যৌন সম্পর্কের একান্ত মুহূর্তে একেবারে আদিম আবেগের মুখোমুখি হওয়ার অনুভূতিতে আক্রান্ত হন অনেকে। এ কারণে যৌন মিলনের পর অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ভিত্তিক সাইট ভাইস যৌন স্বাস্থ্য ও মানসিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে কারণটি বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছে। ভাইসের প্রতিবেদন অবলম্বনে লিখেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
২৮ বছর বয়সী লেখক জোহরা গত বছর বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে প্রথম মিলনের পর অঝোরে কেঁদেছিলেন। কান্না থামাতে পারছিলেন না তিনি।
এমন না যে তারা সেবারই প্রথম মিলিত হয়েছেন। ১০ বছর তারা একসঙ্গে আছেন, সঙ্গমও করেছেন। তবে জোহরা জানান, ব্যাখ্যাতীত কোনো কারণে বিয়ে পরবর্তী সময়ে সহবাসজনিত কান্না তাদের যৌন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে।
জোহরার কান্না তার সঙ্গীকে বিভ্রান্ত করে। কোনো আঘাত পেয়েছেন কিনা এমন শঙ্কা থেকে স্বামী তাকে বারবার জিজ্ঞেস করেন, ‘কী হয়েছে?’
জোহরা তাকে আশ্বস্ত করেন, সবকিছু ঠিক আছে। অভিভূত হওয়ার স্বাভাবিক অনুভূতি ছাড়া তার আসলে কেমন বোধ হয় তা তিনি নিজেই বুঝতে পারেন না।
জোহরা বলেন, ‘বিছানার বাইরে আমরা নিজেদের অনেক ধরনের মিথ্যার মোড়কে ঢেকে রাখি। এখন আমার মনে হয় মিলনের সময়ের অনুভূতিটা বিশেষ। কারণ তখন ওই মুহূর্তে কেবল আমরা দুজন এবং দুজনের মধ্যে একেবারেই ইউনিক এক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আমি জানি না গভীর আবেগ (প্যাশোনেট) শব্দটি এখানে খাটে কিনা, অথবা এমন অভিজ্ঞতার তীব্রতা বর্ণনা করার জন্য আদৌ উপযুক্ত কোনো শব্দ আছে কিনা।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, যৌন মিলনের পর এ ধরনের গভীর আবেগের প্রতিক্রিয়াটি হচ্ছে পোস্টকয়টাল ডিসফোরিয়া (পিসিডি)। এর সংজ্ঞায় বলা হচ্ছে, পরিতৃপ্ত বা সম্মতিপূর্ণ যৌনতার পরে অশ্রুসিক্ত হওয়া বা দুঃখ বোধ করা।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির পিসিডি নিয়ে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪১ শতাংশ পুরুষ জীবনের কোনো না কোনো সময়ে পিসিডির শিকার হন। আর ৪ শতাংশ বলেছেন, তারা যৌন মিলনের পর নিয়মিত কাঁদেন। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের প্রায় অর্ধেকের পিসিডির অভিজ্ঞতা রয়েছে। অনেকেই ব্যাখ্যাতীতভাবে মাসে একাধিকবার এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন।
নিউরোসাইকোলজিস্ট জসদিপ মাগো বলছেন, ‘একান্ত দুর্বল মুহূর্তে আমরা আমাদের সর্বাধিক ব্যবহার করা আবেগটিকেই কাজে লাগাই। আর অন্য কারও পাশে নগ্ন শুয়ে থাকাটি আমাদের দুর্বলতম মানসিক মুহূর্তের একটি। এ পরিস্থিতিতে একজন তার সঙ্গীর সঙ্গে নিজের গভীর আকাঙ্ক্ষা ভাগ করে নিচ্ছেন, তাকে নগ্ন দেখছেন, ভালবাসছেন ও নিজেকে পূর্ণ করার জন্য চূড়ান্ত শারীরিক সম্পর্কে যাচ্ছেন। দুর্বলতা আমাদের যৌনতার অন্যতম উপাদান।’
মাগো বলেন, ‘খারাপ খবর পেলে বা ইমোশোনাল কিছু একটা করার পর অনেকে হেসেও ফেলেন। এটা তারা কোনো আনন্দের অনুভূতির কারণে করেননি। ওই মুহূর্তে তাদের কাছে সবচেয়ে সহজলভ্য আবেগ ছিল হাসি, যা দুর্বলতার মুহূর্তে বেরিয়ে এসেছে। আমার মতো যেসব মানুষের কাছে সহজলভ্য আবেগ কান্না, তাদের ক্ষেত্রে দেখবেন তারা ঝগড়া করার সময়ও কেঁদে ফেলেছেন।’
মাগোর মতে, যে সমাজে যৌনতা ব্যাপকভাবে নিষিদ্ধ হিসেবে বিবেচিত, সেখানে যৌন মিলন অনেকের কাছে অভিভূত হওয়ার মতো একটি অভিজ্ঞতা হতে পারে। এর বিশালত্বের কারণে অপ্রত্যাশিতভাবে কান্না আসতে পারে।
২৪ বছর বয়সের কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ঋতুপর্ণার ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটেছে। ১৮ বছরে বয়সে প্রথমবার যৌন মিলনের পর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার মতে, ওই বয়সে তিনি ও তার সঙ্গীর কারোই মানসিক প্রতিক্রিয়া সামাল দেয়ার মতো অভিজ্ঞতা ছিল না। এরপর কয়েক বছরের থেরাপি ও নিজের উপলব্ধি ঋতুপর্ণাকে নিজের আবেগ ও প্রতিক্রিয়া আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে।
