ক্যানসার চিকিৎসায় যুগান্তকারী এক অর্জনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অস্ত্রোপচার ও থেরাপির মতো চিকিৎসা ছাড়া কেবল ওষুধে ক্যানসার নিরাময়ের দ্বারপ্রান্তে মানুষ। সাম্প্রতিক এক ট্রায়ালে এমন সাফল্য মিলেছে।
রেকটাল (মলদ্বার) ক্যানসারে আক্রান্ত ১৮ জন রোগীকে টানা ৬ মাস ধরে একই ধরনের ওষুধ দেয়া হয়েছিল। ফলে দেখা গেছে, প্রতিটি রোগীর ক্যানসার সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়ে গেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, একটি ছোট ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে মলদ্বারের ক্যানসারে আক্রান্ত ১৮ জন রোগী প্রায় ছয় মাস ধরে প্রতি মাসে তিন সপ্তাহ করে ডস্টারলিম্যাব (Dostarlimab) নামে একটি ওষুধ সেবন করেন।
ট্রায়ালে অংশ নেয়া সব রোগীর ক্যানসার একই পর্যায়ে ছিল। মলদ্বার থেকে তা দেহের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়েনি। পরীক্ষামূলক এই চিকিৎসার পর ওই রোগীদের প্রত্যেকের মলদ্বারে বাসা বাঁধা টিউমার অদৃশ্য হয়ে যায়।
ডস্টারলিম্যাব হলো ল্যাবরেটরিতে উত্পাদিত অণুসহ একটি ওষুধ, যা মানবদেহে বিকল্প অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে। এই ওষুধ সেবনের ফলে একপর্যায়ে দেখা যায় তাদের মলদ্বারে সৃষ্ট টিউমারের কোনো অস্তিত্ব নেই। পরবর্তীতে এন্ডোস্কপি, পজিট্রন নির্গমন টমোগ্রাফি বা পিইটি স্ক্যান বা এমআরআই স্ক্যানেও টিউমারগুলোর অস্তিত্ব ধরা পড়েনি।
নিউ ইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারের ডা. লুইস এ. ডিয়াজ জে বলেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসার ইতিহাসে এটি প্রথমবারের মতো ঘটেছে।‘
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত রোগীরা তাদের ক্যানসার নির্মূল করার জন্য কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন এমনকি জটিল অস্ত্রোপচারও করান। তাতে কোনো ফল মেলেনি। উল্টো এসব চিকিৎসা নিতে গিয়ে অন্ত্র ও প্রস্রাবের সমস্যা এমনকি যৌন সক্ষমতা হারানোর মতো ঝুঁকির মুখে পড়েন।
প্রচলিত এসব চিকিৎসায় ফল না পেয়ে শেষ আশা নিয়ে তারা পরীক্ষামূলকভাবে ডসটারমিল্যাব ওষুধ সেবনের এই ট্রায়ালে নাম লেখান। যা হোক, ট্রায়ালে এমন ওষুধনির্ভর চিকিৎসা তাদেরকে নতুন জীবন দিয়েছে। মরণব্যাধি ক্যানসার থেকে তারা পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করেছেন।
ক্যানসারের পরীক্ষামূলক চিকিৎসায় এমন অভাবনীয় ফল চিকিৎসা জগতে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলোরেক্টাল ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যালান পি ভেনুক এই ঘটনাকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন। সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এমন একটি রোগের চিকিৎসা ট্রায়ালে প্রতিটি রোগীর আরোগ্য লাভের এমন ঘটনা আগে কখনই শোনা যায়নি। এমন ঘটনা চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই প্রথম। এর আরেকটি ইতিবাচক দিক হলো, ট্রায়ালে অংশ নিয়ে আরোগ্য লাভ করা কোনো রোগীই উল্লেখযোগ্য কোনো জটিলতার মুখে পড়েননি।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলেন মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টার এবং গবেষণাপত্রের সহলেখক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. আন্দ্রেয়া সেরসেক। তিনি জানান, ট্রায়ালে অংশ নেয়া রোগীরা খবরটি জানার মুহূর্ত ছিল খুবই আবেগঘন। ক্যানসারমুক্ত হওয়ার খবর জানার পর আবেগে অনেক রোগী কেঁদে ফেলেন। তা ছিল খুশির কান্না।’
এদিকে ক্যানসার গবেষকরা ট্রায়ালে ব্যবহার করা ওষুধ ‘ডস্টারলিম্যাব’ নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, ট্রায়াল চিকিৎসায় পাওয়া এমন চমকপ্রদ ফল আশাব্যঞ্জক। তবে এটি ক্যানসার আক্রান্ত অন্য সব রোগীর চিকিৎসায়ও সমভাবে ফলদায়ক হবে কি না তা দেখার জন্য বড় আকারের ট্রায়াল প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:মহাজাগতিক যেকোনো ঘটনার জন্য অপেক্ষা করতে হয় বহু বছর। এবার এমনই এক মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ববাসী। যা এর আগে হয়েছিল ১৮ বছর আগে। আবার এই ঘটনা দেখতে চাইলে অপেক্ষা করতে হবে আরও ১৮ বছর।
