সমীক্ষায় উঠে আসে।
আরও পড়ুন:নিয়মিত জিমে যাওয়া ও পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণসহ স্বাস্থ্য রক্ষার সব নিয়ম মানার পরও শুকিয়ে যাচ্ছিলেন আবিদ ও সেজান (ছদ্মনাম)। অথচ তাদের বয়স যথাক্রমে ২২ ও ২৫ বছর। এক পর্যায়ে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হয়ে তারা জানতে পারলেন কারণটা।
স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি মাসলম্যান হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নিয়মিত জিমে যাওয়াটাই তাদের জন্য কাল হয়েছে। জিমে অতিরিক্ত স্টেরয়েড ব্যবহারের কারণে তারা লিভার এনজাইম ও হরমোনাল ইমব্যালেন্স-এর মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
তাদের একজনের লিভার এনজাইমের মাত্রা অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে গেছে। আরেকজনের টেস্টোস্টেরন হরমোন উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। সাধারণত এই বয়সে এমন শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার কথা নয়।
জিমে গিয়ে স্টেরয়েড সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক বয়সে না নেয়ায় তাদের আচরণে অস্বাভাবিকতা চলে আসে। পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি ধরতে পারেন। কারণ জিম করেও তারা শুকিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশেষে চিকিৎসার জন্য এই দুই তরুণকে ঢাকায় আনা হয়।
রাজধানীর গ্রীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ডা. রায়হান শহীদুল্লাহ বলেন, এই দুই তরুণ এখনও পুরোপুরি রিকভার করে উঠতে পারেনি। আর এই শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল।
ডা. রায়হান বলেন, ‘স্টেরয়েড সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হলো চিকিৎসকরা বিভিন্ন রোগ বুঝে প্রেসক্রাইব করেন। আর জিমে যে স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয় তা আর্টিফিসিয়াল বডি বিল্ডিংয়ের জন্য।
‘বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো এই স্টেরয়েড উৎপাদন করে না। এগুলোর বেশিরভাগই চীন থেকে আনা হয়। প্রতিবেশী ভারত থেকেও নিয়ে আসা হয়।’
তিনি বলেন, ‘এই স্টেরয়েড প্রেসক্রাইব করার কোনো অথেনটিসিটি নেই। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে জিমে সাপ্লিমেন্ট দেয়া যায়। তবে কোনো চিকিৎসকই বডি বিল্ডিংয়ের জন্য স্টেরয়েড প্রেসক্রাইব করেন না। কারণ এর কোনো অনুমোদন নেই। এগুলোর বেশিরভাগই আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রাগ।
‘কোনো ফার্মেসিতেও এটা পাবেন না। দুই-একটা পাওয়া গেলেও সেটা নির্দিষ্ট কোনো রোগ যেমন ব্রেইন ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার- এসব ক্ষেত্রে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর এগুলো খুবই ব্যয়বহুল। আবার চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র কোনো ফার্মেসি বিক্রিও করবে না।’
পার্শপ্রতিক্রিয়া
স্টেরয়েডের প্রধান কাজ হলো মাসল বৃদ্ধি। জিমে নিয়মিত ব্যায়াম করে এক বছরে যেটুকু মাসল বাড়ানো যায় সেটা স্টেরয়েড ব্যবহার করে দুই বা তিন মাসেই করা সম্ভব। এর বড় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো, শরীরে প্রাকৃতিকভাবে যে হরমোন তৈরি হয় সেটা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ছেলেদের ক্ষেত্রে দেখা গেল, টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরিই বন্ধ হয়ে গেল। তখন নানাভাবে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে শরীরে। যদি মেইল হরমোন অর্থাৎ ছেলেদের হরমোনই তৈরি না হয় সে ক্ষেত্রে তো ওই মানুষটি পুরুষের মতো আচরণই করবে না। তখন প্রজনন ক্ষমতার ক্ষেত্রেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এছাড়া পরিমাণ না বুঝে স্টেরয়েড ব্যবহারে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হার্ট ফেইলিউরও হতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে দেখা যায়, অনেক বডি বিল্ডার কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাচ্ছে। স্টেরয়েডের অস্বাভাবিক ব্যবহার এর অন্যতম একটি কারণ।
তাহলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না জেনেই কি জিমে স্টেরয়েডের ব্যবহার হচ্ছে- এমন প্রশ্নে ডা. রায়হান শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বছর দশেক আগেও মানুষ এ বিষয়ে তেমন একটা জানত না। অনেকে এগুলোকে সাপ্লিমেন্ট মনে করত। তিন/চার বছর ধরে মানুষ কিছুটা হলেও জানতে পারছে।
‘সঠিক নিয়মে জিম না করলে জয়েন্টে ইফেক্ট পড়তে পারে। লিগামেন্ট ছিঁড়ে যেতে পারে। এমনকি অপারেশন পর্যন্ত করতে হতে পারে।
‘তাই স্টেরয়েড নিলেও চার সপ্তাহ পর তা বন্ধ করে দিতে হবে। হরমোনাল ব্যালান্স আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য ‘Post Cycle Therapy’ দিতে হয়।
অলি-গলিতে জিম, নেই প্রশিক্ষক
রাজধানী ঢাকা তো বটেই, দেশের বিভাগ, জেলা এমনকি উপজেলা সদর পর্যায়েও গড়িয়ে উঠেছে জিম। এর সঠিক পরিসংখ্যান স্বাস্থ্য খাত-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও জানে না।
ফিটনেস সেন্টার হিসেবে পরিচালিত এসব জিমে নেই সার্টিফিকেটধারী কোনো প্রশিক্ষক। ফলে এসব জায়গায় স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য গিয়ে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত সেবাটা পাচ্ছেন না। উপরন্তু মাত্রাজ্ঞান ছাড়া স্টেরয়েডের ব্যবহারে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন জটিল রোগে।
ট্রেনিং-এর বিষয়ে মিস্টার বাংলাদেশ এবং ফিটনেস কোচ সাকিব নাজমুস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মালয়েশিয়া থেকে ছয় মাসের একটি ট্রেনিং নিয়েছি। সব জিমে ট্রেনার নেই, আবার জিম করতে করতে অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে ট্রেনার হয়ে যায়। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা তাদের নেই। এর অবশ্য একটি বড় কারণ, জিমে ট্রেনিং দেয়ার মতো কোনো প্রতিষ্ঠানই দেশে নেই।’
তিনি বলেন, ‘স্টেরয়েড ব্যবহারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অবশ্যই থাকে। তবে সমস্যাটা হয় এটা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার করলে। স্টেরয়েড ব্যবহার করতে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। সর্বোচ্চ ৫ মাস এর ব্যবহার করা যেতে পারে। আর মঞ্চে পারফর্ম করার মতো কোনো বিষয় যদি না থাকে তাহলে আমি সাজেস্ট করব স্টেরয়েড ব্যবহার থেকে দূরে থাকা। এর ব্যবহারকে আমি নিরুৎসাহিত করতে চাই।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই স্টেরয়েড ব্যবহারের সাজেস্ট করি না, যদি না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি প্রতিযোগিতায় যায়।
‘এটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নিলে আবার রিমুভ করা যায়। এর জন্য কিছু মেডিসিন ও ইনজেকশন আছে। তবে সেটারও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। ওজন কমানো বা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলেও স্টেরয়েড আসলে কোনোভাবেই অনুমোদিত নয়।’
প্রতিরোধ
ডা. রায়হান বলেন ‘প্রতিটি জিমে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করা যেতে পারে। বাংলাদেশে বডি বিল্ডিংয়ের প্রচলন বেড়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যগত সচেতনতা সৃষ্টিতে মিডিয়ারও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা দরকার। কারণ হুজুগে গা ভাসালে হবে না। এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কেও সবার জানা থাকা দরকার।
সবচেয়ে বড় কথা, যেহেতু স্টেরয়েডের ব্যবহার শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, তাই জেনেশুনে কারও এটা ব্যবহার করা উচিত নয়। জিম চলবে শারীরিক সুস্থতার জন্য। মাসলম্যান বানানোটা এর উদ্দেশ্য হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ, মিডিয়া, অভিভাবক- সবাইকে বুঝতে হবে স্টেরয়েড ব্যবহার করলেই স্বাস্থ্যবান থাকা যাবে না। বাহ্যিক দৃষ্টিতে হেলদি মনে হবে এটুকুই। তাই এটার ব্যবহার থেকে দূরে থাকাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।’
