ঢাকায় ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালগুলোতে জায়গা নেই। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দার মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক ডেঙ্গু রোগী। চিকিৎসক বলেন, ‘সিট নাই, কী করব? এভাবেই চিকিৎসা দিচ্ছি।’
এ হাসপাতালে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসেছে ভর্তির জন্য। লাইনে দাঁড়ানো রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগই জ্বর নিয়ে এসেছেন।
মেয়ের জ্বর নিয়ে ডেমরা থেকে এসেছেন কল্পনা খাতুন। পাঁচ বছরের মেয়ে বীথির ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। বাসার আর কারও হয়েছে কি না আর মশারি ব্যবহার করেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আর কারও হয় নাই। বাচ্চা ঘুমালেই মশারি দিই। ডেঙ্গু বাড়তেছে জানি, তাই বাসায় কোনো পানিও জমতে দিই না। বাচ্চাকাচ্চা তো বাইরে খেলতে যায়। কীভাবে মশা কামড়ালো বলতে পারি না।’
শাহিদা বেগম এসেছেন গাজীপুর থেকে তার স্বামী মকবুল হোসেনকে নিয়ে। স্বামীর দুই দিন থেকে জ্বর কমছে না বলে জানান তিনি। ধারণা করছেন ডেঙ্গু।
কত দিন থেকে জ্বর জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিন দিন হইয়া গেছে। ভাবলাম এমনি জ্বর হইলে ঠিক হইয়া যাইব, কিন্তু কমতেছে না। তাই হাসপাতালে নিয়া আসছি।’
ওই সময় দায়িত্বরত একজন চিকিৎসক বলেন, ‘রোগী প্রতিদিনই বাড়ছে। অনেকে বুঝতে পারে না ডেঙ্গু নাকি সাধারণ জ্বর। কারণ সব সময় লক্ষণ মেলে না। তাই দেরিতে আসে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইকরামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা হটস্পটের (ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকা) ভিত্তিতে অভিযান চালাচ্ছি।’
‘হটস্পট’ কীভাবে চিহ্নিত করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সংখ্যা দেখে ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়। যেসব এলাকা থেকে বেশি রোগী আসে, সেটাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এখন পর্যন্ত মুগদা, মিরপুর, উত্তরা, খিলক্ষেত, যাত্রাবাড়ীসহ কিছু এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’
মশা নিধনে এত অভিযানের পরও কেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবার রাজধানীতে নির্মীয়মাণ ভবনগুলোতে অতিরিক্ত এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এই সোর্সগুলো মানুষের সৃষ্টি। পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া যায়, প্রতি একজন মানুষের বিপরীতে দেড় লাখ মশা। আর রাজধানীতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৫ হাজার লোক বাস করে, যেখানে উন্নত বিশ্বে ৩০০ থেকে ৫০০ জনের বাস। সে ক্ষেত্রে জনসংখ্যার ঘনত্বের জন্য ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
‘এ বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অক্টোবর মাসে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে, যেটা এর আগের বছরগুলোতে দেখা যায়নি। তাই যেখানে-সেখানে পানি জমাতে এডিস মশার লার্ভা জন্মানো কমছে না। তাই নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করছে। এগুলো তো এক দিনে হয় না। এ বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অক্টোবর মাসে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।
‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মশা নিয়ন্ত্রণ করে না। তারা যে হটস্পট আইডেন্টিফাই করেছে, এর মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ (যেমন: মুগদা, মিরপুর, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা, খিলক্ষেত, যাত্রাবাড়ী, বাসাবো) বিভিন্ন জায়গা চিহ্নিত করে দিয়েছে তারা। এরপর সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব সেই এলাকার মশা নিধন করা।
‘আমরা বলেছি, ফগিংয়ের মাধ্যমে উড়ন্ত মশাগুলোকে মেরে ফেলতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাইরের লার্ভা মেরে দিতে পারলেও বাসার যেসব জায়গায় মশা জন্ম নিতে পারে, সেগুলোর ব্যাপারে সতর্কতা বাড়াতে হবে। এডিস মশার দুটি প্রজাতি আছে। এর মধ্যে ইজিপটি প্রজাতির এডিসের কামড়ে ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে ৯৫ শতাংশ। আরেকটি প্রজাতি এলবোপিকটাস, যার কামড়ে ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা ২ শতাংশ। আমরা কিন্তু জানি না কোনটি কোন প্রজাতির। আবার যদি বুঝতেও পারি এটি এডিস, কিন্তু কোন প্রজাতির সেটি বোঝার উপায় নেই। তাই ঘরে মশারি ব্যবহার করতে হবে। কাজেই মশা আপনার ঘরে কম থাকলেও আশ্বস্ত হবেন না। বাইরে গেলেও মশা নিরোধক ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।’