আমাদের সৌরজগতের প্রধান পাঁচটি গ্রহ শুক্রবার থেকে একই সারিতে উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে আবারও।
স্পেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোরের আগে আকাশ পরিষ্কার থাকলে বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনিগ্রহ দেখার জন্য খালি চোখই যথেষ্ট।
তবে বুধগ্রহকে দেখার জন্য এটিই বিশেষ সুযোগ, সাধারণত সূর্যের উজ্জ্বল আলোর কারণে বুধ অস্পষ্ট থাকে।
বলা হচ্ছে পাঁচটি গ্রহের অর্ধাকার চাঁদের মতো এই সংযোগ শুক্রবার সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে এবং বিশ্বের অধিকাংশ জায়গায় সোমবার পর্যন্ত দেখা যাবে।
মহাকাশ বিজ্ঞানী এবং সোসাইটি ফর পপুলার অ্যাস্ট্রোনমির প্রফেসর লুসি গ্রিন ব্যাখ্যা করেছেন যে, ‘মুক্তোর একটি মালার মতন দিগন্তের কাছাকাছি থেকে তা ছড়িয়ে পড়বে।’
শেষবার গ্রহগুলোর এই অর্ধচন্দ্রাকৃতির সংযোগ ঘটেছিল ২০০৪ সালে। পরে আবার এই সংযোগ দেখতে চাইলে অপেক্ষা করতে হবে ২০৪০ সাল পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:পৃথিবীর বাইরে বুদ্ধিমত্তার খোঁজে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে আসছে বিজ্ঞানীরা, তবে তেমন কিছুর দেখা এখনও পাওয়া যায়নি। অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রায়ই এলিয়েনের অস্তিত্বের বিভিন্ন প্রমাণ সামনে নিয়ে এলেও শেষ পর্যন্ত সেই প্রমাণগুলো আর টেকেনি।
সবশেষ চীনের একটি রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তি পত্রিকায় বলা হয়, দেশটির গবেষকরা দাবি করেছিলেন, তারা খুব সম্ভবত তাদের রেডিও টেলিস্কোপ ‘স্কাই আই’তে বুদ্ধিমান এলিয়েনদের পাঠানো সংকেত পেয়ে থাকতে পারে।
তবে লাইফ সায়েন্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এলিয়েন গবেষকদের এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
চীনে প্রাপ্ত এলিয়েন সংকেত গবেষণা প্রকল্পের একজন সহ-লেখক ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবীর বাইরে বুদ্ধিমত্তা খোঁজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সার্চ ফর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এসইটিআই) গবেষক ড্যান ওয়ারথিমার যিনি প্রথম সংকেতগুলো দেখেছিলেন তিনি লাইফ সায়েন্সকে বলেছিলেন, এটি মানব হস্তক্ষেপ (ন্যারো ব্যান্ড রেডিও সিগন্যাল) থেকে এসেছে, বহির্জাগতিক বিষয় নয়।
সাধারণত ন্যারো ব্যান্ড রেডিও সংকেতগুলো প্রাকৃতিক উৎস থেকে সৃষ্টি হয় না।
স্কাই আই টেলিস্কোপের সংকেত ধারণের মতো ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০১৯ সালেও বিজ্ঞানীরা এমন একটি সংকেত শনাক্ত করে, যা তারা ধারণা করেছিলেন প্রক্সিমা সেন্টোরি থেকে এসেছে, যেখানে অন্তত সম্ভাব্য বাসযোগ্য গ্রহ রয়েছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
সেখান থেকে প্রাপ্ত সংকেতটিও ছিল ন্যারো ব্যান্ডের।
যদিও দুই বছরের গবেষণায় বেরিয়ে আসে যে, কারিগরি ত্রুটির কারণেই এমনটি হয়েছিল। সেটি কোনো এলিয়েন প্রযুক্তি থেকে আসা রেডিও সিগন্যাল ছিল না।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রকাশিত দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের দৈত্যাকার স্কাই আই টেলিস্কোপ পৃথিবীর বাইরে জীবনের চিহ্নের সন্ধান পেয়েছে।
যদিও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, পৃথিবীর বাইরের সভ্যতা অনুসন্ধান দলের প্রধান বিজ্ঞানী ঝাং টঞ্জি বলেছেন, সন্দেহজনক সংকেতগুলো রেডিও হস্তক্ষেপও হতে পারে এবং এর জন্য আরও তদন্তের প্রয়োজন।
দৈনিকটি পরে এ-সংক্রান্ত সব প্রতিবেদন ও পোস্টগুলো মুছে ফেলে।
তবে চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দৈনিক থেকে কেন প্রতিবেদনটি সরিয়ে দেয়া হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়।
খবরটি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবুতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবরটি চলে এসেছে।