তিনি বলেন, ‘পূর্ব ভারতের ছোট এক শহরের রক্ষণশীল পরিবারে বড় হওয়ার কারণে যৌনতার সঙ্গে লজ্জার বিষয়টি জড়িত ছিল। ছোটবেলায় যৌনতা নিয়ে আমার ভীতিকর কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই, যখন আমি নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় যৌনমিলন করতে সক্ষম হই, তখন আমি এমন অবস্থানে আসার জন্য কৃতজ্ঞতাস্বরূপ কেঁদেছি। আমার আনন্দটি এখানে ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানতাম, এখন আমার সঙ্গে একজন মানুষের মতো আচরণ করা হবে।’
কিছু ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, সন্তান জন্মদানের পর বিষণ্নতার সম্মুখীন নারীরা যৌনতার পর কাঁদতে পারেন। এর কারণ তখন তাদের দেহে হরমোনের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। ঋতুপর্ণা বলেন, অনেকে এটিকে অক্সিটোসিন ও ডোপামিনের মতো হরমোনের ওঠানামা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তবে এ কারণে যৌনতার পরে কান্না মূলত একটি চরম আবেগ প্রকাশ করে হালকা হওয়ার প্রক্রিয়া।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জন্য একেবারেই অনন্য। আমি বিষয়টিকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। এখন পর্যন্ত আমার কান্নাকাটি নিয়ে সঙ্গীরা ছিলেন খুবই সহানুভূতিশীল। অনেক ক্ষেত্রে তারাও নিজেদের দুর্বল বা অরক্ষিত মনে করা শুরু করেছেন।’
৩২ বছর বয়সী চলচ্চিত্র নির্মাতা সৌরভ আরেকটি পরিস্থিতি তুলে ধরছেন। তার মতে, কুইয়ারের (ভিন্ন লৈঙ্গিক পরিচয়) ক্ষেত্রে ক্ষণস্থায়ী বা হালকা সম্পর্কের সঙ্গীর সঙ্গে যৌনতার পর দুর্বলতার প্রকাশ ঘটানো স্বাভাবিক নয়। আর তাই যৌন মিলনের পর সৌরভের কাঁদতে ইচ্ছা করলেও তিনি সঙ্গীর ঘর ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথম প্রথম আমি অবসাদজনিত কারণে কাঁদতাম। আমি জানি না কেন আমি এতটা যৌনতা প্রিয় মানুষ ছিলাম। সবকিছু আমার জন্য বাড়তি হয়ে যাচ্ছিল এবং আমি আর নিতে পারিনি। তবে আমি কখনও আমার ছেলেসঙ্গীর সামনে কাঁদিনি। এর কারণ হলো আমি আশা করিনি, ওরা বিষয়টি বুঝবে বা বোঝার চেষ্টা করবে।’
২৪ বছর বয়সী বিপণন ব্যবস্থাপক আসমা প্রায়ই অচেনা সঙ্গীর সঙ্গে যৌন মিলনের পর কান্নাকাটি করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করি, জীবন কি এভাবেই চলবে? আমি কি সবসময় এমন ক্ষণস্থায়ী সম্পর্কে জড়াবো? আমার জীবনে এটি বাড়তি কী যোগ করছে? যৌনতার সময় এ সবকিছুই আমার ভেতরে চলতে থাকতো এবং শেষ পর্যন্ত আমি কেঁদে ফেলতাম।’
আসমা তার আগের বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে যৌন মিলনের পরও কেঁদেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আগের সম্পর্কের মধ্যে যে নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করেছি সে কারণেই এটা ঘটেছিল। এতসময় ধরে তার টানা মনোযোগে থাকতে পারার বিষয়টি সত্যিই আমাকে অভিভূত করতো।’
মাগোর মতে গভীর আবেগতাড়িত হয়ে পড়ার অনুভূতি নেতিবাচক বা ইতিবাচক দুই-ই হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘অনেকে যৌনতার পর অনেকে কাঁদেন, কারণ যৌনতা সম্বন্ধে তাদের ধারণার সঙ্গে অভিজ্ঞতার কোনো মিল থাকে না। খারাপ যৌন সম্পর্ক অনেক সময় সম্পর্কের পদ্ধতিটিকে মনে করিয়ে দেয়। এর ফলে অনেকে চরম আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।’
যৌনতা ও যৌন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আস্থা ভোহরা বলেন, যৌনতার পরে কেন অনেকে কান্নাকাটি করে তা বুঝতে হলে যৌনতার সময় যে উদ্বেগ সেটিকেও আমলে নিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় নারীকে পর্যাপ্ত মাত্রায় লুব্রিকেটেড নাও করা হতে পারে, যা তাকে অস্বস্তিতে ফেলে। এটা বাড়তে বাড়তে কান্নায় পরিণত হয়। সম্মতিমূলক যৌনতা আমাদের প্রায় সব আবেগের একটি চ্যানেল, কারণ ওই সময়টিতে আমরা আক্ষরিক অর্থেই নগ্ন থাকি। এটি আপনাকে উদ্বেগ ও আবেগ প্রকাশের জন্য নিরাপদ একটি জায়গায় পৌঁছে দেয়। অনেকের জন্য, সেই নিরাপদ জায়গাটি অন্য কোথাও নাও থাকতে পারে।’
