× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

স্বাস্থ্য
Coxs Bazar is now dengue hub after Dhaka
google_news print-icon

ঢাকার পর এখন ডেঙ্গুর হাব কক্সবাজার

ঢাকার-পর-এখন-ডেঙ্গুর-হাব-কক্সবাজার
অতিরিক্ত প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার ও যত্রতত্র সেগুলো ফেলে রাখায় পানি জমে এডিস মশা বেড়েছে কক্সবাজারে, সেই সঙ্গে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ছবি: নিউজবাংলা
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১২ লাখ রোহিঙ্গার বসতি ক্যাম্পে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। গেল ৯ মাসে জেলায় ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩৩ জন, যার মধ্যে ২৭ জনই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২২ জন, ক্যাম্পের হাসপাতালে ১০ ও বসতবাড়িতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

পর্যটন শহর কক্সবাজার ও তার আশপাশের এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে ব্যাপকহারে। এই জেলায় মৃত্যুর সংখ্যাও হচ্ছে দীর্ঘ। জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে।

এরই মধ্যে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারি হাসপাতালগুলোকে। চিকিৎসকরা বলছেন, ঢাকার পর ডেঙ্গু রোগীর হাব এখন কক্সবাজার।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১২ লাখ রোহিঙ্গার বসতি ক্যাম্পে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। গেল ৯ মাসে জেলায় ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩৩ জন, যার মধ্যে ২৭ জনই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২২ জন, ক্যাম্পের হাসপাতালে ১০ ও বসতবাড়িতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সিট, মেঝেতে ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের ছড়াছড়ি। আক্রান্তরা বলছেন, মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ তারা। জ্বর, মাথাব্যথাসহ নানা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত কক্সবাজারে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৩৩০ জন। যেখানে রোহিঙ্গা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৮৬ জন।

বেশি ডেঙ্গু আক্রান্তের এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কক্সবাজার শহরের বৈদ্যঘোনা, পাহাড়তলী, কুতুবদিয়া পাড়া, টেকপাড়া, সমিতিপাড়া, নুনিয়াছড়া, টেকনাফ উপজেলার কিছু এলাকা।

এ ছাড়া উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্প-৪, ক্যাম্প-৩, ক্যাম্প ১/ইস্ট, ক্যাম্প-২৪, ২৬ ও ১১-কে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় মূলত ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অতিরিক্ত প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহারকে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সমিতিপাড়ার মৎস্য ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই দিন ধরে। তিনি জানান, প্রথমে জ্বর উঠলে স্বাভাবিক মনে হওয়ায় গুরুত্ব দেননি। যখন কয়েক দিন ধরে জ্বর বেড়েছে তখন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। তারপর ধরা পড়ে ডেঙ্গু।

মুদি দোকানি রহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়িক কাজে তিনি প্রতিদিন রাত করে বাড়ি ফেরেন। মশার কামড়কে তিনি স্বাভাবিকই মনে করেছিলেন। কিছুদিন পর জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত হন। গা ব্যথা অতিরিক্তি হলে একপর্যায়ে তিনি বাসায় থাকতে না পেরে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে।

শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা মাহিদুর রহমান বলেন, ‘ডেঙ্গুতে আমিসহ পরিবারের চারজনই আক্রান্ত। দুই সন্তানসহ এখন সবাই চিকিৎসা নিচ্ছি।’

ডেঙ্গু মশা নিধনে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি মাসেই সদর হাসপাতালে ৪৯ জনসহ উপজেলা স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলোতে ৩২৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালগুলোতে আক্রান্তরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গু মশার উৎস এখন খুব বেশি।’

মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশ এই চিকিৎসক। প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে বাসায় চিকিৎসা না নিয়ে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আশ্রয়শিবিরে জমানো পানির পরিমাণ বেশি। সেখানকার মানুষজন এডিস মশা নিয়ে সচেতন নয়। তা ছাড়া পরিকল্পিতভাবে প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার না হওয়ায় এর বড় কারণ। যার ফলে পানি জমে থাকছে। সেখান থেকেই মূলত ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে।’