স্কাই আই বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপ। এটি ন্যারো-ব্যান্ড ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যালে কাজ করে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে বহির্জাগতিক প্রাণের অনুসন্ধান শুরু করে স্কাই আই। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম গুইঝো প্রদেশে এর অবস্থান। টেলিস্কোপটির ব্যাস ৫০০ মিটার (১ হাজার ৬৪০ ফুট)।
ঝাংয়ের মতে, কম ফ্রিকোয়েন্সির এই রেডিও ব্যান্ড টেলিস্কোপ স্কাই আই অত্যন্ত সংবেদনশীল। বহির্জাগতিক প্রাণের সন্ধানে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন:বরিশালের নথুল্লাবাদে হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
ভারতের দেয়া সহজ শর্তে অর্থায়নে দেশের ১২ জেলায় ১২টি হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের অংশ হিসেবে বরিশালে এর কাজ শুরু হলো।
প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে পলক বলেন, ‘এই হাইটেক পার্ক বরিশালের তরুণদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার। আমরা ছিলাম শ্রমনির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রযুক্তিনির্ভর করতে কাজ করছেন।
‘বরিশালে সাড়ে ছয় একর জমিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণ হবে। আগেই এখানে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ হয়েছে। ১৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত তলা হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হলো।’
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ‘এখানে সুস্থ বিনোদনের সিনেপ্লেক্স নির্মাণ হবে, এ জন্য প্রধানমন্ত্রী ২০ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে ২০০ কোটি টাকায় সাড়ে ছয় একর জমিতে তরুণদের কর্মসংস্থান এবং বিনোদনের জন্য এই হাইটেক পার্ক নির্মিত হচ্ছে।
‘ভারতের কাছ থেকে আমরা ঋণ সহায়তা পেয়েছি। সারা বাংলাদেশে হাইটেক পার্ক নির্মাণের জন্য প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে খুব সহজ শর্তে ভারত ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে এই হাইটেক পার্ক নির্মাণ শেষ হলে এক হাজার তরুণ-তরুণীকে সরাসরি প্রশিক্ষণ দেব। প্রতি বছর তিন হাজার জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বরিশালকে সিলিকন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে এই হাইটেক পার্ক কাজ করবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাইটেক পার্ক প্রকল্পের পরিচালক এ কে এ এম ফজলুল হক, বরিশাল মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার প্রলয় চিসিম, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বরিশাল চেম্বার সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু।
আরও পড়ুন:ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকায় ব্ল্যাক ডেথ মহামারিতে কয়েক কোটি লোক মারা যায়। ১৪ শতকের মাঝামাঝি সময়ে দেখা দেয়া এই স্বাস্থ্য বিপর্যয় মানব ইতিহাসে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সংক্রামক ঘটনাগুলোর একটি। ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৩০ থেকে ৬০ ভাগ এই ব্ল্যাক ডেথে মারা যায়।
ন্যাচারের প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, এবার এই ব্ল্যাক ডেথ মহামারির ৬০০ বছর পরে এসে গবেষকরা বলছেন তারা এই মহামারির উৎসের সন্ধান পেয়েছেন। বছরের পর বছর গবেষণা করেও এত দিন এর উৎস ছিল অজানা।
গবেষকরা বলছেন, এর সূত্রপাত ১৩৩০-এর দশকে মধ্য এশিয়ার কিরগিজস্তানে। সেখানে দুটি কবরস্থান কারা ডিজিগাচ ও বুরানা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তারা।
ধারণা করা হয়, মহামারির কারণে মারা যাওয়া লোকদের এই কবরস্থানগুলোতে সমাধিস্থ করা হয়েছে। এই কবরস্থানের সমাধিফলকগুলোতে মৃত্যুর তারিখও লেখা আছে। এই কবরস্থানগুলো আইসিককুল হ্রদের কাছে অবস্থিত।
মহামারির কারণে ১৩৩৮ থেকে ১৩৩৯ সালে সেখানে সমাধিগুলোর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ স্টার্লিং, জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ও ইউনিভার্সিটি অফ টিউবিনজেনের গবেষণা দল ৭টি কঙ্কালের দাঁত থেকে প্রাচীন ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন।
টিউবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডা. মারিয়া স্পাইরু বলেছেন, দলটি সাতটি কঙ্কাল থেকে ডিএনএ সিকোয়েন্স করেছে।
গবেষকদল এসব নমুনার তিনটিতে প্লেগ, ব্যাকটেরিয়া ও ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে।
তাই গবেষকদের দাবি চৌদ্দ শতকের প্রথম দিকেই এই মহামারির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। যদিও ব্ল্যাক ডেথের ভয়ংকর সময়সীমা বলতে বোঝানো হয়, ১৩৪৬ থেকে ১৩৫৩ সাল পর্যন্ত।
প্লেগ একটি সম্ভাব্য প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়াবাহিত সংক্রামক রোগ। প্রধানত এর বাহক হলো ইঁদুর ও মাছি। ইয়েরসেনিয়া পেস্টিস ব্যাকটেরিয়া এই রোগের উত্তরসূরি।
এর মধ্যে বুবোনিক প্লেগে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই রোগে আক্রান্ত নারী ও পুরুষ কবজি ও বগলের স্থানে টিউমারের মতো কোনো কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করে। ধীরে ধীরে সেগুলো বড় হতে থাকে।
একপর্যায়ে এটি আপেল বা ডিমের মতো আকার ধারণ করে ও ছড়িয়ে পড়তে থাকে। কালো রঙের এই ফোড়া অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয় এবং রোগাক্রান্ত ব্যক্তির সারা শরীরে এটি দেখা যায়। একপর্যায়ে এগুলো পচে যায় ও পুঁজ বের হতে থাকে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে মারা যায়।
২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩ হাজার ২৪৮ জনের প্লেগ শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৮৪ জন মারা যায়।
ঐতিহাসিকভাবে এই প্লেগকে ব্ল্যাক ডেথ বলা হয়, কারণ এই রোগে আক্রান্ত হলে হাত-পায়ের আঙুল কালো হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:এই বিশাল মহাবিশ্বের সীমা মানুষের অজানা। মানুষ যখন মহাবিশ্বের বিশালতার বিষয়ে ধারণা লাভ করতে পেরেছে, তখন একটি মৌলিক প্রশ্ন দাঁড়িয়ে গেছে, মহাবিশ্বে আমরা কী একা? আর এই উত্তর খুঁজতে দর্শনের পাশাপাশি মানুষ এখন দ্বারস্থ হচ্ছে বিজ্ঞানেরও।
এর উত্তর খুঁজতে আমাদের চেনা পৃথিবীর বাইরে বহির্জাগতিক প্রাণের সন্ধানের জন্য আস্ত একটি রেডিও টেলিস্কোপ বসিয়েছে চীন। আর সেই টেলিস্কোপেই ধরা পড়েছে রহস্যজনক সংকেত। চীন বলছে, পৃথিবীর বাইরে প্রাণের প্রমাণ তারা সম্ভবত পেয়ে গেছে।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের দৈত্যাকার স্কাই আই টেলিস্কোপ পৃথিবীর বাইরে জীবনের চিহ্নের সন্ধান পেয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, পৃথিবীর বাইরের সভ্যতা অনুসন্ধান দলের প্রধান বিজ্ঞানী ঝাং টঞ্জি বলেছেন, সন্দেহজনক সংকেতগুলো রেডিও হস্তক্ষেপও হতে পারে এবং এর জন্য আরও তদন্তের প্রয়োজন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, দৈনিকটি পরে এ-সংক্রান্ত সব প্রতিবেদন এবং পোস্টগুলো মুছে ফেলে।
তবে চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দৈনিক থেকে কেন প্রতিবেদনটি সরিয়ে দেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
খবরটি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবুতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবরটি চলে এসেছে।
স্কাই আই বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপ। এটি ন্যারো-ব্যান্ড ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যালে কাজ করে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে বহির্জাগতিক প্রাণের অনুসন্ধান শুরু করে স্কাই আই। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম গুইঝো প্রদেশে এর অবস্থান। টেলিস্কোপটির ব্যাস ৫০০ মিটার (১ হাজার ৬৪০ ফুট)।
ঝাংয়ের মতে, কম ফ্রিকোয়েন্সির এই রেডিও ব্যান্ড টেলিস্কোপ স্কাই আই অত্যন্ত সংবেদনশীল। বহির্জাগতিক প্রাণের সন্ধানে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন:পৃথিবীর স্থলভাগে আমরা এখন বিশাল বিশাল প্রাণী বিচরণ দেখতে পাই, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো হাতি। এ ছাড়া বড় প্রাণীর মধ্যে রয়েছে ঘোড়া, উটপাখি, ইমু। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো এই প্রতিটি প্রাণীই সাঁতার কাটতে জানে। তাই প্রশ্ন ওঠে। প্রাগঐতিহাসিক যুগের প্রাণী, বিশেষ করে টি-রেক্সের মতো বিশাল ডাইনোসর কি সাঁতার কাটতে পারত?
