থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধযোগ্য নীরব ঘাতক। বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া বাহকের সংখ্যা দেড় থেকে ২ কোটি বলে মনে করা হয়। প্রতি বছর নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ হাজার। তবে সচেতনতার অভাব ও শনাক্ত না হওয়ায় প্রতিনিয়ত এ রোগের বাহক ও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এ রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনও অপ্রতুল। বাড়েনি সেবার মান। চিকিৎসা ব্যবস্থা ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় সবচেয়ে বেশি অবহেলিত গ্রামের রোগীরা। সংকট রয়েছে বিশেষজ্ঞেও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীকে প্রতিনিয়িত অন্যের দান করা রক্ত নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। রোগীরা নিয়মিত রক্ত নিলেও অনেক ধরনের সমস্যা হয়, ফলে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়। আমাদের দেশে বেশির ভাগ রোগী পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যানটেশনের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি মেলে। তবে সেই চিকিৎসা ব্যবস্থাও দেশে গড়ে ওঠেনি। এই রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা ও রোগ শনাক্তে জোর দেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হেলাল থ্যালাসেমিয়া রোগী । তার বসবাস রাজধানীতে। বয়স ২২ বছর। দুই বছর বয়স থেকে এ রোগ দেহে বহন করছেন হেলাল। প্রতি মাসে দুই বার হেলালের শরীরে রক্ত দিতে হয়। গত ২০ বছরে প্রায় ৪৮০ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে তাকে। এই রক্তের যোগান দিতে প্রতিবারই দুশ্চিন্তায় ও ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাকে। ইতোমধ্যে তার শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। পায়ের ও হাতের হাড় ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।
হেলালের ছোট ভাইও থ্যালাসেমিয়া রোগী। হেলাল জানান, সবচেয়ে বেশি কঠিন রক্তের ব্যবস্থা করা। প্রতি মাসে চার ব্যাগ রক্ত লাগে দুই ভাইয়ের জন্য। প্রতিদিনই ডোনার খুঁজতে হয়। রক্ত দানের সুফল সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকেই রক্ত দিতে চায় না। হেলালের আকুতি, দেশের সব জাগায়ায় থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা সহজকরণ ও বিনামূল্যে এই রোগীদের ওষুধ পাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। ৬৪ জেলায় যাতে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে ও এই রোগের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করতে সঠিক প্রচার-প্রচারণা থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিয়ের আগে অবশ্যই সবার হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফরেসিস পরীক্ষার করা উচিৎ। তাহলে সন্তান সুস্থ থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসারা বলেন, থ্যালাসেমিয়া মানুষের জীনগত ক্রুটিজনিত রোগ। রোগটির চিকিৎসায় বিভাগীয় শহরে হাতেগোনা কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া এখনও জেলা-উপজেলা জেলা পর্যায়ে সেবা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এমনকি সেবাদানের জন্য সারা দেশে ১৩৫ জনের মতো রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। এতে করে অধিকাংশ থ্যালাসেমিয়া বাহক শনাক্তের বাইরে থেকে যাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক গবেষণা না থাকলেও বায়োমেডিকেল রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (বিআরএফ) উদ্যোগে ২০১৭ সালে ‘থ্যালাসেমিয়া ইন সাউথ এশিয়া: ক্লিনিক্যাল লেসনস লার্ন্ট ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণা করা হয়। সেই গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের শতকরা ১০-১২ শতাংশ মানুষ এ রোগের বাহক; অর্থাৎ প্রায় দেড় থেকে ২ কোটি মানুষ তাদের অজান্তে এ রোগের বাহক। তবে এই সংখ্যা অনেক বেড়েছে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
রক্ত জোগাড় বড় চ্যালেঞ্জ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, দেশে চাহিদার মাত্র ৩১ শতাংশ রক্ত সংগ্রহ করা হয় স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতার মাধ্যমে। যে রোগীদের নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন করতে হয়, তাদের প্রতি মাসে ১ থেকে ৪ ব্যাগ রক্ত জোগাড় করতে হয়। ৮০ শতাংশ পরিবার সন্তানের জন্য নিয়মিত রক্ত জোগাড় করতে সমস্যার মুখে পড়েন এবং দেশে বহুল পরিচিত ব্লাড ডোনার ক্লাব ও সংস্থা থেকে তারা আশানুরূপ সাপোর্ট পান না। কমিউনিটি লেভেলে রক্তের বড় সংকট বাংলাদেশে। রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে মূলত রক্ত সংগ্রহ করা হয়।
এ বিষয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রায় ২ কোটি মানুষ এর বাহক। যাদের চিকিৎসার জন্য মাত্র ১৩৫ জন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।
হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি ১ লাখ ১১ হাজার ১১১ জন রোগীর বিপরীতে মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ সেবা দিচ্ছেন, যদিও এই সংখ্যা ধীরে ধীর বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, রোগ নির্ণয়ে রক্তের হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফরেসিস পরীক্ষা করতে হয়। তবে বিভাগীয় শহরের বড় মেডিকেল ছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এই পরীক্ষা নেই। সরকারি হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া শনাক্তের পরীক্ষায় ৮০০ টাকার মতো নেওয়া হলেও বেসরকারিতে উচ্চমূল্য নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির নির্বাহী পরিচালক ডা. একরামুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে সিবিসি, এইচআইভি, হেপাটইিটিস-বি ও সি, যৌনরোগ ও ম্যালেরিয়া রোগের টেস্ট করাতে হয়। এরপর শুধুমাত্র রক্তের লোহিত কণিকাকে আলাদা করে রোগীর দেহে প্রয়োগ করতে হয়, যা বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির হাসপাতালে স্বল্প খরচে হলেও বেসরকারি মেডিকেলে বেশি লাগে। এ ছাড়া এ রোগের ওষুধগুলো বাইরের দেশের হওয়ায় দামও বেশি। ফলে অনেকে খরচ জোগাতে হিমশিম খান।’
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির উপদেষ্টা সৈয়দ দিদার বখত বলেন, ‘রোগটি নিরাময়ে এখন পর্যন্ত কোনো পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি। ফলে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লানটেশন ও ওষুধ সেবন একমাত্র উপায়। কিন্তু উচ্চমূল্যের এই ট্রান্সপ্লানটেশন সবার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আবার গ্রামাঞ্চলে থ্যালাসেমিয়া শনাক্তের ব্যবস্থা না থাকায় রক্তশূন্যতা মনে করে অনেকে ভুল করে আয়রন জাতীয় ওষুধ সেবন করছেন, যা রোগীকে মারাত্মক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতির উদ্যোগে কয়েক বছর আগে ১২শ প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের ওপর এক জরিপ করা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ শতাংশ থ্যালাসেমিয়া পজিটিভ ছিলেন। সমিতির উদ্যোগে এখন পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় ৫ হাজার মানুষের স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
‘শিগগিরই পার্বত্য অঞ্চলে জরিপ চালোনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া রোগটির চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতদের ধারণা, দেশে মোট জনসংখ্যার ১০ থেকে ১২ শতাংশ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। এর সঙ্গে প্রতি বছর নতুন করে ৯ থেকে ১২ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু জন্ম নিচ্ছে।’
দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি
এমন পরিস্থিতিতে রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সারা বিশ্বের মতো রোববার দেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া ফেডারেশন এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে: ‘বি অ্যাওয়ার, শেয়ার, কেয়ার’ অর্থাৎ ‘থ্যালাসেমিয়া: নিজেই জানি, যত্নবান হই, অপরকে সচেতন করি।’
আরও পড়ুন:৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য