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘এতসংখ্যক মানুষের এক সঙ্গে বসবাস, তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে অতিরিক্ত প্লাস্টিকের ব্যবহার। সেগুলো যেখানে সেখানে ফেলায় পানি জমছে। সেখান থেকে মশার উৎপাত বাড়ছে। এ সমস্ত এলাকা চিহ্নিত করে সচেতনতার কাজ চলছে। শিগগিরই এ সমস্যা সমাধানের পথে আসবে।’

আরও পড়ুন:
একদিনে হাসপাতালে ৬৪৭ ডেঙ্গু রোগী, মৃত্যু ১
একদিনে ডেঙ্গুতে ৪ মৃত্যু
গোসলে নেমে নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
অক্টোবরের প্রথম ১০ দিনে ১৫ মৃত্যু
দিনের ব্যবধানে অর্ধেক ডেঙ্গু রোগী, মৃত্যু ১

মন্তব্য

আরও পড়ুন

স্বাস্থ্য
UNICEF calls for extra caution for children in the wild

দাবদাহে শিশুদের প্রতি বাড়তি সতর্ক হওয়ার আহ্বান ইউনিসেফের

দাবদাহে শিশুদের প্রতি বাড়তি সতর্ক হওয়ার আহ্বান ইউনিসেফের ছবি: সংগৃহীত
ইউনিসেফের মতে, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে, বিশেষ করে নবজাতক, শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য যারা তাপজনিত অসুস্থতা যেমন হিট স্ট্রোক এবং ডিহাইড্রেশনের কারণে বিশেষভাবে ডায়রিয়া ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যা হিসেবে বিবেচিত হয়।

দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও উত্তপ্ত তাপমাত্রার কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।

বুধবার ইয়েট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আপনার প্রতিবেশিদের দিকে নজর রাখুন- দুর্বল পরিবার, প্রতিবন্ধী শিশু, গর্ভবতী নারী এবং বৃদ্ধরা তাপপ্রবাহের সময় অসুস্থতা বা মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। সময় নিয়ে প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নিন, বিশেষ করে যারা একা থাকেন।’

ইউনিসেফের ২০২১ সালের শিশুদের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ‘অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা।

ইউনিসেফের মতে, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে, বিশেষ করে নবজাতক, শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য যারা তাপজনিত অসুস্থতা যেমন হিট স্ট্রোক এবং ডিহাইড্রেশনের কারণে বিশেষভাবে ডায়রিয়া ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যা হিসেবে বিবেচিত হয়।

ইয়েট বলেন, ‘যেহেতু শিশুদের ওপর ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাবের উদ্বেগের কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, তাই ইউনিসেফ অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের হাইড্রেটেড ও নিরাপদ রাখতে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।’

এই তাপপ্রবাহের তীব্রতা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।

তাপমাত্রা নজিরহীনভাবে বাড়তে থাকায় অবশ্যই শিশু এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে জানান ইয়েট।

এই তাপপ্রবাহ থেকে ইউনিসেফ কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, যত্নগ্রহণকারী এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের রক্ষায় নিচের পদক্ষেপগুলো নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে-

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • শিশুরা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের বসার বা খেলার জন্য শীতল জায়গা তৈরি করুন।
  • গরমের দুপুর এবং বিকেলে বাইরে থাকা এড়িয়ে চলুন।
  • নিশ্চিত করুন যে শিশুরা হালকা, বাতাস প্রবেশ করে এমন পোশাক পরবে এবং সারা দিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবে।

প্রাথমিক চিকিৎসা

যদি কোনো শিশু বা গর্ভবতী নারীর হিটস্ট্রেসের লক্ষণগুলো দেখা যায়, যেমন- মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম, বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, নাক দিয়ে রক্তপাত, পেশি খিঁচুনি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি; ওই ব্যক্তিকে ভালো বায়ু চলাচলসহ শীতল, ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখুন এবং ভেজা তোয়ালে বা শীতল পানি দিয়ে শরীর মুছে দিন।

পানি বা ওরাল রিহাইড্রেশন লবণ (ওআরএস) গ্রহণ করুন।

হিটস্ট্রেসের গুরুতর লক্ষণগুলোতে (যেমন: বিভ্রান্তি বা প্রতিক্রিয়া জানাতে অক্ষমতা, অজ্ঞান হওয়া, শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, খিঁচুনি এবং চেতনা হ্রাস) হলে জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
All hospitals have been ordered to be ready to deal with the fire situation

দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ

দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ ফাইল ছবি
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতিমোকাবিলায় সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা এবং একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন তীব্র দাবদাহের কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

রোববার সচিবালয়ে সারাদেশের হাসপাতালের পরিচালক এবং সিভিল সার্জনদের সঙ্গে অনলাইনে আয়োজিত এক সভা থেকে তিনি এই নির্দেশনা দেন। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এই নির্দেশনার কথা জানান। খবর বাসসের

তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা এবং একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

বয়স্ক ও শিশুরা যেন প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে না যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই গরমে সবচেয়ে বেশি ভালনারেবল বয়স্ক এবং বাচ্চারা। এবার এমন একটা জলবায়ু পরিবর্তন হলো যে আমরা জীবনে কখনো শুনিনি যে দুবাই বিমানবন্দর পানিতে ডুবে গেছে। যাহোক এটা প্রকৃতির নিয়ম। আমাদের এগুলোফেস করতে হবে।’

তীব্র দাবদাহে বাচ্চাদের ঝুঁকি এড়াতে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে যখন মেসেজ আসলো (হিট অ্যালার্ট), আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সান্নিধ্যে গিয়ে স্কুলটা বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কারণ, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে বাচ্চা এবং বয়স্করা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওরাল স্যালাইনের কোথাও কোনো ঘাটতি হলে যেন আমাকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়। এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রকৃতির ওপর তো আমাদের কারও হাত নেই। এটা আমাদের রেডি রাখতে হবে।

শিশুদের জন্য হাসপাতালগুলোতে পর্যপ্ত ব্যবস্থা আছে কি না- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি শনিবার শিশু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। শিশু হাসপাতালগুলোকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার জন্যই সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। কোল্ডকেসগুলোকে এখন হাসপাতালে ভর্তি না করতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাচ্চাদের ব্যাপারে আজকে থেকে একটা অনলাইন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি সারা দেশের চিকিৎসকদের নিয়ে।

সভায় জানানো হয়, মহাখালীতে করোনা চিকিৎসার জন্য ডিএনসিসি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের জন্য আলাদাভাবে বেড রাখতে বলা হয়েছে।

এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Will do everything to make treatment accessible Health Minister

চিকিৎসা সহজলভ্য করতে সব করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

চিকিৎসা সহজলভ্য করতে সব করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন। ছবি: নিউজবাংলা
মন্ত্রী বলেন, ‘ইদের পর থেকে তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি আবারও মাঠে নেমে পড়ব। প্রয়োজনে প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে চলে যাব। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে যা যা করার দরকার আমি তাই করব।’

দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে যা যা করার দরকার তাই করবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন।

শনিবার রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘ইদের পর থেকে তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি আবারও মাঠে নেমে পড়ব। প্রয়োজনে প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে চলে যাব। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে যা যা করার দরকার আমি তাই করব।’

সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘কথা কম বলে অসুস্থ মানুষের সেবায় কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে হবে আমাদের। বঙ্গবন্ধু এই দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। তিনি ২৩ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবে সেই জন্য। তার দীর্ঘদিনের স্বপ্নের দেশ স্বাধীন হয়েছে। তিনি কিন্তু দেশকে তার স্বপ্নের মতো করে সাজানোর সুযোগ পাননি।

‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) মাত্র তিন বছরের মত সময় ক্ষমতায় ছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলেও দেশে তেমন কোনো সম্পদ বা অর্থ ছিল না। সেই দুর্ভিক্ষ পীড়িত দেশের দায়িত্ব নিয়েই তিনি এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে তিনি কাজ শুরু করেননি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতের সব ভালো উদ্যোগ জাতির পিতাই শুরু করে দিয়েছিলেন। তিনি যেভাবে শুরু করেছিলেন দেশের বিভিন্ন কুচক্রী মহলের কারণে সেগুলো সেভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। এখন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পিতার কাজগুলো এক এক করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, জনগণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা। সেই কাজ করতে মুখে আমাদেরকে বড় বড় কথা বললেই হবে না, আমাদেরকে কাজ করে দেখাতে হবে। এজন্য আমরা যেন মুখে কথা কম বলে কাজ করেই আমাদের সক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে পারি সে লক্ষ্যেই মাঠে নেমে পড়তে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিএসএমএমইউ এর ভিসি ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটো মিয়া, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূর, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান (অতিরিক্ত সচিব)-সহ অন্যান্যরা।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Another 42 people have corona virus