যা বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জিমগুলোতে যথেচ্ছ ব্যবহার ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে দেশের স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বড় কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোনো খোঁজখবর রাখে না।
নিউজবাংলার পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমনটা জানা গেছে। একইসঙ্গে তারা বলেছেন, এখন থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জিমে স্টেরয়েডের ব্যবহার হয় এটি আমি ভাবতেই পারি না। স্টেরয়েড সাধারণত চিকিৎসকরা বিশেষ কিছু রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করেন। মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য চিকিৎসককে যখন কোনো জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয় তখন রোগীকে বাঁচানোর জন্য স্টেরয়েড দেয়া হয়।
বিষয়টি জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘আমি জিমে খোঁজ নেব। এটি তো হতে পারে না। বডি বিল্ড ন্যাচারালি হয়। মাসল বিল্ড একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সেটি তো হবেই, আর সেজন্য একটা নির্দিষ্ট টাইম লাগবে। তাড়াহুড়া করে বডি বিল্ড করার নামে ব্যবসা করবে, এটা তো মেনে নেয়া যাবে না। প্রপার চ্যানেলের মাধ্যমে আমি বিষয়টি দেখব।’
কে কখন অসুস্থ হবে, কার জরুরি চিকিৎসা লাগবে, কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটবে, এসব আগাম বলার বিষয় নয়, তবে বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা আগাম জানিয়ে দেয়, সপ্তাহের আর ছয় দিন অসুস্থ হলে সমস্যা নেই; শুক্রবার নয়। কারণ এই দিনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা মিলবে না।
রাজধানীসহ সারা দেশের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থার চিত্রই মোটামুটি একই। শুক্রবার হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে সেবা কার্যক্রম চললেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া দায়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া দিনটিতে চিকিৎসকরা সবাই একসঙ্গে ছুটি কাটান।
বিভিন্ন ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বারেও শুক্রবার চিকিৎসকের দেখা মেলে না। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে সপ্তাহের ছয় দিন রোগী দেখার জন্য ডজন ডজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকেন, কিন্তু শুক্রবার এসব চিকিৎসা কেন্দ্রে হাতেগোনা দুই-চারজন চিকিৎসক থাকলেও বিশেষজ্ঞের দেখা পাওয়া ভার।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকা শিশু হাসপাতালে ঢুকতে গিয়ে দেখা গেল গেট বন্ধ। শুক্রবার বলে জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য কোনো বিভাগে চিকিৎসক ছিল না।
জরুরি বিভাগে ঢুকে দেখা গেল ওয়ার্ডে ভর্তি ২ বছর ৩ মাস বয়সী তানজিম। হিমোগ্লোবিন ৫ দশমিক ৫ এবং হার্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে শিশুটি।
তাকে মামীর কাছে রেখে মা কোথাও গেছেন। মামী পাপিয়া বেবি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তানজিমকে রক্ত দেয়া হবে আজ, কিন্তু আজ শুক্রবার; তাই ডাক্তার নেই। ওর হার্টেরও সমস্যা আছে। ওকে দেখছেন একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। এখন আমরা টেনশনে পড়ে গেছি।’
অনেক সময় রক্ত দেয়ার পর পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তেমনটা হলে কী করবেন, সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমস্যা হতেই পারে। কী করব, কারে বলব বুঝতে পারছি না। ডাক্তার নেই।
‘অগত্যা এখানে যারা ডিউটিতে আছেন তাদের ডাকতে হবে, কিন্তু ওকে যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখছেন, তাকে তো আজ পাওয়া যাবে না!’