ডেঙ্গু মহামারির দিকে যাচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বলতে পারি এটি সেদিকেই যাচ্ছে। অক্টোবর মাসে হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। এপিডেমিক মানেই মহামারি। সেই হিসেবে বলা যেতেই পারে। যেসব ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে সঠিকভাবে ব্যবস্থা না নিলে এটি আরও বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কোন কীটনাশকে এডিস মশা নিধন হয়, সেটি নিশ্চিত করাও জরুরি। সিটি করপোরেশনকে দোষারোপ করলেও ঢাকার বাইরে তো এই হটস্পট ম্যানেজমেন্টের উদ্যোগে কেউ নেই। এভাবে প্রতিটি জায়গায় সচেতনতা না বাড়ালে এটি আরও বড় আকার ধারণ করবে।’
কথা হয় ঢাকা শিশু হাসপাতালের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘সিট থাকলে আমরা সবাইকেই দিই। ডেঙ্গুর জন্য আলাদা কিছু না। রোগীর চাপ বেশি থাকলে সিট থাকে না। সেটা যেকোনো সময় হতে পারে।’
মুগদা ইসলামী হাসপাতাল থেকে বলা হয়, সেখানে এখনও কিছু শয্যা আছে, তবে রোগীর চাপ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানা হয়, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে শিশু মারা গেছে ১২ জন। এখন পর্যন্ত দেশে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ।
এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৬ হাজার ৯৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৯ হাজার ৪৯৮ জন এবং ঢাকার বাইরে সারা দেশে ভর্তি রোগী ৭ হাজার ৪৪০ জন।
একই সময়ে সারা দেশে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ২৩ হাজার ৬১২ জন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১৭ হাজার ২৯৫ জন এবং ঢাকার বাইরে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে ৬ হাজার ৩১৭ জন।
১ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ৮৪৬ জন। সেপ্টেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৯১১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ১২৬ জন। অর্থাৎ ১০ মাসে রোগী বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) আহমেদুল কবির বলেন, ‘আমরা দেশের বড় বড় সরকারি হাসপাতালে কথা বলেছি। তারা বলছে ডেঙ্গু নিয়ে এখনও কোনো চ্যালেঞ্জ নেই।
‘জ্বর বেশি থাকলে কিন্তু সমস্যা হচ্ছে না। জ্বর কমার পর ব্লাড প্রেশার কমে যায়। প্লাটিলেটও কমে যায়, কিন্তু ডেঙ্গু হলেই যে ব্লাড বা প্লাটিলেট দিতে হবে, এমন না। প্লাটিলেট ১০ হাজারের নিচে এলে তখন এগুলো দেয়ার প্রয়োজন পড়ে।
‘এ ক্ষেত্রে সব সময় বলা হয় সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। বাড়ির আশপাশে পানি জমতে না দেয়া, কনস্ট্রাকশনের কাজ চললে সেই জায়গাগুলোতে যেন পানি জমতে না পারে। বাসার ফ্রিজের নিচে যে ট্রেতে পানি জমে, এটা অনেকেই খেয়াল করেন না। এটি পরিষ্কার রাখতে হবে। সবার সচেতনতা থাকলে ডেঙ্গু নিরসন করা সম্ভব।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস গত বুধবার বলেন, ‘ডেঙ্গু নিধনে আমাদের যেসব কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, তার কারণে আমি মনে করি, আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমরা ডেঙ্গু নিরসনে চিহ্নিত হটস্পটগুলো নিয়ে কাজ করছি। মুগদা, মিরপুর, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা, খিলক্ষেত, যাত্রাবাড়ী, বাসাবোর বেশির ভাগ জায়গাই ঝুঁকিপূর্ণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হটস্পট চিহ্নিত করার পর আমরা কাজ করছি- এমন না। আমরা নিজেরাও প্রতিদিন হটস্পট চিহ্নিত করছি। আমাদের যেসব কর্মী এবং ডাক্তার আছেন, তাদের দক্ষতা অ্যানথ্রোপলজিস্টের চেয়ে কম নয়।’
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড- এসব দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ। আমাদের পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করতে হবে। সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যার তুলনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যার সঙ্গে বাংলাদেশেরটা তুলনা করলেই বোঝা যাবে।
‘সবচেয়ে বড় কথা, সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রতিটি জেলায় প্রতিটি বাড়িতে নিজেদের জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে।’
আরও পড়ুন:যশোর-চুয়াডাঙ্গার পাশে হওয়ায় প্রতিদিনই মাগুরায় বাড়ছে তাপদাহ। তাপদাহের ফলে পুড়ছে মাঠ-প্রকৃতিসহ প্রাণীকুল। গরমে কোথাও স্বস্তি নেই। তাপদাহ বৃদ্ধির কারণে বেশি ভুগছে জেলার শিশু ও বৃদ্ধরা।