ইন্টিমেসি কোচ পল্লভি বার্নওয়াল আরও বলেন, যারা যৌনতার পরে কান্নাকাটি করেন, তাদের মধ্যে অনেকে হয়তো বাইরে মানসিকভাবে নিজেকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে চলেন। কারও বেড়ে ওঠার দিকে তাকালেও অনেক কিছু বোঝা যায়।
তিনি বলেন, ‘যৌনতা মূলত একটি আদিম প্রক্রিয়া যা অবচেতনভাবে আমাদের একবারে শুরুর দিককার বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দেয়। যেমনটা আমাদের মা-বাবার সঙ্গে থাকে। অতীতের কোনো ক্ষত বা ভয় অদ্ভুত ও অপ্রত্যাশিত সময়ে ফিরে আসতে পারে। আপনি যদি বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের মধ্যে থাকেন তবে অপরাধবোধ কখনও কখনও কান্নার মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে।’
কোনো ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আসন, শব্দ বা যৌনতার অন্য বিষয় অতীতের যৌন আঘাতকে উসকে দেয়। এটিও কোনো ব্যক্তিকে কান্নার দিকে পরিচালিত করতে পারে। বার্নওয়াল এসব ক্ষেত্রে থেরাপির গ্রহণের মাধ্যমে ‘মূল কারণ’ মোকাবিলার পরামর্শ দেন।
নিউরোসাইকোলজিস্ট মাগোর মতে, যৌনতার পর কান্না কোনো ধরনের অসুখ, সমস্যা বা উপসর্গ নয়। তিনি বলেন, ‘যৌনতার পর কান্না কোনো ব্যক্তির স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপকে ব্যহত করে না। যদি করে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।’
বার্নওয়ালের মতে, যৌনতার পরে কান্নার ঘটনাকে ঘিরে অস্পষ্টতা ও অভিজ্ঞতার বিস্তৃতি নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। যৌনতা একটি বহু-স্তরযুক্ত বিষয়, যেখানে সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু বোঝা যায় না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি বিষয় বুঝতে হবে, আর তা হলো, যৌনতা বিপরীতমুখী দুটি বিষয়ের মিশেল। এই দুটি বিষয় হলো আনন্দ ও বেদনা। আপনি কীভাবে বিষয়টিকে সামাল দেন বা কীভাবে আপনার সঙ্গী পুরো প্রক্রিয়ার সময় আপনাকে সহায়তা করছে তার ওপরই নির্ভর করছে সবকিছু।
‘যৌন মিলনের পর আপনার সঙ্গীর কান্নায় ভেঙে পড়া দেখলে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। অধিকাংশ সময়ে ব্যাপারটি আপনাকে নিয়ে নয়। সে সময়ে তাকে আগলে রাখুন ও ভালোবাসুন। যৌনতার পর অরক্ষিত বোধের অনুভূতি একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়।’
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মহাকাশ অভিযাত্রার গল্প শোনালেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)-এর প্রধান নভোচারী জোশেফ এম আকাবা। কথা ও গল্পে শিক্ষার্থীদের সামনে মহাশূন্যের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এই যশস্বী মহাকাশচারী।
রোববার ‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অসীম শূন্যতায় কাটানো সময়ের গল্প ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন নাসার এই নভোচারী।
জোশেফ এম আকাবা একজন অভিজ্ঞ মহাকাশচারী, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এবং একজন শিক্ষক। তিনি অনেক বার মহাকাশ মিশনে অংশ নিয়েছেন। তিনি এখন পর্যন্ত মোট ৩০৬ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন। এছাড়াও তিনি দুবার মহাকাশে হাঁটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ অনুষ্ঠানটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নাসার একজন দক্ষ মহাকাশচারীর বাস্তব অভিজ্ঞতা জানার সুযোগ করে দিয়েছে। এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নাসার বিভিন্ন মিশন সম্পর্কে ধারণা লাভের সুযোগ পেয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে জোশেফ এম আকাবা তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, মহাকাশে থাকাকালীন বিভিন্ন বিষয়, মহাকাশ অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক বিস্ময়সহ এসটিইএম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিক্স) শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ডাটা অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর ডিন প্রফেসর মাহবুবুল আলম মজুমদার। আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান।