তানজিমের পাশের বেডে ভর্তি করা হয় ৬ মাস বয়সের শিশু আলফিকে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুটিকে তিন দিন আগে সাভার থেকে এখানে আনা হয়েছে।
আলফির মা যুঁথি আক্তার বলেন, ‘তিন দিন ধরে ভর্তি করছি বাচ্চাকে। এখন কোনো সিরিয়াস কিছু হলে যার আওতায় ভর্তি সেই ডাক্তার নাই। তার মোবাইল নম্বরও আমাদের কাছে নাই। আমরা চাই শুক্রবারেও প্রয়োজন হলে যেন আমরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পাই।’
শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাবাসসুম অবশ্য চিকিৎসা সেবার ঘাটতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ইমারজেন্সিতে আমরা থাকি। রোগীদের যেকোনো সমস্যা আমরা দেখি। এখানে তো সবাই এমবিবিএস।
‘কেউ চিকিৎসা দিতে পারবে না এমন তো না। তা ছাড়া ফোনেও নির্দেশনা নিয়ে চিকিৎসা দিই আমরা। দরকার হলে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ থাকেন। জরুরি হলে কল দিয়েও ডাকা যায়।’
রোগীর অবস্থা সিরিয়াস হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তো তাৎক্ষণিক আসতে পারবেন না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা তো আছিই। না হলে শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
কল্যাণপুরে ইবনে সিনাতেও দেখা যায় অন্য দিনের তুলনায় রোগীর ভিড় অনেক কম। কারণ ডাক্তার নেই। রিসিপশনে জানতে চাইলে দায়িত্বরত একজন বলেন, ‘বেশির ভাগ ডাক্তারই শুক্রবার থাকেন না। সুনির্দিষ্ট কয়েকজন বাদে। যেগুলো বেশি প্রয়োজন, যেমন: মেডিসিন, হার্ট, ডায়াবেটিসসহ কিছু ডাক্তার থাকেন।’
কার্ড হোল্ডার থেকে ডাক্তারদের ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করে দেখা যায়, বেশির ভাগই সপ্তাহে তিন দিন বা চার দিন বসেন। শুক্রবারে কেউ নেই বললেই চলে।
হাসপাতালে কথা হয় তাহেরা সুলতানার সঙ্গে, যিনি একসময় আইসিসিডিআর’বিতে চাকরি করতেন।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার জরুরি প্রয়োজন হলে ডাক্তার পাওয়া যায় না। এটা শুধু আমি ফেইস করেছি, তা না; সবার সমস্যা। রোগ তো আর বার বোঝে আসে না। সাপ্তাহিক ছুটিটা চিকিৎসকরা পালাক্রমে নিলে ভালো হয়।
‘ইমারজেন্সিতে যারা থাকেন, তারা তো হঠাৎ কোনো রোগীর অবস্থা সিরিয়াস হলে ওই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতো তাৎক্ষণিক সেবা দিতে পারবেন না। সেই চিকিৎসককে ফোন করে আনতেও সময় লাগবে। আমি নিজে কতবার এ রকম বিপাকে পড়েছি, ঠিক নেই।’
বেসরকারি হাসপাতালে চেম্বারের সুযোগ
একটি প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি হাসপাতালের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ‘বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের বেতন ছাড়া চেম্বার করতে দেয়া হয়। এখানে আমরা যেভাবে ইচ্ছা যেদিন ইচ্ছা ছুটি কাটাতে পারি।’
এতে হাসপাতালের লাভ কতটুকু জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো চিকিৎসকদের প্রোফাইল দেখে রোগী আসে। তারা অন্য হাসপাতালে যেতে পারত, কিন্তু ভালো ডাক্তার হলে সেখানেই রোগী বেশি যায়। আর সেই হাসপাতালে ভর্তি লাগলে এবং পরীক্ষার জন্য যে অর্থ সেটা হাসপাতাল পায়।
‘বেসরকারি হাসপাতালগুলো দুই-একজন চিকিৎসককে রাখে বেতন দিয়ে। তারা সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে রোগী দেখেন। আর ছোট বেসরকারি হাসপাতালের বেশির ভাগই বেতন দিয়ে কোনো সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চেম্বার করার জন্য রাখে না। যাদের রাখে, তাদের অধিকাংশই মেডিক্যাল অফিসার।’
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:এইচআইভি রোগে আক্রান্ত দেশে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদেরসহ দেশে এ পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ৭০৮ জন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রোববার জাতীয় সংসদে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য বেগম লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নে লিখিত উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশে এইচআইভি আক্রান্ত হিসেবে ৯৭০৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন ৬ হাজার ৭৫ জন। আর মারা গেছেন ১ হাজার ৮৯০ জন।’