আরও ৪২ জনের করোনা শনাক্ত

আরও ৪২ জনের করোনা শনাক্ত ফাইল ছবি
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৬ হাজার ৫৫৫ জনে।

দেশে আরও ৪২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার এই হিসাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৯ জনে। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৩ জনের।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৬ হাজার ৫৫৫ জনে।

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Corona has reduced the average life expectancy by one and a half years

করোনায় গড় আয়ু দেড় বছর কমেছে

করোনায় গড় আয়ু দেড় বছর কমেছে কোভিড বিশ্বব্যাপী মানুষের আয়ু কমিয়েছে দেড় বছর। ফাইল ছবি
গবেষক অস্টিন শুমাখার বলেছেন, ২০২০ থেকে ২০২১ সময়কালে ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের বিশ্লেষণে ৮৪ শতাংশে আয়ু হ্রাস পেয়েছে। এই সময়ে ১৫ বছরের বেশি মানুষের মৃত্যুর হার পুরুষদের জন্য ২২ শতাংশ এবং মহিলাদের জন্য ১৭ শতাংশ বেড়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম দুই বছরে বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু ১ দশমিক ৬ বছর কমেছে।

একটি বড় গবেষণায় মঙ্গলবার এ কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা বাসস।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) তথ্য অনুসন্ধানকারী গবেষকদের মতে, এক দশক ধরে বিশ্বব্যাপী আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির পর এটি এখন উল্টো দিকে ঘুরছে।

আইএইচএমই গবেষক এবং দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক অস্টিন শুমাখার বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য, কোভিড-১৯ মহামারিটি অর্ধ শতাব্দীতে সংঘাত এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ দেখা যেকোনো ঘটনার চেয়ে আরও গভীর প্রভাব ফেলেছে।’

তিনি একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ২০২০ থেকে ২০২১ সময়কালে ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলের বিশ্লেষণে ৮৪ শতাংশে আয়ু হ্রাস পেয়েছে, যা নতুন ভাইরাসগুলোর ‘বিধ্বংসী সম্ভাব্য প্রভাব প্রদর্শন করে।’

এই সময়ে ১৫ বছরের বেশি মানুষের মৃত্যুর হার পুরুষদের জন্য ২২ শতাংশ এবং মহিলাদের জন্য ১৭ শতাংশ বেড়েছে।

গবেষকরা অনুমান করেছেন, মেক্সিকো সিটি, পেরু এবং বলিভিয়ায় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমেছে।

কিন্তু আইএইচএমইয়ের ল্যান্ডমার্ক গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডির আপডেট করা হিসাবে কিছু ভালো খবর পাওয়া যায়।

২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় অর্ধ মিলিয়ন কম শিশু মারা গেছে, যা শিশু মৃত্যুহারের দীর্ঘমেয়াদি পতন অব্যাহত রেখেছে।

আইএইচএমই গবেষক এই ‘অবিশ্বাস্য অগ্রগতি’কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বিশ্বকে এখন পরবর্তী মহামারি এবং বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্যের বিশাল বৈষম্য মোকাবেলার দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। গবেষকরা বলেছেন, ১৯৫০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে গড় আয়ু ২৩ বছর বেড়ে ৪৯ থেকে ৭২ বছর হয়েছে।

কোভিড ২০২০ থেকে ২০২১ সময়কালে সরাসরি ভাইরাস থেকে বা পরোক্ষভাবে মহামারী-সম্পর্কিত কারণে অতিরিক্ত ১৫.৯ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন:
২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
করোনায় একজন মারা গেছেন
২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের করোনা শনাক্ত
২৪ ঘণ্টায় ২২ জনের করোনা শনাক্ত

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
The positive effects of fasting on the body

রোজায় যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শরীরের ওপর

রোজায় যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শরীরের ওপর প্রতীকী ছবি
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের রক্তে নানা রকম বর্জ্য পদার্থ এবং ক্ষতিকর পদার্থ ঘুরে বেড়ায়। এই রক্তকে পরিশোধন করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে রোজা।

সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাতে সেহরি খেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার বর্জন করেন মুসলিমরা। এ সময়ে পাকস্থলীসহ শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিশ্রাম পায়। এতে করে শরীরে নানাবিধ ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

রোজার স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন উপকারিতার কথা এক ভিডিওতে তুলে ধরেছেন মনোদৈহিক ও জীবনযাপনবিষয়ক রোগের থেরাপিস্ট এবং কোয়ান্টাম হার্ট ক্লাবের কোঅর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান। পরামর্শগুলো তার ভাষায় উপস্থাপন করা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের সামনে।

শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিশ্রাম

রমজান আসল, রমজান চলে গেল। ৩০টি রোজা আমি রাখলামও। ৩০টি রোজার পরেও আমার ওজনের একটুও কম-বেশি হলো না। এইটুকু খোলা চোখে বলে দেয়া যায়, রোজা থেকে আমি কোনো কিছু ফায়দা নিতে পারলাম না। আমি ব্যর্থ হয়েছি রোজার মূল উদ্দেশ্য অর্জন করতে। বিজ্ঞান কী বলে?

সর্বপ্রথম ১৯৯৪ সালে মরক্কোর ক্যাসাব্লাঙ্কা শহরে সারা বিশ্ব থেকে বিজ্ঞানীরা একত্রিত হয়ে ৫০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র তারা উপস্থাপন করেন। সেই সম্মেলনের নাম ছিল হেলথ অ্যান্ড রামাদান; সুস্থতা এবং রমজান। সেই সেমিনারে বক্তারা বলেন, রমজানের ৩০টি রোজা আমাদের শরীরের জন্য একটা বিশাল অপরচুনিটি; একটা বিশাল সুযোগ। তারা এভাবে তুলনা করে বলছেন, একটা জটিল মেশিন থেকে যদি সারা বছর পূর্ণ সার্ভিস চান, তাহলে অবশ্যই মাঝে মাঝে তাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও তাকে বিশ্রামে রাখতে হবে। তো আমাদের শরীরটাও একটা মেশিন। এর মধ্যে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র রয়েছে; হার্ট, লাং, লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক, পরিপাকতন্ত্র…কত ধরনের হার্ড ডিস্ক। এইসব মেশিনপত্র থেকে যদি আপনি সারা বছর পুরো সার্ভিস চান, তাহলে তাকে বছরের একটি মাস বিশ্রাম দিতে হবে। তাহলে বাকি ১১টা মাস সে পূর্ণোদ্যমে কাজ করে আপনাকে পূর্ণ সাপোর্ট দিতে পারবে। আপনি তার থেকে পুরো আউটপুট পাবেন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে রোজা রাখতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আপনার বাড়তি ওজন কমবে। বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলে আপনি একজন স্লিম, স্মার্ট মানুষে রূপান্তরিত হবেন। আর যদি রোজার পরেও আপনার বাড়তি ওজন থেকে যায়, এইটুকু পরিষ্কারভাবে বলা যায়, যে পদ্ধতিতে রোজা রাখার কথা ছিল, সেই পদ্ধতিতে রোজা রাখতে পারেন নাই; রোজা রাখা হয় নাই। ফলে আপনি আপনার ওজন কমাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

মস্তিষ্ককে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা

আমেরিকার সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের (এনআইএইচ) একটি শাখা হচ্ছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন এজিং। সেখানকার প্রখ্যাত নিউরোসায়েন্টিস্ট ড. মার্ক ম্যাটসন এবং তার সহযোগীরা দীর্ঘ গবেষণা করেন ফাস্টিং নিয়ে। এরপর তারা পাবলিশ করেন এর ফলাফল। সেখানে তারা পরিষ্কার করে বলছেন যে, একজন মানুষ যদি মাঝে মাঝেই ফাস্টিং থাকে, নিজেকে সকল ধরনের খাবার এবং পানীয় থেকে বিরত রাখে, তবে তিনি তার ব্রেনের যে এজিং, সে এজিংটাকে প্রতিরোধ করতে পারবে। ব্রেনকে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে এবং বৃদ্ধ বয়সে এখন যে রোগগুলো খুব দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধ বয়সে এসে আমাদের স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং যেসব রোগগুলোতে স্মৃতি হারিয়ে যাচ্ছে, সেই রোগগুলোকে বলা হয় আলঝেইমারস, ডিমেনশিয়া, হান্টিংটন, পারকিনসনের মতো রোগগুলো আপনি প্রতিরোধ করতে পারবেন।

