ক্যানসার চিকিৎসায় যুগান্তকারী এক অর্জনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অস্ত্রোপচার ও থেরাপির মতো চিকিৎসা ছাড়া কেবল ওষুধে ক্যানসার নিরাময়ের দ্বারপ্রান্তে মানুষ। সাম্প্রতিক এক ট্রায়ালে এমন সাফল্য মিলেছে।
রেকটাল (মলদ্বার) ক্যানসারে আক্রান্ত ১৮ জন রোগীকে টানা ৬ মাস ধরে একই ধরনের ওষুধ দেয়া হয়েছিল। ফলে দেখা গেছে, প্রতিটি রোগীর ক্যানসার সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়ে গেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, একটি ছোট ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে মলদ্বারের ক্যানসারে আক্রান্ত ১৮ জন রোগী প্রায় ছয় মাস ধরে প্রতি মাসে তিন সপ্তাহ করে ডস্টারলিম্যাব (Dostarlimab) নামে একটি ওষুধ সেবন করেন।
ট্রায়ালে অংশ নেয়া সব রোগীর ক্যানসার একই পর্যায়ে ছিল। মলদ্বার থেকে তা দেহের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়েনি। পরীক্ষামূলক এই চিকিৎসার পর ওই রোগীদের প্রত্যেকের মলদ্বারে বাসা বাঁধা টিউমার অদৃশ্য হয়ে যায়।
ডস্টারলিম্যাব হলো ল্যাবরেটরিতে উত্পাদিত অণুসহ একটি ওষুধ, যা মানবদেহে বিকল্প অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে। এই ওষুধ সেবনের ফলে একপর্যায়ে দেখা যায় তাদের মলদ্বারে সৃষ্ট টিউমারের কোনো অস্তিত্ব নেই। পরবর্তীতে এন্ডোস্কপি, পজিট্রন নির্গমন টমোগ্রাফি বা পিইটি স্ক্যান বা এমআরআই স্ক্যানেও টিউমারগুলোর অস্তিত্ব ধরা পড়েনি।
নিউ ইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারের ডা. লুইস এ. ডিয়াজ জে বলেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসার ইতিহাসে এটি প্রথমবারের মতো ঘটেছে।‘
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত রোগীরা তাদের ক্যানসার নির্মূল করার জন্য কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন এমনকি জটিল অস্ত্রোপচারও করান। তাতে কোনো ফল মেলেনি। উল্টো এসব চিকিৎসা নিতে গিয়ে অন্ত্র ও প্রস্রাবের সমস্যা এমনকি যৌন সক্ষমতা হারানোর মতো ঝুঁকির মুখে পড়েন।
প্রচলিত এসব চিকিৎসায় ফল না পেয়ে শেষ আশা নিয়ে তারা পরীক্ষামূলকভাবে ডসটারমিল্যাব ওষুধ সেবনের এই ট্রায়ালে নাম লেখান। যা হোক, ট্রায়ালে এমন ওষুধনির্ভর চিকিৎসা তাদেরকে নতুন জীবন দিয়েছে। মরণব্যাধি ক্যানসার থেকে তারা পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করেছেন।
ক্যানসারের পরীক্ষামূলক চিকিৎসায় এমন অভাবনীয় ফল চিকিৎসা জগতে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলোরেক্টাল ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যালান পি ভেনুক এই ঘটনাকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন। সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এমন একটি রোগের চিকিৎসা ট্রায়ালে প্রতিটি রোগীর আরোগ্য লাভের এমন ঘটনা আগে কখনই শোনা যায়নি। এমন ঘটনা চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই প্রথম। এর আরেকটি ইতিবাচক দিক হলো, ট্রায়ালে অংশ নিয়ে আরোগ্য লাভ করা কোনো রোগীই উল্লেখযোগ্য কোনো জটিলতার মুখে পড়েননি।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলেন মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টার এবং গবেষণাপত্রের সহলেখক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. আন্দ্রেয়া সেরসেক। তিনি জানান, ট্রায়ালে অংশ নেয়া রোগীরা খবরটি জানার মুহূর্ত ছিল খুবই আবেগঘন। ক্যানসারমুক্ত হওয়ার খবর জানার পর আবেগে অনেক রোগী কেঁদে ফেলেন। তা ছিল খুশির কান্না।’
এদিকে ক্যানসার গবেষকরা ট্রায়ালে ব্যবহার করা ওষুধ ‘ডস্টারলিম্যাব’ নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, ট্রায়াল চিকিৎসায় পাওয়া এমন চমকপ্রদ ফল আশাব্যঞ্জক। তবে এটি ক্যানসার আক্রান্ত অন্য সব রোগীর চিকিৎসায়ও সমভাবে ফলদায়ক হবে কি না তা দেখার জন্য বড় আকারের ট্রায়াল প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।
এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।
জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ
তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক জেফরি ই. হিন্টন।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।