এইচআইভি রোগীর চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে ১১টি সরকারি হাসপাতাল থেকে এইচআইভি রোগীদের বিনামূল্যে ওষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। ২৩টি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এইচআইভি পরীক্ষা হয়।
৮টি এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ড্রাগ ইউজারদের বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি মিলে ১৩৪টি ড্রপ-ইন-সেন্টার থেকে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি প্রতিরোধমূলক সেবা দেয়া হচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের আগেই বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূলের ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে ইতোমধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। সেটি দ্রুত পাস করার পদক্ষেপ চলমান।
২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য ১৫৩ জন সংসদ সদস্যের সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় বিদ্যমান আইন সংশোধনীতে ই-সিগারেটসহ ইমার্জিং তামাক পণ্য নিষিদ্ধ করে প্রস্তাব যুক্ত করেছে।
সুনির্দিষ্টভাবে ১৫৩ জন সংসদ সদস্যের সুপারিশের আলোকে এ খসড়া আইনে ‘ইলেক্ট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম, ইমার্জিং টোব্যাকো প্রডাক্টস ইত্যাদি নিষিদ্ধ’ বিষয়ক একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। নতুন এ ধারার মাধ্যমে ই-সিগারেটসহ সব ধরনের ইমার্জিং তামাক পণ্য আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রেই আলাদা প্র্যাকটিসের সুযোগ দেয়া হচ্ছে; নির্দিষ্ট অফিস সময়ের বাইরে আলাদাভাবে সেখানেই চেম্বার করে তারা রোগী দেখতে পারবেন।
সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১ মার্চ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইনস্টিটিউশনাল প্রাকটিস বিষয়ক সভায় তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের ডিউটি সময়ের বাইরে বিভিন্ন ক্লিনিক বা ফার্মেসিতে যেভাবে চেম্বার খুলে রোগী দেখতে হতো, সরকারি এই বিশেষ সুবিধার ফলে নিজ নিজ সরকারি কর্মস্থলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেম্বারে রোগী দেখতে পারবেন।
‘এ বিষয়ে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়েছে সরকার। কাজটি শুরু করতে দ্রুতই একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। দেশের মানুষের জন্য এই কাজের শুরু হবে মহান স্বাধীনতার মাস মার্চের শুরু থেকেই। এতে লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন ক্লিনিক, ফার্মেসিতে ডাক্তার দেখানোর ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে।’
সভায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এএইচএম এনায়েত হোসেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নিউরো হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দেশে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে শনিবার বিকেলে পাঠানো বিবৃতিতে গত ২৪ ঘণ্টার হিসাবের এ তথ্য জানানো হয়।
সাধারণত অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমতে থাকে দেশে। সে হিসেবে জানুয়ারিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যু অনেকটা অস্বাভাবিক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, চলতি বছর প্রথম মাসেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সর্বশেষ ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকায় নয় ও ঢাকার বাইরে দুজন রোগী আছেন।
এ নিয়ে বর্তমানে দেশে ৭৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি হাসপাতালে ৩৭ জন ও ঢাকার বাইরে ৩৭ জন রোগী রয়েছেন।
বছরের শুরু থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৬৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৪১।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৮৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ১৮৫ ঢাকার বাইরে ২০১ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য