ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। তার নাম রিতীন ফাতেমা এলমা।
বৃহস্পতিবার রাত ১১.৩০টায় রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ ধানমন্ডি দিবা শাখার প্রধান পারভীন আক্তারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এলমা ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ ধানমন্ডি দিবা শাখার ষষ্ঠ শ্রেণির (ক শাখার) ছাত্রী।
বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, 'আমরা ভিকারুননিসা নূন পরিবারের পক্ষ থেকে তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানাই।'
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে শিশুদের সামনে বিপদ হয়ে এসেছে ডেঙ্গু। কোভিড-১৯ রোগের তুলনায় যেটিকে শিশুর জন্য বেশি ঝুঁকির বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, শেষ পর্যায়ে রোগী আসায় ঝুঁকি আরও বাড়ছে। আর করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই পরিস্থিতিতে রোগ নির্ণয়ে দেরি হওয়ায় ডেঙ্গু রোগীদের বেশি ভুগতে হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণে জ্বর যেমন হয়, ডেঙ্গুতেও তাই হয়। করোনাভাইরাস আর ডেঙ্গুর জোড়া প্রকোপে ব্যাপক মৃত্যু ঠেকাতে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও এডিস মশার বংশবিস্তার থামাতে জোর দিতে বলছেন তারা।
চাপ বাড়ছে হাসপাতালে
ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, গত কয়েকদিন ধরে এইডিস মশাবাহিত এই ভাইরাস জ্বরে যেভাবে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে, তাতে অনেক শিশুও পাচ্ছেন তারা। জ্বর, মাথা ব্যথা, চোখে ব্যথা, শরীরে ব্যথা, মুখ থেকে রক্তক্ষরণ, পেট ফুলে যাওয়া, শরীরে পানি আসা, গায়ে র্যাশ ওঠা—এসব লক্ষণ নিয়ে শিশুরা হাসপাতালে আসছে। দেশের সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী এখন মিটফোর্ড হাসপাতালে। বর্তমানে ২১৬ রোগী ভর্তি রয়েছে। দেশে এখন দ্বিতীয় সর্বাধিক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে। এই হাসপাতালে বর্তমানে ৭৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
করোনাভাইরাসের চেয়ে ডেঙ্গু বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে
ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক শফি আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, প্রতিদিনই ১৫-২০ জন শিশু ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। তার হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে ১৮ জন আইসিইউতে রয়েছে।
অধ্যাপক শফি বলেন, ‘ডেঙ্গু ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম নিয়ে আসছে। এগুলোতে অবস্থাটা বেশি খারাপ হয়ে যায়। দুই থেকে তিনটি শিশু মারা গেছে। শেষ পর্যায়ে তারা এসেছে এবং তারা কো-মরবিট কনডিশন নিয়ে এসেছে। মেনিনজাইটিস, লিউকোমিয়া আক্রান্তরা মারা যাচ্ছে।’
শিশুদের জন্য করোনাভাইরাসের চেয়ে ডেঙ্গুকে বেশি বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করে অধ্যাপক শফি বলেন, ‘কোভিডে বাচ্চাদের মাইল্ড সিম্পটম হয় এবং তাদের ঝুঁকিটা কম থাকে। কিন্তু ডেঙ্গুতে শিশুরা অনেক ঝুঁকিতে থাকে।’
এ বছর ডেঙ্গু রোগী ৭৪৭২
দেশে করোনা মধ্যে ডেঙ্গু উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। চলতি মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২০ দিনে ১৯ জনের মৃত্যু সংবাদ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সংখ্যা সাড়ে সাত হাজারের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে শুক্রবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত জানুয়ারিতে ৩২ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বছর শুরু হয়েছিল। জুনে এটা ১৭২ জনে ওঠে। জুলাই মাসে সেটিই হয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৮৬ জনে। তাতে সব মিলিয়ে এ বছরের প্রথম সাত মাসে ডেঙ্গুতে মোট শনাক্ত দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৮ জন। জুলাই থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। আগস্টে এসে চিত্রটি উদ্বেগজনক হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম শুক্রবার থেকে বিকালে জানানো হয়, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে শুধু ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি হয়েছে ২১২ জন। অন্য বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে ৯ জন।