এতে উল্লেখ করা হয়, হপফিল্ড একটি কাঠামো নির্মাণ করেন, যেটি তথ্য মজুত ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে। অন্যদিকে হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডেটাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রোপার্টি আবিষ্কার করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহদাকার স্নায়বিক নেটওয়ার্কের জন্য এ উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। আজকের আগে ১১৭ জন এ পুরস্কার পান।
এ শাস্ত্রে সবচেয়ে কম ২৫ বছর বয়সে নোবেল পান লরেন্স ব্র্যাগ, যিনি ১৯১৫ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি ৯৬ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান আর্থার অ্যাশকিন। তিনি ২০১৮ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করবে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
পুরস্কার ঘোষণার সব তথ্য নোবেলপ্রাইজ নামের ওয়েবসাইটে গিয়ে সরাসরি দেখা যাবে। এ বছরের নোবেল পুরস্কারের সমস্ত ঘোষণা nobelprize.org ও নোবেল পুরস্কার কমিটির ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রথা অনুযায়ী অক্টোবরের প্রথম সোমবার হিসেবে এবার ৭ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
যৌথভাবে ২০২৪ সালের চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল পুরস্কার জিতে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকান।
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নোবেল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি ‘মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য’ ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রাভকানকে সোমবার চিকিৎসা বা ওষুধশাস্ত্রে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার-২০২৪ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৯০১ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান জার্মানির নাগরিক ভিলহেল্ম কনরাড রন্টগেন। এক্সরে বা রঞ্জন রশ্মি আবিষ্কার এবং এবং এ ধরনের রশ্মির যথোপযুক্ত ব্যবহারিক প্রয়োগে সফলতা অর্জনের জন্য তিনি এ পুরস্কার পান।
আরও পড়ুন:চলতি বছর চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার ও জিন নিয়ন্ত্রণে এর ট্রান্সক্রিপশন-পরবর্তী ভূমিকাবিষয়ক গবেষণার জন্য তাদেরকে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এই আবিষ্কার কোনো প্রাণীর দেহ গঠন ও কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোমে এ বছরের চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস।
ভিক্টর অ্যাবব্রোস ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এছাড়া ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত একই প্রতিষ্ঠানে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যামব্রিজ, ম্যাসাচুয়েটসের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুসেটস মেডিক্যাল স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল সায়েন্সের প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন।
নোবেল জয়ী গ্যারি রাভকুন ১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রধান গবেষক হন। বর্তমানে তিনি এখানেই জেনেটিকসের প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চিকিৎসাশাস্ত্রে গত বছর নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন ক্যাথলিন কারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান। এমআরএন করোনা টিকা আবিষ্কারের জন্য তাদেরকে পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘নোবেল’, যা ১৯০১ সাল থেকে দেয়া হয়ে আসছে। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামানুসারে।
উনবিংশ শতকে এই বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হন। তিনি উইল করে যান যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য এই পাঁচটি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে এই পাঁচ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতিও।
আরও পড়ুন:প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগেই জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপনের কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি অবহিতকরণ নিয়ে বৃহস্পতিবার এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্পটিতে চুরির কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