সরজমিনে মাগুরা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। অনেকে সিট না পেয়ে অবস্থান নিয়েছেন মেঝেতে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন অনেক বয়স্ক রোগীও। তাদের কষ্ট আরও বাড়িয়েছে লোডশেডিং।
সোমবার সকাল থেকে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে শিশু ও অন্যান্য ওয়ার্ডগুলোতে অতিরিক্ত গরমে আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়তে শুরু করে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এসেছে এ হাসপাতালে।
এরমধ্যেই রোগীর চাপ সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে কর্র্তপক্ষ। ফলে বাধ্য হয়ে ওয়ার্ডের বাইরে মানুষের চলাচলের রাস্তার মেঝেতে থাকছেন অনেক রোগী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে বর্তমানে ৪৩৪ জন ভর্তি রয়েছেন। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪১টি শিশুই ভর্তি হয়েছে সেখানে, যাদের অধকিাংশই গরমজনতি বিভিন্ন রোগে (ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর) ভর্তি হয়েছেন।
শহরের খাঁপাড়া থেকে আসা অনন্যা রহমান তার মেয়েকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন। তিনি জানান, গত পাঁচ দিন ধরে তার দুই মাসের শিশুর পাতলা পায়খানা ও জ্বর। পরে হাসপাতালে এসে জানতে পারেন, শিশুটির নিউমোনিয়া হয়েছে।
পৌরসভার কাদিরাবাদ গ্রামের আবু মিয়ার নাতনির তিন দিন ধরে পাতলা পায়খানা ও বমি এবং জ্বর, কিন্তু শয্যা না থাকায় হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে নানতির চিকিৎসা করাচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে বাতাস চলাচলের জন্য ওয়ার্ডের কোনো একটা জানালা যে খুলব, সে উপায়ও নেই। ফলে প্রচণ্ড গরমে শিশুটি ছটফট করছে। আমাদের অবস্থাও তাই। হাতপাখা চালিয়ে গরম নিবারণ করা যাচ্ছে না।’
হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাজিয়া আক্তার বলেন, ‘ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে এ রোগ হয়। সাধারণত দিনে ৩ বা এর চেয়ে বেশিবার পাতলা পায়খানা হতে শুরু করলে তার ডায়রিয়া হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়।
‘গরম এলেই ডায়রিয়ার সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।’
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোহসিন উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অতি গরমে হাসপাতালে দিন দিন শিশুসহ অন্যান্য রোগী বাড়ছে।’
এক্ষেত্রে পানি ও তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার পরার্মশ দেন এই চিকিৎসক। বলেন, ‘হাসপাতালে গরমে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুবই চিন্তিত। এ কারণে শিশু রোগীদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে এক সপ্তাহের ছুটি দেয়া হয়েছে। স্কুলে আরও এক সপ্তাহ ছুটির নির্দেশ আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, আমরা আরও এক সপ্তাহ স্কুলগুলোকে বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছি। আমাদের কিছু নির্দেশনা আছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সেগুলো সব জায়গায় দেয়া হবে।
শনিবার দুপুরে সাভারের সিআরপি নার্সিং কলেজের ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বয়স্ক ও শিশুরা যেন প্রয়োজন না থাকলে ঘরের বাইরে না যায়। আর বাকি যে নির্দেশনাগুলো সেগুলো আজকেই চলে যাবে। স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক ইউনিটের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা তদন্ত করতে বলেছি। আজকেই তদন্ত হবে।’
স্বাস্থ্যখাতে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে, জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আমি সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌছে দেব। প্রত্যেকটা হেলথ কমপ্লেক্সকে, কমিউনিটি ক্লিনিককে উন্নত করতে হবে যেন সাধারণ মানুষ গ্রামেই চিকিৎসা পায়।’
সাভার ও ধামরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড সঙ্কট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এটাকে করা যায় কি না, তা নিয়ে কাজ করব।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআরপি প্রতিষ্ঠাতা ড. ভ্যালেরি টেইলর, সিআরপির নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এর আগে, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২১ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সাত দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তারও আগে দেশজুড়ে চলমান দাবদাহের কারণে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পরবর্তীতে শনিবার বিকেলে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজও সাত দিন বন্ধ থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক (কলেজ-১) মো. ওয়াহিদুজ্জামান।
পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন বলেছেন, ‘পরবর্তী তারিখ ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ক্লাস বন্ধ থাকবে।’
তবে ক্লাস বন্ধ থাকলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সব পরীক্ষা বিদ্যমান সময়সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
গত কয়েক দিন ধরে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানী ঢাকাও চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অনুভব করেছে আজ। এদিন ঢাকায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগে শুক্রবার আগুন ধরেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।
আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রোববার ও সোমবার দুই ঘণ্টা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা। বলা হয়েছে, এই দুদিন চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসও করবেন না।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। সূত্র: ইউএনবি
বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, স্বাধীনতা প্রকাশ পরিষদ, চট্টগ্রাম প্রকাশ সমিতিসহ ৯টি সংগঠন অংশ নেয়।
বিএমএ নেতারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চিকিৎসকরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বিচার না হওয়ায় চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে। চিকিৎসকরা তাদের কর্মস্থলে খুবই অনিরাপদ।
চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা।
মুজিবুল হক বলেন, ‘হামলার বিচার পাওয়ার জন্য আমরা পাঁচদিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।’
প্রসঙ্গত, ১০ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত এক রোগীর চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হামলায় গুরুতর আহত হন চট্টগ্রামের পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রক্তিম দাস।
পরে ১৪ এপ্রিল ভুল চিকিৎসায় এক বছরের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে রোগীর স্বজনদের হামলায় রিয়াজ উদ্দিন শিবলু নামে আরেক চিকিৎসক আহত হন।
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যসেবায় চিকিৎসকদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, ‘কোনো চিকিৎসকের ওপর হামলা যেমন মেনে নেব না, তেমনই চিকিৎসায় কোন ধরনের অবহেলা হলে সেটাও মেনে নিতে পারব না।’
বুধবার বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে চিকিৎসদের নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) চট্টগ্রামের পটিয়ায় চিকিৎসদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে চিকিৎসা কাজে চিকিৎসকদের আরও বেশি মনোযোগী ও আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের যেমন সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব আমার, রোগীদের সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্বও আমার। কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা নিয়ে সম্প্রতি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ভূয়সী প্রশংসা করেন। ভুটান রাজার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকার ভুটানে বার্ন হাসপাতাল করার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত করোনার টিকা নেয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চর্ম রোগ দেখা দেয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোনো ড্রাগেই এলার্জি প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। তবে এ বিষয়টি আমি এখনও শুনিনি।’
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনার প্রধান মুখপাত্র প্রফেসর ফলস-এর গবেষণায় এখনও এমন কোনো তথ্য উঠে আসেনি। তবে এমনও হতে পারে যে করোনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো এখন দেখা দিচ্ছে।’
এর আগে চান্দিনার মাধাইয়া ইউনিয়নের সোনাপুর কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব কমল কুমার ঘোষ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সারওয়ার হোসেন, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার, চান্দিনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন বক্সী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাবের মো. সোয়াইব, পৌর মেয়র শওকত হোসেন ভূইয়া, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:পাবনায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় দুই প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক তদন্ত করে হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়েছেন সিভিল সার্জন। একইসঙ্গে অভিযোগ তদন্তে ডেপুটি সিভিল সার্জনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গা-ঢাকা দিয়েছে।
