জমজমাট নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে দেশে যে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়, সেই স্মৃতি যেন ফিরিয়ে আনল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে শুরু হওয়া গণটিকাদান কর্মসূচি।
প্রথম দিন শনিবার দেশের বেশিরভাগ টিকাকেন্দ্রে দেখা গেছে আগ্রহীদের দীর্ঘ সারি। দেখে মনে হতেই পারে সেখানে ভোট চলছে। একেক করে প্রত্যেককে প্রবেশ করানো হচ্ছে কক্ষে; দেয়া হচ্ছে টিকা।
সারা দেশে একযোগে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে শনিবার সকাল ৯টা থেকে; চলবে বেলা ৩টা পর্যন্ত।
প্রতিটি কেন্দ্রেই পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে নিবন্ধন করা হচ্ছে। এরপর দেয়া হচ্ছে টিকার প্রথম ডোজ।
‘প্রথমে ডরাইছিলাম এখন আর নাই’
টাঙ্গাইলের বাসাইলের নথখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে টিকা নিতে আসেন ৬২ বছর বয়সী আবুল কাশেম।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাবারে প্রথমে খুব ডরাইছিলাম। তাই টিকা নেই নাই। মেলাজনেই মেলা কথা কইছে। তারপরও টিকা নেই নাই। ভাবছিলাম কী না কী হয়। তয় আজকে দেখলাম বেক্কেই নিবার আইলো। তাই আমিও তাগো পিছে পিছে আইছি আইডি কার্ড নিয়া।
‘আওয়ার নগে নগেই দেহি ডাক দিলো আমারে। ভিতরে ঢুকলাম। আইডি কার্ড নিল, কাগজে কী জানি লেখল আর মোবাইল নাম্বার জিগাইল...তারপরই সিরিঞ্জ বাইর কইরা ভিতরে ওষুধ ডুকাইয়া আমার ডাইন হাতের ডেনায় ডুকাইয়া দিল। এট্টুও দুক্কু পাই নাই। এহন আর ডর নাই।’
কাশেমের মতো সকাল থেকেই এ কেন্দ্রে টিকা নিতে আগ্রহীরা ভিড় করেছেন। জেলার ৯৮টি ইউনিয়ন ও তিনটি পৌরসভায় চলছে গণটিকাদান। সবগুলো কেন্দ্রেই কম-বেশি ভিড়। মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যায়নি কোথাও।
জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে কেন্দ্রে নিবন্ধন করে টিকা পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
সিলেটে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
বিপুল উৎসাহে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে দেখা গেছে সিলেটের গ্রহীতাদের। জেলা ও মহানগরী এলাকায় প্রায় ৪ শতাধিক বুথে শুরু হয় গণটিকাদান। প্রতিবন্ধী ও চলাচলে অক্ষমদের টিকা দেয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থায়।
সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৭টি ওয়ার্ডে ৮১টি বুথে শনিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত ২৪ হাজার ৩০০ জন পাবে টিকা।
সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, দেশব্যাপী এক দিন ক্যাম্পেইন চললেও সিলেট মহানগরীতে রোববার ও সোমবারও চলবে এই কার্যক্রম।
জেলার প্রতি ইউনিয়নে তিনটি করে মোট ৩০০টি বুথে টিকা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। প্রতিটি বুথে সর্বোচ্চ ২০০ জন করে মোট ৬০ হাজার জনকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
নগরীতে মডার্না এবং উপজেলা ও জেলায় দেয়া হচ্ছে সিনোফার্মের টিকা।
নগরের রেড ক্রিসেন্ট মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে সিলেট সিটি করপোরেশন শনিবার সকাল ৯টায় টিকা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। তাতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
মেহেরপুরে টিকা না পাওয়ার অভিযোগ বৃদ্ধদের
মেহেরপুরের ১৮টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় চলছে গণটিকাদান। বয়স্কদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
টিকা নিতে এসে ফিরে যাওয়া সদরের ৪ নম্বর বামন্দী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ষাটোর্দ্ধ হাজী আজীরন খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বয়স ষাট বছর হই গিছে। আমার নাম নাই। মেম্বার আমার নাম দেইনি। এ জন্য আমি টিকা পাইছিনি। তাই বাড়ি চইলি যাইছি।’