গতকাল সকালে সাভারের গণকবাড়ি এলাকায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োটেকনোলজিতে (এনআইবি) এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনার শেষে প্রধান অতিথি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমার এখানে পরিষ্কার একটা কথা যে, আমার এখানে কেউ চুরিচামারি করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পশুপাখি থেকে আরম্ভ করে সবকিছুর জিন আমরা এখানে রক্ষা করব, যাতে এটা আবার ভবিষ্যতে আমরা এখান থেকে তৈরি করতে পারি। এটা বঙ্গবন্ধুকন্যার নিজের চিন্তা থেকে নেয়া এবং আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে এটা আমরা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মেধা কাজে লাগাতে পারলে জ্ঞান-বিজ্ঞানে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো। আওয়ামী লীগ সরকার গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপনের কাজ চলছে।’
আনুমানিক ৫০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এনআইবি এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালের মার্চ মাসে, যা ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪০ লাখ নমুনা ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জিন ব্যাংক স্থাপন করা হচ্ছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগেই সব কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন এনআইবির মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহ।
তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ টেকসই ব্যবহারের জন্য উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীব প্রভৃতির জেনেটিক উপাদান সংগ্রহ ও দীর্ঘমেয়াদে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্দেশ্যে এই জিন ব্যাংক স্থাপন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয়ভাবে এ সম্পদ সংরক্ষণ এবং এদের ডাটাবেজ প্রণয়ন করা হবে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিসহ এনআইবির বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:মঙ্গগ্রহে পানির অস্তিত্বের ব্যাপারে আগেই জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার এক গবেষণায় জানা গেছে, লাল এই গ্রহের সবচেয়ে উঁচু আগ্নেয়গিরিতে বরফের আকারে পানি রয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ টন।
একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের দ্বারা দ্বারা পরিচালিত এই গবেষণায় মঙ্গলগ্রহের সবচেয়ে উঁচু আগ্নেয়গিরি অলিম্পাস মনসের ওপরে বরফের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা এই গ্রহে বিরল কিন্তু সক্রিয় জলচক্রের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
এ বিষয়ে নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, মঙ্গলগ্রহের ঠান্ডা ঋতুতে প্রতিদিন সকালে কয়েক ঘণ্টার জন্য থারসিস আগ্নেয়গিরি অঞ্চলের প্রাচীন ক্যালডেরাসে তুষারপাত হয়। মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে আর্দ্র বাতাস আগ্নেয়গিরির ঢালে পৌঁছায়। যখন এই বাতাস ঠান্ডা ক্যালডেরাসে পৌঁছায়, তখন এটি ঘনীভূত হয় এবং তুষারপাতের সৃষ্টি করে। এর ফলে তৈরি বরফের পাতলা স্তরটি মঙ্গলগ্রহের অনেক বড় এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, যা দেখে অনুমান করা যায়, সেখানে প্রায় দেড় লাখ টন পানি থাকতে পারে, যা পৃথিবীর ৬০টি বড় সুইমিং পুলের পানির সমান।
বিজ্ঞানীরা এই প্রথম মঙ্গলের বিষুবরেখার এত কাছে বরফের আকারে পানির সন্ধান পেলেন। এর আগে তাদের ধারণা ছিল, পাতলা বায়ুমণ্ডল ও তীব্র সূর্যালোকের কারণে সেখানে বরফের স্তর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
গবেষকদলের পক্ষে অ্যাডোমাস ভালান্টিনাস বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এরকম স্তর থাকা অসম্ভব। তবে এখন মনে হচ্ছে, ওই অঞ্চলে আগে সম্ভবত তুষারপাত হয়েছিল।’
তিনি বলেন, পাঁচ বছর ধরে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়েছেন। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ও মার্স এক্সপ্রেস অরবিটারের তথ্য এবং ৩০ হাজার ছবি খতিয়ে দেখে তারা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন।
এর ফলে তারা ধারণা করছেন, সেখানে অবশ্যই আগে বৃষ্টি হয়েছিল এবং সম্ভবত তুষারপাতও হয়েছিল। তারপরই এই বরফ ক্যালডেরাসে জমা হয়।
মন্তব্য