নাসার প্রধান মহাকাশচারী তার বক্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেকেই আমাকে বলেছেন যে আমি তাদের অনুপ্রেরণা। কিন্তু আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি নিজেই অনুপ্রাণিত বোধ করছি। আপনাদের জ্ঞান অর্জনের তৃষ্ণা আমাকে অভিভূত করেছে।’
নভোচারী আকাবা তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে বলেন। তিনি বলেন, ‘একমাত্র লেখাপড়ার মাধ্যমেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করা সম্ভব।’
মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহীদের তিনি নাসার ওয়েবসাইট ভিজিটের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের উচিত নাসার ওয়েবসাইটটা ফলো করা। কারণ সেখানে অসংখ্য সুযোগ এবং পরামর্শ রয়েছে।’
জোশেফ আকাবা শিক্ষার্থীদের ভুলকে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ভুলকে ভয় পেলে চলবে না। ভুল মানুষকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়।’
তিনি শিক্ষার্থীদেরকে নিজ জীবন ও চ্যালেঞ্জের গল্প বলেন এবং কীভাবে সেই অভিজ্ঞতাগুলো তাকে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করেছে সেসব তুলে ধরেন।
সুন্দর এই পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নাসার প্রধান নভোচারী বলেন, ‘আমাদের এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। মহাশূন্যে একটিমাত্র ভুল পদক্ষেপ মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আমাদের পৃথিবীতে তেমনটা হয় না। আমার মনে হয় না এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রহ মানুষের বসবাস উপযোগী। তাই এই পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত।’
নাসার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আকাবা বলেন, ‘নাসার লক্ষ্য হলো অজানা সীমানার বাইরে অনুসন্ধান চালানো। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা অনেকদূর যেতে পারব। এজন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
মহাকাশ নিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কৌতূহল আর উচ্ছ্বাস দেখে আকাবা বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, অচিরেই এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেউ নাসার আর্টেমিস স্কোয়াডে অংশ নেবেন।’
পুরো অনুষ্ঠানে আকাবা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অফিস অফ কমিউনিকেশন্স-এর ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। তিনি তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের মহাকাশ গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি মহাকাশচারীদের তালিকায় একদিন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নাম থাকবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিএসআরএম স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিন প্রফেসর আরশাদ এম চৌধুরী, ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চেয়ারপারসন প্রফেসর সাদিয়া হামিদ কাজীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
আরও পড়ুন:বন্য খেজুর থেকে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার ও তার গবেষক দল।
বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার তৈরি বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এ অধ্যাপক।
গবেষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে প্রক্রিয়াকরণের জন্য গাজন প্রক্রিয়াটি পরিবেশবান্ধব। স্থানীয় কৃষিসম্পদ কাজে লাগিয়ে এবং অপচয় কমিয়ে এ পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতেও সহায়ক হতে পারে। গবেষণাটি বাংলাদেশের বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’