চলতি বছর এ নিয়ে ডেঙ্গু শনাক্ত হলো ৭ হাজার ৪৭২ জনের শরীরে। এসব রোগীর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৬ হাজার ২৫১ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ১ হাজার ১৯০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ হাজার ৯৪ ডেঙ্গু রোগী। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত সাত মাসে ১২ জন মারা যায়। আর মাত্র ২০ দিনে ১৯ জনের মৃত্যু হয়।
উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে সব হাসপাতালে নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তুলনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সাড়ে সাত হাজার রোগী। তাদের মধ্যে সর্বমোট ৩১টি মৃত্যুর সংখ্যা আমরা রেকর্ড করেছি। নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা যদি রোগীর সংখ্যার দিকে তাকাই তাহলে এই শনাক্ত রোগীর বিপরীতে এতো মানুষের মৃত্যু, এটি অত্যন্ত শঙ্কার কারণ।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর প্রশাসনের জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে পৌরসভাটির চিত্র। প্রাণ ফিরে পেয়েছে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বাজার উন্নয়নের কার্যক্রম। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকাসহ ভানুগাছ বাজারের স্থানীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা তাদের অর্থ দিয়ে নির্মাণ করেছেন দোকানকোটা। যা থেকে পৌরসভা মাসিক ভাড়া গ্রহণ করতে পারবে যা পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করবে। নতুন করে নানামুখী উন্নয়নের মাধ্যমে কমলগঞ্জ পৌরসভাকে বদলে দেওয়ার কারিগর হিসেবে ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মাখন চন্দ্র সূত্রধর।
জানা যায়, কমলগঞ্জ পৌরসভার ভানুগাছ বাজারে পূর্ব ও পশ্চিম পাশের নালার ওপর প্রকল্প কর্তৃক জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার থেকে ইজিপিতে দরপত্রের মাধ্যমে ড্রেন স্ল্যাবসহ নির্মাণ করা হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। তৎকালীন পৌর মেয়র মো. জুয়েল আহমেদের সিদ্ধান্ত ছিল কালভার্টে স্ল্যাব নির্মিত হলে পূর্ব ও পশ্চিম অংশ ভবিষ্যতে পৌর কর্তৃপক্ষ সালামির বিনিময়ে সেখানে সেমিপাকা দোকান গৃহনির্মাণ করে পৌরসভার মাসিক ভাড়া গ্রহণ করতে পারবে যা পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করবে। সে লক্ষ্যে কালভার্টের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে স্ল্যাবসহ কালভার্ট নির্মিত হওয়ার পর জায়গাটি অরক্ষিত থাকায় ভানুগাছ বাজারের ব্যবসায়ীসহ খুচরা ফল বিক্রেতারা সে জায়গার ওপর ময়লা-আবর্জনা ফেলে জায়গাটি দখল করে নষ্ট করে ফেলতেছে। তাই পৌর কর্তৃপক্ষ বর্তমানে সিদ্ধান্ত নেয় যে, জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেলামির ভিত্তিতে সেমিপাকা দোকান গৃহনির্মাণ করে দিলে জায়গাটি সুরক্ষিতসহ পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
অতিসম্প্রতি একটি কুচক্রীমহল ইর্ষান্বিত হয়ে কমলগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে ভানুগাছ বাজারের দোকানকোঠা নির্মাণ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুল এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কাজী মামুনুর রশীদ, আবু তালেব, আরমান হোসেন দুলনসহ অনেক ব্যবসায়ীরা জানান, পৌরসভার এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। আরও আগে যদি এমন উদ্যোগ নেওয়া হতো তাহলে কমলগঞ্জের ভানুগাছ বাজারের চিত্র পাল্টে যেত। বর্তমানে বাজারের ভেতরে দোকান ঘর নির্মাণ ও পৌরসভার ভেতরে ড্রেনের ওপর দোকানকোটা নির্মাণ করায় পৌর এলাকার ভানুগাছ বাজারের চিত্র পাল্টে গেছে। সবগুলো চালু হলে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মানুষজন এসে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে। যা থেকে সরকার ভালো রাজস্ব আদায় করতে পারবে।
নিজ অর্থায়নে পৌরবাজারে ঘর নির্মাণ করা রাজন, পারভেজ, শুভ, বুলবুল, মুক্তাদিরসহ অনেকেই জানান, আমরা পৌরসভায় আবেদন করি। তার পরিপ্রেক্ষিতে নিজ অর্থায়নে দোকানকোটা নির্মাণ করি। যা থেকে পৌরসভা মাসিক ভাড়া আমাদের কাছ থেকে গ্রহণ করবেন। এতে করে সরকারের বাড়তি রাজস্ব আয় হবে। তারা জানান, বর্তমানে কিছু কুচক্রী মহল পৌরসভার এমন উন্নয়নের চিত্র দেখে ওঠে পড়ে লেগেছে নিন্দা করার জন্য। তারা ফায়দা লুটতে না পারায় বিভিন্ন ফেক আইডি ব্যবহার করে পৌরসভার বদনাম ছড়াচ্ছে। যা তারা কখনো সফল হতে পারবে না।