রক্ত পরিশোধন

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের রক্তে নানা রকম বর্জ্য পদার্থ এবং ক্ষতিকর পদার্থ ঘুরে বেড়ায়। এই রক্তকে পরিশোধন করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে রোজা।

কোষ পরিষ্কার

আমাদের শরীরে ৩০ ট্রিলিয়ন সেল বা কোষ আছে। এই কোষের ভিতরে প্রতিনিয়ত নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান তৈরি হচ্ছে বিপাকক্রিয়ার ফলে এবং নানা ক্রিয়া-বিক্রিয়ার ফলে। শক্তি তৈরি হচ্ছে, হরমোন তৈরি হচ্ছে, এনজাইম তৈরি হচ্ছে। এগুলো তৈরির পাশাপাশি কিছু বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন তৈরি হচ্ছে। এইসব বর্জ্য পদার্থ বা টক্সিন দূর করার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে ফাস্টিং বা রোজা। এটা নিয়ে গবেষণা করে ‍যিনি নোবেল প্রাইজ পান, তিনি হচ্ছেন ড. ইয়োশিনোরি ওহসুমি। তিনিসহ অন্য বিজ্ঞানীরা এটার নাম দিয়েছেন অটোফেজি। এটি (অটোফেজি) যখন ১২ ঘণ্টা থেকে ১৬ ঘণ্টা হবে, এটি চমৎকার কাজ করবে। এটি যখন ১৮ ঘণ্টা, ২০ ঘণ্টা, ২২ ঘণ্টা, ২৪ ঘণ্টা হবে এক্সিলেন্ট।

টাইপ টু ডায়াবেটিস রোধে সহায়ক

আমরা জানি টাইপ টু ডায়াবেটিসের মূল কারণ হচ্ছে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। সম্প্রতি দুটো গবেষণা বলছে, টাইপ টু ডায়াবেটিস রিভার্স করতে চাইলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার ফাস্টিং কেউ যদি সপ্তাহে তিন দিন করেন, তবে তিনি টাইপ টু ডায়াবেটিস নিরাময় করতে সক্ষম হবেন। সেই সময় তার স্থূলতাও তার শরীর থেকে চলে যাবে।

দীর্ঘায়ু হওয়ায় সহায়তা

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাঝে মাঝে রোজা, উপবাস বা ফাস্টিং একজন মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করে তাকে দীর্ঘজীবী করে। এই যে দেখেন না, হজরত শাহজালাল (র.) ১৫০ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি স্বল্পাহারি ছিলেন এবং প্রায়ই রোজা রাখতেন। তিনি এক বেলা খেতেন। এই যে ঢাকা থেকে কাছে সোনারগাঁয়ে ছিলেন বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী। ১৬০ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনিও স্বল্পাহারি ছিলেন। প্রায়ই উপবাস করতেন।

আমাদের প্রিয় মহানবী (সা.) সপ্তাহে দুই দিন রোজা রাখতেন; সোমবার এবং বৃহস্পতিবার। এ ছাড়াও তিনি প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোজা রাখতেন।

রোজা রাখলে কী ঘটে শরীরে

রোজায় দীর্ঘ সময় পাকস্থলী খালি থাকায় নানা ধরনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় শরীর। ধাপে ধাপে সেটি কীভাবে হয়, তা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে সুস্থতা নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট মাইন্ডবডিগ্রিন ডটকম।

প্রথম চার ঘণ্টা

খাওয়ার পর প্রথম চার ঘণ্টায় অভ্যন্তরীণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সচল রাখার পাশাপাশি কোষ ও টিস্যুর বিকাশ ঘটায় শরীর। এ সময়ে দরকারি হরমোন ইনসুলিন উৎপন্ন করে অগ্ন্যাশয়। এর মধ্য দিয়ে রক্তে নিঃসৃত গ্লুকোজ ব্যবহারের পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে ব্যবহারের জন্য কোষে বাড়তি শক্তিও মজুত করা যায়।