ডেভিড এটেনবোরোর তত্ত্বাবধানে অ্যাপল টিভিতে সদ্য মুক্তি পাওয়া প্রিহিস্টোরিক প্ল্যানেটে বলা হয়েছে, এই পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত আবির্ভাব হওয়া সব প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর শিকারি প্রাণী টি-রেক্সও সাঁতার কাটতে পারত। অথচ টি-রেক্সের উচ্চতা ছিল ৩০ মিটার আর একটি প্রাপ্ত বয়স্ক টি-রেক্সের ওজন ১০ টনের মতো।
এরই মধ্যে অনেক নদী ও হ্রদের তলদেশের স্তরে থেরোপড ডাইনোসরের সাঁতারের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আর টাইনোসরাস রেক্স বা টি-রেক্স হলো থেরাপড প্রজাতিরই ডাইনোসর।
সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে গবেষকরা জানতে পারে যে থেরাপড প্রজাতির ডাইনোসরের হাড় ছিল পাখির মতোই ফাঁপা এবং এর পাও ছিল পাখির অনুরূপ।
থেরাপড প্রজাতির ডাইনোসর হওয়ায় টি-রেক্সের ফাঁপা হাড়গুলো তাকে পানিতে ভেসে থাকতে সাহায্য করত এবং এর শক্তিশালী দুটি পা দিয়ে সে পানিতে সাঁতার কেটে বেড়াত। ফসিল রেকর্ডেও সরাসরি এর প্রমাণ রয়েছে।
তবে স্থলভাগের ভয়ংকর শিকারি টি-রেক্স অনেক ক্ষেত্রে সমুদ্রের জলে নেমে নিজেই শিকারে পরিণত হতো। প্রাগৌতিহাসিক যুগে সমুদ্রে বাস করত বিশালাকার শিকারি প্রাণী মোজেসরস। সাগরে সাঁতার কাটার সময় কম বয়সী টি-রেক্সগুলোই হতো মোজেসরসের শিকার।
আরও পড়ুন:মানুষটা বড় একা কি না, সে প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য তার মুখের দিকে অন্তত তাকাতে হয়। বলতে হয় কথা। এরপর বেরিয়ে আসতে থাকে মনের গহিনে থাকা নিঃসঙ্গতার শব্দ, বাক্য। তবে এবার বোধহয় আর এতকিছুর দরকার হবে না।
শুধু রক্ত পরীক্ষাতেই কারও নিঃসঙ্গতার খবর জানা যাবে বলে দাবি করেছেন জাপানের একদল গবেষক। রক্তে থাকা নানা উপাদানে মিলবে এই তথ্য। ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়েছে।
সব মিলিয়ে ৮৩ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা। এ পরীক্ষায় এমন তথ্য মিলেছে, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে কেউ কেউ সমাজে থেকেও মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন। বেশ নিঃসঙ্গ কেউ কেউ।
যারা নিঃসঙ্গ তাদের রক্তে অ্যাকিলকারনিটাইন নামের এক পদার্থ পাওয়া গেছে। এর কারণে হৃদরোগে ভুগতে পারে মানুষ। কেউ বিষণ্নতায় ভুগলে রক্তে এই উপাদানের উপস্থিতির কারণে তা বোঝা যাবে।
ডায়ালগস ইন ক্লিনিক্যাল নিউরোসায়েন্স নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা প্রতিবেদন। মানুষের একাকিত্বের মূল উৎস বোঝার এটিই প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করছেন গবেষকরা।
মন্তব্য