ভানুগাছ বাজার পৌর বণিক সমিতির সভাপতি ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সফি বলেন, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও বণিক সমিতির সহায়তায় বাজারে দোকানকোটা নির্মাণ করা হয়। যা পৌর বণিক সমিতির যেমন লাভ হবে, তেমন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পৌরসভার আয় বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও জানান, বর্তমান পৌর প্রশাসক যেকোনো ধরনের নাগরিক সমস্যার কথা জানালে তিনি ছুটে যান সেই সমস্যা সমাধানে। এভাবে তিনি অল্প সময়ে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। এত অল্প সময়ে প্রশাসক হিসেবে যে সকল কাজ হাতে নিয়েছেন সেগুলো ছিল পৌরবাসীর প্রাণের দাবি।
আলাপকালে কমলগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বেলাল আহম্মদ জানান, পৌরসভার ভানুগাছবাজারে ঘর নির্মাণ ও ড্রেনের ওপর দোকান কোটা নির্মাণের পর বাজারের পুরো চিত্র পাল্টে গেছে। যা আগের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এসব ঘর ও দোকানঘর থেকে পৌরসভা রাজস্ব আয় করতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত, অক্টোবর ৬, ২০০৯ সালের পৌরসভার সম্পত্তি চুক্তি ৪৪-১ (ক) বিধি মোতাবেক ‘পৌরসভার মালিকানাধীন অথবা তার ওপর ন্যস্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়নের জন্য বিধান করিতে পারিবে’ এবং ৪৪-২ (খ) বিধি মোতাবেক ‘নিজস্ব অথবা সরকার অথবা অন্য কর্তৃপক্ষ হতে প্রাপ্ত সম্পত্তির সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং উন্নতি সাধন করতে পারবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কমলগঞ্জ পৌর প্রশাসক মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, তিনি নিজের দায়বদ্ধতা থেকেই এ কাজগুলো করে যাচ্ছেন। যতদিন দায়িত্বে রয়েছেন ততদিন কমলগঞ্জ পৌর ও উপজেলার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাবেন। এ বিষয়ে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
নাটোর জেলার সেপ্টেম্বর মাসের শ্রেষ্ঠ থানা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে বড়াইগ্রাম থানা। একই সঙ্গে জেলার শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন বড়াইগ্রাম থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) রাকিবুল ইসলাম। মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও বিভিন্ন মামলার আসামি গ্রেপ্তারে বিশেষ সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি এই পুরস্কার অর্জন করেন।
বড়াইগ্রাম থানার পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ থানার পুরস্কার গ্রহণ করেন ওসি মো. গোলাম সারোয়ার। গত মঙ্গলবার নাটোর জেলা পুলিশ লাইন্স কনফারেন্স রুমে সেপ্টেম্বর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারিকুল ইসলাম পুরস্কার ও সন্মাননা স্মারক তুলে দেন। সভায় জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মামলার নিষ্পত্তি, ওয়ারেন্ট তামিল, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদক মামলা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, চুরি-ডাকাতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, নাটোর জেলার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার। তিনি চাঁদাবাজি রোধ, রাত্রিকালীন টহল জোরদার এবং চুরি-ডাকাতি ও দস্যুতা নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও জোরদারের নির্দেশনা দেন।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইফতে খায়ের আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শোভন চন্দ্র হোড়, জেলার সব থানার ওসি, সিআইডি প্রতিনিধি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারোয়ার বলেন, এই অর্জন বড়াইগ্রাম থানার পুরো টিমের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। মাদক নির্মূল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। এই স্বীকৃতি আমাদের আরও দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করবে। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া কোনো সাফল্য সম্ভব নয়, তাই জনসাধারণের সহযোগিতাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