আরেক বৃদ্ধা জমেলা বেগম জানান, তার বয়স ৫৯। ৬০ বছর না হওয়ায় তিনি টিকা পাননি।
তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ মানুষ। তাই ইউনিয়ন পরিষদে টিকা নিতে আসছি। কিন্তু আমার বয়স ষাট বছর না হওয়ায় টিকা দিল না। অথচ ত্রিশ বছরের একজনকে টিকা দিল।’
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ‘গতকাল রাতে চেয়ারম্যান সাহেব ফোন দিয়ে বলল, আগামীকাল পরিষদে টিকা প্রদান করা হবে। ষাটোর্ধ্ব ৬৫ জনের নাম দিতে হবে। আমি পইড়ি গিছি বিপদে। সত্তর, আশি বছরের যা মানুষ আছে তা ১০০ জনের উপরে হবে। তাই আমি মানুষের অত্যাচারে ফোন বন্ধ রাইখিছি।’
তবে সিভিল সার্জন নাসির উদ্দিন বলছেন, বৃদ্ধ ও অসুস্থরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবেন। তিনি জানান, আঠারো ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় প্রথম দিন ১২ হাজার ৬০০ জনকে টিকা দেয়া হবে।
চট্টগ্রামে অগ্রাধিকারের তালিকায় দুর্গম এলাকার মানুষ
চট্টগ্রামে মহানগর ও উপজেলার মোট ৩২৬টি কেন্দ্রে গণটিকাদান চলছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১৪টি উপজেলার ২০৩টি বুথে এবং মহানগরের ১২৩টি বুথে চলবে টিকাদান। পৌর এলাকার বাসিন্দারা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে টিকা পাবেন।
জেলা সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বয়স্ক, নারী, প্রতিবন্ধী ও দুর্গম এলাকা থেকে আগতদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি বুথে পাঁচ জনের একটি টিম টিকাদানে কাজ করছে৷ এর মধ্যে দুজন সরাসরি টিকা দান করছেন। অন্য তিনজন তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন।’
অব্যবস্থাপনা লালমনিরহাটে
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, জেলার ৪৫টি ইউনিয়ন পরিষদ ও দুই পৌরসভায় টিকা দেয়ার জন্য খোলা হয়েছে ১৫০টি কেন্দ্র। প্রথম দিন টিকা পাওয়ার কথা ২৯ হাজার ৪০০ জনের।
লালমনিরহাট পৌরসভায় ২ নম্বর ওয়ার্ডের গিয়াস উদ্দিন বিদ্যালয়ে নারী-পুরুষদের একই বুথে টিকা দেয়া হচ্ছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন গ্রহীতারা। সেই সঙ্গে ভিড় সামলাতে প্রশাসনের লোকজন দেখা যায়নি বলে অভিযোগ তাদের।
জেলা সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় নিউজবাংলাকে জানান, প্রথম দিন হওয়ায় উপচে পড়া ভিড় প্রায় সব কেন্দ্রে। আস্তে আস্তে প্রতিদিন ভিড় কমবে।
‘আমরা শেখ হাসিনার কাছে ঋনী’
নাটোর সদরের দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের শিবদূর গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে টিকা নিতে আগ্রহীদের ভিড়। সেখানে চেয়ার নিয়ে বসে ডাক পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন বৃদ্ধ শামসুল হক।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের বাড়ির কাছে টিকা লেওয়ার সুযোগ করে দিছে। আমরা শেখ হাসিনার কাছে ঋনী হয়ে থাকনু।’
এই কেন্দ্রেই হুইলচেয়ারে করে এসেছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক সরকার।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাইত্যে টিক্যা লিতে আসিছি। গ্রেরামেত টিক্যা দেয়ার ব্যবস্থা করাত টিকা লেওয়া অনেক সহজ হছে।’
এই জেলার ৬ উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও নাটোর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে একযোগে চলছে গণটিকাদান।
সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান জানান, শনিবার মোট ৩১ হাজার ২০০ জনকে টিকা দেয়া হবে।
টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে প্রশাসনের লোকজন নজরদারিতে আছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
রংপুরে অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকা পাচ্ছে না আগে থেকে নিবন্ধনকারীরা