উৎপাদিত ভিনেগারটির দেশের বাজারে প্রভাব সম্পর্কে অধ্যাপক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে এই গবেষণার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ভিনেগার উৎপাদন কেবল খাদ্য ও পানীয় হিসেবে ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি প্যাকেজিং, কসমেটিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পেও ব্যবহৃত হতে পারে।
‘বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিকর ভিনেগারের চাহিদা বাড়ছে, যা বাজারে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে।’
বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় কৃষি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বাংলাদেশে বন্য খেজুর ইদানীং ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এটি বেশ সস্তা ও স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য।
‘এই খেজুর গাছ সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় এবং রাস্তার পাশের জমিতে পাওয়া যায়, তবে নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরও এই বন্য খেজুর দেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই অব্যবহৃত একটি সম্পদ।’
গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বন্য খেজুরের রস ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া মাধ্যমে ভিনেগারে পরিণত করা হয়েছে। এ গবেষণায় এক ধরনের ইস্ট ব্যবহার করে ওই রসে অ্যালকোহল তৈরি করা হয় এবং পরে অ্যাসিটোব্যাক্টর প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া দিয়ে অ্যালকোহলকে অ্যাসিটিক অ্যাসিডে রূপান্তর করা হয়।’
গবেষক আরও বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে, রসের ঘনত্ব যত বেশি হয়, তত বেশি অ্যালকোহল ও অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পায়। বেশি ঘনত্বের রসটি সবচেয়ে ভালো পুষ্টিগুণ, অ্যাসিডিটি ও ম্যাক্রো মিনারেলস (পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম) সমৃদ্ধ হয়। তাই এটি স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় পণ্যও বটে।’
গবেষণাটি বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা এলসভিয়ারের নামী সাময়িকী অ্যাপ্লায়েড ফুড রিসার্চে সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।
ভিনেগার তৈরির এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও মাঠ পর্যায়ে সফলতা সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, ‘এই গবেষণা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি নতুন আয় সৃষ্টির পথ খুলতে পারে। একদিকে খেজুর থেকে তৈরি ভিনেগারের উচ্চমান এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।’
অধ্যাপক আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাকৃবি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আরও ছয় জন গবেষক এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। বাকৃবি থেকে গবেষক দলে রয়েছেন ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলিম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. পলি কর্মকার এবং ওই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা ও আ ন ম ইফতেখার আলম।
এ ছাড়া সিকৃবির খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ফাহাদ জুবায়ের এবং ডুয়েটের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লোপা আনসারী গবেষক দলে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মানব বসতির পৃথিবী, সূর্য ও বৃহস্পতি গ্রহ একই সরলরেখায় অবস্থান করবে আগামীকাল শনিবার। এদিন সারারাত বৃহস্পতি আকাশে দৃশ্যমান থাকবে। এই অবস্থানকে বলা হয় ‘জুপিটার্স অপজিশন’। এমন বিরল মহাজাগতিক ঘটনা সৌরজগতের রহস্য ও সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের কৌতূহলকে বাড়িয়ে দেয়।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, শনিবার বৃহস্পতিকে দেখার জন্য এই সময়ের আগে-পরে এক মাস ধরে এই বিস্ময়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ থাকবে। এমনকি একটি ছোট টেলিস্কোপ বা সাধারণ দূরবীন দিয়েও এই গ্রহের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, শুক্রবার পৃথিবী থেকে প্রায় ৬১১ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ৩৮০ মিলিয়ন মাইল দূরে থাকবে বৃহস্পতি। এই দূরত্বে বৃহস্পতিকে বেশ উজ্জ্বল দেখাবে।