সারাদেশে চলমান টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ উপলক্ষে গাজীপুরের কালীগঞ্জে শিশুদের মাঝে জুস ও চকলেট বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে বালিগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক মিলনের উদ্যোগে বালিগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শামসুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে জুস ও চকলেট তুলে দেওয়া হয়।
জানা যায়, কোমলমতি শিশুদের সুস্বাস্থ্য রক্ষার লক্ষ্যে গত রোববার থেকে সারাদেশে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। কিন্তু অনেক শিশুর মধ্যেই টিকা গ্রহণে অনাগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এই অনাগ্রহ কাটাতে উৎসাহমূলক উদ্যোগ হিসেবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে জুস ও চকলেট বিতরণ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকা গ্রহণের আগ্রহ বেড়ে গেছে। তারা আনন্দের সঙ্গে টিকা নিচ্ছে এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশে উৎসবমুখরতা বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, জুস ও চকলেট হাতে পাওয়ার পর টিকা নিতে গিয়ে যে ব্যথা পেয়েছিলাম তা একেবারেই ভুলে গেছি। আমরা খুবই আনন্দিত।
এ বিষয়ে উপস্থিত অভিভাবকেরা বলেন, এই উদ্যোগে বাচ্চারা উৎসাহ পেয়েছে। যারা আগে ভয় পেত, তারাও আগ্রহ নিয়ে টিকা নিয়েছে। বিএনপি নেতাদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’
বালিগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ‘অনেক শিক্ষার্থী টিকা নিতে ভয় পাচ্ছিল। পরে বিএনপি নেতারা জুস ও চকলেট নিয়ে মাঠে উপস্থিত হয়ে ঘোষণা দেন- যারা টিকা নেবে না, তারা উপহার পাবে না। এতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ পায় এবং সবাই টিকা নেয়। এতে স্কুলে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।’
এ সময় কালীগঞ্জ পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করে মোট ১২ টি নতুন কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক গতকাল একটি সরকারি আদেশ জারী করা হয়েছে। কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগ দু’টির বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে জনবল বৃদ্ধি এবং নতুন ১২টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে ৩৭৩টি ক্যাডার পদ এবং ৩,২২৪ টি নন-ক্যাডার পদসহ মোট ৩,৫৯৭টি পদ নতুনভাবে সৃজন করা হয়েছে।
কর জাল সম্প্রসারণ করে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে স্বনির্ভরতা অর্জন, সেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি পরোক্ষ কর ব্যাবস্থাকে অধিকতর গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং মন্ত্রি পরিষদ বিভাগসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রশাসনিক অনুমোদন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক উক্ত আদেশ জারী করা হয়। উক্ত আদেশ অনুযায়ী ৩ পর্যায়ে ৫টি নতুন মূল্য সংযোজন কর কমিশনারেট, ৪টি নতুন কাস্টমস হাউস এবং ৩ টি বিশেষায়িত দপ্তর সৃজন করা হলো।
নতুন ১২ টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন ছাড়াও উক্ত সরকারি আদেশের মাধ্যমে বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিটসমূহের সম্প্রসারণ, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাস্টমস কার্যক্রম এবং কাস্টমস ও ভ্যাট গোয়েন্দা কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে।
কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ফলে পরোক্ষ কর আহরণ কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ সিমন সরকার -এর নেতৃত্বে মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -৪ এর আওতাধীন গুলশান সংলগ্ন কড়াইল বস্তিতে অবৈধ গ্যাস লাইন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন অত্র কোম্পানির মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌ. শাহনেওয়াজ পারভেজ মহোদয় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে নিজে উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শনসহ জরুরী দিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং বিভিন্ন গ্রাহক আঙ্গিনায় অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালান।