রংপুরে অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় সকাল থেকেই। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে সেখানে নিবন্ধন করে টিকা নিচ্ছেন আগ্রহীরা। তবে আগে থেকে যারা নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের সেখানে টিকা দেয়া হচ্ছে না বলে জানালেন অনেকে।
নগরীর সাতমাথা খাশবাগ এলাকার মুনিরা বেগম বলেন, ‘খাশবাগ স্কুলে সাড়ে দশটার দিকে গেছিলাম। আমাকে বলেছে যেহেতু রেজিস্ট্রেশন করেছেন আগে, তাই মেডিক্যালের কেন্দ্রে যান। আমি মেডিক্যালের কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছি।’
নগরীর বাবু খাঁ এলাকার জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমি আগে রেজিস্ট্রেশন করেছি। তাই ওয়ার্ডের টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেয়নি। এখন মেডিক্যালে যাচ্ছি।’
নগরীর লালকুটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে দেখা যায়, সেখানে ২০০ জনকে টিকা দেয়ার কথা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এই কেন্দ্রে ১৬০ জনের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বলে সেখানকার পরিদর্শক রায়হানুল ইসলাম জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত মানুষ হওয়ায় এই কেন্দ্রে ২০৯ জনকে টিকা দেয়া যাবে। এর বেশি হলে মজুত নেই।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, সিটি করপোরেশন ও জেলার আট উপজেলায় ৬৫ হাজার ৪০০ জনকে টিকার আওতায় আনা হবে। এ জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে টিকাদান কেন্দ্রে তিনটি করে বুথ রয়েছে। আর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে একটি করে টিকাদান কেন্দ্রে তিনটি বুথ রয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়েও টিকা না পাওয়ার অভিযোগ
কুদ্দুস ব্যাপারির বয়স আশি, থাকেন রাজবাড়ী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে। শনিবার সকালেই জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে টিকার জন্য তিনি যান ওয়ার্ডের কাজী হেদায়েত হোসেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থেকে, পরিচয়পত্র দেখিয়েও তিনি টিকা পাননি।
এই অভিযোগ সেখানকার অনেকেরই। আবার অনেক কেন্দ্রে আগে থেকে নিবন্ধন করা লোকজন গেলে তাদের টিকা দেয়া হচ্ছে না।
৮ নম্বর ওর্য়াডের মো. সালাম জানান, রেজিস্ট্রেশন করে টিকা কার্ড আনার পরও বলা হয়েছে পরিচয়পত্র দেখাতে। তাই টিকা না নিয়ে ফেরত যান।
নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ওয়ার্ডে টিকা পাওয়ার কথা ২০০ জনের।
এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ইব্রাহিম টিটন জানান, বয়স্কদের ক্ষেত্রে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই টিকা দেয়া হবে। সরেজমিনে তা মানা হচ্ছে না, এমন অভিযোগ তিনি খতিয়ে দেখবেন।
তিনি জানান, রাজবাড়ী পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড, পাংশা পৌরসভার ১টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মোট ৫২টি কেন্দ্রে ২৭ হাজার ৩০০ জন শনিবার টিকা পাবেন।
এছাড়া, গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিন ব্যাপক সাড়া মিলেছে বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুর, চুয়াডাঙ্গা, কক্সবাজার, গোপালগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোণা, নীলফামারী, পাবনা, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা ও শেরপুরেও।
প্রায় সব কেন্দ্রেই দুপুর ১২টা নাগাদ টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের বেশি মানুষের নিবন্ধন করে টিকা নিয়ে ফেলেছেন বলে জানিয়েছেন নিউজবাংলার প্রতিবেদকরা।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য