সোমবার ঘটনাটি জানাজানি হলে জেলা সিভিল সার্জন সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির প্রাথমিক তদন্ত করে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেন।
পাবনা সদর পৌর এলাকার শালগাড়িয়া হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত বেসরকারি আইডিয়াল হাসপাতালে রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে পৃথক চিকিৎসক দ্বারা সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। এর আগে দুপুরে রোগীদের সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়।
অভিযোগে জানা যায়, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ এলাকার মাহবুব বিশ্বাসের স্ত্রী ইনসানা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে রোববার দুপুরে তাকে পাবনা আইডিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় জাহিদা জহুরা লীজা নামক এক চিকিৎসক অপারেশন করতে গেলে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়।
অপর ঘটনায় একই সময়ে পাবনার আটঘরিয়ার স্বপ্না খাতুন নামক এক রোগী কাজী নাহিদা আক্তার লিপির কাছে সিজারিয়ান অপারেশন করতে আসেন। ভুল চিকিৎসায় তারও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে কর্তৃপক্ষ রাতেই রোগীসহ স্বজনদের হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়লে তা ধামাচাপা দিতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মরদেহসহ স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় সঠিক তদন্ত শেষে হাসপাতাল-সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করার সময়ে যেসব উপকরণ ও মেডিসিন ব্যবহার হয়েছে সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লা দেওয়ান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন বা ওষুধ সেবনের ফলে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যারা জড়িত রয়েছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি ক্লিনিকটি যেহেতু স্বাস্থ্য বিভাগের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত, তাই নিয়ম মেনে সব কার্যক্রম চলছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’
পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, ‘ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখনও কোনো পরিবার থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
আরও পড়ুন:‘দাদির মৃত্যুর সময় গ্রামের বাড়িতে আপনজন কেউ ছিলেন না। এ অবস্থায় তাকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পাননি তিনি।
‘এই মনঃকষ্ট থেকেই করিমগঞ্জবাসীর জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করার চিন্তা করে আমাদের পরিবার। ভবিষ্যতে বেকারদের চাকরির সংস্থান করার ক্ষেত্রেও আমাদের পরিবার ভূমিকা রাখবে।’
কথাগুলো বলছিলেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের ব্যবসায়ী শফিউল আলম জনি। উপজেলার বাসিন্দাদের জন্য বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছেন ঢাকাকেন্দ্রিক এ ব্যবসায়ী।
শফিউল আলম জনির বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের হাইধনখালী গ্রামে। জনসেবামূলক উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয়দের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শনিবার বিকেলে বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু।
করিমগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মুসলেহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে অ্যাম্বুলেন্সদাতা শফিউল আলম জনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াদ শাহেদ রনি ও ব্যবসায়ী রফিকুর রহমান।
এতে জনি জানান, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ব্যবস্থাপনায় থাকবে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। দাতা হিসেবে তিনিও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে থাকবেন।
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান। তাই দল-মত নির্বিশেষে এখানে উপস্থিত হয়েছি। জনির মতো সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসলে উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষ।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য