কড়াইল বস্তির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানে দেখা যায়, উক্ত বস্তিতে বসবাসরত একশ্রেনীর অসাধু লোকজন অবৈধ উপায়ে পুকুরের পানির নীচ দিয়ে ও ম্যানহোলের ভিতর দিয়ে জিআই পাইপ, কয়েল পাইপ ও প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছে। উক্ত অভিযানে রোড-৩৪, গুলশান-২ গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে কড়াইল বস্তিতে গ্যাস সংযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক বিভিন্ন সাইজের ১০০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। রোড-৩৩, গুলশান-২ এ একজন গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে কড়াইল বস্তিতে গ্যাস সংযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক আনুমানিক ২০০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। রোড-৩২, গুলশান-২ এ কড়াইল বস্তিতে প্লাস্টিক পাইপের সাহায্যে গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করার কারণে সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক আনুমানিক ৭০ ফিট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। রোড-২৩/সি, গুলশান-২ এ গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে কড়াইল বস্তিতে গ্যাস সংযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক আনুমানিক ১৩০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে।
Gulsan lake view নামক হোটেলে গ্রা: সং:নং: ১২৮-২১৬২১ এর বিপরীতে মিটার বিহীন আবাসিক রাইজার হতে ২৫ ঘ.ফু স্টার বার্ণার ২টি এবং ২টি ২১ ঘনফুট এর মডিফাইড ডাবল চুলা সহ সর্বমোট ৯২ ঘ.ফু হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস ব্যবহার পরিলক্ষিত হওয়ায় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ৬০,০০০/- টাকা নগদ জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ১টি রেগুলেটর, প্লাস্টিক পাইপ- আনুমানিক ৫০ ফুট অপসারণ করা হয়েছে এবং গাওসুল আজম মসজিদ ( গুলশান মহাখালী রোড সংলগ্ন), ১৫ নম্বর রোডে পুলিশ বক্সের সাথে সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে কড়াইল বস্তিতে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার পরিলক্ষিত হওয়ায় আনুমানিক ১৫০ ফিট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে।
এক সময় দেশের অর্থনীতির প্রধান ভরসা ছিলো সোনালি আঁশ পাট। উত্তরাঞ্চলের কৃষক আজও এই ঐতিহ্যবাহী ফসলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু একের পর এক মৌসুমে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গাইবান্ধার পাটচাষিদের মনে দানা বাঁধছে হতাশা। এবছর বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি থাকলেও সেই বাড়তি লাভ পৌঁছায়নি কৃষকের ঘরে। ফলে হাট-বাজারজুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে বঞ্চনা আর নিরাশার দীর্ঘশ্বাস।
পাটচাষের সঙ্গে জড়িত কৃষক ও স্থানীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারি তৎপরতার ঘাটতি, পাটকল মালিকদের প্রভাব এবং ফরিয়া-সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যই এই সংকটের মূল কারণ। তাদের আশঙ্কা এই অব্যবস্থাপনা চলতে থাকলে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে কৃষক।
কমছে চাষের পরিমাণ:
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী জেলায় পাট চাষাবাদের ৫ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কেবল চলতি মওসুমে (২০২৫-২০২৬ অর্থ বছর) মাত্র ৩২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বাড়লেও গত কয়েক বছর থেকে কমছে পাট চাষ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে জেলায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয় পাট। তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ৬৮৭ হেক্টর কমে ১৪ হাজার ৩১৩ হেক্টর, ২০২৩ সালেও একই পরিমাণ এবং ২০২৪ সালে আরো ৫২৩ হেক্টর কমে চাষ হয় ১৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর পাট।
অন্যদিকে, কোনোও বছরই চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি কৃষি বিভাগ।
এ বছর দাম বাড়লেও নেই কৃষকের লাভ:
ফুলছড়ি হাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৯০০ থেকে চার হাজার ২০০ টাকায়— যা দেড় মাস আগেও ছিলো দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৭০০ টাকার মধ্যে। দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কৃষকের ঘরে নেই আনন্দ। কারণ, অধিকাংশ কৃষক আগেই কম দামে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন ঋণ শোধের চাপে।
চাষি আব্দুল হালিম ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, এখন দাম ভালো, আমাদের ঘরে তো পাট নাই । কাটার সময় দাম ছিলো আড়াই-তিন হাজার। ধার শোধ করতে না পারলে তো চলবে না। এখন যারা মজুদ রেখেছে, তারাই লাভ করছে।
ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের খোলাবাড়ি গ্রামের পাটচাষী জসমত আলী বলেন, “সার, বীজ, কীটনাশক, শ্রমিক— সবকিছুর খরচ বেড়েছে। আবার বন্যা-খরার ঝুঁকি নিতে হয়। এত পরিশ্রম করেও দাম না পাওয়ায় পাট চাষ এখন বোঝা মনে হয়। কিছু করারও নাই আমাদের। এসব চরের জমিতে এই সময়ে পাট ছাড়া কিছু করতেও পারিনা আমরা।
একই আরেক পাট বিক্রেতা আলিম উদ্দিন হোসেন বলেন, সরকার যদি মৌসুমের শুরু থেকেই আমাদের কাছ থেকে পাট কিনে, তাহলে আমরা একটু বাঁচতে পারবো। না হলে এই চাষ বন্ধ হয়ে যাবে।” আমরা সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিবছর মরে যাচ্ছি।
সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে বাজার:
কৃষকদের অভিযোগ, বন্যা-খরাসহ নানা দুর্যোগের ঝুঁকি, হারভাঙ্গা খাটুনি আর ধার-দেনা করে পাট চাষ করে কৃষক। আর মৌসুমের শুরুতেই পাটকল মালিক ও ফড়িয়ারা আঁতাত করে দাম কমিয়ে রাখেন। পরে সেই পাটই তারা মজুদ করে অধিক দামে বিক্রি করেন। বছরের পর বছর এই ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট’ই বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে।
পাইকারদের ভিন্ন ব্যাখ্যা:
অন্যদিকে কৃষকদের অভিযোগের দায় নিচ্ছেনা পাইকাররা । ফুলছড়ি হাটের পাইকার শাহ আলম বলেন, “আমরা নিজেরা দাম ঠিক করি না। মিল মালিকরা যে দামে কিনতে বলেন, সেই দামে আমরা পাট কিনি।”
কৃষকদের আক্ষেপ, প্রত্যাশা সরকারি হস্তক্ষেপ:
একদিকে বন্যা, খরা, আগাম বর্ষা-প্রকৃতির অনিশ্চয়তা; অন্যদিকে বাজারের অন্যায় খেলা-সব মিলিয়ে পাট চাষ এখন কৃষকদের কাছে লাভের নয়, বরং লোকসানের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবুও আশা ছাড়েননি। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নিলে ভাঙবে 'সিন্ডিকেটের জাল’, ফিরবে পাটের সোনালী অতীত এমনই প্রত্যাশা গাইবান্ধার পাটচাষিদের।
উন্নয়ন সংগঠন সাদ্দাম হোসেন বলেন, হাটে-হাটে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পাট কেনা হলে কৃষকরা অবশ্যই লাভবান হবেন। দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এই কৃষকরা। কৃষিনির্ভর এই দেশে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হলে কৃষককে আগে বাঁচাতে হবে। "কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পাট কেনা হচ্ছে না ফলে লাভবান হচ্ছেন ফড়িয়া-পাইকারেরা।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, “জেলায় বর্তমানে পাটের বাজার স্থিতিশীল। কৃষকদের উৎসাহিত করতে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। তবে পাটের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি সব দপ্তরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া সহজ হবে, এমন প্রচারণা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা।’
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আয়োজিত কোরআন অবমাননা ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, জামায়াত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা কিছু ছেলেপেলেকে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচার, কটূক্তি ও করুচিপূর্ণ কথা ছড়ানোর বাহিনী গড়ে তুলেছে। এরা মিথ্যাকে সাজিয়ে গুছিয়ে প্রচার করছে প্রতিনিয়ত।
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত আওয়ামী লীগের লেজ ধরে চলতে ভালোবাসে, এখনো কেন যেন আওয়ামী লীগের ভোট নেওয়ার জন্য কায়দা কানুন করছে। শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ইসলামের মৌলিক নীতির বাইরে কথা বলছে তারা।’
সাধারণ মানুষ পিআর সম্পর্কে জানে না জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘যারা নভেম্বরে গণভোটের কথা বলছেন তাদের কোনো মাস্টারপ্ল্যান আছে, তারা শর্ত দিয়ে বিভ্রান্ত করে জাতীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চাচ্ছে।’
মন্তব্য