চার থেকে ১৬ ঘণ্টা

দেশভেদে সেহরি থেকে ইফতারের মধ্যকার সময়ে তারতম্য হয়। কোনো কোনো দেশে ১৬ ঘণ্টার বেশি সময় উপবাস থাকতে হয় রোজাদারদের।

১৬ ঘণ্টার মতো যারা রোজা রাখবেন, তাদের শারীরিক ক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে চতুর্থ ঘণ্টা থেকে। এ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাতে সঞ্চিত অতিরিক্ত পুষ্টি ব্যবহার করা শুরু করে শরীর।

কোষে থাকা শক্তি ফুরিয়ে গেলে শরীর নজর দেয় সঞ্চিত চর্বি বা ফ্যাটে। শরীর থেকে চর্বি নির্গমন এবং শক্তি জোগাতে এগুলো পুড়িয়ে ফেলার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘কিটন বডিজ ফর এনার্জি’। এটি সাধারণত ঘটে ১৬তম ঘণ্টার কাছাকাছি সময়ে।

শরীর সঞ্চিত চর্বি পোড়ানোর পর্যায়ে কখন যাবে, সেটি নির্ভর করে রোজা বা উপবাস শুরুর আগে গ্রহণ করা খাদ্যের ধরনের ওপর। কেউ প্রচুর পরিমাণে শর্করা ও শ্বেতসার খাবার খেলে এ পর্যায় দেরিতে শুরু হবে। বিপরীতে কেউ চর্বি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে আগেই সে পর্যায়ে পৌঁছাবে।

রোজা বা উপবাসের সবচেয়ে শক্তিশালী বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি অটোফেজি। ১৬ ঘণ্টার আশপাশের সময়ে এটি শুরু হয়।

অটোফেজি হলো এমন এক প্রক্রিয়া যার মধ্য দিয়ে কোষে থাকা মৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত বস্তুগুলো সরিয়ে দেয় শরীর। এসব বস্তু বার্ধক্য, ক্যানসার ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে।

১৬ থেকে ২৪ ঘণ্টা

রোজার সময় ১৬ ঘণ্টার বেশি হলে কোষে থাকা গ্লুকোজ ও লিভারে থাকা গ্লাইকোজেন এবং পেশিগুলো দ্রুত ক্ষীণ হতে থাকে। ফলে শক্তি জোগাতে জমানো চর্বি গলাতে হয় শরীরকে।

এ পর্যায়ে এসে শরীরে শক্তির চাহিদার অনেক বেশি পরিবর্তন দেখা যায় না। রোজাদার বা উপবাসে থাকা ব্যক্তি তখনও জেগে থাকা, দৈনন্দিন কাজ করা, লোকজনের সঙ্গে লেনদেন করা কিংবা ব্যায়াম করতে পারেন। এ কারণে উল্লেখযোগ্য মাত্রার শক্তির দরকার হতে পারে।

১৬ ঘণ্টার পরে শরীরে এএমপিকে নামের আরেকটি রাসায়নিক উৎপন্ন হয়। এটি শরীরজুড়ে অটোফেজি আরও বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুন:
রোজা: সন্ধ্যায় বসছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি
অস্ট্রেলিয়ায় রোজা শুরু মঙ্গলবার

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Two more died of dengue

ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু

ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু
ফাইল ছবি
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ নিয়ে মোট ২০ জনের মৃত্যু হলো। যাদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে মার্চ মাসেই।

সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১২ জন।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নিয়মিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে এ তথ্য জানানো হয়।

মারা যাওয়া দুজনের একজন ঢাকায় ও আরেকজন বরগুনায় ছিলেন।

চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ নিয়ে মোট ২০ জনের মৃত্যু হলো। যাদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে মার্চ মাসেই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরে ৫ রোগী ভর্তি হয়েছেন, বাকি ৭ জন ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে।

এ নিয়ে এবছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৮৪ জনে। ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকায় ৫২০ এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৬৪ জন।

আরও পড়ুন:
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ মৃত্যু
ব্রাজিলের ডোরাডোস শহরে ডেঙ্গুর গণটিকা শুরু
‘মশার ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ না হলে এবারও ডেঙ্গু নিয়ে শঙ্কা’

মন্তব্য

p
উপরে