প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালের সন্ধান পেয়েছেন একদল গবেষক। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে তিনশ’ বছরেরও বেশি পুরনো প্রবালটি খুঁজে পান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। দৈর্ঘ্যে ১১১ ফুট ও প্রস্থে ১০৪ ফুট প্রবালটির আকার একটি পূর্ণবয়স্ক নীল তিমির চেয়েও বড়।
ধারণা করা হচ্ছে, এক বিলিয়নের বেশি ক্ষুদ্র প্রাণী ও জলজ অণুজীবের উপস্থিতি রয়েছে প্রবালটিতে। এর মাধ্যমে জলজ প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
তিনশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল এই বিশাল প্রবাল। সদ্য আবিষ্কৃত এই জলজ বিস্ময়টি এখন পর্যন্ত জানা বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক প্রবাল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
কোরাল বা প্রবাল এক ধরনের সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী। বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে থাকতে থাকতে, পুঞ্জিভূত হয়ে গঠিত হয় বিশাল প্রবাল প্রাচীর। সঙ্গে যুক্ত হয় শৈবাল, মৃত জলজ প্রাণীর দেহাবশেষ ও পলিপ। সব মিলিয়ে জীবন্ত প্রাণীর তৈরি এক আশ্চর্য স্থাপনা এই প্রবাল।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য। আজারবাইজানের বাকুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এর মধ্যেই, সমুদ্র তলদেশের অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈজ্ঞানিক অভিযান চালায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।
অনেকটা দৈবক্রমেই প্রবালটি আবিষ্কার করেন ন্যাট জিও’র ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে স্বচ্ছ পানিতে ছেলেকে নিয়ে ডুব দেন তিনি। প্রথমে এটিকে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মনে করে এগিয়ে গেলেও পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর বুঝতে পারেন জীবন্ত প্রাণীদের তৈরি অসামান্য সৌন্দর্য আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি।
গবেষকদের ধারণা, বিশ্বের বৃহত্তম জলজ প্রাণী নীল তিমির চেয়েও আকারে অনেকটা বড় এই প্রবাল।
এতোদিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়াতে থাকা ‘বিগ মামা’ প্রবালটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছিল। তবে নতুন সন্ধান পাওয়া প্রবালটি ‘বিগ মামা’র চেয়েও প্রায় তিন গুণ বড়। ৩৪ মিটার দীর্ঘ প্রবালটি এতটাই বিশাল যে ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশ থেকেও দেখা যাবে এটি।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।
এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।
জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ
তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক জেফরি ই. হিন্টন।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।
এতে উল্লেখ করা হয়, হপফিল্ড একটি কাঠামো নির্মাণ করেন, যেটি তথ্য মজুত ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে। অন্যদিকে হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডেটাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রোপার্টি আবিষ্কার করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহদাকার স্নায়বিক নেটওয়ার্কের জন্য এ উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। আজকের আগে ১১৭ জন এ পুরস্কার পান।
এ শাস্ত্রে সবচেয়ে কম ২৫ বছর বয়সে নোবেল পান লরেন্স ব্র্যাগ, যিনি ১৯১৫ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি ৯৬ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান আর্থার অ্যাশকিন। তিনি ২০১৮ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য